প্রেমঘোর পর্ব ৯+১০
নার্গিস সুলতানা রিপা
“একবিন্দুও বেশি বলছি না মাই ডিয়ার,তুমি জানো?বিয়ের দিন যখন তোমরা সবাই আমার বাসায় ডুকেছিলে আমাকে দেখতে সবার আগে তোমার উপর চোখ পড়েছিল আমার।একটা পুচকি পুতুল লাগছিল একদম☺”(নৌশিন)
“ইশ-তোমাকে তো সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখাচ্ছিল”(প্রাপ্তি)
“আরে বাবা আমি তো বউ সেজে ছিলাম তাই একটু হয়তো লাগছিল কিন্তু তুমি তো এমনি ই তেই কত্ত কিউট বল তো”(নৌশিন)
“তাহলে??তুমিও কি ভাইয়ার মতো সাজতে বারণ করবে আমায়?”(প্রাপ্তি)
“ধুর বোকা একদম না-তুমি যাও তোমার যেমন করে সাজতে ভালো লাগবে তেমন করে ই সাজো”(নৌশিন)
“আর তোমাকে তো আমি বেশি গডজিয়াস সাজে দেখলাম ই না…তুমি তো কমই সাজো”(নৌশিন)
“হুম-একদম ঠিক….বাট ভাইয়ার বেশি বেশি”(প্রাপ্তি)
“আচ্ছা রে-যা তোর ভুত পেতনী যা মনে চায় সাজ শুধু কেয়ারফুল্লি চলতে শেখ,আর ঐ হাতে কিসের প্যাক ওটা?”(সাদাদ)
“আরে ভাইয়া এটার জন্যই তো ভাবীকে এতো আদর দিলাম”(প্রাপ্তি)
….প্যাকেট টা খুলে একটা ফোন বের করে সাদাদের হাতে দিলো..”কি সুন্দর ফোন ভাইয়া☺☺☺ভাবী অর্ডার করেছিল আমার জন্য সেটাই তো পারসেল করে গেল লোকটা☺”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“কিহ্??”(সাদাদ)
“হুম”(প্রাপ্তি)
“তোমরা বকবক কর আমি সাওয়ারে গেলাম”(নৌশিন)
“ওক্কে ভাবী…যাও”(প্রাপ্তি)
“বাব্বা তোর তো বড় লোক ভাবী জুটলো কপালে রে বুচি…ফার্স্ট দিন ই ‘গ্যালাস্কি 6′ হাতিয়ে নিলি”(সাদাদ)
“তুমি তো দিলে না…..তাই ভাবীই দিল”(প্রাপ্তি)
“হুম-যে ভয় দেখালি সকালে….ভয়ে ই দিয়ে দিছে”(সাদাদ)
“আচ্ছা…আচ্ছা শোন না ভাইয়া….😃😃😃😃”(প্রাপ্তি)
“বল..?”(সাদাদ)
“ভাবী কি সত্যিই কিস করতেছিল তোমাকে??”(প্রাপ্তি)
“গেলি তুই-ফাজিল মেয়ে”(সাদাদ)
…প্রাপ্তি বসা থেকে তাড়াতাড়ি ওঠে দাড়ায়…
“😆😆😆আচ্ছা যাচ্ছি….ভালোই হলো মাঝে মাঝে ভয় দেখানোর আর একটা নতুন সদস্য পেলাম☺☺কাজে দিবে”(প্রাপ্তি)
….প্রাপ্তি নিজের রোমে চলে যায়…..কিছুক্ষণ পর নৌশিন সাওয়ার থেকে বের হয়ে আসে চুল মুছতে মুছতে…”নাও সাওয়ার সরে এসো”
“কি হলো কাজ টা??”(সাদাদ)
“কি??”(নৌশিন)(সাদাদের দিকে ফিরে)
….সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে”ওকে ফোন দিলা কেন?”
“ও মা…ছোট মানুষ একটা ফোন ই তো…কি হয়েছে তাতে?”(নৌশিন)
“ওর কি ফোন নেই নাকি??”(সাদাদ)
“আরে এমন করে কেন বলছো…তাছাড়া আমি সকালের কাহিনীর জন্য ফোন টা দিই না-আর যাই হোক আমি তোমাকে লিপ কিস করছি এই কথাটা ও বাবা আর কাকার সামনে বলবে না-কিন্তু যেভাবে ই হোক মেয়েটা তো ওর ভাবীর কাছে একটা নতুন জিনিস চাইছে…তাই আর কি……আর নতুন বউয়ের কাছে তো বরের ছোট ভাই বোনরা কত কিছু চায়…..তোমার তো সবাই বড় এই তো একটা মাত্র ছোট বোন”(নৌশিন)
“ওকে-মানলাম….তো আমি কি দিতাম না??ও তো সকালেই বলল….না হয় পরে দিয়ে দিতাম-তুমি আমাকে না বলেই আজ ই দিয়ে দিলে”(সাদাদ)
“একজন দিলেই তো হলো”(নৌশিন)
“হলো মানে??কত টাকা নিলো??”(সাদাদ)
“দাম দিয়ে তুমি কি করবা??মারুফকে(নৌশিনের বেস্ট ফ্রেন্ড)বললাম তো ও ওপ্যারা থেকে কিছু ফোন দেখালো সেখান থেকে ই অর্ডার করলাম-আর তোমার বাসা থেকে মেইন বিল্ডিং টা কাছেই ওদের তাই এতো জলদি এসে গেছে”(নৌশন)
“টাকা নষ্ট করার মানে আছে কোনো এইভাবে??….১৭/১৮ তো খরচ করছো নাকি??”(সাদাদ)
“নারে ১৬৫০০ টাকা”(নৌশিন)
“থাপ্পর চিনো….নিজে কি ইনকাম কর নাকি??আর আমাকে বলছো যে তোমার এত টাকা লাগবে??”(সাদাদ)
“ওফফ সাদাদ এখন আমার পেছনে লাগলে আবার??টাকা তো ছিলো আমার রকেটে-বাবা বিয়ের দু দিন আগেই আমার খুটিনাটি জিনিস কেনার জন্য আর এখানে তো নতুন আসবো তাই বিয়াল্লিশ হাজার টাকা আমার রকেটে দিয়েছিল যেন খরচ করি বাট মা তো সব নিজে ই কিনে ফেলেছিল মেইন শপিং এর সাথে তাই আমার টাকা টা লাগে নি-শুধু কালের আগের দিন মারুফের সাথে দেখা হয়ে গেছিলো তাই এক হাজার টাকা কিভাবে জানি খরচ করেছি…আর এই যে আজকে করলাম কিছু”(নৌশিন)
“মানে???তুমি এখানে আসছো বলে আঙ্কেল তোমাকে টাকা দিছে”(সাদাদ)(একটু রাগ নিয়ে)
“এই ভাবে কেন বলছো…বাবা কি টাকা দিতে পারে না আমায়??এতদিন কার টাকায় গা ভাসালাম তবে??”(নৌশিন)
“তোমার বাবা তোমাকে টাকা দিক সেটা দেখার বিষয় না আমার…আমি এটা জানতে চাইছি’ওনি কি তোমাকে এখানে আসবে বলে টাকা টা দিলো কি না’?”(সাদাদ)
“মানে???”(নৌশিন)
“মানে মানে কি কর????যেটা বলছি সেটার উত্তর টা দাও”(সাদাদ)
“রাগে যাচ্ছো কেন এইভাবে?নতুন আসবো কাউকে ই তো সেভাবে চিনি না তো কোনো দরকার লাগলে যদি না বলতে পারি-সেটা ভেবেই টাকা টা সেন্ড করেছিল ফোনে বাবা আর যদি কিছু এলাদা করে কেনার থাকে সেটা বলেই দিয়েছে,তাই আমিও বারণ করে নি বলেছিলাম হাতে না দিয়ে ফোনে দিতে”(নৌশিন)
“তার মানে তোমাকে আগে জিঙ্গাসা করেছিলো তারপর তুমি অনুমতি দিয়প দিলা তাই তো?”(সাদাদ)
“তুমি ফোন থেকে বাবার টাকা দেওয়ার পেছনে কেন লাগতে গেলে??আমি বুঝতে পারতেছি না”(নৌশিন)
“একটা কসিয়ে থাপ্পর দিলে না সব বুঝে যাবা…তুমি আমার বাসায় আসবা আর তোমার পারসোনাল খরচের টাকা তোমার বাবা দিবে???তোমার বাবা দিতে পারে এমনি..বাট তোমার দরকারের টাকা তুমি আমার কাছে না নিয়ে তোমার বাবার কাছ থেকে এনেছো”(সাদাদ)
“সাদাদ😞😞”(নৌশিন)
“এই মুখ ভার করবে না একদম…বলে দিলাম”(সাদাদ)
“তুমি এমন করে কেন নিচ্ছো বিষয়টাকে???আমি কি আজকে নিলাম নাকি টাকা টা।।।এটা তো দুই আগের টাকা যখন আমি বাবার বাসায় ছিলাম😞”(নৌশিন)
“হুম…আচ্ছা(মাথা ঠান্ডা করে)…আমি সেটা বলি নি..আঙ্কেলকে মিন করি নি-আমার কথা হলো এটা তুমি নিজেই তোমার দরকারের জন্য টাকা নিয়েছো তাও আবার এই বাড়িতে যদি তোমার লাগে সেজন্য-কেন???এই বাড়িতে আমি নেই??আমার টাকা নেই??”(সাদাদ)
“😞😞😞😞”(নৌশিন)
“মুখ ভার করতে না করছি আমি”(সাদাদ)
…..নৌশিন কান্না করে দিলো😞😞😞…..
“😭😭😭😭😰😰😰😰”(নৌশিন)
“এই-কান্না????”(সাদাদ)
“😰😰😰😰😰”(নৌশন)
….সাদাদ নৌশিনকে কাছে টেনে নেয়…..”আজব তো….আমি খালি এটা বুঝাতে চাইলাম যে তেমার এই বাড়িতে যদি কোনো দরকারে টাকা লাগে তো আমার কাছ থেকে নিবা….চাইতেও হবে না তোমায়…চাবি তো তোমার সামনে ই রাখলাম-যখন যা লাগবে নিবা-আর তোমার বাবার কাছে যখন ইচ্ছা তুমি টাকা নাও বাট প্লিজ যেটা দরকার এখন থেকে এই ড্রয়ার থেকে ই নিও….তোমার বাবার টাকা তুমি যা খুশি কর বোনকে ফোন কিনে দাও-পার্টি দিয়ে দাও কোনো বারণ নাই বাট আমার বউয়ের খুটিনাটি একটু দরকার কি আমার মতো গরীবের টাকাতে হবে না??”(সাদাদ)?
“এইবার কিন্তু বাজে বকছো….”(নৌশিন)
“তাহলে-হাঁসো☺”(সাদাদ)
“হাঁসবো না…খালি ধমক দিয়ে কথা বলা😞”(নৌশিন)
“আরে তুমি যখন বললা এই বাড়িতে যদি কোনো দরকার তাই টাকা নিয়েছো তখন একটু মাথা গরম হয়ে গেল আরকি…..নাহলে তোমার বাবা তোমাকে টাকা দিবে আমার তাতে কি??”(সাদাদ)
“তাই বলে এতো ধমকায় নাকি মানুষ?”(নৌশিন)
“ওকে।সরি…..এবার তো মোড টা ঠিক করো”(সাদাদ)
“☺☺☺-রাগী বর একটা”(নৌশিন)
“কাঁদুরে বউ একটা☺”(সাদাদ)
“কিহ্…😡😡😡আমি কাঁদুরে????”(নৌশিন)
“তা নয় তো কি….একটা কথা একটু জোরে বললেই চোখে একদম বন্যা বয়ে যায়..”(সাদাদ)
“আমার কান্না আসলে আমি কি করবো??এমন করে না বললেই হয়😞….তাহলেই তো কান্নাটা আসে না”(নৌশিন)
“ওকে জান”(বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)
“আচ্ছা…ছাড়ো এখন সাওয়ার সেরে এসো”(নৌশিন)
“হুম….”(সাদাদ)
“আমি নামায পড়বো এখন-তুমি সাওয়ার সেরে নামায পড়তে যাবা মসজিদে….ওকে?”(নৌশিন)
“☺☺ওকে”(সাদাদ)
…….নৌশিন নামায পড়ে নেয়…..সাদাদ গোসল সেরে আসে……
“কি হলো??বসে আছো যে যাবা না মসজিদে??”(নৌশিন)
“যাব তো…তোমার জন্য ওয়েট করছিলাম আর এখনও ১৫ মিনিট বাকী আছে নামাযের….”(সাদাদ)
“ওহ্….শার্ট পড়ে যাও তুমি নামাযে?”(নৌশিন)
“হুম….শ্রুকবার পান্জাবি পড়ে যাই”(সাদাদ)
“নাহ্….এখন থেকে নামাযে গেলে পান্জাবি পড়ে যাবা….আমার তো তোমাকে পান্জাবিতে বেশ লাগে”(নৌশিন)
“ওরে…..ফুল চেন্জ করবা নাকি আমায়??”(সাদাদ)
“মোটেই না….আমার বর এমনি অনেক বেস্ট বুঝলে???তো এই ছোট খাটো একটু অভ্যাস গুলো তুমিই পরির্বতন করে নিবা…যেমন সকালের নামায টা তুমি আগে পড়তে না কিন্তু বাকী গুলো ঠিক পড়তে….সকালে এর্লাম দিলেও তো তোমার ঘুম ভাঙে না বাট এখন তো আমি আছি ডেকে দিব..এই রকম কিছু কিছু”(নৌশিন)
“ওকে ওকে…”(সাদাদ)
…..সাদাদ পান্জাবি বের করতে আলামরিটা খুলে…”এই মেয়ে কি এই সব??”(সাদাদ)
“কি??”(নৌশন)
“আলমারীতে এতো কি রাখছো?এতো বড় সব ডেস্ক তো ফাঁকা ছিলো আজ তো এক কোণাও ফাঁকা নাই”(সাদাদ)
“তো….আমার গুলো কি ব্যাগেই থাকবে নাকি??আর আমি তো এখনো কিচ্ছু আনি নি…কাল রাতে কে না কে ব্যাগ গুছিয়ে দিয়েছে???আজ তো বাসায় যাব তখন তো আরও আনতে হবে”(নৌশিন)
“আরও মানে???এখানেই তো ৫০+ শাড়ি মনে হচ্ছে আমার আরও??”(সাদাদ)
“আরে এগুলো কি সব আমি এনেছি নাকি??এই বাসারই তো সব আমি শুধু আমার ব্যাগে ৪ টা শাড়ি ই পেয়েছি-আর যা দেখছো সব মা আর ভাবী রেখে গেছে আলমারীতে”(নৌশিন)
“আর আমাকে তো আরও ড্রেস আনতেই হবে…বিয়ের আগের দিন মা ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য এক গাদা ড্রেস কিনেছে…বলছে বিয়ের আগে যেগুলো ব্যবহার করেছি সেটা তোমার বাসায় যেন না করি’তো সেগুলো আনতে হবে-তা না হলে শাড়ি পড়ে ক্লাস করতে হবে”(নৌশিন)
“হায় আল্লাহ…একটা মেয়ের এতো কিছু লাগে কেন☺☺!!”(সাদাদ)
…নৌশিন চুল ড্রাই করতে লাগলো আয়নার সামনে বসে…..
“হুম লাগে।।।তোমার মতো ৪/৫ টা শার্টে তো আমার হবে না…কত কি লাগে রে বর দেখবা আস্তে আস্তে”(সাদাদ)
“হুম…তাই তো দেখছি…এই তুমি চুলে ড্রায়ার দিচ্ছো যে??দাও না তো…”(সাদাদ)
“হুম সব সময় দেই না…..একটু পড়েই তো পার্লার থেকে লোক আসবে আর আমি এখন নিচে যাব তাই ড্রাই করে নিচ্ছি…না হলে করতাম না”(নৌশিন)
“হুম…করো না….আমি চাই না যে আমার বউয়ের এতো সুন্দর চুল গুলো ফ্যাকাসে হয়ে যাক”(সাদাদ)(পান্জাবি পড়তে পড়তে)
….নৌশিনের চুল শুকানো শেষ…..
“বাহ্…বেশ লাগছে তো তোমায়….আবার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি☺”(নৌশিন)
…সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে ওকে আয়নার দিকে ঘুরিয়ে নিলো…পেছন থেকে জড়িয়ে নিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে…..”দেখ তো..কে বেশি সুন্দর??”(সাদাদ)
“যাহ্….এভাবে কমপেয়ার করা যায় নাকি??তবে তুমি আমার চেয়ে মোর বেটার..ইভেন তুমি যদি আমাকে বিয়ে না করতে তাহলে আরও অনেক ভালো+সুন্দরি একটা মেয়ে পেতে”(নৌশিন)(আয়নায় দুজনকে দেখছে আর বলছে)
“এই পুচকি….বেশি বললে না খবর আছে….তোমার মতো এমন মিষ্টি মেয়ে আমি জীবনেও দেখি নাই…আর তুমি যে সুন্দর+ভালো মেয়ের কথা বলছো-তোমার কি মনে হয় আমি বুঝি নি??”(সাদাদ)
“তাই..?কি বুঝলেন আপনি???”(নৌশিন)
“ভার্সিটির শার্ট পেন্ট পড়া মর্ডান নামক ফালতু মেয়েদের কথা বলছো-যারা হেঁটে গেলে টিশার্টের উপর দিয়ে বুকের সাইজও বুঝা যায়….”(সাদাদ)
“এই কি বলো এই গুলা…”(একটু লজ্জা পেয়ে যায় নৌশিন)
“হুম…লজ্জার কিছু নাই তোমাকে বলতে…তুমি আমার বউ সো শেয়ার করতেই পারি…তুমি খারাপ ভাবে নিবা না জানি…একটা মেয়ের শরীরের ভাজগুলো একটা ছেলেকে টানে ই রে ভাই…যারা ভালো ছেলে ওরা দাম দেয় না ঐ সব সস্তা টাইপ মেয়েদের আর যারা লুলুতুপু টাইপ ওরা তো লোভ সামতে জানে না ইভেন কেন ই বা সামলাবে???সামনে রেডি জিনিস থাকলে কেউ সামলাতে চায় না…সবার ই যৌবনের টান বলে কিছু একটা আছে….বুঝলেন??”(সাদাদ)
“হুম বুঝলাম….তার মানে কি আপনি ঐ সব মেয়েদের দেখছেন ঐ ভাবে নজর দিয়ে?”(নৌশিন)
“এই যে…একটা দোষ তোমার…আমি বলি একটা তুমি বুঝো একটা….আরে মাইয়া আমার সস্তা জিনিসে নজর যায় না বাট রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে চোখে কি পড়ে না নাকি”(সাদাদ)
“এতো ডিরেক্ট বলো কিভাবে তুমি??পারোও বটে”(নৌশিন)
“হুম ওরা ডিরেক্ট বডি বের করে ঘুরবে আর আমি বললেই দোষ…..আর পুরো ভার্সিটিতে তোমার মতো মেয়ের সংখ্যা কম ছিল….আমি প্রথম দিন কিভাবে যে তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম আমি নিজেও জানি না কোনো দিন কোনো মেয়েকে দেখে এমন ফিল হয় নি”(সাদাদ)
“হয়েছে…হয়েছে”(নৌশিন)
“না হয় নি…তুমি আমার বউ কে কম সুন্দর বলেছো…যেটা ডাহা মিথ্যা কথা……আর প্রথম দিন আমি তোমার চুল দেখলে আরও প্রেমে পড়তাম… চুল তো দেখলাম টানা এক বছর পর…তোমার ২ য় বর্ষের প্রথম দিন যেদিন তুমি তোমার ফ্রেন্ডদের সাথে দাড়িয়ে পরাতন কলা ভবনের সামনে ফুচকা খাচ্ছিলে….আর আশা দুষ্টুমি করতে গিয়ে তোমার হিজাব খুলে ফেললো…ইশ💜💜…..সাথে সাথে মাথার বেনটাও পড়ে গিয়েছিল…আর তুমি যেভাবে চিৎকার দিয়েছিলে…আমি তো ভাবছি পিন টিন কিছু ঢুকে গেল নাকি মাথায়….পরে বুঝলাম বউ আমার চুল খুলে গেছে বলে চিৎকার দিয়েছিলো….জানো আমি তো আগে থেকেই তোমার ফুচকা খাওয়া দেখতেছিলাম তো হঠাৎ তোমার হিজাব প্লাস চুল খুলে গেলো আমি তো পুরা শেষ…কি দেখলাম এটা চুলও এতো সুন্দর হয় একটা মেয়ের💜💜…..আর সেখানে তো তোমার পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে হিজাব পরা সম্ভব হয়নি-তাই নিজে বোকার মতো চুল খুলা রেখেই আবার ফুচকা খাওয়া শুরু করলে-হালকা বাতাসে চুলগুলো উড়তেছিলো আর আমার মনে হচ্ছিল যদি আমিও ঐ চুল গুলোর মতো তোমার গালে পিঠে ঘারে ছুঁয়ে দিতে পারতাম”(সাদাদ)
“আল্লাহ…. তোমার বউয়ের রূপের বর্ণনা শেষ হয়েছে তোমার?”(নৌশিন)
“না তো…আ…(সাদাদ)
…..আ পর্যন্ত ই বাক্যটা শেষ করতে হলো সাদাদের কারণ নৌশিন সাদাদের দিকে ফিরে ওর মুখটা হাত দিয়ে আটকে ধরে যেন সাদাদ আর কিছু বলতে না পারে….”চুপ একদম চুপ আর একটা কথাও না…কথা বলেই চলেছে কখন থেকে পাগলের মতো”(নৌশিন)
“উমমমমমম”(সাদাদ ইশারা দিয়ে মুখটা ছাড়তে বলে)
…”উমমম উমমম করো কেন??”(নৌশিন)
…..সাদাদের সাথে নৌশিন কি পারে নাকি.. সাদাদ একটু জোর খাটালেই নৌশিনের হাত কেন সবকিছু একনিমিষে সরিয়ে ফেলতে পারবে….নৌশিন মুখে হাত দিয়ে রেখেছিল তখনো….সাদাদ নিজের মুখটা ঘুরিয়ে নিয়ে নৌশিন হাতে একটা কামড় বসিয়ে দিল…
“ওহ্ মা গো”(নৌশিন)
সাদাদ কামড়টা ছেড়ে দেয় নৌশিনের শব্দে…
“কি হলো এটা😡?”(নৌশিন)
“যা হওয়ার তাই হলো☺☺…তোমার আন্দাজ আছে কিছু?তুমি শক্তি দেখাও আমার সাথে☺☺…..হেয়য়…..”(সাদাদ)
“যাও কথাই বলবো না আর আমি😒”(নৌশিন)
“আচ্ছা…বলো না….নামাযে যাই…বাই”(সাদাদ)
….”😒😒😒….যান”…..(নৌশিন)
…..ওহ্ আস্ত একটা শয়তান হাতটা ব্যাথা করে দিয়ে গেলো…আমিও কামড় দিতে পারি হয়তো গায়ের জোরে পারবো না,কামড় তো দিতে পারবো…হুম শোধ তো তুলবোই আমি এটার….(মনে মনে বক বক করছে নৌশিন)…..
…কিছুক্ষণ পর নৌশিন প্রাপ্তির রোমে যায়….
“হাই কি করছো?”(নৌশিন)
“আরে ভাবী-দরজায় দাড়িয়ে জিঙ্গাসা করছো যে??ভেতরে আসো না…”(প্রাপ্তি নৌশিনকে টেনে এনে খাটে বসায়)
“হুম..আমি ই আসতাম..এমনি দরজা থেকেই আস্ক করলাম আর কি??কি করছিলে??”(নৌশিন)
“এই তো ভাবছিলাম কি পরবো???”(প্রাপ্তি)
“আচ্ছা☺☺”(নৌশিন)
“তুমি একটু দেখ না কোনটা পরবো…?”(প্রাপ্তি)
“আমি কি বলবো??তোমার যেটা ভালো লাগবে সেটা পরো তো..”(নৌশিন)
“ইন না…আজকে তুমি যেটা চোজ করে দিবে আমি সেটা ই পরে যাব”(প্রাপ্তি)
“দাও না…প্লিজ প্লিজ”(প্রাপ্তি)
“আচ্ছা ওকে….যদি তোমার লাইক না হয়?”(নৌশিন)
“আরে ভাবী এখানকার সব গুলোই আমার পছন্দের বাট কোনটা পরবো জাস্ট সেটা বুজতে পারছি না-তুমি বলে দাও”(প্রাপ্তি)
“উম…….(সবগুলো ড্রেস দেখে)…..তুমি তো অনেক ফর্সা আর আজকে তো বৌ ভাত,তুমি বরের বোন তোমাকে একটু বেশি সুন্দর দেখানো চাই-সো আমার মনে হয় এই ব্লেক ড্রেস টা ই পারফেক্ট হবে তোমার জন্য”(নৌশিন)
“উফ ভাবী তুমি না..উমম্মা….আমিও ভাবছিলাম এটার কথা”(প্রাপ্তি)
“আচ্ছা তাহলে তো হলোই তোমার সমস্যার সমাধান”(নৌশিন)
“হুম….তুমি করে দিলে”(প্রাপ্তি)
“মেহেদী কভার করেছো?”(নৌশিন)
“এই তো করেছি..দেখ…”(প্রাপ্তি)
“বাহ্…লোকিং সো বিউটিফুল….”(নৌশিন)
……গল্প করতে থাকে দু জনে…..
“বৌ মা….তুমি এখানে আমি তোমার রোম থেকে ঘুরে আসলাম..পাই নি যা ভেবেছি তাই হলো প্রাপ্তির কাছে”(সাদাদের মা)
“জ্বি মা…একা ছিলাম তো তাই প্রাপ্তির কাছে এসেছি একটু”(নৌশিন)
“হুম..জেঠি…জানো ভাবী আজকে আমায় ফোন গিফ্ট করেছে আর এখন কি পড়বো সেটাও ঠিক করে দিল…একদম পাক্কা ভাবী”(প্রাপ্তি)
“কি???তোর আবার ফোন???তোর কত ফোন লাগে…আর বৌ মা এই বিচ্ছু মেয়েকে বেশি মাথায় তুলো না খুব ফাজিল এই মেয়ে”(সাদাদের মা)
“জেঠি তুমিও..😞”(প্রাপ্তি)
“☺☺☺”(নৌশিন)
“হয়েছে আপনার আর মুখ গোমড়া করতে হবে না….নিচে আয় খেয়ে যা…বৌ মা চল সকালে তো একটা লুচি খেয়েছো মাত্র….আমি গেলাম তাড়াতাড়ি এসো”(সাদাদের মা)
“আচ্ছা যাও আসছি আমরা”(প্রাপ্তি)
…..সাদাদের মা নিচে চলে যায়….
“ভাবী চল…খুব খুদা লাগছে আমার”(প্রাপ্তি)
“সাদাদ তো এলো না এখনো..”(নৌশিন)
“তুমি কি আদি কালের বৌ দের মতো বরের জন্য ওয়েট করে থাকবে নাকি এখন?”(প্রাপ্তি)
“না সেটা না…অনেক ক্ষণ হলো আসছে না তাই বললাম”(নৌশিন)
“আচ্ছা চল যাই আগে নিচে…ভাইয়া এখনি চলে আসবে-নামাযেই তো গেছে মসজিদ জাস্ট ৩ মিনিটের পথ,এসে যাবে….সো ডোন্ট ওরি চলো…”(প্রাপ্তি)
“ওকে চল”(নৌশিন)
….নিচে নামতেই সাদাদ বাসায় ঢুকলো…”বললাম না চলে আসবে এক্ষুনি”(প্রাপ্তি)
“ছোট বৌ মা,এসো জলদি এসো…..তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও তুমি…সাদাদ বসে পড় তুইও….প্রাপ্তি বস বস জলদি অনেক কাজ বাকী এখনো তাড়াতাড়ি সবাই লান্সটা করে নাও”(সাদাদের মা)
…….সবাই লান্স করছে…..নৌশিনের এক পাশে প্রাপ্তি অন্য পাশে সাদাদ…. সামনে সকাল বেলার ঐ মেয়টা ভাবীর সাথে যে রোমে ডুকেছিলো-নৌশিন ভেবেছিল সাদাদের কোনো বোন…পড়ে জেনেছে মেয়েটা সাদাদের বড় বোনের ননদ……আর ঐ মেয়েটার পাশ ঘেষেই সাদাদের ভাবী,ভাই,বাবা সবাই একে একে বসেছে….শুধু সাদাদের মা আর কাকী বসে নি ওরা সার্ভ করে দিচ্ছে….
“কি ব্যাপার নৌশিন…তুমি চিংড়ি খাও না??”(প্রাপ্তির মা)
“আসলে কাকী…আমার চিংড়ি তে এলার্জি তো তাই”(নৌশিন)
“আগে বলবা তো….”(প্রাপ্তির মা)
“মা ওকে অন্য ডিস দাও…”(সাদাদের ভাবী)
“হুম…..”…বলেই কাকী নৌশিনের প্লেটে গুরুর গোসতের পিস দিতে যায়…..তখনি….”ইইই….নানা না…আমি গুরু খাই না”(নৌশিন)
“কি রে…মা তোর তো দেখছি খাওয়া দাওয়ার অবস্থা খুব খারাপ..সকালে একটামাত্র লুচি খেলি দেখলাম আর এখনও তে কিছু খাচ্ছিস না”(সাদাদের বাবা)
“ঐ চুপচাপ খাও সব…কাকী দাও তো গুরু ওর প্লেটে”(সাদাদ)
“ইননন না….আমি খাব না তাহলে…বমি আসে আমার-কেমন একটা গন্ধ😒😒…”(নৌশিন)
“আচ্ছা ছোট তাহলে থাক ওটা দিস না….ওকে মুরগি টা দে….মুরগি খাস তো নাকি???”(সাদাদের মা)
“হুম..”(মাথা নাড়িয়ে)
“আজব-ভাবী তুমি তো একটা জিনিস দেখি এত্ত কম খাও😃😃”(প্রাপ্তি)…..
“মে বি ডায়েড কন্ট্রোল করো তাই না??”(রিদি)(সসদাদের বড় বোনের ননদ)
“না..এমনি'(নৌশিন)
….এই মেয়টা নৌশিনের সাথে কেমন জানি অন্য রকম করে কথা বলে…..যাই হোক সেটা ওর ব্যাপার…..লান্স শেষে যে যার রোমে…..
“এই কবুতর”(সাদাদ)
“কবুতর…..”(সাদাদ)
“কি? কোথায় কবুতর??”(নৌশিন)
“এই যে আমার সামনে….”(সাদাদ)
“মানে কি???আমাকে হঠাৎ কবুতর ডাকলে?”(নৌশন)
“তো কি হাতি ডাকবো??”(সাদাদ)
“তোমার সব সময় কারও না কারও পেছনে লাগতে হবে না হলে তোমার পেটের ভাত হজম হয় না”(নৌশিন)
“হতেও পারে…তোমার মতো তো কবুতরের দানা খাই না যে এক নিমিষেই হজম হয়ে যাবে”(সাদাদ)
“ভালো হয়েছে-আমার যতটা ধরে পেটে ততটাই খাই”(নৌশিন)
“আরে বাবা…এমন করে খেলে শরীর খারাপ করবে তো….সকালে একটা মাত্র লুচি…আর এখন হাফ প্ল্যাট ভাতও তো খেলে না আর না কোনো সবজি খেলে অনলি আধাটুকরা মুরগির গোসত…সেটাও ঠিক মতো না…এমন করলে তো পেসার ল হতে থাকবে….খাওয়া প্রেকটিস করা লাগবে জান…”(সাদাদ)
“খাই তো☺….”(নৌশিন)
“আমি জানি সোনা তুমি খাও…(নৌশিনকে বুকে নিয়ে শুয়ে)….বাট ইউ নিড মোর..”(সাদাদ)
“আচ্ছা…খাবো বেশি বেশি করে….হ্যাপি??”(নৌশিন)
“উম হু….শুধু বললে না খেয়ে দেখালে পরে হ্যাপী হবো..”(সাদাদ)
“ওকে রাতে দেখো☺”(নৌশিন)
“হুম”(সাদাদ)
(নৌশিনের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সাদাদ)
“এই চুল এতো স্ফট কেন?”(সাদাদ)
“তো তোমার চুলের মতো হবে নাকি?”(নৌশিন)
“না তা হবে না…তবুও চুলগুলোতে কেমন জানি একটা মায়া মায়া ভাব রে বউ”(সাদাদ)
“উফ সাদাদ….তোমার সবকিছুতে একটু বেশি বলা স্বভাব হয়ে দাড়িয়েছে আমার ব্যাপারে”(নৌশিন)
“সে যাই হোক….আমার বোন একটা ফোন আবদার করে ৩ ঘন্টার মাঝেই পেয়ে গেলো…আর আমি বেচারা??”(সাদাদ)
“ও মা….তোমাকে কি ফোন কিনে দিব না কি এখন….প্রাপ্তির বর্তমানের টার চেয়ে কস্টলি ফোন দিতে বলেছিলো-ছিলো টাকা তাই দিলাম…বাট তোমার তো এখানকার টাই ঐ অর্ধেক আপেল….ভাই আমার না এতো টাকা নেই যে তোমাকে আমি এর চেয়ে ভালো আই ফোন কিনে দিবো….৯৫ হাজার টাকা দিয়ে তো কিনেছো এর চেয়ে লেটেস্ট টা কিনতে গেলে আমার ১+ লাগবে…সেটা আমার কাছে নেই সো আবদার করেও লাভ নেই”(নৌশিন)
“আরে…মেম……আমি কিন্তু এই ফোন টোন কিছু আবদার করি নি ওকে..??”(সাদাদ)
“তাই তো বলছিলে”(নৌশিন)
“না…গ্ফিটের কথা বলছিলাম…..আর পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা গ্ফিট টা তুমি আমাকে দিবে”(সাদাদ)
“কিহ????কি জিনিস??”(নৌশিন)
“”আমাদের বেবি☺☺”(সাদাদ)
…নৌশিনের কেমন যেন লজ্জা লাগে কথাটা শোনে…”যাও…কি সব কথা তোমার”(নৌশিন)
“হুম সব সত্যি কথা… বাট মেম এতো আগে না…তোমার শরীরের যা অবস্থা….এই অবস্থায় বেবি নিলে কপালে কষ্ট আছে….আর IBA তো এটাই তোমার শেষ সেমিস্টার…MBA কমপ্লিট করো পরে আমার একটা ফোট ফোটে সোনা বাবু চাই”(সাদাদ)
…নোশিন সাদাদের বুক থেকে মাথা তুলে…”না না।।।।সেটা শেষ হতে তিন বছর এখনো….আমি পারবো না….তার আগেই আমার চাই…”(নৌশিন)
“ইশ….বাবুর মা হওয়ার জন্য বসে আছো একদম…”(সাদাদ)
“হুম বসেই আছি…!আমার একটা বাবু দরকার তাই তোমায় বিয়ে করেছি না হলে করতাম না”(নৌশিন)
“তাই….তো আমাকে ছাড়া অন্য কাউ কে করলেও তো বেবি পেতে…??”(সাদাদ)
“জ্বি না…আমার তো তোমার বেবি ই চাই”(নৌশিন)
“☺☺…ওকে……বাট এমবিএ কমল্পিট করেন তারপর”(সাদাদ)
“একদম না…আমি তার আগে বেবি নিবো”(নৌশিন)
“চড় চিনো….নিজের শরীরেরর যা শ্রী….আগে ডেভলপ করো এটা….তার পর…. “(সাদাদ)
“সেটা পরে দেখা যাবে…..”(নৌশিন)
“এই মাথায় আর হাত দিও না…”(নৌশিন)
“কেন??আমি জাস্ট চুলে হাত লাগাচ্ছিলাম….দুষ্টামি তো করছি না তাতেও সমস্যা??”(সাদাদ)
“আরে না…এমনি বুকে শুয়ে আছি আরামের জায়গা…তারপর তুমি মাথায় হাত বুলাচ্ছো এতো আরামে ঘুম চলে এসেছে আমার তাই বললাম”(নৌশিন)
….সাদাদ এক লাফে শুয়া থেকে ওঠে বসে নৌশিনকে নিয়ে…”কি হলো???”(নৌশিন)
“না আপনার ঘুমাতে হবে না এখন….যা ঘুম তোমার…এখন ঘুমালে সন্ধ্যার পর উঠবেন আপনি…”(সাদাদ)
“☺☺☺☺☺”(নৌশিন)
…..দরজায় নক…..
“কে??”(সাদাদ)
“আমি…..রিদি”।
“এসো…দরজা লক করা নেই…আসো ভেতরে”(নৌশিন)
“হুম….তোমাকে আন্টি নিচে ডাকছে সেটা বলতেই আসলাম”(রিদি)
…”ও আচ্ছা….”(নৌশিন)
….নৌশিন ওর শাশুড়ির কাছে চলে যায়……
“তা বউ পেয়ে তো খুব আছো…”(রিদি)
“কি বলতে চাও??”(সাদাদ)
….রিদি খাটপ সাদাদের কাছে গিয়ে বসে……
“কি এমন আছে ওর যা আমার নেই???”(রিদি)
“রোম থেকে যাও….”(সাদাদ)
…..রিদি সাদাদের শার্টের কলার ধরে নিজের কাছে আনে….”কেন যাব????কি এমন আছে ওর যা আমার নেই….ওর থেকে কি আমি কম সুন্দরী…ওর থেকে কিসে কম আমি??”(রিদি)
…সাদাদ নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়…”শোনো…এরপর থেকে তুমি আমার কাছেও আসবা না…আর কি যেন বললা কম কিসে???আমি ওকে ভালোবাসি…তোমাকে না….এটাই মেন কারণ তোমাকে বিয়ে না করার”(সাদাদ)
“কেন??? আমায় বাসা যায় না?”(রিদি)(কাঁদো গলায়)
“গেট লস্ট ফরম মাই রোম”(সাদাদ)(চেঁচিয়ে)
“যাচ্ছি….বাট একদিন তুমি ঠিক ই বুঝবে নৌশিনের চেয়ে আমি বেটার অপশন ছিলাম তোমার কাছে”(রিদি)
“হেয়য়…নৌশিনের সাথে নিজের কমপেয়ার করো না প্লিজ…নৌশিনকে অপমান করা হবে তাহলে”(সাদাদ)
….রিদি হুড় হুড়িয়ে রোম থেকে রেগে বেরিয়ে যায়…..
“থার্ট ক্লাস একটা….”(সাদাদ)
“মা…ডাকছিলে আমায়?”(নৌশিন)
“হুম…মা আয়…..”(সাদাদের মা)
“দেখ তো কোন গুলো পরবি আজ??”
“মা-এতো গহনা..??কাল তে পরলাম..আজও এতো…ভারী ভারী লাগে😒….আমি পরবো না এতো”(নৌশিন)
“শোনো মেয়ের কথা…..আচ্ছা কালকের মতো এতো না পরলেও হবে আজ…..তবুও তো কিছু কিছু পরতে হবে….পার্লারে ফোন করেছিল বড় বৌ মা-ওরা আসছে…তুই দেখ কোনগুলো পরবি….আর না হলে সব গুলো নিয়ে যা…সাদাদকে বল বেছে দিতে”
“না মা…তুমিই বেছে দাও”(নৌশিন)
“আচ্ছা….(সব গুলো গহনা পড়িয়ে পড়িয়ে দেখছেন)…..বাহ্ এটা তো বেশ মানিয়েছে-যা এটা নিয়ে যা-আর নে এগুলোও নে….হাতের সবগুলো পরবি কিন্তু…আর কালকে বরণের সময় তোর কাকি যেটা দিলো ওটা কিন্তু তোর দাদী শাশুড়ীর গহনা….বাড়ির ছোট বউকে দিয়েছিলেন ওনি…প্রাপ্তির মায়ের প্রাপ্তি ছাড়া আর কেউ নেই তাই ঐ গহনা তোর…সেটাও পড়বি”
“ওফফ….তোমরা না আমাকে গহনা পড়াতে পড়াতে শেষ করবে”(নৌশিন)
“এই দু-দিন মা…..পরে কম কম পরিস যা”
“আচ্ছা…যাচ্ছি”
“সোনা মা আমার☺☺….যাও…”
সাদাদ একটু রেগে আছে রিদির উপর…মেয়েটা আস্ত একটা ফাজিল….
…..নৌশিন শাশুড়ির দেওয়া শাড়ি আর গহনা গুলো নিয়ে নিজের রোমে যাচ্ছে এমন সময় রিদি চা নিয়ে নিচে নামছে……হঠাৎ নোশিনের সাথে ধাক্কা লেগে যায়…চা টা পুরো টাই নৌশিনের হাতে থাকা শাড়ির ওপর পরে…..
“ওহ্ সরি…সরি…দেখি নি…প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড”(রিদি)
…নৌশিন কি বলবে শাশুড়ির দেওয়া শাড়ি টা নষ্ট হয়ে গেলো যে….
“না না ঠিক আছে ব্যাপার না-ু্ইটস এ এক্সিডেন্ট “(নৌশিন)
“ওকে।।☺☺”(রিদি)
……নৌশিন মুখ গোমড়া করে রোমে যায়…….সাদাদ শুয়ে আছে……..নৌশিন তাড়াতাড়ি করেই সাদাদের কাছে যায়….সাদাদ কপালে হাত ওল্টো করে দিয়ে শুয়ে আছে…..
“সাদাদ…তুমি কি ঘুমিয়ে পড়লা?”
“নাহ।।।।”
“একটু ওঠো না…প্লিজ….একটা প্রব”
“কি??”(সাদাদ ওঠে বসে)
…..নৌশিন শাড়িটা সাদাদের সামনে ধরে….
“লোক…মা আমাকে শাড়িটা পড়ার জন্য দিলো…বাট শাড়ি টা নষ্ট হয়ে গেলো😞”
“কি রে….চা বা কফি পড়েছে মনে হচ্ছে”
“হুম…আসার সময় সিরিতে রিদির সাথে ধাক্কা লেগে চা টা পড়ে গেছে…তাও পুরোটা শাড়িতে😞”
…..নৌশিন না বুঝুক সাদাদের বুজতে বাকী রইলো না’যে কাজটা রিদি ইচ্ছা করেই করেছে’…….সাদাদের ইচ্ছে হচ্ছে একটা থাপ্পর দিয়ে আসতে ঐ বদমাইশ মেয়েটাকে………..
“আচ্ছা…ব্যাপার না…একটাই তো আনে নি শাড়ি আর আরও আছে মে বি….এটা রাখো….”(সাদাদ)
“বাট সাদাদ…মা তো এটাই দিলো আমায়…আর ফার্স্ট টাইমেই মায়ের দেওয়া জিনিস টা নষ্ট করে ফেললাম😞”
“নৌশিন প্লিজ মন খারাপ করে না….আর এই দাগটা তো ওঠবেও না তোমার শাড়ি থেকে তা নাহলে ওয়াশ করা যেতো….সো তোমাকে অন্য একটা শাড়িই তো পড়তে হবে…..”
“মা কে কি বলবো আমি??”
“যা হয়েছে তাই বলবা…ওকে তোমার বলতে হবে না….আমি তো ছিলাম মার্কেটের করার সময়….বৌ ভাতের শাড়ি দুটো কেনা হয়েছে তোমার জন্য-এটা ভাবী চোজ করেছিলো তাই মা এটা দিয়েছে তোমায়….আর অন্যটা মা চোজ করেছিল….ঐ প্যাকটা মে বি আলমারীতেই রেখে গেছে ভাবী-দেখো নিচের দিকে….সেইম প্যাকেট……”
“ওকে দেখছি….”
….নৌশিন প্যাক থেকে শাড়িটা বের করলো…..”বাহ এটা তো বেশ”(নৌশিন)
“বাট সাদাদ…মা তো আমায় ঐ শাড়িটাই পড়তে বলেছিল…মা কিছু মনে করবে না তো??আর ভাবীর চোজ করা টা পড়ি নি বলে ভাবীও তো কষ্ট পেতে পারে😞”(নৌশিন)
“ধুর…ওরা তোমার মতো বাচ্চা না যে এই সহজ বিষয় টাকে বড় করে দেখবে…আমি তোমার হয়ে মা আর ভাবীকে সবটা বলবো নো চাপ”(সাদাদ)
“ওকে…প্লিজ মাকে একটু ভালো করো বলো যেন মা রাগ না করে”(নৌশিন)
“আরে করবে না…তুমি তো মায়ের দেওয়া শাড়ি ই পড়বে…মা বরং বেশি খুশি হবে তুমি এটা পড়লে..”
……আবার দরজায় নক……
“নৌশিন আসবো”(ভাবী)
“হ্যাঁ…ভাবী এসো…..”(নৌশিন)
“বলছিলাম…পার্লার থেকে লোক এসে গেছে…তুমি রেডি হয়ে নাও”(ভাবী)
“ভাবী…শোনো না….’নৌশিন সবটা বলে দিলো যেন ভাবী মন খারাপ না করে'”
“আরে পাগলী সিম্পল বিষয় এটা….তুমি এটাই পড়…ডোন্ট ওরি–আমি কিছু মনে করি নি আর মাও করবে না”(ভাবী)
…সাদাদ বাইরে যা তুই…আপনারা আসুন ভেতরে….
দুজন মেয়ে ঘরে ডুকলো…সাদাদ আর ভাবী বের হয়ে যায়…..
প্রায় দেড় ঘন্টা পর সাজ কমল্পিট করে ওরা…..যদিও বৌ ভাতে এতো সাজে না…বাট নৌশিনের যে লম্বা আর ঘন চুল সেটা ঠিক করতেই হাপাতে হয় মেয়ে দু টোর…বিয়ের দিনও এমন হয়েছিল….শাড়ি আর সাজাতে যে সময় লেগেছিল তার চেয়ে বেশি সময় লেগেছিলো চুল বাঁধতে….
“বাহ্…মেম আপনার চুলগুলো বেশ ছিলো….এতো ঘন প্লাস সাইনি চুল খুব কম দেখা যায়…যদিও ঠিক করতে টাইম টা বেশি লাগলো বাট ইউ লোকিং সো বিউটিফুল”(পার্লারের মেয়টি)
“আরে যে লম্বা চুল আমার তো হয়রান লাগছিলো মেম”(অন্য মেয়েটি)
“☺☺☺…আমার চুলের জন্য তোমাদের কষ্ট করতে অনেকটা”(নোশিন)
“আরে ম্যাম না,ভালো লাগে এমন চুল বাঁধতে যদিও টাইম+খাটনি হয় তারপর রেডি হয়ে গেলে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে আমাদের মাঝে”
….দরজায় নক…..
“আপনাদের হলো??”(প্রাপ্তি)
“একটু দরজা টা খুলবে প্লিজ”(নৌশিন)
“সিউর ম্যাম-আমাদের কাজ তো শেষ”
…..প্রাপ্তি ভেতরে এসে…..
“😱😱😱😱😱আ…. এই কে আপনি???”
“☺☺”(নৌশিন)
“ভাবী…আমার মাথা ঘুরছে”(প্রাপ্তি)
“ম্যাম তাহলে এবার আমরা আসি?”
“হুম…এসো”(নৌশিন)
“ভাবী….তোমাকে পুরো অন্য রকম সুন্দর লাগছে…বারবি ডলের মতো….দাঁড়াও আমি ভাইয়াকে ডেকে আনছি”(প্রাপ্তি)
…প্রাপ্তি সাদাদকে ডাকতে চলে যায়…নৌশিন পেছন থেকে ডাকলেও শোনে নি….
…সাদাদ ড্রয়িং রোমে বসে টিভি দেখছিলো….
“ভাইয়া….চলো চলো..”(প্রাপ্তি)
“কোথায়?”(সাদাদ)
“তোমার রোমে”(প্রাপ্তি)
“সাজা শেষ??দেড় ঘন্টা ধরে বসে আছি….এতক্ষণে তো একটা অপারেশন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা…আর সাজ হয় না ওদের”(সাদাদ)
“হয়ে গেছে।।।চলো”(প্রাপ্তি)
“ওয়েট….ভাবী…ভাবী…”(সাদাদ)
“কি??বল…ডাকছিস কেন???তাড়া তাড়ি বল আমি রেডি হচ্ছিলাম”(ভাবী)
“হায় কপাল…তোমরা যে কি এত রেডি হও বুজি না আমি…একজন তো দেড় ঘন্টার বেশি নিলো রেডি হতে”(সাদাদ)
“এই তোর কি??কি বলবি তাড়াতাড়ি বল..”(ভাবী)
“হুম….পার্লারের মেয়েরা চলে গেছে?”(সাদাদ)
“হুম…তুই ওদের দিয়ে কি করবি?”(ভাবী)
“ভাইয়া তুমিও সাজবে নাকি?”(প্রাপ্তি)
“চুপ…বাজে কথা বন্ধ কর তোর”(সাদাদ)
“পেমেন্ট করা হয়েছে ওদের??সেটা জানার জন্য বললাম”(সাদাদ)
“হ্যাঁ..হ্যাঁ….আমি আগেই করে দিয়েছি….আমি গেলাম…তোরা যা রেডি হয়ে নে”(ভাবী)
“ভাইয়া তুমি রোমে যাও…আমি গেলাম টাটা”(প্রাপ্তি)
…..নৌশিন নিজেকে আয়নায় দেখছে….কাল বিয়ের সাজটা একটু অন্য রকম ছিলো বেশি বেশি গহনাতে ওর নিজেরি যেন কেমন লেগেছে তার উপর আবার এখানে জার্নি করে আসতে আসতে অবস্থা মোটামোটি খারাপ ছিলো..কালের শাড়িটা লাল টুকুকে একটা বেনারসি ছিলো…আর আজকের টা লাল নয়…গোালপি রংএর একটা শাড়ি সাথে অল্প গহনা আর সাজটাতে দারুণ লাগছে দেখতে মেয়টাকে…….সাদাদ রোমে ডুকেছে নৌশিন খেয়াল করে নি-পেছনে হাত দিয়ে হারের লকটা ভালো করে দিচ্ছিল….সাদাদ পেছন থেকে দেখেই বুজে গেছিলো নৌশিনকে কেমন দেখাচ্ছে আর আয়নার ওর মুখটাও দেখা যাচ্ছে অনেকটা…সাদাদ দরজা লক করে নৌশিনের পেছনে এসে দাঁড়ায়…নৌশিনের হাত সরিয়ে নিজে হারে হাত লাগায়….নৌশিন বুজতে পারে নি কেউ এসেছে তাই প্রথমে চমকে ওঠে…আয়নায় তাকাতেই সাদাদকে দেখতে পায়….
“আমি ঠিক করে দিই…”(আয়নায় নৌশিনের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে)
….নৌশিন বুঝে যায় সাদাদ কিছু একটা করবে….নৌশিনের পিঠের কাছে মুখটা নিতই চলে আসতে চায়…. সাদাদ এক টানে নৌশিনকে নিজের বুকে আনে….কমড়ে হাত দিয়ে স্লাইস করে “কোথায় যাবে?”
“ছাড়ো…☺”
“একটু দেখি আগে-তারপর”
সাদাদ অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে নৌশিনের মুখের দিকে….নৌশিন সাদাদের দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পড়ে যায়…নৌশিন লজ্জায় চোখ নিচু্ করে ফেলে…..
“লজ্জা কেন পাও বলো তো??তুমি লজ্জা পেলে আমার যে ভাঙতে ইচ্ছে হয়”
“ধ্যাত….☺”
“☺☺…আমি কিছু করবো??☺”
“মানে???”(নৌশিন)
“হুম…না আমি কিছু করবো না তুমি কর আমি করলে তোমার সাজ টা নষ্ট হয়ে যাবে…তাই তুমি কিছু একটা কর”(সাদাদ)
“ছাড়ো..দরজা(দরজার দিকে লক্ষ্য করে)…..লক করে ডুকেছো তুমি?”(নৌশিন)
“প্রথমে করি নি তোমাকে দেখার পর করেছি…এখন তো আর কেউ দেখবে না সো করো তাড়াতাড়ি যা করার”(সাদাদ)
“কি করব??”
“কর না হলে কিন্তু আমি শুরু করবো পরে নিষেধ করেও লাভ হবে না”
“তুমি না….. ”
“যাই হই…..এখন আপনি আপনার কাজ টা করুন ”
….সাদাদ নৌশিনকে কমড়ে চাপ দিয়ে আরও কাছে আনে….
“কই কর…”(সাদাদ)
“ইশ…সাদাদ….আমি করলে লিপস্টিক লেগে যাবে…”
“আমি করবো??”(সাদাদ)
“এই না… তুমি শুরু করলে থামবে না☺☺…লিপস্টিক তো নষ্ট হবেই তার সাথে পুরো সাজটাও হতে পারে”
“বেশ-করলাম না তুমি কর একটু লিপস্টিক লাগুক ক্ষতি কি…☺”
….নৌশুন এগিয়ে যায়…পা একটু উচুঁ করে সাদাদের গালে আলতো করে চুমু দেয়…..
“আহ্…..মনে হলো একটা শিশির ভেজা গোলাপের পাপড়ি পড়লো গালে☺”(সাদাদ)
“এবার তো হলো…ছাড়ো এখন”(নৌশিন)
“কিছু করছি না তো থাক না একটু কাছে”(সাদাদ)
“রেডি হবে না???”
“হবো….পাঁচ মিনিট লাগবে…”(সাদাদ)
“কি পড়বে??”(নৌশিন)
প্রেমঘোর পর্ব ৭+৮
“আজ তো বিয়ে না রে-যে শেরোয়ানী পড়বো…গেস্ট রা তো আসবে তোমাকে দেখতে…আমি শুধু হাই হ্যালো করবো….”
“দুজনকেই দেখতে আসবে শুধু আমায় না…তবে বউ সাজে দেখবে আমায় এই যা…..আর কেমন মানিয়েছে আমাদের সেটা দেখবে..”
!!