মোহশৃঙ্খল পর্ব ২

মোহশৃঙ্খল পর্ব ২
মাহা আয়মাত

নিশুতি রাত। চারপাশ নিস্তব্ধ, শহরের কোলাহল ঘুমিয়ে পড়েছে বহু আগেই। রুমের চারদিকে ছড়িয়ে আছে আলো–ছায়ার এক নরম খেলা। বৈদ্যুতিক আলোর কোনো চিহ্ন নেই—চারপাশে শুধু কয়েকটি মোমবাতির মৃদু শিখা, যা নিঃশব্দে গড়ে তুলেছে এক মোহময়, স্বপ্নিল আবহ। দেয়ালের গায়ে কাঁপছে মোমের নাচা-নাচা শিখা, যেন ঘরটিই নিঃশ্বাস নিচ্ছে ধীরে ধীরে, অদৃশ্য কোনো জীবন্ত অনুভূতির মতো।
ঘরের হাওয়া টানটান নয়—বরং নরম, পরিমিত শীতল। যেন কারও কোমল নিঃশ্বাস ছুঁয়ে যাচ্ছে প্রতিটি কোণ, ঠিক ততটুকুই, যতটুকু হলে শরীরটা আরাম পায়, মনটা ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসে। বাতাসে মিশে আছে গোলাপের পাপড়ির গাঢ় সুবাস—সময়ের গতি যেন থেমে গিয়ে অনুভূতির এক নির্বাক প্রকাশ হয়ে উঠেছে সেই সুবাসের ভেতর।

ঘরের প্রতিটি কোণে গোলাপের পাপড়ির ছড়ানো ছোঁয়া—মেঝে থেকে শুরু করে বিছানার সাদা চাদর পর্যন্ত। বিছানায় নেই কোনো অতিরিক্ত সাজসজ্জা, তবুও গোলাপের কয়েকটি পাপড়ির হালকা ছিটানোতেই যেন তৈরি হয়েছে এক গভীর, স্নিগ্ধ আবেশ।
সেই বিছানাতেই শুয়ে আছে মেহজা—নিশ্চল। তার নিঃশ্বাসে কেবল হালকা ওঠানামা। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, সে ঘুমিয়ে আছে কোনো শান্ত স্বপ্নে। কিন্তু বাস্তবটা ছিল অন্যরকম।
ধীরে ধীরে তার চোখের পাতাগুলো কেঁপে ওঠে। আলো ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ে তার চেতনায়। প্রথমে সব ঝাপসা—অচেনা, অথচ কেমন যেন পরিচিত। চোখ মেলে চারপাশে তাকিয়ে সে থমকে যায়। এই রুমটা… এটা তো আরভিদের! বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে। কিন্তু সে তো নিজের বাসায় কবুল করার কয়েক মুহূর্ত পরেই জ্ঞান হারিয়েছিল। তাহলে কি তাকে অজ্ঞান অবস্থায় কারদার ম্যানরে নিয়ে আসা হয়েছে?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেহজা ধীরে ধীরে উঠে বসে। চোখের দৃষ্টিতে খোঁজে চারপাশ। হঠাৎ তার চোখ যায় সামনে রাখা সোফার দিকে—আরভিদ বসে আছে সেখানে। সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেহজার দিকে। চোখে কোনো প্রশ্ন নেই, কোনো রাগ নেই—শুধু এক ধরনের নেশা, এক অদ্ভুত মোহ, যেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। মেহজা মুহূর্তের জন্য নিজেকে সরিয়ে নিতে চায় সেই দৃষ্টির ভেতর থেকে। সে বুঝতে পারে, আরভিদ তাকে দেখছে না—সে গ্রাস করছে।
ধীরে ধীরে আরভিদ উঠে দাঁড়ায়। তার চোখে লেগে আছে এক ধরণের নিয়ন্ত্রণহীন উন্মাদনা। শব্দ ছাড়াই সে এগিয়ে আসে বিছানার দিকে। মেহজার বুক ধুকপুক করে ওঠে। গলা শুকিয়ে আসে। সে পেছনে সরতে চায়, কিন্তু শরীর কেমন যেন অসাড়।

আরভিদ মেহজার পাশে এসে গালে হাত রাখে। মেহজা একটু ঘাবড়ে যায়, কারণ সে বুঝতে পারে আরভিদ কী চাইছে—যা সে একদমই চায় না। দৃঢ় চোখে তাকিয়ে কাঁপা হাতে আরভিদের হাত সরাতে যায়, ঠিক তখনই আরভিদ তার চোয়াল শক্ত করে চেপে ধরে। কিন্তু মেহজা কিছুটা ভয় পেলেও, পরমুহূর্তে নিজেকে সামলে নেয়। আগুনের মতো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সে আরভিদের চোখে চোখ রাখে।
আরভিদ হিংস্র চোখে, কড়া গলায় বলে,
— অনেক সহ্য করেছি, মেহু। দিনের পর দিন নিজেকে আটকে রেখেছি তোকে পুরোপুরি আমার করে তোলার জন্য। একটুখানি ছোঁয়ার আশায় পুড়েছি প্রতিক্ষায়। কিন্তু আজ.!? আজ আমার সব ধৈর্য শেষ। আমাকে বাধা দিয়ে হিংস্র করে তুলিস না! তার ফল তুই সহ্য করতে পারবি না।
মেহজার চোখে জ্বলছিল ক্রোধ, কণ্ঠে কাঁপছিল দৃঢ়তা,

— আমি আপনার ছোঁয়া চাই না, আরভিদ ভাই। আমার শরীর, আমার সিদ্ধান্ত।
আরভিদের ঠোঁটে হালকা বাঁকা হাসি, চোখে পিশাচের মতো দীপ্তি। সে ধীর, কিন্তু হিংস্র কণ্ঠে বলে,
— তোর চাওয়া, না চাওয়াতে আমার কিছু আসে যায় না, রেডলিপ। তোকে আমার লাগবে, এটাই আসল কথা। তোর ইচ্ছা আমার নিয়মের বাইরে। আমি যখন যেভাবে চাইবো, তুই নিজেকে সেভাবে আমার কাছে সঁপে দিবি।
মেহজা ঠোঁটে ব্যঙ্গ, কণ্ঠে অবজ্ঞা নিয়ে বলে,
— আপনার মতো পুরুষদের জন্য বাজার আছে, পতিতালয় আছে। টাকা দিলে রাজা বানায়, ইচ্ছেমতো সাড়া দেয়। কিন্তু আমি মেহজা তালুকদার, শরীরের দাম দিতে শিখিনি, কোনো আদেশ বা দামে বিকোই না।
আরভিদের রাগে শরীর কাঁপে। সে হঠাৎ মেহজার চুলের মুঠি চেপে ধরে, মুখটা ওর খুব কাছে এনে দাঁত কিঁচিয়ে বলে,

— এই আগুন শুধু মেহজা তালুকদারের জন্যই! মিসেস আরভিদ কারদারের জন্য বড্ড বেমানান।
মেহজা যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে, কিন্তু তার গলার সুর বদলায় না—একটুও না। দাঁতে দাঁত চেপে, ঝড়ের মতো গলায় বলে,
— নামটা বদলেছে, আগুনটা না আরভিদ ভাই! যেটা আপনি দখল ভাবছেন, সেটা আসলে ধ্বংসের শুরু ছিলো আপনার।

কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আরভিদ রাগে উন্মত্ত হয়ে ওঠে। সে মেহজার চুল ছেড়ে দিয়ে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয়। এরপর নিজের পুরো শরীরের ভার মেহজার উপর চাপিয়ে, তার দুই হাত বালিশের সাথে চেপে ধরে রাখে। আরভিদের চোখে তখন আর মানুষের কোনো ছায়া রইল না—শুধু জ্বলজ্বল করছে এক অশান্ত, উন্মাদ আগ্রাসী নেশার অগ্নি। মেহজাকে সামনে পেয়ে সে থেমে থাকার সুযোগ পেল না, থামার কথাও ভাবল না।
হঠাৎ করেই ঝাঁপিয়ে পড়ে মেহজার ঠোঁটে। সেই চুমু নরম ছিল না, বরং দাবানলের মতো তীব্র, আগ্রাসী, নিজের করার তাগিদে ভরা। মেহজা ছটফট করতে থাকে, শ্বাস আটকে আসে, শরীর কেঁপে ওঠে—তবু আরভিদের কোনো হুঁশ নেই। সে ডুবে গেছে এক ভয়ংকর ভালোবাসার অন্ধকারে।

অল্প সময়ের জন্য ঠোঁট সরালেও, আরভিদের চোখে যেন আরও গভীর উন্মাদনার ঝলক। মেহজার গালের পাশে মুখ এনে সে নিঃশ্বাস নেয়—একটা অদ্ভুত তৃপ্তি খেলে যায় তার চোখেমুখে, যেন এই গন্ধটাই তার জীবনের প্রয়োজন। ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় তার কপালে, গালে… তারপর চিবুক ছুঁয়ে চুমু খায়, কোথাও কোথাও হালকা চাপ দেয় দাঁতে—সেই দাগ যেন বলে দেয়, “তুই আমার মেহু। একান্তই আমার।”
ধীরে ধীরে নামতে থাকে গলার দিকে। সে চোখ বন্ধ করে মেহজার ত্বকের গন্ধ মিশিয়ে নেয় নিজের নিঃশ্বাসে—একটা বিকৃত ভালোবাসার গভীরতা ফুটে ওঠে তার আচরণে। তারপর গলায় আলতো চুমু খায়, কিছুটা নরম, কিছুটা দাবিদারির মতো। হঠাৎ করেই কামড়ে বসে—ব্যথাটা যেন ভালোবাসারই অন্য রূপ। যেন সেই যন্ত্রণার মাঝেই আছে তার অধিকারপ্রসূত শান্তি।

মেহজার গলার প্রতিটি কোণায়, প্রতিটি চিলকে সে নিজের ছাপ রেখে যেতে চায়—কখনও চুমু দিয়ে, কখনও কামড় দিয়ে, কখনও দৃষ্টির দহন ছড়িয়ে দিয়ে। ভালোবাসা আর পাগলামির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষটা যেন ঠিক বুঝতেও পারে না—সে প্রেম করছে, না দখল নিচ্ছে।
— প্লিজ… আমাকে ছেড়ে দিন, আরভিদ ভাই… আমি…আমি এসব সহ্য পারছি না…

কিন্তু আরভিদ তখন এক গভীর, অন্ধ আবেশে ডুবে—শুনছে না, বোঝেও না। ভালোবাসা, অধিকার, কামনা—সব কিছু একসঙ্গে গুলিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে এক ভয়ানক রূপে। সে গলা থেকে মুখ উঠিয়ে মেহজার বুক থেকে শাড়ির ভাঁজ সরিয়ে নেয়। তার দৃষ্টি সেখানে থমকে যায়—একধরনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা জমে ওঠে চোখে।
মেহজা আঁকড়ে ধরা হাত ছাড়া পেতেই আরভিদকে সরাতে চায়, কিন্তু আরভিদ তখন নিজের জগতেই ডুবে। তার মধ্যে এক অস্থির অন্ধকার—যা কোনো কথা বা ইশারায় থামে না। সে মেহজার শরীর থেকে টেনে শাড়িটা খুলে মেহজার হাত দুটো বেঁধে ফেলে। মেহজার শরীর কাঁপতে থাকে, চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে নীরব কান্না। ভিতরে ভিতরে তার আত্মা চিৎকার করে ওঠে, কিন্তু ঘরটায় তখন শুধু গভীর নিস্তব্ধতা।

রাতের আকাশটা যেন এক বিশাল শূন্যতা—তারাভরা, তবু নিঃসঙ্গ। দমকা হাওয়ায় কাঁপছে চারপাশ, ছড়িয়ে পড়ছে নীরব সৌন্দর্য। বেলকনির রেলিংয়ে হালকা ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অর্তিহা। চোখ তার আকাশের দিকে, অথচ মন যেন বহু দূরে কোথাও হারিয়ে গেছে। মুখে কোনও অভিব্যক্তি নেই, কিন্তু দৃষ্টিতে জমে আছে বিষাদের নিঃশব্দ ছায়া—নিশ্চুপ, ক্লান্ত, নিথর।
হঠাৎই পেছন থেকে পুরুষালি দুটো হাত এসে আলতো করে জড়িয়ে ধরে তার কোমর। সে কেঁপে ওঠে না, চমকে ওঠে না—শুধু নিঃশব্দে স্থির হয়ে থাকে। কারণ এই স্পর্শ তার চেনা, খুব ভালো করেই জানা।
পুরুষটি পেছন থেকে অর্তিহার কোমর জড়িয়ে ধরে মুখ ঝুঁকিয়ে চুলে নাক ডুবিয়ে শ্বাস নেয় গভীরভাবে। কণ্ঠে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা মিশ্রিত উন্মাদনা,

— “তোর এই বার্গান্ডি রঙের চুলে এক অদ্ভুত মাদকতা লুকিয়ে আছে। জানিস, এই চুলের গন্ধ, এই রহস্যময় আবেশ—সবকিছুই যেন অনায়াসে আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, আমার মিস্ট্রি মারমেইড।“
তার কথার মাঝে ভালোবাসার চেয়ে বেশি ছিল এক ধরনের ঘোরলাগা দাবি—নেশার মতো অধিকার।
অর্তিহাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয় পুরুষটি। এক হাত চিবুকে, আরেক হাত বুকের নিচে। চোখে চোখ রেখে ঠাণ্ডা অথচ ঝলকে ওঠা এক দৃষ্টিতে বলে,

— তোর এই টানা টানা হরিণী চোখগুলো আমার নিঃশ্বাস থামিয়ে দেয়। যেন এই চোখেই আমার আত্মা বন্দি আছে, লিটলহার্ট… তুই জানিস না, তোর চোখ দুটো আমায় কোথায় নিয়ে যায়।
তার আঙুল ছুঁয়ে যায় অর্তিহার ঠোঁটে—ধীরে, নিখুঁত স্পর্শে, যেন কোনো প্রাচীন শিল্পকর্মের ওপর আঙুল চালিয়ে যাচ্ছে। কণ্ঠে একরকম পাগলামি,
— তোর এই গোলাপি ঠোঁট… এগুলো তো ঠোঁট না অর্তি, এগুলো নেশার রাস্তা। আমি বারবার পথ হারিয়ে ফেলি এদের মাঝে। বাঁচার ইচ্ছেটাও তুই কেড়ে নিস এই ঠোঁট দিয়ে।
তার ঠোঁট এবার নেমে আসে অর্তিহার গলায়, বুকে। ছুঁয়ে যায় ধীরে, মৃদু কিন্তু গভীর স্পর্শে। কণ্ঠে হিমশীতল উষ্ণতা,

— তোর শরীরটা… এত নিষ্পাপ, এত ভয়ঙ্করভাবে সুন্দর…আমাকে আর কিছু না ভাবতে দেয় না। আমি প্রতিদিন তোর মধ্যে হারিয়ে যেতে চাই, আবার আবার আবার… যেন এই সৌন্দর্যটাই আমার শেষ পরিণতি।
তারপর হঠাৎ অর্তিহাকে একদম নিজের শরীরে মিশিয়ে ফেলে। নিঃশ্বাস গা ছুঁয়ে যাচ্ছে। কণ্ঠে রুক্ষ ভালোবাসার ভয়াবহ ছায়া,
— সর্বোপরি… তোর এই মোহনীয় সৌন্দর্যটা আমাকে হিংস্র করে তোলে, বেবিডল। আমি তোকে চাই—নিঃশেষে,এক বিন্দুও কারো জন্য নয়।“
অর্তিহা তখনও নিশ্চুপ। চোখ নামিয়ে নিচু স্বরে বলে,
— আদ্রিক ভাই… আজকে… বিয়ে বাড়ি। বাড়িতে অনে…
কথা শেষ হবার আগেই আদ্রিক তার ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে। এবার আর মিষ্টি নয়, যেন আদেশে ভরা অদ্ভুত প্রেম,

— তো কী? আদ্রিক কারদার কি কারো কথা ভেবে নিজেকে থামিয়ে রাখে?”
এক মুহূর্ত নীরবতা। তারপর আদ্রিক যেন আর সহ্য করতে না পেরে তাকে কোলে তুলে নেয় এবং রুমের দিকে হাটা ধরে। চোখে তখন উন্মাদ ভালবাসা আর ক্ষুধার মিশ্র ছায়া।
বিছানায় অর্তিহাকে শুইয়ে আদ্রিক নিজের শার্ট ছিঁড়ে ফেলে দেয়। আর কোনো কথা নয়, শুধু নিঃশ্বাসের শব্দ, আর ভেতর থেকে ছুটে আসা এক পাগলা আসক্তি।

মোহশৃঙ্খল পর্ব ১

অর্তিহা তখনও চুপচাপ। শুয়ে থাকে, চোখ সিলিংয়ের দিকে। কোনো ছটফটানি নেই, কোনো প্রতিরোধ নেই।
শুধু দুই চোখে এক অদ্ভুত শূন্যতা। যেন চোখে ব্যথার চিৎকার জমে আছে, অথচ শব্দে রূপ নেয়নি। বুক ভেদ করে বেরিয়ে আসতে চায় কান্না, কিন্তু সে জানে—এই কষ্টের শব্দ কারও কানে পৌঁছায় না। তাকে কেউ বোঝে না। এমনকি… আদ্রিকও না। কারণ তার কাছে অর্তিহা মানে শরীর।
আর অর্তিহা? সে এখন কেবল একটি অভ্যস্ত দেহ—নিয়মিত নিঃস্ব হওয়ার জন্য তৈরি। আত্মা, চাওয়া, অনুভূতি—সবকিছু এক ভয়ঙ্কর অভ্যাসে বিলীন হয়ে গেছে।

মোহশৃঙ্খল পর্ব ৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here