প্রেমসুধা পর্ব ৪০

প্রেমসুধা পর্ব ৪০
সাইয়্যারা খান

রাত বিরাতে এহেন খবর দিয়ে পৌষ’কে আক্কার মা চক্কা বানিয়ে দিলো তৌসিফ। খবর দিলোও সে অদ্ভুত ভাবে। শিরোনাম বলে এখন বিস্তারিত বলছে না আর নাই জিজ্ঞেস করার সুযোগ পেলো পৌষ নিজে। অত বড়সড় খবর দেয়া মাত্রই পৌষ যখন ঝটকা খেলো তখনই তৌসিফ ওকে আটকে নিলো নিজের সাথে। গালে আঙুল ছুঁয়ে দিয়ে নরম স্বরে আবদার জুড়ে দিলো,

— তোমার আরজি কাল গ্রহণ হচ্ছে হানি এবার আমার আরজি শুনাই?
এ যেন কোন মহা আহবান নিয়ে এলো তৌসিফ। পৌষ মুহুর্তে বোকা বনে গেলো। চঞ্চলা মনটা যখনই একের পর এক প্রশ্ন করতে চাইলো তখনই বাঁধা পরলো তৌসিফে’র বাহুর ভাজে। চঞ্চল মনা কন্যার মন প্রাণ দেহ জুড়ে তখন বয়ে গেলো শুধু প্রেম আর প্রেম। পৌষ সাড়া দিলো গভীর ভাবে। সারাদিন ফটর ফটর করা পৌষ স্বামীর আদর পেলেই নেতিয়ে যায়। ঠিক যেন ঘাসের বুকে লুকিয়ে থাকা লজ্জাবতী গাছটা যাকে আলতো হাতে ছুঁয়ে দিতেই সে জুবে যায়। তৌসিফ এই বিষয়টা খুব উপভোগ করে অবশ্য। বউটা তার এমন মুহুর্তে তাকে সাপোর্ট করে। পারে না যদিও সে কঁচু তবুও যে সাড়া দেয় তাতেই বা কম কি?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তৌসিফ কৃতজ্ঞ স্বামী। সে জানে তার বউয়ের মন কখন কি চায়।
বাইরে আজ চাঁদ দেখা যাচ্ছে তবে আবছা। মেঘের মাঝে তারা আড়াল হয়েছে আজ। শরৎ কালটাও এবার খুবই ব্যাতিক্রম। এই শরীর ঝলসানো গরম আবার এই বৃষ্টি। বিকেল হতেই মন মাতানো বাতাস। রাত হতেই আবার তারা আদল বদলায়। চাঁদটা বেহায়ার ন্যায় হা করে তাকিয়ে থাকে। আবহাওয়ার উষ্ণতায় যখন হাজারো প্রেমিক স্বামী তার প্রিয়তমার প্রেমসুধা পানে ব্যস্ত তখনই চাঁদটা উঁকি দেয়। তার নজর থেকে আড়াল হতেই বদ্ধ ঘরে প্রেম বিনিময় ঘটে। বলা তো যায় না, ঝলসানো সেই রুটির মতো দেখতে ভরাট চাঁদটার যদি নজর লেগে যায়?

ফিসফিস করে কানে শব্দ এলো পৌষ’র। চোখ দুটো লেগে আসতে চাইলো বারবার কিন্তু ঘুমানো গেলো না। তৌসিফ দিলো না অবশ্য। পৌষ মুচড়ে সরতে চাইলেও লাভ হলো না। শক্ত বুকটার মাঝে সে খুব জটিল ভাবে আটকে আছে। তৌসিফ আচমকাই ওর ওর কপালে চুমু দিলো। ছোট্ট একটা শ্বাস ফেললো পৌষ। তৌসিফ আদুরে ভাবে জড়িয়ে ধরলো ঠান্ডা উষ্ণ দেহটা। গভীর ভাবে আলিঙ্গন করে আদর মিশ্রিত স্বরে জানতে চাইলো,

— খারাপ লাগছে?
— উহু।
— ঘুমিও না হানি।
— আচ্ছা।

বলেই বুকের মাঝে ঘুমাতে চাইলো। তৌসিফ চেয়ে রইলো ওর পানে। এতটা ভালো ওর কপাল তা যেন বিশ্বাস হতে চায় না। ভাগ্য বড্ড সহায় হয়েছে ওর উপর। প্রথম বার জীবনে ধোঁকা খেয়ে তৌসিফ কিন্তু মোটেই ভেঙে পরে নি। পুরুষ মানুষ সে। শক্ত ভাবে গড়ন তার। সামান্য নারী ধোঁকা তাকে ভাঙতে সক্ষম নয়। অথচ কপাল গুনে এই পৌষ পেয়ে গেলো ও। ছলনা, কপটতা বা কলুষিত মন কোনটাই তার নেই। সে প্রেম বুঝে শুধু। একাকিত্ব বোঝে। সবসময় তোতাপাখির মতো কথা বলা পৌষটা কোথায় চুপ থাকতে হবে তাও বুঝে। পিয়াসী থেকে একদম ভিন্ন তার বুকে থাকা তোতাপাখিটা। এমন না তৌসিফ তুলনা করে। আসলে তুলনা করা সম্ভব না তবে ঐ যে মস্তিষ্ক এটা বারংবার তৌসিফ’কে জানায় সে কতটা অন্ধকারে ছিলো। টাকা পয়সা, সুখ কি না দিলো তবে ছলনাময়ী রইলো না। মূলত তার সুখ সয় নি। তৌসিফ তাচ্ছিল্যের সাথে বলে উঠলো,

— কুকুরের পেটে ঘি সয় না।
আধ ঘুমে থাকা পৌষ’র কানে ঢুকলো না। ঘুমটা যেন ফুঁস করে উঁড়ে গেলো। টেনে কোনমতে চোখটা খুলে বললো,
— আ..আমি ঘুমাই নি। জেগে আছি। কি করব?
আচমকা কথায় তৌসিফ ভ্রুঁ কুঁচকায়। মস্তিষ্ক ধরতে পারে না হঠাৎ কি হলো। যখনই বুঝলো পৌষ’র কথা তড়িঘড়ি করে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলো,
— তোমাকে বলি নি আমি হানি। আই ওয়াজ জাস্ট রিকল সামথিং। নাথিং রিলেডেট টু ইউ।
— ওহ।
ছোট্ট একটা উত্তর দিলো পৌষ যা সন্তুষ্ট করতে পারলো না তৌসিফ’কে। ভেতরে আচমকাই খারাপ চিন্তা এলো। ভুল বুঝলো কি ওর পৌষ ওকে?
পৌষ উঠতে চাইলেই তৌসিফ পেছন থেকে ধরে। পৌষ আস্তে করে বললো,

— পানি খাব।
— আমি দিচ্ছি।
পাশ থেকে এক গ্লাস পানি ঢেলে দিতেই তৌসিফ জিজ্ঞেস করলো,
— ক্ষুধা লেগেছে?
পৌষ উত্তর দেয়ার আগেই তৌসিফ লাইট জ্বালালো ওমনিই হলদেটে আলোয় জ্বলজ্বল করে উঠলো চারপাশ। চারপাশের সাদা এবং সোনালী রঙের দেয়ালটায় আভিজাত্য ফুটে উঠলো। পৌষ এক পলক তাকিয়ে বললো,
— উঠব।
তৌসিফ সময় গড়াতে দিলো না। ঝট করে বউটাকে কোলে তুলে নিলো। কপালের মাঝখানে গভীর মিষ্টি একটা চুমু দিয়ে বললো,

— একটা খারাপ মানুষের কথা মনে পরেছিলো তাই কথাটা মুখ দিয়ে বের হলো। এখন বলো তোমার মনটা খারাপ দেখাচ্ছে কেন? আদর কম পরলো নাকি?
পৌষ মুখটা প্যাঁচার মতো করলো। তৌসিফ গলাটা জড়িয়ে ধরলো আচমকা। তৌসিফ বউকে শক্ত করে ধরে আছে। আচমকাই তীব্র ব্যথায় কুঁকড়ে উঠলো ও। পৌষ গলা থেকে মুখটা সরিয়ে নিয়ে পুণরায় চুমু দিলো জখম করা স্থানে। এক পাটি দাঁত বের করে হেসে আদর মিশিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— খারাপ লাগছে জামাই?
চালাক তৌসিফ মুহুর্তেই ধরে ফেললো কাহিনি। পৌষ’র গলায় নজর দিতেই দেখলো লাল লাল ছোপ ছোপ দাগ। বউটাকে আদর সে মন প্রাণ খুলেই করে তাই বলে বউটা কি সুন্দর প্রতিশোধ নিলো। তৌসিফ বিনিময়ে পৌষ’কে বুকে চেপে ওয়াশরুম ঢুকতে ঢুকতে বললো,

— না তো খারাপ লাগছে না।
— তাহলে আরেকটা দেই?
অসহায় চোখে তাকিয়ে বললো পৌষ। তৌসিফ ওর নাকটায় একটা চুমু দিয়ে বললো,
— একটা কেন একশটা দাও। আমিতো পুরোটাই তোমার। একদম আপ টু টো।
পৌষ লজ্জা পেলো বটে। বেহায়া লোক। লজ্জা দিলো পৌষ’কে। পৌষ ওর গালাটা জড়িয়ে রাখলো। পানির শব্দ শোনা গেলো বাইরে গেলে তার সাথে শোনা যাচ্ছে তৌসিফে’র পুরুষ শব্দে করা গুনগুন যা ইহকালের একমাত্র শ্রোতা পৌষরাত হক তালুকদার।

দুটো হাঁচি দিয়ে থামলো পৌষ। রাত এখন প্রায় বারোটার উপর। চুলের তয়লাটা খুলে মাথা মুছে নিলো পৌষ। তৌসিফ এখনও আসছে দেখে পৌষই বাইরে গেলো। কিচেনে শুধু মাত্র একটা টাউজার পরা তৌসিফ। নাভীর নিচে থাকা টাউজারটার ডুরি দুটো ঝুলে আছে। পেছন থেকে বড়ই সুন্দর দেখালো তাকে। হাতের মাসল গুলো ফুলেফেঁপে উঠেছে। চওড়া কাঁধের সুন্দর পুরুষ। পৌষ’র মনটা আন্দোলিত হলো। বলেকয়ে একখানা জামাই তার। মনটা মাঝেমধ্যে চায় বয়সে বড় এই জামাইটার কাঁধে ঝুলে থাকতে এতে মানুষ তাকে বান্দর বললেও সমস্যা নেই। আবার মাঝেমধ্যে মনটা চায় তৌসিফ’কেই নিজের কোলে বসিয়ে রাখতে আর বলতে, “আপনি সারাদিন এভাবেই থাকুন, আমি দেখব আপনাকে মন ভরে”।

পুরুষের প্রেম ভয়ংকর তবে নারীর প্রেম ভুবন ভুলানো। এই যে মনের গহীনে এত এত প্রেম কিন্তু পৌষ তা প্রকাশ করতে অপারগ। বড়ই আফসোসের বিষয় এটা।
এক পা দুই পা করে এগিয়ে গেলো পৌষ। পেছন থেকে গালটা রাখলো তৌসিফে’র উন্মুক্ত পিঠে। তৌসিফের চলন্ত হাতটা তখন থেমে। বুয়া আজ পৌষ’র জন্য রান্না করে নি। মূলত রান্নার ঐ বুয়া আজ আসে নি। তার স্বামী অসুস্থ। দুই দিনের ছুটি চেয়েছে। কাল হয়তো চলে আসবে তাই রান্নাটা এখন তৌসিফ ই করছে। নুডলসে মশলা দিয়ে তৌসিফ অনুভব করলো পিঠের গালটাতে। পৌষ আস্তে ধীরে রয়েসয়ে নিজের শরীরের ভরটাও তৌসিফে’র উপর দিয়ে দিলো। তৌসিফ চুলার গ্যাসটা একদম কমিয়ে দিলো। পেছন দিকে হাত দিয়ে ধরলো পৌষ’কে অতঃপর নিজের কাছে এনে বুকে টেনে নিলো। ভেজা চুলে হাত গলিয়ে দিলো অতি যত্নে। ডাকলো নরম স্বরে,

— পৌষরাত?
— হু।
— বেশি খারাপ লাগছে?
— উহু।
— দূর্বল দেখাচ্ছে হানি।
— মাথাটা গোল গোল ঘুরছে। উঠে দাঁড়াতেই সব ঘোলা লাগলো।
তপ্ত শ্বাস ফেলে তৌসিফ। আজ দুপুরে মেডিসিনটা মিস গেলো। তৌসিফে’র একদমই খেয়াল ছিলো না আর পৌষ নিজে কোনদিন সেঁধে নিজের খেয়াল রাখবে না।
পৌষ দুই হাতে জড়িয়ে রাখলো তৌসিফ’কে। পুরোটা তৌসিফ ওর ছোট বাহুতে আটে না তাই যতটুকু পারলো হাত মেলে দিলো। তৌসিফ একটা বড় প্লেটে নুডলস সার্ভ করলো। অতঃপর জিজ্ঞেস করলো,

— হাঁটতে পারবে? কোলে তুলি?
— পারব তো।
তৌসিফ মানলো না অবশ্য। পৌষ’কে পাজা কোলে তুলে নিয়ে বললো,
— প্লেট হাতে নাও।
হাত বাড়িয়ে নিলো পৌষ। তৌসিফ হাটা দিলো রুমে। পৌষ’কে খাটে বসিয়ে নিজেও পাশে বসলো। চামুচে নুডলস পেঁচিয়ে মুখে দিলো পৌষ। ঝাল ওর পছন্দের। লোকটা জানে সেটা তাই তো ঝাল দিয়ে বানিয়েছে। তৌসিফে’র রান্নার হাত ভালো।
পরবর্তী চামুচটা তৌসিফে’র সামনে দিতেই তৌসিফ মুখ খুলে খেয়ে নিলো। খেতে খেতেই বললো,

— তোমার সাথে থাকতে থাকতে অভ্যাস আমারও না হয়ে যায় হানি।
— হলে হবে।
— আমার বডি নষ্ট হয়ে যাবে তো।
— হোক তাতে কি? কাকে শো অফ করবেন আপনি হ্যাঁ? কাকে দেখাবেন এই পেটানো শরীরটা? কি কথা বলুন। বলেন না কেন? নিশ্চিত আপনার মধ্যেই সমস্যা আছে নাহলে মেয়ে মানুষ আপনাকে দেখলেই কেন ইটিশপিটিশ করতে চাইবে?
তৌসিফ অবাক হলো। ও কি বললো আর পৌষ কি বুঝলো? রাগে গপাগপ গিলছে লুডুলস। তৌসিফ ভাবলো ওকে আর দিবে না কিন্তু নাহ। বউ এর তার মন বড় তাই তো রাগ করেও তার মুখের সামনে দিলো। তৌসিফ খেতে খেতে বললো,

— বডিটা তো তোমার জন্যই ঠিক রাখি।
চকিত দৃষ্টি ফেলে তাকালো পৌষ। সন্দেহের চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— মানে?
বলেই সুড়ুৎ করে লুডুলস টেনে নিলো।
— ইশ!
তৌসিফ এহেন শব্দ করতেই পৌষ না বুঝে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হলো?
— লুডুলসটা খেয়ে নিলে?
— তো?
— আমি নিতাম।

ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে পৌষ। তৌসিফ চামুচে নুডলস তুলে পৌষ’র মুখে দিলো অতঃপর ওখান থেকে নিজে একটা নিলো। পৌষ এই কাহিনি সিনেমায় দেখেছে। বাস্তব অভিজ্ঞতা যে এতটা সুন্দর হবে তা ওর জানার বাইরে। টুপ করে ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে তৌসিফ বললো,
— মেডিসিন খাবে কাল দুপুরে। আমি ব্যাস্ত থাকলেও খেয়ে নিও। আর হ্যাঁ তোমার ড্রেস কাল সকালে চলে আসবে।
— আপনি না বললেন বাসায়ই হবে।
— হবে তো।
— তাহলে আবার এসবের কি দরকার?
— একশ বার দরকার। আমার বউ সবচাইতে বেশি সুন্দর লাগবে। তার সৌন্দর্য আমি আজীবন দেখব৷ চোখ জুড়াব।
পৌষ হাসলো একটু তবে মুখে নিজের ভালোবাসাটা প্রকাশ করলো না।

সব গুছিয়ে বিছানায় এলো তৌসিফ। পৌষ’কে বুকে নিতেই একবার ভাবলো বাচ্চার কথা তুলবে কিন্তু পরক্ষণেই ভাবলো এভাবে শুকনো মুখে বাবু চাইলে কেমন দেখায়? এত বড় একটা উপহার তো এমনি এমনি চাওয়া যায় না। তৌসিফ একটু বন্দবস্ত করেই চাইবে।
পৌষ ওর বুকে আঁকিবুঁকি করছে আঙুল দিয়ে। পৌষ’র তাড়নায় তৌসিফ বলে উঠলো,
— উস্কানিমূলক ছোঁয়া দিচ্ছ কিন্তু হানি। পরে আমার দোষ দিও না কিন্তু।
— খারাপ লোক!
— আমি কি করলাম?
পৌষ মুখ ঝামটা মে’রে সরতে চাইলো। বলতে লাগলো,

— একটু আগে কি করেছেন হ্যাঁ? এখন আবার বলছেন? সরুন। ছাড়ুন আমাকে। আআআআআ ছাড়ুন বলছি। ধরবেন না।
— আরে আরে কি কোথায় যাচ্ছো? তোতাপাখি, এই দেখো আমি ভদ্রলোক হয়ে যাচ্ছি। আহা পৌষরাত। আচ্ছা বাবা আর জ্বালাব না৷
কিসের কি পৌষ থাকবে না। এদিকে তৌসিফ ও ছাড়বে না। শেষমেষ ওর বুকের মাঝেই আটকা পরলো তোতাপাখিটা। তৌসিফ সযত্নে তাকে বক্ষপিঞ্জরের মাঝে আটকে নিলো।

সকাল থেকে বিয়ের তোরজোর চলছে। সোহা রুম থেকে বের হয় নি এখনও৷ সেদিকে অবশ্য তৌসিফ মাথা মা’রছে না। সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে শুধু। তাওহীদ বা তৌফিক আদৌ আসবে কি না আসবে তা তাদের ব্যাপার। তৌসিফ বলার দরকার বলেছে। মিনু’কে ডাক দিতেই ও এগিয়ে এলো। তৌসিফ গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
— সোহা’কে বল ওর জন্য শাড়ী পাঠিয়েছে মেহেদী তাই কাল যেই লেহেঙ্গা এনেছে ওটা আজ না পড়তে।
মিনু মাথা নেড়ে চলে গেলো বলতে। রুমে বসে অবশ্য সোহা শুনেছে। বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে রইলো ও শাড়ীটার দিকে। লাল রঙের একটা জামদানী শাড়ী। কতই বা মূল্য হবে এটার? পাঁচ অথবা দশ হাজার অথচ সোহা বাসাতেই এরচেয়ে দামি পোশাক পরেছে। তার শাড়ীগুলো ব্যান্ডের কিন্তু এই শাড়ী দেখেই বুঝা যাচ্ছে নিউমার্কেট থেকে আনা। কোথায় বিয়ে দিচ্ছে তৌসিফ তাকে? কে সে যার বিয়ের জন্য বউকে এত কম দামি শাড়ী দেয়? সোহা গায়ে তুলবে তো দূর ছুঁয়ে ও দেখবে না।

প্রেমসুধা পর্ব ৩৯

রাগে ফুঁসতে থাকা সোহা জানলোও না কারো সারাদিনের খাটনির টাকা দিয়ে কেনা এই শাড়ী। হুট করে বিয়েতে এর থেকে দামি কিছু কেনার সামর্থ্য তার নেই। তার খুব শখের কিছু বিক্রি করে শাড়ীটা সে কিনেছে নাহয় মাসের শেষ দিকে একজন চাকুরীজিবী কোথায় পাবে টাকা?

প্রেমসুধা পর্ব ৪১