প্রেমের সমর পর্ব ৯

প্রেমের সমর পর্ব ৯
অলকানন্দা ঐন্দ্রি

স্বচ্ছর পরণে শুভ্র রংয়ের টিশার্ট! চুলগুলো ভেজা এলোমেলো। মাত্রই গোসল সেরেছে সে। তারপর গোসল করে বের হওয়ার সাথে সাথেই আবার হাতে পরে নিল সুহার দেওয়া ঘড়িটা৷ কোন কারণ ছাড়াই তার আনন্দ আনন্দ লাগছে। কিশোর কালে প্রেমে পড়া সদ্য প্রেমিকটা যেমন বুকের ভেতর টিমটিম করা প্রেমানুভূতি টের পায়? স্বচ্ছরও মনে হচ্ছে তার বুকের ভেতর একটা অজানা অনুভূতি বইছে। যা তাকে আনন্দ দেয়, অস্থির করে তুলে, কখনো বা রাগিয়ে দেয়। স্বচ্ছ ঠোঁট গোল করে শ্বাস ছাড়ে।ফোন হাতে নিয়ে বেশ কয়েকবার কল করেও যখন সুহাকে কলে পায় না তখন রাগ জম্মায়। মেয়েটাকে কল দিলে কল ধরে না প্রায়সই। কতোটা অবাধ্য এই মেয়ে? স্বচ্ছর কল ইগ্নোর করে? স্বচ্ছ মনে মনে চাপা রাগ ফুসে। বিড়বিড় করে নিজের বিরক্ত প্রকাশ করে অনেকটাক্ষন। তারপর ম্যাসেজে টাইপ করে,

“ এই মেয়ে সমস্যা কি? তুমি কি ভেবেছো ইগ্নোর করলেই আমি তোমায় ছেড়ে দিব? বিচ্ছেদে রাজি হয়ে যাব? নো ওয়ে! আমাকে ইগ্নোর করার সব ফল তুমি পাবে। শুধু ওয়েট করো। ”
স্বচ্ছ এই ম্যাসেজটা দিয়েও অপেক্ষায় থাকল। তারপর ও যখন সুহা রিপ্লাই করল না তখন আবারও কল দিল। ওপাশ থেকে এবারে কল তোলা হলো। স্বচ্ছ তা দেখে রাগে চাপা স্বরে বলে,
“ এই মেয়ে!গিফ্ট বক্স পাওয়ার পর থেকে বহুবার কল দিয়েছি। কল তুলছো না কেন? সমস্যা কি হু?”
ওপাশ থেকে দ্বিগুণ রাগ নিয়ে সুহা বলল,
“ সমস্যা কিছু না। কল দিচ্ছেন কেন? ”
স্বচ্ছ এতোটা সময় চাপা রাগ নিয়ে বসে থাকলেও এবারে হাসে অল্প। পরপর নিজের হাতে পরে থাকা ঘড়িটা সমেত ছবি তুলল নিজের। তারপরই সুহাকে পাঠাল। বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ বেশ মানিয়েছে না আমায়? ইশশ!আমার হাতটা কত সুন্দর দেখো সুহাসিনী ! ”
সুহা দেখল। সত্যিই এই মানুষটা সুন্দর। সাদা টিশার্টে, ভেজা চুলে দারুণ লাগছে ছবিতে। ঘড়িটাও তার হাতে সুন্দর দেখাচ্ছে। সুহা কিয়ৎক্ষন তাকিয়েই থাকে। প্রিয় পুরুষের মুখচ্ছবি দেখে হৃদয়ে হিম অনুভূতি বয়ে গেলেও মুখে দাঁত চেপে বলল,
“ ইনডিরেক্টলি কি এটা বুঝালেন যে ঘড়িটা সুন্দর নয়? আপনার হাতের সাথে মানানসই না সেটা বুঝালেন অস্বচ্ছ সাহেব? ”
স্বচ্ছ যতোই নিজের মেজাজকে নিয়ন্ত্রন করে এই মেয়ের সামনে এই মেয়েটাই ঠিক ততোই মেজাজ খারাপ করে দেয়।এত কের বুঝে মেয়েটা? স্বচ্ছ টান টান স্বরে বলে,

“ এমন কেন মনে হলো? ভালো কথা কি আমার মুখ দ্বারা আসতে পারে না সুহাসিনী? নাকি আমার কোন কথাই আর সিরিয়াসলি নেওয়া যায় না?”
সুহা তাচ্ছিল্য টেনে বলে,
“ ঠিক ধরেছেন, আপনার কথা আর সিরিয়াসলি নেওয়া যায় না৷ ”
স্বচ্ছর রাগ হয়। সামনে চেয়ারটায় এক লাথি বসিয়ে আহত স্বরে বলে উঠে,
“ রাগ হয় সুহাসিনী, তোমার উপর আজকাল খুবই রাগ জম্মায়। তবুও রাগ হজম করি কারণ মানুষটা তুমি বলে। ”
সুহা বিস্ময় নিয়ে বলে,
“ রাগ? আমার উপরই?
“ ইয়েস! তোমার উপরই! ”

কথাটা বলেই স্বচ্ছ কল রাখে। মোবাইলটা এক পাশে ছুড়ে রেখে চোখ বুঝে। বার কয়েক শ্বাস ফেলে। মেয়েটা তাকে বিশ্বাস করে না, তার কথাগুলোকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে না ভাবলেই তার রাগ হচ্ছে।গা জ্বলছে যেন। রাগে হাঁসফাঁস করে সে। একটা সময়ে বিড়বিড় করে বলে,
“ তুমি আমায় বিশ্বাস করতে পারছো না। ভালোবাসতে পারবে তো সুহাসিনী? আমার কেন জানি না ভয় হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই লড়াইটা আমি এবার সত্যিই হারব। সাথে নিজের ভালো থাকাও হারাব। ”

রাত তখন প্রায় বারোটা।চারপাশে হালকা হিম অনুভূতি। যদিও এখন গরম পড়তে শুরু করেছে। স্বচ্ছ,সাদাফ, আবির তিনজনই বের হয়ছে রাস্তায় হাঁটার উদ্দেশ্যে। রাতের শহর! সুন্দর দেখতে। তারপর যখন রাত সাড়ে বারোটার দিকে রাস্তা ঘুরে নিজেদের বাসার সামনে এল ঠিক তখনই চোখে পড়ল এক যুবক ছেলেকে। হাতে একগুচ্ছ লাল টকটকে গোলাপ। দৃষ্টি বরাবরই সুহাদের বেলকনিটার দিকেই। স্বচ্ছ,সাদাফ আর আবির তিনজনই অনেকক্ষন যাবৎ এই ছেলের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষন করল। সত্যিই সুহাদের বেলকনির দিকেই তাকাচ্ছে বারবার। তার উপর গোলাপ? স্বচ্ছর ব্যাপার টা সুবিধার লাগল। তার উপর এই বেলকনিটাই তার বউই রাতের দিকে আসে। বসে থাকে, গান গায়। স্বচ্ছর ভ্রু উঁচু হলো। সামনে গিয়ে ছেলেটার কাঁধে হাত দিয়ে বলল,

“ কি ব্রাদার? ওদিকে তাকিয়ে কি দেখছো? বেলকনিতে কেউ আসবে তোমার জন্য? ”
ছেলেটা হেসে মাত্র বলতে লাগল,
“ হ্যাঁ ব্রাদার, আমার হানি এই বাসাতে….”
ব্যস! ছেলেটাকে বাকিটা বলতে না দিয়েই সাদাফ চেঁচিয়ে উঠল। ছেলেটার হাত পর্যবেক্ষন করতে করতেই বলে উঠল চেঁচিয়ে,
“ দোস্ত? এটা তো সেই হাত যেটা তোর বউয়ের হাত ধরে রাখত, চুড়ি পরিয়ে দিত। এটা তো সে ছেলেই! ”
স্বচ্ছর মস্তিষত আচমকা কথাটা নিতে পারল না। ছেলেটার মুখে শোনা “ আমার হানি” আর সাদাফের মুখে বলা কথাগুলো শুনে আচমকাই চড় বসাল ছেলেটার গালে। তারপর শুরু হলো তিনজন ছেলে মিলেই ঐ অপরিচিত ছেলেটিকে নাস্তানাবুদ করা। অথচ বোকা স্বচ্ছ নিজেই সেদিন আন্দাজ করেছিল যে ছবিতে পাঠানো হাতটি তার বউয়ের নয়। বেখেয়ালি স্বচ্ছ তা খেয়ালই করে উঠতে পারল না। মাঝখান দিয়ে সে অপরিচিত ছেলেটাকে মেরে অবস্থা খারাপ করল৷ মুখ চেপে বলল,
“ এরপর অন্যের বউয়ের দিকে যাতে না তাকাতে দেখি ঠিকাছেে।বিশেষ সুহাসিনীর দিকে। ও আমার বউ, ওর উপর অন্য কারোর এক বিন্দু অধিকার মানব না আমি।আর ওর সাথে প্রেম করা মেনে নিব? মে’রে হাড্ডব ভেঙ্গে দিব। ”
অপরিচিত যুবকটি এতক্ষনে বোধহয় কিছু বুঝে উঠল। উরাধুরা মার খেয়ে পকেট থেকে দ্রুত কাউকে কল করে বলল,

” সুহার বাচ্চা সুহা! তোর বর আমারে মেরে হালুয়া বানিয়ে দিয়ে়ছে।”
সুহা আতঙ্কিত হয়ে ছাদের কর্নারে এসে তাকাল। মূলত আজ সুহার বোন রাহার জম্মদিন। যে ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে সে সুহাদের বন্ধু সাদ। রাহাকে পছন্দ করে। বার্থডে উইশ করবে বলেই রাত বারোটার একটু আগে থেকেই এসে এখানে দাঁড়িয়ে আছে। অথচ কে জানত এমন মার খাবে সে? সুহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্বচ্ছকে কল করে। রাগে হাঁসফাঁস করতে করতে বলে,
“ আশ্চর্য! সাদকে মারলেন কেন স্বচ্ছ? তিনজন ছেলে মিলে একটা ছেলেকে নাস্তানাবুদ করাটা কি উচিত হয়েছে আপনার? ”
স্বচ্ছ তখন দ্বিগুণ রেগে গম্ভীর গলায় বলল,
“ হয়েছে! ”
সুহা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“ কোন যুক্তিতে মনে হচ্ছে উচিত হয়েছে?”

“ অন্যের বউয়ের জন্য এসে দাঁড়িয়ে থাকাটা আমার যুক্তিতে ভীষণ খারাপ কাজ৷ তার উপর আবার ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দেখছিল কেবল বেলকনির দিকে।গোলাপ নিয়ে এসেছিল। আমি জানি, রাতে কেবল বেলকনিতে এসে গান তুমিই গাও সুহাসিনী।”
সুহা বিরক্ত গলায় বলে,
” আমি গাই মানেই বেলকনিতে আর কেউ আসতে পারে না এমন তো নয় তাই না অস্বচ্ছ সাহেব? হতে পারে ছেলেটা অন্য কারোর জন্য এসে দাঁড়িয়ে ছিল? ”
স্বচ্ছ মানল না। বরং বলল,
“ আমার বন্ধুরা বলেছে এটা সে ছেলেই যে ছেলেটার হাতের ছবি দিয়ে এতকাল তুমি আমায় জ্বালিয়েছো। ”
সুহা ছোটশ্বাস টেনে বলে,

“ আপনি নিজেই তো সেদিন আন্দাজ করলেন যে ছবিতে দেওয়া মেয়েলি হাতটা আমার নয়। তাই না? ”
স্বচ্ছর আচমকায় টনক নড়ল। কিছু একটা মনে পড়েছে এমন ভাব করে ছেলেটার দিকে তাকায়। আহারে। চড় ঘুষি খেয়ে মুখের কত জায়গায় লাল হয়ে গিয়েছে ছেলেটার। স্বচ্ছ বলে,
” তার মানে ঐ ছুটি মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড? শিট! কি করে ফেললাম বেচারার সাথে। স্যরি, স্যরি সুহাসিনী! সত্যিই স্যরি। ”
কথাটুকু বলেই কল রাখে। সাদ নামের ছেলেটাকে তুলে সুন্দর ভাবে দাঁড় করায়। কলাটা ঠিক করে দিয়ে চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে বলে,
“ ছোটভাই? ভুল হয়ে গেছে। তুমি আগে কেন বলো নি তোমার গার্লফ্রেন্ড সুহাসিনী নয়? বলো নি কেন বলো? আমরা যদি জানতাম তুমি আমার বউয়ের বয়ফ্রেন্ড না, বরং তার বান্ধবী ছুটির বয়ফ্রেন্ড তাহলে সত্যিই মারতাম না। স্যরি ছোটভাই। ”

ছেলেটা মিনমিন স্বরে বলল,
“ বলার সুযোগ দিলে নাকি ভাই?”
আবির দুইজনের কথোপকোতন শুনে গোলগোল চোখে তাকায়৷ দুইয়ে দুইয়ে চার মেলায়। ভাবে ছবিতে পাঠানো মেয়েলি হাতটা যদি ছুটির হয় আর ছেলের হাতটা যদি এই ছেলের হয়? ওরা দুইজন প্রেমিক প্রেমিকা? আবির বিশ্বাস করতে না পেরে সাদাফকে টেনে জিজ্ঞেস করে,
“ ছুটির বয়ফ্রেন্ড? ছুটির বয়ফ্রেন্ড ও দোস্ত? ”
সাদাফ বিরক্ত হয়ে বলে,
“ তো কি আমার বয়ফ্রেন্ড হবে? ”
আবির দাঁতে দাঁত চেপে বলে এবারে,
“ আর দুইটা মার প্লিজ এই ছেলেরে।”
কথাটা বলেই ছুটির আইডিতে গিয়ে ম্যাসেজ করল,

“ কোথায় তুই? ”
ছুটি ও তখন ছাদে। রাহার বার্থডে কেক কাঁটা হচ্ছিল। অথচ এত ব্যস্ততার মাঝেও আবির ভাইয়ের ম্যাসেজ পাওয়া মাত্রই সে গদগদ হয়ে রিপ্লাই দিল,
“ ছাদে। কেন আবির ভাই?”
আবির লিখল,
“ দরকার আছে। ওখানেই থাক। আমি আসছি৷ ”
এটুকু বলেই যখন পা চালাতে নিবে তখন সাদাফ এসে বলল,
“ ওরে আরো চারটা চড় মেরেছি দোস্ত। তুই কই যাস? ”
“ ছাদে যাচ্ছি। ”
স্বচ্ছ জিজ্ঞেস করল,

“কেন? ”
“ছুটির গালে দুটো চড় বসিয়ে দিয়ে আসতে!”
সাদাফ অবাক হয়ে বলে উঠল,
“ সে কি! মেয়েটা করল কি তোর? ”
“ অনেককিছুই! ”
স্বচ্ছ ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
“ ভালো টালো বাসিস না তো আমার বউয়ের বান্ধবীকে?”
“ বাসলে বাসলাম। ”
সাদাফ যেন খুব উচ্ছাসিত এমন ভাবে লাফিয়ে উঠল। বলল,
“ তাহলে প্লিজ চল, প্রোপোজটা আজ করে ফেল। আমরা আছি তোর এই বিশেষ মুহুর্ত লাইভ টেলিকাস্ট করার জন্য। ”

আবির কপাল কুঁচকে বলে,
“ মার খাবি? এই দিকে আয়। ”
সাদাফ স্বচ্ছ আর আবিরের সাথে যেতে যেতেই বলল,
“ লাগবে না লাগবে না। তার চেয়ে প্লিজ তিনজনে গিয়ে ছুটি ভাবিকে গিয়ে বার্থডে উইশটা করে আসি। চল চল!”

তিন বন্ধু যখন সিঁড়ি বেয়ে ছাদ অব্দি পৌঁছাবে ঠিক তখনই সাদাফ কৌতুহল নিয়ে বলল,
“ দোস্ত? তোর ছুটি এত রাতে ছাদে কেন থাকবে? ”
ছাদ থেকে হালকা আওয়াজ আসছে। আবির বিরক্ত হয়ে বলে,
“ ছাদে কি কিছু চলছে নাকি? এত হৈ হুল্লোড় কেন? আশ্চর্য! ”
স্বচ্ছ বলে,
“ বুঝে উঠছি না তো। ভেতরে চল, দেখা যাক! ”
সিঁড়ির শেষ ধাপে এসেই কানে এল কারো গানের সুর। সাদাফ উচ্ছাস নিয়ে বলল,

“কে জানি গান করছে রে দোস্ত! কি সুন্দর গানের গলা। চল চল, ভেতরে গিয়ে একটু দেখি। ”
স্বচ্ছ চোখ বুঝে। গানের গলাটা তার পরিচিত! বুকের ভেতর অনুভূতি বয়ে যায়। খুব পরিচিত কন্ঠের মালিক যে খুব কাছেই আছে তা বুঝে উঠে অস্থির লাগে তার। বিড়বিড় স্বরে বলে,
“ আমি বোধহয় গলাটা চিনি! গলাটা আমি শুনেছি.. ”
এটুকু বলতেই সাদাফ ছাদের দরজা ঠেলে দাঁড়ায়। চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে থাকে গিটার হাতে বসা মেয়েটার দিকে।খোলা চুল গুলো উড়ছে, হাতে গিটার, পরণে লাল রংয়ের কামিজ!দৃশ্যটা সুন্দর! সাদাফ খুশি খুশি গলায় বলে,
“ দোস্ত? এটা ঐদিনের মেয়েটা না? দারুণ লাগছে না মেয়েটাকে আজ? গিটার হাতে, খোলা চুলে ছাদের অল্প আলোয়! ইশশ কি মানিয়েছে! আমি ক্রাশড! ”

স্বচ্ছ মুহুর্তেই বন্ধুর চোখে হাত দেয়। পিঠ বরাবর ঘুষি বসিয়ে তাকায় মেয়েটাে দিকে। এটা সে বেয়াদব মেয়েটায়! অথচ গানের গলা তো সুহাসিনীর মতো। স্বচ্ছ স্থির দৃষ্টিকে তাকিয়ে থাকে। এতগুলো দিনে গিয়ে এই প্রথম সে মেয়েটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। লাল জামা পরিহিত, চুল ছেড়ে দেওয়া যা হালকা বাতাসে উড়ছে অল্প অল্প। আগের মতো রাগ রাগ নেই মুখচাহনি। শান্তশীতল মুখশ্রী! আর এই মুখশ্রীই তার সুহাসিনীর মুখশ্রী তা ভেবে স্বচ্ছর বুকের ভেতর হীম স্রোত বয়ে যায়। সেভাবেই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে সাদাফকে দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বলল,
“ চোখ বুঝ! ও কেবল আমার। ”
সাদাফ মুহুর্তেই বলল,

প্রেমের সমর পর্ব ৮

“ ও কেবল তোর? কবে থেকে? তোর না বউ আছে? ছিঃ! তোর বউ শুনলে কি হবে বুঝতে পারছিস? না হওয়া ডিভোর্সটাও তোর হলো বলে এবার! ”
স্বচ্ছ আবারও শক্ত স্বরে বলল,
“ হুররর, ও তোর ভাবি হয় শা’লা! অন্য দৃষ্টিতে তাকালেই চোখ উপড়ে নিব। ”
সাদাফ আচমকায় চোখ গোল গোল করে বলে,
“ ভাবি? তার মানে এটাই তোর বউ? ও মাই গড! এই ডেঞ্জারাস মেয়েটাই তোর বউ? দোস্ত! তোর ফিউচার তো শেষ! শেষ…শেষ….!”

প্রেমের সমর পর্ব ১০