রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৬৯

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৬৯
রিক্তা ইসলাম মায়া

খান বাড়িতে সুখের বসন্ত লেগেছে। দীর্ঘ পনেরো বছর পর সুফিয়া খান পা পড়েছে খান বাড়ির আঙিনায়। এই নিয়ে সকলে ভিড় জমিয়েছে সুফিয়া খানের চত্বরে। আরাফ খান, হেনা খান ছেলের অসুস্থতার দুঃখের চেয়ে বেশি আনন্দ প্রকাশ করছেন সুফিয়া খানের আগমনে। সেই খবর তিনি দেশ-বিদেশে সকল আত্মীয়ের মাঝে ইতিমধ্যে পাঠানো শেষ। হেনা খান নিজের তিন কন্যার সঙ্গে শশীর মাকেও আমন্ত্রণ জানালেন খান বাড়িতে আসার জন্য। আরাফ খান সেই ফাঁকে বাড়িতে আয়োজন করলেন মেজবাহনের দাওয়াতের। সুফিয়া খানকে ঘিরে শ্বশুর-শাশুড়ির এমন উৎফুল্লতার আনন্দটুকু নীরব চোখে দেখলেন সুফিয়া খান। বয়স্ক মানুষ বাচ্চাদের মতোন হয়, সেটা আবারও যেন প্রমাণ করলেন আরাফ খান আর হেনা খান।

সুফিয়া খান বাড়িতে ফিরেছেন বিকাল তিনটার নাগাদ। এখন সন্ধ্যা ছয়টা। এর মাঝে পার হলো তিন ঘণ্টা। এই তিন ঘণ্টায় এই দুজন মানুষ উনার হাতে গোটা খান বাড়ির দায়িত্ব দিয়ে বসে আছেন। সার্ভেন্ট থেকে শুরু করে গোটা খান বাড়ির মানুষ উনার থেকে প্রতিটা কাজে অনুমতি নিচ্ছেন। সুফিয়া খান বেশ বুঝতে পারছেন, এসব উনার শ্বশুর-শাশুড়ির কাজ। যে দায়িত্ব তিনি পনেরো বছর আগে ফেলে গিয়েছিলেন, সেই দায়িত্ব যত্ন করে উনার হাতে আবারও তুলে দিতে চাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয়। এই সংসার আর উনার নয়। এই সংসারের মায়া তিনি আরও অনেকটা বছর আগেই মাড়িয়ে গেছেন।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আজ হয়তো তিনি তাড়াহুড়ো করে চট্টগ্রামে ফিরেছেন, কিন্তু এই সংসারের তিনি আর স্থানীয় হবেন না।
আজ বাদে কালই ফিরে যাবেন নিজ গন্তব্যে। তাই তিনি চাচ্ছেন না ক্ষণিকের জন্য শ্বশুর-শাশুড়িকে কোনো কিছুতে বাধা দিতে। বরং যেটা যেভাবে চলছে সেভাবে চলুক। তাঁরা যদি অল্পতে খুশি হন তাহলে হোক, এতে অপরাধের কোনো কিছু নেই। বরং তাঁদের ভুল ধারণা একটা সময় এমনিই ভেঙে যাবে। মনস্তাত্ত্বিক ভাবনার গম্ভীর সুফিয়া খান হাতের গ্লাসটা ডাইনিংয়ে রাখতে রাখতে তাকালেন অদূরে সোফায় বসা হেনা খানের দিকে। হেনা খান সুফিয়া খানের বাড়ি ফেরার খুশিতে উৎফুল্লতা দেখিয়ে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলছেন ফোনে। সুফিয়া খান এক পলক সেদিকে তাকিয়ে এগোতে চাইলেন সিঁড়ির দিকে। তক্ষুনি বাঁধা দিয়ে ডাকল কাজের মেয়ে মালা। বলল…

‘বড় ম্যাডাম রাতে কি রান্না করব?
বাঁধা পেয়ে পিছনে তাকালেন সুফিয়া খান। মালার কথায় তীক্ষ্ণ গলায় বললেন…
‘আমাকে কেন প্রশ্ন করছো? প্রতিদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করে রান্না করো তোমরা?
সুফিয়া খানের কথায় মালা থমথমে মুখে বলল…
‘দাদী বলছে আপনি যা আদেশ করবেন তাই বাড়িতে রান্না হবে, আর নয়তো সবাই না খেয়ে থাকবে। রান্না বন্ধ।
মালার কথায় সুফিয়া খান ঘাড় ঘুরিয়ে এক পলক হেনা খানকে দেখে মালাকে রান্নার তালিকা দিয়ে চলে যেতে চাইলে সেখানে হাজির হলো খান বাড়ির মালি ছেলে কাশেম। সে সুফিয়া খানের উদ্দেশ্যে লম্বা চওড়া বাজারের লিস্ট দিয়ে বলল…

‘বড় ম্যাডাম বাজারে এই লিস্টটা দাদাভাই পাঠিয়েছেন আপনাকে দিতে।
সুফিয়া খান মালাকে চলে যেতে বলে ঘুরে তাকালেন হালকা পাতলা গঠনের কাশেমের দিকে। কাশেমের থেকে কাগজের লিস্টটি হাতে নিয়ে সেদিকে তাকাতে দেখলেন বিশাল আয়োজনের একটি বাজারের লিস্ট সেটি। সুফিয়া খানের জানা মতে খান বাড়িতে আপাতত কোনো ফাংশন নেই। তাহলে এই লিস্ট কিসের হতে পারে সেটা জানতে চেয়ে কপাল কুঁচকে কাশেমকে বললেন…
‘বাড়িতে কি কোনো ফাংশন আছে কাশেম?
‘জ্বি ম্যাডাম! দাদাভাই আপনার বাড়িতে ফেরার খুশিতে এতিম বাচ্চাদের খাওয়াবেন বলছেন। এই লিস্টটা সেই আয়োজনের। আপনাকে বলছে এটা ঠিক আছে কিনা দেখতে।

হাতের কাগজটায় তিনি সেইভাবে আরও একবার নয় দু’বার নয়, বেশ কয়েকবার চোখ বুলালেন। মাত্র তিন ঘণ্টায় কেমন একটা টান অনুভব হচ্ছে এই ফেলে যাওয়া মানুষগুলোর প্রতি। উনার সংসার উনাকে যত্নসহকারে ফিরিয়ে দিতে চাচ্ছেন তাঁরা। অথচ যেই সংসারের মায়া তিনি অনেক আগেই ত্যাগ করে ফেলেছেন। সুফিয়া খান বাজারের লিস্টে বাচ্চাদের জন্য দুয়েক রকমের মিষ্টি জাতীয় খাবার এড করে দিতে বললেন। কাশেম সেই ফাঁকে আরও একটা কাগজ তুলে দেয় সুফিয়া খানের হাতে। গমগমে স্বরে বলল….
‘ম্যাডাম এটা হলো খান বাড়ির সকল কর্মচারীদের লিস্ট। মাসের দশ তারিখে আমাদের বেতন দেওয়া হয়। আজ নয় তারিখ। সেজন্য দাদাভাই এটা আপনার কাছে পাঠিয়েছেন।
সুফিয়া খান বেশ তীক্ষ্ণ গলায় বললেন…

‘আমার কাছে কেন?
‘দাদাভাই বলছে আপনি আমাদের বেতন দিলে আমরা এই মাসে বেতন পাবো, আর নয়তো আমরা সকল কর্মচারী বেতন ছাড়া থাকব নাকি।
কাশেমের থমথমে মুখটার দিকে সুফিয়া খান তাকিয়ে সেভাবে বললেন…
‘ওকে, কাল দেওয়া হবে যাও।
কাশেম ছেলেটি চলে যেতে খান বাড়ির ড্রয়িংরুমে উপস্থিত হয় রাদিফ। যদিও সে দুপুরে দিকে এসে মায়ের সাথে দেখা করে গিয়েছিল, এখন আবারও আসা। সুফিয়া খানই কল করে ডেকেছেন রাদিফকে নিহাল খানের রিপোর্টের জন্য। ভয়ার্ত রাদিফ থমথমে মুখে সুফিয়া খানের হাতে নিহাল খানের ফেক রিপোর্ট তুলে দিতে গম্ভীর সুফিয়া খান সেগুলো নিয়ে সিঁড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে বলল..

‘আমার সাথে আসো রাদিফ।
ভয়ার্ত রাদিফ থমথমে মুখে সুফিয়া খানের পিছন পিছন হাঁটলো। এর মাঝে পথে দেখা পেল মায়ার সাথে। গায়ে একটা সবুজ জামদানি জড়িয়ে মায়া নিহাল খানের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে সুফিয়া খানের খোঁজে। সুফিয়া খান বাড়িতে ফেরার পরপরই মায়া এই শাড়িটা জড়িয়েছে গায়ে শাশুড়িকে খুশি করতে। অবশ্য বিগত সময় ধরে মায়া সুফিয়া খানের পিছন পিছন ঘুরঘুর করছিল। তবে এরমাঝে ফাকে সে রিদকে বাড়ির ফেরার কথা বলে এল ফোনে।
নিহাল খানের ঘরে প্রবেশ করতে মায়া ভয়ার্ত মুখে রাদিফের দিকে তাকাল। মায়ার মতো করে রাদিফের মুখটাও চুপসে আছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে।

বেহুশ নিহাল খানের হাতে তখনো ক্যানুলায় সেলাইন চলছে। সুফিয়া খান নিহাল খানের পরপরই রিপোর্টগুলো চেক করল মনোযোগ সহকারে। যতটা ক্রিটিকাল মনে করে সুফিয়া খান পাগল পাগল হয়ে চট্টগ্রাম ফিরেছিলেন, তার তেমন কিছু না দেখে তিনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন রাদিফের দিকে। ভয়ার্ত রাদিফ কাচুমাচু করে বিছানার অপর পাশে গিয়ে দাঁড়াল। মায়াও রাদিফের পাশাপাশি দাঁড়াল থমথমে মুখে। দুই অপরাধী একত্রে। মায়া ওর শাশুড়িকে উল্টাপাল্টা বলে চট্টগ্রামে তো নিয়ে এসেছে, এবার চতুর শাশুড়িকে সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে মায়াদের জন্য। খান বাড়িতে আসার পরপরই দুবার রাদিফের থেকে নিহাল খানের রিপোর্ট চেয়েছিলেন সুফিয়া খান। কিন্তু ব্যস্ততার অজুহাতে রাদিফ এতক্ষণ রিপোর্টগুলো না দিলেও এখন দিতে বাধ্য হয় সে। সুফিয়া খান হাতের রিপোর্টগুলো দুবার খতিয়েও দেখল। রিপোর্টগুলো যে উনার বিশ্বাসের আসেনি, সেটা উনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখেই বুঝতে পারছে রাদিফ। তারপরও সুফিয়া খান রাদিফকে কিছু না বলে হাতের ফাইলগুলো বন্ধ করতে করতে রিদের খবর নিয়ে জানতে চাইল…
‘রিদ কই?
‘ভাই মিটিংয়ে।
‘বাড়িতে ফিরতে বলো ওকে।
‘জ্বি আম্মু।

রাত এগারোটা পেরিয়ে বারোটার ঘরে। রিদের ব্যস্ততা শেষ নেই। রিদ এই রাতেও বাসায় ফিরত না যদি না মায়া বারবার ফোন করে রিদকে বাড়িতে ফেরার তাগিদ দিত। নিহাল খানের অনুপস্থিতিতে সবটা রিদের সামলাতে হচ্ছে বলেই রিদের ব্যস্ততা দ্বিগুণের চেয়ে চারগুণ হলো। সেজন্য রিদ মায়ের সঙ্গে দেখা করে আবারও দ্রুত বেরিয়ে যাবে বলে ঠিক করে রেখেছে। এক সপ্তাহ পর নির্বাচন। একদণ্ড বাড়িতে বসে থাকার সময় নেই কারও। রিদ দলের ছেলেদের সবাইকে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত রেখেই সে এরাতে বাড়িতে ফিরেছে একা। রাদিফ অবশ্যই আসিফদের সঙ্গেই আছে। রিদ বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে সুফিয়া খানের সঙ্গে হেনা খানের দেখা পেল বসার ঘরে। মায়াকে আশেপাশে কোথাও দেখতে না পেয়ে রিদ ভাবল মায়া হয়তো ঘুমিয়ে। ক্লান্ত রিদ সুফিয়া খানের দিকে এগিয়ে গেল। মুখোমুখি হয়ে মায়ের সঙ্গে টুকটাক কথা চালাতে সেখানে লেবু পানি নিয়ে উপস্থিত হয় মায়া। রিদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বলল…

‘আপনার পানি!
মায়ার গলা পেয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে রিদ ঘুরে তাকাল। মায়াকে সবুজ শাড়ি পরিহিত ট্রেতে করে লেবুর পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রিদের দৃষ্টি থমকে দাঁড়াল। মায়া ফর্সা গায়ে সবুজ শাড়িটি যেন ঝলমল করলো রিদের চোখে। রিদ একবার নয় দু’বার নয়, বেশ কয়েকবার মায়ার দিকে তাকাল চোখ সরিয়ে। গোটা শরবতের গ্লাস এক চুমুকে শেষ করলো মায়ার দিকে তাকিয়ে। রিদের এমন দৃষ্টিতে মায়া হাসফাঁস করে আড়চোখে তাকাল সুফিয়া খান আর হেনা খানের দিকে। বড়দের সামনে রিদের স্থির দৃষ্টিতে খানিকটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ল মায়া। ততক্ষণে সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সুফিয়া খান, হেনা খানও লক্ষ করলেন রিদের দৃষ্টি। মা হিসাবে চট করে বুঝে ফেললেন ছেলের ক্লান্তিময় মনোভাবটা। রিদ পানির গ্লাসটা ট্রে-তে রাখতেই সুফিয়া খান বললেন…

‘নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হও রিদ। আমি তোমার খাবার রুমে পাঠাচ্ছি।
রিদ হ্যাঁ/না কিছুই বলল না। বরং চলে যেতে গিয়েও মায়ার দিকে তাকাল চোখ সরিয়ে। মায়া বিব্রতবোধ করে খালি গ্লাসটা নিয়ে কিচেনের দিকে যেতে চাইলে সুফিয়া খান বাঁধা দিয়ে বললেন…
‘তুমি রুমে যাও মায়া। দেখো আমার ছেলের কি প্রয়োজন হয়। আমি তোমাদের খাবার রুমে পাঠিয়ে দেব। যাও!
সুফিয়া খানের কথায় আপত্তি জানাতে চাইল মায়া। মায়া ইচ্ছে সবাইকে নিয়ে একত্রে ডাইনিংয়ে বসে খাবে। সে একা রুমে বসে খাবে না। তাছাড়া মায়া রিদকে ফোন করে এনেছে সুফিয়া খানের সঙ্গে কথা বলার জন্য। সেখানে মায়া যদি রিদকে নিয়ে ঘরে আলাদা খায় তাহলে ব্যাপারটা কেমন দেখায় না। তাছাড়া মায়াও বুঝল না হঠাৎ করে সুফিয়া খানই বা কেন মায়াকে রুমে পাঠাতে চাচ্ছেন খাওয়ার জন্য। যেখানে মায়া সবার সাথে একত্রে খাওয়ার জন্য আয়োজন করেছে সেটা কি দেখেননি ওর শাশুড়ি? তাহলে?

‘আমি ঘরে খাব না আম্মু। আমি সবা…
‘রিত রুমে আসো!
রিদের উচ্চ স্বরে ডাকায় থমথমে খেয়ে গেল মায়া। সুফিয়া খান শক্ত গলায় বললেন….
‘রুমে যাও মায়া! দেখো রিদের কি প্রয়োজন।
মায়া আর দাঁড়াল না। হাতের ট্রে সোফার টেবিলে রেখে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে মায়া ঠোঁট উল্টাল। মায়াকে এতো তাড়া দিয়ে সবাই রুমে কিজন্য পাঠাচ্ছে তাও বুঝতে পারছে না। শাশুড়ি ছেলে মাত্র বাসায় ফিরেছে। সে ফ্রেশ হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই মায়া গুছিয়ে রেখে এসেছে, তাহলে এতো তলব লাগিয়ে মায়াকে কি দরকার। শাশুড়ি ছেলে কি বাবু? যে মায়াকে ছাড়া সে একা ফ্রেশ হতে পারবে না। বিরক্ত নিয়ে মায়া রুমে ঢোকতে ঘরটা অন্ধকার পেল। মায়া ঘরের আলো জ্বালিয়ে ঘরটা উজ্জ্বল করতে রিদের দেখা পেল না কোথাও। ওয়াশরুমের দরজাটাও বাহির থেকে লক করা দেখে মায়া বুঝল রিদ ওয়াশরুমেও নেই। মায়া রিদকে ডেকে বলল…
‘শাশুড়ির ছেলে আপনি কোথায় আছেন?

মায়ার এক ডাকেই রিদ বারান্দা থেকে ঘরে এলো। রিদকে দেখে মায়া আবারও বলল…
‘সেকি আপনি এখনো ফ্রেশ হননি কেন?
‘তোমার সাথে হবো তাই।
রিদের সোজাসাপটা কথায় মায়া কারণটা বুঝল না। বরং রিদের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলল…
‘আমাকে দেখে আপনার ময়লা মনে হয় যে আপনার সাথে ফ্রেশ হবো? যান গিয়ে দ্রুত ফ্রেশ হন। আজ আমরা নিচে খেত…
মায়া থামিয়ে রিদ বলল…
‘আজ কয়দিন?
‘কিসের?
মায়া কুঞ্জিত কপালে পাল্টা প্রশ্ন করলো রিদকে। মায়ার কথায় উত্তর না দিয়ে রিদ মায়ার চোখের দিকে তাকাল শান্ত দৃষ্টিতে। রিদের বদলানো দৃষ্টিতে মায়া হাসফাঁস করে কিছু বলবে তার আগেই রিদ বলল…
‘আমার ফোনটা নাও।

মায়া বিছানার উপর থেকে রিদের ফোনটা দিতে রিদ আসিফের নাম্বারে কল লাগাল। রিদের কলটা রিসিভ হতে ওপাশের আসিফ কিছু বলবে তার আগেই রিদ মায়ার চেহারার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল…
‘সবাইকে বাসায় চলে যেতে বল আসিফ।
রিদের কথায় তক্ষুনি শোনা গেল আসিফের গলার সুর, বলল…
‘ভাই আজ তো আমাদের জরুরি মিটিং…
‘সব ক্যানসেল।
‘ কিন্তু ভাই আপনার..
ফের আসিফকে বলতে না দিয়ে রিদ বলল…
‘এই রাতে তোর কোনো ডিস্টার্বেন্স চাই না আসিফ।
আজ রাতে তোর কল দেওয়া নিষেধ।

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৬৮

কথাটা বলেই রিদ কল কেটে নিজের ফোনটা বন্ধ করে দেয়। একই ভাবে মায়ার ফোনটাও রিদ বন্ধ করে দিতে মায়া আপত্তি জানিয়ে বলল…
‘আপনি ফোন বন্ধ করছেন কেন?
‘ কারণ আজ রাতটা আমার তাই।

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৭০