মায়াকুমারী পর্ব ৫৪
মেহেরিন আনজারা
রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে যেন হঠাৎ করেই এক অস্থিরতার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ল। রুমে ঢুকে বুশরাকে ডেকে তুলল নিশু।
“বুশরা,মেজ ভাইয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একটু যা তো!”
নিমেষেই ঘুম উধাও হয়ে গেল বুশরার চোখ থেকে। আতঙ্কে ভর করে বুক ধড়ফড় করতে লাগল। এক অদ্ভুত শঙ্কা যেন গলায় দলা পাকিয়ে দাঁড়াল। পা দুটি ভারী হলেও দ্রুত এগিয়ে গেল,তারপর এক মুহূর্ত ইতস্তত করে ধূসরের রুমে ঢুকল। তখনও মাথায় পানি ঢালছে দ্যুতি।
“কী হয়েছে উনার?”
“জ্বর এসেছে।”
বুশরার বুক কেঁপে উঠল।
“আমার কাছে দে,আমি করছি।”
উঠে দাঁড়াল দ্যুতি। দ্রুত ধূসরের পাশে বসল বুশরা। মগ দিয়ে মাথায় পানি ঢালতে লাগল। ধূসর চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিচ্ছে গভীরভাবে। ঘরের ভেতর শুধু পানির ফোঁটা পড়ার শব্দ,আর ঘড়ির টিকটিকানি। বাইরের বাতাস জানালার কাঁচে এসে ধাক্কা দিচ্ছে বারবার। দ্যুতির ঠোঁটের কোণায় হঠাৎ এক দীর্ঘ হাই ফুটল।
“তুই ঘুমাতে যা।”
“আর ঘুমাব না।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
কিচেনের নিস্তব্ধতায় দাঁড়িয়ে স্যুপ নেড়ে চলেছিল নিশু। চুলার আলোয় তার মুখটা যেন আরও শীর্ণ দেখাচ্ছিল। বুকের ভেতর হাহাকার জমে উঠেছিল,হঠাৎই বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরোল। বর্ষার ভরা বিলের মতো জলে টইটম্বুর হয়ে গেল চোখজোড়া। নিশু জানে কাজটা ঠিক করেনি সে। শুধু তাই নয় কারো অনুমতি ছাড়া ডায়েরি ধরা,ছিঁড়ে ফেলা এবং কি কারো অনুভূতিকেও অসম্মান করা চরম অন্যায়। গর্হিত কাজ। কিন্তু কী করার ছিল? বাধ্য হয়েই করেছে। ধূসর এখন বিয়ে করেছে। বুশরা তার বউ। বউয়ের হাতে যদি পড়ে যায় সেই ডায়েরি,যেখানে পাতার পর পাতাজুড়ে ধূসরের অন্য কারও প্রতি ভালোবাসার কথা লেখা তাহলে কি ভীষণ আঘাত পাবে বুশরা! মেয়েরা অনেক কিছু ভাগ করতে পারে কিন্তু স্বামীর হৃদয় অন্য কারও নামে লেখা- এটা কোনোদিনই সইতে পারে না। নিশু চায় বুশরার হাসিটা অটুট থাকুক। সে জানে,বুশরা ধূসরকে কতটা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে। এই ভালোবাসা যেন ভেঙে না যায়,সেই জন্যই নিশু ডায়েরির বিষয়টি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে সমাপ্ত করে দিয়েছে। চোখ বুজল নিশু। ভিতরে ভিতরে কেঁপে উঠল। মনে পড়ল প্রতিটি পাতার অক্ষর। এই স্বীকারোক্তিগুলো যদি বুশরার চোখে পড়তো,হয়তো মেয়েটা মরে যেত দুঃখে। নিশুর বুক ভারী হয়ে এলো। কান্না চেপে রাখতে না পেরে ফুঁপিয়ে উঠল। কিচেনের ভেতর শুধু স্যুপের হাঁড়ির ফোটাফুটির শব্দ। সেই ফোটায় মিশে গেল নিশুর গোপন কান্নার সুর।
“নিশু!”
চমকে উঠে কেঁপে উঠল। দ্রুত চোখের জল মুছে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল।
“জ্বী,ফুপি।”
“এত ভোরে কী করিস?”
“স্যুপ বানাচ্ছি,ফুপি।”
“আমাকে ডাকতি। অসুস্থ তুই।”
পিছু ফিরল নিশু।
“ফুপি,মেজ ভাইয়ার জ্বর এসেছে।”
“কখন?”
“রাতে।”
আর কিছু বললেন না দ্রুত ধূসরের রুমের দিকে পা বাড়ালেন। ভেতরে ঢুকতে নিতেই চোখ পড়ল বুশরার উপর। মুহূর্তেই থমকে দাঁড়ালেন। বুশরাও অপ্রস্তুত হয়ে গেল। দিলরুবা খাতুন আর ঢুকলেন না ফিরে গেলেন। নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইল বুশরা।
“উনি এভাবে চলে গেলেন কেন?”
নীরব রইল দ্যুতি। অস্বস্তিতে মুখ লাল হয়ে গেল বুশরার। পুত্রবধূ হওয়ায় তাকে কি পছন্দ করছেন না তিনি? স্যুপের বাটি হাতে নিয়ে রুমে ঢুকল নিশু। বুশরার মলিন মুখ এবং অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে থমকাল।
“কী হয়েছে,বুশরা?”
“কিছু না।”
“চিন্তা করিস না নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে।”
“উনি এভাবে চলে গেলেন কেন?”
“কে?”
শ্বাশুড়ি বলতে লজ্জা লাগছিল।
“ইয়ে মানে.. তোর ফুপি।”
“এসেছিল?”
“হুম।”
“ভেতরে ঢুকেনি?”
“না,আমাকে দেখে চলে গেলেন। মনে হলো আমাকে আশা করেননি কিংবা পছন্দ করছেন না।”
মলিন হাসল নিশু।
“ধুর! ওইসব কিছুই না,বুশরা। আমার ফুপি এমন না।”
টেবিলের উপর বাটিটা রাখল।
“তুই উনার সঙ্গে না মিশলে,কখনো বুঝতেই পারবি না উনি আসলে কেমন মানুষ। না জেনে,দূর থেকে কারো প্রতি ভুলভাল ধারণা করা অন্যায়। উনার ভিতরে যতটা মায়া-মমতা এবং ভালোবাসা আছে,সেটা তো চোখে দেখা যায় না শুধু কাছে গেলে টের পাওয়া যায়।”
চুপ করে তাকিয়ে রইল বুশরা। ওর চোখে প্রশ্ন,কষ্ট আর অভিমান সব একসাথে ভাসছিল।
“শোন,একটা কথা বলি- আমাদের বাঙালি মায়েরা চান,ছেলে সংসার শুরু করার আগে মায়ের কাছে গিয়ে দোয়া নিক। শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয় এটা। বুকের ভিতর মায়েরও একটা আশা থাকে,পুত্রের জীবনের প্রতিটি প্রথম মুহূর্তে সে যেন পাশে থাকে। তার আশীর্বাদ ছাড়া সংসারটা অপূর্ণ মনে হয়। দেখ,মা সবসময় মুখে কিছু বলে না। কিন্তু উনার হৃদয় প্রতিটি পদক্ষেপ,প্রতিটি ক্ষুদ্র পরিবর্তনও দেখে,বুঝে। হয়তো ভেবেছেন,আমরা উনাকে বাদ দিয়ে সব শুরু করে দিয়েছি। তখন কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। উনি রাগ করেননি,বুশরা। উনি শুধু অপেক্ষা করছেন সংসারের শুরুটা যেন সম্মান নিয়ে হয়,আশীর্বাদ নিয়ে হয়। আর এটা শুধু প্রথা নয় এটা মা-ছেলের অদৃশ্য বন্ধনের প্রতি সম্মান। তুই যদি মন দিয়ে ভাবিস,বুঝবি মা চাইবেন,ছেলে নতুন জীবন শুরু করলেও যেন আগের সব সম্পর্ক হারিয়ে না ফেলে। সংসারের শুরুটা যেন সবাই মেনে নেয়,কারও মনে অভিমান না থাকে। হয়তো তাই উনি একদম চুপ হয়ে গিয়েছেন কিন্তু ভিতরে ভিতরে অপেক্ষা করছেন আমরা কি উনাকে সেই সম্মান জানাতে পারছি কিনা।”
বুশরার ঠোঁট কেঁপে উঠল। মনে হচ্ছিল কিছু বলতে চাইছে কিন্তু শব্দ খুঁজে পাচ্ছে না।
“সত্যিই বলছি,আমার ফুপি কখনো কারো সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন না। উনার অভিমানও ভালোবাসার আরেক রূপ। হয়তো আমাদের বুঝবার বাকি আছে। তাই আমাদের দায়িত্ব শুধু উনাকে বোঝানো নয়,নিজের মনকেও ধৈর্য দিয়ে সাজানো। তখনই সব স্বাভাবিক হবে।”
কথাগুলো বলতে বলতে নিশুর কণ্ঠ গাঢ় হয়ে উঠল,ভিতরে জমে থাকা কষ্ট ভেসে এলো।
“আর দেখ,ওর সঙ্গে আমার সব মিটে গিয়েছে,তবু কেন আমি ওর কাছে যাইনি কারণ আমি চাই পরিবেশটা শান্ত হোক,পরিস্থিতি ঠিক হোক। সবাই সুস্থ হোক। তোদেরকেও যেন পুরো পরিবার মিলেমিশে গ্রহণ করে। তারপরেই ধুমধাম করে,এলাহি আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা দাম্পত্য জীবন শুরু করব,ইনশাআল্লাহ। জানিস- বিয়ে,বাসর,সংসার,হানিমুন এগুলো নিয়ে আমার কত স্বপ্ন,কত আশা-আকাঙ্ক্ষা! আমি চাই ওগুলো সুন্দরভাবে পূর্ণ হোক। তাড়াহুড়ো করে,অর্ধেক কষ্ট বুকে নিয়ে শুরু করতে চাই না।”
বুশরা দীর্ঘক্ষণ চুপ করে রইল। নিশুর কণ্ঠে যে অদ্ভুত দৃঢ়তা,যে ব্যথা-ভরা ভালোবাসা,তা তার ভিতরের অশান্তি ধীরে ধীরে প্রশমিত করল। বুকের ভিতর জমে থাকা দুঃখ যেন একটু হালকা হলো।
“নিশু,তুই যেভাবে বুঝাস তাতে আমার মন শান্ত হয়। কিন্তু আমার ভয় হয় যদি এই অভিমান,এই নীরবতা কখনও ভাঙে না?”
নিশু দৃঢ় চোখে তাকাল বুশরার দিকে।
“ভাঙবেই,বুশরা। আমরা যদি ভালোবাসা দিয়ে কাছে যাই,ধৈর্য নিয়ে থাকি তাহলে কোনো নীরবতাই স্থায়ী হয় না। বিশ্বাস রাখিস,সময়ই সবকিছু মুছে দিবে।”
নিশু কথা থামাল। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে যেন নিজের মনে ফিরে গেল।
“জানিস,বুশরা.. গতকাল রাতে আমি দেখেছি,ফুপি একা বসে নামাজ পড়ছিলেন। তসবি হাতে,কোরআন খোলা সামনে। পড়তে পড়তে বারবার কেঁদে উঠছিলেন। নিজের কপাল হাত দিয়ে চেপে ধরেছিলেন,আর ফিসফিস করে বলছিলেন,‘আল্লাহ,আমার ছেলেমেয়েদের জীবনটা সহজ করে দাও।’ ভাবতে পারিস,উনি আমাদের জন্যই এত কষ্ট করছেন। অথচ আমরা দূরে বসে ভেবেছি উনি রাগ করছেন! আসলে এটা অভিমান নয়,এটা মায়ের মমতা যেটা দোয়ার ভিতর দিয়েই প্রকাশ পাচ্ছে।”
নিশুর গলায় থরথর কাঁপন ভেসে উঠল।
“তুই জানিস তো,মা যখন দোয়া করে,তখন ফেরেশতারা ‘আমিন’ বলে সাড়া দেয়। আমি জানি,ফুপি আমার জন্য,আমাদের সবার জন্য দোয়া করেছেন। তাই আমি ভয় পাই না,বুশরা। আমি শুধু চাই,আমরা নিজেরা গিয়ে তাঁর হাতে হাত রাখি,বলি- ‘আমাদের জন্য দোয়া করুন।’ তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।”
বুশরা গভীর শ্বাস নিলো। চোখ ভিজে উঠল।
“তুই যদি উনার মনের ভিতরটা দেখতে পেতিস,বুঝতিস উনি আমাদের দূরে ঠেলে দিতে চান না। বরং চান,আমরা তাঁর কাছে যাই,তাঁর দোয়া নেই,তাঁর চোখে শান্তি ফিরিয়ে দিই। এটাই তো মুসলিম সংসারের সৌন্দর্য- প্রতিটি নতুন শুরু হয় আল্লাহর নাম নিয়ে,বাবা-মায়ের দোয়া নিয়ে। তাই আমি চাই,আমাদের বিয়ে হোক কেবল সামাজিক আয়োজন নয়,হোক ইবাদতের মতো পবিত্র। বাসর হোক দোয়া আর ভালোবাসায় ভরা এবং অজস্র সুগন্ধি ফুলে ফুলে। আমি চাই,যখন ভাইয়া তোকে নিয়ে ঘরে ঢুকবে তখন যেন ফুপি দরজায় দাঁড়িয়ে হাত তুলে বলবেন,‘আল্লাহ,এ সংসারে বরকত দাও।’ তখনই আমার স্বপ্ন পূর্ণ হবে,বুশরা।”
বুশরা তাকিয়ে রইল নিশুর দিকে। বুকের ভিতর জমে থাকা ভয়গুলো যেন গলে গেল। মনে হলো হ্যাঁ,অভিমান ভাঙবেই। মায়ের দোয়া আর ধৈর্যের শক্তি সবকিছু বদলে দিবে। ঝাপসা চোখে নিশুর দিকে তাকায় ধূসর। এতক্ষণ নীরবে সে-ও শুনল সবকথা। ভীষণ মুগ্ধ হলো নিশুর প্রতি। নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে রইল দ্যুতিও। কী সুন্দর করে নিশু কথাগুলো বুঝিয়ে বলল বুশরাকে। সে কি পারতো এভাবে বুঝিয়ে বলতে?এতক্ষণে ধূসরের দিকে তাকাল নিশু। ধূসর বিছানায় নিস্ক্রিয়,হাত-পা ছেঁড়ে দিয়ে রয়েছে। যেন পুরো জীবনই তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ভয় পেল নিশু। মনে হলো,এই মুহূর্তে ধূসর ভিতর থেকে ভেঙে পড়েছে।
“আর পানি দিতে হবে না। মাথা মুছে,স্যুপটুকু খাইয়ে দে।”
সায় দিয়ে বুশরা ধূসরের মাথা মুছে দিলো। এরপর সে ও দ্যুতি ধূসরকে বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বসাল। চোখে শূন্যতার ছাপ,মুখে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। নিশুর হৃদয় টলমল করছে। রুমের বাতাস যেন হঠাৎ ভারী হয়ে উঠল,ঘন অদৃশ্য চাপ অনুভূত হচ্ছে। নিশু স্যুপের বাটি এগিয়ে দিলো।
“খাইয়ে দে।”
এক চামচ স্যুপ তুলে ধরল বুশরা।
“নিন।”
ধূসর নিলো না শুধু তাকাল। চোখে শূন্যতার ছাপ। নিশু আরও কাছে এগিয়ে বলল,”ভাইয়া,খাও।”
চোখ বুজে ধীরে ধীরে শ্বাস ফেলছে ধূসর।
“এত অসুস্থ কেন হয়ে পড়লে,বলো তো?”
কিছুই বলল না।
“খাও,ঔষধ খেতে হবে।”
ধূসর নিলো না।
“আরে বাবা,একটু তো খাও!”
বুশরার হাত ধরে চামচ ঠেলে দিলো। অবশেষে ধূসর মুখে স্যুপ নিলো।
“দ্রুত খাও।”
“নিশুর বাচ্চা,তোর ভিতর কোনো দয়ামায়া নেই।”
দূর্বল গলায় বলল ধূসর। ভ্রু কুঁচকায় নিশু।
“কী করলাম?”
“একটা জা’নোয়ার তুই!”
“কী করেছি?”
“পশুর মতো আচরণ করছিস।”
“একদম গরম স্যুপ ঢেলে দিবো মাথায়,চুপচাপ গিলো।”
“আর খাব না!”
হাত ঠেলে দিলো ধূসর।
“আরেকটু!”
আরও কয়েক চামচ মুখে ঠেলে দিলো। মুখ সরিয়ে নিলো ধূসর।
“কী হলো?”
“খাব না।”
“বাপ্পারাজের মতো চ্যাকা তো ঠিকই খাও।”
“চুপ কর।”
“চ্যাকা খাওয়া বাপ্পারাজ।”
নিশু ঔষধ হাতে এগিয়ে এলো।
“নাও,ঔষধ খাও।”
“ঔষধে কাজ হবে না।”
“কেন?”
বিড়বিড় করে বলল,”মনের অসুখে ঔষধে কাজ হয় না।”
“কী বললে?”
“কিছু না।”
ঠেসে মুখে ঔষধ ঢুকিয়ে দিতেই ধূসর কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
“নাও,পানি দিয়ে গিলো।”
এক ঢোক পানি গিলতেই হঠাৎ গড়গড় করে বমি করে দিলো নিশুর গায়ে যার জন্য প্রস্তুত ছিল না সে।
“কী করলে এটা!”
“নিশুর বাচ্চা,কী খাওয়ালি!”
“এত বড় দামরা ছেলে ঔষধ খেতে পারে না,কয়দিন পর দুই-তিন বাচ্চার বাপ হয়ে যাবে। এখন আমার শরীরে বমি করে দিয়েছে,খেচ্চর!”
হঠাৎ শ্বাস আঁটকে আবারও বমি করল। ঘাবড়ে গেল ওরা।
মায়াকুমারী পর্ব ৫৩
“আমার বুক জ্বলছে!”
“কেন?”
“কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে!”
ঘাবড়ে গেল সবাই। হঠাৎ ধূসরের দম বন্ধ হয়ে গেল। বুক আঁটসাঁট,ফুসফুস ফাঁপা,শ্বাস নিতে পারছে না। চোখ বড় হয়ে যায়,মুহূর্তেই ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে গেল। নিশু ভয়ে ছটফট করতে লাগল।
“ভাইয়া! কী হয়েছে? শ্বাস নিচ্ছ তো?”
ধূসর কাঁপছে,চোখে অদৃশ্য আতঙ্ক। মুখ লাল হয়ে গিয়েছে।
“দ্যুতি! তোর ভাইয়াকে ডাক!”
চিৎকার করল নিশু।