রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪২
সিমরান মিমি
“আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাইছি, স্পর্শীয়া।একটু আসবে প্লিজ!
ফোনের অপর প্রান্ত থেকে এমন ক্লান্তি মাখানো কন্ঠে মিনতি শুনতেই চমকে গেলো স্পর্শী।বিরক্তি নিয়ে বললো,”আপনি কি পাগল?আরে বললাম না আমি বাড়িতে নেই। ঢাকায় আসছি।কাল রাতেই তো বললাম।আবার কোন আক্কেলে দেখা করতে চাইছেন ?এই একমিনিট!আপনি আবার সরদার বাড়ির দিকে জাননি তো?”
ঠোঁট দুটো গোল করে শ্বাস নিলো পরশ।মুখের গরম নিঃশ্বাস টুকু নিঃসরণ করলো বাতাসে।শার্টের বুকের কাছ থেকে দুটো বোতাম খুলে দিলো।একটা ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে।সিটে গা হেলিয়ে ফোনটাকে বাম কান থেকে ডান কানের দিকে নিলো।
“আমি ঢাকায় আছি স্পর্শীয়া।চিন্তা করার কোনো কারন নেই।তোমার সাথে দেখা করতে চাইছি।একটু কি আসবে?”
হতভম্ব হয়ে ফোনের দিকে তাকালো।ঘড়ির কাঁটায় বিকেল চার টা মাত্র।কাল রাতেও কথা হয়েছে।এই লোক এতো তাড়াতাড়ি ঢাকায় কি করছে?সকালে এসেছে কি?আচ্ছা কি কারনে আসতে পারে?তার কাছে কি আদৌ?চোখ দুটো কুঁচকে বন্ধ করে ফেললো স্পর্শী।ঝাঁঝালো স্বরে বললো,
“আপনি ঢাকায় কি করছেন?কেন এসেছেন?আর আমি দেখাই বা কেন করবো আপনার সাথে?”
বাম ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো পরশ।টিটকারি মেরে বললো,
“তুমি কি ভেবেছো?তোমার সাথে দেখা করতে এতোদুর এসেছি?নিজেকে এতোটাও স্পেশাল মনে করো না মেয়ে।তোমার থেকেও অতি স্পেশাল কিছু এই ঢাকাতে আছে।যেটা একদম ব্যক্তিগত।সে জন্যই আসলাম।ভাবলাম তোমার সাথেও একটু দেখা করে যাই।তা আসলে আসতে পারো।নইলে আমি যাচ্ছি।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
যতটা অপমান না গায়ে লেগেছে।তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছে স্পর্শী।মস্তিষ্কের মধ্যে ক্রমাগত সার্কেলের মতো ঘুরছে দুটি শব্দ।”অতি স্পেলাল”!কি এটা। কোনো মেয়ের কি ইঙ্গিত দিচ্ছে পরশ শিকদার।তাহলে তার কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে এই ঢাকাতে?যার কারনে এতোদুর থেকে এলো।সারাটা দিন সেই মেয়ের সাথে টাইম স্পেন্ড করে এখন তাকে ডাকছে।উফফফফ!!!না না না।এমন কিছু না।এমন তো হবার কথা নয়।যতটা কাছ থেকে লোকটাকে দেখা হয়েছে তাতে যে তার গার্লফ্রেন্ড আছে এটা বোঝা যায় নি।তার গার্লফ্রেন্ড থাকতেই পারে না।এই লোকের সাথে প্রেম করবে কে?স্পর্শী সাদাসিধা বলেই যা দু একটা কথা বলে।
“আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাইছি না।”
কপাল কুঁচকে ফেললো পরশ। বললো,
“ওকে।তাহলে আমি যাচ্ছি।বায়!”
কেমন একটা উত্তেজনা কাজ করলো স্পর্শীর মনে।তড়িৎ গতিতে বলে উঠলো,”শুনুন।”
শুনছি।
“আপনি আছেন কোথায়?”
উমমম!এইতো,রেডিও কলোনী ওভার ব্রিজের পাশেই।প্যাসিফিক গার্মেন্টস টার সামনেই গাড়ি পার্ক করা।
উত্তর দিলো না স্পর্শী।আস্তে করে ফোনটা কেঁটে জামা টা বদলে নিলো।আচ্ছা এমন ও তো হতে পারে গার্লফ্রেন্ড নিয়েই ঘুরতে আসছে এখানে।আর সেটা স্পর্শীকে দেখাতে চায় সে।দেখবে। অবশ্যই দেখবে স্পর্শী।কোন সুন্দরী রমনি এই গুন্ডা লোকের সাথে প্রেম করতে বেরিয়েছে।
এই যে এখানে।এসো।
ব্রিজের উপর থেকে কথার স্বর ভেসে আসতেই দ্রুত গতিতে সেদিকে উঠলো স্পর্শী।অবাক হয়ে সিঁড়ি পার হতে লাগলো।একটা মেয়ে পরশের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে হাসিমুখে।ওহহহ গড!সিঁড়িগুলো যেন পিচ্ছিল হয়ে উঠছে ক্রমশ।পা গুলো এক্ষুনি পিছলে পড়ে যাবে রাস্তায়।হয়তো গড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই কোনো বাস এসে চাপা দিয়ে চলে যাবে।
“এইই মেয়ে, পাগল নাকি তুমি।এতো বড় বড় সিঁড়ি চোখে লাগে না।আরেকটু হলেই তো পড়ে যাচ্ছিলে।”
পরশ স্পর্শীর হাত ধরে ঝাঁকুনি দিচ্ছে।চোখ দুটো বার কয়েক ডলে সামনে তাকালো।মেয়েটা দুরেই আরেকটা ছেলের সাথে হাসিমুখে আইসক্রিম খাচ্ছে।ওহহহ শিট!কি না কি ভেবে ফেলেছিলো সে।নিজেকে সামলে নিয়ে কার্ণিশে গিয়ে দাঁড়ালো।দূর থেকে দুরের সারিবদ্ধ চলন্ত বাস গুলো দেখা যাচ্ছে।লোহার পাইপলাইন ধরে হেলান দিলো স্পর্শী।একটা ভ্রুঁ উঁচিয়ে পরশ কে বললো,
“ডেকেছেন কেন?দ্রুত বলুন। ব্যস্ত আমি।”
নিজেকে সাজিয়ে নিলো পরশ।স্পর্শীর পাশে দাঁড়িয়ে সেও তাকালো নিচের রাস্তার দিকে। শান্ত কন্ঠে বললো,
“দেখো,আমি হেয়ালি করতে পারি না।যেটা বলছি কাইন্ডলি মন দিয়ে শোনো।দেখো তুমি আমি কেউই দায়ী নই।কিন্তু তাও প্রতিনিয়ত আঁড়ালে অপমানিত হতে হচ্ছে।এই আজকেই আসার সময় কানে গেল।চায়ের দোকানে এক বৃদ্ধ লোক বলছিলো আমাদের নিয়ে।বলে, ” এখন মডার্ন যুগ।বড় লোকের ক্ষমতাধারী ছেলেমেয়েরা যা খুশি তাই করতে পারে।এইতো কদিন আগে গিয়ে কক্সবাজারে ঘুরেছে,একসাথে থেকেছে।আবার সেই বাড়ি এসে যেই সেই।অথচ এখানে গরিব ছেলে মেয়ে হলে কবেই গ্রামবাসী ধরে জোর করে বিয়ে পড়িয়ে দিতো।”
তাছাড়াও অনেক লোক অনেক ধরনের কথা বলছে।ঝামেলার পর ঝামেলা হচ্ছে।”
থামলো পরশ।স্পর্শীর দিকে তাকিয়ে দেখলো সে একদৃষ্টিতে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে।শান্ত কন্ঠে বললো,
“স্পর্শীয়া,চলো না বিয়েটা করে নেই।”
স্নিগ্ধ নয়নে পরশের দিকে তাকালো।আন্দাজ ও করতে পারেনি পরশ এমন কোনো অফার করবে।শান্ত কন্ঠে বললো,
“বিয়েটা কি গ্রামিবাসীর তিক্ত কথার কারনে?”
অসস্তিতে পড়লো পরশ।আমতা-আমতা করে বললো,
“হ্যাঁ, কিছুটা সেরকম’ই।
” সরি মিঃ শিকদার।স্পর্শীয়া সরদার লোকের কথার ধার ধাড়ে না।আর না তো ওগুলো কানে নিয়ে বসে থাকে।আর এইসব ভিত্তিহীন কথার উপর ভিত্তি করে কোনো সম্পর্কে জড়ানো তো কল্পনা ও করে না।”
নিজের উপর রাগ লাগলো পরশের।উফফফ!স্পর্শীয়া কি তার মুখ থেকে ভালোবাসার কথা শুনতে চেয়েছিলো?এরকমই হবে হয়তো।ধুর!কোন আক্কেলে গ্রামবাসীর অজুহাত দিতে গেল।আমতা-আমতা করে বললো,
“তাহলে স্বাভাবিকভাবে বিয়েটা করতে চাইছিলে আমাকে?”
এমন প্রশ্নের সম্মুখীনে কিছুটা বিব্রত হলো স্পর্শী।নাহ!সে কিছুতেই হার মানবে না।এই লোক যদি নিজে থেকে নত না হয় তাহলে সে কেন হবে?এরপর সারাটা জীবন খোটা দিতে দিতে পার করে দিবে।বলবে,”তুমি বিয়েতে রাজী হয়েছিলে আগে।নইলে কি বিয়ে করতাম আমি।”
ভাবতে ভাবতেই ভেংচি কাঁটলো স্পর্শী।পরশ উঁকি দিয়ে মুখে র দিকে তাকালো।বললো,
“কি ব্যাপার! কথা বলছো না কেন?”
ঝাঁড়ি মেরে বললো,”আপনাকে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার।তাই দয়া করে এইসব উদ্ভট কথা আর বলবেন না।আসি।”
হা হয়ে গেল পরশ।”এক্সকিউজ মি!এই মেয়ে?তোমার কি মনে হয় কথাগুলো আমি সিরিয়াসলি বলেছি।গাঁধা!তোমার মতো মেয়েকে এই প্রজাতির’ই কোনো ছেলে বিয়ে করার প্রস্তাব দেবে।কোনো ভদ্র ঘরের এমপি না।আর এই বিয়ের সম্পর্কে ভাবাই তো হাস্যকর!তোমার মতো একটা ঝগড়ুটে, গুন্ডী, বখাটে মেয়েকে বিয়ে করে আমার শান্তশিষ্ট রুমটাকে কি রেসলিং স্টেইজ বানাবো নাকি?পাগলে পাইছে আমারে?”
অপমানে থমথমে হয়ে গেল স্পর্শীর মুখ।হেয়ালি করে বললো,
“আরে আশ্চর্য ব্যাপার তো।আমি কখন বললাম কথাটা সিরিয়াসলি নিয়েছি।আমিতো বরং মজা পেয়েছি।আপনার মতো জোকারের মুখ থেকে এরথেকে আর কি হাস্যকর কথা শোনা যেতে পারে?”
মুখের মাস্ক টা আরেকটু ভালো করে পড়ে নিলো পরশ।আশেপাশে তাকিয়ে দেখে নিলো লোকেদের উপস্থিতি।ড্রাইভার গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছে।মাঝেমধ্যে এদিকে তাকাচ্ছেও।পাত্তা দিলো না পরশ।আয়েশ করে হেলান দিয়ে বললো,
“তুমি কি জানো, তুমি খুব ভয়ঙ্কর মহিলা?কোন ছেলে স্বেচ্ছায় তোমাকে বিয়ে করবে?আমার তো মনে হয় না।তোমার আদৌ বিয়ে হবে কি না সেটা ভেবেই রাতে আমার ঘুম হয় না।”
“ওমা তাইইই!ইশশ!না ঘুমাতে ঘুমাতে বেচারা একদম শুকিয়ে গেছে।স্টুপিড!জানেন আমি একটা তুড়ি বাজালেও পেছনে ছেলেদের লাইন লেগে যাবে।”
হেসে দিলো পরশ।ব্যঙ্গ করে বললো,”আপাতত বাস ড্রাইভার দের লাইন ছাড়া আর কিচ্ছু দেখতে পারছি না।”
দাঁতে দাঁত চেপে ধরলো স্পর্শী।বললো,”অসভ্য!”
কপাল কুঁচকালো পরশ।”তোমার সাথে কি এমন অসভ্যতা করেছি?একটা হাগ করিনি পর্যন্ত।আর তুমি আমায় এই খেতাব দিয়ে দিচ্ছো?এটা ঠিক না।কোনো মহৎ কাজ না করা অবধি কাউকে কোনো খেতাব দেওয়া উচিত না।তবে তুমি চাইলে এক্ষুনি মহৎ কাজ টা করে দিতে পারি আমি।”
মুহুর্তেই দুপা পিছিয়ে গেল স্পর্শী।চোখ দুটো রাঙিয়ে বললো,
“এই এই একদম না।হাত পা ভেঙে এই ব্রিজের উপর ফেলে রাখবো। তখন বসে বসে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় পাবেন না।”
আমলে নিলো না পরশ।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
“করতেই পারো।এটা তোমার কাছে অসম্ভব কিছু না।ডাকাত বংশের তো।একটু আধটু কাঁটা-ছেঁড়ায় না জড়ালে তো বংশের নাক কাঁটা যাবে।”
গা জ্বলে গেল স্পর্শীর।ঝাড়ি মেরে বললো,”স্টুপিড!আমাকে আর ফোন দিবেন না।”
মাথা নাড়িয়া সায় জানালো পরশ।
“আমাকে আর মেসেজ ও দিবেন না।”
এ পর্যায়েও মাথা নাড়িয়ে পরশ বললো,”ওকে দিবো না।”
মুখটাকে হা করে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো স্পর্শী।
“মানে?”
ঠোঁট টিপে হাসলো পরশ।সিরিয়াস কন্ঠে বললো,
“কেন? তুমি কি চাইছো আমি তোমাকে কল করি।”
স্পর্শী অবাক হলো। এই লোক কাল রাতেও ফোন না ধরার জন্য পাগল হয়ে গেলো।আর এখন কোনো হুশ ই নেই।নিশ্চয়ই অন্য কাউকে পেয়েছে।হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিউর এইলোক নতুন কোনো মেয়ে পেয়েছে।পাবেই তো ছুঁকছূঁকো স্বভাবের তো এরা।বিড়বিড় করে বললো,
“স্টুপিড!”
এরপর দ্রুতপায়ে এগোতে লাগলো সিঁড়ির দিকে।কয়েকপা জোর দিয়ে হাটার পরেই কদম ছোট হয়ে গেল।ডাকছে না।কেউ তাকে পেছন থেকে ডাকছে না।রাগে সারা গা জ্বলে যাচ্ছে।অদ্ভুত! এই লোক এত্তো বদলালো কিভাবে?
“এইইই শুনুন।”
এবারে আর হাসি আটকাতে পারলো না।অন্যদিকে ঘুরে হেসে দিলো পরশ।এরপর মুখটাকে গম্ভীর করে বললো,
“হ্যাঁ বলো।”
কি বলবে স্পর্শী?ইশশ!নির্লজ্জের মতো আবার ডাক দিলো কেন?কতটা দূরে গেছিলো সে।অথচ এখন দেখো পা দুটো নির্লজ্জের মতো এগোচ্ছে তার দিকে।নিজেকে সামলে থমথমে গলায় বললো,
“আপনার ভাই ফোন দিয়েছিলো?”
“নাহ!তোমার বোন কি দিয়েছিলো?”
রেগে গেল স্পর্শী।অন্যদিকে ফিরে অভিমান জড়িত গলায় বললো,
“খবরদার এই প্রশ্ন করবেন না।আমার কোনো বোন নেই।আমার কেউ নেই।যারা পালিয়েছে তারা হলো আপনার ভাই,আর আপনার ভাইয়ের বউ।”
“ওহ আচ্ছা।কল দেয় নি,তবে মেসেজ করেছিলো।”
আঁতকে উঠলো স্পর্শী।দ্রুতকন্ঠে বললো,
“কি বলেছে?কি বলেছে মেসেজে?”
“আরে আজব তো।আমাদের ফ্যামিলির ব্যাপারে তোমাকে কেন শেয়ার করবো।আমার ভাই,আর ভাইয়ের বউ মেসেজ দিয়েছে।এটা সম্পুর্ন আমাদের পারিবারিক ব্যাপার।শেয়ার করতে পারছি না বলে দুঃখিত!”
চোখ রাঙিয়ে অন্যদিকে তাকালো। ধমক দিয়ে বললো,
“এই সরুন তো এখান থেকে।স্টুপিড!যাচ্ছেন না কেন?
” এটা তোমাদের?”
চমকে গেল স্পর্শী।বুঝলো না কিছুই।চোখ দুটো ছোট ছোট করে বললো,
“কোনটা?”
দাঁত গুলো মেলে হেসে দিলো পরশ।”কেন?এই ওভার ব্রিজ টা।এক্ষুণি যে বললে চলে যেতে।ভাবলাম হয়তো মালিকানা তোমাদের।”
গা জ্বলে গেল স্পর্শীর।থমথম করে হেটে গেল সামনের দিকে।পরশ আলতো চিৎকার করে বললো,
“শোনো,একটা ট্রিট কিন্তু নিতে পারো আমার থেকে।আজ প্রায় কতদিন পর গার্লফ্রেন্ডকে মন ভরে দেখেছি।”
একবার রাগ নিয়ে পেছনে তাকিয়ে পুনরায় মুখ ঝামটা দিয়ে হেটে নেমে গেল স্পর্শী।বিড়বিড় করে বললো,”তোর ট্রিট তুই গেল।শালার জংলী!”
হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠলো পরশ।আজকের পরিকল্পনা অন্যকিছু থাকলেও সেটা পরিস্থিতি পালটে দিয়েছে।পরিকল্পনা ছিলো, স্পর্শীকে বিয়ের ব্যাপারে বুঝিয়ে বলবে এবং সে রাজী হলেই সাথে সাথে কোর্ট ম্যারেজ করবে।এমনকি কাগজপত্র ও নিয়ে এসেছিলো সাথে।কিন্তু এই জ্বালাময়ী রমনির খামখেয়ালিপনায় পরক্ষণেই সিদ্ধান্ত পালটে ফেলে।এই মেয়ের সামনে বেশি দুর্বল হওয়া যাবে না।এতে সে একপ্রকার মূল্যহীন হয়ে যাবে।
“ভাই তো সচারাচর হাসেন না।আজকে তো এখনো হাসি থামছেই না।”
ঠোঁট এলিয়ে আবারো হাসলো পরশ।পিঠে চাপড় মেরে বললো,
“জানো তো জয়নাল ভাই।এক একটা মানুষের কিছু ব্যক্তিগত মানুষ থাকে।যাদেরকে দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।ঠোঁটে অটোমেটিক হাসি চলে আসে।”
“ভাই তো চাল টা ভালোই চালছেন।শামসুল সরদাররে দূর্বল করার লাইগা তার দুইটা মেয়েই যথেষ্ট। একজনরে তো পাভেল ভাই নিলো। আর বাকি জন এখন আপনার।”
পরশ নড়েচড়ে বসলো।’এমন কিছুই পরিকল্পনায় নেই। আর শামসুল সরদারকে দূর্বল করার কোনো প্রয়োজন’ই আমার নেই।কারন যতক্ষণ জনগণ আমার সাথে আছে।ততক্ষণ আমি শক্তিশালী।আর তাছাড়াও মেয়েরা বাবার দূর্বলতা হয় না।এটা আলাদা একটা শক্তি।আচ্ছা একটা কথা বলো।যদি তোমার বউ এখান থেকে যাওয়ার পরে রেগেমেগে কান্নাকাটি করে বলে, “তুমি আর পরশ শিকদারের ড্রাইভারের চাকরি করতে পারবে না।অন্য কিছু করো।নাহলে আমি তোমার সংসার করবো না।তাহলে কি করবে?”
ঢোক গিললো জয়নাল।বললো,”ভাই মাফ করবেন।আমার আপনার চাকরি ছাড়তেই হবে।নইলে কল্লা থাকবে না।”
পুনরায় কাঁধে চাপড় মেরে পরশ বললো,”এটাই বোঝাতে চাইছি।ধরো এই মেয়ে আমার ঘরের বউ।আমি ঘুমিয়ে আছি।হুট করে বটি নিয়ে গিয়ে আমার গলায় ধরে বিভৎস কন্ঠে বললো, “তুমি আমার বাবার বিরোদ্ধে তোমার দলীয় লোক পাঠাতে পারবে না।নইলে মাথাটা এখনই আলাদা করে দিবো।তখন?”
“খুবই ভয়ঙ্কর ব্যাপার হয়ে যাবে ভাই।”
“হ্যাঁ সেটাই তো বোঝাতে চাইছি।দূর্বল আমি শামসুল সরদারকে করছি নাকি সে আমাকে করছে কিছুই বুঝতে পারছি না।”
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪১
গাড়ি স্টার্ট দিলো ড্রাইভার।”তা ভাই কতদিনের প্রেম করছেন?”
“উহু!স্টুপিডের মতো কথা কেন বলছো?প্রেম করছি না তো।আপাতত ঝগড়া করছি।প্রেম হলেও হতে পারে।”
“ভাই তো ম্যাডামের মতো স্টুপিড বললেন।ম্যাডাম ও যাওয়ার সময় বিড়বিড় কইরা স্টুপিড বললো।”
কৌতূহল নিয়ে তাকালো পরশ।বললো,
“আর কি বলছিলো তোমার ম্যাডাম?”
“তাতো জানি না।শুধু ” স্টুপিড” টুকুই শুনছি।”