মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৩৯
নওরিন কবির তিশা
নির্ঝরের রুমের কিং সাইজ বেডটার উপর বসে আছে ফারিন।নরম আলোয় ঢাকা ঘরটা যেন এক অজানা গল্পের শুরু। বিয়ের দোপাট্টা টা কপালের উপর থেকে সরিয়ে একবার রুমটিকে ভালো করে পরখ করল সে। এতক্ষণ নিঝুম ইলমা সহ তার অন্যান্য অনেক ননদিনী তার কাছে বসে থাকায় সে ভালো করে দেখতে পারেনি রুমটিকে।
তবে এটাকে রুম বললে ভুল হবে একটা ছোটখাটো লাইব্রেরী বলা চলে।রুমে ছোট বড় মিলিয়ে আট-দশটা বুক শেলফ দেয়ালের গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে আছে আর তাতে সাজানো বিভিন্ন বই। কোনোটিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সাহিত্য তো কোনোটিতে একাডেমিক বই। এসব দেখে নাক সিঁটকায় ফারিন বই খাতা কেউ এত যত্নে রাখে নাকি? সে তো কলেজ থেকে এসে ব্যাগটা কোথায় ছুড়ে মারে? নিজেও জানে না।
কখনো কখনো তো এমনও হয়েছে পরীক্ষার আগের দিন রাতে সে নিজের বই খুঁজে পাইনি বলে পাশের বাসার সিনিয়র আপু ভাইয়াদের কাছ থেকে বই ধার করে এনে পড়তে হয়েছে। সে মনে মনে নির্ঝরকে তিরস্কার করতে ব্যস্ত তখনই শুনতে পায় কারো পদচারণার শব্দ।
ফারিন মুহূর্তেই বুঝে যায় এটা নির্ঝর। কিন্তু এদিকে তো সে একটা কান্ড ঘটিয়ে বসেছে। ইলমা ভাবি যে দুধের গ্লাসটা দিয়ে গেছিল তার সমস্ত দুধটুকু তো সে ক্ষুধার জ্বালায় নিজেই খেয়ে ফেলেছে।সে একবার গ্লাসের দিকে তাকালো পরক্ষণে সে নিজেই নিজেকে শাসিয়ে বলল,,
‘ভয় পাচ্ছিস কেন ফারিন? তুই কি আবার উনাকে ভয় পাস নাকি? যদি এসে কিছু বলে তাহলে সরাসরি বলে দিবি যে তুই নিজেই খেয়ে ফেলেছিস এত ভয়ের কি আছে’
সে নিজেকে ধাতস্থ করল। তখনই দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করল নির্ঝর।ফারিন দ্রুত নিজের দোপাট্টা টা টেনে ঘোমটা টা প্রসারিত করল। যতই হোক আজকে তার বাসর রাত বলে কথা এতদিন এত রোমান্টিক মুভি দেখার ফল কি হবে যদি সে একটু লজ্জাই না পায়? যতই তার অপছন্দের মানুষের সাথে হোক না কেন একটু তো লজ্জা পাওয়া উচিত! সে নিজেকে আড়াল করতে ব্যস্ত তখনই নির্ঝর বলল,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
—”তুমি বিছানায় কেন?”
সবে ফারিনের মনে প্রজাপতির উড়াউড়ি শুরু হচ্ছিল আর ঠিক তখনই নির্ঝরের এমন একটা কথা যেন প্রজাপতিগুলোর ডানা ছেঁটে দিল। সে বেশ অবাক হল। তারমানে এখন কি তাকে বাংলা সিরিয়ালের নায়িকাদের মতো ফ্লোরে বা সোফায় ঘুমাতে হবে? না না সে একদমই পারবেনা! সে এক ঝটকায় নিজের দোপাট্টাটা সরিয়ে নির্ঝরের চোখে চোখ রেখে বলল,,
—”বিছানায় থাকবে না তো কোথায় থাকবো? দেখুন আপনি যদি ভাবেন আমি ন্যাকা নায়িকাদের মত ফ্লোরে বা সোফায় ঘুমাবো তাহলে সেসব চিন্তা ভাবনা বাদ দেন! আমার দ্বারা ওইসব হবে না।তবে আপনার সাথে খুব অসুবিধা হয় তাহলে আপনি ঘুমাতে পারেন ফ্লোরে আমি পারবো না!”
কথাটা বলেই সে দোপাট্টা টা আলতো হাতে সরিয়ে শুতে যেতে গেলেই নির্ঝর ধমকের সুরে বলে উঠলো,,
—”তোমার সাহস কি করে হলো আমার সাথে এভাবে কথা বলার?”
ফারিন:”আপনি কি এক্সপেক্ট করেছিলেন আপনি আমার সাথে বাজে ব্যবহার করবেন আর আমি চুপচাপ মেনে নেব?”
নির্ঝর:”কি বাজে ব্যবহার করেছি?”
ফারিন:”আমাকে বললেন কেন ফ্লোরে ঘুমাতে? আমার ওইসব ফ্লোরে ঘুমানোর অভ্যাস নেই!”
নির্ঝর:”তোমায় কখন ফ্লোরে ঘুমাতে বললাম ইডিয়েট?”
ফারিন:”দেখুন আমাকে একদম ইডিয়েট বলবেন না!”
নির্ঝর:”ইডিয়েট কে ইডিয়েট ছাড়া আর কি বা বলবো?”
ফারিন:”দেখুন রাগ ওঠাবেন না আমার!”
নির্ঝর:”আমি তোমার রাগ উঠাচ্ছি নাকি তুমি আমাকে অসম্মান করছ? তুমি কি জানো এর পানিশমেন্ট হিসেবে আমি তোমাকে সারারাত কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখব!”
ফারিন মুখ বাঁকিয়ে বলল,,
—”উমমম আইছে উনি আমারে বলবে আর আমি সারারাত কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকবো তাই না?”
নির্ঝর:”দেখো ফারিন তুমি যদি এখন আমার কথা না শোনো না তাহলে কিন্তু পরের দিন পুরো কলেজের সামনে তোমাকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখবো!”
ফারিন:”তারা তার পেছনে রিজন কি দাঁড় করাবেন শুনি? যে কলেজের অসভ্য স্টুডেন্ট মিস ফারিন মোস্তফাকে বিয়ে করলেন প্রফেসর নির্ঝর চৌধুরী! আর অসভ্য মেয়েটি এখন তার কোনো কথা শোনে না এই জন্য তাকে পুরো কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হলো? এটাই তো! হাউ ফানি!”
হেসে উঠলো, ফারিন। তা দেখে নির্ঝর বাঁকা হেসে বলল,,
—”একদমই না! রিজনটা এই যে কলেজ চলাকালীন সময়ে সিটি কলেজের ইয়ং প্রফেসর নির্ঝর চৌধুরীকে ফোন দিয়ে কিছু অপ্রত্যাশিত কথা বলেছিল কলেজের তরুণ শিক্ষার্থী মিস ফারিন মোস্তাফা!”
ফারিন এর চোখ এবার বড় বড় হয়ে গেল। মনে পড়ে গেল কিছুদিন আগের কলেজ ক্যাম্পাসে বসে করা তার দুষ্টুমিটির কথা।
কিছুদিন আগে…..
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় সবাই মিলে ঠিক করল আজকে ট্রুথ ডেয়ার খেলবে। যথারীতি শুরু হলো সিলভার রিংয়ের ঘূর্ণি। কিন্তু ফারিনের কপাল এতই খারাপ যে পরপর তিনবার তার দিকে সিলভার রিংটি পরলো। আর শর্ত অনুযায়ী দুইবারের বেশি কেউ ট্রুথ নিতে পারবে না। কি আর করার অগ্যতাই তাকে ডেয়ার নিতে হলো। তাকে ডেয়ার হিসেবে দেওয়া হল তার সবচেয়ে অপছন্দের লোকটির কাছে ফোন দিতে হবে তার সাথে মিষ্টি সুরে কথা বলতে হবে।
তারা সবাই যে নির্ঝরকে মিন করেছে এটা বুঝতে আর বাকি রইল না ফারিনের। প্রথমে তো সে রাজিই হচ্ছিল না কিন্তু বন্ধু তো বন্ধুই তাদের কথা শোনোনি মানে তুমি ভীতুর ডিম। আর তোমার মান সম্মানের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ছাড়বে তারা। তাই নিজেকে বাঁচাতে শেষমেষ ফারিন কল লাগালো নির্ঝরের ফোনে। প্রথমবার রিসিভ হলো না, তিন চার বার রিং হওয়ার পর ওই পাশ থেকে ভেসে আসলো গুরুগম্ভীর কণ্ঠটি,,
—”হ্যালো কে?”
ফারিন ঢোক গিলে নিজের কণ্ঠস্বর যথেষ্ট নরম করে বলল,,
—”হ্যালো নির্ঝর!”
নির্ঝর হয়তো খুব অবাক হল বিষ্ময়ভরা কণ্ঠে সে বলল,,
—”কে?”
ফারিনের পাশ থেকে ইমন, লিসা, আরা, রায়ান ফিসফিস করে বলল,,
—”লাউড দে,লাউড দে!”
ফারিন ফোনে লাউড স্পিকার অন করে বলল,,
—”আমি তোমার ডার্লিং বেবি!”
এবার রেগে ফোন কেটে দিলো নির্ঝর। মুখ চেপে হেসে উঠলো ফারিনসহ সবাই।
বর্তমান 🌺🌺
এমন দুষ্টুমি ভরা স্মৃতির জগৎ থেকে বের হয়ে আসলো ফারিন। এক ঝলক তাকালো নির্ঝরের দিকে। তার মানে সেদিন কি নির্ঝর ফারিন কে চিনে ফেলেছিল? ওএমজি! এখন কি হবে? এখন যদি নির্ঝর সত্যিই তাকে সারা কলেজের সামনে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে! সেও বা কি বলবে দোষটা তো তারই! মনে মনে নিজের বন্ধু মহল কে হাজারটা গালাগালি দিল ফারিন।
নির্ঝর ফের বলল,,
—”তাহলে কি সিদ্ধান্ত নিলে পুরো কলেজের সামনে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা ভালো হবে নাকি এখন আমার কথা শোনাটা ভালো হবে।?”
ফারিন আমতা আমতা করে বলল,,
—”আ-আ-আপনার কথা শোনাটা!”
নির্ঝর:”তাহলে এক্ষুনি যাও স্টাডি টেবিলে গিয়ে বসো!”
ফারিন:”মানে?”
নির্ঝর:”মানে আবার কি? আর এক মাস বাদেই না তোমার হায়ার ম্যাথসের টেস্ট! আর একটা কথা গান খুলে শুনে রাখো, তুমি যদি টেস্টে আলাউ না হও তাহলে কিন্তু আমি কোনোদিন তোমাকে ফাইনালে বসতে দেবো না!”
ফারিন বিষ্ময়ে হা হয়ে গেল। সিরিয়াসলি বাসর রাতে তাকে হায়ার ম্যাথ করতে হবে! সে কোনো প্রশ্ন করার আগেই নির্ঝর বলল,,
—”কথা কানে যাচ্ছে না? বললাম তো স্টাডি টেবিলে গিয়ে বসো ওইখানে ম্যাথসের খাতা প্লাস বই সব আছে! আমি ফ্রেশ হয়ে এসেই যেন দেখি প্রথম চ্যাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেছে তোমার!”
ফারিনের নিজেকে ভীষণ অসহায় লাগতে শুরু করলো। সে তো ভেবেছিল বিয়ের পর পড়াশোনাই ছেড়ে দেবে আর সেখানে বাসর রাতে তাকে তার সবচেয়ে অপছন্দের সাবজেক্ট হায়ার ম্যাথ করতে হচ্ছে! হায় আল্লাহ!
নির্ঝর আলমারি থেকে একটা ট্রাউজার আর টি শার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। ফারিন আর কোনো উপায়ান্তু না পেয়ে স্টাডি টেবিলে গিয়ে বসে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে লাগল।
কিছুক্ষণ পর নির্ঝর ড্রেস চেঞ্জ করে এসে দেখল ফারিন এখনো বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছে। সে ফারিনকে ধমক দিয়ে বলল,,
—”কি করছো তুমি? ম্যাথ না করে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছো!”
ফারিন ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে বলল,,
—”স-স-সরি স্যার কিন্তু এগুলো পড়ে..!”
নির্ঝর বুঝতে পারল এসব হেবি গর্জিয়াস ড্রেসে বসতে অসুবিধা হচ্ছে ফারিনের। সে বলল,,
—”আচ্ছা যাও ড্রেস চেঞ্জ করে আসো!”
ফারিন:”স্যার কিন্তু আমার তো কোনো ড্রেস এখানে নেই?”
নির্ঝর:”কি?”
ফারিন:”হুম!”
নির্ঝর বুঝতে পারল না কি করবে। এতক্ষণে হয়তো বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে গেছে। উপায়ান্তর না পেয়ে নির্ঝর বলল,,
—”শার্ট পড়বে?”
ফারিন:”কিইই!”
নির্ঝর:”দেখো আমার ভনিতা করার একদমই মুড নেই! যা বলছি সরাসরি,যদি পড়ো তাহলে আলমারি থেকে আমার একটা শার্ট নিয়ে পড়ে আসতে পারো না হলে সারারাত এই ড্রেসেই বসে থাকো!”
ফারিন কি বা করবে। হেবি ড্রেসে সারারাত থাকা তার পক্ষে একদমই অসম্ভব। এমনিতেই নতুন ড্রেসে তার এলার্জি তার উপর আবার এতো গর্জিয়াস। সে নির্ঝরের আলমারি থেকে একটা সাদা শার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে প্রবেশ করল।
কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে আসলো সে। পরনে নির্ঝরের একটা সাদা শার্ট। যা তার হাঁটু থেকেও কিছুটা নিচে নেমে এসেছে। ভাগ্য ভালো যে সে শাড়ির পেটিকোটের নিচে বুদ্ধি করে নিজের একটা লেগিংস পরেছিল না হলে কি এক মহা যন্ত্রণায় পড়তে হতো তাকে। গলায় জড়ানো বিয়ের দোপাট্টাটি। বের হয়েই সে দেখতে পায় স্টাডি টেবিলে একটা চেয়ারে বসে আছে নির্ঝর চোখে সব সময়ের মতন চিকন ফ্রেমের চশমাটা হাতে একটা ইংরেজি ক্লাসিক নোভেল।
ফারিন বিরক্তিতে মুখ কুঁচকায়। তারমানে সত্যি সত্যিই তাকে এখন হায়ার ম্যাথ করতে হবে! তাকে দেখে নির্ঝর বলে,,
—”ওইখানে দাঁড়িয়ে কি করছো? এদিকে আসো আর চুপচাপ ম্যাথ করতে বসো!”
ফারিন কাচুমাচু কন্ঠে বলে,,
—”স্যার আজকে কি ম্যাথটা না করলেই নয়! না মানে আমি আপনার পানিশমেন্ট টা অন্য কোনোদিন নিতাম!”
নির্ঝর কোনো কথা না বলে ফের নজর রাখে বইয়ের পাতায়।ফারিন বুঝতে পারল তাকে কিছু বলে আর কোনো লাভ নেই।তাই সে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে এগিয়ে গিয়ে স্টাডি টেবিলে নির্ঝরের বিপরীত পাশের চেয়ারটিতে বসে হঠাৎই তার মনে হচ্ছে এখানে যদি কোনো ইতিহাসবিদ থাকতো তাহলে নিশ্চিত সে নোট করে রাখত তাদের এই ঐতিহাসিক বাসর রাতের কাহিনী।
কারণ ইতিহাসে এমন বাসর রাত হয়তো আগে কেউ দেখেনি বা শোনেনি যেখানে নববধূর শাড়ির ঝালর নয়,চোখের জল নয়, কিংবা প্রেমময় বকবক নয় বরং বাসর রাতের নীরবতা ভেঙেছে হায়ার ম্যাথের হিসাবনিকাশ! যেখানে কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে প্রথমবার প্রেমের বদলে শেখাচ্ছে গণিতের সূত্র। ফারিন নিশ্চিত এটা ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকতো!
সকালের স্নিগ্ধ রৌদ্র কিরণ জানলার ফাঁকা গলে মুখে এসে লাগতেই ঘুম ভাঙ্গে ফারিনের। আড় মোড়া ভেঙেই সে টের পায় সে মাথা নিচু করে শুয়ে আছে স্টাডি টেবিলের উপর। পরক্ষণেই তার কালকে রাতের কথাগুলো মনে পড়ে কিছুটা বিরক্তিতে সে সামনে তাকিয়ে দেখে চেয়ারে হেলান দিয়ে মুখের উপর বই রেখে আধা শোয়া হয়ে বসে ঘুমিয়ে আছে নির্ঝর।
তাকে দেখে মুখ ভেঙ্গচালো ফারিন। মনে মনে কিছু গালাগালি দিতেও ভুললো না। এরপর সে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘড়ির কাঁটা প্রায় আটটা ছুঁই ছুঁই। সে দ্রুত উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো ফ্রেশ হওয়ার উদ্দেশ্যে।
কিছুক্ষণ পর
ঘড়ির অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলো নির্ঝরের। ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিনের অভ্যাস অনুসরণ করে ওয়াশরুমে পা বাড়ালো সে। তার খেয়ালই হলো না যে এখন আর সে একা নয় এই বাড়িতে এসে গেছে তার মিসেস।
ওয়াশরুমে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই ফ্লোরের উপর পড়ে থাকা পানিতে পা পড়ে নির্ঝরের।ভারসাম্য হারিয়ে সে গিয়ে পড়ে বাথটাবের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফারিনের উপর। অন্যদিকে নির্ঝরের এমন আকস্মাৎ তার ওপর পড়ে যাওয়ায় ফারিনও ভারসাম্য হারায়। দুইজনে গিয়ে পড়ে বাথটাবের পানিতে।
মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৩৯
নির্ঝরের শরীর থেকে ভেসে আসা তীব্র পুরুষালীর গন্ধে ফারিনের শ্বাস আটকে আসে, ষচোখ কোটর থেকে বের হয়ে আসার উপক্রম তার,বাথটাবের পানিতে ভিজে একাকার অবস্থা তার। তার উপর নির্ঝর তার শরীরের উপর! এ যেন এক অন্যরকম অদ্ভুত পরিস্থিতি। একে কি বলে সংজ্ঞায়িত করবে তা ফারিনের জানা নেই।
অন্যদিকে নির্ঝর নিজের এমন কান্ডে কিছুটা লজ্জায় পড়ে যায়। পরক্ষণেই সে রেগে গিয়ে ফারিনকে বলে,,
—”পানি নিয়ে কি সারা ওয়াশরুমে খেলা করেছ?”