মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই শেষ পর্ব 

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই শেষ পর্ব 
সৌরভ চৌধুরী

চৌধুরী বাড়ির সবাই সকাল সকাল ড্রয়িংরুমে বসে আছে আর খুশি মনে টিভির স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছে।
সকল চ্যানেলেই একটাই সংবাদ চলতেছে
মন্ত্রী আবরাজ আয়ান চৌধুরীর বিচক্ষণতা ও তার টিমের সাহসিকতা, সেই সাথে আয়মান চৌধুরীর আত্মত্যাগের গল্প।

বাংলাদেশের টপ অফ দ্যা নিউজ হয়েছে মন্ত্রী আবরাজ আয়ান চৌধুরীর সাহসীকতা এবং বিচক্ষণতা।
দেশপ্রেমি তরুণ সমাজের কাছে তিনি আগে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন তার এই সাহসী কর্মকান্ডের কথা প্রচার হওয়ার পরে তিনি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সবার মুখেই আবরাজ আয়ান চৌধুরীর প্রসংশা।
টিভির টকশো তে চলছে র নিধন নিয়ে আলোচনা সমালোচনা।তবে সমালোচনাকারীদের জবাব ততক্ষণাক দিচ্ছে প্রতিপক্ষ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার জন্য ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে লাগলো।
নিজ দেশের মধ্যেও কোন্দল শুরু হলো।
বিকাল চারটায় কনফারেন্স রুমে বসে আছে প্রধানমন্ত্রী খালেদা খানম এবং তথ্য ও সরাষ্ট্রমন্ত্রী আবরাজ আয়ান চৌধুরী।
আল জাজিরার সাংবাদিক প্রশ্ন করলো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আল জাজিরা ___ মন্ত্রী আবরাজ সাহেব আপনি যেভাবে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা RAW এর এজেন্টদের গ্রেফতার ও ইনকাউন্টার করিয়েছেন তাতে কি ভারত সরকার চুপ থাকবে, তারা কি প্রতিশোধ নিবে না?
CNN _____ আপনার কি মনে হয় RAW এখানেই থেমে যাবে।
The New York Time _____ আমেরিকার সরকার এই বিষয়টি নিয়ে হইটহাউজ থেকে প্রেস রিলিজ করেছে, তারা জানিয়ে ভারত কোনো দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে সেইদেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না,
আমেরিকার কুটনৈতিক প্রেস রিলিজটি কে আপনি কীভাবে দেখছেন?
আবরাজ প্রশ্নগুলো মন দিয়ে শুনলো এবং উত্তরে বলতে লাগলো,

আবরাজ _____ আমেরিকা তার কুটনৈতিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য একবার দূরে সরাবে আবার প্রয়োজনে কাছে টেনে নিবে তাই আমি আমেরিকার প্রেস রিলিজ নিয়ে কিছু ভাবছি না।
তবে, RAW যদি আবারো আমাদের দেশে পুস ইন করতে চায় তাহলে এই দেশে RAW এর কবর দেওয়ার সাথে সাথে সেভেন সিস্টার ও তছনছ করে ফেলবো।
মনে রাখবেন এই দেশ Gen- Z দের দেশ। তাদের রক্ত সব সময় গরম থাকে। এই উত্তপ্ত রক্তের আগ্নিয়গীরীর উত্তাপে ভারত ধ্বংস হতে বাধ্য।
এটাই RAW এর লাস্ট সুযোগ।

আল জাজিরা ____ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি এই বিষয়ে আমাদের কিছু বলুন? আপনার পরবর্তী চিন্তা ভাবনা কি সেই সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে কি ম্যাসেজ দিতে চান?
প্রধানমন্ত্রী ____ এই দেশ আমার দেশ। এই দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা অত্যান্ত গভীর। দেশের ক্লান্তিলগ্নে প্রয়োজনে জেলে গিয়েছি তবে দেশ ত্যাগ করি নি। আমাদের বাহিরে কোনো প্রভু নেই।হয়তো বন্ধু রয়েছে, তবে তা স্বার্থের বন্ধু। সব স্বার্থের উর্ধ্বে আমার দেশ। দেশের ভেতর কোনো গুপ্তচর ধরা পরলে তার একমাত্র শাস্তি ততক্ষণাক মৃত্যুদন্ড।

আমার সাহসী অফিসারসহ, আবরাজ এবং বিশেষ করে পুলিশ কর্মকর্তা আসিয়ান চৌধুরী এবং তার ছেলে NSI ফিল্ড অফিসার আয়মান চৌধুরী সাহসীকতার সন্মানি পদক তুলে দেওয়া হবে তাদের পরিবারকে।
এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে
১৬ই ডিসেম্বর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের সাথেই।
সেই সাথে আগামি কাল শুক্রবার পুরো বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মসজিদে আসিয়ান চৌধুরী এবং আয়মান চৌধুরীর জন্য নামাজ পর দোয়া করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
প্রেস কনফারেন্স দেখতে দেখতে চৌধুরী পরিবারের সবার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো।
আজ চৌধুরী পরিবারের ২ সিংহপুরুষের আত্মত্যাগের গল্প পুরো বাংলাদেশ জেনেছে।
আজ নিজেকে চৌধুরী পরিবারের সদস্য ভেবে গর্বে বুক ভড়ে গিয়েছে রেহেনা চৌধুরীর।
সবাই যে বলতো সে রত্ন গর্ভা। সে বিশ্বাস করতো না কথাটি তবে আজ কেন জানি তার কথাটি বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হলো।

গভীর রাত,
চৌধুরী বাড়ির ৩ ছেলে প্রবেশ করলো পাতালপুরীতে।
আবরাজ ____ ডেভিড জানোয়ারের অবস্থা কী?
ডেভিড _____ না মরে বেচে আছে।
বার বার মুক্তি চাচ্ছে?
আবরাজ, আরহাম, আবরার চলে গেলো সেই গোপন রুমে।
দেখতে পেলো ফ্লোরে পরে আছে একটা জিন্ন সিন্ন রোগা শিশির কাদের।।
পুরো শরীরে এখন মাংস নেই বললেই চলে, শরীরের সব কয়টি হাড় বের হয়ে গিয়েছে।
এই কয়টা দিন কোনো মতে শুকনো কয়টা রুটি আর ২ গ্লাস করে পানি ছাড়া আর কিছু পায় নি।
আহহহ কয়েকদিন আগে কত দাপুটে নেতা ছিলো। তার কি দাপট ছিলো। নিজেকে ক্ষমতার উর্ধ্বে মনে করতো। আজ সেই ক্ষমতাহীন,শক্তিহীন, অসহায় হয়ে পরে আছে।

শিশির ____ প্লিজ আবরাজ আমাকে মুক্তি দে। আমাকে মেরে ফেল প্লিজ।
আবরাজ ____ আজ তোকে মুক্তি দিতেই এসেছি। তবে তোর মুক্তি এত সহজে হবে না। অনেক কষ্টের হবে।
কথাটি বলেই আবরাজ ইশারা করলো ডেভিড কে,
ডেভিড এক বালতি এসিড আনতেই।
আবরাজ সেফটি গ্লোভস পরে নিলো।
এসিডের বালতি নিয়ে গেলো শিশিরের কাছে।
এরপর আবরাজের পা টা চুবিয়ে দিলো এসিডের বালতি তে।
আবরাজ _____ মনে আছে, তোর লোকেরা অসহায় ১২ বছরের পথ শিশু মরিয়া কে ধর্ষণ করে এসিড মেরে হত্যা করেছিলো আর তুই তাদের নিরঅপরাধ সাজিয়ে খালাস করেছিলি,
আজ মারিয়ার সেই প্রতিশোধ নিলাম।
তারপর একটা ধারালো রাম দা দিয়ে ডান হাতের ৫টি আঙ্গুল কেটে নিলো।
তারপর বলল,

আবরাজ ___ মনে আছে সাংবাদিক রাশেদের কথা, তোর বিরুদ্ধে পত্রিকায় সংবাদ লিখেছিলো তাই তুই তার হাত কেটে নিয়েছিলি।
শিশির বারবার আকুতি মিনতি করতে লাগলো। তাকে আর টর্চার না করে মেরে ফেলতে। এসিডের পরে এভাবে হাতের আঙ্গুল কেটে নেওয়া শিশির কোনো ভাবেই নিজের শরীরকে ধরে রাখতে পারতেছে না।
তবে শিশিরের চিৎকার আহাজারিতে চৌধুরী পরিবারের ৩ ছেলে যেন আরো শান্তি পাচ্ছি।
আবরার, আরহাম এসে আরো নিসংশো ভাবে শরীরের প্রত্যেকটা হাড় ভাঙ্গতে লাগলো।
ঠিক তখনি রুমে প্রবেশ করলো রাফা চৌধুরী।
শিশির তার দিকে তাকালো। দেখতে পেলো রাফা চৌধুরীর চোখে প্রতিশোধের আগুন। সেদিন সে কিছু বলে নি, তার ভয়ংকর রুপ ভাবি মা কে দেখাতে চায় নি। তাই চুপ ছিলো, তবে আজ নিজের প্রতিশোধ পূর্ণ করতে এসেছে সে।

রাফা৷ ____ ডেভিড ঐ স্পেশাল পাইপ টি আনো।
ডেভিড দৌড়ে গিয়ে পাইপ টি এনে রাফা চৌধুরীর হাতে দিলো।
রাফা চৌধুরী এগিয়ে এসে বলল,
রাফা ____ আরহাম, আবরার ওর মুখ যেন বন্ধ না হয়, আর আবরাজ যা আমার ঐ স্পেশাল এসিডটা নিয়ে আয়।
ফুপির কথা শুনে আরহাম, আবরার জোর করে শিশিরের মুখ চেপে ধরলো। আর রাফা চৌধুরী জোর করে শিশিরের মুখের ভেতর পাইপ ঢুকিয়ে দিলো।একদম গলা পর্যন্ত।
শিশির অসহায় চোখে রাফা চৌধুরীর দিকে তাকালো। সে শুনেছিলো মেয়েদের মন কোমল, নরম। অথচ তার সামনে দাড়ানো মহিলাকে তার কোনো ভাবেই কোমল, নরম মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে হিংস্র এক হায়না।
আজ কি তাহলে তার করুণ মৃত্যু এই মহিলার হাতে হবে ভেবেই নিজের অতীতের কথা মনে হলো
মেয়েদের তো সে মানুষই মনে করতো না, বিশেষ করে বাঙ্গালী মেয়েকে, কই তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ও তো সে তার প্রাপ্য সন্মান দেয় নি। কি নৃশংস ভাবে তাকে হত্যা করেছে।

অথচ আজ সেই নারী জাতিই তাকে করুণ মৃত্যু দিবে।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই আবরাজ এসিড এনে রাফা চৌধুরীর হাতে দিলো।
রাফা চৌধুরী পাইপের ভেতর এসিডটি ঢেলে দিলো।
এসিড সোজা গলা বেয়ে পেটে চলে গেলো।
এদিকে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার করতে লাগলো শিশির কাদের।
তার পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে।
রাফা চৌধুরীর হাতের ইশারায় আনা হলো ঠান্ডা বরফ পানি,
-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্র সেই পানির।
ঐপানি তে ডুবানো হলো শিশির কাদের কে।

পানিতে ক্যামিকেল দেওয়া হয়েছে তাই পানি পুরোটা বরফে পরিণত হয় নি।
ঠান্ডা পানিতে জমতে জমতে শরীরের সকল রক্ত জমাট বাধতে শুরু করলে, শিশির কাদেরকে ছুঁড়ে মারা হলো জলন্ত উত্তপ্ত অগ্নিকুন্ডে।
যেখানে জীবন্ত অবস্থায় দাহ করা হয় শিশির কাদের চৌধুরীর অরুফে অরুপ দাসের।
এখানেই শেষ হয় শিশির কাদেরের অধ্যায়।
ভোর বেলায় বাড়ি ফিরল রাফা চৌধুরী এবং তার ৩ ভাতিজা।
আবরাজ, আবরার,আরহাম ঘুমিয়ে গেলেও ঘুমায়নি রাফা চৌধুরী।
তার চোখে ঘুম আসতেছে না।

সে বাহিরে বাগানে হাটাহাটি করতে লাগলো।
একটুপর সে দেখতে পেলো জারিন বাগানে আসতেছে।
সে বুঝে গিয়েছে তার রাগী ভাতিজা জারিন কে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।
রাফা চৌধুরী জারিনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
রাফা _____ জারিন এদিকে আসো।
জারিন এগিয়ে এলো, রাফা চৌধুরী জারিনকে দোলনায় বসতে বলল।
জারিনের পাশে তিনি নিজেও বসলো।
রাফা চৌধুরী ____ কিছু বলছো না যে
জারিন _____ ভাবতেছি
রাফা _____ কি ভাবতেছো
জারিন ______ চাচি বলবো নাকি ফুপি
রাফা চৌধুরী তাচ্ছিল্যের সাথে বললো,
রাফা _____ আমি তোমার চাচি কোনো দিনই ছিলাম না, যদি এসবের সাথে অন্য কেউ না থেকে তোমার পরিবারই শুধু থাকতো তাহলে দেখতে কবেই তোমার পুরো পরিবারকে আমি শেষ করে দিতাম

জারিন __ আমাদের ও
রাফা _____ হয়তো। এসব বাদ দাও এখন বলো তুমি এই সময় এখানে কেন? আরহাম তো মাত্র রুমে গেলো।
জারিন _____ নিশ্চুপ।
রাফা _____ বুঝেছি। তা আরহাম কেন রুম থেকে বের করে দিলো?
জারিন ____ সারা রাত কই ছিলো জানতে চেয়েছি তাই ( ধীর কন্ঠে বলল)
রাফা ____ দেখো জারিন, আরহাম রাগি হলেও ওর মনটা অনেক ভালো।।আমি জানি তুমি আরহাম কে ভালোবাসো।আমি ও চাই তুমি আর আরহাম সুখে থাকো।

তাই আমি আরহামের সাথে কথা বলবো।তুমি বিয়ের আগে আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছে এমন কি বিয়ের পর ও সেসব কথা আরহাম জানে।ছেলেটা আমাকে অনেক ভালোবাসে। তাই তোমাকে সহ্য করতে পারতেছে না।
তবে আমার বিশ্বাস আমি আরহাম কে বুঝালে ও বুঝবে।
তবে হয়তো ও এখনো তোমাকে ভালোবাসতে পারে নি। শুধু প্রতিশোধ নিয়ে ভেবেছে ভালোবাসার কথা ভাবে নি, তাই ও আমার কথা শুনলে হয়তো নরম হবে আর সে সময়ই তোমার ভালোবাসা দিয়ে ওকে আপন করতে হবে।
জারিন একটু চুপ থেকে সন্মতি দিয়েই।

জাপটে জড়িয়ে ধরলো রাফা চৌধুরী কে।
এরপর অতীতে করা পাপের জন্য ক্ষমা চাইতে লাগলো।
ওপর থেকে নিজ বেলকনী থেকে সবটাই দেখলো আরহাম।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে রুমে চলে গেলো। সে চাইছিলো জারিন আগে তার ফুপির কাছে মাফ চাইবে তারপর সে তাকে কাছে টেনে নিবে। যেহেতু বিয়ে হয়েছে তাই সম্পর্ক থেকে পালিয়ে বাঁচা তো আর যাবে না।
আজ ১৪ই ডিসেম্বর,

চৌধুরী বাড়িতে চলছে উৎসব মুখোর পরিবেশ।
চৌধুরী বাড়ির সাদে আয়োজন করা হয়েছে, ৩ জোড়া বিয়ের হলুদের অনুষ্ঠান।
সাদের একপাশে বসে আছে,
আবরাজ,আবরার এবং ইশান
আর আরেক পাশে বসে আছে মেহেক,রুশা এবং রেশমা।
উৎসবমুখোর পরিবেশে শেষ হয় হলুদের অনুষ্ঠান।
তবে কেউ জানতো না তারা কোনো নিরাপত্তা দেখতে না পেলে ও প্রত্যেকটি মোড়ে, প্রত্যেকটি গলিতে SK এবং স্যাডো গ্যাং লোক রয়েছে ছদ্মবেশে।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টেও ছদ্মবেশে রয়েছে তাদের লোক। বাড়ির আশে পাশে প্রত্যেকটি বাড়ির সাদে স্নাইপার নিয়ে দাড়িয়ে আছে স্যাডো গ্যাং এর স্নাইপার স্পেশালিষ্টরা।
পুরো এলাকা জুড়ে চলছে ক্ষুদ্র মাছির মতো ড্রোন।
ড্রোন দিয়ে পুরো এলাকা দেখা হচ্ছে কোথায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতেছে কি না!
দেখতে দেখতে চলে এলো বিয়ের মুহুর্ত।
এই কয়দিন সিকদার বাড়ি এবং ইশানদের বাড়ির সবাই চৌধুরী বাড়িতেই ছিলো।
রাবেয়া সিকদার এবং মহাসিন সিকদার যখন চৌধুরী বাড়ি তে প্রবেশ করলো তখন তাদের চোখ কপালে,
মেহেক এই বাড়ির মেয়ে, আয়মান এত বড় বাড়ির ছেলে ছিলো?
আর তারা কি না মেহেক কে এত অত্যাচার করেছে।
এদিকে, মেহেকের বান্ধবি ইশা তো চৌধুরী বাড়ি দেখেই জ্ঞান হারানোর অবস্থা হয়েছিলো,

ইশা _____ দোস্ত এটা তোদের বাড়ি
মেহেক _____ তো তোকে কি অন্য বাড়িতে এনেছি ( কড়া মেজাজে বলল)
ইশা _____ আরে রাগিস কেন? আমি ভাবতেও পারতেছি না আমার বান্ধবি এত বড় বাড়ির মেয়ে আর এখন তো আবার বউ
মেহেক _____ সম্পদ টাকা পায়সা নিয়ে চৌধুরী বাড়ির কেউ বরাই করে না। এসবের উর্ধ্বে তোর আর আমার বন্ধুত্ব। তুই আমার বিপদের দিনগুলো তে পাশে ছিলিস। তুই না থাকলে হয়তো মেহেকের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যেত।
মেহেক কে ইমোশনাল হতে দেখে ইশা কথা ঘুরিয়ে খুনসুটি করতে লাগলো।
মেহেক,রুশা এবং রেশমাকে সাজাতে পাল্লারে নিয়ে গিয়েছে রাফা চৌধুরী।
মেয়েদের বিয়ের সকল দায়িত্ব নিয়েছে রাফা চৌধুরী এবং ছেলেদের বিয়ের দায়িত্ব নিয়েছে আয়ান চৌধুরী, তবে ইশানের বাবা আপত্তি করলেও আয়ান চৌধুরী তা শুনে নি।
আবরাজ, আবরার এবং ইশান বসে আছে তাদের সিটে।

ঠিক তখনি,
দরজা দিয়ে প্রবেশ করে মেহেক,রেশমা এবং রুশা।
ছেলেরা হা হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের নিজ নিজ বউদের দিকে।
ঠিক তখনি আরহাম গিয়ে ঠাস করে চাটি মারলো আবরাজ এবং আবরারের মাথায়।
আবরাজ _____ এই মারলি কেন?
আবরার ____ ভাইয়া তুমি মারলে কেন?
আরহাম কর্কশ কন্ঠে বলল,
আরহাম ______ তোরা যেভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস মুখে মাছি ঢুকে যাবে।
তাই তোদের স্বাভাবিক করলাম।
আয়ান চৌধুরীর ইশারায় তারা ৩জন গিয়ে নিজ নিজ বউকে হাত ধরে স্টেজে আনলো।
পাশাপাশি বসে আছে সবাই।
ঠিক তখনি আরহামের ফোনে কল এলো,
আরহাম জানালো প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতি এসেছে। তাদের রিসিভ করার জন্য চলে গেলো আয়ান চৌধুরী, রেহেনা চৌধুরী এবং রাফা চৌধুরী।
একপাশে দাড়িয়ে আছে রাবেয়া সিকদার আর মহাসিন সিকদার।
তাদের চোখ তাদের মেয়ের দিকে,

রাবেয়া _______দেখেছো মহাসিন আমাদের মেয়েকে কত সুন্দর দেখাচ্ছে।
মহাসিন _______ হুম দেখেছি একদম চাঁদের মতো।
রাবেয়া _______ আমরা কখনো কি ভেবেছিলাম আমাদের মেয়ের বিয়ে এতটা আয়োজন করে হবে। অথচ দেখো আনরা মেহেকের সাথে কি না করেছি, সেই মেহেক আমার দেখা স্বপ্নগুলো পূরণ করে দিলো। রাণীর মতো বিয়ে হচ্ছে আমার মেয়ের।
মহাসিন _____ যেখানে আমাদের এলাকায় কোনো বিয়েতে চেয়ারম্যান এলেই আমরা সেই বর- কণে কে কত সন্মান দিতাম। সেখানে দেখো আমার মেয়ের বিয়েতে সয়ং প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি,সেনাপ্রধান এসেছে।
এসব বলতে বলতে অপরাধবোধে তাদের চোখ বেয়ে পানি বের হয়ে এলো।
ততক্ষণে আরহাম সবাইকে নিয়ে এসেছে স্টেজে।
বর্তমান সেনাপ্রধান হলো আয়মানের সামরিক প্রশিক্ষক।
আয়মান ছিলো তার প্রিয় সোলজার৷ উনি কখনো চায় নি আয়মান NSI তে থাকুক। উনি চাইতেন আয়মান যেন সেনাবাহিনীতেই থাকে।

সেনাপ্রধান হাত রাখলো মেহেকের মাথায়।
মেহেকের দিকে তাকিয়ে তার মনে পরে যাচ্ছে আয়মানের সেই সাহসীকতা, দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগ।
মেহেকের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন সেনাপ্রধান। এরপর সবার সাথে কথা বললেন। রেশমাকে একটু বেশীই খুশি দেখা গেলো।
রেশমা ফোন দিয়ে বারবার ফটো তুলতে লাগলো।
হয়তো ফেসবুকে পোস্ট করবে তাই।

একে একে সকল বর কণের সাথে ফটো তুললেন ভিভিআইপি গেষ্টরা।
এরপর কাজি এসে বিয়ে পড়াতে লাগলো। খুব সুন্দর ভাবে বিয়েও সম্পূর্ণ হয়ে গেলো।
বিয়ে শেষে পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ফটো সূট করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী খালেদা খানম সহ বাকি ভিভিআইপি গেষ্টরাও ৩ বর কণের জন্য আনা গিফ্ট তাদের হাতে দিয়ে চলে গেলো।
দেখতে দেখতে বিয়ের সকল কার্যক্রম শেষ করে। কমিউনিটি সেন্টার থেকে চৌধুরী বাড়িতে ফিরলো সবাই।
বাড়ির সকল রীতিনীতি পূরণ করে যার যার রুমে তাকে তাকে রেখে আসা হলো।
এদিকে ঈদের দিন হলো আরিশার।

সে সবার থেকে টাকা নেওয়ার জন্য গেট ধরেছে।তার সঙ্গে সাধ দিয়েছে জারিন।
রাফা চৌধুরী সবাইকে বুঝিয়েছে যেন জারিন কে মেনে নেয়। তারপর থেকে কেউ আর জারিনকে কিছু বলে নি সবাই মেনে নেওয়ার চেষ্টা করতেছে।
জারিন নিজেই মেহেক, রুশা এবং রেশমা কে বাসর ঘরে রেখে এসেছে,
আবরাজ বাসর ঘরে ঢুকতে গেলে, বাসর ঘরের সামনে এসে দাড়ায় আরিশা,ইশা, জারিন এবং বর সেজে থাকা আবরার।
আবরার কে দেখে আবরাজ ভ্রু কুঁচকে তাকায়,

আবরাজ __ কি চায়?
আরিশা ___বেশী না ১ লক্ষ টাকা
আবরাজ ___ টাকা নিবি বুঝলাম তবে এই বাদর এখানে কেন? ( আবরার কে দেখিয়ে বলল)
আবরার ____ আরে বাহহ আমার বড় ভাই এর বিয়ে আর আমি বাসরের টাকা নিবো না। এটা ভাবলে কি করে।
আবরাজ বিরক্ত হয়ে বলল,
আবরাজ ____ আরে বলদ, আজ তোর ও বিয়ে হয়েছে। বাসর ঘরে না গিয়ে তুই আসছিস বড় ভাই এর বাসর ঘরের গেট ধরতে।
আবরার ____ বলদ বলো আর যায় বলো। আমি টাকা না নিয়ে যাচ্ছি না।
আবরাজ বিরক্ত হয়ে পকেট থেকে ১ লাখ টাকার বান্ডিল বের করে দিলো আরিশা কে।
আবরাজ টাকা দিতেই ওরা খুশীতে লাফিয়ে উঠলো।
এরপর, আবরারের দিকে তাকালো জারিন আর আরিশা
আবরার কাচুমাচু করে তাকিয়ে মাথা দিয়ে নিষেধ করতে লাগলো।
কিন্তু ওরা দুষ্ট হাসি দিয়ে আবরারের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো আবরারের বাসর ঘরের সামনে।

জারিন ____ এবার আবরার তুমি তোমার টাকা দাও।
আরিশা ___হ্যা ভাইয়া তুই ও ১ লাখ দিবি
১ লাখ শুনে আবরার চুপসে গেলো, অসহায় কন্ঠে বলল,
আবরার ___ বোন আমার আমি কি মন্ত্রী নাকি আমি ছোট একটা চাকরী করি অল্প টাকা বেতন তা নিজের পেছনেই শেষ হয় সবটাকা৷ এতদিন ফুপি আমার হাত খরচ চালিয়েছে তোরা যদি ১ লাখ টাকা চাস মন্ত্রীর বাড়িতে চুরি করা ছাড়া আমার উপায় থাকবে না।
আরিশা মজা করে বলল,
আরিশা ____ মন্ত্রীর বাড়িতে চুরি করলেন NSI এর ডেপুটি ডিরেক্টর আবরার আয়ান চৌধুরী হেডলাইনটা কেমন হবে বড় ভাই, আমার কিন্তু হেব্বি পছন্দ হয়েছে।
জারিন ও মজা করে বলল,

জারিন ____ তাহলে চুরিটা করেই আনো দেবরজি।তারপর না হয় বাসর ঘরে ঢুইকো।
ইশা _____হ্যা ভাইয়া তাহলে তাই করেন।আমি ততক্ষণে আপনার বউ পাহাড়া দিই। আপনার অনুপস্থিতিতে যদি কেউ আবার আপনার বউ চুরি করে নিয়ে যায়
ইশার কথা শুনে সবাই উচ্চশব্দে হেসে উঠলো,
আবরার ___ বোন আমার ১০ হাজার টাকা আছে, এটা নিয়ে আমাকে ভেতরে যেতে দে।
আরিশা ____ যা আনার দয়ালু মন তুই লাস্ট ৮০ হাজার টাকা দিবি তার ভেতরে যাবি।
আবরার ____ বোন আনার একটু মন নরম কর ৩০ হাজার টাকা দিই এটাই মেনে নে প্লিজ।
আরিশা ____ লাস্ট ৫০ হাজার দিলে দে না হলে তোর রুমে ঢোকা লাগবে না। তোর বাসর ও করা লাগবে না।
আবরার মুখটা ছোট করে পকেট থেকে টাকা বের করে আরিশা কে দিলো,
আরিশা টাকাটা গুনে বলল,

আরিশা ____ ২৫ হাজার টাকা কেন?
আবরার _____ ভাইয়া দিয়েছে ১ লাখ ঐটা ৪ ভাগ করলে আমি পাই ২৫ হাজার। তোদের দিতে হবে ৫০ হাজার। ঐখানকার ২৫ হাজার আর আমার দেওয়া ২৫ হাজার মোট ৫০ হাজার।
হিসাব ক্লিয়ার।
কথাটি বলেই ওদের সড়িয়ে দিয়ে আবরার রুমে ঢুকলো।
আর ৩ জোড়া চোখ বিষ্ময়ে আবরারের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
কামডা করলো কি,
এই না হলে গোয়েন্দা অফিসার, কি বুদ্ধিরে বাবা।
ঠিক একই ভাবে ইশানের থেকে ওরা ২০ হাজার টাকা নিলো।
আবরাজ বাসর ঘরে ঢুকে দেখলো মেহেক বড় একটা ঘোমটা টেনে বসে আছে।
আবরাজ কে রুমে ঢুকতে দেখে মেহেক যেই আবরাজকে সালাম করতে যাবে। আবরাজ মেহেক কে গম্ভীর স্বরে বলল,

আবরাজ _____ মেহেক এসব পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা আমার পছন্দ না। আমি আশা করি এসব থেকে তুমি বিরত থাকবে।
মেহেক ______ বড় ভাবি যে বলল এটা করতে হয়।
আবরাজ _______ কে কি বললো এটা তোমার মাথায় রাখতে হবে না। আমি কি বললাম এটা সব সময় মনে রাখবে বুঝতে পেরেছো।
মেহেক মাথা নাড়িয়ে সন্মতি দিলো অর্থাৎ সে বুঝতে পেরেছে।
আবরাজ _____ চলো ওযু করে আসি। ওযু করে এসে আমার নতুন জীবনের জন্য আল্লাহর কাছো দোয়া করি।
মেহেক ______ ঠিক আছে চলুন।
তারপর মেহেক আর আবরাজ গিয়ে ওযু করে এসে ২ রাকাআত নফল নামাজ পড়লো।
তারপর আবরাজ মেহেক কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলো।

মেহেক ____ এই শুনেন না
আবরাজ _____ বলো বউ
মেহেক _______ আমার বাবু লাগবে। আমি ওর ছোট্ট ছোট্ট হাত ধরে হাটবো।ও পুরো চৌধুরী বাড়ি মাতিয়ে রাখবে।
আবরাজ _____ মেহেক তুমি এখনো অনেক ছোট। এখন তোমার পড়াশোনা করার বয়স।
মেহেক ______ বড় মা ও তো সবাইকে সামলিয়েও লেখাপড়া করেছে।
আবরাজ ____ মা অনেক স্ট্রং পারসোনালিটি মানুষ। তুমি নরম কোমল তুমি পারবে না সোনা।
মেহেক _____ আমি পারবো।আমি কোনো না শুনতে চাই না।
আবরাজ _____ আচ্ছা ঠিক আছে। চলো তাহলে শুরু করা যাক
অন্যদিকে,

আবরার রুমে ঢুকতেই, রুশা আবরারের কলার চেপে ধরলো।
আবরার ______ এই এসব কি?
রুশা _____ আমাকে অনেক নাচিয়েছো। এখন তো বিয়ে করে নিয়েছি। এখন বুঝাবো কত ধানে কত চাল।
আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো, এবার তার শোধ তুলবো।
আবরার ______ মানে আআআআ
আবরার কে আর কিছু না বলতে দিয়েই রুশা তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। আবরাজের ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট একত্র করে দিয়েছে।
অন্যদিকে,

ইশান রুমে ঢুকতেই দেখতে পায়, তার বউ সেলফি তোলায় ব্যাস্ত।
ইশানকে রুমে ঢুকতে দেখে রুশা বললো,
রুশা ____ এই এদিকে আসো। আর তোমার ফোনটা দাও।
ইশান নিজের ফোনটা এগিয়ে দিলো।
রুশা ইশানের সাথে নিজের আইডি এড করে ম্যারিড স্ট্যাটাস দিলো।
এরপর ইশানের হাতে ফোন দিয়ে দিলো।
ইশান রুশার আইডির প্রোফাইলে প্রবেশ করে দেখতে পেলো ৩ ঘন্টায় ৩০ টা পোস্ট। সবগুলোই প্রধানমন্ত্রী,রাষ্ট্রপতি,সেনাপ্রধান সহ বিভিন্ন মন্ত্রীর সাথে বিয়ের সাজে তোলা ফটো।
সব পোস্ট আর ক্যাপশন দেখে ইশানের মাথায় হাত। এ কাকে বিয়ে করলো সে? এ তো হাফ মেন্টাল?
আজ ১৫ই ডিসেম্বর,

সকাল সকাল ৩ নতুন বউ বাড়ির সবার জন্য রান্না শুরু করলো।
রেশমা আর রুশা কিছু না পারলেও তারা মেহেক কে সবকিছু এগিয়ে দিচ্ছে আর মেহেক রান্না করতেছে।
রান্না করা হয়ে গেলে চৌধুরী বাড়ির সবাই ড্রয়িংরুমে খাবার টেবিলে বসলো।
সবাই নতুন বউদের রান্না খেয়ে ৩জন কে ই টিপস দিলো।
খাওয়া দাওয়া শেষে আবরাজ সবাইকে ড্রয়িংরুমে বসতে বলল।
আবরাজ ____ কাল ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে যেখানে দাদু এবং চাচ্চুকে সন্মাননা দেওয়া হবে।
আমি আবরার হয়তো আজ আর বাসায় ফিরবো না।
আমাদের ঐখানে কাজ আছে।
আর হ্যা তোমাদের সবাইকে ভাইয়া নিরাপত্তার সাথে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাবে।
তবে রেশমা
রেশমা ___ জি ভাইয়া
আবরাজ ____ ক্যান্টনমেন্ট একটা রেস্টিকটেড এরিয়া বিয়েতে যা করেছো করেছো ঐখানে গিয়ে যেখানে সেখানো ফটো তোলা যাবে না।
বুঝতে পেরেছো

রেশমা ____ ঠিক আছে ভাইয়া।
এরপর সবাই যার যার রুমে চলে গেলো। একটু আবরার এবং আবরাজ রুশা, মেহেকের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো তাদের কাজে।
আজ ১৬ই ডিসেম্বর,
চৌধুরা বাড়ির সবাই বসে আছে অতিথিদের চেয়ারে। অতিথিদের চেয়ারে বসে থেকে তারা বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ দেখতে লাগলো।
কুচকাওয়াজ শেষে অনুষ্ঠান পরিচালনাকারী বলে উঠলো,
মেজর জেনারেল _____ আজ আমাদের বিজয় দিবস। এই বিজয় যেমন আমাদের সহজে আসে নি। তেমনি বিজয়ের পর এই যে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ পেয়েছি৷ এই দেশটিকে মাথা উঁচু করে রাখতে আমাদের বীর সৈনিকেরা নিরলস ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তেমনি প্রতিবেশী দেশের কুচক্রী মহলের গোপন মিশন কে ধূলিসাৎ করতে আমাদের দেশের ২জন বীর সন্তান শহীদ হয়েছেন।
তাদের রেখে যাওয়া তথ্য প্রমাণ এবং পথকে অনুসরণ করে আমাদের দেশপ্রেমি অফিসাররা সেই কাজ সম্পূর্ণ করেছে।

এই মিশনের সকল দায়িত্ব ছিলো আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবরাজ আয়ান চৌধুরী। সেনা, নৌ,বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে তার সন্মানে একটি স্যালুট।
সাথে সাথে কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সকল সৈনিক একসঙ্গে স্যালুট দিলো।
আবারো বলতে লাগলো মেজর জেনারেল,
উক্ত মিশনে অংশ নেওয়া সকল অফিসার কে স্টেজে এসে মাননীয় রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সন্মাননা গ্রহণ করার জন্য বলা হলো।

সাথে সাথে সকল তরুণ সাহসী অফিসাররা শৃঙ্খলার সাথে তাদের সন্মাননা গ্রহণ করলো।
আবারো বলতে লাগলো মেজর জেনারেল,
এবার ২জন শহীদের অবর্তমানে তাদের পক্ষে সন্মাননা গ্রহণ করবে আসিয়ান চৌধুরীর বড় ছেলে বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আয়ান চৌধুরী এবং আয়মান চৌধুরীর পক্ষ্য থেকে মেহেক চৌধুরী।
তখনি মেহেক একজন অফিসার কে ইশারায় ডেকে কিছু একটা বলে দিলো।
অফিসারটি মেহেকের থেকে কথাটি শুনে দ্রুত সেনাপ্রধান কে জানালো এবং সেনাপ্রধানের অনুমতিতে মেজর জেনারেল ঘোষণা দিলো,

আয়মান চৌধুরীর হয়ে তার সন্মননা গ্রহণ করবে দেশের সুনামধন্য উকিল রেহেনা চৌধুরী।
যার জন্য আমরা একজন আয়মান চৌধুরীকে পেয়েছি, পেয়েছি মন্ত্রী আবরাজ এবং NSI ডেপুটি ডিরেক্টর আবরারের মতো সাহসী অফিসার।
আয়ান চৌধুরী তার স্ত্রী রেহেনা চৌধুরীর হাত ধরে স্টেজে উঠলো।
৩ বাহিনীর প্রধানের থেকে সন্মাননা নেওয়ার সময় আবেগে কেঁদে উঠলো রেহেনা চৌধুরী।
রাষ্ট্রপতি রেহেনা চৌধুরী কে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করলো।
মা কে ভেঙ্গে পরতে দেখে আবরাজ এবং আবরার এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো মায়ের পাশে।
রেহেনা চৌধুরী স্পিকারের সামনে দাড়িয়ে বলতে শুরু করলো,

মা ____ আজ আমি একজন উকিল হিসেবে এখানে আসি নি।আমি আমার জীবনে অনেক কেস লড়েছি। অনেক অপরাধ দেখেছি। অনেক খুনের বিচার হতে দেখেছি।
তবে আজ আমার হাতে যে সন্মাননাটি দেখতেছেন, এটা শুধু আমার জন্য সন্মাননা না, এটা আমার আয়মানের স্মৃতি।
আয়মান আমার গর্ব, আমি গর্বিত। আমি নিজেকে বলতে পারবো আমার শিক্ষা সঠিক ছিলো,
আমি ভুল শিক্ষা দেয় নি, আমার শিক্ষা সঠিক ছিলো বিধায় দেশদ্রোহীর সাথে আপোস না করে আমার আয়মান শহীদ হয়েছে।

রেহেনা চৌধুরী কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে দিলো।
অথচ তিনি দেখলেনই না তার কথাগুলো শুনে তার সাথে সাথে চৌধুরী বাড়ির সবার চোখেই পানি।
বাবার আত্মত্যাগের জন্য এখন মেহেকের ও গর্ব হচ্ছে, হ্যা সে একজন শহীদের সন্তান।
তখনি রেহেনা চৌধুরী বলে উঠলো,
একজন বাবার কাছে যেমন সন্তানের লাশ পৃথিবীর সকল ওজনের চেয়ে ও ভাড়ি, আজ ঠিক তেমনি আমার কাছে এই সন্মাননা ঠিক তেমনি ভাড়ি।
আয়মান তার জীবন দিয়ে আমাকে এই সন্মাননা উপহার হিসেবে দিয়ে গিয়েছে
তবে আমি আরো ৩টা সন্মাননা চাই
আমার ৩ ছেলেকে ও আমি দেশের জন্য সমর্পন করলাম।
রেহেনা চৌধুরীর কথা শুনে উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে গেলো।
বৈদেশিক কুটনীতিবিদরা অবাক হয়ে রেহেনা চৌধুরীর মাতৃত্ববোধ,দেশ প্রেম এবং পারিবারিক নৈতিকতা দেখলো।
এজন্যই বোধয় বলে,

তুমি আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে একটি শিক্ষিত জাতি দিবো।
সেলুট সেই সকল মা কে যারা তাদের ছেলেকে নৈতিকতার সাথে দেশপ্রেম শেখায়।
সব গল্পরই হয়তো সমাপ্তি হয়, কিন্তু জীবনের গল্পের সমাপ্তি একমাত্র মৃত্যু।
সব ভালোবাসা পূর্ণতা পেলে ভালোবাসা কি মানুষ বুঝতো না, যেমন এখন আসিফ আরিশার ভালোবাসা না পেয়ে ভালোবাসার মূল্য বুঝতেছে,তবুও দোয়া করি সকল ভালোবাসা পূর্ণতা পাক।

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই পর্ব ১৭

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই গল্পটি এখানে শেষ হলো।
পুরো গল্পটি কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here