মি মাফিয়া পর্ব ২৭
সুমাইয়া সাবিহা
লোকটা ছেলেটার কথায় পাত্তা না দিয়ে আরিয়ার দিকে ফিরে মাথা নতো করে বললো ,ম্যাম সরি ,আসলে আমি বুজতে পারিনি আপনি এভাবে হঠাৎ ক্লাসের মাঝে বের হবেন ,কখনো তো বের হননি ,,আমি একটু বের হয়েছিলাম আমায় মাফ করবেন।
আরিয়া কিছু বুঝলো না ।
সামিরা প্রেমা আরিয়া কে ঝাপটি মেরে ধরে বললো ,বেশি ব্যাথা পেয়েছিস?
দুইটা ছেলে সামনের ছেলেটার হাত রুমাল দিয়ে বেধে বললো ,ভাই আমরা দেখছি একে ,বলে সামনে এসে বললো ,
এই তুই কেরে ,এটুকুনি একটার মেয়ের সামনে এতো বড় পুরুষ হয়ে মাথা নতো করতে লজ্জা লাগলো না কাপুরুষ নাকি?
মোটা গঠন বিশিষ্ট লোকটা কোনো কথা না বলে হাতের ছুড়িটা চোখের পাতা ফেলার আগে বুকে বসিয়ে দিয়ে বললো,,ঐ টাকে বাচিয়ে রাখতে বলেছে নয়তো ঐটাকেও মেরে দিতাম।
ছেলে দুটো হেলতে দুলতে নিচে পড়ে গেলো ,বললো,এ তুই কে হ্যা? এমন করছিহ কেনো? আমরা তোর কি করেছি?
লোকটা কোনো উত্তর দিলো না।
হাত কাটা ছেলেটা সামনে এসে বললো,অনেক করেছিস এবার বল তুই কে হুম? এতো দম কেনো তর?
এমন সময় একটা আকাশী রঙের ব্রেন্ডের কার স্প্রীডে এসে এখানে থামলো, সবাই সেদিকেই তাকিয়ে আছে ,
গাড়ি থেকে নামলো আফরান,,
আফরান কে দেখে আড়িয়া ভয়ে জড়সড় হয়ে আসলো,,
আফরানের চুল গুলো অগুছালো হয়ে আছে ,শার্টের হাতা গুলোও ছাড়ানো ,বুঝাই যাচ্ছে , হন্তদন্ত হয়ে এখানে এসেছে ,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আফরান সামনে এসে দাত চেপে বললো ,কে হাত দিয়েছিলো ?বল ,কে হাত দিয়েছিলো ওর গায়ে?
আফরানের হাত দুটো গুটানো ,চোখ দুটো গাড় লাল হয়ে আছে ,
আফরান কে দেখেই দাড়িয়ে থাকা ছেলেটা বুঝলো ,নিশ্চয়ই সে ভুল জায়গায় হাত বাড়িয়েছিলো ।
আফরান একবার আরিয়ার দিকে তাকিয়ে আরিয়ার সামনে এসে শান্ত গলায় বললো ,, কোথায় মেরেছে ? খুব মেরেছে? আমিও মেরে দিবো ,ভয় পেয়েছো খুব? বলে আরিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো । আবার তাৎক্ষনিক সামনে ফিরে আগের ন্যায় হিংস্র বাঘের ন্যায় গর্জন দিয়ে বললো ,,যে ওর গায়ে হাত দিয়েছিস নিজ থেকে সামনে আয় নয়তো …
আফরানের কথার সাথে সাথে ছেলেটা সামনে এসে বললো, আসলে স্যার বুজতে পারিনি ,আমি তো…
ছেলেটার কথা শেষ করতে দিলো না তার আগেই আফরান ছেলেটাকে একবার দেখে নিয়ে বাম হাত টায় রুমাল পেচানো রক্তে মাখা দেখেই বুজতে পেরে ঐ হাত টায় ধরে পরপর গার্ডের হাত থেকে ছুড়িটা নিয়ে কুপাতে থাকলো ।
ছেলেটা চিৎকার করছে কিন্তু আফরানের থামার কোনো নাম গন্ধ নেই ।
আরিয়া এটা দেখে সাথে সাথেই জ্ঞান হারায় । সামিরা প্রেমা ভয়ে জড়সড় হয়ে আরিয়া কে আস্তে করে ডাকতে লাগলো ।
আরিয়া চোখ মেলে চারদিক টা একবার দেখে নিলো । পাশে রহিমা বেগম বসে আছে ,আরিয়ার জ্ঞান ফিরতে দেখে রহিমা খুশির ঝলক মুখে একে বললো ,,এখন ঠিক আছিস?
আরিয়া উঠে বসলো ,
রহিমা: এখন কেমন আছিস?
আরিয়া: ভালো
রহিমা স্বস্থির নিশ্বাস ছেড়ে বললো ,,অনেক হয়েছে এ বাড়িতে তোর আর থাকতে হবেনা মা ,,পরিক্ষার সময় হলে তখনএসে দিবি ,আমি তোকে আর এ বাড়িতে রাখতে চাইনা ,কতটা বছর এমন সহ্য করছিস,তোর কথা শুনাই উচিৎ ছিল ,সেদিন যদি এই বাড়িতে না পাঠাতাম এতো সব সহ্য করতে হতো না।
আরিয়া কিছু বললো না ।
চল রেডি হবি এখনি ,আমরা আর দেরী করতে চাইনা ,এই বাড়িতে মিনিটে মিনিটে নাটক শুরু হয় ,,
আরিয়া : মা আমার এক্সাম টা শেষ করে যাবো বললাম তো ,,আর এখন এতো দরদ দেখাচ্ছো কেনো? মা হিসেবে এই চারটা বছর এই বাড়িতে কিভাবে আছি তখন বুঝলেনা? এখন এতো ন্যাকামু আমার ভালো লাগছে ,তাছাড়া আমি তোমাদের বাড়িতে যেতে চাইনা ,চার বছর আগের প্রতিটা মিনিট প্রতিটা সেকেন্ডের কথা আমি ভূলিনি মা । আমার কোনো কথা তখন শুনোনি ,,এখন আমি আর তোমাদের সঙ্গে থাকতে চাইনা । হয়েছে? শুনে নিয়েছো আমার কথা? চুপ করে ছিলাম বলে ভেবোনা আগের সব ভূলে গেছি । যখন আমার জীবন টা দুটানায় ছিলো তখন কোথায় ছিলো তোমার দরদ? বলো?
এখন আমি এখানেই ওকে । যাবো না আমি বলে আরিয়া নিজের জায়গা ছেড়ে উঠে রুম ছাড়লো।
পথে সামিরা আরিয়া কে দেখে বললো ,কিরে কখন জ্ঞান ফিরলো তোর? আর ওমন মুখ করে আছিস কেনো?
আরিয়া : নাথিং, বলে বড় বড় পা ফেলে ছাদে চলে গেলো ।
সামিরার কিছু না বুঝে আরিয়ার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকলো
রহিমা বেগম ,খলিল সাহেব গ্রামে চলে গেছেন দুদিন হলো ,এক প্রকার কষ্ট পেয়েই চলে গেছেন আরু কে ছাড়া।
এ দুদিন আফরান কে কোথাও দেখা যায়নি ,,তাই তো বিয়ের ব্যাপার টা সত্যিই কিনা সেটা নিয়েও কথা বলতে পারেনি।আরিয়ার ভিষন বোড়িং কাটছে দিন গুলো । এতো বাজে দিন কখনো কাটেনি ,,কেমন যেনো বিরক্ত বিরক্ত লাগছে সব অজানা সব কারনে ,,
কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে আরিয়া কাছে ছিলো বিধায় দরজা খুলে দিলো । অচেনা চেহারায় কপাল কুচকে বললো ,কাকে চাই?
-আয়শ বাসায় আছে?
আরিয়া:আপনি কে ?
-আয়শের বন্ধু।
আরিয়া: ভাইয়া এখন বাসায় নেই ।
-ঠিক আছে ,আমি অনেক দুর থেকে এসেছি ,একটু ভেতরে এসে ওয়েট করতে পারি?
আরিয়া:সরি ,এখন বাসায় কেউ নেই বড়রা ,আসতে পারেন।
-আরে আজব তো ,আমি কি চোর নাকি যে কেউ নেই বিধায় চুরি করে নিয়ে যাবো ?
আরিয়া: হতেও পারেন ,সার্টিফিকেট তো আর নেই তাইনা।
-আজব তো ,ভালো মানুষ হওয়ার জন্য সার্টিফিকেট ও লাগবে?
আরিয়া: অবশ্যই ,
সামিরা উপর থেকে বললো ,আরু কে আসলো রে ?
আরিয়া: জানিনা ,মনে হয় চোর ।
সামিরা আরিয়ার কথায় রুম থেকে বেড়িয়ে নিচে এসে বললো ,কি বলিস ? কে এসেছে ?
আরিয়া কিছু বলবে তার আগে চোখ যায় দরজার বাইরে দাড়িয়ে থাকা মানুষটির দিকে ।
সামিরা সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে দেখে হাসি মুখে বললো ,আরে সাদেক ভাইয়া যে ,এখানে কিভাবে আসলে
আরিয়া কপাল কুচকে বললো ,একে চিনিস?
সামিরা : আরে ইনি আয়শ ভাইয়ার ভালো বন্ধু ,আমাদের বাসায় তো প্রায়ই আসতো ,অনেক দিন পর দেখা ।
সাদেক হেসে বললো ,ওকি সামিরা এই বাড়িতে যে ,আমি তো ভাবলাম তুমি কলেজে।
সামিরা : আজ যাইনি তো ,বৃষ্টি ছিলো সকালে খুব ।
সাদেক : ওহ ,তা কেমন আছো?
সামিরা:একদম পারফেক্ট, বলে হাসি দিলো ।
সাদেক : তা বাহিরেই কি দাড় করিয়ে রাখবে?
সামিরা: আরে ভেতরে আসুন না ।
সাদেক ভেতরে পা বাড়ায় ।
আরিয়া পেছনে দাড়িয়ে কপাল কুচকে ঠায় দাড়িয়ে থাকে ।
সামিরা: কিরে ওমন গোমরা মুখে দাড়িয়ে আছিস কেনো?
আরিয়া চুপ করে ভেতরে আসে ।
সামিরা লতা কে ডেকে নাস্তা দিতে বলে।
সাদেক: তা কেমন চলছে তোমার দিনকাল ?
সামিরা: আগে বলুন বিয়েতে কেনো আসলেন না?
সাদেক: কার বিয়ে ?
সামিরা: মজা করছেন নাকি সিরিয়াস ?
সাদেক মজা কেনো করবো ? আগে বলো কার বিয়ে হলো যে আমাকে জানায়নি আয়শ ?
সামিরা : আপনাকে তো নাকি নাবিল ভাইয়া কল দিয়েছিলো
সাদেক: নাহ তো ,,আমাকে তো কোউ কিছু বলেনি ।
সামিরা সব টাই বুজতে পারে ,আয়শ ভাইয়ার সাথে বিয়ে হবে আগে থেকেই প্লেন করা হয়তো এটাও কোনো প্লেনের মধ্যেই ছিলো।
সাদেক : আচ্ছা বাদ দাও ,শুনলাম ,নাবিল নাকি জেলে ? কি করেছে ও ?
সামিরা: লম্বা কাহিনি অন্য কখনো শুনাবো নাহয় ।
সাদেক: ঠিক আছে । তারপর বলো ,পাশে থাকা এই কপাল কুচকানো মেয়েটা কে?
সামিরা : আরে এটাই তো আরু ,
সাদেক আরু নাম টা শুনেই মুচকি হেসে বললো ,ওহ ,এই তাহলে আরু ,এখন বুজলাম আয়শ কেনো এই বাড়িতে থাকছে ,আর বিয়েটা কার হয়েছে ,সালা একটা বার কল দিয়েও বললো না ,
সাদেকের কথা টা মনে হয় সামিরার পছন্দ হলো না ,বললো ,ভাইয়া ! আসলে যেমন টা ভাবছেন বিষয় টা ঠিক তেমন টা না ,আসলে হয়েছে কি …
এটুকু বলতে সাদেক দাড়িয়ে দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে আয়শ কে জড়িয়ে ধরে বললো , কিরে হারামী ,বিয়েটা সেরে ফেললি জানানোর মতো প্রয়োজন মনে করলি না ,এই তোর বন্ধুত্ব ?
আয়শ : আরে করছিস কি ছাড় বলছি ,আরে ছাড় না ,এখনো মেয়েদের মতো গায়ে পড়ার অভ্যাস টা যায়নি তোর ।ছেহ ছাড় বলছি ।
সাদেক:আগে বল আমাকে জানাসনি কেনো?
আয়শ: আরে আগে ছাড় পরে বলছি।
সাদেক আয়শ কে ছেড়ে বললো ,বল ,জলদি বল ; সালা বউ পেয়ে বন্ধুকেই ভূলে গিয়েছিস।
আয়শ কপাল কুচকে বলে ,এককেবারে দিমু একটা যাহ তো,আগে বল কখন আসলি?
সাদেক এই তো মাত্র । এসেই তোর বউয়ের সাথে ঝগড়া করতে হলো ,তোর মতোই একদম কথায় কম যায়না ।
আয়শ কপাল কুচকে বললো ,বেশি কথা কেন বলছিস? সর তো ফ্রেস হয়ে আসি , পরে কথা বলবো। বলে আয়শ উপরে চলে যায় ।
সাদেক: আহ কি দায়িত্বশীল পুরুষ টা আমার ।
আরিয়া এখানে আর দাড়িয়ে থাকলো না উপরে চলে গেলো।
আরিয়া কে যেতে দেখে সাদিক বললো ,হ্যা জলদি যাও ,স্বামীর খেদমত করা ভালো কাজ।
আরিয়া পিছনে তাকিয়ে আবারো কপাল কুচকায়।
সামিরা: আসলে ভাইয়া তুমি ভূল ভাবছো ।
সাদেক:কোনটা?
সামিরা: এই যে আরিয়া কে ….
এমন সময় দরজা ভেদ করে কারো পায়ের আওয়াজ শুনে সামিরা পিছে ঘুরে তাকায় । দুদিন পর আফরান কে দেখে হয়তো একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলতো কিন্তু আফরানের শরীর ক্ষত বিক্ষত হয়ে আছে ,শরীর থেকে টুপটুপ রক্ত ঝরছে ,পাশে আফরান কে একটা কোট পেন্ট শরীরে সেটআপ করা মেয়ে ধরে আছে ।
সামিরা দৌড়ে আফরানের কাছে গিয়ে বলে একি ভাইয়া আপনার কি হয়েছে ? এমন অবস্থা কেনো?
আফরান স্ট্রং হওয়ার চেষ্টা করে বললো ,কিছু না ,
পাশে থাকা মেয়েটি বললো ,সাইট প্লীজ ,আর উনার রুম টা কোন দিকে বলে দেবেন ,
সাদেক আফরান কে দেখে ভীত হয়ে তবুও সাহস নিয়ে বললো, ব্রো আপনার কি হয়েছে?
আফরান কপাল কুচকে তাকায় একবার ,কিন্তু কিছু না বলে উপরের দিকে যাওয়া ধরে ,
আরিয়া উপরে বারান্দায় দাড়িয়ে সব টা দেখেছে এতোক্ষন ,কিন্তু একবারের জন্যও বিচলিতো হলো না ।
আফরান উপরে দিকে চেয়ে স্মীত হাসি দেয় আরিয়া কে দেখে ।
আফরানের গায়ে ব্লাক শার্ট।যার কারনে ভেতরে ক্ষত গুলো দেখা যাচ্ছে না শুধু হাতে গলায় রক্তের আভা প্রকাশ পাচ্ছে।
আরিয়ার ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করে। ,চুপ করে নিজের রুমে গিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো । এতক্ষন নিজেকে অনেক কষ্টে আটকিয়ে রেখে ছিলো ,আফরানের সামনে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করবেনা বলে ,,যে মানুষ টা দুদিন তাকে না দেখে থাকতে পেরেছে সে মানুষ টা সারাজিবন না দেখে থাকতে পারবে বলে আরিয়া ভাবছে ,তাইতো আফরানের কাছে আর থাকবেনা থাকুক উনি একা একা । সেও পারবে থাকতে।আর উনার সাথের ঐ মেয়েটা কি করছে ? একদম বাড়িতে এসে উঠেছে ।
আরিয়া কে ভেতরে যেতে দেখে সামিরা ঠিক বুজলো ,আরিয়ার অভিমানী মনটা । ।
সাদেক ,আয়শ ,সামিরা আড্ডায় বিভোর ,
কথার মাঝে সাদেক বললো :তোর ভাগ্য আছে বলতে হবে যে ,যেমন টা চেয়েছিলি এমন টাই হয়েছে ।
আয়শা: কোনটার কথা বলছিস?
সামিরা:আমি সাদেক ভাইয়াকে অনেক বার বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু সুযোগ পাইনি
আয়শ: কিসের কথা বলছিস?
সাদেক:আরে এই যে তুই নিজের প্রিয় মানুষ টাকে পেয়েছিস। এখন যদি আমার কপাল ভালো হয় তবে আমিও …বলে থামলো সামিরার দিকে তাকিয়ে ।
আয়শ বিষয় টা খেয়াল করলেও কিছু বললো না। কিন্তু নিজের প্রিয় মানুষ টাকে পেয়েছি এটার মানে কি বুঝালো সাদেক?
সামিরা:ভাইয়া আসলে বিষয় টা তেমন নয় …
আয়শ : যাই হোক বাদ দে ,আমি ঘুমোবো ,একটু আজ এমনিতে জলদি এসেছি।
সামিরা: ভাইয়া একটা কথা বলতাম
আয়শ: বল ।
সামিরা: আফরান ভাইয়া একটু আগে ফিরেছে রক্তাক্ত অবস্থায়,
আয়শ:কি বলছিস? কি হয়েছে?
সামিরা: জিজ্ঞাসা করেছিলাম তো কিন্তু কিছু বলেনি ।
আয়শ: দাঁড়া আমি দেখছি ।বলে আয়শ সোজা আফরানের রুমের দিকে হাটা ধরে ।
সাদেক : সামিরা তোমায় একটা কথা বলবো?
সামিরা: হুম বলেন ।
সাদেক: তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে ।ডোন্ট মাইন্ড আমি কিন্তু সব সময় এমন বলে দেই সেটা তুমি জানোই তো।
সামিরা: হুম,আরে মাইন্ড কেনো করবো ,
সাদেক : তা বাড়িতে কবে যাবে?
সামিরা:জানিনা ঠিক
সাদেক:আচ্ছা ।
আয়শ আফরানের কাছে যাওয়ার পর দরজার সামনে দাঁড়িয়েই শক্ড খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে ,এই মেয়েটা কে? আফরান এর সাথে এক রুমে কেনো? আজ অব্দি আফরানের রুমে কেউ যেতে পারেনা আর এই মেয়ে? হু ইজ সি ,,আরিয়া কোথায়?
মেয়েটা আফরানের পাশে বসে আফরানের হাতে বেন্ডেজ করে দিচ্ছে ,অথচ আফরান কিছু বলছে না । হাউ পসিবল?
যাই হোক এখন আর ভেতরে যাওয়ার দরকার নেই ,যেহেতু মেয়েটা আছে । আয়শ আর ভেতরে না গিয়ে চলে আসার পথে আরিয়ার রুমের সামনে গোঙানির আওয়াজ শুনে দরজা নক করলো। দরজা খোলাই আছে ,তাই ভেতরে ঢুকে গেলো ,আরিয়া ফ্লোরে বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে হাটুর উপর দুহাত রেখে হেঁচকি তুলে কাঁদছে।
আয়শ গিয়ে পাশে বলে বললো,কাদছিস কেনো?
আরিয়া যেনো কথা টা শুনলো না।
আয়শ:এভাবে না কেঁদে গিয়ে কথা বললেই তো পারিস ,আমি যতটুকু চিনি আফরান কে শুধু শুধু মেয়েদের সাথে ঘসাঘসি করার মতো ছেলে ও না।
আরিয়া:লাগবেনা ,আপনি চলে যান এখান থেকে।
আয়শ হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,এমন রাগ আমাকে না দেখিয়ে যার সাথে করেছিস তাকে দেখা ।
আরিয়া: লাগবেনা আমার কারো উপর রাগ নেই। হুম।
আয়শ হেসে বললো ,তাহলে ওভাবে কাদছিস কেনো?
আরিয়া কান্না হালকা করে মাথা উঠালো।
আয়শ: কি করেছিস নিজের ,,চোখ মুখ লাল বানিয়ে বসে আছিস,পাগলী । ফ্রেস হয়ে আস ।
আরিয়া কিছু বললো না।
আয়শ আরিয়াকে তুলে দাঁড় করিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে আসলো।
সাদেক: আমার তো কোনো সমস্যা নেই,, এমনিতেও আমি এদিকে একটু কাজের জন্যই এসেছি ,তাই তোর সাথে দেখা করতে চলে আসলাম প্রথমে।
আয়শ : ভালো করেছিস।যতোদিন কাজ শেষ না হবে এখানেই থাকবি ওকে ,হোস্টেলে থাকার দরকার নেই।
সাদেক: ঠিক হে ইয়ার । তেরা বাত কাভি সুনা নেহি এসা হুয়া হে কেয়া?
আয়শ সাদেকের কথায় হাসে।
জাফর সাহেব সাদেক কে চেনেন ,বেশ কয়েকবার আয়শের সাথে দেখেছেন তিনি তাকে,এখানে আসার কারন জানার পর তিনি নিজেই বলেছেন কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এখানেই রাতে পারে কোনো অসুবিধা নেই।
রাতে ডিনার শেষ করে সবাই নিজ নিজ রুমে চলে গেলো ঘুমোতে। কিন্তু আরিয়া খাবার খায়নি , অনেক বার ডাকার পরেও আসেনি ,জাফর সাহেব নিজে ডেকেছে গিয়ে তবুও আসেনি ,বলেছে তার অনেক পরা বাকি ,তাছাড়া সন্ধ্যায় নাস্তা করেছে এখন ক্ষুধা নেই। আরিয়ার চেহারা দেখে জাফর ভেবে নিয়েছেন মন টা হয়তো খারাপ তাই আর কথা বাড়ায়নি ।
মি মাফিয়া পর্ব ২৬
আরিয়া পা টিপে টিপে আফরানের রুমে গিয়ে আফরানের পায়ের কাছে দাঁড়ায়,,হাতে ছোট একটা ছুড়ি হয়তো ফল কাটার বা অন্য কিছুর।রান্না ঘর থেকে নিয়ে এসেছে।
আরিয়া আস্তে করে খাটের উপর উঠে আফরানের ডান দিকে বসে ।
আফরান পেট বিছানায় এলিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। আরিয়া ডিম লাইটের আলোতে একবার দেখে নিল আফরান কে। তার পর হাতের ছুড়ি টা দিয়ে ঘারের ঠিক নিচে বরাবর পিঠে আঘাত করলো ।