মি মাফিয়া পর্ব ৩৪ (২)

মি মাফিয়া পর্ব ৩৪ (২)
সুমাইয়া সাবিহা

আফরান আরিয়ার কাছে গিয়ে বাহু ধরে কম্বল টাও সরিয়ে দিয়ে খামচে ধরে যতোটা জোড়ে ধরা সম্ভব ততটাই জোড়ে ধরে। আফরানের হাত মুহূর্তে ভিজে ছোপ ছোপ হয়তো রক্তে :
__সত্যি করে বল কাকে ফোন করে ডেকে ছিলি? আজ হয়তো তোকে মারবো নয়তো একদম পাগল বানিয়ে ছেড়ে দেবো এমন অবস্থা বানাবো যে বেঁচে থাকার মতো ইচ্ছা টুকুও থাকবেনা ।
আরিয়া বাহুর ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে চোখ বন্ধ করে আফরানের শার্ট খিচে বলতে লাগলো
___আহ লাগছে তো পাগল হয়ে গেছেন ভাইয়া ?,দরজা আপনি বাহির থেকে আটকিয়ে গিয়েছেন আবার নিজেই খুলে এসেছেন চোখ কি অন্ধ আপনার? আর আমি ফোন পাবো কোথায়? আমি আপনাদের বাড়ি থেকে কিচ্ছু টি নিয়ে আসিনি গাড়ির ভাড়া টুকু ছাড়া।দেখেননি ফাঁকা হাতে এসেছি । আচ্ছা সেসব নাহয় বাদই দিলাম কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলতে মুখে বাঁধলো না আপনার?

লাগছে তো ছাড়ুন না।
আফরান আরিয়ার কোনো কথা শুনলো কিনা জানিনা তবে এই মুহূর্তে পৃথিবী টা পুরে ছাড়খাড় করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে আফরানের , ধ্বংস করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে সব কিছু । কিভাবে পারলো এই মেয়ে আমাকে ঠকাতে ? একে তো পাপ করেছে তার উপর মিথ্যা বলেই যাচ্ছে এই মেয়েকে মেরে নিজেকেও মেরে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে এই মুহূর্তে। একটা মেয়েকে নিজের করে ধরে রাখতে পারলাম না ছেহ ।শেষ পর্যন্ত কিনা আরেক জন কে বিলিয়ে দিলো শরীর । এটাকে পরক্রিয়া বলে না ? বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই এই মেয়ের। আফরান চৌধুরীর সাথে ধোঁকা ..? নো ওয়ে ।
আরিয়া আফরানের বুকের উপর শার্ট খামচে ধরে ক্রমাগত ব্যাথার কারনে যদিও এতে আফরানের বুকেও প্রচন্ড ব্যথা হয় । তবে আফরানের এতে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই এই মুহূর্তে ‌। শুধু একটা পয়েন্ট ই ঘুরছে আমার ব্যাক্তিগত জিনিস নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোনো অধিকার এই মেয়ের নেই যেহেতু করে ফেলেছে এর ফল তো ভুগ করতেই হবে ।
আর কিছু না ভেবে আরিয়ার বাহু ছেরে দিয়ে হাতের ফোনের ফ্লাশ লাইট টা অন করে টেবিলের এক পার্শ্বে রাখে।
আরিয়া ছাড়া পাওয়া মাত্রই ব্যাথা ভুলে গিয়ে আগে বিছানার উপর থেকে কম্বল টেনে শরীরে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

__,ভাইয়া প্লীজ এমন করবেন না আমার সাথে কি হয়েছে বুঝিয়ে বলুন ।
আফরান আরিয়ার দিকে ধনুকের অগ্রভাগের ন্যায় ধারালো তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বাঁকা হেসে কাছে এসে বিছানার উপর থেকে একহাতে ওড়না টা নিয়ে কি যেনো ভেবে আবার রেখে দিয়ে ফোন টা নিয়ে অন্য রুম থেকে রহিমা বেগমের বিশালাকৃতির কাপড় টা নিয়ে আসলো মিনিটের মধ্যেই।
__ কি করবেন আপনি? বলুন না কি করবেন? এটা কেনো এনেছেন?
আফরানের মুখে শুধু পিষাজ ময় হাসির রেখাই দেখা যাচ্ছে চোখ দুটো যে গাঢ় লাল হয়ে আছে ফ্লাশের হালকা আলোতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
আরিয়ার কাছে এসেই শরীর থেকে কম্বল টা একটানে ছিটকে ফেলে দিয়ে কাপড়ের একটু অংশ ছিড়ে নিঃশব্দে আরিয়ার দুহাত শক্ত করে ধরে একসাথ করে কাপড়ের টুকরো টা দিয়ে বাঁধতে শুরু করে ।
আরিয়ার চোখ বেয়ে অনবরত পানি ঝরছে । চোখজোড়া বন্ধ করে আছে শরীরে ছোট কাপড় ছাড়া আর কিছু পরিহিত নেই ।

__ আপনার কি একটুও মায়া দয়া নেই ? লজ্জা শরম নেই ? আপনার নাই থাকতে পারে তাই বলে কি আমারো নেই? প্লীজ ওটা শরীরে জড়াতে দিন না । ইজ্জত টুকু অন্তত রাখুন।বলে কাঁদতে লাগলো আরিয়া অসহায়ের মতো ।
ছোটার চেষ্টা করছে কিন্তু এই বৃহত্তর শক্তির কাছে কি আর তার এইটুকু শক্তির কোনো দাম আছে?
___কি করছেন এসব ? কি করেছি আগে বলুন না দয়া করে । কথা বলছেন না কেনো? প্লীজ ছেড়ে দিন বলছি ।আমাকে বেঁধে দিয়ে চলে যাবেন তাইনা ? দেখুন যাই করুন মেনে নিচ্ছি কিন্তু ওটা আমার শরীরে দিয়ে দিন । আপনার পায়ে পরছি দয়া করুন আমায় । বলে আওয়াজ করে কাঁদতে লাগলো আরিয়া।
আফরান এর সেদিকে কোনো প্রকার মন‌ নেই উল্টো আরিয়া কে এই অবস্থায় দুহাত উল্টে কোলে তুলে নিয়ে খাটের উপর ঠাস করে ফেলে দেয় কোল থেকে ।তারপর পরনের বেল্ট খুলে নিচে ফেলে দিলো ।
__এমন ভাবে ফেলতে পারলেন ভাইয়া ? খুব ব্যাথা পেয়েছি তো আমি । এমন করছেন কেনো বলুন না কিছু তো বলুন ভাইয়া ।আমার আর্তনাদ কি আপনাকে আজ ছুঁতে পারবেনা? কেনো এতোটা নির্দয় হচ্ছেন? একবার তো বলুন অপরাধ কি?কি করেছি আমি ?
আফরান আবারো ডেভিল হেসে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বললো ,
__যেই না বয়স হয়েছে অমনি শরীরের গরম রক্তে শারিরিক চাহিদা টাও বেড়ে গিয়েছে । হতেই পারে এই বয়সে কিন্তু বিয়ে করেছি কি ঢং করতে? বিয়ের পরেও অন্য ছেলের সাথে রাত কাটানোর জন্য? এতো সাহস বেড়ে গেছে যে,আফরান নাম টাকে কে মাথা থেকে ঝেড়ে দিয়ে পরপুরুষের সাথে মেলামেশা করছিস ।সাহস কি করে হয় তোর আমার পার্সোনাল বডি নোংরা করার?
আরিয়ার অসহায় কন্ঠ :-

__কি সব বলছেন ভাইয়া ? আমি কিছু করিনি সত্যি বলছি ।
আফরান শার্ট খুলা শেষে শার্টটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে আরিয়ার উপর ঝাপিয়ে পরে ।
___ভ…ভাইয়া কি কর…..কথা শেষ হওয়ার আগেই আরিয়ার ঠোট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয় আফরান ।
আরিয়া ছুটার জন্য ছটফট করে । কিন্তু আফরান এক হাতে আরিয়ার মাথার পেছনের চুলে শক্ত করে ধরে অন্য হাতে পিঠের নিচ থেকে অপর পাশের বাহু খানা সর্বশক্তি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে এতে আরিয়ার নড়াচড়া করার শক্তি টুকু ও হারিয়ে ফেলে ।
আরিয়ার হাত বাঁধা ।নিজেকে ছাড়ানোর মতো কোনো উপায় পেলোনা ।
আজ আফরান কে নড়পশুদের কাতারে দাঁড় করাতে ইচ্ছে হচ্ছে আরিয়ার।ঠোট জোড়া এমন করে কামড়ে দিচ্ছে বারবার একটু পর পর । সময় টা আজ বয়ে গেছে বোধহয় শেষ হবার নয় এই অবাধ্য রাত । কিভাবে আটকাবে আফরান কে? সে সুযোগ টুকু ও কেড়ে নিয়েছে আফরান। চিৎকার করার মতো আওয়াজ বের হচ্ছে না শুধু গোঙানির আওয়াজ আরিয়ার গলায় কিভাবে চিৎকার করবে? কখন থেকে উষ্ঠাদ্বয় নিজের মতো কামড়ে যাচ্ছে ছাড়ার নাম গন্ধ নেই তবে মাঝে মাঝে যে খুব জোড়ে কামড় গুলো দিচ্ছে এতোটাই বিষাক্ত ময় লাগছে যেনো এক্ষুনি দম টা বেড়িয়ে যাবে। এতো ক্ষোভ কিসের উনার আমার উপর? কি করেছি আমি?
প্রায় অনেকক্ষণ পর ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবায় আফরান ।
আরিয়া সুযোগ পাওয়া মাত্রই চিৎকার করতে লাগলো ,

___ প্লীজ কেউ বাঁচাও কেউ হেল্প মি । কিন্তু এই ঝড়োহাওয়ার রাত্তিরে কে শুনবে তার আওয়াজ?
আফরান এবার মাথা উঠিয়ে ডেভিল হেসে পাশ থেকে এক হাতে আরিয়ার উড়না টা নিয়ে মুখ বেধে দেয় ।
আরিয়া চেয়েও কিছুই করতে পারছেনা এর থেকে বড় অসহায় মূহুর্ত আরিয়ার জিবনে কখনো আসেনি । চোখ বেয়ে অনর্গল পানি ঝড়িয়ে যাচ্ছে শুধু।
আরিয়ার শরীর থেকে একটু উপর হয়ে একহাত এগিয়ে ফোনের ফ্লাশ টা বন্ধ করে দিয়ে পুনরায় আফরান নিজের কাজে মনোযোগ দেয় । পর পর আরিয়ার গলায় ঘারে পেটে কামর বসায় স্বাভাবিকভাবে নয় প্রতিটা কামড়ের জায়গা গুলোতে সঙ্গে সঙ্গে নিলচে আকার ধারণ করেছে নিশ্চিত।
বেশ কিছুক্ষণ পর স্পর্শ কাতর স্থান গুলো তেও আফরানের বেশামাল হাত চলে যায় , মত্ত হয় নির্লিপ্ত পাষন্ডময় অস্বাভাবিক ভাবে আরিয়া কে উপভোগ করায় । কেউ কি আটকানোর মতো আছে?কেউ কি আজকের রাতের কথা জানবে?

আরিয়া কি এর পরেও আফরানের সাথে থাকবে? নাকি নিজেকেই শেষ করে দেবে বাধ্য হয়ে? এমন অপবিত্র শরীরের মূল্য আছে?কাউকে জানালেও তো লাভ নেই কে বিশ্বাস করবে মি আফরান চৌধুরী তাকে রেপ করেছে? সব কিছুই বৃথা যাবে তার চেয়ে আত্মহত্যা জিনিস টাই ভালো নয়কি?
আরিয়া ব্যাথায় একটু পরপর কাতরিয়ে উঠছে ।
আফরানের তাতে কিছু যায় আসেনা সে মত্ত হয়ে আছে আরিয়া কে শাস্তি দেয়ার পরম নেশায় ।
কিন্তু এমন ভাবে তো সে তার বউকে উপভোগ করতে চায়নি সুন্দর ভাবে শুধু একটু বাঁচতে চেয়েছে বউ টাকে নিয়ে সেটা তো বউ দিতে পারলোনা। বারবার কিছু না কিছু করবেই কিন্তু আজ যেটা করেছে সেটার মূল্য অবশ্যই তার বউকে দিতেই হবে । কাকে এনেছে সে রাতের বেলা বাড়িতে ? ঐ পারফিউম এর ঘ্রান টা কার শরীরের থেকে লাগিয়েছে নিজের শরীরে ? আমার তো এমন স্মেলের কোনো স্প্রে নেই তবে কি এটা প্রমানিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় যে , অবশ্যই কাউকে এনেছিলো কই সন্ধা রাতে তো এমন সন্দেহ বচন কোনো কিছু পায়নি সে ।
প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘন্টা পর যখন বুঝতে পারে আরিয়া সব টা আর নিতে পারবেনা প্রায় জ্ঞেন হারানোর অবস্থা সেই মুহূর্তে এসে আফরান আরিয়ার শরীরের উপর থেকে নেমে পাশের বালিশটায় মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে দীর্ঘ বিষাদময় শ্বাস ছাড়ে । ইচ্ছে তো এখনো হচ্ছে একবারে মেরে দিবে এই মেয়েকে যার শরীরে অন্য পুরুষের ছোঁয়া লেগে থাকবে ঐ নষ্ট শরীর দরকার নেই তার তবুও শেষ মুহূর্তে নিজের বেহায়া মনের কাছে হার মেনে নিয়ে ছেড়ে দেয় ।

তারপর উঠে খাট থেকে নেমে সোজা ওয়াশ রুমে চলে যায় ।
আরিয়ার বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে । শরীরে বিন্দু পরিমাণ ও শক্তি নেই এই বুঝি জ্ঞান হারাবে । নিথর ক্লান্ত শরীর টা বড্ড ব্যাথায় হয়ে আছে । চোখ বন্ধ করে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে লাগলো।
ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে এসে ফোন টা হাতে নিয়ে স্ক্রিন অন করে ফ্লাশ জ্বালাবে ঠিক তখনি আরিয়া দুর্বল শরীর টাকে নিয়ে মূহুর্তে শুয়া থেকে চট করে উঠে বসে আফরানের দিকে শেষ বারের মতো অনুনয়ের চোখে তাকিয়ে মাথা টা দুদিকে নাড়িয়ে কিছু ইশারা করে ।
এই দৃষ্টির ভাষা বুঝতে আফরানের অসুবিধে হয়নি তাই ফ্লাশ না জালিয়ে আরিয়ার হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে মুখে বাধা উড়না টাও খুলে দিয়ে ক্ষীন আওয়াজে বললো ,

মি মাফিয়া পর্ব ৩৪

__ হুম ।
আরিয়ার এই শরীরে যেই টুকু শক্তি অবশিষ্ট আছে সেটা নিয়েই পাশ থেকে মায়ের ছেঁড়া অবশিষ্ট কাপড় খানা সামনে দেখেই সেটা নিয়ে পুরো শরীর ঢেকে নিয়ে খাট থেকে নামতে চায় ।
আফরান কোনো কথা না বলে আরিয়া কে কোলে তুলে ওয়াশরুমে নামিয়ে দিয়ে আসে ।তারপর…..

মি মাফিয়া পর্ব ৩৫