বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৬
shanta moni
“বিকাল ৪ টা কি সারে ৪ টা, রোদ গোসল করে ঘুমিয়ে আছে” সেই যে, ১২:০০ বাজে গোসল করে ঘুমিয়েছে, এখন পযন্ত উঠেনি। শুভ্র রোদের রুমে একবার এসেছিল” রোদকে ঘুমাতে দেখে আবার চলে যায়। হেনা বেগম এসেছিলো খাবারের জন্য ডাকতে রোদকে”এইভাবে গভীর ঘুমে দেখে ডাকেনি, আর রুহির কাছেও শুনেছিল” শুভ্র নাকি রোদকে বাহির থেকে খাবার এনে খায়িছে।”
“আজ অনেক দিন হয়ে গেলো” রোমানের কোনো খোঁজ নেই„ রুহি অনেক’টা হাসফাস করছে’ যেই রোমান বেশি ভাগ সময় চৌধুরী বাড়িতে থাকতো’
“আজ অনেক দিন হয়ে গেলো’ রোমানের কোনো দেখা নেই’ রুহি রোমানের এই রকম হুট করে নিখোঁজ হয়ে’ যাওয়া বেপার’টা মানতে পারছে না” রুহি এই সব কিছু নিজের রুমে বসে ভাবছিলো’ কোনো ভাবেই নিজেকে সামলাতে পারছে না” দৌড়ে রুম থেকে বেড় হয়” শুভ্রের রুমে সামনে এসে কিছু একটা ভেবে ভয়ে ভয়ে রুমে ডুকে” শুভ্র মিরোরে সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক’ করছিলো। রুহি পিছনে এসে দাঁড়িয়ে আস্তে করে বলে”
“ রুহি: ভাইয়া?”
শুভ্র আয়নার রুহি দেখে বলে..”
“শুভ্র: হুম বল কিছু বলবি?”
রুহি ওড়নায় নিজের হাত কচলাতে থাকে” আস্তে করে বলে..”
রুহি: আমাকে দাদি পাঠিয়েছে” রোমান ভাইয়া কিছুদিন ধরে’ এখানে আসছেনা’ কেনো? রোমান ভাইয়া আসতে বলছে’ দাদি নাকি কি জরুরি কাজ আছে..”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
শুভ্র মিরোর থেকে চোখ সরিয়ে রুহি দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়’ তাঁরপর বলে..”
শুভ্র: আজকে কথা হয়েছিলো’ রোমানের সাথে অসুস্থ নাকি’ এই জন্য আসতে পারছে না’’
রুহির বুকের ভিতর ধক করে উঠে’’
শুভ্র পুনরায় আবার বলে উঠে..”
“শুভ্র: আমি আজকে তো দেখতে যেতে পারবো না’’ কালকে ছাড়া আজকে জরুরি কাজ আছে…’’
রুহি কোনো কিছু না বলেই’ রুম থেকে বেড়িয়ে কিছু দূর যায়’ গিয়ে আবার শুভ্রের রুমে আসে’’
শুভ্র রুম থেকে বের হচ্ছিল’ এমন সময় রুহি রুম ডুকে’ রুহি আমতা আমতা করে বলে’’
রুহি: ভাইয়া রোমান ভাই কোথায় আছে?”
শুভ্র: নতুন ফ্ল্যাট কিনছে সেখানে আছে।”
রুহি মিনমিনিয়ে বলে”
রুহি: ভাইয়া দাদি রোমান ভাইকে দেখতে যাবে” তুমি রোমান ভাইয়ের বাড়ির এড্রেজ দাও!’’
শুভ্র রুম থেকে বেড়তে বেড়তে বলে”
শুভ্র: আমি তোর ফোনে বাড়ির এড্রেজ পাঠিয়ে দিব।
বলেই শুভ্র চলে যায়। শুভ্র চলে যেতেই’ রুহি বুকে থু থু দেয়। কিছুক্ষণ পর রুহির ফোনে টুন করে একটা মেসেজ আসে”
রুহি বাড়ির ঠিকানা পেয়ে মুখে হাঁসি ফুঁটে‚ দৌড়ে নিজের রুমে যায়। সুন্দর করে রেডি হয়ে‚ বেড়িয়ে যায়‚ রোমানের বাসার উদ্দেশ্য‚ বাসা থেকে বেড় হওয়ার সময় হেনা বেগমকে মিথ্যা বলে বেড় হয়েছে” যে হোস্টেল এক বন্ধু অসুস্থ তাকে দেখতে যাচ্ছে‚ হেনা বেগম কিছু বলেনি’তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বলেছে‚
“প্রায় আধা ঘণ্টা পর রুহি রোমানের বাড়ির সামনে দাঁড়ায় দুই তলা বিশিষ্ট বাড়ি’ রুহি বাড়ির দারোয়ান’ কে বলে গেট দিয়ে ডুকে’ বাড়ির সামনে সোজা সরু রাস্তা গেছে’ পাশে সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ’ বিভিন্ন রকম ফুল ফুঁটে আছে‚ রুহি সব ফুলের নামও জানে না!’
‘দরজা কলিং বেল চাপতেই’ একজন মধ্যেবয়স্ক মহিলা দরজা খুলে’ দেখে বোঝা যাচ্ছে‚ বাড়ির কাজের লোক রুহি বাসার ভিতরে ডুকতেই, ভদ্র মহিলাটি বলে‚
“ কে তুমি মা?”
রুহি আমতা আমতা করে বলে..”
রুহি: আমি আসলে আন্টি রোমান ভাইয়ের বন্ধুর বোন’ ভাইয়া নাকি অসুস্থ শুনলাম’ তাই দেখতে আসলাম।
মহিলাটি মিষ্টি হাঁসে তাঁরপর বলে”
“ও তুমি শুভ্র বাবাজির বোন’ রুহি
রুহি: জ্বী আন্টি!”
‘রুহি আবার বলে…”
রুহি: আন্টি রোমান ভাই কোথায়?”
‘কাজের মহিলাটি‚ নরম স্বরে বলে উঠে‚
“রোমান বাবার কি জানি হইছি‚ সারাদিন রুমে মধ্যে থাকে‚ রুম থেকে বেড় হয়’ না
আজ তিন চার দিন হয়ে গেছে‚ কিছু খায়নি‚ আমি অনেক ডাকাডাকি করছি মা‚ কিন্তু রুমের ভিতরে দরজা বন্ধ করে আছে’’ খুঁলছে না’ কি রকম হাঁসি খুশি ছেলেটা এই রকম রুম বন্দি হয়ে আছে”
রুহি চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে‚ রুহি আস্তে করে বলে’
রুহি: আন্টি আমি কি একটু রুমে যেতে পারি!
মহিলাটি বলে’
আরে মা যাবে” তোমরা তো তার আপন জন, তবে তুমি এই হানে দাড়াও’ মহিলাটি কথা গুলো বলে কোথাও চলে যায়। কিছুক্ষণ পর এসে হাতের মুঠে একটা চাবি নিয়ে বলে”
রোমান বাবা রুমে যাওয়ার অনুমতি আমাগো নাই’ ওনি দরজা সব সময় দিয়ে রাখেন‚ নিজের রুম নিজেই সাজিয়ে গুছিয়ে রাখেন‚ তোমরা তো তার আপন মানুষ তো রুমের দরজা হয়তো লক করে বসে আছে’ তুমি এই চাবি দিয়ে দরজা খুলে তারপর যাও, আর হ্যা ডান পাশে গিয়ে প্রথমে যে রুমটা দেখবে ওইটা রোমান বাবার রুম’
রুহি মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যা বলে, ধীর পায়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়।
রুহি রোমানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে হাতে চাবি নিয়ে ভাবছে দরজা খুলবে কি খুলবে না’ নাকি চলে যাবে’
রুহি মনে মনে বলে’’
রুহি: আচ্ছা উনি যদি জিগ্যেস করে‚ আমি এখানে কেনো এসেছি‚ তাহলে আমি কি বলবো,
রিলাক্স রুহি‚ কিছু একটা বলে দিবি,
রুহি রুমের দরজা খুলে রুমের ভিতরে ডুককে দেখে পুড়ো রুম অন্ধকার’
রুমে ডুকে পা পড়ে কিছু একটায় সাথে সাথে পা সরিয়ে নেয়! বেলকনি থেকে আপছা আলো আসছে’ রুমের জানালা লাইট সব বন্ধ রুহি ব্যাগ থেকে ফোন বেড় করে’ ফোনের ফ্লাস ওন করতেই চোখ কপালে পুড়ো রুম নন্ড ফন্ড হয়ে আছে!’ মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগেই’ এখানে বড়সড় সুনামি গেছে!’ রুহি সাবধানে রুমে ভিতরে ডুকে, সামনে তাকাতেই রুহি হাত থেকে ফোন পড়ে যায়! রোমানের এক হাত দিয়ে রক্ত পড়ে পুড়ো ফ্লোর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
চুল গুলো এলোমেলো গায়ে আধখোলা শার্ট পড়া, ফর্সা বুক শার্টের ফাক থেকে দৃশ্যমান’ বিছানার সাথে হেলান দিয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে’ রোমান!
রুহি দৌড়ে গিয়ে রোমানের পাশে বসে পড়ে’ রুহি চোখ দিয়ে পানি পড়ছে’ তার মনে হচ্ছে’ তার জন্য আজ রোমানের এই অবস্থা’ রুহি ব্যাগ থেকে রুমার বেড় করে রোমানের কাটা৷ যায়গা বেঁধে দেয়। রক্ত থামানোর জন্য, রুহি কাঁপা কাঁপা হাতে রোমানকে ধাক্কা দিয়ে বলে…”
“রুহি: রোমান ভাই’ প্লিজ উঠুন? কি অবস্থা করেছেন আপনি?’’
রোমান আস্তে করে মাথা তুলে ঝাঁপসা চোখে সামনের দিকে তাকায়’ রুহিকে দেখে মনে করে’ হয়তো সেটা সে’ কল্পনা করছে” রোমান রুহিকে ঝাঁপটে ধরে’ বাচ্চাদের মতো কেঁদে দেয়।’’
“রোমান কেঁদে উঠে বিড়বিড় করে বলে..!”
রোমান: তুই এটা কি করলি রুহি, কেনো করলি’ আমি তোকে খুব ভালোবাসি’
কি করে আমি তোকে ছাড়া থাকবো!”
“আমি সত্যি মরে যাবো’
রুহি রোমানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে’
রোমান আবার কাঁদতে কাঁদতে বলে
রোমান: রুহি আমার কি দোষ ছিলো’ কেনো আমায় ভালোবাসলি নাহ”
রুহি রোমানকে ছেড়ে পাশে থেকে উঠে’
ফ্লোরে পড়ে থাকা ফোন হাতে নেয়”
রুমের লাইট ওন করে’
রুমের টাইট অন করতেই, রোমানের হুস আসে। বসে থেকে তরিগড়ি করে উঠে’
সামনে তাকাতে রুহিকে দেখে নিজেকে স্বাভাবিক করতে চায়। রোমান অবাক হয়ে বলে..’
রোমান: তুমি এখানে কি করছো..?”
রুহির রুমে চারদিকে তাকায়’ রুমের দেয়ালে সব যায়গা রুহির ছবি’ বেডের দিকে দেয়ালে রুহির হাঁসি মুখের বড় একটা ছবি লাগানো। সমস্ত রুম জুঁড়ে রুহির ছবি।
রুহি অবাকের রেশ কেঁটে রোমানের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকায়..!”
রুহি চোখ থেকে পানি পড়ছে’
রোমান আচমকা বলে উঠে
রোমান: তুই এখানে কি করছিস? এখানে কেনো এসেছিস? চলে যাহ! এখান থেকে।
রুহি রোমানের সামনে এসে দাঁড়িয়ে চোখে পানি টলমল করছে রুহি কাঁপা কাঁপা কন্ঠ বলে”
রুহি: আপনি না বলেছিনেল’ আপনি আমাকে ভালোবাসেন। এমনি এমনি বলেছিলেন’ আর যেই আপনি বুঝে গেলেন’ আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে গেছি” ওমনি দুরত্ব বাড়িয়ে দিলেন।
‘দুইদিন পর’
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪৫
কারো শক্ত হাতে থাপ্পড়ে নিচে পড়ে যায়’ রোদ, শুভ্র রোদের চুলের মুঠি ধরে দাঁড় করিয়ে মুখের সামনে এনে রাগে গর্জে উঠে বলে..!
শুভ্র: কি বলেছিলাম’ আমার কথার বাইরে যাবি না’’ তাঁরপর কেনো গেলি তুই ৪০০ গ্রামের বাচ্চা’ বল কেনো অবাধ্য হয়েছিস’ আমার। কথা বল শালি’
শুভ্র পুনরায় আবার রেগে দাঁতে দাঁত পিষে বলে’’
‘তোকে ভালোবাসি কিনা’ আজ সেটা প্র্যাকটিকালি দেখাবো চল শালি…!”
