যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১৬

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১৬
মম সাহা

আগস্টের গগণে মুখ ভার মেঘমালার। ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে যেন বৃষ্টি হবে কত! ছটফট করছে বৈরি বাতাস। ধূলো ময়লা উড়ে একাকার শহুরের পথ।
অন্ধকার পুরো বাড়িটা থমথমে হয়ে আছে। সন্ধ্যা হতেই বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে মহল্লায়। দূরের কবির চাচার দোকানে সাউন্ড সিস্টেমে পুরো হিন্দি গান বাজচ্ছে। যুবক-কিশোর ছেলেদের হৈচৈ শোনা যাচ্ছে থেকে থেকে। লুডুর আড্ডা বসে আবার সেখানে রোজ বিকেলে। আজও তা-ই বসেছে হয়তো!

চিত্রা শুয়ে ছিলো বিছানায়। ঘুমিয়েই ছিলো বলা যায়। হুট করে মেঘের এমন ভয়ঙ্কর গর্জনে সে জেগে গিয়েছে। পাশেই সাইলেন্ট ফোনটা অনবরত বাজছে। সাইলেন্ট থাকায় শব্দ ছুঁতে পারেনি তার কানকে।
চিত্রা ফোনের স্ক্রিনে দেখলো মায়ের নামটা জ্বলজ্বল করছে। দুপুরে বাড়ির সকলে একটা বিয়ের নিমন্ত্রণে গিয়েছিলো। সে আর অহি আপা বাড়িতে ছিলো। দুপুরের খাওয়ার পর এসে ঘুমিয়েছে যে আর তার কোনো খবর ছিলো না।
ফোনটা কেটে যাওয়ার আগেই রিসিভ করল চিত্রা। অপরপাশ থেকে তখন মুনিয়া বেগমের চিন্তিত কণ্ঠ,
“কোথায় ছিলিস, চিত্রা? কতক্ষণ যাবত কল করছি!”
চিত্রার ঘুম জড়ানো কণ্ঠ তখনও, “ঘুমিয়ে ছিলাম, আম্মু।”
“এমন করে কেউ ঘুমায়? আচ্ছা বৃষ্টি শুরু হয়েছে কি?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মায়ের প্রশ্নে চিত্রা বারান্দা দিয়ে বাহিরে তাকালো। আকাশের অবস্থা তেমন ভালো নয়।কিছুক্ষণ পরেই হয়তো ধরণীকে শান্ত করতে অম্বর ছেদ করে প্রেমের উষ্ণ অনুরাগের ন্যায় বৃষ্টির ফোঁটা নেমে আসবে।
চিত্রা বাহিরের আকাশেই বিষণ্ণ দৃষ্টি রেখে বলল,
“না, এখনো আসেনি। তবে, আসবো।”
“আমাদের এখানে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে তাই আমরা বের হতে পারছি না। তুই একটু ছাঁদের জামাকাপড় গুলো এনে রাখ, মা। আর ছোটো আপাকে বলবি বাড়িতে থাকতে। দু’জনে দরজা আটকে রাখবি। আর চাচাকে বলে দিয়েছি মেইন গেইট যেন অপরিচিত দেখলে না খোলে। কেমন?”
চিত্রা ছোটো কণ্ঠে উত্তর দিল, “আচ্ছা।”
এরপরই যেমন ব্যস্ততায় কল এসেছিলো, তেমন ব্যস্ততাই কলটা কেটে গেলো। চিত্রা মোবাইলের স্ক্রিনে সময় দেখে নিলো। সাগে ছয়টা বাজছে। অলস ভঙ্গিতে বিছানা ছেড়ে নামলো ও। বারান্দার দরজাটা আটকে দিলো। ধূলো এসে ইতিমধ্যে বারান্দাটা ভরে গিয়েছে।

নিজের রুম থেকে বের হতেই দেখলো অহি আপা তার রুমের দিকেই আসছে। পরনে বাহিরে যাওয়ার পোশাক। কোথাও যাচ্ছে হয়তো! চিত্রা এগিয়ে গেলো তাই।
চিত্রাকে দেখেই গাল ভোরে হাসলো আপা। গাল টেনে বলল, “কিরে চিতাবাঘ, ঘুম শেষ?”
চিত্রা ছোটো আপার পা থেকে মাথা অব্দি একবার দেখে নিলো। এরপর অহি আপার চোখে চোখ রেখে শুধালো, “কোথাও যাচ্ছো?”
অহি আপা কিছুটা তাড়ার মাঝে ছিলো। চিত্রার জবাবে তড়িঘড়ি করেই বলল, “হ্যাঁ, একটা আর্জেন্ট কাজে যাচ্ছি, চিতাবাঘ। এসে বলবো কেমন? একা থাকতে পারবি তুই একটা ঘন্টা?”
চিত্রার একা বাড়িতে যদিও ভয় পায় তবুও ছোটো আপার তড়িঘড়ি দেখে আর নিষেধ করল না। বলল, “পারবো, আপা। তুমি সাবধানে যেও।”

অহি যেন চিন্তামুক্ত হলো। খুব ব্যস্ত গতিতেই বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে। চিত্রা দরজাটা ভালো করে আটকে ছাঁদে গেলো। মেঘ আর অন্ধকার মিশেলে আকাশের আলোর রঙটা কেমন ধোঁয়াশা। চারপাশটা ঠিক ঠাহর করা যায়। ঐ যে পাশের বাড়িটায় বাহার ভাই ছাঁদে কি যেন করছে, তা-ও বুঝা যাচ্ছে বেশ।
চিত্রা সেদিকে বেশি ধ্যান না দিয়ে ছাঁদের কাপড় গুলো একে একে তুলে নিলো। বাতাস প্রচন্ড বেগে বইছে বিধায় বেশিক্ষণ দাঁড়ালো না ছাঁদে। চোখেমুখে ধূলো এসে লাগছে। অপরদিকে, লোকটা ঠাঁই বস্তুর মতন ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছেন। লোকটা যে কখন কী করেন বুঝা দায়! একে রোদ, বৃষ্টি, ধূলোকণা এমনকি নারীর হৃদয়ও হয়তো ছুঁতে পারে না। কে জানে, পৃথিবীতে এমন বিষ্ময়কর মানুষ দ্বিতীয়টি আছে কি-না!

অহি রিকশা নিয়ে পৌঁছেছে ধানমন্ডির লেকের পাশে। গত কয়েকদিন যাবত তার মনে মনে যেই যুদ্ধ গিয়েছে সেই যুদ্ধেরই আজ সমাপ্তি টানার আয়োজন চলছে। যেই ভুল বুঝাবুঝির গল্পে প্রায় তিনটি বছর শেষ হতে চললো সেই ভুল বুঝাবুঝিকেই অবসান দিতে আসা। তার মা অবনী বেগমই মেয়ের মনে এই সাহস সঞ্চার করিয়েছেন। মেয়েকে সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানোর উৎসাহ দিয়েছেন।
সাদা বিল্ডিং এর বিরাট বাড়িটির সামনে এসে পা থেমে গেলো অহির। এটা নওশাদদের বাড়ি। তাকে দেখার পর নওশাদের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সেই ভেবে ভেবে অস্থির হয়ে যাচ্ছে সে। যদি নওশাদ রাগ দেখায়, মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে কী হবে?
এক বুক আতঙ্ক, ভীতি নিয়েও সে এগিয়ে যায় বাড়িটায়। দারোয়ানের কাছে নিজেকে নওশাদের বন্ধু পরিচয় দিয়েই ঢুকে। বুকের ভেতর তখন যমুনার উত্তাল ঢেউ। ভবিতব্য কী হতে পারে সেই আশঙ্কায় জমছে হিয়ার কোণে নানান ভাবনা।

হাত পা কাঁপছে। আসার সময় বৃষ্টির ছিঁটেফোঁটা পড়েছে শ্যাওলা রঙের জামাটায়। ঠান্ডা বাতাসে মিহি মিহি কাঁপছে শরীরটা। অহি সাত-পাঁচ ভেবে অনেকটা ক্ষণ চুপ ছিলো। তারপর কলিংবেলটা বাজালো। শব্দ হলো ভেতরে। শোনা গেলো একজন ভদ্রমহিলার গলার স্বর। ভেতর থেকে নম্র কণ্ঠেই শুধাচ্ছেন,
“কে?”
অহি ঢোক গিললো। মহিলা কণ্ঠটি তার গায়ে ভয়ের স্রোত বইয়ে দিলো। অহি উত্তর দিলো না। কি’বা পরিচয় দিবে নিজের?
ভদ্রমহিলা আরও বার কয়েক কে বলে উত্তর না পেয়ে দরজা খুললেন। পঞ্চাশোর্ধ প্রৌঢ় মহিলাটিকে দেখে অনায়াসেই আঁচ করা যায় ইনিই নওশাদের মা। চেহারায় দারুণ মিল আছে!
অহিকে দেখে ভদ্রমহিলার চেনার কথা নয়। অহি তাই ভেবেছিলো। কিন্তু অহিকে অবাক করে দিয়ে ভদ্রমহিলা তাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরলেন। চমকে যাওয়া কণ্ঠে বললেন, “অহি! তুমি কীভাবে এলে? এতদিন পর আসতে মন চাইলো?”

অহি দ্বিগুণ চমকে গেলো। পা-টা কাঁপছে তার মৃদু। কম্পন তার দেহ জুড়ে। মহিলা অহির চোখে-মুখে স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলেন। বহু পরিচিতের মতন আগলে নিলেন।
অহি থেমে থেমে জিজ্ঞেস করল, “আমাকে চিনেন আপনি, আন্টি?”
ততক্ষণে ভদ্রমহিলা অহিকে টেনে ঘরের ভেতর নিয়ে এলেন। আবেগে আপ্লূত স্বরে বললেন, “চিনবো না? দিন-রাত তোমার অপেক্ষায় দিন কেটেছে আমাদের। তোমায় না চিনলে হবে? কই গিয়েছিলে, আম্মু? আমার পাগলটারে এমন পাগল করে দিয়ে কই গিয়েছিলে?”
এরপর থেমে তিনি হাঁক ছাড়লেন, “নওশাদ, হুমু, দেখে যাও তোমরা কে এসেছে। তাড়াতাড়ি আসো।”
মহিলার ডাকের পর পরই নওশাদ বেড়িয়ে এলো হন্তদন্ত পায়ে। বলল, “কে এসেছে…”
আরও কিছু হয়তো বলতো কিন্তু তার কণ্ঠের কথা কণ্ঠতেই রয়ে গেলো। অতি বিস্মিত চোখ জোড়া নিবদ্ধ হলো অহির দিকে। যেন ধপ করে পড়েছে ও আকাশ থেকে।

অহির যেন নয়ন জোড়া হঠাৎ অশ্রুতে টলমল করে উঠলো৷ লোকটা কি আগের চেয়ে সুন্দর হয়ে গিয়েছে? কী সুন্দর লাগছে মানুষটাকে! সাদা শরীরটা কি আরও সাদা হয়েছে?
নওশাদ একপা দু’পা করে এগিয়ে এলো। মায়ের দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা ভাবে বলল,
“আম্মু, আমি কি ঠিক দেখছি?”
নওশাদের মা নাহিদা বেগম ঠোঁট কামড়ে নিজের কান্না সংবরণ করলেন। ছেলের কাছে গিয়ে ছেলের পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন,
“হ্যাঁ, নওশাদ। তোর অহি এসেছে। সত্যি সত্যি।”
নওশাদ কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মতন এগিয়ে এলো। খুব আলতো ভাবে আঙুলের মাথা স্পর্শ করালো অহির গালে। এরপর সর্বপ্রথম কথাটি বলল,
“আড়াইটা বছর লেগে গেলো আপনার এখানে আসতে?”
অহি কেঁদে দিলো। অস্ফুটস্বরে বলল, “সরি।”

বৃষ্টির বেগ বেড়েছে। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ভয়ঙ্কর গর্জনের সাথে। ড্রয়িং রুমের মাঝ বরাবর একটি মোমবাতি রাখা। বাতাসের দোলাচালে মোমবাতির আলোটুকু কেঁপে কেঁপে উঠছে।
মোবাইলটার চার্জ নেই। শেষবার আম্মুর সাথে কথা হয়েছিল সাতটায় এখন বাজছে রাত ন’টা। ওরা কখন ফিরবে কে জানে! অহি আপাটারও ফেরার নাম নেই। চিত্রার এবার ভয়টা বেশিই করছে। এত বড়ো বাড়িটায় মনে হচ্ছে বাতাসের বেগে নৃত্য করছে অশরীরী। কখনো মনে হচ্ছে ছাঁদ থেকে কেউ থমথমে শব্দে নেমে আসছে। কখনো মনে হচ্ছে মাথার পেছনটায় কারো দাঁড়িয়ে থাকার অস্তিত্ব।
চিত্রা বেশ অনেকক্ষণ চুপ করে ঠাঁই বসে আছে। দারোয়ান চাচাও চলে গিয়েছে আজ। উনার ছেলেটার কী যেন একটা সমস্যা হয়েছে তাই বাধ্য হয়েই গিয়েছেন। যাওয়ার আগে চিত্রাকে বার বার বলে গেছেন যেন বাহিরে না যায়। লোহার গেইটা ভেতর থেকে বড়ো তালা ঝুলিয়ে দিয়ে গেছেন চিত্রাকে দিয়ে। যেন বাহিরের কেউ আসতে না পারে।
চিত্রার কেমন গা হীম করা ভয় জেঁকে ধরেছে। বার বার মনে হচ্ছে বাড়ির চারপাশে কেমন যেন একটা শব্দ হচ্ছে। বৃষ্টির শব্দ ভেদ করে ভেসে আসছে সেই শব্দ।
মোমবাতি প্রায় শেষের দিকে। বাড়িতে আর মোমো কোথায় আছে চিত্রা জানে না। এই মোমবাতি শেষ হয়ে গেলে এই অন্ধকার বাড়িটায় সে কীভাবে থাকবে?

ভাবতে ভাবতেই চিত্রার মোমবাতি নিভে গেলো। পুরো অন্ধকার বাড়িটায় চিত্রা নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না। দ্রুত মেইন গেটের চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। ছাতাটা নেওয়ারও সময় পেলো না।
বাহিরে তখন ঝুম বৃষ্টি। অন্ধকার চারপাশটা। কোথা থেকে যেন ভেসে আসছে শব্দ। কেউ অনবরত দরজা ধক্কালে যেমন শব্দ হয় ঠিক তেমন শব্দ। বাড়ির ডান দিকের থেকে শব্দটা আসছে। কী জোড়ালো সেই শব্দ!
চিত্রার ভয়ে গা কাঁপছে থর থর করে। কোনো মতে অন্ধের মতন তালাটা খুলেই ছুটে গেলো বরাবরের বাড়িটায়। গিয়ে উন্মাদের মতন বাহার ভাইদের দরজা ধাক্কানো শুরু করলো।
তৎক্ষণাৎ এসেই দরজাটা খুলে দিলো বাহার ভাই। ভিজে যাওয়া চিত্রাকে দেখেই ভ্রু কুঁচকে ফেলল। অবাক কণ্ঠে বলল,

“ভিজলে কীভাবে এতটা? আর হাঁপাচ্ছো কেন?”
চিত্রা বাকি কথা বলার সুযোগ দিলো না। দৌঁড়ে ঢুকে গেলো ঘরে। ছিটকিনি লাগিয়ে দিলো সাথে সাথে।
চিত্রার এমন ভয়ার্ত চেহারা দেখে বিচলিত হলো বাহার ভাই। হাতটা রাখলো চিত্রার মাথায়। আলতো হাতে বুলিয়ে দিয়ে আশ্বস্ত করল। শান্ত কণ্ঠে বলল,
“ভয় পেয়েছো? ঠান্ডা হও। কিচ্ছু হয়নি। এতটা ভয় পেয়েছো কেন?”
চিত্রার গা তখনো কাঁপছে। বাড়ির বাহিরের সেই জোড়ালো শব্দটা বার বার যেন কানে বাজছে। এতটা স্পষ্ট শব্দ এলো কোথা থেকে? এ কি কোনো অধ্যাত্মিক কিছুর শব্দ ছিলো! ভেবে ভেবে হৃদপিণ্ড আরও ভয়ঙ্কর ভাবে কাঁপছে।
চিত্রার এমন বিধ্বস্ত ভয়াবহতা দেখে বাহার ভাই তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসালো। একটা গ্লাসে জল এগিয়ে দিলো। দ্রুত গিয়ে গামছাটা এনে চুল গুলো মুছিয়ে দিলো। অগোছালো লোকটা চিত্রার বেলা সব গুছিয়ে গুছিয়ে করল।

ততক্ষণে চিত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হলো। ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে মেয়েটার মুখটা।
বাহার ভাই ধীর কণ্ঠে বলল, “বাড়িতে কেউ নেই?”
চিত্রা স্থবির হয়ে আছে। ডানে-বামে কেবল মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিলো— না।
“তাহলে আমাকে ডেকে নিতে কিংবা আগেই আসতে। এত ভয় পেয়েছো কেন?”
চিত্রা তপ্ত শ্বাস ফেলে নিজের ভয়ের কথাটা জানালো। তা শুনে কপাল কুঁচকে এলো বাহার ভাইয়ের। যেটাকে চিত্রা নিতান্তই অশরীরী ভাবছে সেটাকেই বাহারের কাছে মনে হলো অন্যকিছু। কিন্তু সে আর কথা বাড়ালো না তা নিয়ে।
বৃষ্টি তালে তালে বাড়ছেই কেবল। চুলোতে খিচুড়ি টগবগ করে হচ্ছে। লাল আগুনের আঁচের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাহার ভাই। তার পেছনেই দাঁড়ানোর চিত্রা। গুটিশুটি মেরে দাঁড়ানো।
লালাভ আগুনের আঁচে চিত্রা খেয়াল করলো বাহার ভাইয়ের হাতের কনুইয়ের দিকটায়। কালশিটে দাগটা জ্বলজ্বল করছে সেখানটায়। চিত্রার এই দাগটা নিয়ে তুমুল আগ্রহ প্রথম থেকেই। আজ তাই প্রশ্ন করেই বসল,
“আপনার হাতে দাগটা কীসের?”

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১৫

বাহার ভাইয়ের হাত ছিলো চামচে। চিত্রার প্রশ্নে হাতটা থেমে গেলো। চমকে গেলেন কি-না ঠিক বুঝা গেলো না। চিত্রা উত্তরের আশায় নিশ্চুপ রইলো।
বাহার ভাই হেঁয়ালি করলেন, “খুন করেছে তোমার বাড়ি, জেলে ভরেছে আমায়। দাগটা তো হবেই তাই না? শালার দুনিয়ায় শাস্তি যে কেবল গরীবদের। ধনীদের আবার দোষ হয় না।”

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১৭