ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ৫
মিথুবুড়ি
‘টাকার বৃষ্টি হচ্ছে শুনেছেন কখনো ?দূর নীলে ঘেরা আকাশ চিঁড়ে বৃষ্টির মতো অঝোরে টাকা ঝড়বে। আর সেগুলো মানুষ দু’হাত ভরে কুড়াবে যেনো বর্ষার মৌসুমে আম কুড়াচ্ছে বালতি নিয়ে। ব্যাপারটা কিছুটা ঠাকুমার ঝুলির মতো না? হ্যাঁ সেই অবাস্তব ঘটনা ই বাস্তব রূপে ধরা দিয়েছে কড়াইল বস্তির মানুষদের কাছে। এপ্রিলের ভ্যাপসা গরমে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া হৃদয় ছেয়ে যায় শীতলতায়। অভাবের কারণে দু’বেলা পেট ভরে খেতে না পারা মানুষগুলোর হাতে এখন নতুন নতুন হাজার টাকার নোটে, হাত ভর্তি হয়ে আছে। কড়াইল বস্তি ঢাকার সবচেয়ে বড় বস্তি হিসেবে পরিচিত। এই বস্তিতে অন্তত লাখ-খানেক লোকের বসবাস যাদের অনেকেই নদীভাঙনের শিকার হয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। শিরশিরে অনুভূতিতে ভিজে গেল সকলের চোখ।
ঠৌঁটের কোণে স্পষ্ট প্রশান্তিময় হাসি। সকলের ঠোঁট গহ্বরের ফাঁক গলে ছুঁটে চলল প্রাপ্তির হাসি। যেই হাসি মিশে গেল আকাশে বাতাসে। সকলে দু’হাত তুলে দোয়া করছে সেই অজ্ঞাত মানবের জন্য। যে ফেরেস্তার মতো এসে দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
[ আজ কড়াইল বস্তিতে ঈদের চাঁদ নয়, যেন স্বয়ং চাঁদই নেমে এসেছিল। সকালে বেলা সাড়ে দশটার দিকে হঠাৎ একটি হেলিকপ্টার বস্তির আকাশে বারবার চক্কর দিতে থাকে। নিচু দিয়ে উড়ার কারণে বস্তিবাসীর মনে সন্দেহ আর আতঙ্ক জাগে। অনেকেই স্থানীয় থানায় খবর দেয়। বাকিরা দল বেঁধে হেলিকপ্টারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। হঠাৎই হেলিকপ্টার থেকে টাকার বৃষ্টি নামতে শুরু করে! সোনালি আলোয় ঝলমল করা টাকার নোটগুলো মাটিতে পড়তেই সকলে হতবাক। কিছুক্ষণেই মাটির স্তর ঢাকা পড়ে ঝকঝকে টাকায়। বিস্ময়ে কুঁকড়ে থাকা বস্তিবাসীরা কিছুক্ষণ পরই সেই টাকাগুলো লুফে নেয়। কেউ হাসে, কেউ কাঁদে। কেউ একজন এই বস্তির জন্য এমন অকল্পনীয় উপহার দিল, যা সবাইকে আবেগে ভাসিয়ে দিল। সৃষ্টি কর্তার কাছে সেই অজ্ঞাত দাতার জন্য সকলে দু’হাত তুলে দোয়া করে। কড়াইল বস্তির এই বিস্ময়কর ঘটনা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে, আর সেই নাম না জানা মানুষটা হয়ে ওঠে সকলের চোখে এক নায়ক।]
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘প্রতিটা অনলাইন প্লাটফর্ম, নিউজে, পেপারে শুধু এখন এই নিউজটায় চলছে। বন্দু/ক থেকে বের হওয়া বুলে/টের থেকেও তির্যক বেগে ছড়িয়ে যাচ্ছে নিউজটি। কয়েক সেকেন্ডের কিছু ক্লিপও ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু তা থেকেও তেমন সন্দেহভাজন কিছুই পাওয়া যায়নি। উপর থেকে স্মোকিং গ্যাস মারার কারণে হেলিকপ্টার শনাক্ত করা যায়নি। শুধু দেখা গিয়েছে কীভাবে উপর থেকে টাকা পড়ছিল ভুবনে। ডেক্সের উপরে থাকা পেপারব্যাকটি টিভিতে ছুঁড়ে মারে প্রেম। মুহুর্তে খন্ড খন্ড ডিসপ্লের টুকরোগুলো মেঝেতে ছড়িয়ে ছিড়িয়ে পড়ে। সকল অফিসারা ভয়ে তটস্থ হয়ে যায় শুকনো ঢোক গিলে। মাহাব সকলকে ইশারা দেয় কেবিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রেম রাগে ফুঁসতে থাকে। নিজের চুল দু’হাতে টেনে ধরে চেঁচাতে থাকে উন্মাতের মতো।
“একটু,, একটুর জন্য ধরতে পারলাম না। উফফফ এতো বড় ব্লান্ডার কিভাবে করলাম আমি।”
‘প্রেমের গলার পাশ দিয়ে সরু ঘামের স্রোত বইছে। কপালের নীলচে রগ গুলো ফুলে ফেপে উঠেছে। মাহাব কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে এগিয়ে যায়। প্রেমের অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো জ্বলজ্বল করে অগ্নি জ্বলতে থাকা চোখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নত দৃষ্টি নিবিষ্ট করে নিচু গলায় বলল,
“স্যার কিডন্যাপার নিশ্চয়ই আবার কল করবে। আমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার। ট্রেনিংয়ে আমাদের এটাই শেখানো হয়েছে।”
‘চিবুক শক্ত করে মাহাবের দিকে তাকাল প্রেম। বুক শুকিয়ে এলো মাহাবের। স্মিত স্বরে বলে,”সরি স্যার।”
“জিপ বের কর।”
“কোথায় যাবেন স্যার?”
“খেলার শেষ গুটি চালা এখনো বাকি যে ।”
‘রহস্যজনক ভাবে সেকেন্ডে প্রেমের চেহারার লেবাস পরিবর্তন হয়ে যায় মুহুর্তেই। মাহাবের কাছে অদ্ভুত লাগলেও ভিতরের কথা ভিতরেই চেপে রেখে বেরিয়ে গেল। প্রেম ওষ্ঠপুটে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে এক একাই হাসতে লাগল।
‘কিডন্যাপারের কথা অনুযায়ী আনিসুল হক শেওড়া পাড়া স্টেশনের ছয় নাম্বার প্লাটর্ফমে একটা আর্মির ব্যাগে ক্যাশ পঞ্চাশ লাখ টাকা রেখে আসেন। কিন্ত সেই ব্যাপারে আগে থেকেই পুলিশ অবগত ছিল। প্রেম আগের দিন গিয়েই নিজের প্ল্যান সাজিয়ে রেখে এসেছিল। তাদের সবকিছু প্ল্যান মতোই চলছি। পুলিশ এবং সি.আই.ডি সংমিশ্রণে টিম তৈরী করা হয়। তারা কিডন্যাপার কে ধরার জন্য নিজেদের মতো প্ল্যান সাজায়। ছদ্মবেশে পুরো স্টেশনে বিছিয়ে যায় পুলিশ’রা। প্রেম টিটি সেজেছিল, আর তার তিন সহকর্মী প্লাটফর্মের আশেপাশে ছদ্মবেশে ছড়িয়ে ছিল। ঠিক দশটায় একটা ট্রেন এসে থামে শেওড়া পাড়া স্টেশনে। সকলে এর্লাট হয়ে যায় তৎক্ষনাৎ। ঠিক তখনই ট্রেন থেকে অনেক মিলিটারি নেমে আসে। তারা সদ্য ট্রেনিং শেষে ফিরেছে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগায় মাস্টার মাইন্ড কিডন্যাপার,যে নিজেও মিলিটারির ড্রেস পরেছিল। সকলের ভীরে মিশে সে ঐ ব্যাগটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ব্যাগটি না পেয়ে কিডন্যাপার কে খুঁজতে থাকে। কিন্তু তার আগেই কিডন্যাপার টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে। ঠিক তারপরই করাইল বস্তিতে উপর থেকে হেলিকপ্টারে টাকা ফেলা হয়।
‘ট্যারেসের সাদা প্রিমিয়াম গ্লাসে প্রকৃতি থেকে আগত ফ্রেস হাওয়া গুলো বার বার বারি খাচ্ছে। ফলে মৃদু শব্দের সৃষ্টি হচ্ছে। পর্দার ফাঁক গলিয়ে টিপটিপ করে আলো আঁচড়ে পড়ছে সাদা টায়েলে। ফলস্বরূপ আলোক রশ্মির প্রতিফল তৈরি হচ্ছে। তির্যক রশ্মি চোখে পড়তেই পিটপিট করে চোখ মেলে লাস্যময়ী রমনী এলিজাবেথ। নড়তে চাইলে অনুভব করে কারোর শক্ত বাঁধনে আটঁকা পড়ে আছে সে। কেউ আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে রেখেছে নিজের সাথে তাকে। শরীরের জামাগুলো অযত্নে ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মস্তিষ্ক জাগ্রত হয় এলজাবেথের। একটুও নড়াচড়া করল না। স্তব্ধ, নিশ্চুপ হয়ে থাকল কিছুক্ষণ। শুধু চোখের কার্নিশ বেয়ে উষ্ণ তরল বেয়ে পড়েছে। এলিজাবেথ কাল রাতেও পারেনি নিজেকে বাঁচাতে। হারিয়েছে নিজের নারী সম্পদ আবারও।
‘শ্রাবণের ধারার স্রোতে টইটম্বুর হয়ে আঁখিযুগল ঘোলাটে হয়ে আসে। মস্তিষ্কে, নিউরনে থালাবাসন ঝামাঘষার ক্রিং ক্রিং শব্দে ঝাঁঝড়া হয়ে যাচ্ছে। তবুও চোখের পাতা ফেলে না এলিজাবেথ। ফ্লাশব্যাকের মতো সেই পাশবিক নির্যাতনের দৃশ্যগুলো প্রতিফলিত হতে থাকে চোখের সামনে। রিচার্ডের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে আছে এলিজাবেথ। রিচার্ডের ঠৌঁট গহবরের ফাঁক গলিয়ে আসা উষ্ণ নিশ্বাস গুলি আঁচড়ে পড়ছে এলিজাবেথের কানের লতিতে। একবারের জন্যও ঘুরে তাকায় না এলিজাবেথ রিচার্ডের দিকে। এলিজাবেথের এক হাত এখনো গায়ের ওড়না দিয়ে খাটের সাথে বাঁধা। নাকের সরু পথে লাল তরল শুকিয়ে জমাট বেঁধে আছে। চিবুকে দানবীয় হাতের আঙুলের ছাপ। ছোট্ট বেলার সেই স্বপ্নের মতো দিনগুলোর কথা মনে করে ফুঁপিয়ে উঠল এলিজাবেথ। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ তাকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে।
‘কান্নার ফলে জবুথবু করে কাঁপতে থাকে এলিজাবেথের গড়ন। ফলস্বরূপ চোখের পাতায় আদুরে পরশ বোলানো ঘুমটুকু আর ধরে রাখতে পারল না রিচার্ড। শেষমেশ তন্দ্রা কেটে কাঁচা ঘুমের ইস্তফা ঘটল এলিজাবেথের ফুঁপানিতে। সকাল সকাল এলিজাবেথের কান্নার শব্দ আর শরীরের প্রতিটা ঝাঁকুনি রিচার্ডের কর্নগহ্বরে ইস্পাত ধারানো শব্দের মতো লাগছে। চোখের কার্নিশের রগ গুলো হিংস্র হয়ে জেগে ফুলে ফেপে উঠে। নিজের বাহুডোর থেকে পা দিয়ে লাথি মেরে সরিয়ে দেয় এলিজাবেথকে । এলিজাবেথের ক্ষত শরীরটি ছিটকে গিয়ে পড়ে বেডসাইডে। বিশাল আকৃতি বেড হওয়ায় নিচে পড়েনি এলিজাবেথ। একে-তো টানা দুই রাত যাবত ঘুম নেই সেই সঙ্গে শরীরের উপর পাশবিক, অমানবিক নির্যাতন। নিজেকে আর সংযমে রাখতে পারল না এলিজাবেথ। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কিন্ত এই যান্ত্রিক মানবের কাছে যা বিষের ফলার মতো। বিরক্তিকর, আর নেকামো। একটুও বিচলিত করছে না রিচার্ডকে এলিজাবেথের নীল হয়ে যাওয়া মুখশ্রী, ভিতরে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া বক্ষপিঞ্জর। উঠে বসল রিচার্ড। কপালের মধ্যে ভাগ প্রসারিত হয় বিরক্তিকর
সুক্ষ্ম ভাঁজে,ভাঁজে। এলিজাবেথের ভিতরে জমাট বেঁধে থাকা কষ্টগুলো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো করে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল।
“মেরে ফেলুন না আমাকে। মেরে ফেলুন এভাবে তিলে তিলে শেষ করার চেয়ে মেরে ফেলা অনেক ভালো। আপনার মতো জানো/য়ারের সংস্পর্শে থেকে প্রতিটা মুহুর্ত কল/ঙ্কিত হচ্ছি আমি। এভাবে বাঁচতে চাই না আমি। এর থেকে মৃত্যু শ্রেয় আমার জন্য।”
‘সকাল সকাল পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হলে সাধারণ সকলেরই মেজাজ ই চটে থাকে। কিন্তু সেখানে যদি হয় কোনো হার্টলেস, হিংস্র,নর/খাদক, দান/বীয়, মানব। তাহলে তো প্রসঙ্গ সেখানে সমঝোতার বাহিরে। রিচার্ডের মেজাজ তিরতির করে বেড়ে গিয়ে ঠেকলো মস্তকের উপরিভাগের পাতলা চামড়ার তালুতে। থমকে যাওয়া মস্তিষ্ক টা ফিরে গেলো তার চিরাচরিত পৈশাচিক আত্মায়। রিচার্ড গভীর জঙ্গলে রাজ করা হিংস্র জন্তুর মতো ঝাপিয়ে পড়ল আড়ষ্ট এলিজাবেথের উপর। হাতের বাঁধন খুলে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে আসে নিজের কাছে। কণ্ঠস্বর থেকে উবে যায় ঘুমের লেশবিশেষ। কর্কশ গলায় চেঁচিয়ে উঠল এলিজাবেথের কাঁপছে গলা চেপে ধরে।
“আই ওর্য়ান ইউ আমার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে না।”
‘এলিজাবেথ জীবনে এমন ভারি স্বর আগে কখনো শুনেছে বলে স্মরণ করতে পারল না। এই কন্ঠস্বরের নিজস্ব ওজন রয়েছে, যা শুনলেই হৃদয়ে চাপ অনুভূত হয়। রিচার্ডের নীল চোখ হতে অগ্নি বিচ্ছুরিত হচ্ছে, পিশাচের মতো হিংস্র চাহনি এলিজাবেথকে হিমবাহে পরিণত করল। শরীর কাঁপনি দিয়ে উঠল। কিছু মুহুর্তের জন্য সেই সমুদ্র নীল চোখে আঁটকে যায় এলিজাবেথ। ঠাওর করে উঠতে পারে না এতো মায়ায় আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে থাকা চোখগুলো কীভাবে অন্যের চোখে পানি দেখেও নিজেকে ধরে রাখতে পারে। কেন অপর প্রান্তের স্রোতের তালে নিজেও ঝাঁপিয়ে পড়ে না?
“মানুষ রূপের জানো/য়ার একটা।”
‘বলে রিচার্ডের মুখে থুথু ছুড়ে মারল এলিজাবেথ। সেই মুহূর্তে রিচার্ডের চোখে আগুনের এমন শিখা জ্বলে উঠল, যেন ঝড়ের আগে আকাশ ছেয়ে থাকা ঘন কালো মেঘপুঞ্জের মধ্যে ঘর্ষণের পর বজ্রপাত ফেটে পড়েছে। রিচার্ডের অবয়বটাও ঠিক সেই বজ্রপাতের মতো ঝলসে উঠল—আলো আর আগুনের অস্থির খেলায় দগ্ধ। রিচার্ড বেড কেন্দ্রিক ছোট কেবিনেটের ড্রয়ার থেকে রি ভার/ভাল বের করে সরাসরি তাক করে এলিজাবেথ ললাটে। কোনো ভাবান্তর নেই এলিজাবেথের চাহনিতে। শক্ত হয়ে চেয়ে থাকে রিচার্ডের চওড়া তামুকে। মাথায় তাক করে রাখা সাইলেন্সারযুক্ত রিভা/লভারের সেফটি লক খুলে ট্রিগারে আঙুল বসালো রিচার্ড। ট্রিগার প্রেসের সেই ভয়ংকর শব্দে দাঁতে দাঁত চেপে চোখমুখ কুঁচকে ফেলে এলিজাবেথ। ভয়ে ঠৌঁট কাঁপতে থাকে। সেটা দেখে রিচার্ডের ওষ্ঠপুটে কোণে পৈশাচিক হাসির রেশম দেখা দিল। ঠিক এতোটুকু মৃত্যুর ভয় সে দেখতে চেয়েছিল এলিজাবেথের অবয়বে।
‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল এলিজাবেথ। ভেবে ছিল এই বুঝি বন্দু/কের গু/লি কপালের সুক্ষ্ম চামড়ার ভাঁজ ভেদ করে গোল ছোট বলের ন্যায় মস্তিষ্কটাকে ছিন্ন/বি/চ্ছিন্ন করে খুলি ফাঁক করে বেরুবে। ঢলে পড়বে এলিজাবেথ মৃত্যুর কোলে, রক্ষা পাবে এই রক্ষিতা নামক অভিশপ্ত জীবন থেকে। অন্ধকারের অভিশপ্ত মহারাজের কাছ থেকে। তবে তেমন কিছুই অনুভূত হলো না এলিজাবেথের। আঁটকে রাখা দম ছেড়ে চোখ খুলতেই প্রথমে দেখতে পেল রিচার্ডের কালচে ঠৌঁটের বাঁকা হাসি। আবারও চোখ ভিজে এলো এলিজাবেথের জীবনের এই অবিচ্ছেদ্য পরিণতি মেনে নিয়ে। সে মরেনি, রক্ষা পায়নি এই নরখাদক জীবন থেকে।
“নারীর শরীরের মূল্য বুঝি এতোটাই নস্যি আপনাদের কাছে যে টাকার বিনিময়েও কেনা যায় ?”
‘এলিজাবেথের কণ্ঠে ছিল না কোনো প্রাণ, না ছিল কোনো গম্ভীর্যতা। সেই নিস্তেজ অনুভূতিশূণ্য কথার বিপরীতে রিচার্ডের কাঠকাঠ জবাব। দাঁতে দাঁত পিষে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“যারা ইজ্জত রাখতে জানে না তাদের মুখে ইজ্জতের কথা মানায় না। বিশেষ করে নারীদের মুখে তাদের ইজ্জতের কথা তো না-ই। ওরা শুধু ধ্বংস করতে জানে ধ্বংস।”
“জানো/য়ার ।”
“NO red,, i’m worse more than your thoughts”
‘রিচার্ডের গা ছাড়া জবাবে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয় এলিজাবেথ। গলা ছেড়ে চেঁচিয়ে বলল,
“আমার নাম এলিজাবেথ। রেড নই আমি।”
‘এলিজাবেথের ফিরিয়ে নেওয়া মুখ পেলব হাতে নিজের দিকে ফিরাল রিচার্ড। এলিজাবেথের ময়ুরের পাখার মতো সুগভীর, নিকষ, কালো চোখের পাপড়ি জোড়া রুক্ষ খসখসে হাতে ভিজিয়ে দিল রিচার্ড৷ মাথার পিছনে হাত দিয়ে মুষ্টিমেয় করে রাখা চুল থেকে হাত সরিয়ে ফেললে সাথে সাথে ঝুলে থাকা নিস্তেজ দেহ গাছ থেকে শুকিয়ে ঝড়ে পড়া শুকনো পাতার মতো আঁচড়ে পড়ে কটনের বালিশে। অতি ঘন লাল রেশমি চুল গুলো বিছিয়ে বালিশে জায়গা দখল করে নিল। চোখমুখ খিঁচে দম আঁটকে রাখে এলিজাবেথ। রিচার্ড ডুব দিল এলিজাবেথের চুলে—সূর্যের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সৈন্যদের মতো লালচে রেখায় সাজানো কাটা কাটা চুল। রিচার্ড তার সরু নাক এলিজাবেথের চুলের ভাঁজে ঘষে নিতে থাকে, দীর্ঘ টানে শুষে নেয় প্রতিটি ঘ্রাণ।
‘প্রতিটি শ্বাস যেন তার কাছে নতুন কোনো পৃথিবীর দরজা খুলে দেয়। চুলের গন্ধে বিভোর হতে হতে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় এলিজাবেথের আরও কাছে। যেন এই নৈকট্যে লুকিয়ে আছে তার সমস্ত আরাধনার উৎস। এলিজাবেথের কোমল পাতলা কানের লতিতে রিচার্ডের হিম শীতল নাকের ডগা লাগতেই কেঁপে উঠল এলিজাবেথের গড়ন। দু’হাতে খামচে ধরে বিছানার বেডশিট। অভিশপ্ত আরেকটি প্রহরের সূচনা ভেবে বুক শুকিয়ে এলো। রিচার্ড এলিজাবেথের নাকের কাছে মুখ নিয়ে পুরুষালি গুরুগম্ভীর হাস্কি ভয়েসে বলে গেল,
“আই কুড’ন্ট বি বধারড টু স্পেয়ার আ থট অর আ গ্ল্যান্স ফর দ্যাট। ইউ উইল রিমেইন রেড ফরএভার ফ্রম নাউ অন। গট ইট?”
‘দ্বিতীয় বারের মতো একটা নোংরা বস্তুর মতো এলিজাবেথকে নিজের থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কোমরে টাওয়াল পেচিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় রিচার্ড। বালিশে মুখ গুঁজে আবারও ফুপিয়ে উঠল এলিজাবেথ।
‘শান্তি নিকেতনে এলিজাবেথ নেই আজ তিনদিন। এই তিনদিন ঘর থেকে বের হয়নি ইকবাল সাহেব। তবে তাতেও কোনো অনুশোচনার দেখা মিলেনি সবিতা বেগমের মাঝে। দিব্যি আছে। বরংচ মনে মনে খুবই খুশি হয়েছে। তবে এখন সংসারের কাজের চাপ পুরোটায় এসে পড়েছে তার উপর। গত আট বছরে রান্না ঘরে খুব কমই দেখা গিয়েছে সবিতা বেগম কে। রান্না, ঘর মোছা, থালাবাসন মাজা থেকে শুরু করে সকল কাজ এলিজাবেথকে দিয়েই করাতেন। এখন এলিজাবেথ না থাকায় সকল কিছু নিজেকেই করতে হচ্ছে। ফলস্বরূপ মেজাজ সারাক্ষণ খিটখিটে হয়ে থাকে। স্বামী যে তিনদিন যাবত খাচ্ছে না তাতেও কোনো মাথা ব্যাথা দেখায় যায়নি মহিলার মধ্যে।
‘তবে দুপুরের রান্না করতে গিয়ে যখন দেখল লবণ শেষ হয়ে গিয়েছে তখনই খিটখিটে মেজাজ তিরিক্ষি মেজাজে পরিণত হয়। খুন্তি হাতে রাগে গিজগিজ করতে করতে রান্নাঘর থেকে বের হয়। ইকবাল সাহেব তখনও খবরের কাগজ ঘেটেঘুটে রিচার্ডের ব্যাপারে তথ্য খুঁজছিলেন।গত তিনদিন ধরে এটাই করে যাচ্ছে ভদ্রলোক। রিচার্ডের ব্যাপারে কোনো এমন কিছুই জানে না ভদ্রলোক,যে যেটার রেশ ধরে রিচার্ডের কাছে যেতে পারবে। তাই কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে পুরোনো সকল পেপার জোগাড় করে ঘাঁটতে থাকে। এতো বড় গ্যাংস্টার নিশ্চয়ই কোনো না কোনো খবর পাওয়া যাবে সেই আশাতে। তখনই রুমে আসে সবিতা বেগম। এসেই ছো মেরে হাত থেকে খবরের কাগজ নিয়ে যায়।
“নিজে খাবে না তো, খাবে না। এখন কি আমাদেরও না খাইয়ে মারবে?”
‘ইকবাল সাহেব বরাবরই খুব নরম মনের মানুষ। সেই সুযোগ ই কাজে লাগিয়েছিল ইকবাল সাহেবের বাবা ইসমাইল। জোর করে নিজের থেকেও বয়সে বড় সবিতা বেগমের সাথে বিয়ে দেয় শুধুমাত্র বন্ধুর কাছে দেওয়া কথা রাখার জন্য। বাবার দেওয়া কথা ইকবাল সাহেবও ফেলতে পারেনি। তাই তো পঁচিশ বছর ধরে সবিতা বেগমের মতো একজন ছোট মস্তিষ্কের মানুষের সাথে সংসার করছে। স্ত্রীর দিকে চোখ গরম করে তাকালেন ইকবাল সাহেব।
“কাগজটা দাও সবিতা।”
‘দেয় না সবিতা বেগম। উল্টে আরো জোরে চেঁচাল,
“পরের মেয়ের চিন্তায় শোকে মরে যাচ্ছো। নিজের ছেলে যে কালকে থেকে বাড়ি ফিরছে না সেটা কি একবারও খোঁজ নিয়ে দেখেছো ?”
‘টান দিয়ে পেপারটি নিয়ে নেয় ইকবাল সাহেব। তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল, “কোথায় আর থাকবে তোমার গুনধর ছেলে?গিয়ে দেখো মদ খেয়ে রাস্তায় ঘুমিয়ে আছে।”
“তুমি বাবা না অন্য কিছু?ছেলের জন্য একটুও চিন্তা হয় না তোমার?”
‘সারাজীবন শরীরে জরিয়ে রাখা নম্রতার চাদর আজ ছুড়ে ফেলে শক্ত গলায় চেঁচিয়ে উঠল ইকবাল সাহেব,
“তুমিও তো একটা মা। একটা মা হয়ে আরেকটা মায়ের মেয়েকে কীভাবে পারলে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে? বুক কাঁপলো না তোমার একবারের জন্যও? মাতৃ মন বাঁধা দেয়নি তোমাকে ?একবার ভেবে দেখেছো আমার ফুলের মতো বাচ্চাটার উপর এখন কি পাশবিক নির্যাতন হচ্ছে?একটা মেয়ে হয়ে বুঝতে পারছো না সেই কষ্টটা?আজ যদি আমাদের ইবরাতের সাথে এমন হতো তখন কি পারতে এতো স্বাভাবিক থাকতে?কত আশা করে এলিসা আমার হাত তুলে দিয়ে গিয়েছিল পবিত্র ফুলটাকে। আমি পারিনি আমার কথা রাখতে। ঘৃণা হচ্ছে আমার নিজের উপর। আমি চোখ বন্ধ করতে পারছি না আমি। চোখ বন্ধ করলেই এলিজাবেথের সেই করুণ চাহনি ভেসে ওঠে চোখের সামনে। ঘৃণা করি আমি তোমাদের,ঘৃণা।”
‘চোখের জল মুছতে মুছতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ইকবাল সাহেব। সবিতা বেগম স্তব্ধতায় জমে যায়। চোখের পলক পড়ছে না, এখনো একদৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে আছে। পর্দার আড়াল থেকে ইবরাত বেরিয়ে আসে। কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শে হতচেতন হয়ে ফিরে সবিতা বেগম। পিছন ফিরে তাকায় ইবরাতের দিকে। ইবরাতের চোখের পাতা কাঁপছে।
“আম্মু এলিজাবেথের জায়গায় আমি হলেও কি তুমি এমন কঠিন হয়ে থাকতে?”
‘মেয়েকে বুকের সাথে চেপে ধরল সবিতা বেগম। বুকের সাথে মিশিয়ে রেখে বলল,”আমার লাশের উপর দিয়ে তোকে নিয়ে যেতে হতো মা।”
‘ইবরাতের গলা ভেজা, বলল,” তাহলে এলিজাবেথকে কেন নিয়ে যেতে দিলে আম্মু?”
‘ইবরাতকে বুক থেকে ঝাড়া মেরে সরিয়ে দিল সবিতা বেগম। রুষ্ট গলায় বলল,”যা করেছি সব তোর জন্যই। এভাবে বাপের মতো রূপ ধরিস না ইবরাত। তখন তুইও এলিজাবেথকে বোন হিসেবে স্বীকার যাসনি।”
“তখন ইজ্জতের ভয় চেপে বসেছিল আম্মু। কিন্তু প্রতিটা নারীর কাছেই তো তাদের চরিত্র খুবই মূল্যবান। আমার এখন খুব কষ্ট হচ্ছে আম্মু। এলিজাবেথকে ওর রূপের জন্য হিংস্রে করলেও ওর এতো বড় ক্ষতি হোক কখনো চায়নি। আমার জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজেকে বির্জসন দিয়েছে এলিজাবেথ।”
‘সবিতা বেগম কোনো প্রত্যুত্তর না করে হনহনিয়ে চলে যায়। যেন সেও সম্মুখীন হতে চাইছে না নিজের বিবেকের কাছে। ইবরাত মায়ের চলে যাওয়া দেখে ঠৌঁট গোল করে ফোঁস নিশ্বাস ছাড়ল। ভিতরে ভিতরে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে আত্মগ্লানিতে। সবথেকে বড় আদালত হলো মানুষের বিবেক। যেখানে কোনো বিরোধী পক্ষের আইনজীবীর প্রয়োজন হয় না অন্যায় গুলোকে টেনেটুনে সামনে আনার জন্য। বিবেকের কাঠগড়ায় যথেষ্ট।
‘দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো। তথ্যমন্ত্রী আবাসভূমি এখন একটি জড় বস্ততে পরিণয় হয়েছে। এতো বড় অট্টালিকা, গার্ড, মেড, আত্মীয়স্বজনে গিজগিজ করছে। সবকিছু থাকার পরও যেনো প্রাণ নেই কোথাও। লিভিং রুমে ডিভানে গা এলিয়ে শূন্যে তাকিয়ে আছে আনিসুল হক। একটু আগে হসপিটাল থেকে এসেছেন। ওনার স্ত্রীকে বর্তমানে লাইফ সার্পোটে রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে কালো আঁধারে তলিয়ে যাচ্ছে তার হাসিখুশি পরিবার। অফ সিজনের বৃষ্টির মতো মুষলধারে বৃষ্টি এসে ভাসিয়ে দিয়ে গিয়েছে তার সাজানো বাগান।
‘গ্রামীণ সমাজে সবার মুখে মুখে একটা প্রচলিত প্রবাত আছে “কারোর পোষ মাস তো কারোর সর্বনাশ”। ঠিক তেমনি এখন আনিসুল হকের সর্বনাশ চলছে আর পৌষ মাসের মিষ্টি রোদে গা ভেজাচ্ছে বস্তিবাসীরা। সকালের ঐ ঘটনার পূর্ণাবৃত্তি ঘটে কিছু মুহুর্ত আগে। তবে এবার ভিন্ন স্থানে। নিউ মার্কেটের পাশের বস্তিতে আবারও টাকার বৃষ্টিপাত হয়। যা তুমুল ভাবে সাড়া তুলে দিয়েছে পুরো দেশে। তবে এখনো এর সূত্রপাত পাওয়া যায়নি। তথ্যমন্ত্রী আনিসুল হকের ছেলের নিখোঁজের খবর দামাচাপা পড়ে যায় এই ঘটনায়। এখন প্রতিটি নিউজের হেডলাইনে থাকছে গরিবের হিরো। কমিশনার চুপচাপ পাশের সোফায় বসে আছে। এতো চেষ্টা করেও এখনও চুল সমপরিমাণ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুরো পুলিশ ফোর্স লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকলের রাতের ঘুম নাওয়া-খাওয়া হারাম হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি জায়গায় আবারও নতুন করে শুরু থেকে চিরুনি তল্লাশি দেওয়া হচ্ছে।
‘মনস্টার স্টিকারে মডিফায় করা দামি বাইকটি এসে জোরে ব্রেক কষলো সদর দরজার সামনে। মাথা থেকে হেলমেট খুলে উসকোখুসকো চুলগুলোকে হাত দিয়ে আঁচড়ে ঠিক করে নিল প্রেম। কালো সিল্কি চুলগুলো দক্ষিণের দমকা হাওয়ায় উড়ুউড়ু করছে। বাইকের চাবি তর্জনীতে ঘোরাতে ঘোরাতে ব্যগ্র পায়ে ভিতরে হেঁটে যায় প্রেম। লিভিং এরিয়ায় পা রাখার আগে দুই সেকেন্ড দাঁড়িয়ে ফুরফুরে মেজাজ গম্ভীরতায় ঢেকে আবারও সামনে পা বাড়ায়। গিয়ে বসল সরাসরি কমিশনের সামনে। কমিশনার এই সময় প্রেমকে দেখে রসগোল্লার মতো গোল গোল চোখগুলো কিঞ্চিৎ ছোট করে তাকিয়ে গমগমে গলায় বলল,
“এইসময় তুমি এখানে ?”
‘বিপরীতে চমৎকার হাসি দিল প্রেম। সামনের ছোট টেবিল থেকে চায়ের কাপ নিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে চুমুক দিয়ে বলল, “আসলাম কিডন্যাপার আর কোনো কল করেছে কিনা জানার জন্য।”
‘প্রেমের কথায় চোখ গরম করে তাকালেন কমিশন। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,”তো সেটা জানার জন্য তোমার এখানে আসতে হলো? তোমার কি মনে হয় টাকা নিয়ে যাওয়ার পর কিডন্যাপার আর কল দিবে?”
“ব্যর্থতা কিন্তু আপনাদের’ই স্যার।”
“কি বলতে চাচ্ছো তুমি?”
“আমি আগেই বলেছিলাম পুরো মিশনের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হোক। আপনারা যদি ক্ষমতা জাহিরের তাগিদে পড়ে না থেকে সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমার উপর দিতেন তাহলে আজকের মিশন সাকসেস হতো স্যার। সরি ফর বিইং সো স্ট্রেইটফরোয়ার্ড।”
‘বয়সে এতো ছোট আর জুনিয়রের কাছ থেকে এহেন কথায় চোয়াল শক্ত হলো কমিশনারের। রুষ্ট গলায় বললেন,
“তা কিভাবে মিশন সাকসেস করতে শুনি? যেটা আমরা পঞ্চাশ সদস্যদের ট্রিম মিলে করতে পারেনি,তা চার সদস্যদের তোমরা কিভাবে করতে?”
‘প্রেমের কণ্ঠস্বর খুবই স্বাভাবিক, বলল,”আমি হলে সবার আগে সিসিটিভি ফুটেজ মনিটরিং করতাম।”
‘এবার চুপসে যায় কমিশনের শক্ত চোয়াল। আসলেই তো আগে কারোর মাথায় ই স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজের কথা আসেনি। পরবর্তীতে আসলেও ততক্ষণে সেই সময়ের ফুটেজ মেমোরি থেকে কেটে ফেলে অপহরনকারীরা। প্রেম আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আনিসুল বিরক্তে চ’ উচ্চারণ করে বললেন,”আহ !! থামবেন আপনারা ? এখানে কি কৌতুক শোনাতে এসেছেন?”
”স্যার আপনি উত্তেজিত হবেন না। আপনার হার্টে প্রবলেম আছে।”
‘কমিশনারের কথায় এবার নিজের নিয়ন্ত্রণ হারালো আনিসুল হক। ঠুকরে কেঁদে উঠলেন। চোখে পানি সমেত ভাঙা গলায় আওড়ালো,”সাদমানেরও যে হার্টের সমস্যা ছোট থেকে। আমার সাদমান অন্ধকারে ভয় পায়, প্যানিক অ্যাটাক হয়। আল্লাহ জানে কেমন আছে আমার ছেলে।”
‘প্রেম খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনছিল আনিসুল হকের কথা। ভদ্রলোকের চোখের পানিকে মূল্যয়ন না করে বরংচ ওনার বলা প্রতিটা কথার সাথে নিজের ভাবনার যোগসূত্রের সাথে মেলাতে থাকে প্রেম। হঠাৎ করে আনিসুল হকের মুঠো ফোনে একটি মেসেজ আসে। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজটি চেক করল আনিসুল হক। মেসেজটি দেখা মাত্র মুখের রং পরিবর্তন হয়ে যায় আনিসুল হকের, রহস্যজনকভাবে। তিনি পরপর তিনবার শুকনো ঢোক গিলল। পরক্ষণেই সাথে সাথে ফোন পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকিয়ে রাখে, যেন কিছুই হয়নি। তার দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে থাকা প্রেম আর কমিশনারের দিকে তাকিয়ে ফেইক হাম তুলে গমগমে গলায় বলল,
“আপনারা এখন আসতে পারেন। আমি একটু ঘুমাবো। বিশ্রামের প্রয়োজন আমার।”
‘এতোক্ষণে ছেলের জন্য শোকে কাতর হয়ে থাকা মানুষটার হঠাৎ এমন গা ছাড়া ভঙ্গিতে তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে যাওয়া দেখে কিছুটা আশ্চর্য হলো বটে কমিশান। তবুও পাল্টা প্রশ্ন করার সাহস পেল না। প্রেম আর কমিশনার দুজনেই বেরিয়ে যায়।
‘সকল মেডরা কিচেনে। রিচার্ড নিচে নামলে কেউই সামনে আসে না। কড়াকড়ি ভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া আছে এই ব্যাপারে। রিচার্ড, ন্যাসো, লুকাস মাত্রই বেজমেন্ট থেকে লিভিং এরিয়া এসে বসল। বাগানবাড়ি মাটির নিচে তৈরি করা হয়েছে রিচার্ডের গোপন আস্তানা। কিচেন থেকে উঁকি ঝুঁকি দিয়ে অল্প বয়সী মেড নিশি রিচার্ড আর ন্যাসোকে দেখছে একটু পর পর। চোখেমুখে একরাশ বিস্ময়তা। কিশোরী নিশির কাছে মনে হয় সে বিদেশে আছে, এবং কোনো বিদেশি বাড়িতে কাজ করে। যতবারই এলিজাবেথ, রিচার্ড, ন্যাসো, লুকাসকে দেখে ততবারই এই কথা মনে হয়।
‘সুযোগ পেলেই নিশি এলিজাবেথের ঘরের আসেপাশে গিয়ে ঘুরঘুর করে এলিজাবেথের কণ্ঠস্বর শোনার জন্য। তার মধ্যে খুব আগ্রহ জানার,এতো সুন্দর মেয়ের কণ্ঠস্বর কেমন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এলিজাবেথের নিশ্বাসের শব্দও শুনতে পায়নি সে। এলিজাবেথের কাছে যাওয়া সকলের নিষেধ শুধু রেশমা ব্যতিত। সেদিনের পর রেশমার সাথেও আর কথা বলেনি এলিজাবেথ। রিচার্ডকে এই দু’দিনে এটা নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো দেখল নিশি। ওর নজর বেশি যায় রিচার্ডের নীল চোখে আর ন্যাসোর অতি ফর্সা মুখে ৷ লুকাসের দিকে তাকালেই ভয় করে তার দানবীয় শরীর দেখে। তাই সবসময় লুকাসের দিক হতে দৃষ্টি সরিয়ে রাখে নিশি। রেশমা খেয়াল করে নিশি’কে। চোখ রাঙিয়ে দিয়ে তাকায় নিশির দিকে।
“মরতে চাও? টেবিলের উপরের অস্ত্রগুলো দেখেছ?”
‘মিইয়ে যায় নিশি। চুপসানো গলায় বলে, “আমার কি দোষ এরা কত সুন্দর আমার শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে। আমার মনে হয় আমি জান্নাতে আছি। এতো সুন্দর মানুষ আমি এর আগে কখনো দেখেনি।”
‘রেশমা ডিসওয়াল করতে করতে জবাব দিল,
“কতগুলো গার্ড যে হাতে কি নিয়ে ঘুরে নিশ্চয়ই দেখেছো ? ওরা জাহান্নাম দেখিয়ে দিবে।”
“আমি তো শুধু ওদের তিনজন কে-ই দেখি। কতো সুন্দর আল্লাহ। না, নাহ দু’জন। মেডাম আর স্যার। ঔটারে সাদা বিদেশি বিলাইয়ের মতো লাগে। আমাদের স্যার কি সুন্দর, কতো লম্বা। উফফ,,একদম হিরোদের মতো।”
‘লজ্জা পাওয়া ভঙ্গিতে মুখ ঢেকে ফেলল নিশি। চোখেমুখে খুশি উপচে পড়েছে। তপ্ত শ্বাস ফেলে রেশমা। কাজ করতে করতে মনে মনে আওড়ালো,
“সব সৌন্দর্য সৌন্দর্য হয় না। কিছু সৌন্দর্য অভিশাপ। যেমন আগুনের শিখা, যা একদিকে আলো দেয়, অন্যদিকে সবকিছু পুড়িয়ে ছাই করে। সৌন্দর্যের মুখোশের আড়ালে কখনো লুকিয়ে থাকে বিষাক্ত বিষাদ, যা ছুঁলেই জীবন হয়ে ওঠে অন্ধকারের গভীর এক অতল।”
‘অ্যাশস্ট্রে ভর্তি হয়ে যায় সিগারেটের অবহেলিত ডগার অংশে। সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়ায় লিভিং এরিয়া স্পেস মত্ত। কোনো সাধারণ মানুষ এখানে থাকলে মুহূর্তেই তার দম আটঁকে যাবে। টেবিলের উপর সারি সারি করে সাজানো মদের বোতল। পোলমস রেক্টিফিকোওয়ানি ভডকা। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মদ। এটি সংশোধন করা পোলিশ স্পিরিট যা সাধারণত হোম ডিস্টিলাররা তাদের নিজস্ব স্বাদযুক্ত ভদকা তৈরি করতে ব্যবহার করে। এটি সরাসরি পান করে যায়, তবে যেহেতু এটি কার্যত বিশুদ্ধ অ্যালকোহল, এটিতে একটি শক্তিশালী কিক রয়েছে তাই এটি সাধারণত সুপারিশ করা হয় না পানি ছাড়া খাওয়ার জন্য । কিন্তু রিচার্ড, ন্যাসো, লুকাস অবিলম্বে খেয়ে যাচ্ছে পানি ছাড়াই। রিচার্ডের হাতে উইস্কির গ্লাস। বৃদ্ধাঙ্গুল, তর্জনী, আর মধ্যমা দিয়ে চেপে একটু পরপর কালচেটে ঠৌঁটের ফাঁক দিয়ে টেনে নিচ্ছে ভিতরে বিষাক্ত পদার্থ,সেই সাথে তাদের পরবর্তী কি/লিং মিশন নিয়ে আলোচনা করছে। ন্যাসো আর লুকাসের হাতে মার্টিনির গ্লাস। গ্লাসের সরু নলের মতো অংশ দু’আঙ্গুলের ভিতর চেপে ধরে নাঁড়িয়ে নাঁড়িয়ে খাচ্ছে আর রিচার্ডের দেওয়া দিক নির্দেশনায় গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে যাচ্ছে।
‘টেবিলের উপর রাখা বিভিন্ন ধরনের মেশিন গান। মাফিয়া ও গ্যাংস্টার সমাজে প্রচলিত ৩৪টি বিশেষ শট-গান, এবং তৎকালীন টমি-গান রয়েছে। যা তারা তাদের মিশনে ব্যবহার করা থাকে।
‘আল ক্যাপোনের 1911। বন্দুকটি দেখতে টমি-গানের মতো হলেও এটি সত্যিকারের দক্ষ শ্যুটাদের ফাস্ট চয়েস। এটি সুইটহার্ট M1911 নিলামে এক মিলিয়ন ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয় প্রতিটি ব্যক্তির জন্য যার মূল্য 18 বিলিয়ন হয়। ম্যাকগার্নরা এটা ব্যবহার করতো তাদের মিশনে। টেবিল থেকে এই গান/টি নিয়ে কোটের ভিতরের পকেটে রাখল রিচার্ড।
‘টমি গান ছিল জ্যাক এমগার্নের পছন্দের অস্ত্র ছিল। (পশ্চিমের বাফেলো বিল সেন্টার।) প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংস্টারের কাছ থেকে রাস্তার ওপারে খোলা জানালা থেকে হাইমি ওয়েইসকে হত্যা করতে তিনি তার প্রিয় থমসপন ব্যবহার করেছিলেন। ম্যাকগার্ন পরে একজন প্রো গলফার হয়ে ওঠেন এবং সেই অনুযায়ী, একজন থম্পসন তার ক্যাডির মতে সবসময় তার গল্ফ ব্যাগে থাকতেন। একসাথে দুইশো গুলি একসাথে লোড করা যায় এই গা/নে । এই গান গুলো রিচার্ড রাশিয়া থেকে আনিয়েছে। টেবিলের উপর থেকে বেছে ডার্ক মোশনের টমি গা/ন টি নেয় ন্যাসো, লুকাস। নিজেদের পছন্দের গা/ন গুলো বেছে নিয়ে উঠে দাঁড়ায় তিনজনে একসাথে। ন্যাসো, লুকাস গা/নের সেফটি লক খুলে ট্রি/গারে আঙুল ঘুরিয়ে গা/ন চেক দিতে দিতে উঠে দাঁড়ায়। হঠাৎ রিচার্ডর জলদগম্ভীর গলায় ধমক শুনে চমকে চোখ তুলে সামনে তাকায়।
“স্টপ রেড।”
‘এলিজাবেথের রুমের দরজা বাইরে থেকে লক করে রাখা হতো সবসময়। তবে আজ হয়তো অসাবধানতায় লক করতে ভুলে গিয়েছিল মেড । সেই সুযোগেই বেরিয়ে আসে এলিজাবেথ। রিচার্ড কে নিচে দেখতে পেয়েও দম নিয়ে সাহস সঞ্চয় করে গুটিয়ে গুটিয়ে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামে। আজ এই সুযোগে পালাতে না পারলে আর কখনও এখান থেকে এলিজাবেথ বের হরে পারবে না,তা এলিজাবেথ এই দু’দিনে বুঝে গিয়েছে। রিচার্ডের কথা বলার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নগ্ন পায়ে ভয়ে সংকীর্ণতায় গুটিয়ে সদর দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল এলিজাবেথ। তবে হঠাৎই পিছন থেকে রিচার্ডের এহেন ভারিক্কি স্বরে বুক শুকিয়ে যায়। তবুও পিছন না ফিরে, আহত শরীরে দৌঁড়ে ছুটে যায় সামনে। লম্বা লম্বা পা ফেলে চার কদমে এলিজাবেথকে ধরে ফেলল রিচার্ড। হাত মোচড়ে পিছনে নিয়ে পিঠের সাথে চেপে ধরে রিচার্ড। ব্যাথায় নীলচে আভা দেখা দেয় এলিজাবেথের অবয়বে। গালের পানি শুকিয়ে দাগ হয়ে যাওয়া পথ ধরে আবার স্রোত বইলো। রিচার্ড দাঁতে দাঁত চেপে রুক্ষ কর্কশ গলায় অর্নথক হাসি হেসে চাপা স্বরে বলল, “এতো সোজা?”
‘আজ চুপ থাকল না এলিজাবেথ। সহসাই দুর্বোধ্য দূর্বল গলায় চেঁচিয়ে উঠল। মেডরা কিচেন জোনের আড়াল থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে। রেশমা অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে এলিজাবেথের দিকে।
“যেতে দিন আমাকে।”
“কোথায় যাবি?আদৌতেও যাওয়ার জায়গা আছে কি? দুই রাত অন্য পুরুষের সাথে থাকার পরও জায়গা দিবে তোমার চাচি?”
‘চোখে পানি সমেত হাসল এলিজাবেথ। এটাও তার জীবনের এক চরম সত্য। তার যাওয়ার জায়গা নেই। একটা যাও ছিল সেখান থেকে,,,,আর ভাবতে পারল না এলিজাবেথ। অদ্ভুত ভাবে চোখ বন্ধ করে একা একা হাসতে থাকল এলিজাবেথ। সকলে ভরকে যায় এই অবস্থায় এলিজাবেথের হাসি দেখে। একদম শান্ত হয়ে গেল এলিজাবেথ। ছোটার জন্য আর একটুও মোচড়ামুচড়ি করল না। রিচার্ড ঠৌঁট কামড়ে ভ্রু গুছিয়ে এলিজাবেথ ভাবান্তর বুঝার চেষ্টা করল। হাত ছেড়ে দেয় এলিজাবেথের।
‘ভিতরে ভিতরে মরে যাওয়া নিস্তেজ দেহ নিয়ে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায় এলিজাবেথ নিঃশব্দে। হঠাৎ গু/লির শব্দে কেঁপে উঠল সকল মেডরা। এলিজাবেথ দু’হাতে কান চেপে নিচে বসে পড়ল। পরপর আরো তিনটে গুলির শব্দ হলো। বাইরে থেকে অস্ত্র হাতে গার্ডরা দৌঁড়ে ভিতরে আসলে ন্যাসো চোখে ইশারায় পাঠিয়ে দেয় তাদের। রিচার্ড ট্রি/গারের ভিতর তর্জনী দিয়ে গান টাকে কয়েক পাক ঘুরিয়ে আবার পকেটে রেখে দিল। এলিজাবেথ মাথা তুলে ভয়কাতুরে চোখে তাকাল রিচার্ডের শক্ত চিবুকে। রিচার্ড ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসল,হেসে বলল,”থ্যাটস ইউ’র পানিশমেন্ট বেইবি।”
‘জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছে এলিজাবেথ এইটুকু বয়সে। তবে এই মুহুর্তে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার মতো এতো কঠিন হৃদয়ের মানুষ হয়তো এলিজাবেথ আর কখনো দেখেনি, আর দেখাও হবে না হয়তো। ফোঁস নিশ্বাস ছেড়ে সহসাই উঠে দাঁড়াল এলিজাবেথ। সকল মেডদের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সিঁড়ির সামনে ঝাড়বাতির ভাঙা টুকরো টুকরো কাচ বিছিয়ে আছে। ন্যাসোর মুখভঙ্গি স্বাভাবিক। লুকাসের কিছুটা খারাপ লাগছে এলিজাবেথের জন্য। সেদিনের ব্যবহারে একদিনেই লুকাসের মনে জায়গা করে নিয়েছে এলিজাবেথ। অধৈর্য হয় রিচার্ড। গুমোট পরিবেশ কেঁপে উঠল রিচার্ডের হুংকারে,
“আই অ্যাম লুজিং মাই পেশেন্স, অ্যান্ড ইউ আর নট রেডি ফর থ্যাট টু হ্যাপেন ইট। আই থিঙ্ক ইউ আর স্টিল গেটিং ফ্ল্যাশব্যাকস অফ লাস্ট নাইট রেড।”
‘ন্যাসো এবার থতমত খেয়ে চোখ ঘুরিয়ে নিল রিচার্ডের দিক থেকে। লুকাস ইংলিশে দূর্বল তাই রিচার্ডের কথার মানে বুঝতে পারল না। এলিজাবেথের কান থেকে গরম ধোয়া বের হতে থাকে। চোখের কার্নিশ গলিয়ে আবারও অবাঁধে জল আসতে থাকে। লজ্জায় এদিকসেদিক তাকাল, দেখতে পেল মেড’রা উঁকি দিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। বুক ছিঁড়ে আসে এলিজাবেথের। ঠৌঁট কামড়ে সাহসাই কদম রাখল কাচের উপর। পা রাখতেই নরম পাতলা তুলতুলে চামড়া ভেদ করে গিয়ে হা/ড্ডিতে বিঁ/ধে গেল কাঁচের টুকরো। চোখমুখ খিঁচে আরেক কদম রাখে র/ক্তে ভিজে লা/ল হয়ে যাওয়া কাঁচের উপর। গল গলিয়ে র/ক্ত বের হতে থাকে পায়ের পর্দা ছিঁড়ে ছিঁড়ে ।
ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ৪
‘মনের ব্যাথা গুলোর কাছে শরীরের এই ব্যাথা নস্যি মনে হচ্ছে এলিজাবেথের কাছে। মেডদের চোখের পাতা ভিজে এলো। হিং/স্র জ/ন্তুর মতো মানুষকে খুবলে খাওয়া লুকাসেরও খারাপ লাগতে শুরু করল। পরবর্তী কদম দেওয়ার জন্য পা তুলতে গেলে মাং/সের সাথে কাচ বেজে আসে। শরীর অসাড় হয়ে আসতে থাকে এলিজাবেথের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। আবিষ্ট পা আবারও ধারালো কাঁচের উপর রাখতে যাবে তখনই অনুভব করে নিজেকে শূন্যে। চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসে সবকিছু। রিচার্ডের কোলে ঢলে পড়ল সঙ্গে সঙ্গে এলিজাবেথ। রিচার্ড লম্বা লম্বা পা ফেলে এলিজাবেথকে নিয়ে উপর চলে গেল। এলিজাবেথের পা থেকে পড়া ফোঁটা ফোঁটা রক্ত সিঁড়িতে পথ তৈরি করছে। সকলে হা করে তাকিয়ে রইল। চোয়াল ফাঁক হয়ে গেল লুকাসের। ন্যাসো লুকাসের ভুড়িতে পিস্ত/লের নল দিয়ে গুঁতো মেরে ঠেস মেরে বলল,
“Non guardare dall’altra parte e organizza l’intrattenimento degli ospiti।
[ ওদিকে হা করে তাকিয়ে না থেকে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা কর ]”