প্রেমের পাঁচফোড়ন পর্ব ৫+৬

প্রেমের পাঁচফোড়ন পর্ব ৫+৬
Afnan Lara

ম্যামের কাছে আসতেই ম্যাম টি-শার্টটা দিয়ে বললো এটা কাল যে ড্রেসই পরুক না কেন তার উপর দিয়ে পরতে
আহানা বললো ঠিক আছে
হুহ আরেকটা জামা কেন পরবো,শুধু টি-শার্ট পরলেই হয় তাই না বেব,আমি তো শুধু টি শার্ট আর জিন্স পরে আসবো
শান্ত এলিনার কথার প্রতিউত্তরে কিছু বললো না
রাগি লুকে আহানার দিকে তাকিয়ে আছে সে,তার মন আহানার দিকে
আহানা শার্টটা নিয়ে শান্তর দিকে না তাকিয়েই চলে গেলো ভার্সিটি থেকে

ওকে গাইজ আমি আজ বাসায় যাই আমার অনেক কাজ আছে
এটা বলেই শান্ত পকেট থেকে চাবি নিয়ে তাড়াতাড়ি বাইক স্টার্ট করে বেরিয়ে গেলো
বেব রাতে কল করলে রিসিভ করিও!
শান্ত মনে মনে ভাবলো ফোন অফ করে রাখবে
তাই ভেবে হেসে দিলো সে
আহানা হেঁটে টিয়াদের বাসার দিকে যাচ্ছে,শান্ত বাইক নিয়ে একদম আহানার সামনে পথ আটকিয়ে ব্রেক করলো
আহানা ব্রু কুঁচকে বললো কি সমস্যা আপনার?এরকম করেন কেন?আমার পথ থেকে সরুন,আমার আপনার মত এমন ফালতু কাজ নাই

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

শান্ত বাইক থেকে নেমে আহানার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বললো কি বললে তুমি?ফালতু কাজ?
তাই নয়তো কি আমি আমার কাজে যাচ্ছি আর আপনি আমার পথ আটকে রেখেছেন!এত ডিস্টার্ব করেন কেন আমাকে?
কে তোমাকে ডিস্টার্ব করতেসে?যাও না আমি তো তোমার হাত ধরে রাখিনি
আহানা চোখ বাঁকিয়ে পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ধরলো
শান্ত আহানার সামনে গিয়ে আবারও পথ আটকালো
কি হলো যাও?
আপনি আমার পথ আটকে রাখলে যাবো কি করে?

সাহস থাকলে গিয়ে দেখাও
আপনি চান টা কি?একটু খোলসা করে বলুন
তুমি আমাকে দেখলে এত ভাব দেখাও কেন,তখন টি শার্ট নিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমাকে দেখেও না দেখার ভান করসো কেন?
আজব তো!আমি কোন দিকে তাকাবো আর কোনদিকে তাকাবো না সেটা আপনাকে জিজ্ঞেস করবো?আপনার অনুমতি নিবো?আর আপনার মধ্যে তাকানোর আহামরি কিছু তো আমি দেখতেসি না
কি বললে?আমার জন্য ভার্সিটির সব মেয়ে পাগল আর তুমি আমাকে বলো আমার মধ্যে আছে টা কি?
হ্যাঁ পাগল বলেই,কোনো ভালো মানুষ আপনাকে পছন্দ করবে না,আপানকে নায়ক কম গুন্ডা বেশি মনে হয়

শান্ত খুব রেগে যাচ্ছে,এই মেয়েটা কেন এত বাজে বিহেভ করতেসে আমার সাথে
কি সমস্যা তোমার?একবার চড় মারো এখন আবার বড় বড় কথা বলতেসো!লজ্জা করে না তোমার?
আমি চড়ের জন্য মাফ চেয়েছি তাই বলে এই নয় যে আজীবন আপনার পা ধরে বসে থাকবো,আমার সময় নষ্ট করবেন না,পথ থেকে সরুন,আমার অনেক কাজ আছে

শান্ত একটু এগিয়ে গিয়ে বললো কি কাজ?কিসের কাজ?ছুটির পর তোমার আর কি কাজ থাকতে পারে?
ওহ হ্যাঁ বিএফের সাথে এক্সট্রা ক্লাস থাকতেই পারে
আপনার যা খুশি তাই ভাবুন,আমাকে যেতে দিন প্লিস
শান্ত কিছু না বলেই সানগ্লাসটা পরে নিয়ে বাইকে উঠে চলে গেলো
অসভ্য একটা লোক,হুদাই আমার পিছে লেগে থাকে,বেয়াদব,উগান্ডা কোথাকার!
আহানার মনে পড়ে গেলো ৩টা বেজে এসেছে,তাড়াতাড়ি করে দৌড় মারলো সে,টিয়াদের বাসায় যেতে আজ দেরি হয়ে যাবে শুধুমাত্র এই বেয়াদবটার জন্য

শান্ত বেডে বসে একটা বল নিয়ে দেয়ালে মারতেসে,আবার বলটা ব্যাক করে শান্তর দিকে আসতেছে,শান্ত সেটা ক্যাচ নিয়ে আবারও মারতেসে
রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার,মাঝে মাঝে বল মারার গতিটা বাড়িয়ে দেয় সে,যার কারনে বল দেয়ালে বাড়ি খেয়ে খুব জোরে শান্তর দিকে ব্যাক আসলো
শান্ত ক্যাচ করতে পারলো না,বলটা গিয়ে ওর হাতে আঘাত হানলো,শান্তর গায়ে কিছু ছিল না,আঘাতে লাল দাগ হয়ে গেছে হাতের উপরিভাগে,শান্তর রাগ আরও বেড়ে গেলো বলটা নিয়ে আরও জোরে মারলো সে

লাইফে আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে এমনটা করে নি,এমন বিহেভ করে নাই আমার সাথে,আমার একটা চাহনিতেই মেয়েরা পাগল হয়ে যায় আর সেখানে এই মেয়েটা এত ভাব দেখাচ্ছে আমাকে?
ফোনে vibration দেওয়া,সেই কখন থেকে বাজতেসে
শান্ত বলটা হাতে নিয়ে তাকিয়ে দেখলো এলিনার কল
একটু বিরক্তি নিয়ে নওশাদকে ডাক দিলো

নওশাদ?এই নওশাদ! একটু এদিকে আয় তো
কি হইসে বল
এলিনার ফোন,একটু handle কর,আমার মুড নাই ওর ন্যাকা কথা শুনার
নওশাদ ফোনটা নিয়ে রিসিভ করে বললো
আপনার ডায়াল কৃত নাম্বারটি এই মুহুূর্তে বন্ধ আছে,একটু পর আবার ডায়াল করুন,টুট টুট টুট
শান্ত হেসে দিয়ে নওশাদের দিকে তাকালো
নওশাদ দাঁত কেলিয়ে বললো তোরে বাঁচাইতে যত উপরে যাওয়া লাগে যাবো,ওকে বাই এখন আমার গফ কল দিসে পরে কথা হবে
শান্ত ফোন সাইলেন্ট করে রেখে দিয়ে আবারও বলটা দেয়ালে মারায় মন দিলো

জামা ধোয়ার সময় আহানা ভাবলো এরকম বেয়াদব ছেলে আমি আর ২টা দেখি নাই,মানে মুখ দিয়ে সুন্দর কথাই তার বেরই হয় না,কোন জন্মের শত্রু ছিলাম তার কে জানে!আমি চড় মেরে একদম ঠিক করসিলাম,দরকার হলে ফিউচারে আরও মারবো বেয়াদবটাকে

পরেরদিন ভোরেই আহানা রেডি হয়ে নিলো ভালো করে,তার নীল জামাটার উপরে টি শার্টটা পরে নিয়ে পাশে একটা নীল ওড়না ঝুলিয়ে বের হলো,একটা সাইড ব্যাগ নিলো তাতে ফোন,রুমাল আর এক বোতল পানি,টাকা তো লাগবে না তাই আর টাকা নিলো না
ভোর বেলা হেঁটে যেতে ভয় করছে আহানার,কিছু করার নাই হেঁটেই যেতে হবে ভার্সিটিতে,সব জায়গায় হেঁটে গিয়েই টাকা বাঁচায় আহানা,মাঝে মাঝে ক্লান্তি বেশি লাগলে রিকসা নেয় তাও অনেক দিন পর পর,ঘনঘন আহানাকে রিকসায় দেখা যায় না কখনও

ভোর ৫টা বাজে তখন
রোডে কোনো লোকজন নেই,কেমন একটা ভয় ভয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে,এ সময়ে আহানা কোনোদিন বের হয়নি আগে,আল্লাহর নাম নিয়ে বের হয়েছে সে
পাখিদের কিচিরমিচির শুরু হয়ে গেছে,এখন এমন শূন্য রোডে তাদের ডাকাডাকি টাই ভরসা
আবছা আবছা আলো চারিদিকে,পা দ্রুত চালিয়ে হেঁটে যাচ্ছে আহানা,এদিক ওদিক তাকানোর সময় নেই,তাকাতে গেলেই চোখে পড়বে কিছু বখাটে,শুধু শুধু ভয় পাওয়ার চেয়ে না তাকানোই ভালো
অবশেষে ভার্সিটিতে এসে পোঁছালো সে,৩টা বাস দাঁড়িয়ে আছে ভার্সিটির গেটের সামনে
সবাই এক এক করে বাসে উঠতেসে,আহানার চোখ গেলো শান্তর দিকে,ম্যামের দেওয়া টি শার্টটা পরে তার উপর দিয়ে পেস্ট কালারের একটা জ্যাকেট পরেছে সে,মাথায় কালো টুপি
চিল্লাই চিল্লাই বলতেসে ফার্স্ট ইয়ারের সবাইকে বাসে উঠতে
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছে সেদিকে
শান্ত এবার আহানাকে খেয়াল করলো
আরও জোরে চিল্লাই বললো এতটা irresponsible কি করে হতে পারো তোমরা?এত লেট করো কেন?তোমাদের জন্য কি আমরা সবাই লেট হবো?৫টায় আসতে বলা হয়েছে!এখন কয়টা বাজে?এতই লেট করার হলে বাপের গাড়ী করে যাইতা বাসের কি দরকার ছিল!

কথাগুলো আমাকে বললো বেয়াদবটা
আহানা রাগে ফুলতে ফুলতে বাসে উঠলো
রুপা দৌড়ে দৌড়ে আসতেসে
এই দাঁড়ান শান্ত ভাইয়া,আমার জন্য দাঁড়ান!
ওয়েট!বাস ফুল,তুমি সেকেন্ড ইয়ারের বাসে যাও
কিন্তু শান্ত ভাইয়া আমার বান্ধুবী তো এই বাসে আর আমিও তো ফার্স্ট ইয়ারের,সে হিসেবে তো আমার এখন এই বাসে উঠার কথা

তো?আর একটা সিট খালি আছে মাত্র,সেটা তোমাকে দিলে তোমার জন্য কি আমি বাসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাব?
লেট করসো কেন তাহলে?এখন আর জায়গা নেই বাসে
রুপা মন খারাপ করে চলে গেলো আরেক বাসে
শান্ত বাসে উঠে তার সিটের দিকে তাকিয়ে দেখলো একটা মেয়ে আর একটা ছেলে বসে দাঁত কেলিয়ে আছে ওর দিকে তাকিয়ে,তাদের দাঁত কেলানোর মানেটা হলো তারা বিএফ জিএফ একসাথে টাইম স্পেন্ড করতে চায় শান্ত যেনো পিছনে গিয়ে বসে
শান্ত ব্রু কুঁচকে পিছনের দিকে চলে গেলো
আহানা জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে
শান্ত দেখলো শুধু আহানার পাশের সিটটাই খালি

উফ এখন এই মেয়েটার সাথেই বসতে হবে আমাকে!
বাস এক টান দিতেই শান্ত গিয়ে আহানার গায়ে পড়লো
আহানা চমকে পাশে তাকিয়ে দেখলো শান্ত ওর নাক বরাবর
দুহাত দুপাশে রেখে নিজেকে সামলিয়েছে শান্ত নাহলে আহানার মুখের সাথে লেগেই যেতো একটুর জন্য
আহানা চোখ বড় করে বললো আপনি!এখানে?
শান্ত আহানার কথায় কান না দিয়ে ঠিক হয়ে ওর পাশের সিটে বসে গেলো

আমি আপনার সাথে বসবো না,উঠুন আমি আরেক সিটে গিয়ে বসবো
শুনো অন্য সিট খালি হলে আমি তোমার সাথে এখন বসতে আসতাম না,ঢং!
আহানা মাথা উঁচু করে সামনের সিটগুলো দেখলো সব ফুল
তারপর বিড়বিড় করে একটু চেপে গিয়ে বসলো
শান্ত নিজের ফোন নিয়ে গান প্লে করে হেডফোনটা কানে গুজে নিলো
আহানা জানালা দিয়ে ভোরের ঢাকা দেখতেসে,কি সুন্দর,তেমন কোনো গাড়ী নেই,নেই কোনো যানজট,কি ভালো লাগতেসে আহানার,কতদিন পর ঘুরতে বের হয়েছে সে,একজন দুজন লোক রোড পরিষ্কার করতেসে
একটা গাছ থেকে কতগুলো পাখি কিচিরমিচির করতে করতে আরেকটা গাছে গিয়ে বসতেসে,আহানা সেটা দেখে হাসতেসে
শান্ত চোখ বন্ধ করে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলো
সেতু থেকে নামতে গিয়ে বাস একটা ব্রেক করতেই
আহানা গিয়ে সামনের সিটের সাথে জোরে একটা বাড়ি গেলো

আহহহ!!
শান্ত শব্দ পেয়ে জেগে চোখ মেলে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো,তারপর মাথাটা একটু বের করে সামনে তাকিয়ে দেখতে পেলো বাস থেমে আছে সামনে কিছু লোক জড়ো হয়ে বাসের ড্রাইভারের সাথে ঝগড়া করতেসে,আর খারাপ ভাষায় গালি গালাজ করতেসে
শান্ত আবার কানে হেড ফোন গুজতে গুজতে পাশে তাকাতেই দেখলো আহানা মাথা ঘষতেছে হাত দিয়ে

বাসে চড়তে পারে না আবার পিকনিকে যায়,ঢং যত্তসব!
কথাটা শুনে আহানা রেগে পাশে তাকালে শান্তর দিকে
কি সমস্যা আপনার?আমি কি বলেছি আমার মাথায় মলম লাগাই দেন?
শান্ত আহানার কথা উপেক্ষা করে আবারও চোখ বন্ধ করে গান শুনায় মন দিলো
আহানা মনে মনে শান্তকে বকে বাইরের দিকে তাকালো
বেশ লাগতেসে,হালকা হালকা রোদ উঠতেছে
রোডের দোকানপাট নজরে আসতেসে স্পষ্ট,কেউ কেউ দোকান খুলতেসে,কেউ বা খুলে ফেলেছে,আবার অনেকেই খোলে নি

মনে হয় আরেকটা সেতু আসতেসে,আহানা ভয় পেয়ে শক্ত করে বাস ধরে রেখেছে আগে থেকেই
তাও বিরাট আরেকটা ধাক্কাই আহানার হাত স্লিপ খেয়ে আবারও সামনের সিটের সাথে বাড়ি খাওয়া ধরতেই সে
চোখ বন্ধ করে ফেললো সাথে সাথে
কিন্তু কই ব্যাথা তো পেলাম না
আহানা চোখ খুলে দেখলো একটা হাত এসে ওর সামনে দিয়ে গিয়ে জানালা ছুঁয়ে রেখেছে,এই হাতের জন্যই সে ব্যাথা পায়নি,হাতটা শান্তর
আহানা ব্যাথা পাবে বলে শান্ত তখন সাথে সাথে তার হাত দিয়ে দিছিলো আহানার সামনে
শান্তর হাতের কারণে আহানা আর সামনে সিট পর্যন্ত যায়নি,ব্যাথাও পায়নি
আহানা পাশে তাকাতেই শান্ত সাথে সাথে তার হাতটা সরিয়ে ফেললো

উফ কেন যে এসব uncultured মেয়েদের সাথে বাসে উঠলাম!
আপনাকে আমি ধরে রেখেছি নাকি,গিয়ে আরেক সিটে বসেন যান,আর সিট না পেলে এক কাজ করেন একটা মেয়েকে উঠিয়ে সিট বদল করেন,তার সিটে আপনি বসেন তাকে এনে এখানে বসান
তোমার কথায় চলবো আমি?এখানে সব কাপল বসেছে,নাহলে তোমার সাথে বসার কোনো ইচ্ছা নাই আমার,এত বকবক করে আমার মাথা খাবা না একদম
আহানা আবারও বিড়বিড় করে জানালার দিকে ঘুরে বসলো,বাতাসে ঘুম এসে যাচ্ছে তার

মনে হয় ৯টা বেজে গেছে,রোডে মানুষের সমাগম বেড়ে আসতেসে
বাস থেমে আছে কারন সামনে দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে,কোন রুট এটা আহানা জানে না,এদিক ওদিক তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতেসে ট্রেনটা কোনদিকে যাবে সেই জায়গার নাম টা কি?
এদিকে বাজার বসেছে হাটের মত,তরিতরকারি,ফল
মাছই বেশির ভাগ চোখে পড়তেসে,মনে হয় কিছুক্ষন আগেই নদী থেকে তুলে এনে বাজারে বিক্রি করতে আনা হয়েছে মাছগুলা,এখনও লাফিয়ে যাচ্ছে
ইলিশ,চিংড়ি মাছ চিনতে পারলো আহানা কিন্তু বাকিসব চিনলো না সে
কেমন একটা আঁটসে গন্ধ আসতেসে

শান্ত হেড ফোন খুলে পকেট থেকে একটা মাস্ক নিয়ে পরে নিলো
৩মিনিট পর ট্রেন চলে গেলো বাস ও সেই হাট পেরিয়ে চলে যাচ্ছে
শান্ত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে মাস্কটা খুলে পকেটে পুরে নিলো
বাস এবার খুব জোরে গতি বাড়িয়ে দিলো
সাথে বাতাসের তোড়টাও বেড়ে গেলো,মনে হচ্ছে বাস দৌড়াচ্ছে
আহানার ১হাত লম্বা লম্বা চুলগুলো উড়ে শান্তর নাকে মুখের উপর পড়তেসে

হাইচ্ছুউউউউউউ!
আহানা চমকে তাকালো শান্তর দিকে
তোমার এই চুল বাঁধো বলতেসি,অসহ্যকর,কেন যে ম্যাম আমাকে এই বাসের দায়িত্ব দিলো,তাও দিলো তো দিলো এই মেয়েটার পাশের সিটটাই কপালে ছিল
আহানা মুখ বাঁকিয়ে খোঁপা করে নিলো,২মিনিটেই বাইরের বাতাসে ঘুম এসে গেলো তার,জানালায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমাচ্ছে সে
শান্ত এতক্ষণ ঘুমিয়েছে এবার সে বাইরের দৃশ্য দেখায় ব্যস্ত,বাসটা খালি বড় একটা রোড দিয়ে চলছে,মাঝে মাঝে কিছু কিছু দূর পাল্লার বাস চোখে পড়তেসে
ইকোনো,জোনাকি আর হিমাচল
রোদ এখন হাত ধুয়ে রোদের তাপ দিয়ে যাচ্ছে,বাস ভেদ করে গরম শান্তকে ধরেছে,আহানার পাশে বসায় শান্তর মুডটা এমনিতেও খারাপ হয়ে আছে তার উপর এত গরম!
আহানা জানালা আটকিয়ে জানালার গ্লাসে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমায় যার কারনে এক ফোটা বাতাস ও আসতেসে না
শান্ত একটু এগিয়ে গিয়ে জানালা খুলতে যেতেই আহানা জেগে গিয়ে চোখ বড় করে তাকালো শান্তর দিকে

আপনি কি করতেসেন এদিকে এসে,কি উদ্দেশ্য আপনার?
জানালা খুলতে খুলতে শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে বললো রেপ করবো তাই
আহানা ভয় পেয়ে ওড়না ঠিক করে একটু পিছিয়ে গেলো
শান্ত ভেটকি দিয়ে জানালা খুলে নিজের সিটে ফিরে আসলো তারপর হেডফোনের দিকে তাকিয়ে ব্রু কুঁচকে সেটার প্যাঁচ খুলতে খুলতে বললো তুমি এসবের যোগ্যও না,নিজেকে এত বড় কিছু ভেবো না,শাহরিয়ার শান্ত যে মেয়েকে পাত্তা দেয় সে হাই ক্লাসের হয়
আহানা আর কিছু বললো না,শান্ত ঠিক বলেছে,আমি এমনিতেও কোনো ক্লাসের না

এসে গেছে রাঙামাটি♥
সবাই বাস থেকে নামতেসে ধীরে ধীরে
শান্ত রোডের পাশের একটা পাহাড়ের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে সবাইকে বলতেসে বাস থেকে নামার জন্য
আহানা নেমে দাঁড়াতেই ওর চোখে পড়লো একটা পাহাড়ের উপর,কি সুন্দর!!সবুজে ঘেরা,পাহাড় আহানার খুব প্রিয়,আগে যে আশ্রমে সে থাকত সেখানে একটা ক্ষেতের ওপারে একটা ছোট খাটো পর্বত ছিল,আহানা রোজ বিকেলে সেখানে ঘুরতে যেতো,ইস কি ভালোই না লাগতো তখন
আহানা একটু এগিয়ে গেলো পাহাড়টা দেখার জন্য,মনে হয় যেনো হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে পাহাড়টা
তোমাদের কি যেখানে সেখানে ঘুরার জন্য আনছিলাম??চুপচাপ টিমের সাথে থাকবা,নড়বড়ে যেনো না হয়
আহানা পিছন ফিরে শান্তর দিকে তাকাতেই শান্ত ওকে না দেখার ভান করে হেঁটে চললো

এই লোকটা শান্তিতে আমাকে একটু কিছু দেখতেও দিবে না,বেয়াদব!কচুর লিডার হইসে উনি,আমি এদিক ওদিক গেলে উনার কি সমস্যা?খালি আমাকে কথা শুনানোর ধান্ধায় থাকে
টিমের সবাই হেঁটে রেস্টুরেন্টের দিকে যাচ্ছে
এলিনা কোথা থেকে এসে শান্তর সাথে হাঁটা ধরলো
বেব তোমাকে বলসিলাম না আমি কাল রাতে কল করলে রিসিভ করবা!তুমি জানো?নওশাদ কল ধরে মজা করসে আমার সাথে

শান্তর হাসি পাচ্ছে কালকের ঘটনা মনে পড়ায়,মুচকি হেসে নওশাদের দিকে তাকালো সে
একটা গাছের পাতা টানাটানি করতেসে নওশাদ আর খাতায় কিসব লিখছে,ফিউচার উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আমাদের
এলিনা ওর দিকে তাকিয়ে বললো ওর তো খবর আছে
তুমি কি কাল দেখো নাই নওশাদ তোমার ফোন ধরে আমার সাথে মজা করতেছিলো?
নাহ তো, আমি তখন মেবি শাওয়ার নিচ্ছিলাম
ওহহ
দোস্ত!!
রুপা দৌড়ে এসে আহানাকে জড়িয়ে ধরলো
শান্ত ভাইয়া আমাকে তোদের বাসে উঠতে দেয়নি তাই আমাকে সেকেন্ড ইয়ারের বাসে উঠতে হয়েছে😭
ওকে সমস্যা নেই,এখন তো আমরা একসাথে☺
জনপ্রতি পরোটা ২টা একটা ডিম আর ভাজি আর এক কাপ চা খাওয়ানো হচ্ছে সবাইকে
আহানা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে দূরে শান্ত আর এলিনা বসেছে
এলিনা এসব বাদ দিয়ে অন্য খাবার অর্ডার করেছে,তেল জাতীয় খাবার এলিনা একটুও পছন্দ করে না,আর হাতে টাকা থাকতে এমন ফালতু খাবার খাবো কেন আমি?

খাওয়া শেষ করে সবাই এবার ঘুরতে বের হলো
স্যার ম্যাডামরা সবার পিছনে আসতেসে গসিপ করতে করতে,এত বড় দামড়া স্টুডেন্টদের তো আর হাত ধরে উঠানো লাগবে না তাই উনারা আস্তে ধীরে আসতেসে,আর সবাইকে দেখে রাখার জন্য তো গ্রুপ লিডার আছেই!
এলিনা ইয়া বড় হিল জুতা পরে এসেছে,পাহাড়ে উঠার সময় দুম করে স্লিপ খেয়ে পড়ে গেলো সে
এটা দেখে রুপা ফিক করে হেসে দিলো,সাথে নওশাদ,সূর্য আর রিয়াজ ও হেসে দিলো তবে মুখে হাত দিয়ে
এ্যা শান্ত দেখো না আমার পা মচকে গেসে আমি এখন হেঁটে উপর পর্যন্ত কি করে যাবো?এ্যা😭হিল ও ভেঙ্গে গেছে আমার
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে এসে এলিনাকে কোলে তুলে হাঁটা ধরলো
হুহ যেভাবে আমার দিকে তাকিয়েছে মনে হয় যেনো আমাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এমনটা করলো
কচুর জেলাস হবো আমি,তাও এই বেয়াদবটাকে নিয়ে
এলিনা একটা ভাব নিয়ে আশেপাশের সবার দিকে তাকাচ্ছে,বাকিরা ওর দিকে তাকিয়ে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে,শান্তর কোলে উঠা ইজ এ বিগ থিং

পাহাড়ের উপরে এনে শান্ত এলিনাকে নামিয়ে দিলো,এলিনা হিল হাতে নিয়ে চারিদিকটা দেখায় মন দিসে,পাহাড়ের চারপাশ দিয়ে রাস্তা বানিয়ে রাখা ছিল বলে শান্তর খুব একটা কষ্ট হয়নি এলিনাকে নিয়ে উঠতে
সবাই এদিক ওদিক হেঁটে হেঁটে দেখছে
এতটা উপরে তারা যে আশেপাশের বাকি সব পাহাড়ের শীর্ষস্থান দেখা যাচ্ছে,দূরে একটা পাহাড়ের উপর স্থানীয় লোকেরা চাষাবাদ করতেসে,কারো কারো পিঠের সাথে বালতিও আটকানো
আহানা রুপাকে নিয়ে দূরের একটা পাহাড় নিয়ে কথা বলতেসে
শান্ত পানি খেয়ে রিয়াজ আর নওশাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো
কিরে শান্ত ঐ ভুটকিরে কোলে নিয়ে তোর হাড় আস্ত আছে তো??
আরে সূর্য কি বলিস ওর তো ঢাকায় ফিরে হাড্ডি অপারেশন করাতে হবে

তোরা থাম,শান্ত একটা কথা বল তুই তো এলিনাকে পাত্তা দেস না তাহলে আজ ওরে কোলে তুলে এত বড় পাহাড়ে উঠতে গেলি কেন?
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে আছে
রিয়াজ নওশাদকে একটা ধাক্কা মেরে ইশারা করলো ওকে
সূর্য ও ব্যাপারটা খেয়াল করলো,শান্ত আহানাকেই দেখছে শুধু
আরে নওশাদ বুঝিস না কেন শান্ত ভাই অন্য একটা মেয়েকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এমন করেছে
আচ্ছা আচ্ছা
ওরা কি বললো শান্ত সেদিকে কান না দিয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে আছে
পাহাড় দেখা শেষে শান্ত আর রিয়াজ বললো হইসে এবার সবাই পাহাড় থেকে নামো আমাদের এবার আরেকটা জায়গায় যেতে হবে
সবাই নামা ধরলো আস্তে আস্তে
আহানা হাঁটতে যেতেই ওর ওড়না আটকে গেলো পাহাড়ের উপরের একটা বন্য গাছের সাথে

রুপা অনেক টানাটানি করলো ওড়না ধরে তাও ছুটাতে পারলো না
আহানাও চেষ্টা করতেসে তাও ছুটাতে পারছে না
ওড়নাটা ভালো করেই আটকেসে,এমন একটা গাছের সাথে আটকেসে যেটার ঢালেও কাটা,পাতায় ও কাটা
আহানা আসতেসে না দেখে শান্ত ধমক দিয়ে বললো এতই যখন থাকার শখ তো থেকে যাও এখানে,ঢং করে আবার আমাদের সাথে আসতে গেছো কেন?
আহানা আর ভাবিস না,ওড়নাটা ছিঁড়া ছাড়া আর উপায় নাই,গাছ তো টাচ ও করা যাবে না,যে কাঁটা বাপরে বাপ,ছিঁড়ে ফেল দেরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের
আহানা ভাবলো এই জামাটার ওড়না ছিঁড়ে গেলে আরেকটা ওড়না মিলিয়ে পড়বো কি করে,বাসায় যে ওড়নাগুলা আছে সেগুলা তো পুরান সব,সাথে ছিঁড়াও
আহানা এসব ভেবে গাছটার পাতা ধরে এক টান দিলো,গাছটা ছিল একটা কাঁটা গাছ
টান দেওয়ার ফলে আহানার হাত কেটে গেলো অনেকটা

একি এটা কি করলি তুই,সামান্য ওড়নার জন্য হাত কেটে ফেললি,বেকুব
আহানা হাত লুকিয়ে ফেললো
কিছু না তো চল যাই
আমি মাত্র দেখলাম কাটা গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে আর তুই বলিস কিছু না?দেখি হাত দেখা আমাকে
তোমরা এখানে গসিপ করতে এসেছো?চলো বলতেসি!আমার কথা শুনো না কেন?ম্যামের কাছে বিচার দিতাম?
আহানা শান্তর ধমকে রুপার হাত ধরে হাঁটা ধরলো,রুপাকে হাত কাটা নিয়ে আর কিছু বলার সুযোগই দিলো না

সবাই এবার কাপ্তাই হ্রদ যাবে
সেখানে ট্রলারে করে যাবে সবাই,মোট ৬টা ট্রলার হায়ার করলো স্যাররা
আহানা রুপাকে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে,সে সাঁতার জানে না,তাই ভয় করতেসে তার
শান্ত ফোন নিয়ে পাহাড়ের ভিডিও করতেসে,এলিনা মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত
দুপাশে পাহাড় মাঝখান দিয়ে হ্রদ,সেটার উপর দিয়ে ট্রলার যাচ্ছে
ট্রলার থামলো একটু দূরে গিয়ে একটা সুন্দর পাহাড়ের সামনে,যেটার নিচে বিরাট একটা পাথর, উপরে গাছপালা
সবাই হইহুল্লড় শুরু করে দিসে,এমন অপরুপ দৃশ্য দেখেই সবাই তো রীতিমত অবাক
বসার থেকে দাঁড়িয়ে সবাই পাহাড়টা দেখতেসে
এলিনা একটু কোণায় গিয়ে দাঁড়িয়ে তার একটা ফ্রেন্ডকে বললো ছবি তুলে দিতে পাথর পাহাড়টার সাথে,ভিউটা জোস

আহানা আর রুপা পাথরটা নিয়ে তার পাশেই দাঁড়িয়ে কথা বলতেসিলো
এলিনার ফ্রেন্ড বললো আহানার চুল দেখা যাচ্ছে ছবিটাতে,ওকে সরাতে বললো
এলিনা বিরক্তি নিয়ে আহানাকে এক ধাক্কা দিয়ে বললো সরে যেতে
আহানা কিণারায় দাঁড়িয়ে ছিল তখন
এলিনার ধাক্কায় সে স্লিপ খেয়ে ট্রলার থেকে পানিতে পড়ে গেলো
রুপা চিৎকার দিয়ে উঠলো
আহানা সাঁতরিয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করতেসে
কিন্তু যে সাঁতার জানে না সে বিপদে পড়ে সাঁতার কি করে পারবে?
রুপা চিৎকার দিয়ে বললো আহানা সাঁতার জানে না

এলিনা মুখে হাত দিয়ে বললো ইস আমি খেয়াল করি নাই,এখন এরে উঠাবে কে?
শান্তদের ট্রলারে ছিল ৭জন ছেলে বাকি সব মেয়ে,ছেলেগুলো পানিতে নামতে নানা বাহানা করতেসিলো,কেউ কেউ বললো পানিতে নামলে শার্ট ভিজে যাবে,কেউ বললো পানির গভীরতা বেশি
শান্ত আর কোনোদিক না ভেবেই ওর জ্যাকেট খুলে ঝাঁপ দিলো পানিতে
শান্ত!!
শান্ত পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আহানার হাত ধরে ফেললো আহানা আর একটুর জন্য ডুবেই যাচ্ছিলো
শান্ত আহানাকে কাছে টেনে এক হাতে আহানাকে ধরে আরেক হাতে ট্রলারের থাকা একটা ছেলের হাত ধরে উপরে উঠে আসলো পানি থেকে
আহানা নিচে বসে কাশতেসে যদিও এখনও জ্ঞান হারায়নি
রুপা তার ওড়না দিয়ে আহানার মাথা মুছে দিতেসে
শান্ত ট্রলারের শেষ প্রান্তে গিয়ে বসে তাকিয়ে আছে আহানার দিকে
এলিনা একটা রুমাল নিয়ে কাছে এসে শান্তর মাথা মুছে দিলো

শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে আছে আর হাঁপিয়ে যাচ্ছে অনবরত
আহানা কাশি থামিয়ে শান্তর দিকে তাকালো
সাথে সাথে শান্ত আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো
কাপ্তাই হ্রদ এখনও ১০মিনিট ধরে দেখা বাকি
আহানা শীতে ভেজা শরীরে কাঁপতেসে বসে বসে
শান্ত নিজের জ্যাকেটটা ছুঁড়ে মারলো আহানার দিকে

এলিনা গাল ফুলিয়ে বললো তোমার জ্যাকেট ওকে দিচ্ছো কেন?দিতে হবে না
আহানা জ্যাকেটটা না নিয়ে আরেকদিকে ফিরে বসলো আর বললো লাগবে না আমার
এলিনা সাথে সাথে জ্যাকেটটা নিয়ে আসলো ওখান থেকে তারপর শান্তকে দিয়ে দিলো
শান্ত তার গায়ের ভেজা শার্ট খুলে জ্যাকেটটা পরে নিলো কারন শার্ট পুরো ভিজে গেছে তার

আহানা ওর ওড়না দিয়ে পুরো গা ঢেকে বসে আছে
সবাই ডাঙায় ফিরে আসতেই শশী ম্যাম আহানাকে দেখে চমকে বললেন একি ও এত ভিজলো কি করে?
ম্যাম এই এলিনা আহানাকে ধাক্কা দিতেই ও পানিতে পড়ে গেসিলো পরে শান্ত ভাই ওকে তুলেছে
কি বললে রুপা?আমি ধাক্কা দিয়েছি?আমি কি জানতাম নাকি ও এত কিনারায় দাঁড়িয়েছে?আজব তো!!
হইসে থামো তোমরা,আহানা বারতি জামা এনেছো?
না ম্যাম

এখন আর কি করার এই ভেজা জামায় থাকতে হবে,সবাই বাসে উঠো গিয়ে
শান্ত বাসের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,সবাই বাসে উঠতেসে এক এক করে
আহানা তুই প্লিস একা বসিস বাসে আমি আজ তোর সাথে বসতে পারবো না
কেন?
আসলে আমার ইয়ে আসলে ও ঐ বাসে বসেছে তাই ওর সাথে গিয়ে বসবো
আহানা হেসে বললো ঠিক আছে তারপর সে গিয়ে আগের সিটে এসে বসলো
সবাইকে উঠিয়ে শান্ত সেই আবার আহানার পাশের সিটটাই খালি পেলো
চুপচাপ গিয়ে আবারও আহানার পাশে বসলো সে
আহানা দুহাত দিয়ে কাঁধ ধরে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে,জানালার কাঁচে আহানাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,চোখ বন্ধ করে আছে সে
শান্ত নিজের জ্যাকেটটা খুলে আবারও আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরলো
আহানা আরেকদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো,এবারও জ্যাকেটটা নিলো না
শান্ত এবার প্রচণ্ড রেগে গেলো

প্রেমের পাঁচফোড়ন পর্ব ৩+৪

সমস্যা কি তোমার?সেধে সেধে জ্যাকেট দিচ্ছি নিচ্ছোই না এত ভাব কাকে দেখাও?ভুলে যেওনা কিছুক্ষন আগে তোমাকে আমি বাঁচিয়েছিলাম
কে বলেছিল বাঁচাতে?মরতে দিতেন,মরে গেলে আপনার জ্বালা যেতো

প্রেমের পাঁচফোড়ন পর্ব ৭+৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here