মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১৯
ইশরাত জাহান
জারাকে নিয়ে বাড়িতে আসে বীর।বাড়িতে এসেই নিজের ঘরে চলে যায় সোজা।পোশাক পাল্টে মৌয়ের ঘরে চলে যায়।মৌকে খুঁজছে সে।মৌয়ের ঘরে এসে বলে,”বোন কই তুই?”
অনেকক্ষণ ধরে ডেকেও পেলো না।হতাশ হয়ে এদিক ওদিক খুঁজছে মৌকে।কিছুক্ষণ পর নিচে নেমে আসে।তখনই একজন মহিলা এসে বীরের হাতে কাগজ দিয়ে বলে,”মৌ ম্যাম এটা দিতে বলল।”
বীর সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে কাগজটি নিলো।মহিলাটি চলে যেতেই বীর কাগজটি মেলে দেখছে।এখানে লেখা,
প্রিয় ভাই,
আমার নেই বাবা নেই মা।আপন বলতে আছে শুধু আপু।সেও বিয়ের পর আমাকে ভুলে গেলো।সেই যে বিয়ে করেছে এর মধ্যে মাত্র একবার আমার সাথে কথা বলেছে। আর তুমি তো আমার খোজ নেও না।তবুও তোমরা আমার প্রিয়।আমি আর্ট কম্পিটিশনে চান্স পেয়েছি।এটা বলতেই কাল কতবার তোমাকে ডাকলাম।তুমি সেই ভাবীর ঘরে চলে গেলে।আপুকে কল করেছি অনেকবার।একবারও ধরলো না।তোমরা এতটাই ব্যাস্ত তোমাদের ভালোবাসার ব্যক্তিকে নিয়ে যে আমি আর তোমাদের বিরক্ত করতে চাই না।তোমাদের ছোট বোনটা তোমাদের উপর অভিমান করেছে ভাই।তাই আমি একাই চলে যাচ্ছি ঢাকায়।একটা হোস্টেল নিয়ে দুইদিন মত ওখানেই থাকব।আমার কথা মনে পড়লে একবার দেখা দিও।
ইতি তোমাদের বোন,
মৌ
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চিঠি পড়ে বীরের চোখটা ভিজে এলো।বোন অভিমান করেছে।সেই অভিমান প্রকাশ করে দূরে চলে গেলো।মায়ার সাথে কথা হয়নি বীরেরও।ব্যাস্ত ছিল এই কয়েকদিন ধরে।পকেট থেকে ফোন বের করে কল দিলো মৌকে।ফোন বন্ধ বলল।এরপর কল দিলো মায়ার ফোনে।কেউ ধরল না।বীরের একটু দুশ্চিন্তা করতে থাকল।কারণ মৌকে বোনের পরিচয় দিয়ে রেখেছে পুরো চট্টগ্রামে।এখন বীরের শত্রুদল কিছু করল না তো?বীর নিজের গার্ডের কাছে কল দিয়ে বলে,”প্রত্যেকটি বাস স্ট্যান্ড ট্রেন স্টেশন ও এয়ারপোর্টে খোঁজ নেও।মৌ কোথায় আছে খুঁজে বের করো।”
বলেই কল কেটে দিলো।চিঠিটা টেবিলের উপর রেখে বাইরে চলে গেলো বীর।নিজ দায়িত্বে ভিন্ন জায়গায় খুঁজবে।বলা তো যায়না কোনো বিপদে পড়লো কি না!বীর বের হবার সাথে সাথেই চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়লো জারা।নিজেদের লোকেদের কল করে জানালো,”মেয়েটার যেনো কোনো ক্ষতি নাহয়।বিশেষ করে সোনালী যেনো জানতে না পারে ও কোন পরিবারের মেয়ে।এটা খেয়াল রেখো।”
ওপাশ থেকে বলে,”ওকে ম্যাম।”
জারা এবার কল কেটে কিছু একটা ভেবেই ম্যাসেজ দিয়ে দিলো,”মেয়েটিকে ঢাকার অলিগলিতে খুঁজবে।পেলেই আমাকে জানাবে। আর হ্যাঁ ওর যেনো কোনো অসুবিধা না হয়।ও এই বাড়ির সবার আদরের।ওর গায়ে একটা দাগ লাগলে তার অস্তিত্ব বিলীন করে দিবে ওর ভাই বোন।”
ম্যাসেজ সিন হলো।জারা এবার দুষ্টু হেসে বলে,”তোমার বোনেদের সুরক্ষা হবে হ্যান্ডসাম কিন্তু তোমার কাছ থেকে এমন একজনকে কেড়ে নেওয়া হবে যেটা তুমি কোনোদিন ভুলতে পারবে না।হয়তো এরজন্য তুমি আমাকে কোনোদিন ক্ষমাও করতে পারবে না।”
মাত্র বিছানা থেকে নিজ শক্তিতে উঠে বসলো মায়া।পানি পান করে সিয়ার উদ্দেশ্যে বলে,”ওই মহিলার কি অবস্থা?”
পাশে থাকা আরেকজন মহিলা যে মায়াকে চিনেছে তার নাম তারা।সে বলে,”ওনাকে মেরে মুখ থেকে রক্ত বের করে দিয়েছে।খুব বাজে অবস্থা তার।”
মায়া এবার উঠে দাড়ালো।সিয়া বলে ওঠে,”তুমি কোথায় যাচ্ছো ভাবী?”
মায়া রক্তিম চাহনি দিয়ে বলে,”অনেক তো হলো ওই মহিলার নির্মম অত্যাচার।এবার ওনাকে আমি দেখাবো অত্যাচারের স্বাদ ঠিক কেমন হয়।”
বলেই চলে যায় মায়া।মায়ার চোখমুখের ভঙ্গি দেখে কিছুটা ভয় সিয়া নিজেও পেলো।কোন কাণ্ড বাদাবে কে জানে?তারা মুখটাতে হাসি ফুটিয়ে তুলল।
এদিকে সোনালী ও মালিনী দাড়িয়ে আছে।সামনে থাকা একটি লোক হাতে চাবুক নিয়ে আঘাত করছে মহিলাটিকে।সোনালী এটা দেখে পৈচাশিক হাসি দিয়ে মালিনীর কানে কানে বলে,”এবার তোমার বউমার কাছে গিয়ে আদুরে সুরে বলবে তোমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদেরকে তুমি শাস্তি দিয়েছো।রাজ তো তোমাকে মাথায় করে রাখবে বউ যার জন্য আঘাত পেয়েছে তাকে শাস্তি দিয়েছো এটা জেনেই।”
মালিনী সোনালীর দিকে তাকিয়ে বলে,”সত্যি বলছো তো?”
“একদম,ওই দেখো তোমার বউমা আসছে।দেখেছো কি হিংস্র চাহনি।আবার কার দিকে দেখছে?সোজা ওই মহিলার দিকে।”
মালিনী তাকালো সেদিকে।মায়া আসছে।মায়ার চাহনিতে রাগ স্পষ্ট।মালিনী একটু হাসলো।সোনালী শিখিয়ে দিলো,”ও আসলেই বেস্ট শাশুড়ি হওয়ার অভিনয় শুরু করে দিবে।দেখবে তোমার ছেলে বউয়েরা তোমাকে মাথায় করে রাখবে।এরপর মোহনা এসেও আমাদের কিচ্ছু করতে পারবে না।”
মালিনী মাথাটা উপর নিচ করল।মায়া ওদের দিকে এগিয়ে আসছে।এদিক থেকে গাড়ি থেকে মাত্রই নামলো মাহমুদ সরদার ও মোহন সরদার।অন্যদিক থেকে রাজের গাড়ি ঢুকলো সরদার মহলের ভিতরে।মাহমুদ সরদার ও মোহন সরদার এগিয়ে যেতে নেয় মায়ার পিছন পিছন।রাজের গাড়ি গ্যারেজের কাছে আসা মাত্রই রাজ নেমে যায় গাড়ি থেকে।মায়া সোনালী ও মালিনীর কাছে আসে।মালিনী মুখটা হাসিহাসি করে বলে,”তোমাকে ওর জন্য আঘাত পেতে হয়েছিলো না?এই দেখো ওর কি হাল হয়েছে তোমার জন্য।এবার তুমি খুশি তো বউমা।”
মায়া তাকালো দুজনের দিকে।সোনালী এগিয়ে এসে বলে,”শুধু কি তাই?ও তো এখন তোমার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবে।”
সোনালী কথা শেষ করতেই মাহমুদ সরদার ও মোহন সরদার এসে ওদের সামনে দাড়ালো।মায়া রক্তিম চাহনি দিয়ে বলে,”অন্যায় করেছে বলে তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তাই না?”
সোনালী খুশিতে গদগদ করে বলে,”হ্যাঁ তাই তো।”
“তাহলে ওনাকে ছেড়ে দিন।এবার শাস্তির রূপটা একটু বদলাবে।”
সোনালী আর মালিনী খুশি হলো।মাহমুদ সরদার এবার মায়ার মুখের দিকে তাকালেন।মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন,”মানুষটা অনেক ভালো।সরল সহজ মনের।যতটুকু সিয়ার থেকে শুনলাম ও কোনো অন্যায় করেনি।তুমি ওকে আঘাত করে শাস্তি দিও না।দরকার হয় ওকে আমি গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
মায়া কোনো কথা বলেনা।শুধু একটা চাহনি দিলো।মালিনী ওর মতো চুপ করেই আছে।সোনালী বলে ওঠে,”এভাবে থামাবেন না ভাইজান।আমরা কিছু না করেও বউমার জন্য কথা শুনেছি।তাহলে কিছু করেও কেন এই কাজের মহিলা শাস্তি পাবেনা?”
“আঘাত করার মাঝেও পার্থক্য থাকে সোনালী।এটা তোমাকে বুঝতে হবে।ইচ্ছাকৃত দেওয়া আঘাতের শাস্তি দেওয়া উচিত কিন্তু কারো অনিচ্ছায় বা অগচরে যে আঘাত দেওয়া হয় ওটা এক্সিডেন্টলি।সবকিছুকে গুলিয়ে ফেললে হয়না।”
সোনালী এবার একটু কুটুক্তি সুরেই বলে,”তাহলে বলতে চান আপনার বউমার কিছু হলে শুধু আমরাই শাস্তি পাব।অন্যরা পাবে না?”
“অন্যকেউ আমার বউমাকে আঘাত করতে আসুক তার ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।তবে সেই আঘাত কিরূপ এটাকেও দেখা হবে।দ্বিপাক্ষিক দোষ গুণ না দেখলে তুমি কি করে একজন বুদ্ধিমান মানুষ হলে?”
সোনালী থেমে গেলো।মহিলাটির বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।মায়া ওনার কাছে আসে।ওনাকে নিজের কাছে নিয়ে সিয়ার দিকে তাকালো।সিয়াকে বলে,”ওনাকে পানি দেও।”
সোনালী বিরক্তির ভাব প্রকাশ করে বলে,”ওকে তোমার পায়ের কাছে নিয়ে ক্ষমা চাওয়াও।”
মায়া রক্তিম চাহনির সাথে বলে,”পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার মত অন্যায় কি উনি করেছেন?”
“করেনি বলছো?ও ওখানে সাবান পানি না রাখলে তুমি পড়ে যেতে না।”
“ওই সময়ে আমিও তো না দেখেই হেঁটেছিলাম।আমার অন্যায় কি কম ছিল?”
সোনালী হতবাক হয়ে আছে।মালিনী এবার বলে,”এখানে তোমার আঘাতের শাস্তিটাই তো দেওয়া হলো।”
“আমি যদি মন্ত্রী শাহমীর রাজের বউ না হয়ে একজন রিক্সা চালকের বউ হতাম তাহলে কি আজ আমার এই আঘাতের শাস্তি দিতেন তাকে?”
মনে মনে সোনালী বলে,”অত দায় ঠেকেনি আমাদের যে কার কার বউয়ের কি হলো এটা দেখতে যাবো। নিহাত তোমার প্রয়োজন এখন তাই এই আদিখ্যেতা।”
রাজ এসে ওখানে দাড়ালো।এতকিছু হয়েছে এগুলোর কিছুই সে জানেনা।সে তো মায়ার জন্য দুশ্চিন্তা করতে করতে এসেছে।আজকে পিয়াশ তাকে কল করে কিছুই বলেনি।মায়া এবার পাশে থাকা লোকটার হাত থেকে চাবুক নিয়ে সেই চাবুকের দিকে তাকালো। চাবুকটি মহিলাটির হাতে দিয়ে বলে,”এই সরদার মহলের একটা ভালো গুণ আছে। তা হলো কেউ অন্যায় করলেই তাকে চাবুকের আঘাত বা লাথি মেরে আঘাত করা হয়।বলা যায় এটাকেই শাস্তি বলে।এখন আপনার প্রতি অন্যায়ের শাস্তি কি এইভাবেই নিতে চান নাকি ভিন্নভাবে?”
সোনালী আর মালিনী আহম্ভকের মত তাকালো।এটা কি বলছে মায়া?তারা কি করল যে তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে।উল্টো মায়ার মন যুগিয়ে চলতে চেয়েছিল।এখন মায়া এগুলো কি বলছে? যা করতে চেয়েছে হতে যাচ্ছে তো তার উল্টো।মালিনী বলে ওঠে,ও আবার কাকে কি শাস্তি দিবে?”
“ঠিক যেটা আপনারা করেছেন তার শাস্তি।”
“আমরা কোনো ভুল করিনি।”
“আমি তো বলিনি আপনারা ভুল করেননি।আপনারা তো করেছেন অন্যায়। আর অন্যায়ের শাস্তি কঠিন হয়।”
সোনালী এবার মোহন সরদারের দিকে তাকালো।মোহন সরদার রাজের দিকে ফিরে বলে,”তোমার বউ কিন্তু বাড়াবাড়ি করছে রাজ।”
রাজ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,”তোমার বউ বড় হয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমার বউ ছোট মানুষ এগুলোই তো শিখবে।”
“কোন দিক থেকে এই মেয়ে ছোট?”
“তুমি ওর বয়সটা দেখলে কিন্তু তোমার বউয়ের থেকে কতটা ছোট এটা দেখলে না!”
“এতকিছু না বকে তোমার বউকে বোঝাও।”
“এটা তো তুমিও করতে পারতে।”
“কি বলতে চাও?”
“এতগুলো বছর ধরে যেমন তুমি তোমার বউয়ের আঁচলের নিচে মুখ লুকিয়ে ছিলে এখন আমি আমার বউয়ের আঁচল ধরেছি।এই আঁচল ছাড়া করি কি করে বলো? আফটার অল বউ তো আমার একটাই।তোমাদের মত দুই নাম্বার বউ নিয়ে সংসার তো করিনা।”
মাহমুদ সরদার এবার চোখ রাঙিয়ে বলেন,”তোমার এখানেও এক নাম্বার বউ দুই নাম্বার বউ দেখতে হবে?”
“বউ কয় নাম্বার এটা দেখার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা লাগে নাকি?তোমরা সব জায়গায় তো দুই নাম্বার নিয়ে ঘোরো।এটা তো চোখের সামনে না চাইতেও আসে।”
মায়া এবার মহিলাটির দিকে আবারও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়,”তো বলুন কি করতে চান তাদেরকে?”
মহিলাটি সোনালী ও মালিনীর মুখ দেখে ঘাবড়ে যায়।ভয়তে বলে,”আমি কোনো শাস্তি দিতে চাই না।আমি গ্রামে চলে যাব।”
মোহন সরদার বলে ওঠে,”শুনলে তো শাস্তিস্বরূপ কিছুই দিতে চায়না।”
“আপনি মুখটা বন্ধ করুন মিস্টার মোহন সরদার।আপনি তো বউকে চোখের সামনে সোপিজ বানিয়ে রেখেছেন।যার গায়ে ধুলো লাগলেও আপনার নজরে আসবে না। ধূলোটাকে জাস্ট ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিবেন।তবুও বউ আপনার চোখে পট্টি দিয়েই রাখবে।”
“মুখ সামলে কথা বলো মেয়ে।”
“নাহলে কি করবেন?আমাকেও শাস্তি দিবেন এভাবে?ভুলে যাবেন না আমার কিন্তু কম ক্ষমতা নেই।আমি চাইলেই এই মন্ত্রীর নামেও মামলা করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি সেখানে আপনি এক চুনো পুটি।”
রাজ ডাক্তারকে কল করেছে।কথা শেষ করেই মাহমুদ সরদারের কানের কাছে মুখ রেখে বলে,”বাবা মেয়ের কোনোদিন যুদ্ধ দেখেছো?”
“তোমার মত অপদার্থ ছেলের বউ দেখিয়ে দিলো।”
রাজ বড়সড় অপমানবোধ করল।তাকে পাত্তা না দিয়ে বলে,”এখন যদি আমার বউ শাস্তি হিসেবে তোমার বউকে চাবুকের আঘাত দেয়। সহ্য করতে পারবে তো?”
“আজ অন্যায় মালিনী কম করেনি।ও কি করে একজন নির্দোষকে শাস্তি দেয়।তাও নির্মমভাবে।ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি পেতেই হবে।তবে না একটা শিক্ষা সে পাবে।”
মায়া এবার পাশে থাকা লোকটিকে বলে ওঠে,”এতক্ষণ ধরে আমার ওনাকে মারছিলেন তাই না?এবার নিন এই দুজনকে চাবুকের আঘাত করুন।”
মালিনী আর সোনালী দূরে সরে গেলো কিছুটা।ঘাবড়ে দিয়ে মালিনী বলে,”আমাদের দোষ কি?”
“ওই যে বললাম নির্দোষ ব্যক্তিকে আঘাত করেছেন তাও কোনো অন্যায় ছাড়া।আমি তো বলেই দিলাম এটা আমারও অন্যায় ছিলো।আমিও বেখেয়ালি ছিলাম।যেহেতু এখানে না বুঝে কাহিনী ঘটেছে তাহলে এটার শাস্তি হয়না।তবুও তাকে নির্যাতন করা হয়েছে।তার অজান্তে করা ভুলের এতগুলো আঘাতের মাশুল তো দিতে হবে আপনাদেকেও।উনি যখন মুখ ফুটে বলার সাহস পাচ্ছেন না।তখন শাস্তিটা একই রূপে হোক। এতে যদি আপনারা সঠিক বিচার করার ক্ষমতা রাখেন তো ভালো।”
মায়া কথাটি শেষ করে লোকটির দিকে তাকালো।লোকটি ইশারা পেয়েই আঘাত করতে লাগলো সোনালী ও মালিনীকে।মায়া মনের তৃপ্তি মিটিয়ে দেখছে এই দৃশ্য।একেকটি চাবুকের আঘাতে কুকড়ে উঠছে মালিনী ও সোনালী।ওরা দুজনেই তাকিয়ে আছে মোহন সরদার ও মাহমুদ সরদারের দিকে।কেউ কোনো কিছুই বলছে না।মালিনী বুঝতে পারল মাহমুদ সরদার কিছুই বলবেন না।তিনি অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননা। আর তার কাছে যে এরা দুজন অন্যায় করেছে এটা প্রথমে এসেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।এতগুলো বছর সংসার করে এটা তার বোঝা হয়েগেছে।সোনালী চিৎকার করে বলে,”মোহন,তুমি কিছু করো।”
মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১৮
মোহন সরদার মায়ার কাছে এসে বলে,”তুমি এই বাড়ির বউ।তোমার শাশুড়িকে আঘাত করো কিভাবে?”
“ঠিক সেইভাবে যেভাবে তারা এতক্ষণ করেছিলো।”
“তুমিও কি তোমার বউয়ের হাতের ননির পুতুল হয়ে থাকবে?”
রাজ অন্যদিকে ফিরে বলে,”তুমিও কি কম আছো?তোমার বউয়ের জন্য তোমার হৃদয় ঝলসে যাচ্ছে।তোমার বউ বউ বাকিদের বউ কি বউ না?”
