প্রেমের সমর পর্ব ২৭

প্রেমের সমর পর্ব ২৭
অলকানন্দা ঐন্দ্রি

আশপাশে ঝুম বৃষ্টি বইছে। স্বচ্ছ তখন বেলকনিতে বসা। ঠান্ডা পড়ছে। আবহাওয়া শীতল। অথচ স্বচ্ছর মনের ভেতর তখন উষ্ণ আবহাওয়া। রাগে নাকমুখ লাল ঠেকছে তার। বাম হাতটা মুঠো করা। অপর হাতে সিগারেট ফুকছে ইচ্ছে মতো৷ স্বচ্ছ বিরক্ত হয়।রাগে বেলকনির দেয়ালে দুয়েকবার ঘুষি বসাতেই হাত গড়িয়ে ঝড়ল লালচে রক্ত৷ সুহা ততক্ষনে ছুটে এসে আওয়াজ শুনে। এই নিয়ে স্বচ্ছ কম হলেও পনেরোটার উপর সিগারেট শেষ করেছে। সুহা কিছু বলেনি রাগে। শুধু দেখে গেছে। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে সত্যিই তার রাগ হলো। স্বচ্ছর রক্তাক্ত হাতটাকে আগলে নিয়ে দ্রুত বলল,
“ দুদিন আগেও অসুস্থ ছিলেন স্বচ্ছ। একটা মেজর অপারেশন হয়েছে আপনার। মাসখানেক ও তো হলো না। তার উপর এমন করছেন কেন হুহ? ”

স্বচ্ছ হাতটা একঝাড়ায় ছাড়িয়ে নেয়।হাতটা থেতলে আছে। রক্ত ঝরছে। স্বচ্ছ দাঁতে দাঁত চিবিয়েই বলে,
“ তা জানার তোমার প্রয়োজন নেই সুহাসিনী! দয়া দেখিও না। দয়া দেখাতে বলিনি আমি। ”
সুহার এই পর্যায়ে কান্না আসে কেবল। গলায় জমে থাকে কান্নারা। ঢোক গিলে নরম গলায় বলে,
“ এমনটা কেন করছেন স্বচ্ছ? শরীরের ক্ষতি হবে তো। কয়েকদিন আগে ও তো অসুস্থ ছিলেন। বুঝার চেষ্টা করুন। ”
স্বচ্ছ ক্রুর হাসে। বলে,
“ ইচ্ছে হচ্ছে তাই। আমার এখন মনে হচ্ছে সেদিন মারা যাওয়াটাই সবচাইতে বেটার অপশন ছিল।তার চেয়েও ভয়ংকর ঠেকে এই ভেবে যে, একটা মানুষ কি করে মৃত্যুর সাথে লড়ে যাওয়া মানুষের সাথে মিথ্যে বলতে পারে? কি করে?”
সুহা মুহুর্তেই প্রশ্ন ছুড়ে,
“ আমি? ”
স্বচ্ছ বিড়বিড় স্বরে আওড়ায়,
“ ছলনাময়ী!
সুহার চোখে মুখে বিস্ময়। মুহুর্তেই শুধায়,
“ আমি? ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

স্বচ্ছ হাসে। বা হাতে পড়ে থাকা সুহার দেওয়া সে ঘড়িটা খুলতে লাগে সময় নিয়ে। পরমুহুর্তে আচমকায় সুহার সামনে তা ছুড়ে মারল ফ্লোরে। অবহেলা নিয়ে বলে,
“ তোমার ঘড়িটা এতদিন আগলে রেখেছিলাম অমূল্য সম্পদের মতো করে। ইভেন আজ সকালেও! এখন মনে হচ্ছে আমি সত্যিই ভুল মানুষের ভুল জিনিস আগলে রেখেছিলাম। তাই ফেলে দিলাম।”
সুহা যেন বিশ্বাস করতে পারল না।একটা মানুষ হুট করেই কিভাবে এতোটা বদলে যায়?কিভাবে?এই যে এতদিন এত পাগলামো দেখালো? জ্বালাতন করল? সব মিথ্যে?সুহা বলে,
“ আজকে সকালেও তো পাগলামি দেখাচ্ছিলেন স্বচ্ছ। ভালোবাসা দেখাচ্ছিলেন। এক মুহুর্তেই এখন আমি ভুল মানুষ হয়ে গেলাম? ”
স্বচ্ছ তাকায়। ভ্রু উঁচিয়ে বলে,
“ সঠিক মানুষ তাহলে? ”
সুহা তখন চোখ টলমল। কান্না গড়িয়ে পড়ে গাল বেয়ে। মুহুর্তেই উত্তর দেয়,
“ দাদাজান ঠিকই বলে স্বচ্ছ। আপনি আসলেই আমায় সারাজীবন কেবল কষ্টই দিবেন। আপনার সাথে থাকলে আমি কেবল কষ্টই পাব স্বচ্ছ। ”

স্বচ্ছ মুহুর্তেই রাগ জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠে যেন। রোহানের কথাটাই সুহা বলল। কেন? কেন স্বচ্ছ ভালো রাখতে পারবে না? স্বচ্ছ মুহুর্তেই বলে,
“ তো কে কষ্ট না দিয়ে কেবল সুখ দিবে? ঐ রোহান? তোমার দাদাজান এর পছন্দের পাত্র? ”
সুহা চুপ থাকে। চোখের পানি মুঁছে জানতে চায়,
“আমি তিহানের কাজিনটার সাথে কথা বলছিলাম এই কারণেই এত রাগ আপনার? আমাকে এক্সপ্লেইন করার সময়টা দিন প্লিজ। আমি বুঝিয়ে বলছি আপনাকে। ”
স্বচ্ছ সুহার ঠোঁটে আঙ্গুল রাখে। গম্ভীর স্বরে বলে,
“ প্রয়োজন নেই সুহাসিনী। তুমি কি ভেবেছো? তুমি আর তোমার দাদাজান যে ষড়যন্ত্র করছো আমি জানি না? ঐ রোহানের ফেমিলির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ তোমার দাদাজানের জানি না? বিজন্যাস ও তো একসাথে তোমাদের। তাই তোমার দাদাজান চাইছেন অবশ্যই অবশ্যই ঐ পরিবারের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি করতে। তাই তো? খবর অবশয আমি খুব আগেই পেয়েছি। কিন্তু বিশ্বাস করিনি। আর এখন তো সব জলের মতোই পরিষ্কার। ”
সুহা কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে। এই প্রথম তার স্বচ্ছকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে। এই রেগে যাওয়া স্বচ্ছকে শান্ত করতে ইচ্ছে করছে। ভালোবাসায় আগলে নিতে ইচ্ছে হচ্ছ৷। তবুও সে শক্ত স্বরে বলল,

“ ভুল ভাবছেন স্বচ্ছ। আমাকে বলার সুযোগটা দিন।
স্বচ্ছ হাসে৷ সুহাকে পাত্তা না দিয়ে রুমে চলে যেতে যেতে বলে যায়,
“ কি শুনব? দয়া দেখাচ্ছো তা? নাকি আবার একগাঁধা মিথ্যে? ”
কথাটা বলে চলে যেতে নিয়েও স্বচ্ছ ফের ফিরে আসে। বলে,
“ আমি তোমায় বিচ্ছেদ দিব না সুহাসিনী৷ তোমায় অন্য কারোরও হতে দিব না। তবে এই অভিযোগ আমার সবসময় থাকবে যে তুমি আমায় ঠকিয়েছো। ঠকিয়েছো তুমি আমায়।এক্সিডেন্টের কারণে আমি তিন মাস ভ্যাকেশনে আছি৷কিন্তু আমার মন চাচ্ছে আমি এখনই চলে যাই। বিরক্ত লাগছে এই দেশটা।অথচ আমি কি বোকা সুহাসিনী? নিজের ক্যারিয়ারে শূণ্যে ডুবানোর চিন্তা করে ভেবেছিলাম তোমার জন্য এখানে থেকেই সুখে সংসার করব। ”
স্বচ্ছর কথা গুলো সুহার বুকে লাগে যেন। হালকা হেসে শুধায়
“ চলে তো যাবেনই। স্কলারশিপে পড়তে গিয়েছেন ওখানে৷ এতবছর কষ্ট করে শেষের দিকে এসে দেশে বসে থেকে নিশ্চয় নিজের লস করবেন না তাই না? ”
স্বচ্ছ যেতে যেতে উত্তর করল,
“ অথচ তুমি চাইলে আমি আমার সবটা বিসর্জন দিতাম সুহাসিনী! ”
সুহা হতবিহ্বল দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। আশ্চর্য! কি থেকে কি হয়ে গেল না? সুহা তো কিছুই করল না। মাঝখান দিয়ে স্বচ্ছ তাকে ভুল বুঝছে। কি দোষ ছিল তার? কিই বা করল সে?

তখন ইউকে তে সন্ধ্যে।বাইরে তুষারপাত হচ্ছে অবিরাম।আবির সদ্য বাসায় ফিরেছে। তারপর ঘন্টাখানেক শাওয়ার নিয়ে বাইরে বেরিয়ে সর্বপ্রথম কফি বানাল। মগটা হাতে নিয়ে পরমুহুর্তে ফোন হাতে নিল। ছুটির আইডিটা বরাবরের মতো ঘুরপাক খেল। কিন্তু আপসোসের বিষয় ছুটি এখন আর ওকে ম্যাসেজ দেয় না। এখন আর আগের মতো বিরক্ত করে না। ম্যাসেজের পাহাড় করে রাখে না। আবিরের বিরক্ত লাগে। কেন ম্যাসেজ দেয় না? কেন কথা বলে না? একটাবার তো পারে তার খোঁজ নিতে। আবির অবশ্য ছুটির খোঁজ নেয় আগের মতোই। সরাসরি ম্যাসেজ না করলেও স্বচ্ছর কাজিন তিহান আর সিয়ার থেকেই ইনিয়েবিনিয়ে খোঁজ নেয় ছুটির ব্যাপারে। যেহেতু ছুটি স্বচ্ছদের বিল্ডিংয়েই থাকে।আবির আগেও এমন করত৷ সরাসরি নিজের দুর্বলতাটা সে কখনোই ছুটির কাছে প্রকাশ করেনি। উল্টে আগে কাজিনদের দিয়ে খোঁজ খবর নিত। আবির হালকা হাসে। বিড়বিড়িয়ে বলে,
“ তুই আস্ত এক যন্ত্রনা ছুটি! যখন জ্বালাস তখনও বুক চিনচিন করে, আবার যখন জ্বালানো কমিয়ে দিলি তখনও আমার অস্থির অস্থির লাগে। আমাকে এত যন্ত্রনা দিয়ে কোন লাভটা হচ্ছে তোর? শুধু তোকে আমার করে পাই ছুটি,শুধু পাই।প্রমিজ, তোকে শুধে আসলে সবটা ফেরত দিব দেখে নিস। ”
কথাটা বলেই সে কল দিল তিহানকে। কল রিসিভড হতেই আরাম করে বলে উঠল,

“ কি ছোট ভাই? কেমন আছো? ”
ওপাশ থেকে তিহান সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর করল,
“ আমি কেমন আছি জানতে কল দিয়েছেন নাকি ছুটি আপু কেমন আছে জানতে কল দিয়েছেন ভাই? ”
আবির এবারে হাসে। ঠোঁট চওড়া করে শুধায়,
” ঐ যে তোমার কলেজ ফ্রেন্ড ফিহা? ও কিন্তু কাজিন হয় আমার। ভেবে দেখো, একটু খোঁজ খবর দিলে কিন্তু তোমার ফিউচারের জন্য প্লাস পয়েন্ট। ”
তিহান এই পর্যায়ে হাসে। হেসে উত্তর করে,
“ ছুটি আপু নাকি পরের মাসে বাসা চেঞ্জ করবে ভাইয়া। শুনেছেন? ”
আবির আপসোস করে বলে,
“ কিভাবে শুনব, কথা হয় না তো। ”
“কথা বলেন না কেন? ঝগড়া তো নেই আপনাদের। ”
আবির হেসে উত্তর করে,
“ আমাদের আসলে আর দশটা কাপলের মতো প্রেম নেই ছোটভাই। কিন্তু আমরা জানি, আমরা দুইজনই দুইজনকে ভালোবাসি। কথা না হলেও ভালোবাসি। ”
তিহান তখন ব্যঙ্গ স্বরে বলে উঠে,
” হু, কথা না বলতে বলতে, যোগাযোগ না করতে করতে কোনদিন দেখবেন ছুটি আপুর বিয়ে হয়ে যাবে। ”
আবির তখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর করে,
“তোমার ছুটি আপুকে কিছু না বলা সত্ত্বেও এতকাল অপেক্ষা করেছে আমার জন্য। আর এবার তো আসার সময় সরাসরিই বলে এলাম।আশা করি,আমায় ঠকানোর সাহস তার হবে না তিহান। ”

তখন গভীর রাত। ছুটি নিশাচর প্রাণির ন্যায় অনলাইনে থেকে সময় কাঁটাচ্ছিল। কারণ ঘুম আসে না আজকাল আর তার। আবির ভাইয়ের বিরহে সূক্ষ্ম এক যন্ত্রনা বুকে বয়ে নিয়ে সব কাজ করলেও ঘুমটা ঠিক নিজ থেকে আসতে চায় না যেন। ছুটি এই নিয়ে অনেকদিন ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে। ছুটি দীর্ঘশ্বাস টানে। আজও ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুমানোর প্ল্যান করতে নিতেই হুট করে হোয়াটসএ্যাপে কল এল। মানুষ আবির ভাই। ছুটি বিস্ময় নিয়ে তাকায়। আশ্চর্য! এত রাতে? এত রাতে আবির ভাই? যে মানুষটা অন্য দেশে গিয়ে এতদিনে একটা কল অব্দি করল না, সিঙ্গেল ম্যাসেজ অব্দি দিল না, খোঁজ নিল না সে মানুষটা আজ কি বুঝে কল দিল? ছুটি কল তুলল। কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই আবির বলে উঠল,
“ দিনরাত অনলাইনে পরে থাকিস কেন? কাজ নেই তোর ? ”
ছুটি চুপ থাকে। প্রথমেই কেমন আছে, কি অবস্থা কিছু জিজ্ঞেস না করে এই উত্তরটা পেয়ে হতাশ হয়। শান্ত স্বরে বলে,

“ এরপর থেকে আর থাকব না অনলাইনে। ”
“ থাকবি না মানে?
ছুটি ছোটশ্বাস টানে। উপেক্ষা করে বলে,
“ কিছু না। আপনার কথা বলুন? কেমন আছেন? হঠাৎ কি মনে করে নক করলেন? কোন প্রয়োজন?
আবির রেগে শুধায়,
“ এমন ভাবে বলছিস যেন তুই প্রয়োজনের ভান্ডার আর আমি প্রতিবার প্রয়োজন পড়লেই তোকে নক করি। ”
ছুটি হাসে তখন। উত্তরে বলে,
“ সচারচর তো আপনাকে নক করতে দেখি না আবির ভাই। করলেও তার পেছনে অবশ্য অবশ্যই স্বার্থ লুকিয়ে থাকে। তো এখন কোন স্বার্থে নক দিয়েছেন যদি সরাসরিই বলে দিতেন আমার সুবিধা হতো। ”
“ ইনডিরেক্টলি তুই এটা বুঝাতে চাইছিস যে আমি তোকে নক দিলে অবশ্যই কোন না কোন স্বার্থ পূরণের জন্যই দিই তাই তো? ”
ছুটি ঠোঁট এলিয়ে হাসে। গলা শক্ত করে বলে উঠে,

” ডিরেক্টলিই বলছি। আসলে বোকা মানুষ তো আমি। তাই বুঝে উঠি না কে কোন স্বার্থে আমায় ইউজ করছে। ”
আবির বিস্মিত হয়। ছুটি বলছে এসব? সে ছুটিকে ইউজ করেছে? আবির তৎক্ষনাৎ ধকম স্বরে বলে উঠে,
“ তোকে আমি ইউজ করেছি? ”
ছুটি অবহেলা নিয়ে উত্তর দেয়,
” সেটা তো আপনি ভালো জানেন আবির ভাই। যায় হোক বাদ দিন, ভালো আছেন? ”
আবির দ্বিতীয়বার ধাক্কা খেল যেন। হজম হয়ে উঠল না ছুটির ধারালো জবাব। মনে হয় ছুটি বদলে গেছে। সত্যিই তো। আগের ছুটি তো এভাবে কথা বলত না। এভাবে কথা শোনাত না। আগের ছুটি ছিল বোকা। আগের ছুটি ছিল সহজ সরল। আবির অবিশ্বাস্য স্বরে ডাক দেয়,

“ ছুটি? ”
এবারেও দৃঢ় স্বরে উত্তর আসে ,
“ বলুন। ”
আবির কিছুটা সময় চুপ থেকে ভাবে। শুরু থেকে ভাবে৷ সে কি ছুটিকে বেশি কষ্ট দিয়েছে? বেশি অবহেলা করেছে? শুধায়,
“ আমি কি তোকে কোন কারণে কষ্ট দিয়েছি? আমার কেন মনে হচ্ছে তুই পাল্টে গেছিস? ”
ছুটি হেসে বলে,
“ পাল্টাইনি, হয়তো আপনার মনের ভুল। ”
আবির দৃঢ়তার সঙ্গে এবারে উত্তর করে,
“ আমি তোকে খুব ভালো করে চিনতাম ছুটি। তুই বদলেছিস তা আমার চাইতে
ভালো কেউ জানবে না। ”

প্রেমের সমর পর্ব ২৬

ছুটির চোখ তখন টলমল করে এপাশে। বুকে গহীন ব্যাথা নিয়ে দীর্ঘশ্বাস টেনে উত্তর করে,
“ এটা আপনার মনে হচ্ছে। কারণ আগে বেহায়াপনা দেখাতাম। এখন তো দেখাচ্ছি না তাই। ”
কথাটা বলেই ছুটি মুখের উপর কল রেখে দিল। আবির অবিশ্বাস্য চাহনি নিয়ে চেয়ে থাকে। এই প্রথম সে টের পায় তার ছুটি তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অনেকটা দূরে চলে যাচ্ছে!

প্রেমের সমর পর্ব ২৮