যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ২১

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ২১
মম সাহা

অম্বরে মেঘ নেই। সাদা ঝকঝকে আকাশ। সূর্যের ঝলমলে আলো। চারপাশটি সুন্দর ভীষণ। তুহিন দাঁড়িয়ে আছে তার জানালার কাছটাতে। জানালায় হেলান দিয়ে হাত দু’টো নিজের বুকে আড়াআড়ি ভাবে রেখে।
তার সামনেই দাঁড়ানো নিরু। হাসিখুশি নিরুপমা। সৌন্দর্যের ঝলমলানিতে মুখরিত সেই নারী। নিরু হাসি মুখেই বলল,
“আমাকে দেখে তুমি বেশ বিরক্তই হলে বুঝি?”
তুহিন সোজাসুজি তাকালো না নিরুর দিকে। আজকাল নিরুর চোখের সাথে চোখ মেলাতে তার ভীষণ লজ্জা করে। তাই অন্য দিকটাতেই তাকিয়ে জবাব দিলো, “তোমার সাথে কি আমার কোনো শত্রুতা আছে যে বিরক্ত হবো?”

“তা অবশ্য নেই কিন্তু তবুও তোমার মুখ চোখ শুকনো লাগছে তো, তাই।”
“মাত্র ঘুমুতে নিচ্ছিলাম তো তাই হয়তো এমনটা লাগছে।”
“তোমার ঘরদোরর অবস্থা এমন কেন? এতটা এলোমেলো যে!”
তুহিন নরম হেসে উত্তরে বলল, “আমার ঘর গুছিয়ে রাখার মানুষ আজ অন্য কারো ঘর গুছানোর দায়িত্ব নিয়েছে তো সেজন্য।”
তুহিনের কথায় মোটেও ভড়কালো না নিরু। বরং বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বলল, “তোমার ঘর গুছানোর জন্যও কেউ না কেউ ঠিক তৈরি আছে, তুহিন। চিন্তা করো না।”
“আর গুছানোর দরকার নেই, নিরু। অগোছালোতেই আজকাল আমার অভ্যেস হয়ে গেছে।”
“তাই বললে হয় নাকি, তুহিন? এ জীবনকে সবসময় সুযোগ দিতে হয়। ঠিক ততদিন অব্দি সুযোগ দিতে হয় যতদিন অব্দি না জীবন সঠিক দিশে খুঁজে পায়।”
তুহিনের বোধহয় এই ব্যাপারে কথা বলার আর আগ্রহ জাগলো না। তাই কথা ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে গেলো।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“দাঁড়াও তোমাকে তো চা দিতেই বলা হলো না। মাকে বলে আসি তোমার জন্য চা বসাতে।”
“না, না, তুহিন, চা খাবো না।”
“কিন্তু তোমার তো চা পছন্দ ছিলো!”
“হ্যাঁ তুহিন, ছিলো। সেটা অতীত। এখন আর খাচ্ছি না।”
“ওহ্, সব পছন্দেরই পথ বদলে ফেলেছো?” প্রশ্ন করেই হাসলো তুহিন। সেই হাসিটা জমে উঠলো ঠোঁটের এক কোণে। চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়লো না সেই হাসি।
“সবার সব পছন্দ এক রকম থাকে না, তুহিন। পছন্দ বদলায়, প্রায়োরিটি বদলায়। এতে খারাপ কিছু নেই। কথায় আছে— মানুষের মন আর আকাশের রঙ এক। দু’টোই ক্ষণে ক্ষণে বদলায়।”
“যদি তোমার মনটা না বদলাতো কতই না ভালো হতো!” কথাটি খুব ধীরেই বলল তুহিন। তবুও নিরুর কান অব্দি ঠিক পৌঁছালো। কিন্তু নিরু এমন ভাব করলো যেন সে কথাটি শুনেইনি।
নিরু এবার নড়েচড়ে দাঁড়ালো। বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,

“আমার তোমার সাথে দরকারী কথা ছিলো, তুহিন।”
“কী কথা?” তুহিনের প্রশ্নাত্মক দৃষ্টি।
নিরু কিছুটা সময় নিলো। ভেতর ভেতর হয়তো গুছিয়ে নিলো কথাগুলো। এরপর ফুঁস করে শ্বাস ফেলে তুহিনের দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
“দেখো তুহিন, আমি বিশ্বাস করি যে, এ জীবন কারো জন্য থেমে যাওয়ার নয়। এই জীবন গতিশীল। সময় পরিবর্তনশীল। আজ যা আমার, কাল তা অন্যকারো। এটাই নিয়ম। কিন্তু তুমি যদি সেই শোকে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দাও, জীবনের সকল আনন্দ মাটি করে পথ ধরো বিষাদের তাহলে তা অত্যন্ত কাপুরুষের মতো কাজ হবে। কারো জন্যই জীবন থামিয়ে দিতে নেই। এই যে দেখো, আমি ঠিক যেই মুহূর্তে অনুভব করেছিলাম তোমার ভেতর নিজের অস্তিত্ব কমে আসছে ঠিক সেই মুহূর্তে আমি পথ বদলে নিলাম। আমার গতিশীল জীবনকে গতিশীল রাখলাম। কারণ এ জীবন কারো জন্য থামিয়ে দেওয়ার নয়। তোমার উচিত এগিয়ে যাওয়া। নাহয় আজ থেকে পাঁচ বছর পর গিয়ে তোমার আফসোস হবে। মনে হবে, ইশ্ কেন যে তখন জীবনটাকে থামিয়ে দিয়ে ছিলাম! আমি হয়তো প্রেমিকা হিসেবে তোমার জীবনে চিরস্থায়ী হইনি কিন্তু আমি বন্ধু হিসেবে সবসময় তোমার পাশে থাকবো। আর আমি বন্ধু হয়েই চাইবো তুমি এগিয়ে যাও। তুহিনের এগিয়ে যাওয়ার পথে নিরুপমার স্মৃতি যেন বাঁধা নাহয়।”

“তুমি আমাকে বুঝাতেই এসেছো তাই না? নিজে এগিয়ে গিয়েছো বলে আমাকেও এগিয়ে যাওয়ার কথা বলতে এসেছো?”
“সত্যি বলতে তুহিন, আমাকে যেদিন বাবা বললেন আমাদের হাসবেন্ডের সাথে দেখা করার কথা, আমি তোমার পাওয়া কষ্ট গুলোর জন্য মান করেই দেখা করতে গেলাম। দেখা করে বুঝলাম ও না গুছিয়ে ভালোবাসতে জানে না তোমার মতন। তবে খুব যত্ন করতে জানে। আর যে আমাকে কোনো সম্পর্ক ছাড়াই এতটা যত্ন করেছে সে আমাকে পেলে কতটা যত্ন করবে সেটা দেখার লোভ আমি ছাড়তে পারলাম না। এবং আমি মন খুলে বলতে পারি আমি ভালো আছি। হ্যাঁ তোমাকে এত সহজে ভুলে হয়তো যেতে পারবো না। বছরের পর বছর লাগিয়ে যে মায়ার জন্ম সেই মায়া কাটাতেও যে বছর লাগবে। কিন্তু মনের এক পাশটাতে আমার স্বামী মানুষটা যত্ন করেই জায়গা করে নিয়েছে। খুব চুপটি করে সে আমার মনের গভীরে চলে গিয়েছে। তাই আমি চাই তুমিও মুভ অন করো, তুহিন। আমি তোমার সুখী জীবন দেখতে চাই।”

“আমাকে ক্ষমা করো, নিরু। আমি ভালোবেসে ছিলাম কিন্তু তোমার মতন এত ভালো হতে পারিনি কখনো। সত্যিই আমি তোমাকে ডিজার্ভ করি না। এজন্য ভাগ্য আমাদের আলাদা করেছে। তুমি সুখী হও। আমি মন থেকে চাই, তুমি সুখী হও।”
নিরু হাসলো। তুহিনের টেবিলে একটি লাল গোলাপ রাখলো নীরবে। সাথে ছোটো একটি চিরকুট। এরপর প্রস্থান নিলো বিনা বাক্যে। যেমন করে তার বিচ্ছেদ ছিলো চির নির্বাক তেমন করেই।
নিরু বেরিয়ে যেতেই তুহিন সেই চিরকুটটা তুলে নিলো। খুলতেই নিরুর লিখা লাইনগুলো ভেসে উঠলো,
“আমি আর আমার হাসবেন্ড টেকনাফ চলে যাচ্ছি। আমি এক বার বলেছিলাম টেকনাফ আমার পছন্দ। পাগলটা জানো অফিসে ট্রান্সফারের আবেদন করে ফেলেছিলো আমাকে না জানিয়ে। পরশুদিন হুট করে বলছে ওর টেকনাফ বদলি হয়েছে। আমি প্রচন্ড অবাক হতেই বলল— আমি টেকনাফ ভালোবাসি তাই ও সেখানেই আমাকে রাখবে। এমন পাগলও হয় বলো? তাই আজ চলে যাচ্ছি। শেষবার দেখা করে গেলাম। তুমি খয়েরী শাড়িতে দেখতে চেয়েছিলে আমাকে। কথা ছিলো আমাদের বিয়ের পর আমি শাড়িটা পরে দেখাবো। কিন্তু সেটা তো আর হলো না তাই আজ তোমার ইচ্ছে পূরণ করে গেলাম। মনে আছে তুহিন, একদিন গোলাপ কিনে দিতে বলায় তুমি বিরক্ত হয়েছিলে? আজ আমাদের বিচ্ছেদের শেষবেলায় আমি স্মৃতি হিসেবে গোলাপ দিয়ে গেলাম। ভালো থেকো, তুহিন। তুমি ভালো আছো জানলে আমার জীবনে সুখ পরিপূর্ণ হবে।”

ব্যস্ চিরকুটটি শেষ। তুহিনের চোখের জল ফোঁটায় ফোঁটায় গড়িয়ে পড়লো চিরকুটটাতে। সে গোলাপটাকে মুঠোয় আঁকড়ে ধরলো। তার ভালোবাসার শেষ সম্বল। তার বিচ্ছেদের স্মৃতি!
নিরুদের গাড়ি চলতে শুরু করলো। নিরু তুহিনের জানালার দিকে তাকিয়ে রইলো কেবল। তুহিন উঁকি দিবে না জেনেও তার তাকিয়ে থাকা। এবং নিরুকে অবাক করে দিয়ে তুহিন উঁকি দিলো জানালা দিয়ে। হাসিমুখে ইশারায় বেস্ট অফ লাক জানালো। তাদের শেষ দেখা টুকু তারা শেষ অব্দি মধুর করে তুললো। এই ছলাকলার দুনিয়ায় এমন ভালোবাসাময় বিচ্ছেদ বুঝি আর কখনো হয়নি। এই শহরের বুকে এ-ই প্রথম এবং শেষই বোধহয় বিচ্ছেদের রঙিন দৃশ্য লেখা হলো।
নিরুর চোখের কোণ ঘেঁষে এক বিন্দু জল গড়িয়ে পড়তেই একটি বলিষ্ঠ হাত সেই জল মুছে দিলো। বুকের ভেতর আগলে নিলো নিরুকে। কে বলেছে এ দুনিয়ায় মানুষ একটি ভরসাস্থল পায় না? একটি বুক পায় না লুকিয়ে কান্না করার জন্য?
এই যে নিরু পেয়েছে। একটি উষ্ণ প্রেমের বুক।

চিত্রা বাড়ি ফিরলো ঠিক সন্ধ্যে বেলা। বাড়ি ভর্তি তখন অন্যরকম মহল। ড্রয়িংরুমে হরেক রকম মানুষদের দেখা যাচ্ছে যাদের সে চেনে না। ছোটো আপা সেখানটাতে বসে আছে বেশ পরিপাটি হয়ে। চিত্রার মা মুনিয়া বেগম মেয়েকে দেখেই এগিয়ে এলেন। আতঙ্কিত মুখ চোখ নিয়ে বললেন,
“কিরে, তোর মাথায় কী হয়েছে? এমন ব্যান্ডেজ কেন?”
চিত্রা মা’কে মিথ্যে বলল গুছিয়ে, “আসলে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে ছিলাম, আম্মু। এজন্য একটু ব্যথা পেয়েছি।”
“এটা একটু ব্যথা? তোর যে মুখ চোখ ফুলে গেছে, মা! ভালো ব্যাথাই তো পেয়েছিস।”
“কোনো ব্যথাই পাইনি, আম্মু। বাড়িতে কারা এসেছেন? এত মানুষ!”
মেয়ের কথাতেও মায়ের মন শান্ত হলো না। তবুও বাড়িতে একটি শুভ কথাবার্তা চলছে বিধায় তিনি সবাইকে বিচলিত করবেন না বলে ধীর গতিতে বললেন,
“তোর অহি আপার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। তোর অহি আপারই পছন্দ।”
চিত্রা অবাক হলো। অহি আপা যখন শহর ছেড়ে যাচ্ছিলেন তখন কোনো একটা মানুষের কথা বলে কেঁদেছিলো না? তবে কি এ-ই সে মানুষ? খুশিতে চিত্রার চোখ চকচক করে উঠল। উৎফুল্ল ভরা কণ্ঠে বলল,

“ওয়াও! অহি আপার বিয়ে? উফ্ আম্মু কী দারুণ খবর শুনালে গো! কতদিন পর বাড়িতে একটা সুখের ঘটনা ঘটবে।”
মুনিয়া বেগমের মুখে চিন্তার ছাপ ছড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি মেয়েকে আড়ালে ঘরে নিয়ে যেতে যেতে বললেন,
“বিয়ের কথা পরেও হবে। এখন ঘরে চল তো দেখি। আর কোথাও কি ব্যথা পেয়েছিস, মা?”
মায়ের চিন্তা দেখে হাসলো চিত্রা। মায়ের কাঁধে মাথা রেখে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “না, আম্মু। এত চিন্তা করো না তো। আমি ঠিক আছি। কেবল একটু ক্লান্ত লাগছে।”
মুনিয়া বেগমের মায়ের মনে দুশ্চিন্তা জেঁকে বসলো। তার ছেলেমেয়ে গুলোর উপর কীসের নজর লেগেছে কে জানে? এত খারাপ যাচ্ছে ওদের সময়টা!

ড্রয়িং রুম জুড়ে গাম্ভীর্যতা ছেঁয়ে আছে। নওশাদের বাবা বেশ ভদ্র লোক। উনি বেশ আন্তরিকতার সঙ্গেই বললেন,
“ছেলেমেয়েদের যেহেতু দু’জনের প্রতি দু’জনের প্রীতি সেহেতু আমরা আর কী বলবো। আপনারা একটা ডেইট ফিক্সড করুন এরপর নাহয় আমরা ওদের চার হাত এক করে দিই।”
উপস্থিত সকলের ভেতর একটা চাপা আনন্দের গুঞ্জন। অহির বাবা- আমজাদ সওদাগর এর বিপরীতে বললেন,
“এভাবেই বললে তো হয় না। আমাদের পরিবার আছে, সবার আলাদা মতামত থাকতে পারে।”
বেশ রুক্ষ কণ্ঠেই তিনি কথাটা বললেন। আফজাল সওদাগর ছোটো ভাইয়ের আচরণে বেশ মনঃক্ষুণ্ন করলেন,
“আমজাদ, আমাদের মেয়ের যেখানে মত সেখানে আর কোনো কথা থাকে না। তুই আবার এগুলো বলিস কেন?”
“বলতে তো হবে, বড়ো ভাইজান। মেয়েকে তো আর যেখানে-সেখানে ভাসিয়ে দিতে পারি না!”
এই কথাটি এবার বেশ বাজে দিকে ইঙ্গিত করলো। অহি নওশাদের পরিবারটির দিকে তাকালো। নেহাৎ ভদ্র সভ্য পরিবার বলে এখনো মুখের হাসিটুকু বজায় রেখেছেন।
নওশাদের মা বললেন, “তা তো ঠিকই। আপনারা তাহলে ভেবে জানাবেন। আমরা তারপর না-হয় বিয়ের তারিখ ঠিক করবো।”

অহি এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এখন মোটেও চুপ করে থাকএো না। বরং বেশ গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“আন্টি আর বড়ো আব্বু তোমরা বিয়ের ডেট ফিক্সড করো। আমার কোনো আপত্তি নেই। আর যদি সত্যিই কারো মতন নিতে হয় আমি আমার মায়ের মতামত জানতে চাইবো।”
মেয়ের এহেন কথা যেন সপাটে চড় মারলেন আমজাদ সওদাগরের গালে। অহি কথাটা বলেই অবনী বেগমকে ডাকল,
“মা, এখানো আসো তো।”
অবনী বেগম দাঁড়িয়ে ছিলেন রান্নাঘরের দরজাটায়। সবটাই শুনছিলেন দাঁড়িয়ে। অহি ডাকতেই তিনি থতমত খেলেন। এগিয়ে এলেন দ্রুত।
উৎকণ্ঠিত গলায় বললেন, “কিছু দরকার তোমার?”
অহি উঠে এলো। অবনী বেগমের বাহু জড়িয়ে দাঁড়ালো মায়ের পাশটা। এরপর নওশাদের বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,

“আমার জীবনে আমার মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। তাই আমি একবার মা’কে জিজ্ঞেস করতে চাই তার কোনো আপত্তি আছে কি-না।”
অবনী বেগমের চোখে জল এলো। যে মেয়েটার মা হয়ে উঠার জন্য তার কৈশোর উৎসর্গ করলো আজ সে মেয়েটার মা হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হলো। মনে হলো, এ জীবন তার স্বার্থক যেন। তিনি তৎক্ষণাৎ জবাব দিলেন,
“আমার মেয়ে যেটা খুশি আমি সেখানেই রাজি।”
ড্রয়িং রুম জুড়ে আনন্দের ঢেউ উঠে গেলো।
আমজাদ সওদাগর আবার সেখানে আর থাকলেন না। এই অপমানের পর এখানে থাকাটা শোভনীয়ও নয় বটে।
নওশাদের বাবা আমজাদ সওদাগরের চলে যাওয়া দেখে পিছু ডাকতে নিলেই অহি বাঁধা দিলো। ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ২০

“কিছু ভালো মুহূর্তে সবাইকে রাখতে নেই এবং সবাইকে থাকতেও নেই। আপনারা নিজেদের মাঝে কথা সম্পন্ন করুন, আঙ্কেল।”
নওশাদ অহিকে চোখ দিয়ে আশ্বস্ত করলো। যতই উপর উপর সে কঠিন কথা বলুক বাবার আচরণ যে তাকেও কষ্ট দিয়েছে তা আর কেউ না বুঝলেও নওশাদ বুঝলো ঠিক। তাই চোখ দিয়ে ভরসা দিলো। বুঝালো, এ দুনিয়ায় অহির একজন নওশাদ আছে। আর চিন্তা নেই ওর।

যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ২২