মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২১
ইশরাত জাহান
অন্ধকার ঘরে একটি চেয়ারে হাত পা বাধা অবস্থায় নাড়াচাড়া করছে একজন যুবক।যুবকটির ছোটাছুটির জন্য ফাঁকা ঘরটি থেকে বিকট শব্দ তৈরি হয়।চেয়ারের সাথে ফ্লোরের ধাক্কা লাগলে ফাঁকা ঘরে এমন ভৌতিক শব্ধ সৃষ্টি করে।যুবকটির হাত পা মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা।মুখে বড় রুমাল দেওয়া।চোখ মেলে তাকানো কিন্তু দেখতে পাচ্ছে না কিছুই।যুবকটি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য অনেক ছটফট করছে। ছটফটানির জন্য শব্দের বেগ বৃদ্ধি পেতে থাকে।ঠিক তখনই যুবকটির কানে মেয়েলি কণ্ঠ ভেসে আসে,”মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচার খুব ইচ্ছা হচ্ছে তাই না?”
যুবকটি তাকিয়ে থাকে কিন্তু কিছু দেখছে না।অনুভব করছে তার সামনে একজন মানবদেহ।আবারও তার কানে ভেসে আসে,”আমাকে দেখার চেষ্টা করে লাভ নেই।আমাকে দেখতে পাবি।তোর লাভ হবে সবকিছু স্বীকার করা।”
বলেই রুমের কোনায় থাকা একটি সুইচ অন করল।যুবকটি তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে।অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাগে টলমল চোখের নারীটির দিকে।মায়া একটি ব্ল্যাক জ্যাকেট ও জিন্স পরে আছে।সাথে হাতে আছে গ্লাভস।যুবকটি তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।কিছু বলার উপায় নেই কারণ তার মুখটাও বাধা।মায়া যুবকটির কাছে এসে একটু ঝুঁকে বলে,”কিছু বলতে চাস?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
যুবকটি মাথা নাড়ায় যার অর্থ হ্যা।মায়া লাল চোখের দৃষ্টি আরো ভয়ংকর করে বলে,”তোকে কিছু বলতে দেওয়া হবে।কিন্তু তার আগে আমার প্রশ্নের উত্তরটি দে। যেটার জন্য আমি চাতক পাখির মতো ঘুরছি।বলে দে আমাকে কে সেই লোক যে আমার মাকে খুন করতে চেয়েছিলো।বলবি তার নাম?”
যুবকটি মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিল না।মায়া রেগে গেলো।চেয়ারে দিলো জোরে এক লাত্থি।তারপর বলে,”কি ভেবেছিস তুই?তোকে বাঁচিয়ে রেখেছি বলে পার পেয়েছিস?তোকে মৃত্যু না দিয়েও মৃত্যু যন্ত্রণায় ভুকতে হবে।তার ব্যাবস্থা আমি করছি।”
বলেই একটি পাইপ এনে পুরো রুমে পানিতে ভরিয়ে দেয়।তারপর মায়া যুবকটির গায়ে কিছু তার মিশিয়ে দেয়।দরজার সামনে পানির থেকে কিছুটা দূরে এসে মায়া প্লাকের সাথে কানেক্ট করে দেয়।সাথে সাথে বিদ্যুৎ চমকানোর মত করে কেপে ওঠে যুবকটি।পুরো শরীরে তার কারেন্টের ঝাকুনি লাগছে।এরকম কয়েক সেকেন্ড করে থেমে যায় মায়া।তারপর আবার এমন কারেন্টের শক দিতে থাকে।কিন্তু একবারে বেশিক্ষণ রাখে না।এমন কারেন্টের শক পেয়ে যুবকটি অজ্ঞান হয়ে যায়।মায়া হালকা হেসে চলে যায় সেখান থেকে।অনেক খুজে পেয়েছে এই যুবকটিকে সে।তার মাকে খুন করতে যারা উঠে পড়ে লেগেছিলো তাদের সবাইকে মায়া নিজে খুঁজে বের করবে।এখন তো শুধু এই যুবকটিকে পেলো।যুবকটির চোখে মুখে ভয়ের রেশ নেই।তাই মায়া আজ তাকে কারেন্টের শক দিলো।দেখা যাক পরে কি করে।যতদিন সে তার শত্রুদের খোঁজ না পাবে ততদিন এভাবেই এই যুবকটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।শত্রুদের এক এক করে বের করে সবাইকে উপযুক্ত শাস্তি দিবে মায়া।
হাসির কোলে মাথা এলিয়ে চোখের পানি ফেলতে থাকে মায়া।মায়ার মাথায় হাসির হাত।মায়া শূন্যে তাকিয়ে বলে,”জানো হাসি মা আমি আমার মাকে খুব মিস করি।আমার মুখ ওই বুক খুঁজতে থাকে যার বুকে মুখ গুঁজে কান্না করবো।সে আর কেউ না আমার মা।”
“জানি তো মা।কিন্তু এটাই যে তোমার ভাগ্য।”
“সুখেই তো ছিলাম বাবা ছাড়া জীবন।কেনো এলো সেদিনের ওই কালরাত।যে রাতে হারাতে হলো আমার মায়ের থেকে আমার ভালোবাসা।কেনো হারালো আমার মায়ের দু হাত মেলে আমার দিকে হাসি মুখে ভালোবাসার আবদার?”
“এভাবে নিজেকে কষ্ট দিও না মায়াবতী।”
“মায়াবতী এই নামটি তো আমাকে আমার মা বলে ডাকতো।তারপর তুমি এখন আবার মন্ত্রী মশাই।”
“দুর্বল হয়ে পড়েছো তুমি মন্ত্রী মশাইয়ের উপর?”
“একদম না।আমি চাই ওই সরদার বংশের বিনাশ।তাকে তো আমি নিজের হাতে খুন করবো যে আমার মাকে আমার থেকে দূরে রেখেছে।”
“আমার মায়াবতী তার পথে সফল হবে।সে পারবে তার মায়ের প্রতি করা অন্যায়ের শাস্তি দিতে।আমার বিশ্বাস।”
“আমাকে যে পারতেই হবে।ওই মোহন সরদার সবকিছু হারাবে।শুধু সম্পত্তি হারালেও কেউ শূন্যতা বুঝতে পারে না।আমি মোহন সরদারের থেকে তার অস্তিত্ব তার ভালোবাসা তার বংশধর সবকিছু কেরে নিবো।”
“আচ্ছা?মিহিরকে নিয়ে যে নাটকটা করলে তার কি কোনো প্রভাব পড়বে?”
“জানি না হাসি মা।তবে আমি যতটুকু আমার এই সূক্ষ দৃষ্টি দিয়ে দেখেছি মন্ত্রী মশাই কিছু তো একটা করবে।তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রেখেছি।”
“বাহ!এতগুলো বছর পর বাড়ি ফিরেছি।কোথায় ছেলের মাথায় হাত বুলাবে তা না।তোমার সব ভালোবাসা এই বেবিডলের জন্য মা।”
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে মিহির।মায়া উঠে বসে বলে,”কৃষি বিষয়ে পি এইচ ডি না করে কি হিংসুটে নিয়ে পি এইচ ডি করেছো মিহির ভাই?”
“মায়ের থেকে দূরে ছিলাম।এখন তো একটু ভালোবাসা পেতে চাই।”
মায়া হাসির কোলে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,”একটুও দিবো না।আমিও এক সপ্তাহ ছিলাম না এখানে।তাই তুমি পাবে না হাসি মাকে।”
মিহির কম কিসে।সেও বলে ওঠে,”দিবি না তো দেখ কি করি।”
বলেই মায়ার চুল ধরে টানতে থাকে।মায়া উঠে মিহিরের মাথার চুল ধরে টানতে থাকে।দুজনের এই খুনসুটি দেখে হাসি হেসে দেয়।
হাসির ছেলে মিহির।মিহিরের জন্মের পরপরই হাসির স্বামী আরেক জায়গায় মন দেয়।কিন্তু হাসির সাথে বিচ্ছেদের আগে সেই স্বামী মারা যায়।কাজ খুঁজতে থাকে হাসি।হাসির বাবা গরীব মানুষ তিনি মায়ার নানার কর্মী ছিলেন। সেই সূত্রে শাহানা পারভীন মায়াকে দেখভালের জন্য হাসিকে রেখে দিয়েছিলো।কিন্তু মায়াকে বেশি দেখা লাগতো না।শাহানা পারভীন এমনিতেই মায়াকে সময় দিতো।কিন্তু অফিস টাইম হাসি মায়ার আশেপাশে থাকতো।মিহির ছোট মানুষ মায়ার থেকে এক বছরের বড়।তাই মিহির ও মায়াকে নিয়ে হাসি এক জায়গায় থাকতো।মিহির ও মায়া দুজন ভাই বোনের মতো বড় হতে থাকে।যেহেতু হাসির ইনকাম এখানে ভালোই আর মিহির কৃষি নিয়ে সরকারিভাবে পড়াশোনা করেছে তাও খুব ভালো রেজাল্ট এর সাথে।
তাই মিহির বিদেশে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সুযোগ পায়।হাসি তার গ্রামের জমি বিক্রি করে নিজ যোগ্যতায় মিহিরকে সাহায্য করে।মায়া চেয়েছিলো সাহায্য করতে কিন্তু মায়া নিজেই এদিক ওদিক কষ্ট করে সামলাতো।তাই হাসি না করে মায়াকে।এমনিতেও মিহির পড়াশোনার পাশাপাশি মায়ার শিবচরের ফ্যাক্টরি দেখাশুনা করতো।মায়া মিহিরের দায়িত্বে কিছু বিষয় বুঝিয়ে দিয়েছিলো।এখন সেখানে অন্য একজন দেখাশোনা করে।তার নাম রুবি মিহিরের বাগদত্তা।মিহির ও রুবি একে অপরকে ভালবাসে।এখন শুধু তাদের বিয়ে করা বাকি।এসব ভেবে ছেলে মেয়ে দুজনকে দেখে সুখের নিঃশ্বাস টানলো হাসি।
সকালে,
মায়া আজ সকাল সকাল জিমে এসেছে।কিছু ব্যায়াম করে নিলো মায়া।তারপর মাঠে দৌড়াতে শুরু করে।মাঠ থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় এসে দৌড়ায়।এভাবেই বাসায় যাবে সে।রাস্তার কোনা দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ মায়ার সামনে একটি গাড়ি এসে থামে।গাড়ি থেকে নামলো এক হুডি পরা লোক।চোখমুখ দেখা যাচ্ছে না।মায়া কিছু করতে যাবে তার আগেই মায়ার মুখে স্প্রে করা হয়।সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায় মায়া।
মুখে পানির ছিটা পেতেই জ্ঞান ফিরে মায়ার।চোখ খুলেই সাথে সাথে সামনে তাকিয়ে দেখে তার সামনের চেয়ারে বসে আছে রাজ।মুখে তার ভিলেনি হাসি।ডেভিল হাসি দিয়ে রাজ বলে,”গুড মর্নিং,মায়াবতী। অফস হ্যাপি এডভ্যান্স ম্যারেড ডে,মায়াবতী।”
“হোয়াট এ জোকস!”
“নো নট জোকস।জাস্ট লুক দেয়ার।”
পাশে ইশারা করে বলে রাজ।মায়া তাকিয়ে দেখে একজন কাজী ও একজন রেজিষ্টার কাপছে।তাদের পিছনে গুলি তাক করে দাঁড়িয়ে আছে কিছু গার্ড।মায়া হেসে দেয়।বলে,”যে মায়া কারো জীবনের পরোয়া করে না তাকে ভয় দেখাচ্ছেন এদের দিকে গুলি দেখিয়ে?”
“মায়াবতী এত কাঁচা খেলোয়াড় হলো কবে থেকে?আমি কি এদেরকে তোমাকে ব্লাকমেইল করতে গুলি তাক করে আছি?মোটেও না।আমি তো এদেরকে গার্ড দিয়ে আটকে রেখেছি কারণ এরা এই শীতে ঘুম থেকে উঠতেই চাইছিলো না।অবশ্য দোষ আমার পিয়ু বেবীর।সে প্রথমে বলেনি যে শাহমীর রাজ বিয়ে করবে বলে তাদের ডাকছি।”
মায়া চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে।রাজ ডেভিল হেসে বলে,”অভাবে শীতের সকালে বউ ছেড়ে কে ঘুম থেকে উঠতে চায় বলো?আমি তো তোমাকে নিয়ে সকাল এগারোটা পর্যন্ত ঘুমাবো।শুনেছি বউ কাছে থাকলে ঘুম ভালো হয়।তাই না কাজী সাহেব?”
শেষের কথাটা একটু টান দিয়ে রসিক সুরে বলে রাজ। কাজী ঘামছে ভয়তে।এটা সত্যি সে আসতে চায়নি।সকাল ছয়টা এখনও শীতের আভাস আছে।কে উঠতে চায়?কাজীর কি ঘুম নেই?তার কি বউ ঘর নেই?আছে তো।কাজী কাপতে কাপতে বলে,”হ্যাঁ বাবা।আমি তো বউ ছাড়া আসতেই চাইনি।কিন্তু যদি জানতাম তোমার ইমারজেন্সি বউ লাগবে তাহলে গুলি দেখার অপেক্ষায় থাকতাম না।”
রাজ ফ্লাইং কিস দেখিয়ে বলে,”আমার বউ পাগলা কাজী।আচ্ছা এবার আপনি বলুন!আপনি কেনো আসতে চাননি।”
শেষের কথাটি রেজিষ্টারকে বলে।রেজিষ্টার নিজেও কাজীর মত ভয়তে আছে। সেও কাপতে কাপতে বলে,”ইয়ে মানে একটু পর যখন আপনার বউ আপনার হয়ে যাবে।রাতের পর যে সকাল আসবে তখন বুঝবেন।এখন কি আমরা বললে বুঝবেন?”
রাজ এবার মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”দেখেছো মায়াবতী!এদের বুড়ো বয়সেও বউ ছাড়তে মন চায় না।তাহলে আমি কেনো বউ ধরবো না।তাই আমিও এদেরকে বউয়ের থেকে আলাদা করে এনেছি।আগে আমার বউ আসবে তারপর কাজীর বউয়ের সাথে তার প্রেম হবে।”
রেজিষ্টার ফোড়ন কেটে বলে,”আর আমি!আমার কি বউয়ের কাছে যাওয়ার অধিকার নেই?”
“আছে তো।অবশ্যই আছে।আপনাদের বিদায় দেওয়া হবে।আগে আমার বউকে আমার করে দিন।”
“আমরা রাজি বাবা।তুমি তোমার বউকে নিয়ে আমাদেরকে যেতে দেও আমাদের বউ অপেক্ষা করছে।”
“অবশ্যই যাবেন।তো মায়াবতী!বুঝলে তো আমি কেনো গুলি তাক করে আছি তাদের দিকে?তোমার জন্য নয়।আসলে ওরা খুব দুষ্টু।ওদের বউ ছাড়া কিছু বুঝে না।আমি যে সিঙ্গেল ওদের নজরে নেই।তাই গুলি দেখিয়ে রেখেছি।”
মায়া এবার চেঁচিয়ে বলে,”সার্কাস হচ্ছে এখানে?”
“ধুর।বউ মিস করা হচ্ছে।এই কাজী ও রেজিষ্টার দুজন দুজনের বউকে মিস করছে। চলনা মায়াবতী।আমরা দুজন এক হয়ে ওদের অর্ধ সকালকে পূর্ণ করতে পাঠিয়ে দেই।”
“নির্লজ্জ আপনি।এভাবে কেউ কথা বলে?”
“বউ হয়ে লজ্জা বাড়িয়ে দিবে।এখন বিয়ে করে ফেলো আমাকে।”
“আমি বিয়ে করবো না।”
“তাহলে এরাও বউয়ের কাছে যেতে পারবে না।”
কাজী সাহেব একটু শুকনো ঢোক গিলে বলেন,”বলছিলাম যে বাবা।বিয়েতে কন্যার মত নেই।কেনো জোর করছো তাকে?”
“আপনি যদি বেশি কথা বলেন আপনার বউকে উঠিয়ে নিয়ে অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করে দিবো বলে দিলাম।”
“কোনো দরকার নেই বাবা।আমার প্রথম বউ মারা গেছে,দ্বিতীয় বউ আমার গয়না গাটি নিয়ে ভাগছে কোনমতে সম্পত্তির লোভে তৃতীয় বউ আটকে আছে।এটা গেলে আমি বউ পাবো না।তুমি জোর করো।সমস্যা নেই বিয়ের পর সম্পর্ক হালাল হয়ে যাবে।”
“গুড বয় কাজী।”
রেজিষ্টার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে কাজীকে।মনে মনে ভাবছে,”এটা কোন দিক দিয়ে বয়?”
মায়াকে বেধে রাখা হয়েছে চেয়ারে।মায়া ছটফট করতে থাকে।রেজিষ্টার লোকটি বলে,”বলছি স্যার! ম্যামের হাত খুলে দিলে ভালো হতো।এমনিতেও এই চিড়িয়া না মানে আপনার এখান থেকে তো কেউ পালাতে পারবে না।শুধু শুধু মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে।”
“খুব তো মেয়েদের কষ্ট বুঝেন।এদিকে যে আমি সারারাত না ঘুমিয়ে কষ্টে ভুগেছি তার বেলায় কি হবে?”
রেজিষ্টার এবার দমে গেলো।মায়া বলে ওঠে,”আমাকে ছেড়ে দিন।আমার হবু বর আমার জন্য অপেক্ষা করছে।”
রাজ কিছু বলার আগে কাজী বলেন,”বাইরেও কি তোমার হবু বর আছে মা?”
“হ্যাঁ।”
“ওটা ভুলে যাও।এখন তোমার হবু বর এই শাহমীর রাজ।না না হবু না এখনই তো বিয়ে হবে।ওই যে বাইরে তোমার হবু বর আছে সে তোমার বর না বেগানা পুরুষ।তোমার একমাত্র বর হবে আমাদের মন্ত্রী।”
মায়া এবার গর্জে উঠে বলে,”একবার হাতটা ছাড়া হোক তোদের কোনটা বর আর কোনটা বেগানা পুরুষ দেখিয়ে দিচ্ছি।”
রাজ একজন গার্ডকে ইশারা করলে সে এসে মায়ার বাঁধন খুলে দেয়।বাঁধন খুলতেই মায়া সাথে সাথে পা দিয়ে কিক মারে গার্ডের পেটে।সোজা পাকস্থলী বরাবর জায়গায় আঘাত পায় গার্ডটি।একটু ঝুঁকে যায়।তবে বেশি কিছু হয়না।কারণ গভীরে আঘাত পাওয়ার আগেই নিজেকে ঝুঁকিয়ে রাখে।মায়া পাশে থাকা গার্ডের পকেট থেকে গুলি নিয়ে তাক করে কাজীর সামনে।বলে,”কি বলছিলেন যেনো?উনি আমার বর।এতক্ষণ তো মন্ত্রীর চামচাদের গুলিতে ভয় পেয়েছিলেন আপনারা।এখন সোজা আমি নিজেই আপনাকে জমের দুয়ারে রেখেছি।কেমন লাগছে?”
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২০
কাজী ও রেজিষ্টার দুজন এবার কাচুমাচু করে।রেজিষ্টার ফিসফিস করে বলে,”এতক্ষণ গুলি পিছনে ছিলো।দেখতে পাইনি তাই একটু সাহস ছিলো।এখন তো সোজা বাঘিনী এসে গুলি সামনে ধরলো।মনে হয় না বেঁচে ফিরবো।”
কাজী ফিসফিস করে বলে,”আমার তিন নাম্বার বউ খুব ডেঞ্জারাস।আমার প্রথম বউয়ের বাচ্চাদের দেখতে পারে না।আমি গেলে ওদের কি হবে?”