মন ফাগুন পর্ব ৩৫

মন ফাগুন পর্ব ৩৫
তাইয়্যেবা বিনতে কেয়া

নিহান একবার মিহির যাওয়ার দিকে তাকায় আর একটা নিশ্বাস ছাড়ে সে জানে মিহি ওর উপর রাগ করছে। কিন্তু এখন যেমন পরিস্থিতি নিহানের সব কাজ বুঝে শুনে করতে হবে সে যদি এখন মিহির বাবাকে গিয়ে সত্যি বলে দেয়। তাহলে আরো বড়ো সমস্যা হতে পারে নিহান বলে –
“- সরি মিহি আমি আপনাকর কষ্ট দিতে চাই নাই কিন্তু কি করব বলুন তখন যদি আপনি সত্যি কথা বলে দিতেন তাহলে আপনার বাবা আমার আর আপনাকে আলাদা করে দিতো। তাই আপনার বাবার মন জয় করা এখন জরুরি আর ওই কেরাসিনের সাথে বিয়ে কখনো হবে না আপনার। এই মিহি শুধু নিহান নেহাল শিকদারের শুধু নিহানের “।
নিহান কথাটা বলে নিজের ব্যাগ থেকে একটা জামা বের করে পড়ে নেয় হঠাৎ একটা বাচ্চার কণ্ঠ শুনে নিহান পিছনের দিকে তাকিয়ে পিছনে দেখে আর বলে –

“- কে তুমি? তুমি মিহি কি হও “।
বাচ্চাটা নিহানের কথা শুনে ওর কাছে আসে আর ওকে ভালো করে দেখতে থাকে আর গালে হাত দিয়ে কিছু ভাবতে থাতে। আসলে সে ভাবছে এই লোক তাদের কোনো আত্মীয় না কি কিন্তু তার যতটুকু মনে হচ্ছে এই লোকটাকে আগে দেখে নাই। তাই সে ছোট্ট ছোট্ট চোখ দিয়ে তাকিয়ে বলে
“- আমি কে সেটা তোমাকে কোনো বলবো? আগে বলো তুমি কে? আর আমার ফুপিকে কি করে চিনো তুমি সত্যি করে বলো। আমার ফুপির সাথে কি তোমার কোনো সম্পর্ক আছে “।
বাচ্চাটার মুখে ফুপি কথাটা শুনে নিহান বুঝতে পারে এই বাচ্চা হয়তো মিহির ভাইয়ের। নিহান গিয়ে বাচ্চাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর বলে –
“- ওহ আচ্ছা তাহলে মিহি তোমার ফুপি হয়। আমি এই বাড়িতে নতুন এসেছি তাই তুমি আমাকে চিনতে পারলে না। আচ্ছা তোমার নাম কি?
‘- তুমি গেস করো আমার নাম কি হতে পারে?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিহান বাচ্চার মুখের দিকে তাকায় পরে ভাবে যেহেতু এইটা মিহির ভাইয়ের ছেলে তাহলে নিশ্চয়ই কোনো ফানি হবে। যার বাবার নাম পিসু আর চাচার নাম শিশু তাহলে নিশ্চিত তার বাচ্চার নাম হিসু হবে। নিহান বলে –
“- আচ্ছা তোমার বাবার নাম যদি পিশু হয় তাহলে তোমার নাম হিসু হবে তাই না। হিসু বাবু “।
বাচ্চাটা রাগী চোখে নিহানের দিকে তাকিয়ে দেখে মানে তার নাম এইটা না। বাচ্চাটা বলে –
“- আমার নাম হিসু না জিসান নিকনেম জিসু”।
“- ওহ জিসু বাহ ভালো তাও হিসু বা টিস্যু রাখে নাই তাহলে কি হতো “।
নিহান বাচ্চা টার সাথে কথা বলতে থাকে তখন খাওয়ার জন্য ডাক পরে তার। সবাই টেবিলে বসে অপেক্ষা করছে খাবারের নিহান গিয়ে বসে সেখানে তারপর জামশেদ তালুকদার বলে –
“- নিহান তোমার কি কোনো সমস্যা হচ্ছে আমাদের সাথে খাবার খেতে। শহরে সবাই একসাথে খাওয়ার নিয়ম নাই “।
নিহান হাসে আর ওর পরিবারের কথা মনে পড়ে নিহান বলে

“- না না স্যার সমস্যা নাই। আমাদের পরিবার জয়েন পরিবার তাই সবাই একসাথে খাবার খায় সমস্যা নাই স্যার ”
নিহান আর জামশেদ তালুকদারের কথার মধ্যে মিহি টেবিলের সামনে বসে নিহান সেইদিকে তাকিয়ে থাকে। মিহি নিহানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তারপর টেবিলে বসে যায় মিহির মা সবার জন্য খাবার নিয়ে আসে আর টেবিলের উপর রাখে। সবাই নিজেদের খাবার নিয়ে খেতে থাকে মিহি আর নিহানের দিকে দেখে না। সবাই যখন খাওয়া দাওয়া তখন নিহানের মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসে।
নিহান টেবিলের নিচে পা দিয়ে মিহির পায়ে টার্চ করতে থাকে তখন মিহি খাবার খাচ্ছে হঠাৎ নিহানের এমন করায় মিহি ওর দিকে তাকায়। নিহান মিহিকে দেখে হাসতে থাকে আর চোখ টিপ দেয় মিহি ইচ্ছে করছে নিহানকে কাঁচা চাপিয়ে খেয়ে ফেলতে। কিন্তু সে এখন কিছু করতে পারবে না কারণ এখানে সবাই আছে। মিহি ইশারা দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করে এখানে সবাই আছে কিন্তু নিহান সেটা শুনে না। নিহান তার পা দিয়ে মিহিকে জ্বালিয়ে যাচ্ছে মিহি না পারছে কিছৃ বলতে না পারছে সয্য করতে।
মিহি আর নিহানের এইসব কাণ্ডের মধ্যে জামশেদ তালুকদার মিহিকে ডাক দেয় আর বলে –

“- মিহি তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো আমার “।
জামশেদ তালুকদারের কথায় মিহি সেইদিকে দেখে আর নিহানকে একটা পা দিয়ে ধাক্কা দেয়। নিহানকে কিছু বলে না মিহি বলে –
“- হুম আব্বু বলো কি হয়েছে “।
“- দেখো মিহি তুমি যেহেতু ইয়াসিনকে পছন্দ করো আর ইয়াসিন তোমাকে পছন্দ করে তাহলে তাড়াতাড়ি তোমাদের বিয়ের ডেইট ঠিক করা হবে। আর ইয়াসিনে পরিবার চাই তোমাদের বিয়ে তাড়াতাড়ি করতে চাই “।
মিহি নিহানের দিকে তাকিয়ে থাকে আর বলে –

মন ফাগুন পর্ব ৩৪

“- হুম আব্বু আমি রাজি সমস্যা নাই আমার ইয়াসিনকে খুব পছন্দ। ওর ব্যবহার খুব ভালো লাগে আশা করি ওর সাথে আমি খুব ভালো থাকবো “।
নিহান মনে মনে বলে –
“- মিহি এখনো আপনি আমাকে ভালো করে চিনতে পারছেন না হুম। ওই কেরাসিনের কি অবস্থা আমি করব সেটা ও নিজে ও জানে না।

মন ফাগুন পর্ব ৩৬