মি মাফিয়া পর্ব ৫৯
সুমাইয়া সাবিহা
এই কনকনে শীতের দিনেও যেনো গরমের তাপের ছোটাছুটি চারদিকে। বাড়ি ভর্তি মানুষের আনাগোনা চারদিকে ,পুরো বাড়ির ডেকোরেশন করা হয়েছে সুন্দর ভাবে সবটাই পছন্দ হয়েছে আরিয়ার। তবে একটু বেশী ভালো লাগতো বোধহয় তাজা ফুল দিয়ে হলে কিন্তু ওটা তো ২৪ ঘন্টার বেশি সতেজ থাকবেনা তাই মন খারাপ করেও লাভ নেই ।
যেহেতু বিয়েটা একবাড়িতেই হচ্ছে সেহেতু একটু নিজেকে দুরের দুরের রাখছে আরিয়া কখন কার চোখে কি পরে যায় আবার নানাধরনের কথা শুনায় অবশ্য বাড়িতে কোনো অতিরিক্ত মানুষ নেই বললেই চলে ,যারা এসেছে তাদের প্রায় আত্মীয় দের জানা আছে । তবে আজ সাঙিত বলে এতোও মানুষ নেই তবে কম করে হলেও দুইশত তো হবেই সেটাও আন্দাজ করতে পারছে ।
আরিয়া উপরে দাঁড়িয়ে রেলিং এ হাত রেখে নিচের সব টা পর্যবেক্ষণ করছে আর যখনই মনে আসছে এই সব কিছু তার জন্য তখনি লজ্জায় আড়ষ্ট হচ্ছে। ঠোঁটের কোনে কিঞ্চিত হাসির রেখা ফুটে উঠে । হ্যাঁ এই সব কিছু তার আর তার সেই কাঙ্খিত পুরুষ যার পাগলামুর কাছে হার মেনে নিজেকে স্বিকার করেছে তার সাথেই তার ভবিষ্যৎ নিবদ্ধ হবে । অবশ্যই হবে দেরীতে হলেও বুঝতে পেরেছি উনি ছাড়া আমার অস্তিত্বের কোনো মূল্য নেই উনার জন্য আমি আছি শুধু মাত্র আমি , উনার সব টা জুড়ে আমিই থাকতে চাই এছাড়া কখনো কেউ এই স্থান টুকু নিতে পারবে না যদি কখনো এর উল্টো হয় তবে সেই মুহূর্তে নিজেকে ঠিক ততটাই প্রকাশ করে দিবো যতোটা প্রকাশ উনি করেছেন । ঐ বুকে থাকার অধিকার টা শুধু মাত্র আমার হবে ।
কথা গুলো ভেবেই নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় তার মধ্যে হুট করে কেউ পেছন থেকে ম্যাম বলে ডাকে ।এই কন্ঠস্বর চিনতে আরিয়ার অসুবিধে হয়নি
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
___সব কিছু এনেছিস?
মায়া হাত থেকে ছয় সাতটা শপিং ব্যাগ আরিয়ার দিকে ধরে বললো
__জি ম্যাম ,সব গুলো জিনিস আপনার পছন্দের ব্রান্ড থেকে নেওয়া হয়েছে । আপনি যেটা দেখিয়েছেন ওটার সেম পাইনি বাট পছন্দ হবে ।
আরিয়া কথা না বাড়িয়ে হাত থেকে এগুলো নিয়ে বললো
__ওকে ,আর হ্যাঁ তুই থাকবি এখানেই ।
মায়া মৃদু হেসে বললো
__ম্যাম আসলে আপনিও এই বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন কথাটা ভেবেই আমার খুব ভালো লাগছে ,দীর্ঘ সময়ের পর আপনি আবারো স্বাভাবিক আছেন দেখেই ভালো লাগছে ।
___বেশি কথা বলিস না এখন এখান থেকে যা ।
মায়া সম্মতি জানিয়ে জায়গা ছাড়ে ।
আরিয়া ব্যাগ গুলো রুমে নিয়ে এক সাইডে রেখে ভাবতে লাগলো
___আপনি যে কখনো নিজের জন্য আলাদা কিছু নিবেন না আমি নিশ্চিত জানি তাই আনিয়ে নিয়েছি ।
সময় টা সন্ধ্যা বিকেল,চারদিকে হালকা আলো রেখা এখনো একবারে সন্ধ্যা নামেনি প্যথিবী এখনো আলোকময় তবে চৌধুরী বাড়িতে ঝাড় বাতির আলোতে আকাশের আলোক টা এতৈটা বুঝা যাচ্ছে না । বিভিন্ন লাইটিং এখনি অন করে দেওয়া হয়েছে ।
খাবারের বিশাল ব্যাবস্থা বাড়িতে করা হয়নি আফরানের কথা মতো বাহিরে কোথাও ব্যাবস্থা করা হয়েছে সব কিছুর সময় মতো ঠিক পৌঁছে যাবে ।
যদি রান্না বান্নার কাজ নাই হয় তবে তো হাতে কোনো কাজই থাকলো না ঝামেলা থাকলো না তাই খাপছাড়া লাগছে কিছু জিনিস সবার কাছে ।
কয়েকজন মেহেদী ডিজাইনার মহিলা আনা হয়েছে সেগুলোও তানভীর এনেছে । জাফর সাহেব বারবার ফুঁসছেন সব কিছু যেহেতু নিজেই করবি আমাদের কে বিয়েতে কি আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসেছিস?
পাশ থেকে খলিল সাহেব বুঝিয়ে যাচ্ছেন মাথা ঠান্ডা রাখতে ।
আয়শের পছন্দ করা সাঙিতের লেহেঙ্গা টাই এই মুহূর্তে সামিরার শরীরে জড়িয়ে আছে ,একদম পার্ফেক্ট ভাবে শরীরে মানিয়েছে সামিরার শরীরের লাল ফর্সা ত্বকের রঙের সাথে কালার টা বেশ আকর্ষণীয় লাগছে।
নিজে সাজসজ্জা শেষ করে আরিয়ার রুমে গিয়ে একটু অবাক হয় ,আরিয়া নিজের মতো ঘুমাচ্ছে দেখে মনেই হচ্ছে না যে এই মেয়ের বিয়ে ,কথায় আছে না যার বিয়ে তার খবর নেই পাড়া প্রতিবেশীর ঘুম নেই ,বিষয় টা এমনই প্রায় । কয়টা বাজে এই মেয়ে দেখেছে?
দ্রুত পায়ে গিয়ে আরিয়া কে ডাকতে লাগলো
__এই আরু,আরু কি করছিস টা কি ? আরে তোকে ডাকছে তো কখন থেকে । নিচে চল কখন রেডি হবি আর কখনই বা মেহেদি পড়বি আর এতো আওয়াজে কিভাবে তোর ঘুম হচ্ছে আশ্চর্য মেয়ে তো ।
আরিয়া ঘুম ঘুম কন্ঠে এভাবেই বলতে লাগলো
__গিয়ে কি করবো?আমার জন্য ড্রেসই তো নিয়ে আসেনি ঐ লোকটা ।
__কি বলছিস? ভাইয়া এখনো ফিরেনি অফিস থেকে? আল্লাহ তোদের দুইটাকে কি করা যায় বল তো । মাথায় কি চলে তোদের ?
কথা টা বলা মাত্রই প্রেমা রুমে ঢুকে বলে আরু ভাইয়া ফিরেছে
আরিয়া হকচকিয়ে শুয়া থেকে উঠে বসে বললো
___আমার জন্য সব কিছু এনেছে ?
__সেটা দেখিনি তো ।
আরিয়ার মুখ টা সঙ্গে সঙ্গে আবার কালচে হয়ে যায় ।
সামিরা:এই কারনেই বাবা বলছিলো তোকে আগেই নিয়ে আসতে শুনলি কই? আরে ভাইয়া তো কাজের চাপেই ভুলে গেছে এটা তো হতেই পারে স্বাভাবিক তাইনা । কিন্তু এখন কি হবে? এতো কম সময়ের মধ্যে কি করবো ?
সামিরার কথা শেষ হতেই রুমের দরজায় কেউ করাঘাত করে বললো
__ম্যাম আসতে পারি ?
সবাই সেদিকেই দৃষ্টি ফেললো, মধ্যবয়সী দুজন মহিলা হাত ভর্তি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ,পরনের জামা দেখে মনে হচ্ছে না যে বাংলাদেশি কালচারের হবে ,হাঁটু অবদি শরীরের সাথে মিশে থাকা জামা যাদ দরুন ফুল বডির রেখা স্পষ্ট। ফেইস টাও কেমন বিদেশিনিদের মতো লাগছে ।
সামিরা প্রশ্ন করলো
__আপনারা কারা?
মহিলা দুটির মুখে স্নিগ্ধ হাঁসি জমে
__স্যার পাঠিয়েছেন এগুলো ম্যামের জন্য।
কথাটা শুনা মাত্রই আরিয়া খাট থেকে নেমে দরজার কাছের মহিলা গুলোর কাছে গিয়ে বললো
__সত্যি বলছেন?
__ইয়েস ম্যাম । কথাটা বলে আরিয়ার দিকে এগুলো এগিয়ে দিলো ।
আরিয়া সেগুলো নিয়ে বললো
__এতো লেট করেছেন কেনো আপনারা ? নিশ্চয়ই উনি আরো আগেই অর্ডার করেছে ,এটা মোটেও ঠিক করেননি ।
__সরি ম্যাম স্যার কালকেই অর্ডার করেছিলেন কিন্তু ফ্লাইটের টাইট আমাদের টা সকাল বারোটায় হয়েছিলো তাই লেট হলো ।
__ঠিক বুঝলাম না ? আপনারা কি ….
___ইয়েস ম্যাম জাপানিজ।আমরা এই দেশেরই মানুষ তবে এখানে নয় ওখানেই থাকা হয় ওখানেই আমাদের হোম ।
আরিয়া বিস্ময়কর দৃষ্টি ফেলে বললো
__এগুলো ওখান থেকে এসেছে? এতো দুর থেকে এগুলো আর্ডার করার …
__স্যার সম সময় আমাদের মল থেকেই নিজের জিনিস পত্র অর্ডার করেন তবে এটা প্রথম বার হয়েছে যে , স্যার মেয়েদের ড্রেস অর্ডার করেছেন । আমাদের মল টি স্বাধারন মানুষের জন্য নয় প্রত্যেক টা প্রোডাক্ট আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের জন্য নাম করা । আপনি দেখুন প্রবলেম হলে জানাবেন , ধন্যবাদ
আরিয়ার মন টা যেনো উথাল পাতাল শুরু করে দিয়েছে মুহূর্তেই উনি এতোটা ভাবেন আমার জন্য? অথচ আমি ভেবেছিলাম উনি ভুলেই গিয়েছে । ভাবতেই চোখ দুটো ছলছল করে উঠে ।
ব্যাগ গুলো নিয়ে সামিরার দিকে দেয় ।
প্রেমা সামিরা তো এতোক্ষণ শুধু শুনেই যাচ্ছিলো আর পরপর অবাক হচ্ছিলো ,আসলেই ভাইয়া সব কিছু তেই আলাদা । নিজের জিনিস গুলো যে একটু বেশিই কেয়ারফুল।
সামিরা প্রেমা আরিয়া তিন জন মিলেই ড্রেস গুলো একবার দেখে নিয়ে মহিলা গুলো কে জানায়,
__সবক ইছু ঠিক আছে আপনারা যেতে পারেন ।
মাহিলা দুটি একবার মাথা নুইয়ে সম্মাননা জানিয়ে বিদায় দিয়ে চলে যায় ।
দুর থেকে দেয়ালে হেলান দিয়ে লাল ফর্সা সুন্দর মুখশ্রী খানা এক পানে তাকিয়ে দেখছে আর মিটি মিটি ঠোঁটের কোনে উজ্জলতা ছড়াচ্ছে। মেহেদী ডিজাইনার একজন মহিলা সামিরার হাতে মেহেদি পরিয়ে দিচ্ছে সেটাই পরোখ করে চলছে তখন থেকে দিচ্ছে । হালকা পিংক কালারের একটা টিশার্ট পরনে , উজ্জল ফর্সা শরীরে যেনো দুধে আলতা দেয়া হয়েছে এমন মনে হচ্ছে।
সামিরার চোখেও কয়েকবার বিষয় টা পরেছে চোখাচোখি হতেই দৃষ্টি নামিয়ে নিচ্ছে । আর মনে মনে ভাবছে
__লোকটা আস্ত একটা বজ্জাত,এভাবে তাকিয়ে তখন থেকে কি দেখছে হ্যাঁ ? নিজের রুপ দেখাচ্ছে? কারো চোখে যদি বিষয় টা পরে যায় তখন কি ভাববে আশ্চর্য তো ।
সামিরার চেহারায় তার ভাবমূর্তি ভেসে উঠে আয়েশের বুজতে বাকি নেই নিশ্চয়ই মেয়েটা মনে মনে তাকে ইচ্ছে মতো কথা শুনাচ্ছে ,কথা টা ভেবেই আয়শ আরেকবার হাসলো এবার মৃদু হাসি নয় শব্দ হীন খিলখিল হাসি যেটাকে বলে ।
__নিজের বউ কে সামলিয়ে রাখিস আমি আবার এতোশত বুঝি না নিজের বউ ঠিক থাকলেই চলবে ।
হঠাৎ কানের কাছে শব্দ টা বেজে উঠতেই আয়শ পাশে তাকায় আফরান কথাটা শেষ করেই নরমাল মোডে নিজের ফোন দেখতে দেখতে উপরে উঠে গেলো ।
আয়শের বুঝার বোধগম্য হলো না বিষয় টা কি হয়েছে হঠাৎ করে এটা কেনো বলে গেলো? হুটহাট কি সব শুনিয়ে দেয় ? স্পষ্ট করার জন্য পেছন থেকে ডাকলো
__তুই ঠিক কি বলতে চাচ্ছিস ?
আফরান পেছনে না তাকিয়েই উত্তর করলো
____আবির কে চিনিস নিশ্চয়ই?
___কার কথা বলছিস? আবির কে ?
আফরান কপাল কুঁচকে বললো
__আমার এতো শত জেনে লাভ নেই শুধু যেটুকু বলার বলে দিয়েছি এবার তোর ব্যাপার কিভাবে বউকে প্রোটেক্ট করবি তুই জানিস।
কথাটা বলতে বলতে আফরান নিজের রুম অবদি গিয়ে দরজা টা লাগিয়ে দিলো ।
__এসব কি ? এসব কথার অর্থ কি ? কি বলতে চাইলো আফরান? Who is Abir? এই আবির কে ? কিসের ইশারা করলো ?
প্রশ্ন গুলো নিজেই নিজের উপর ছাড়লো আয়শ ।
পাশ থেকে সাদেক বললো
___তোকে এমন দেখাচ্ছে কেনো রে? কিছু হয়েছে?
__আয়শ একবার উপরে আফরানের রোমের দিকে একবার তাকিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে উত্তর দিলো,
__কিছুনা । কিন্তু আফরান কি সব বলে গেলো
__ওহ আফরান ব্রোর কথা ছাড় তো ।
আয়শ এবার নিজ মস্তিষ্কে ফিরে মুখে হাসি নিয়ে বললো
__তা প্রেম কেমন চলছে তোর?ইয়ে মানে প্রেমার সাথে কথা বলেছিস?
___কপাল সব আমার কপাল বুঝলি । বউ হয়েও কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি না ।তুই তো এখান থেকে দেখতে পাচ্ছিস আমি তো সেই কখন থেকে পুরো বাড়ি খোঁজেই চলছি বাট হাওয়া হয়ে গেছে ঐ মেয়ে ।
আয়শ সাদেকের কাঁদে একবার হালকা শব্দে হাত মেরে একটু শব্দ করে হেসে বললো
__এই মেয়ে জাতি টাই এমন বুঝলি সব গুলো বুঝেও বুঝেনা। না ছুঁতে দেয় আর না দুরের থাকতে দেয় ।
__চুপ করবি সালে ,সব সময় রোমান্টিক মুডে কিভাবে থাকিস হ্যাঁ ? এদিকে আমি চিন্তা করতে করতে শুকিয়ে যাচ্ছি মুহূর্তে মুহূর্তে।
___তা এমন ঠাস করে কিভাবে পড়লি ঐ প্রেমার প্রেমে । কথাটা বলেই আয়শ হু হু শব্দে অট্টহাসি তুলে আবারো গলা ভিজায় , প্রেমার প্রেমে শব্দ দুইটা এতো কাছে থেকেও মেয়েটা প্রেম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এতো বছর ধরে ।
___আহ চুপ করবি তুই ? কোথায় আছে জানলে সেটা বল ।
__আরুর রুমে আছে হয়তো আরুকে ঠিক করে দিচ্ছে।
__ওওও এই কারনে ঐ মেয়ে বন্দি খানায় ঢুকে থাকবে ,একটু তো বের হতে পারতো তাইনা ।
___আমাকে না বলে পারলে ওটাকে বল গিয়ে যা ।
___হ্যা ডিস্টার্ব করছি এটাই তো বুঝাচ্ছিস তাইনা গেলাম আমি তুই দেখ তোর বউ কে ।কথাটা বলে কাঁধ থেকে আয়শের হাত টা সরিয়ে দিয়ে সাদেক উপরে হাঁটা ধরলো ।
আয়শ আবারো হেসে চোখ রাখলো সামিরা দিকে ।
পার্লারের মহিলার কাছে সাজবে না বলে প্রেমা দিয়ে নিজের হালকা মেটাব করিয়ে নিয়েছে কিন্তু কথা হলো সব কিছু ঠিক থাকলেও জামা পছন্দ হলেও তার ইচ্ছে ছিলো লেহেঙ্গা টাইপ কিছু পরবে অথচ এই লোকটা শুধু মাত্র একটাই লেহেঙ্গা আনিয়েছে বাকি দুইটা রাউন্ড জামা টাইপের সেলোয়ার সহ উড়না রয়েছে । এগুলো প্রত্যেক টার দাম টা কম করে হলেও দের থেকে দুই লক্ষ টাকা হবে সেটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। খুব সুন্দর ভাবে একদম নিখুঁত কাজ লোকটার পছন্দ তো আছে মানা যায় কিন্তু বিয়ের সময় সাঙীত কিংবা বলুদে মানুষ কি এগুলো পরে? কথাটা ভাবলেই আরিয়ার বিরক্ত লাগছে আস্ত একটা বোরিং লোক ।
ভারী দুটো জিনিস কানে গলায় যে গহনা টা পরবে এমন সুযোগ টাও নেই জামার কলার টা ঠিক কোথায় বুজতে পারছেন? গহনা টা পরলে ঠিক ভাবে দেখাও যাবেনা এটা পরেই লাভ কি? এক প্রকার বিরক্ত হয়ে প্রেমার হাত থেকে সেটা সাইডে রেখে বলে লাগবেনা আর । উনি যেমন চায় তেমনই থাকুক ।
পেছন থেকে বলে উঠলো
__এই তো বুঝার জন্য ভেরি গুড। আর এতোক্ষণ এমন তেজ দেখাচ্ছিলিস কেনো রে?
প্রেমা আরিয়া পেছনে ঘুরতেই আফরান কে দেখে একটু হকচকিয়ে উঠে ভীত হয় ।
__আপনি এখন কি করছেন এখানে ?
__তোকে বলে আসতে হবে ?
আফরান এর কথাটা শেষ হতেই কেউ বলে উঠলো
___মাত্র দুদিন পর তো বিয়ে টা হচ্ছে এখন এমন ঘুরঘুর করে মেয়েটার মাথা টা না খেলে হয়না তোমার ?
আফরান বিরক্ত কন্ঠে বললো
__উফ বাবা , তোমাদের কাছে বিয়েটা নতুন বাট আমার কাছে ওটা পুরাতন আইমিন বিশ টা বছর ধরে এই মেয়েকে দেখে আসছি ওকে ।
__বেশি কথা বলো না এখন এখান থেকে যাও ।
__পারবো না ।
জাফর বিরক্ত নিয়ে ভেতরে এসে আফরানের সামনে দাঁড়িয়ে বললো
__যেতে বলেছি যাও ,বিয়ের আগে এভাবে আর আসবেনা যখন তখন কারো নজরে পরলে বিষয় টা ভালো দেখাবে না ।
___আবারো মানুষ দের কথা তুলে ঠিক করছো না । আমি আমার বউ দেখতে এসেছি বেস ।
__নির্লজ্জ বেহায়া কোথাকার যেতে বলেছি যাও ।
জাফরের কঠোর কন্ঠের সাথে আজ তর্ক করতে ইচ্ছে হলো না বলেই কথা না বাড়িয়ে চলে এসেছে নয়তো কারো কথা পাত্তা দেওয়ার সময় এই ছেলের আছে নাকি।
__মামনি তোমার হয়েছে? কথাটা বলে আরিয়া কে এমন করে দেখে মুখে হাসি ফুটিয়ে গিয়ে হাত বুলিয়ে দেয় মাথায়
-মামনি কে আজ খুব ভালো দেখাচ্ছে।আর ঐ বজ্জাত টা জামা দিয়েছে তোমায় ?
প্রেমা পাশথেকে বললো
__হ্যা ভাইয়া তো স্পেশালি জাপান থেকে ড্রেস জুয়েলারি অর্ডার করেছে আরুর জন্য আমার তো খুব ভালো লেগেছে সব গুলো । এই যে পরিহিত এটাও ভাইয়ার দেখো ।
জাফর একবার চোখ বুলিয়ে দেখে বললো
__হ্যা সত্যিই ভালো লাগছে আর আমার মামনি কে সব কিছুতেই মানায় ।কথাটা বলে আবারো হাসে জাফর ।
বেশি রাত করো না চট করে গিয়ে হাতে রঙ টা পরে নাও যাও ।
আরিয়া একটু লজ্জা পেয়ে মাথানত করে সম্মতি জানায় ।
জাফর সাহেবের পিড়াপিড়িতে সামিরার মা বাবাও এসে উপস্থিত হয় , উদ্দেশ্য ছিলো আসবেনা বিয়ের দিন আসবে কিন্তু এতো বার করে বলায় না এসে পারলো না তারা । অবশ্য না আসার আরেকটা কারন ও আছে নাবিল এর জন্য যেই বাড়ির ছেলে তাদের ছেলেকে আটকে রেখেছে নিশ্চয়ই এই বাড়িতে কারোই আস্তে ইচ্ছে হবেনা । আজমল সাহেব তো গিয়েছিলো কি ধরনের অসভ্যতামী করে পাঠিয়ে দিয়েছিলো খালি হাতে । অবশ্য সবারই জানা আছে এই ছেলে কেমন তবুও একরাশ আশা নিয়ে গিয়েছিলো যেটার কারনে আবারও আশাহত হয়ে ফিরতে হয়েছে ।
মা বাবাকে দেখেই সামিরা দ্রুত পায়ে যেটুকু মেহেদী পরা হয়েছে সেটা নিয়েই দাঁড়িয়ে গিয়েছে ।
রাবেয়া বেগম মেয়েকে আজ কদিন না দেখে একটু দেখার জন্য কেমন করছিলো তাই এসেই সামিরা কে জড়িয়ে ধরে ।
এমন সময় পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো
___আমাকে তো ভুলেই গিয়েছিল দেখছি ,এই দুদিন ধরে এখানে আসার পর একবারও কল দিয়ে ছিলি? প্রহর গুনতে গুনতে আমার তো হাড়গোড় এর অবস্থা নাজেহাল হয়ে গিয়েছে রে।
সামিরা এই কন্ঠ শুনে বুঝতে বাকি নেই এটা তার মামাতো ভাই আশরাফ ছাড়া কেউ নয় । দুমাস হলো তাদের বাড়িতে এসে নাবিল ভাইয়ার জায়গা টা নিয়েছে অবশ্য কাজের কারনেই এসেছে । এতো বছর ইতালি তে ছিলো হুট করেই দেশে ফিরার ডিসিশন নিয়েছে । সামিরার কাছে এই লোকটাকে এতজটাও পছন্দ নয় বিনা কারনেই ,তবে সামিরা খেয়াল করেছে অযথাই আশরাফ তার সাথে কথা বলার সুযোগ খুঁজে বিষয়টা সামিরার চোখ এড়াতে পারেনি ।
মা কে ছেড়ে দিয়ে এবার আশরাফের সামনে গিয়ে বললো ,এমা কি বলছেন ভাইয়া আসলে কদিন ধরে একটু ব্যাস্ততায় কাটছে তাই কল দিতে পারিনি ।
আশরাফ :- তা আমি কল দিলেও কয়বার উঠিয়েছিস?
__আসলে খেয়াল করিনি ভাইয়া ।
আশরাফ একটু হেসে বললো
__ওকে নু প্রবলেম । তা তোর ঐ হাসব্যান্ড আইমিন এক্স হাসব্যান্ড হবে কিছুদিন পর ওটা কোথায় ? আমিও দেখতে চাই যে তোকে ও রিজেক্ট করেছে তার ফেইস টুকু ।
সামিরার কাছে কথাটা ভালো লাগেনি ,এক্স হাসব্যান্ড কখন হলো? এখনো তো হয়নি তাইনা । তাহলে এই ওয়ার্ড টা কেনো শুরুতে যোগ করলো ।
আশরাফ:- কি হলো বল ।ঠিক আছে আমি খুজে নিচ্ছি । কথাটা বলে আশরাফ চারদিকে চোখ বুলাতে বুলাতে এদিক ওদিক হাঁটতে থাকে ।
আজমল সাহেব আর রাবেয়া বেগম কে দেখে আয়শ একটু কাচুমাচু শুরু করলো আসলে সবাই বিষয় টা জেনে যাওয়ার পর কারো সাথে তেমন কথা বলেনি আয়শ কি বা বলবে? বলার মতো কিছু আছে নাকি? কিন্তু আজ বলতে চাচ্ছে কারন সে তার বউকে আর ঐ বাড়িতে রাখতে চায়না যতো তারা তারি সম্ভব নিয়ে আসবে তার কাছে । সব টা প্রকাশ করার পর বউকে দুরে রাখার প্রশ্নই উঠে না আর ।
ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে আজমল সাহেবের সামনে দাঁড়িয়ে নিম্ন গলায় বললো
__বাবা কেমন আছেন ?
আজমল আয়শের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বললো
___এতোদিন পর এই বাবাকে মনে পড়েছে? আমি তো কিছু বলিনি তোমাকে ,উল্টো আমি কৃতজ্ঞ তোমার প্রতি যে আমার মেয়েটার সম্মান টা বাচিয়েছো । কিন্তু আমি তো তোমার কাছে আগে থেকেই বাবার স।থানা পেয়েছিলাম তাহলে কিসের এতো সংকোচ ছিলো ?
আজমলের ঠিক ঠোঁটের নিচে কাটা দাগ টা লক্ষ্য করে আয়শ একটু বিচলিত হয়ে বললো
__বাবা কিছু হয়েছে? এখানে কিভাবে ব্যাথা পেয়েছেন?
__আসলে তেমন কিছু না একটু লেগে কেটে গিয়েছে কিভাবে খেয়াল করিনি।
___তাই বলে এতো টা ..
___আচ্ছা এসব ছাড়ো ,কেমন আছো এমনিতে ? ভুলে গিয়েছো সেটা তো বাদ দিলাম । তবে তোমাকে নিয়ে একটু করা বলতাম ।
__হ্যা বলুন না
পাশ থেকে রাবেয়া বললো
____তোমার ভাই এখন কোথায় আছে আমাকে একটু বলবে ? বাড়িতে আছে তো?
__হ্যা আফরান তো ওর রুমেই আছে , কিছু প্রয়োজন ?
রাবেয়া কথা না বাড়িয়ে উপরের দিকে চলে গেলো
__হ্যা বাবা কি যেনো বলছিলেন ?
__কথা টা এখন না বললেও হতো তবে বলে যখন দিয়েছি শেষ করেই যাই ,বলছিলাম তোমার আর সামিরার ডিভোর্স নিয়ে । আমি জানি তুমি আরো আগেই ডিভোর্স চেয়েছো হয়তো আমার মেয়ের কাছে তোমার বাবার কারনে আটকিয়ে আছে । আমিও আমার মেয়ের একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই তাই আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও আমি ভেবে ফেলেছি । বিয়েটা শেষ হোক আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলে সব টা বুঝিয়ে বলবো তাছাড়া আমার মেয়েও নিশ্চয়ই এসব নিয়ে ভেতর থেকে ভেঙে পরছে মুখে না বললেও আমার বুঝার ক্ষমতা আছে আয়শ। তোমাদের দুজনকে তো আর বাধ্য করে সংসার করাতে পারবো না তাই যতো জলদি সম্ভব সম্পর্ক টার ইতি টেনে নতুন জিবন দিতে চাচ্ছি ।
আজমল সাহেবের প্রতিটা কথা আয়েশের ঠিক বুকে গিয়ে আঘাত হানছে ,মোটেও এই মুহূর্তে এসব শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না । কিন্তু নতুন জিবন বলতে ঠিক কি বলতে চাচ্ছে সেটা একটু হলেও আন্দাজ করে আবারো প্রশ্ন করলো
__আপনি কি ওর বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন ?
__তুমি ঠিক ধরেছো,আমার বড় বোন সাহিদার ছেলে আশরাফ কে তো চেনোই ওর সাথেই প্রস্তাব করেছে আসলে আশরাফ ও এটাতে মত দিয়েছে তাই আমি কোনো বাধা দেখছি না । আমার মেয়ে সুখী হলেই আমি শান্তি।
ঠিক বা পাশটায় হালকা চিনচিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছে,এইসব শুনার পরে যা কিছু বুঝিয়ে বলার মতো ছিলো সব টা যেনো গুলিয়ে ফেলেছে আয়শ । মুখ দিয়ে আর একটা শব্দ পর্যন্ত আসছে না শুধু চুপ করে তাকিয়ে রইলো একটু অদুরে দাঁড়িয়ে থাকা সামিরার দিকে ।
__কি বলেছি বুঝেছো ? তুমিও সামিরার খারাপ চাও না সেটা আমিও জানি আয়শ । তাই দেরী করতে চাচ্ছি না ।
আজমলের কথা শেষ হতেই আয়শ আর এক মুহূর্তও জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না হনহন পায়ে জায়গা ছেড়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে গেলো ।
ম্যাম নাম টা যেনো কি আপনার হবু হাসব্যান্ড এর?
ডিজাইনার মহিলার কথা টা কর্নপাত হতেই আরিয়া যেনো লাল হয়ে যাচ্ছে।কারো মুখে নিজের সাথে হাসব্যান্ড শব্দ টা যেনো অনেক লজ্জার একটা বিষয় হয়ে গেলো এই মুহূর্তে আরিয়ার কাছে ।
___বলবেন প্লীজ ম্যাম
__আফরান
__ফুল নেম বলুন ম্যাম
উনার ফুল নাম টা তো আমি জানিনা কিভাবে বলবো এখন? না বলতে পারলে তো একটা লজ্জার বিষয় হয়ে যাবে মনে হচ্ছে এখন।
পাশ থেকে আফরান হুট করে কোথা থেকে এসে বললো
___তোর দেখছি লজ্জা শরমের কিছু নেই হাসব্যান্ড এর নাম মুখে নিতে তোর লজ্জা করলো না রে?
আরিয়া কপাল কুঁচকে সেদিকে তাকায় ইচ্ছে করে কদিন ধরে এই লোকটা এমন ভাবে পিছে লেগেছে মনে হচ্ছে আমি উনার হাতের কোনো বস্তু যেটাকে উনি নিজের মতো বলতে পারেন ।
___এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
আফরান কে দেখে মহিলাটি একবার ঢোক গিললো , আফরান চৌধুরী কে ফোনে দেখা আর বাস্তবে দেখার মাঝে আকাশ পাতাল পার্থক্য ভয়ঙ্কর সেই রুপ টা আজ চেহারায় না থাকলেও দেখতেই ভেতর টা কেমন গুলিয়ে ফেলে ভয়ে।
পাশ থেকে একজন বললো
এই যে তুমি একটু দুরে দুরে থাকো আপাতত ,বিয়েটা এক বাড়িতে হচ্ছে দেখে যখন তখন আসতে পারোনা বউয়ের সামনে । সব সময় নিজেকে ওভারে স্মার্ট ভাবা ঠিক কাজ নয় এটা বিয়ে বাড়ি ফেলনা নয় ।
আফরান এর কান অবদি আসতেই হাত দুটোর শিরা উপশিরা গুলো ভেসে উঠলো নিলচে হয়ে ।
তার মধ্যেই কোথা থেকে রহিমা বেগম এসে বলে উঠলেন ,দেখলে তো কি বললো বলেছিলাম তোমার এসব নেকামু আমার মেয়ের জন্য বিপদ হবে সমাজের সামনে।
আফরান নিজেকে কন্ট্রোল করার যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়ে একবার রহিমা বেগমের দিকে ফিরে তাকায় ।
___এভাবে কি দেখছো? ভুল বলেছি কি ?
__উহুম ,ভুল সময়ে ভুল মানুষ টিকে বলছেন ।
কথাটা শেষ করে আফরান আরিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো আমার রুমে আস পাঁচ মিনিটের মধ্যে ।
___একদম না আরিয়া ,এই ছেলে পাগল হয়ে গছো?দেখছোনা বাড়ি ভর্তি মানুষ এভাবে হুট করে যখন তখন কথা বলতে পারো না ।
আফরান কথা না বাড়িয়ে চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে তানভীরের কাছে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কিছু একটা বলে যেটা বুঝার উপায় হলো না আরিয়ার এতোদুর থেকে ।
এর মধ্যেই প্রায় অনেক টা সময় কেটে যায় । আফরান নিজ বারান্দায় কাঁচের টেবিল টার উপর দুটো বিয়ারের বোতল রেখে একটা হাতে নিয়ে এই পর্যন্ত দশ গ্লাসের মতো গিলেছে এগুলো । চোখ দুটো ভিষন রকম জ্বলছে বারান্দার লাইট টাও অফ মুড ,হালকা চাঁদের আলোতেই বসে বসে এসব গিলছে। অকস্মাৎ হাতের মুঠোর বোতল টা ছুঁড়ে ফেলে নিচে । তবুও রাগ যেনো কমছে না ,ভেতরে যেনো অগ্নিদগ্ধ হচ্ছে। নিচ থেকে ভাঙা বোতলের একটু অংশ হাতে নিয়ে এটার দিকে তাকিয়ে একবার ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে পরিহিত শার্টের উপর থেকে বোতাম দুইটা একহাতে ছাড়িয়ে ডান হাতে ধরে রাখা কাঁচ টা দিয়ে বুকের বা পাশ টায় পরপর খুব ধীর গতিতে আক টানতে থাকে । মুখে বেপরোয়া হাসি চোখ বেয়ে স্বগতীতে জল গড়াচ্ছে। এই কন্ট্রোল লেস রাগের তাপমাত্রা যে বেগতিক হয়ে আছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে ।
মিনিটের কাছাকাছি হতে চললো আফরানের হাত থামছেনা নিজেকে আঘাত করা থেকে , মুখ থেকে দুটো শব্দ দাঁত চেপে প্রকাশ করে
__এই হার্ট আমি চাইনি যেটা নিজের জন্য নয় অন্যের জন্য আবেগাপ্লুত হবে । এই হৃদয় আমি চাইনি যেটা অন্যকে দেখার তীব্র ইচ্ছা জাগবে । এই দুর্বলতা আমি চাইনি যার কারনে নিজকে কন্ট্রোল করতে হবে ।
এশব্দ গুলো বলা শেষ করে এবার ভাঙা কাঁচের টুকরো টা নিজের মুখের সামনে ধরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলে ।
বুক থেকে গড়গড়িয়ে রক্ত রঞ্জিত হচ্ছে সাদা শার্ট ক্রমাগত ভাবে ,রঙ বদলে লাল হয়েছে পরনের জামা অথচ আফরানের সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই উল্টো আরো দুটি শব্দ উচ্চারণ করে ,
__এই কন্ঠ দিয়ে বারবার ডাকি তাইনা? এই কন্ঠস্বর আমার চাইনা বেহায়া হার্টবিট চাইনা আমার ।
কথাটা বলেই নিজের গলার দিকে কাঁচ টা এগুতেই কানে চিৎকারের শব্দ বেজে উঠে । গুঞ্জনের শব্দ চারদিক থেকে ভেসে আসছে আফরানের কানে ।
মি মাফিয়া পর্ব ৫৮
এতেই যেনো আফরানের শান্তি মিলেছে সামান্য হলেও ,তাইতো হাত থেকে ভাঙা কাঁচ টা রেখে দেয় স্বযত্নে টেবিলের উপর ।মুখে বাঁকা হাসি রেখে পাশ থেকে ফোনের স্ক্রিনে একটি ভিডিও চালু করে ।
যেখানে স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে নিচ তলার সকল মানুষ একত্রে জড় হয়ে আছে …… তারপর………