সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ২৯
Jannatul Firdaus Mithila
“ রুহিপু!”
একপ্রকার ছুটে এসে পেছন থেকে রুহির কোমর ঝাপটে ধরে ছোট্ট পুতুল। রুহি হঠাৎ তাল সামলাতে না পেরে খানিকটা ঝুঁকে পড়ে সামনের দিকে। পরক্ষণেই নিজেকে স্বাভাবিক করে পেছনে ফিরে সে।দু’হাতে আগলে ধরে ছোট্ট পুতুলকে।ভাইয়ের ফোলা ফোলা গালদুটোতে আলতো করে চুমু বসিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“ আমার পুতুলটা কেমন আছে?”
পুতুল মাথা নাড়ায়।দাঁত বের করে হেসে ওঠে বলতে থাকে,
“ হুম ভালো! তুমি যেহেতু নেই,সেহেতু আরও ভালো আছি।”
রুহি ভ্রুকুচকায়। পুতুলের দিকে সরু দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে রইলো কিয়তক্ষন। তারপর কি মনে করে যেন ফিক করে হেসে দেয় মেয়েটা।পুতুলের বা-গালটা আরেকটু টেনে দিয়ে বলে,
“ তাই-না? তারমানে তুই আমাকে একটুও মিস করিসনি?”
“ উহুম! একটুও না!”
“ তাহলে তোর চোখে পানি কেনো পুতুল?”
এইটুকুন পুতুলটাও তৎক্ষনাৎ নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নেয় রুহির সামনে থেকে। আশেপাশে এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে কপট ভাব নিয়ে বলে,
“ কই পানি? কিসব বলো তুমি!আমার মতো এতোবড় একটা ছেলের চোখে পানি আসবে কেন?”
রুহি ভেজা চোখে হাসলো। পুতুলের মুখটা নিজের দিকে ফিরিয়ে আলতো করে চুমু খেলো ছেলেটার ললাটে। হালকা নাক টেনে বলে ওঠে,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
“ পুতুল সোনা খুব বড় হয়ে গেছে! কি সুন্দর কথা ঘোরাতে শিখে গেলো!”
“ এখন কি শুধু ওর সাথেই কথা বলবে রুহিপু? আমাদের সাথে কথা বলবে না?”
দরজার কাছে দাঁড়িয়ে মেকি গাল ফুলিয়ে কথাগুলো বলে ওঠে আহি-মাহি। তাদের দেখে রুহি ছুটে আসে পুতুলকে ছেড়ে। আহি-মাহিকে জড়িয়ে ধরে প্রাণভরে নিশ্বাস ফেলে কিছুক্ষণ। তারপর তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে বলে,
“কেমন আছিস তোরা? বাড়ির সবাই কোথায়? ”
“ এইতো ড্রয়িং রুমেই আছে। তুমি পুরোপুরি রেডি হয়েছো? হলে চলো নিচে, দেখা করবে সবার সঙ্গে!”
রুহি মাথা নাড়ে।আহি-মাহির হাত ধরে এগিয়ে যায় সিঁড়ির দিকে। সরু দৃষ্টি ড্রয়িং রুমে বুলাতেই বুকটায় একরাশ প্রশান্তির ঢেউ খেলে তার।ড্রয়িং রুম জুড়ে তার পুরো পরিবার, কি সুন্দর হেসে খেলে কথা বলছে সবার সঙ্গে। রুহি অধৈর্য্য হয়ে ছুটে আসলো একপ্রকার। কবির সাহেব গম্ভীর মুখে হাসছিলেন মৃদু। হঠাৎ তার দৃষ্টি সিড়ির দিকে পড়তেই তিনি দেখতে পান— মেয়েটা তার কেমন ছুটে আসছে এদিকে। কবির সাহেব বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়। সঙ্গে তার ভাইয়েরাও উঠে দাড়ায় তৎক্ষনাৎ। মিনিটের ব্যাবধানে রুহি ছুটে এসে ঝাপটে ধরে তার বাবাকে।কবির সাহেব আলতো হাতে মেয়েকে আগলে নেন বাহুডোরে।এদিকে নতুন বউয়ের এমন কান্ডে সকলেই খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। কিন্তু পরক্ষণেই রেহানের বাবা এসে মুচকি হেসে সকলের উদ্দেশ্যে বললেন,
“দুটো দিন পরিবারকে ছেড়ে থেকেছে তো,তাই হয়তো বউমা তার পরিবারকে মিস করেছে বেশ!”
উপস্থিত সকলে এবার নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলায়। উৎসুক চোখে তাকিয়ে রইলো রুহি এবং তার পরিবারের মিলনায়তনে।
প্রায় মিনিট খানেক পর রুহি ধীরে ধীরে বাবার বুক হতে মুখ তোলে।ছলছল নয়ন বাবার দিকে তাক করে মোটা হয়ে আসা কন্ঠে বলে,
“ কেমন আছো আব্বু? ”
কবির সাহেব আলতো হাসলেন মেয়ের কথায়। হাত বাড়িয়ে মেয়ের মাথায় রেখে নরম সুরে শুধালেন,
“ আলহামদুলিল্লাহ ভালো! তুমি ভালো আছো মা?”
রুহি ভেজা চোখে মাথা নাড়িয়ে সায় জানায়। তারপর সে বাবাকে ছেড়ে দিয়ে চাচাদের কাছে যায়।একে একে সকলকে জড়িয়ে ধরে সে-কি কান্না মেয়েটার! জুবাইদা বেগম এতক্ষণ দূরে দাড়িয়ে মেয়ের কান্ড দেখছিলেন। চোখ তার ইতোমধ্যেই জলে টইটম্বুর। তিনি তো এমনিতেই নরম মনের মানুষ কি-না! রুহি এবার সকলকে ছেড়ে দিয়ে মায়ের দিকে ফিরলো।কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছে তা-ই অবস্থা মেয়েটার।মুখের হালকা মেক-আপও যেন ইতোমধ্যেই ধুয়েমুছে গিয়েছে সবটা! রুহি ধীর কদমে এগিয়ে আসে মায়ের কাছে। তারপর আর কি! আবারও জড়িয়ে ধরে মা’কে। মায়ের বুকে মুখ গুঁজে সন্তপর্ণে কাঁদছে মেয়েটা।ভাব এমন, এই বুকটায় মিশে থাকা ঘ্রানটা না জানি কতকাল ধরে নিতে পারেনি সে।জুবাইদা বেগম মেয়েকে জড়িয়ে রেখে আলতো করে হাত বুলালেন মেয়ের পিঠে। নিজেকে বারবার শক্ত রাখছেন তিনি।শত হলেও,বেয়াই বাড়ি এসে অন্তত কাঁদা যায় না! তা নাহলে লোকে কি বলবে?
কিছুক্ষণ পর রুহির কান্না থামলো। সে মায়ের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে নাক টানলো খানিকটা। তারপর জিজ্ঞেস করলো,
“ ভাইয়ারা কোথায়?”
জুবাইদা বেগম মেয়ের কথায় জবাব দিবেন তার আগেই তার দৃষ্টি পড়ে — কিছুটা দূরে বুকের কাছে দুহাত ভাজ করে দাড়িয়ে থাকা রৌদ্রের পানে।দৃষ্টি তার এদিকেই নিবদ্ধ। তারপাশেই দাঁড়ানো রেহান আর অনিক।জুবাইদা বেগম রুহিকে পেছনে ইশারা করে বললেন,
“ ঐ যে তোর ভাইয়েরা।”
রুহিও তৎক্ষনাৎ পেছনে ফিরে। ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আবারও ভিজে ওঠে তার চোখ।সে কিছুক্ষণ কাঁদো কাঁদো মুখে তাকিয়ে রইলো ভাইয়ের দিকে। রৌদ্র কি বুঝলো কে জানে! সে এগিয়ে আসে বোনের কাছে।নিজ থেকেই হাত বাড়িয়ে বোনকে বাহুডোরে আগলে নিয়ে নরম সুরে বলে,
“ এতো কাঁদলে সাজ-টাতো আর ভালো থাকবেনা বুড়ি!”
রুহি ভাইয়ের কথায় স্মিত হাসলো। ভাইয়ের বুকে মাথা রেখেই নাক টেনে বললো,
“না থাকলে না থাক!”
পেছন থেকে অনিক এগিয়ে আসে সাথে রেহানও।অনিক এসেই রুহিকে বাজাতে বলে ওঠলো,
“ বুড়ি!এবার অন্তত কান্না থামা। বিশ্বাস কর, তুই যদি এ মুহুর্তে নিজেকে একটাবার আয়নায় দেখতি,তাহলে আমি নিশ্চিত — তুই নিজেই নিজেকে দেখে ভয় পেতি।ইশশ্ কি ভয়ংকরটাই না লাগছে তোকে!”
রুহি চট করে মাথা তোলে।অনিকের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে,
“সত্যি আমায় খুব বাজে দেখাচ্ছে? ”
অনিক মাথা নাড়ে।বিজ্ঞের মতো বলে,
“শুধু বাজে না বুড়ি,রীতিমতো ভুতের মতো লাগছে। ”
রুহি ঠোঁট উল্টায়।কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,
“ সত্যি?”
অনিক ফিক করে হেসে দেয় এ কথায়।রুহির গালটা আলতো করে টেনে দিয়ে বললো,
“ ফাইজলামি করেছি বোকা! এটুকুও বুঝিস না?”
রুহিও হেসে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে। আর সেই ভেজা চোখে ঠোঁট উল্টানো হাসির দিকে অনিমেষ চোখে তাকিয়ে রইলো রেহান। মেয়েটাকে সে যতই দেখুক,ততই যেন নতুন লাগে তার কাছে। প্রতিবার মেয়েটার একেকটা রুপ যেন তাকে ঘায়েল করে ভিষণভাবে।
চারিদিকে হৈ-হুল্লোড়। বাড়ির বাইরের খোলা জায়গায় বড় করে প্যান্ডেল বেঁধে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পুরো বাড়িটা সাজানো হয়েছে নানান ফুলের সমারোহে।অরিন পুরো বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছিল। তার আবার অতিরিক্ত কোলাহল ভালো লাগে না। তারওপর পড়নের গোলাপি রঙা সিম্পল গাউনটা পড়ে হাঁটাও বুঝি বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে তার জন্য। অরিন গাউনের একাংশ ধরে ধীরে ধীরে উঠছে সিড়ি বেয়ে। ঠিক তখনি কোনো এক পিচ্চি এসে ধুপ করে তার সঙ্গে ধাক্কা খায়।অরিন বেচারি পড়ে যেতে গিয়েও কোনরকমে নিজেকে সামলে নেয় তৎক্ষনাৎ। বুকে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ফেলে কিছুটা।
তারপর চোখ মেলতেই আশেপাশে কোথাও বাচ্চাটার হদিস পেলো না। অরিন ভাবলো— বাচ্চাটা বোধহয় চলে গেছে। অরিন সেদিকে আর পাত্তা না দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে আবারও উঠতে যাবে তখনি সে টের পেলো তার গাউনটা থেকে কেমন তরল জাতীয় কিছু একটা চুইয়ে পড়ছে।অরিন সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টি ফেলে গাউনের দিকে।দেখতে পায় — গাউনের ঠিক মাঝ বরাবর জুস পড়ে একাকার অবস্থা! হয়তো বাচ্চাটার হাতে জুস ছিলো,আর ধাক্কা লাগার কারণে হয়তো তার গায়ে পড়েছে সবটা। অরিন আশাহত চোখে তাকিয়ে রইলো নিজের গাউনের দিকে। পরক্ষণেই মুখে আধার নামিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে একটা রুমে ঢুকে যায় সে।এখনি এই জুসের দাগ পানি দিয়ে উঠানো প্রয়োজন। নাহলে যে তার এতো সুন্দর একটা গাউনে দাগ বসে যাবে। অরিন মন খারাপ করে এগিয়ে যায় ওয়াশরুমে।
প্রায় মিনিট দশেক পর বেরিয়ে আসে অরিন।মাথানিচু রেখে গাউনটা থেকে পানি ঝাড়তে ঝাড়তে বের হওয়ায় আশেপাশে খেয়াল অবধি করলোনা মেয়েটা। দু-কদম এগিয়ে যেতেই হেয়ালিবশত দৃষ্টি উঠায় অরিন। পরক্ষণেই দৃষ্টি তার আটকে যায় খাটের ওপর এক হাতে হেলান দিয়ে বসে থাকা রৌদ্রের দিকে।দৃষ্টি তার অরিনের দিকেই নিবদ্ধ। অরিন অবাক হয় কিছুটা। অবাক কন্ঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে,
“ আপনি!”
রৌদ্র জবাবে মৌন রইলো। তার সরু দৃষ্টি এখনো মেয়েটাতে নিবদ্ধ। রৌদ্র উঠে গিয়ে অরিনের মুখোমুখি দাঁড়ায়।অরিনের গালে আলতো হাত রেখে বলে,
“ জামাটার এই অবস্থা হলো কি করে?”
অরিন বোধহয় এবার কেঁদেই ফেলবে। সে ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মতো অভিযোগ দেবার ন্যায় তখনকার ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পূর্ণটা বিবৃতি দিয়ে ছাড়ে রৌদ্রের কাছে। রৌদ্র বেশ মনোযোগের সাথে শুনলো নিজের অভিমানিনীর কথা।তারপর হালকা হেসে বললো,
“ ব্যস! এটুকুই? এটুকু বিষয়ের জন্য আমার চাঁদমুখটায় এতোটা অন্ধকার নেমেছে?”
অরিন কপট রাগ দেখায় এবার। রৌদ্রের হাতটা গাল থেকে ঝটকা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
“ এটা আপনার জন্য এটুকু বিষয় ডাক্তার সাহেব? এখন যে আমি এই ভেজা জামা নিয়ে নিচে যেতে পারবোনা সেটার কি হবে? সবাই ঐদিকে আনন্দ করবে আর আমি? আমি বসে বসে মাছি তাড়াবাে।”
বলেই অভিমানিনী রৌদ্রকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে তার একহাতের কব্জি চেপে ধরে রৌদ্র। অরিন পেছনে ফিরলো না। সে নিজের অভিমান দৃঢ় রেখে তাকিয়ে রইলো সামনের দিকে। তা দেখে রৌদ্র মুচকি হাসলো।তারপর কিছু না বলে ঝট করে মেয়েটাকে পাঁজা কোলে তুলে নিলো। অরিন হকচকিয়ে ওঠে খানিকটা। রৌদ্রের ঘাড়ের ওপর হাত রেখে কপট রাগী গলায় বললো,
“ নিচে নামান ডাক্তারসাহেব।কি করছেন টা কি? ভুলে যাবেন না, এটা আমাদের বাড়ি নয়।হুট করে কেও এসে পড়লে কি হবে বলুনতো? ”
রৌদ্র অরিনের কথার প্রতিত্তোরে মৃদু হাসলো। মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বসে পড়লো বিছানায়। তারপর বললো,
“ হুম জানি এটা আমাদের বাড়ি নয়। তাইতো তোকে কোলে নিলাম বউজান! তাছাড়া আমি এসেই কিন্তু ভেতর দিয়ে ডোর লক করে দিয়েছি।সো বাইরে থেকে কেও চট করে এসে, ফট করে দেখে ফেলবে এমনটা হওয়ার বিন্দুমাত্র চান্স নেই।”
অরিন সাথে সাথে দৃষ্টি ফেলে দরজার দিকে। ঠিকই তো, দরজাতো ভেতর থেকে লাগানো। সে তবুও কপট ভাব দেখিয়ে বললো,
“ তাতে কি? কেও যদি হুট করে বাইরে থেকে নক করে বসে? তখন যদি ভেতরে আমাদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখে ফেলে? তখন কি হবে বলুন!”
রৌদ্র এবার সরু চোখে তাকায় অরিনের দিকে। অরিন খানিকটা ভড়কে যায় সেই দৃষ্টিতে। সে আমতা আমতা করতে লাগলো। রৌদ্র অরিনের গালে আলতো করে নাক ঘষে দিলো।এহেন স্পর্শে অরিন কেঁপে ওঠে কিছুটা। রৌদ্র স্পষ্ট টের পেলো তা। সে মেয়েটার গালে নাক রেখেই বললো,
“ এই ছোট্ট মাথাটায় এতোটা জোর দিতে হবেনা বউজান! এসবের জন্য আমি আছি।আমি থাকতে আপনার আবার এতো কিসের চিন্তা?”
অরিন মাথানিচু করে হাসলো কিছুক্ষণ। আর রৌদ্র তাকিয়ে দেখলো সেই হাসি। রৌদ্র এবার শব্দ করে চুমু খায় মেয়েটার টোলপড়া গালদুটোতে। তারপর আবারও মেয়েটার গালে নাক ঘষে আবদারের সুরে বলতে লাগলো,
“ বউজান! ও বউজান! একটা মিষ্টি চুমু দিননা প্লিজ!”
তড়িৎ মাথা উঠায় অরিন। চোখদুটো বড়সড় করে তৎনগদ হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট ঢেকে ফেলে সে।বলে ওঠে,
“ একদম না! আপনি দূরে সরুন ডাক্তার সাহেব। এখন এসব করা চলবে না।”
রৌদ্র অরিনের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে। মেয়েটার হাতটা টেনে সরায় মুখের সামনে থেকে। অরিনের গোলাপি অধর যুগলের দিকে মোহগ্রস্তের ন্যায় তাকিয়ে থেকে বলে ওঠে,
“ এমন করে না বউজান! আপনি স্বেচ্ছায় না দিলেও আমি কিন্তু নিজ থেকে আদায় করতে জানি!”
অরিন ফের মাথা নাড়ায়।রৌদ্রের কোল থেকে উঠার জন্য উদ্যত হতেই পাগল ছেলেটা তার কোমর আঁকড়ে ধরে। অগত্যা এহেন কান্ডে অরিন ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে। রৌদ্রের দিকে ক্ষুদ্র চোখে তাকিয়ে বলে,
“আপনি এমন কেনো? যখন-তখন এসব শুরু না করলে হয়না? একটুতো ধৈর্য্য থাকা উচিত!”
রৌদ্র মুচকি হাসে।অরিনের মাথার হিজাবের পিনগুলো আলতো হাতে খুলতে খুলতে বলে,
“ যার এমন কুট্টুস একটা বউ আছে,তার কি আর ধৈর্য্য ধরার উপায় থাকে?”
অরিন এ কথার পিঠে জবাব দেয় না।গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো মেয়েটা। রৌদ্র অরিনের মাথার হিজাবটা খুলে বিছানার ওপর রাখে।তারপর সরু দৃষ্টি ফেলে মেয়েটার কন্ঠদেশে। সেখানে এখনো জ্বলজ্বল করছে তার দেওয়া ভালোবাসার চিহ্নগুলো।রৌদ্র আলতো হাসলো।পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা মলম বের করে হাতে নিলো।সেখান থেকে একটু মলম বের করে আঙুলের ডগায় তুলে অরিনের কন্ঠদেশে — যেখানটায় কালচে দাগ বসে আছে সেখানে একটুখানি মলম লাগিয়ে দেয়। অরিন তৎক্ষনাৎ চোখ কুঁচকে ফেলে। খামচে ধরে রৌদ্রের উরু।দাঁতে দাঁত চেপে ধরে মৃদু জ্বলুনিতে।রৌদ্র বুঝলো মেয়েটার কষ্ট। সে আলতো করে ফু দিতে লাগলো জায়গাটায়। খানিকক্ষণ বাদে হাতের কাজ শেষ হতেই রৌদ্র অরিনের মুখটা নিজের দিকে ফেরায়।
অরিনের ললাটের ওপর আছড়ে পড়া চুলগুলো আঙুলের ডগার সাহায্যে কানের পিঠে গুজে দেয়।তারপর মেয়েটার ললাটে গাঢ় চুম্বন একে দেয় সে।অরিন চোখ বন্ধ করে নেয় প্রশান্তিতে।সে যতই মুখে মুখে মানুষটার কাছ থেকে দূরে থাকার কথা বলুক না কেন — মনটা তো তার তখনই শান্ত হয় যখন মানুষটা তার সামনে থাকে। এ মুহুর্তে অরিনের ঠিক কি হলো কে জানে! সে তার সকল লাজ-লজ্জাগুলো একপ্রকার চুলোয় দিয়ে ঝাপটে ধরে রৌদ্রকে।রৌদ্র অবাক হয়না একটুও।তার চোখেমুখে লেপ্টে আছে প্রাপ্তির হাসি।সে বুঝি জানতোই,তার সানশাইন এমন কিছু একটাই করবে।সেও অরিনকে জড়িয়ে রাখে নিজের বুকের মাঝে। মেয়েটার মাথার ওপর কয়েকটা চুমু দিতেও ভুললো না ছেলেটা। কিয়তক্ষন বাদে অরিনের ধীমি কন্ঠ ভেসে আসে রৌদ্রের কর্ণকুহরে। অরিন বলে,
“ ভালোবাসি!”
এপর্যায়ে রৌদ্রের ঠোঁটে দেখা মিলে এক মনোমুগ্ধকর হাসির ঝলক। সে অরিনকে আরেকটু চেপে ধরে মোলায়েম কন্ঠে বলে,
“ আমিও ভালোবাসি আমার বউজানকে!”
অরিন রৌদ্রের বুকে থেকেই মুচকি হাসে।কিছুক্ষণ বাদে রৌদ্রের বুক হতে মাথা উঠিয়ে অরিন বলে,
“অনেকক্ষন তো হলো ডাক্তার সাহেব! চলুন এবার নিচে যাওয়া যাক।”
রৌদ্র মাথা নাড়ায়।অরিনের ঠোঁটের দিকে ইশারা করে বলে ওঠে,
“ আগে পাওনা বুঝিয়ে দিন বউজান!তারপর যেখানে বলবেন যাবো।”
অরিন আলতো হাতে কপাল চাপড়ায়।রৌদ্রের দিকে কপট রাগী ভাব নিয়ে বলে,
“ ঠিক আছে করুন যা করার!”
রৌদ্র বাঁকা হাসে। অরিনকে কোলে রেখে নিজের কোমরের পেছন থেকে একটা শপিং ব্যাগ বের করে আনে।তারপর সেটা অরিনের সামনে দিয়ে বলে,
“ যা চেঞ্জ করে আয়!”
অরিন হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রইলো রৌদ্রের হাতে থাকা শপিং ব্যাগটির দিকে।অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“ কি এটাতে?”
“ তোর কাপড়!”
“ আমার কাপড় মানে? কোথা থেকে এলো?”
“ সেটা জেনে আপনার কি কাজ বউজান? আপনি শুধু গিয়ে পাল্টে আসুন। যদি তাও করতে ইচ্ছে না করে — তাহলে বসুন, আমি নিজেই আপনাকে চেঞ্জ করিয়ে দিচ্ছি।”
এই বলে রৌদ্র শপিং ব্যাগটা খুলতেই যাবে ওমনি কিঞ্চিৎ চিৎকার দিয়ে ওঠে অরিন।হকচকিয়ে ওঠে বলতে থাকে,
“ এই না, না।আমারটা আমিই চেঞ্জ করতে পারবো।”
রৌদ্র চোখে হাসলো কিছুটা। দুহাত পেছনের দিকে নিয়ে কিঞ্চিৎ হেলান দিয়ে বলে,
“ ঠিক আছে! এখন নাহয় মেনে নিলাম। কিন্তু কথা দিচ্ছি সানশাইন, যখন থেকে তুই পুরোপুরি আমার হবি,তখন থেকে এইসব কাজ আমিই করবো।”
এহেন কথায় ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো অরিন।রৌদ্র এমন তাকানো দেখে দুষ্ট হাসলো। ইশারায় মুখভঙ্গিতে চুমু দেখিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরলো নিজের। এমন কান্ডে অরিনের মাথাটা নিচু হয়ে আসলো তৎক্ষনাৎ।লজ্জায় পারেনা সে মূর্ছা যেতে। তখনি রৌদ্র খেঁকিয়ে ওঠে,
“ হেই! এখন এমন লজ্জা পেলে ভাঙাবো কিভাবে আমি? বোনের শ্বশুরবাড়ি এসে বাসর করে ফেললে নিশ্চয়ই এটা খুব ভালো দেখাবেনা। তাই এখন এতোটা লজ্জা পেয়ো না বউজান।”
এহেন কথা কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই লজ্জায় কানদুটো ঝা ঝা করে ওঠে অরিনের। গালদুটো হয়ে ওঠে ঈষৎ লাল। সে তৎক্ষনাৎ উঠে দাড়ায় রৌদ্রের কোল থেকে। শপিং ব্যাগটা বুকের কাছে চেপে হাঁটা ধরে ওয়াশরুমের দিকে। বিরবির করে বলতে থাকে,
“ নির্লজ্জ একটা!”
বিরবির করে বললেও কথাটা বেশ পৌঁছালো রৌদ্রের কানে।সে দুষ্ট কন্ঠে বলে ওঠে,
“ কাছে আয় একবার, নির্লজ্জ কাকে বলে,কতপ্রকার ও কি কি সবটাই প্র্যাক্টিক্যালি বুঝিয়ে দিবো।শুধু একবার কাছে আয়।”
সহসা দাঁতে জিভ কাটে অরিন।পাদু’টো না থামিয়ে ছুটে যায় ওয়াশরুমে।তা দেখে হেসে কুটিকুটি খাওয়ার মতো অবস্থা রৌদ্রের।সে বিছানায় গা এলিয়ে হাসতে থাকলো আপনমনে।
*** প্রায় মিনিট দশেক পর অরিন বেরিয়ে আসে। পড়নে তার গাঢ় খয়েরী রঙের একটা ঘারারা সেট। ড্রেস পাল্টানোর দরুন মাথার চুলগুলোও কেমন এলোমেলো হয়ে পিঠ ছাড়িয়ে কোমরে দোল খাচ্ছে। রৌদ্র ঘাড় বাকিয়ে একপলক তাকায় সেদিকে। তৎক্ষনাৎ তার হার্ট বুঝি দুয়েকটা বিট মিস করলো।ছেলেটা কেমন নেশালো চোখে তাকিয়ে থেকে উঠে দাড়ায় শোয়া ছেড়ে। অন্যদিকে অরিনের সেদিকে কোন খেয়াল নেই।
মেয়েটা হাত বাড়িয়ে গায়ের ওড়নাটা একপাশে সেট করতে করতে এগিয়ে আসছে। বিরক্তি ইতোমধ্যেই লেপ্টে গেছে তার সম্পূর্ণ মুখজুড়ে।সেই কখন থেকে ওড়নাটা সেট করছে সে,কিন্তু বজ্জাতটা তো সেট হওয়ার নামই নিচ্ছে না। অরিন এবার হাল ছেড়ে দেয়। হাত নামিয়ে ফেলে কাঁধ থেকে।আর সাথে সাথেই ওড়নাটা অবহেলায় গড়িয়ে পড়ে ফ্লোরে। অরিন সেদিকে একবার তাকিয়ে নজর ফেরায় রৌদ্রের দিকে। তারপর ফ্লোর থেকে ওড়নাটা তুলে রৌদ্রের কাছে এগিয়ে এসে ঠোঁট উল্টে বলে,
“ দেখুন না ডাক্তার সাহেব! ওড়নাটা একটুও সেট করতে পারছিনা। প্লিজ আপনি একটু হেল্প করুন না!”
রৌদ্রের কান অব্দি কি গেলো সেই কথা? কই ছেলেটার হাবভাবে তো মনে হচ্ছে না তা! সে কেমন মোহগ্রস্তের ন্যায় তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে। কিয়তকাল বাদে রৌদ্র ঘটালো আরেক ঘটনা। সে হাত বাড়িয়ে অরিনের চুলের ফাঁকে আঙুল ঢুকিয়ে মেয়েটার ঘাড় চেপে ধরে আলতো হাতে। হুট করে এমন হওয়ায় ভড়কে যায় অরিন।হতবিহ্বল চোখে তাকিয়ে থাকে রৌদ্রের দিকে।রৌদ্র মুখ খুললো।তার কন্ঠে কেমন অন্যরকম মাদকতা!
“ ইউ আর লুকিং ড্যাম গর্জিয়াস সানশাইন! আমার এখন কেমন পাগল পাগল লাগছে! কি করলি তুই?”
এরূপ কথার একটাও বোধগম্য হলোনা বেচারির।তার চোখে এখনও হতবিহ্বলতার ছাপ স্পষ্ট! হতবিহ্বল কন্ঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে,
“ কি করেছি আমি?”
রৌদ্র স্মিত হাসলো অরিনের বোকা কথায়। সে অরিনের ঘাড়টা ধরে তাকে আরেকটু নিজের কাছে টেনে আনে।মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে হাস্কি স্বরে বলে,
“ পাগল করেছিস আমায়! একবার যেহেতু পাগল করেছিস, তাহলে পাগলামিটাও তো সহ্য করতে হবে। তাই-না সানশাইন? ”
অরিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ওষ্ঠপুট আঁকড়ে ধরে রৌদ্র। ঘটনার আকস্মিকতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে রইলো অরিন।শরীরটা কেমন মৃদু কাপছে তার। এই স্পর্শ ….. হ্যা,এই স্পর্শের সান্নিধ্যে আসলেই নিজেকে হারিয়ে ফেলে সে।কিছুতেই নিজেকে আটকে রাখতে পারেনা মেয়েটা।আজকেও তাই হলো।রৌদ্রের অধরের স্পর্শ যত গভীর হচ্ছে ততই কেঁপে কেঁপে উঠছে অরিন।রৌদ্র নিজের কাজ বহাল রেখে অরিনের হাতদুটো উঠিয়ে দিলো নিজের ঘাড়ের ওপর। পরক্ষণেই কালবিলম্ব না করে মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয় রৌদ্র। অরিন পাদু’টো দিয়ে চেপে ধরে রৌদ্রের কোমর।এদিকে রৌদ্র উম্মাদের মতো মেয়েটার নরম অধরযুগলে নিজের দখলদারিত্ব ঘটাতে ব্যস্ত।সে অরিনকে শুইয়ে দেয় বিছানার ওপর। প্রায় মিনিট পাঁচেক পর অরিনের বুঝি নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার যোগাড় হলো।সে হাসফাস করতে লাগলো। রৌদ্র তৎক্ষনাৎ ছেড়ে দেয় অরিনের ওষ্ঠপুট। অরিনটা ছাড়া পেয়ে পাগলের মতো নিশ্বাস ফেলতে থাকে অনবরত। অথচ রৌদ্র এদিকে ব্যাকুল।সে অরিনের ওপর ঝুকেঁ থেকে ঘনঘন নিশ্বাস ফেলছে।আজকে বুঝি মেয়েটাকে একেবারেই ছাড় দিবেনা সে। রৌদ্র অরিনের চোখের দিকে তাকায়। অরিন একমুহূর্তের জন্য থমকে যায় রৌদ্রের নেশালো চোখে চোখ পড়তেই। রৌদ্র সময় নষ্ট না করে আবদার জুড়লো,
“ সানশাইন! শেল উই গো ফর আ বাইট কিস?”
“….মানে?”
রৌদ্র দুষ্ট হাসলো। অরিনের ঠোঁটের দিকে ফের এগিয়ে আসতে আসতে বললো,
“ দেখাচ্ছি!”
রৌদ্র ধীরে ধীরে ঝুঁকে এলো অরিনের খুব কাছাকাছি। তার নিঃশ্বাসের উষ্ণতা অরিনের কন্ঠদেশে এসে ঠেকছে, এতেই যেন কুপোকাত মেয়েটা।এক মুহূর্তে রৌদ্র তার ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল অরিনের গলায়, ঠিক কলারবোনের কাছটায়। প্রথমে কেবল উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শ। তারপর সেই স্পর্শ হয়ে উঠলো ঠোঁটের চাপ।
তারপর রৌদ্র একটা মৃদু কামড় বসিয়ে দেয় অরিনের কন্ঠদেশে। এহেন স্পর্শে খুব একটা ব্যাথা না লাগলেও মেয়েটার সম্পূর্ণ শরীরে অদ্ভুত এক শিহরণ তুলে দেয়। অরিনের নিঃশ্বাস আটকে যায়। চোখ বন্ধ হয়ে আসে।রৌদ্র কামড়টা দিয়ে থেমে থাকে এক মুহূর্ত। যেন বোঝার চেষ্টা করছে, অরিন কিছু বলবে কিনা।কিন্তু অরিন তখনও নড়েনি, বাধা দেয়নি রৌদ্রকে। রৌদ্র স্পষ্ট টের পেলো অরিনের বুকের ভেতর থেকে আসা ধ্বক ধ্বক শব্দটা।রৌদ্র আবার তার ঠোঁট রাখে সেই একই জায়গায়, এবার একটুখানি চুষে নেয় সেই কামড় দেওয়া চিহ্নটা।অরিনের ঠোঁট কাঁপে। মাথাটা রৌদ্রর দিকে একটু ঝুঁকে আসে অজান্তেই। রৌদ্র এবার মুখ তুলে তাকায় অরিনের দিকে।
দেখতে পায়, — মেয়েটার লজ্জা রাঙা নতমুখ! রৌদ্র মেয়েটার ললাটে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। সময় নিয়ে গাঢ় চুম্বন আকেঁ সেথায়।অরিন আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয়। রৌদ্র এবার ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে অরিনের থুতনির কাছে। প্রথমে সেখানে আলতো করে একটা চুমু একে দেয়। তারপর পরপর কয়েকটা মৃদু কামড়ে ভরিয়ে তোলে জায়গাটা। রৌদ্রের এহেন কামড়ে মেয়েটার থুতনি লাল হয়ে আসে তৎক্ষনাৎ। রৌদ্র থামলো না।সে আরও খানিকটা বেসামাল হলো। কোনোরুপ পূর্বাভাস না দিয়েই—রৌদ্রের ঠোঁট দখল করে নেয় অরিনের ঠোঁট। প্রথমে ছিল কেবল একটুখানি স্পর্শ,
তারপর… ধীরে ধীরে, রৌদ্র অরিনের নিচের ঠোঁটে হালকা একটা কামড় দেয় — অতি সাবধানে, যত্নে।
অরিন কেঁপে ওঠে। তার নিঃশ্বাস এক ধাক্কায় বুক ফাটিয়ে বেরিয়ে আসে।
সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ২৮
রৌদ্র থেমে যায় না। সেই কামড় দেওয়া ঠোঁটটাকে ওর ঠোঁটের ভেতরে নিয়ে একটুখানি টেনে নেয়। তারপর আবার ছেড়ে দেয়।এমন প্রায় বেশ খানিকক্ষণ ধরে চললো তার পাগলামি। এদিকে মেয়েটা বুঝি দূর্বল হয়ে পড়লো রৌদ্রের এহেন পাগলামি সামলাতে। অরিন চোখ বন্ধ করে রইলো।বুকের ভেতরটায় বুঝি তান্ডব চলছে একপ্রকার। নিশ্বাস ফেলতেও বুঝি কষ্ট হচ্ছে তার। অথচ ছেলেটাকে দেখো! সে তার পাগলামি থামালে তো!