মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৫৮

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৫৮
নওরিন কবির তিশা

খানম কুঞ্জে আজ যেন নেমে এসেছে আকাশের নক্ষত্ররাজি।প্রায় উনিশ বছর ধরে নিষ্প্রাণ পড়ে থাকা মহলটিতে আজ বসছে প্রানেরমেলা।আঁধারে ঘিরে থাকা প্রাচীর গুলো সেজে উঠেছে রঙিন আলোকসজ্জায়।
বিশাল বিশাল প্রাচীরে ঘিরে থাকা বাড়িটির মাঝের বৃহৎ আঙ্গিনায় উজ্জ্বল আলোকশোভা এক বিলাসবহুল মেহেদী অনুষ্ঠানের প্রমাণক হিসেবে কাজ করছে। শীতের আদুরে এক সন্ধ্যায় খানম কুঞ্জে আয়োজিত হয়েছে শিশির নাহিয়ানের মেহেদী অনুষ্ঠান।

বিলাসবহুল এক আয়োজন।শিশির আর বাকিদের হাত সাজাতে উপস্থিত প্রায় ১০ জন মেহেদী আর্টিস্ট। রঙিন পর্দায় আবৃত অঙ্গনের মাঝে পুষ্পসজ্জিত বিশাল আসনটিতে বসে আছে শিশির;তার দুই হাত সাজাচ্ছে দুইজন আর্টিস্ট।বাকি সবার মেহেদী দেওয়া শেষ।
তবে শিশিরের ডিজাইনটা আর পাঁচটা ব্রাইডাল মেহেদী ডিজাইন এর মতো একটু বেশিই গর্জিয়াস,এইজন্যই তার ‌বিলম্ব হচ্ছে সামান্য। মেহেদী দেওয়া প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু নাহিয়ানের নির্দেশ মোতাবেক শিশিরের বাঁ হাতের তালুর খানিক অংশ ফাঁকা রাখা হয়েছে। সেখানে নাকি ডিজাইন করার অধিকার শুধুই নাহিয়ানের।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সবেমাত্র শেষ হলো মেহেদী পর্ব। শিশিরের পাশে বসে আছে ফারিন,আনায়া,ইলমা সহ বাড়ির সকল ‌নবকলিকাবৃন্দ। এতোক্ষণ সাউন্ড বক্সে বিভিন্ন বাংলা-হিন্দি ইত্যাদি গান বাজছিল। কিন্তু হঠাৎই তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফারিন, ইলমা আর আনায়ার দিকে ফিরে বলল,,
——“কি হলো আপু?”
ইলমা ফারিনের প্রশ্নের জবাবে কিছু বলতে যাবে…. কিন্তু ঠিক তক্ষুনি একটা গভীর পুরুষালী কন্ঠের আওয়াজে অসমাপ্ত রয়ে যায় তার শব্দচারিতা। সে সহ সকলে বিস্মিত দৃষ্টিতে প্রবেশদ্বারের পর্দাগুলোর দিকে তাকায়।

🎶oh o o o…oh o o o….
Mehendi laga ke rakhna….
Dole saja ke rakhna….
Mehendi laga ke rakhna….
Dole saja ke rakhna….
Lene tujhe o gori…
Ayenge tere sajnaa….
Oh ho….Oh ho…🎶
একের পর এক পর্দাগুলো আলতো হাতে সরিয়ে দিতে দিতে,এমনই একটি গান নিজের গভীর কন্ঠে গাইতে গাইতে পুষ্পাসনের দিকে এগিয়ে আসছে নাহিয়ান।তার পরনে কালো পাথরের কাজ করা কৃষ্ণ কালো পাঞ্জাবি,যার হাতটা কফ ফোল্ড করা।ফলে তার ফর্সা হাতে ভাসমান নীলচে শিরাগুলো।সবার অবাক দৃষ্টি নাহিয়ানের উপর নিবদ্ধ। কিন্তু ঠিক তখনই ঘটে‌ আরেকটি বিষ্ময়কর ঘটনা। নাহিয়ানের‌ গানের শেষ চরণটুকু মিলিয়ে যেতে না যেতেই শিশির গেয়ে ওঠে,,

🎶oh o o o..a a a aaaa…
Sehra saja ke rakhna….
Chehra chupa ke rakhna….
Sehra saja ke rakhna….
Chehra chupa ke rakhna….
Yeh dill ki baat Apne…
Dill mein daba ke rakhna…🎶
প্রথম কয়েক মূহুর্ত সকলে স্তম্ভিত হলেও পরক্ষণেই চারিদিক মুখর হয়ে উঠে বিয়ে বাড়ির চিরচেনা আমেজে,তবে এবার আর আরও বেশি উদ্দাম নিয়ে।গানের তালে তালে শুরু হয় এগুচ্ছ নক্ষত্রের নৃত্য।ফারিন, নিঝুম ডান্স করলেও নিশ্চুপ আনায়া।সে দাঁড়িয়ে শিশির আর নাহিয়ানের কেমিস্ট্রি দেখতে ব্যাস্ত। ঠিক তখনই তার ঢেউখেলানো বাঁধনহারা বিক্ষিপ্ত কৃষ্ণকালো কুন্তল গুচ্ছে কারও আলতো স্পর্শে সে কেঁপে পিছনে ঘুরতেই রিদিত তার চুল থেকে হাত সরিয়ে গেয়ে উঠলো,,,

🎶Ud udke tere zulfein…
Karti hein kya isharee…
Dill thaamke khade hein…
Aashiq sabhi kanware…🎶
গানের কলিটা গাইতে গাইতে আনায়ার হাতটা ধরে একটানে তাকে শিশিরের মঞ্চের সামনে নিয়ে আসলো রিদিত।তাদের দেখে ফারিন আর নিঝুম সরে গেল কিছুটা;শুরু হলো রিদিতের ডান্স।রিদিতের অংশটুকু শেষ হতেই আনায়া গেয়ে উঠলো,,
🎶 Chhup jaayein saari kudiyaan, ghar mein sharamke maare…
Gaaon mein aa gaye hain, paagal shehar ke saare…🎶
শুরু হলো তাদের ডান্স। রিদিত ফের গাইলো,,
🎶Nazarein jhuka ke rakhna…..
Daaman bachha ke rakhna….
Nazarein jhuka ke rakhna…..
Daaman bachha ke rakhna….
Lene tujhe o gori…
Ayenge tere sajnaa….🎶

এমন অনবদ্য এক প্রেম পূর্ণ মূহুর্তে বিক্ষিপ্ত ফারিনের একজোড়া কৃষ্ণকালো নয়ন।যা শুধুই খুঁজে চলেছে কাঙ্ক্ষিত এক শ্যামপুরুষকে। কিন্তু কোথায় সে?ফারিনের দৃষ্টি সীমানার মধ্যে কোথাও নেই সে। হঠাৎই তার পিছন থেকে কেউ তার বাঁ হাতটা শক্ত করে ধরে নিজের দিকে টেনে নিলো। ভারসাম্য হারিয়ে ফারিন ব্যাক্তিটির বুকে গিয়ে পড়ল।ফারিনের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা নির্ঝর ভিন্ন অন্য কেউ নয়।সে মুখ তুলে নির্ঝরের দিকে তাকাতেই নির্ঝর গেয়ে উঠলো,,

🎶Mein ek jawaan larka….
Tu ek haseen larki…
Yeh dill machal gaya toh….
Mera khusoor kya hein…?🎶
নির্ঝরের গানে লাজুক ভঙ্গিতে খানিক হাসলো। অতঃপর সে নিজেও ‌গেয়ে উঠলো,,
🎶Rakhna tha dil pe kaabu…
Yeh husn toh hei jaadu….
Jaadu hi chal gaya toh…
Mera khusoor kya hein…?🎶
সবাই যখন নিজের প্রিয়তমাকে নিয়ে ডান্স করতে ব্যস্ত তখনই নাহিয়ান;শিশিরের সামনে থাকা পর্দা টা একটান দিয়ে সরিয়ে,গেয়ে উঠলো,,

🎶 Rasta hamara tak na…
Darwaza Khula rakhna….
Rasta hamara tak na…
Darwaza Khula rakhna….
Lene tujhe o gori…
Ayenge tere sajnaa….🎶
শিশিরের হাতের মেহেদি শুকিয়ে গেছে ততক্ষণে।সে আসন থেকে উঠে না এখানে সামনাসামনি দাঁড়িয়ে গেয়ে উঠলো,,
🎶 Kuchh aur ab na kehna…
Kuchh aur ab na karna…
Kuchh aur ab na kehna…
Kuchh aur ab na karna…
Yeh dill ki baat Apne…
Dill mein daba ke rakhna…🎶
এবার তাদের দুজনকে মাঝখানে রেখে চারিপাশে গোল হয়ে ডান্স করতে লাগলো সবগুলো কপতো-কপতি। অনবদ্য এক প্রেম মাধুর্যময় পরিবেশে কেটে গেল মুহূর্তগুলো।

দুর অন্তরীক্ষে বিদ্যমান জোৎস্নাপতিটি পূর্ণোদ্যমে আলো ছড়াচ্ছে ধরণী জুড়ে।খানম কুঞ্জের বিশাল ছাদে দাঁড়িয়ে আছে শিশির। দৃষ্টি আকাশের নক্ষত্ররাজীর পানে। তবে আকাশের তারা গোনা তার আসল উদ্দেশ্য নয়। সে এখানে এসেছে নাহিয়ান এর কথা অনুযায়ী।
মেহেদী অনুষ্ঠানের মাঝেই এক সময় নাহিয়ান শিশিরকে বলেছিল ছাদে আসার কথা। কিন্তু কেন সেটা খোলসা করে বলেনি সে। কি আর করার,শিশির তার নির্দেশ অনুযায়ী এই রাতে এসে অপেক্ষা করছে ছাদে। হঠাৎই তার পিছন থেকে ভেসে আসলো এক গভীর পুরুষালী কন্ঠস্বর,,
——“বউপাখি?”
ভরাট সে কন্ঠে পিছনে ঘুরতেই শিশির দেখতে পায় সেখানে দাঁড়িয়ে আছে তার বেহায়া পুরুষ।তাকে দেখে শিশির দ্রুত বললো,,

——“কি বলবেন?”
নাহিয়ান এগিয়ে এসে শিশিরের মেয়েদের রঙা হাত দুটো নিজের হাতের নিয়ে; নিজের মুখটা সামান্য নিচু করে উষ্ণ এক চুম্বন এঁকে দিল তাতে। শিশির লজ্জায় সামান্য কেঁপে উঠল। তা দেখে এই সামান্য মুচকি হাসলো নাহিয়ান। অতঃপর একটা মেহেদী কোণ নিজের হাতে এনে শিশিরের বাঁ হাতের তালুর ফাঁকা স্থানে বড় বড় অক্ষরে নিজের নাম লিখে দিলো। নাহিয়ানের খাপছাড়া ডিজাইন দেখে হালকা হাসলো শিশির। তা দেখে নাহিয়ান বলল,,
——“হাসছো কেন?”

শিশির:“এত সুন্দর ডিজাইনের জন্য তো আপনাকে নোবেল দেওয়া প্রয়োজন!”
নাহিয়ান:“একদম মজা করবে না, জানো আমি কতদিন প্র্যাকটিস শেষে তবে মেহেদি টা ধরতে শিখেছি। তাও শুধুমাত্র তোমার জন্য।”
শিশির:“ও লে লে আমার আপনিটা রে! আপনাকে কে বলেছিল মেহেদী ডিজাইন শিখতে হ্যাঁ? আপু দুইটাই তো আমার হাতে সুন্দর করে দিয়ে দিচ্ছিলো ডিজাইনটা!”
নাহিয়ান:“বাজে বকা বন্ধ হলে এবার চোখটা বন্ধ করো তো!”
শিশির:“আবার চোখ বন্ধ করতে যাব কেন?”
নাহিয়ান:“কারণ আমি বলেছি তাই।”
কিসের একটা জিনিস লক্ষ্য করল নাহিয়ান প্রায়শই এই একই কথাটা বলে যে “কারণ আমি বলেছি তাই”। শিশির আজকে না পেরে প্রশ্নটা করেই বসলো,,

শিশির:“হ্যাঁ বুঝলাম আপনি বলেছেন। কিন্তু আপনার কথায় কেন আমাকে রাখতে হবে হ্যাঁ?”
নাহিয়ান:“কারণ তুমি আমার বউ, সেই সাথে আমার ভবিষ্যৎ প্রিন্সেস আমার নোশির মাম্মা।”
ব্যাস! শিশির আর কি বলবে? বউ বলার পরে কিছু বলতে পারলেও,নাহিয়ান খুব ভালো করেই জানেন নোশির মাম্মা সম্মোধনটা শোনা মাত্রই শিশির তীব্র লজ্জায় পতিত হয়। গলা দিয়ে আওয়াজ সরে না তার। তাইতো এই বেহায়া পুরুষটা সে সম্বোধনটাই বারবার করে শিশিরকে। লাজুক শিশির আর কোনো কথা না বলে দ্রুত চোখ বন্ধ করলো। নাহিয়ান বাঁকা হেসে তাকে বলল,,

——“আয় হায় বউ পাখি,, এখনই যদি এত লজ্জা পাও তাহলে আমাদের নোশি কিভাবে আসবে? হ্যাঁ।”
শিশির:“ব্যাডা আপনার বাজে বকা বন্ধ হলে, কি জন্য ডেকেছেন সেটা বলুন!”
নাহিয়ান:“তো এই ব্যাডার বউ আপনার যদি লাজুক লতা হওয়া সম্পন্ন হয় তাহলে দয়া করে হাতটা বাড়ান।”
শিশির আর কোন কথা না বলে নিজের ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলো নাহিয়ানের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে নাহিয়ান নিজের কাছে থাকা জিনিসটা শিশিরের হাতে দিয়ে বলল,,
——“এবার আপনি চোখটা খুলতেই পারেন!”
শিশির আস্তে আস্তে চোখ খুলে হাতের দিকে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ তার। তার হাতে iPhone 16 Pro Max এর retail box। শিশির অবাক দৃষ্টিতে নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,,
——“এটা আবার কিসের জন্য?”

নাহিয়ান:“তুমিই তো বলেছিলে তোমার ফোনটা হারিয়ে গিয়েছে। আর এটা আমি অনেক আগেই কিনে রেখেছিলাম শুধু তোমাকে দেওয়ার স্কোপ পাই নি।”
শিশির শুধু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নাহিয়ানের দিকে। কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না সে,এই লোকটা তাকে যতটা ভালবাসে তার থেকেও দ্বিগুণ কেয়ার করে, শিশিরের এমন কোনো খুঁটিনাটি ছোট্ট ব্যাপারটাও নেই যেটা নাহিয়ান খেয়াল করে না। এরকম একজনকেই তো সারা জীবন চেয়েছিল শিশির। সে কৃতজ্ঞ সৃষ্টিকর্তার কাছে যিনি শিশির এমন দুনিয়াবী বেহেস্তের খোঁজ দিয়েছেন!

সিড়ি বেয়ে হন্তদন্ত হয়ে নামছে ইয়ালিনা। মেজাজ সপ্তম আকাশে তার। রাগে ঘৃণায় শরীরটা রি রি করছে তার। এমনিতেই এখানে আসার কোন ইচ্ছা ছিল না তার তবুও বাবার কথায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই এখানে এসেছে সে। তার উপর এসে থেকে শুরু হয়েছে শিশিরকে নিয়ে আদিখ্যেতা। মেহেদী অনুষ্ঠানের সময় ইয়ালিনা কানে হেডফোন লাগিয়ে উচ্চ শব্দের গান শুনেছিল যাতে বাইরের কোনো আওয়াজ তার কানে না আসে।
সারাদিন নিজের রুম থেকে বের হওয়ার সময় পায়নি ইয়ালিনা।সার্বক্ষণিক নাহিয়ান আর শিশিরকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছিল সেখানে। আর দিনশেষে এখন যখন সবাই নিজের রুমে ঘুমাতে ব্যস্ত তখন ইয়ালিনা ভেবেছিল সারাদিনের ক্লান্তিকে দূর করাতে একবার ছাদে যাওয়া অতীব জরুরি তার জন্য।

চিন্তা অনুসারে যখনই ছাদে এসে দরজাটায় হাত রাখল তখনই সে শুনতে পেল বাইরে থেকে ভেসে শিশিরের গা জ্বালানো সেই হাসি, সাথে নাহিয়ানের খুনসুটিপূর্ণ কথাগুলো। তৎক্ষণিক বিগড়ে থাকা মেজাজটা আরো বেশি বিগড়ে গেল তার।এগুলো কি তার সাথে হওয়ার কথা ছিল না? বাড়ির বড় মেয়ে হিসাবে নাহিয়ানের স্ত্রী হওয়ার অধিকার তো সবার আগে সে রাখে। এসবই ভাবছিল আর ধুপধাপ পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নামছিল সে।
সিঁড়ি থেকে নেমেই ইয়ালিনা যখন নিজের রুমের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল তখনই বিশাল দেহের অধিকারী এক অজ্ঞাত পুরুষের সাথে ধাক্কা লাগে তার। ইয়ালিনার মেজাজটা এমনিতেই সপ্তম আকাশে ছিল তার উপর এই লোকের সাথে এমন ধাক্কায়। তার ইচ্ছা করলো রাতকানার মত হাঁটার জন্য লোকটিকে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় মারতে। কিন্তু নিজের রাগটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলো ইয়ালিনা।
হাতের মুষ্টি শক্ত করল, যার দরুন লম্বা নখগুলো হাতের নরম তালুতে ডেবে গিয়ে রক্ত ফুটে উঠলো। দাঁতে দাঁত চেপে সে বলল,,

——“আপনি কি অন্ধ? চোখে দেখতে পারেন না? উজবুকের মত এত রাতে এদিকে কি করছিলেন? ননসেন্স কোথাকার!”
ইয়ালিনা কতগুলো এতটাই দ্রুত বললো যে সামনে উপস্থিত ব্যক্তিটি বুঝতে পারল না কোনটার জবাব দেবে। আর কথাগুলো বলেই ইয়ালিনা লোকটাকে পাশ কাটিয়ে তড়িৎ বেগে চলে গেল। ইয়ালিনার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হলো সামনের ব্যক্তিটি অর্থাৎ শেজাহান। সে তো এখানে এসেছে নাহিয়ানের আমন্ত্রণে।এসেই সবার সাথে পরিচিত হয়েছে সে। কিন্তু এই মেয়েটাকে তো কখনো সে দেখেনি।

আর সবচেয়ে বড় কোথায় মেয়েটার আচরণ এতটা রুড কেন? বাড়ি অন্যান্য সদস্যরা তো এরকম নয়! এসব ভাবতে ভাবতেই শেজাহান লক্ষ্য করল তার শার্টের বোতামে আটকে আছে কিছু। সে হাত দিয়ে অনুমান নির্ভর চেষ্টা চালালো কিন্তু বুঝতে পারল না জিনিসটা কি। সে মোবাইলের ফ্লাশ লাইট টা অন করে বুকের কাছে মারতেই দেখতে পেল সেখানে চেইন টাইপ কিছু একটা বেঁধে আছে।

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৫৭

শেজাহান দ্রুত সেটাকে নিজের বোতাম থেকে ছাড়িয়ে হাতের পাতা এনে দেখলো আসলেও সেটা একটা চেইন। দেখে তো মনে হচ্ছে এটা কোন লেডিস চেইন, স্বর্ণের? হ্যাঁ স্বর্ণেরই তো!কিন্তু এটা তার কাছে কি করে আসলো। ওয়েট আ মিনিট? এটা ওই রাগী মেয়েটার নয় তো? শেজাহান পিছনে ঘুরে দেখলেও সেখানে কোন অস্তিত্ব নেই মেয়েটির। কি আর করার? শেজাহান চেইনটি নিজের হাতের মাঝে রেখে ঝটপট রুমের দিকে পা বাড়ালো।

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৫৮ (২)