বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩০
ইশরাত জাহান
জবরুল আহমেদের নির্দেশে দর্শনকে একটি পুরনো কুঠুরির সামনে এনে দাঁড় করানো হলো।দরজাটা আধা খোলা।ভিতর থেকে মাঝে মাঝে চাপা গোঙানির শব্দ ভেসে আসছে।দর্শনের মুখটা কঠিন হয়ে আসে।সে ধীরে ধীরে ভিতরে পা রাখে।চোখ আটকে যায় সামনের দৃশ্যটায়।
শোভ এক কোণে পড়ে আছে অজ্ঞান হয়ে।হাত-পা বাঁধা।শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।পিঠ বেয়ে রক্ত ঝরছে। চোখ বন্ধ।আর তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন লোক ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে চাবুক তুলছে আরও একটা আঘাত করার জন্য।চাবুকটা ঠিক তখনই নামতে যাচ্ছিল ওমনি কর্কশ কন্ঠে ভেসে আসে,“থাম!”
বজ্রকণ্ঠে চিৎকার করে ওঠে দর্শন।এক লাফে এসে চাবুকওয়ালার হাত চেপে ধরে।মুহূর্তে তার চোখ রক্তিম হয়ে ওঠে।দর্শন ঘৃণাভরা কণ্ঠে বলে,“এই হাত দিয়ে তুই ওকে মারছিলি?ওর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে আর তুই দাঁড়িয়ে আনন্দ নিচ্ছিস?এবার তোর থেকে আমি আনন্দ নিবো।”
লোকটা কিছু বলার আগেই দর্শনের ঘুষিতে সে উল্টে পড়ে যায়।তারপর একের পর এক ঘুষি,লাথি।এক পশুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে দর্শন।পুলিশরাও চুপ হয়ে আছে।তারা যে সরকারের আইন মানে সেই সরকারের কাছে দর্শন টাকা দিয়ে আইনকে কিন নিতে পারে দুই মিনিটে।কারণ দর্শনের হাতে বড় বড় লোক আছে যারা দর্শনের সাথে ইনভেস্ট করে বিজনেস করে।এগুলো রাজনীতির আলাদা দিক।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
দর্শন প্রতিটা আঘাতের সঙ্গে চিৎকার করে বলে,“আমার বউয়ের গায়ে হাত দেওয়ায় আজ তোর হাত ভেঙে যাবে।রক্ত ঝড়িয়েছিস ওর শরীর থেকে এখন তোর শিরা আমি কেটে দেব!”
লোকটা করুণ আর্তনাদ করে কিন্তু দর্শনের ক্রোধ তখন আগুন হয়ে জ্বলছে।পাশে থাকা ধারালো ছুরি নিয়ে সত্যিই কেটে দিলো হাতের শিরা।দৃশ্য দেখে কেঁপে উঠলো দিজা।ভয়তে চোখ বন্ধ করে নেয়।তুহিন এগিয়ে এসে দর্শনকে থামাতে চায় কিন্তু পাগল ক্ষেপে আছে।মেয়েতে ঘৃণা জন্মানো ছেলেটি কিভাবে বউ পাগল হয়ে গেলো বুঝতে পারছে না।
দর্শন আরও এক ঘুষি মেরে বলে,“ওর প্রতিটা ক্ষত এখন আমার শোধ নিতে বাধ্য করবে!”
লোকটা নিস্তেজ হয়ে পড়তেই দর্শন ছুটে যায় শোভার কাছে।হাঁটু গেড়ে বসে ধীরে ধীরে শোভার বাঁধা হাত খুলে দেয়।শোভার নিস্তেজ মুখটা কোলে তুলে নেয়।মাথায় কাপড় নেই।শোভার লম্বা চুলগুলোর নিচের দিকটা রক্তে ভিজে আছে।দর্শনের বুকের মধ্যে যেনো কেউ হাতুড়ি পেটাচ্ছে।বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় শোভাকে।
দর্শন কাঁপা গলায় ফিসফিস করে ডাকে,“শোভা,এই শোভা চোখটা খোল আমি এসেছি।তোমার দর্শন ফরাজি রাগী গন্ডার বদমেজাজি এসেছি…”
শোভার সাড়াশব্দ না পেয়ে আবারও বলে,“দেখো, আর কেউ তোমায় ছুঁতে পারবে না।আমি আছি,আমি তো আছিই।”
শোভার কপালে আলতো করে আঙ্গুল ছুঁয়ে দেয় দর্শন।এক ফোঁটা চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে তার গাল বেয়ে।ঘরজুড়ে তখন কেবল দর্শনের শ্বাস ফেলা আর আর্তনাদ।দিজা ওর ভাইকে দেখে কান্না করে দেয়।ভাবীর প্রতি ভাইয়ের এই ভালোবাসা দেখে কান্না আসলো।পাষাণ লোকের মনেও ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে।যে মেয়েকে নিজের জীবনে রাখতে চায়না তার জন্য আজ হাহাকার।দর্শন এখনও ডেকে চলেছে।কোনমতে সাড়াশব্দ নেই।পানি ছিটানো হলো।তাও উত্তর নেই শোভার।দর্শন এবার কর্কশ কন্ঠ বলে,“বুঝেছি আমি।যতক্ষণ না তোমাকে থাপরাবো তুমি সাড়া দিবে না।তোমার স্বভাব তো আমাকে পাল্টা আঘাত করা।তাহলে আজ তাইই হোক।”
বলেই দিলো শোভার গালে থাপ্পড়।দর্শন আশা নিয়ে আছে শোভা তাকে পাল্টা আঘাত করবে কিন্তু করলো না।দর্শন হুংকার ছেড়ে বলে,“এই মেয়ে কানে কথা যায়না?কথা বলতে বলেছি তো,মরার মত ঘুমোতে বলিনি।আমার কথা না শুনলে কিন্তু আমার খুব রাগ হয়।কথা বলো আমার সাথে।কি হলো?মুখ খোলো না কেন?উত্তর দেও আমার কথার।”
কাজ হচ্ছে না।শোভা নিস্তেজ হয়ে আছে।না পেরে দিজা এগিয়ে এসে দর্শনের হাত ধরে বলে,“ভাইয়া মাথা ঠাণ্ডা করো।ভাবীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।”
দর্শন অতি দ্রুত শোভাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে উঠলো।তুহিন ড্রাইভ করে।কুইন্স হাসপাতালে এসে গাড়ি থামায়।পারুল বেগমকে জানিয়ে দেয় দিজা।সবাই মিলে ছুটে আসে হাসপাতালে।শোভার অপারেশন চলছে।বাইরে দাঁড়িয়ে আছে দর্শন,তুহিন ও দিজা।বাকিদের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।পারুল বেগম এসে দেখেন দর্শনের বুকে রক্ত।সাদা শার্ট লাল রক্তে ভরে গেছে।পারুল বেগম এগিয়ে এসে ছুতে নিবে দর্শন তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে,“ও বলেছিলো যেদিন আমি সম্পর্কের মূল্য বুঝবো সেদিন আমি পাল্টে যাবো।আমি পাল্টে গেছি কিন্তু আজকের দিনের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।আমাকে পাল্টাতে চেয়েছে ঠিক আছে কিন্তু আমার থেকে বিদায় কেন নিতে চায়?”
শামীম রক্ত দেখে ওখানেই থমকে পড়ে যায়।দিদার সামলে নিয়ে এক কোনায় বসিয়ে দেয়।মিতু নিজেকে শক্ত রাখে।এই সময় তাকে ভেঙে পড়া যাবে না।মৌলি একটু থেমেছিল কিন্তু এখন আবার কান্না করে।ডাক্তার অপারেশন থ্রিয়েটার থেকে বের হয়ে এলেন।চোখে গভীর চিন্তার ছাপ নিয়েই বলেন,“ওনাকে প্রচণ্ডভাবে অমানসিক আঘাত করা হয়েছে।শরীরে চাবুকের দাগ একাধিক জায়গায়,পিঠটা প্রায় ছিন্নভিন্ন।রক্তক্ষরণ হয়েছে প্রচুর।শরীর এতটাই দুর্বল যে জ্ঞান ফেরাতে অনেক সময় লাগবে।”
একটু থামলেন তারপর কপাল মুছতে মুছতে আবার বলেন,“আমরা জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দিয়েছি তবে এখনই কিছু বলা সম্ভব না।স্পাইনাল কর্ডের কাছেও আঘাত আছে।আমরা আরও কিছু টেস্ট করছি। মানসিকভাবেও উনি চরম ট্রমার মধ্যে আছেন।”
ডাক্তারের কথাগুলো যেন চারদিকে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরতে লাগল,“স্পাইনাল কর্ডের কাছেও আঘাত আছে।”
সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকটা মানুষ পাথরের মতো চুপ।কারও চোখে পানি, কারও চোখে শূন্যতা।দর্শন নীরব হয়ে বসে আছে।শামীম মাথা নিচু করে কপালে হাত।মিতুর মুখে হাত চেপে নীরবে কাদঁছে।শোভাকে তখন আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।তার মুখটা বিবর্ণ শরীর ঢাকা সাদা ব্যান্ডেজে।চাবুকের দাগগুলো যেন ব্যথার ছায়া হয়ে মুখে ছড়িয়ে আছে।দিজা নিজেকে দায়ী করে বলে,“আমি যদি ভাবীর কাছে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতাম তাহলে এতকিছু হতো না।”
তুহিন শান্তনা দেয়,“তুমি চাইলেই যে সব পারতে এমনও না।এটা হবার ছিলো তাই আমাদের সম্মুখীন হতে হয়েছে।শক্ত হও নাহলে ওই পাথর থাকা মানুষটাকে আজ গুড়িয়ে যেতে দেখতে হবে।”
দর্শনের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে।পারুল বেগম পাশেই ছিলেন।তুহিনের কথা শুনে তাকালেন দর্শনের দিকে।কান্না করছে না কিন্তু চোখমুখের অবস্থা একদম বাজে।এই ছেলেটা কাদতে জানে না।কান্না তার জন্য না কিন্তু কান্না না করার কারণেই তার কপালের শিরা ফুলে উঠেছে।পারুল বেগম এসে দর্শনের কাধে হাত রাখলেন।দর্শন তবুও নীরবে শূন্যে চেয়ে আছে।
হাসপাতালের বিছানায় শোভার নিঃসাড় শরীরটা পড়ে আছে একদম নিশ্চল।মেশিনের শব্দ কেবল জানান দিচ্ছে যে সে এখনো বেঁচে আছে।হঠাৎ পাশ থেকে একজন নার্স ধীর কণ্ঠে বলে উঠলো,“ওনার পালস স্টেডি আছে তবে এখনো রেসপন্স করছে না।হয়তো জ্ঞান ফিরে আসতে সময় লাগবে।”
শামীম মুখে হাত চাপা দিয়ে কাঁদতে শুরু করল,“আমার বোনটাকে ওরা কেন এত কষ্ট দিল?ও তো কারো সাথে অন্যায় করেনি।”
মৌলি তার বাবার কান্না দেখে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে।আশেপাশের লোকজন উকি দিচ্ছে এদিক ওদিক থেকে।
ডাক্তারের অনুমতি পেয়ে দর্শন সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য আইসিইউতে যেতে পারে।ভিতরে এসে একটা চেয়ার সরিয়ে দর্শন চুপচাপ বসে পড়ল।তার চোখ স্থির শোভার দিকে কিন্তু বুকের ভিতর যেন তোলপাড় চলছে।দর্শন ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল হাতে সময় নেই ডাক্তার ইশারা দেয়।দর্শনের চোখের কোণে কঠিন প্রতিজ্ঞার আঁচ,“যারা ওর এই অবস্থা করেছে তাদের আমি ছেড়ে দেব না।”
বাইরে আসে আর আইসিইউয়ের দরজা বন্ধ হয়।একটা শব্দ হলো দরজা বন্ধ হবার যেটা বারি খেলো দর্শনের বুকে।ভিতরের নারীটি তার জীবনে জায়গা করে নিয়েছে।উহু রূপ দিয়ে না বরং গুণ দিয়ে।শোভার প্রতিবাদী আচরণ অসহায় হয়েও সে নিজের আত্মসম্মান ধরে রাখতো।অপ্রয়োজনে মুখ খুলতো না।দর্শনের ভালো ব্যবহারে শোভা নিজেও লাজুক ও অমায়িক চাহনি দিতো।পরপুরুষের সামনে নিজের সৌন্দর্য গোপন রাখে।দর্শন আপনাআপনি ভালোবেসেছে এই নারীকে।এতটাই ভালোবাসলো যে আজ তার এই নারীর কষ্টে নিজের কষ্ট উপলব্ধি করে।চোখের কোণে পানি জমতেই বুড়ো আঙুল দিয়ে টিপে ধরে।যেনো বেশিদূর গড়িয়ে না যায়।কাউকে দেখাতে চায়না তার দুর্বলতা।দাদাজান এসে বলেন,“চলো উপরে নামাজঘর আছে।নফল নামাজ পড়ে দোয়া করি।এই সময় আল্লাহকে ডাক দেওয়া খুব জরুরি।একজন স্বামীর দোয়া আল্লাহ কবুল করে নিবেন।ভালোবাসার প্রমাণ তো এটাই যে তুমি আল্লাহর কাছেও তোমার বউয়ের জন্য কিছু চাইছো।”
দর্শন সম্মতি দিয়ে উপরে যেতে নিয়ে আবার পিছনে ফিরে।দিদার একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বলে, “দিজা বলেছিলো তোমার শার্ট রক্তে ভিজে গেছে।”
দর্শন প্যাকেট নিয়ে পারুল বেগমের কাছে এসে বলে,“এখানে সবাই এখন দুর্বল হয়ে আছে।তুমি পারবে তো দেখে রাখতে?”
পারুল বেগম তাকালেন দর্শনের দিকে।আস্থার চাহনি দিয়ে বলেন,“সন্তানের বিপদের সময় মাকেই শক্ত থাকতে হয়।আমি শক্ত থাকবো।তুই যা নামাজ পড়।শামীম তুমিও নামাজ পড়ে দোয়া করো।ভাইয়ের দোয়া কাজে লাগবে।”
শামীম আর দর্শন সাথে দাদাজান গেলেন নামাজ পড়তে।এদিকে ওরা যে আলাদা কেবিন ভাড়া নেয় ওটাতে ঢুকে মহিলারা নামাজ পড়তে শুরু করে।মৌলি নিজেও আজ দুইহাত পেতে বলে,“পিপিকে এনে দেও আল্লাহ।তুমি তো সব ইচ্ছা পূলণ কলো।আমাল পিপিকে আমাল কাতে এনে দেও।আমি পিপিল কোলে ঘুমাবো পিপিল হাতে ভাত খাবো পিপিল সাথে নামাজ পলব।”
মোনাজাতে মিতু ডুকরে কেঁদে দেয়।শোভার সাথে তার কখনও খারাপ মুহূর্ত যায়নি।লোকে আসতো কূটনীতি করতে কিন্তু মিতু খুবই বুদ্ধিমতি।মায়ের থেকে শুনেছে সংসার জীবন কতটা কঠিন।ননদ জা শাশুড়ি এদের আগে বুঝতে হয়।কপাল ভালো বলেই দুজন ভালো ব্যাক্তি পেয়েছে।তাদের সাথে বাজে আচরণ করা তো দূর তাদের উপর বিরক্ত হবার জায়গা ছিলো না।শামীমা বেগম উল্টো মিতুকে বিশ্রাম নিতে বলে শোভাকে কাজ করতে বলতেন।হ্যাঁ কিছুটা এই ভেবে যে ছেলের সংসার ঠিক থাকুক।তাদেরকে বোঝা মনে না করুক কিন্তু তবুও তো মেনে চলতেন।এসব কারণেই তো মিতুও আজ তার শাশুড়ি ও ননদের জন্য কান্না করে।শাশুরির মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি আজ ননদের করুন অবস্থায় মোনাজাতে কান্না করে।মন দিলে মন পাওয়া যায়।মিতু নতুন বউ হয়ে আগে মন পেয়েছে।তাই সেও কূটনীতি করতে পারেনি।
কেবিনের বাইরে বসে আছে তুহিন।সবাই চলে যাওয়ার পর পকেট থেকে মোবাইল বের করে।ম্যাসেজ এসেছে তানিয়ার থেকে।ওখানে লেখা,“আপনি যাকে ভালোবেসে অপেক্ষা করেছেন সে আজ অন্য কাউকে ভালোবাসে।তার জন্যই এই শহরে ছুটে আসা তার।আমি জানা মাত্রই জানিয়ে দিলাম।আপনাকে বারংবার বলেছিলাম এভাবে অপেক্ষা করবেন না তবুও করলেন।আজকাল মানুষের ভালোবাসা যখন তখন যেখানে সেখানে হয়ে যায়,কিন্তু তাকে পাওয়ার চেষ্টায় এতটা সময় ব্যয় করতে নেই।আপনি বারণ শোনেননি অপেক্ষা করেছেন।আজ আপনাকে অপেক্ষার ফল ব্যর্থ করে দিলো।আমি দুঃখিত আপনাকে কষ্ট দেবার জন্য।আপনার কষ্টটা আমি ভাগ করতে পারব না কিন্তু আপনার অনুভূতি অল্প হলেও বুঝি।ভালো থাকবেন জীবনকে নতুন করে গোছাবেন।আল্লাহ হাফেজ।”
তানিয়ার ম্যাসেজ পড়ে তুহিনের মস্তিষ্কে নাড়াচাড়া দিয়ে উঠলো।চোখের সামনে ফুটে উঠল প্রিয় নারীর প্রতিচ্ছবি।যে এখন দেয়ালের ওপাশে ইবাদতে মশগুল।যাকে পাওয়ার জন্য এত অপেক্ষা কিন্তু তুহিন জানে তাকে পাবেনা।দর্শন মানবে না ওদেরকে।তাদের মাঝের আরো দুজন বন্ধু ছিল।ওদের সাথে আজ সম্পর্ক ঠিক নেই।কারণ একটাই বন্ধু হয়ে যায় শালা,দুলাভাই।তারপর স্বামী স্ত্রীর মান অভিমানের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাও ধীরে ধীরে তিক্ততা রূপ নেয়।এক সময় তাদের সব শেষ।এই বন্ধুত্ব শেষ হয়ে গেলো অন্য সম্পর্কের কারণে।তুহিন হার মেনে নিলো।নিজের ভালোবাসা না পাওয়ার জন্য সে মনকে বোঝাতে থাকবে।শুরুতেই সব ঠিক হবেনা।সে নিজেকে সামলে নিবে।মনে মনে বলে,“ভালোই হলো ও অন্য কাউকে ভালোবাসে।অন্তত আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হবেনা।”
বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ২৯
বলেই চোখের কোনা দিয়ে গড়িয়ে পড়া পানিটা মুছে নেয়।নাকটা হালকা টেনে গলা খাঁকারি দিয়ে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা চালালো।