সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ১৭
জাওয়াদ জামী
” এই মেয়ে, তুমি এখনো চকলেট হাতে ধরেই রেখেছ! খেতে ইচ্ছে না করলে ফেলে দাও। তা-ওড় বেচারার গলা টিপে ধরে রেখোনা। বেচারার জবান থাকলে এতক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিত। ”
তাহমিদের কথা শুনে কুহু হতভম্ব হয়ে চকলেটের দিকে তাকাল। ও নাকি চকলেটের গলা টিপে ধরে রেখেছে! চকলেটের আবার গলাও হয়! এই লোকটা সব সময় এভাবে কথা বলে কেন ভেবে পায়না কুহু।
” কুহুপু, চকলেটটা তাত্তারি খেয়ে নাও। আর খেতে ইচ্ছে না করলে আমাকে দাও। ” সন্ধি হাসি হাসি মুখ করে বলল।
” তোকে চারটা চকলেট দিয়েছি। তা-ও এর চকলেটের দিকে নজর দিচ্ছিস কেন? রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে তোকে চকলেটের ভেতর ডুবিয়ে রাখব আমি। দেখব কত চকলেট খেতে পারিস। ”
তাহমিদের ধমকে চুপসে গেল সন্ধি।
এদিকে তাহমিদের বাঁকা কথা শুনে কুহু র্যাপার খুলে তড়িঘড়ি করে চকলেট মুখে পুরল।
” ভাই, আমরা যাচ্ছিটা কোথায়? ” সামনে থেকে জিজ্ঞেস করল আনান।
” প্রথমে সোনারগাঁও এবং এর আশেপাশের দর্শনীয় স্থানে যায। এরপর তোরা যেখানে যেতে চাইবি সেখানে যাব। ”
সোনারগাঁও যাওয়ার কথা শুনে কুহুর মন খুশিতে নেচে উঠল। কয়েক বছর আগে বাবা-মার সাথে সোনারগাঁও গিয়েছিল। এরপর চাইলেও আর যাওয়া হয়নি। ইচ্ছে ছিল আর একটাবার সেখানে যাবে। আজ ওর অপ্রকাশিত সেই অপূর্ণ ইচ্ছেকেই পূরণ করছে তাহমিদ। তাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে, আপনি আমার গোপন ইচ্ছে টের পেলেন কিভাবে? কিন্তু সংকোচের কারনে প্রশ্নটা করা হয়ে উঠলনা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
পুরোটা দিন ওরা কাটাল সোনারগাঁও ও এর আশেপাশের দর্শনীয় স্থানে। সবাই খুব আনন্দ করল। কুহু আরও একবার মুগ্ধ হয়ে দেখল সোনারগাঁও, পানাম নগরসহ প্রতিটি দর্শনীয় স্থান। তাহমিদ ওদেরকে নিয়ে গেল একটা রিসোর্টে। সবাইকে তাদের পছন্দের খাবার খাইয়েছে। তাহমিদ কৌশলে শিহাবের কাছ থেকে জেনে নিয়েছিল কুহু কি কি খেতে পছন্দ করে। ও সেগুলোও অর্ডার করেছিল। এতকিছুর মধ্যে কুহু জানতেও পারলনা শুধুমাত্র ওর জন্যই তাহমিদ এতকিছু করেছে।
সোনারগাঁও থেকে ওরা সরাসরি চলে গেল হাতিরঝিল। সেখানেই রাত বারোটা পর্যন্ত কাটিয়ে বাসার দিকে রওনা দিল।
বাসায় ফেরার পথেও তাহমিদের পাশেই বসতে হল কুহুকে। সকালের মত এবারেও জড়োসড়ো হয়ে বসল। এদিকে গাড়িতে ওঠার কিছুক্ষণ পরই সবাই ঘুমিয়ে পরল৷ শুধু তাহমিদ আর কুহু জেগে রইল।
তাহমিদ ফোনে মনযোগ দিল। কুহু চুপচাপ বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেল। উসখুস করছে মেয়েটা।
” কোন সমস্যা? আমি কিন্তু এদিকে চেপেই বসেছি। তোমার শরীর একচুলও স্পর্শ করছেনা আমার শরীর। ” ফোনে চোখ রেখেই বলল তাহমিদ।
কুহুর মনে হল লোকটা আবারও ওকে খোঁচা মারল। তাই ওর কথার কোন উত্তর দিলনা৷
” আমার জানা মতে, তোমার বাকশক্তি আছে। তুমি সবার সামনে দিব্যি কথা বল। কিন্তু আমার সামনে আসলেই বোবা হয়ে যাও কেন? আমাকে কি বোবাদের কারিগর মনে হয় তোমার? ” কুহুকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে, মৃদুস্বরে বলল তাহমিদ।
তাহমিদের অভিযোগ শুনে কেন যেন কুহুর হাসি পেল। লোকটার কথায় কি কিছুটা অভিমান মেশানো ছিল? নাকি সে সত্যি সত্যি অভিযোগই করল? মনে প্রশ্ন জাগলেও সেটা হজম করল কুহু।
” এ আমি কার সাথে কথা বলছি? এটা কি মানুষ নাকি রোবট! এই মেয়ে, কিছুতো বলো ? ” ধমকে উঠল তাহমিদ।
” কি বলব? ”
” তোমার যা ইচ্ছে। ”
” আপনি আজ মেডিকেলে গেলেননা যে? ক্ষতি হলোনা এতে? ”
কুহুর প্রশ্ন শুনে হতবাক তাহমিদ কপাল চাপড়ালো। ওর কান্না পাচ্ছে।
” আর কোন প্রশ্ন তোমার ঝুলিতে ছিলনা? কখন কোন প্রশ্ন ডেলিভারি করতে হয়, সেটা তোমার জানা নেই? ”
” আপনিই তো বললেন, যা খুশি প্রশ্ন করতে! আমি সেজন্যই প্রশ্নটা করলাম। ”
” একদিন ক্লাস না করলে কোন ক্ষতি হবেনা। ” দাঁত পিষে বলল তাহমিদ।
” ভয় হয়না আপনার? ” আবারও জিজ্ঞেস করল কুহু।
” কিসের ভয়? ” এবারও হতবাক তাহমিদ।
” রক্ত, ডেড বডি, কাঁটাছেড়া দেখলে? ” কুহু আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে তাহমিদের দিকে।
” আমার তো ভালোই লাগে। ”
” ভালো লাগে! ডেড বডিও দেখতে ভালো লাগে আপনার? ”
” ক্যাডাভার ডিসসেকশন আমার পছন্দের একটা কাজ ছিল। প্রতি সপ্তাহে কয়েকদিন করতে হতো। একদিনও মিস দেইনি। ক্যাডাভার ডিসসেকশন কি বোঝ? ”
কুহু মাথা নেড়ে জানালো সে জানেনা।
” কেটেকুটে বডির ভেতরের পার্ট দেখা। ”
” এটা আপনার ভাল্লাগে? আল্লাহ! ”
” আমাদের ভেতরে কতকিছু আছে সেটা যদি তুমি দেখতে পাও ভালো লাগবেনা? তুমি চাইলে একদিন তোমাকে দেখাতে পারি। ”
” আমার এসব দেখার দরকার নেই। আমার এজন্যই মেডিকেলে পছন্দ নয়। ”
তাহমিদ বুঝল কুহু ভয় পেয়েছে।
” তুমি ভয় পাও! দেশ সেরা ছাত্রী মেডিকেলে পড়তে ভয় পায়? সিরিয়াসলি? ”
” সবাইতো আপনার মত কসাই নয়। এজন্যই সবাই ডক্টরদের কসাই বলে। ”
” তুমিও কি তাই বলো? ”
” হুঁ। ”
” শেষ সময়ে এসে কি মেডিকেল ছেড়ে দিতে হবে আমাকে! ইন্টার্নি শেষের দিকে। এই বয়সে আবার আমাকে এ্যাডমিশন টেস্ট দিতে বলছ? এটাও কি সম্ভব? ”
তাহমিদের প্রশ্নে কুহু ভ্রু কুঁচকে তাকাল।
” আমি কখন মেডিকেল ছাড়তে বললাম! ”
” বলোনি? তাহলে আমারই বোঝার ভুল। তাহলে ইন্টার্নি শেষ করেই ফেলি কি বলো? ”
” আপনার পড়াশোনা আপনি করবেন, আমি কি বলব? ”
” একদম ঠিক। তুমি কি বলবে। ”
তাহমিদের হেয়ালি মার্কা কথা শুনে কুহু বিরক্ত হলো। এরপর বাকি পথটুকু চুপচাপ বসে রইল।
” তুই কি মনে করে বাসায় আসলি, নিহান? ”
রাখী আক্তারের প্রশ্ন শুনে নিহান অবাক হলো।
” বাড়িতে আসতে কারন থাকতে হয়, আম্মু? আমি আগেও হুটহাট বাড়িতে এসেছি। কিন্তু তখন তুমি আমাকে প্রশ্নটা করোনি। ”
” ছেলে বাড়িতে আসলে সবথেকে খুশি হওয়ার কথা মায়ের। কিন্তু তোমাকে দেখছি মুখ ভার করে আছ। ঘটনা কি, রাখী? তুমি কি চাইছ, তোমার ছেলে বাড়িতে আসা বন্ধ করে দিক? চেয়ে থাকলে বল। আমি ঢাকায় ওদের থাকার ব্যবস্থা করছি। একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করলেই ওরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারবে। দৃষ্টি মা আছে। নিহান, আনানের খাওয়ার সমস্যা হবেনা। ” নিয়াজ মাহমুদ আজ ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বললেন।
” কি বলতে চাচ্ছ তুমি? দৃষ্টিকে ঢাকায় পাঠাতে চাচ্ছ? আমার অনুমতি ছাড়াই? ” খেঁকিয়ে উঠল রাখী আক্তার।
” স্বামী-স্ত্রী একসাথে থাকবে, এতে তোমার অনুমতি নিতে হবে কেন? ওদেরকে খরচ দেব আমি। এখানে তোমার কাজ কি? সামনে দৃষ্টির এসএসসি পরীক্ষা না থাকলে আমি ওকে বিয়ের কয়দিন পরই ঢাকায় পাঠিয়ে দিতাম। তাহলে তোমার মত বেআক্কেল মহিলার হাত থেকে মেয়েটা অন্তত রেহাই পেত। ফালতু মহিলা, ছেলের ব্যাক্তিগত বিষয়ে নাক গলায়। ”
” কিহ্ তুমি আমাকে ফালতু মহিলা বললে? এতবড় সাহস তোমার? নিহান আমার ছেলে,তাই আমিই সিদ্ধান্ত নেব ওর বউ কোথায় থাকবে। ”
” তুমি যেভাবে গলা উঁচিয়ে বললে, নিহান তোমার ছেলে। কিন্তু আমার মনে হয় নিহান তোমাকে মা হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা পায়। তোমার যা স্বভাব, তোমাকে সোসাইটিতে মা, স্ত্রী, শ্বাশুড়ি হিসেবে পরিচয় দেয়াটা লজ্জাজনক বিষয়। ”
” তুমি আমাকে অপমান করছ? ভাইয়ের মেয়েকে ছেলের বউ করে এনে তোমার সাহস বেড়েছে? নিজের দল ভারি করছ? ভেবেছ দলে ভারি হলেই আমাকে কোনঠাসা করতে পারবে? কক্ষণো না। সেই সুযোগ আমি তোমাকে দেবোনা। ”
” আম্মু, তুমি থামবে? তোমার সমস্যা কি সেটাই আজ পর্যন্ত বুঝতে পারলামনা। আমি বাড়িতে আসায় যদি তোমার সমস্যা হয়, তবে আমি আসবনা। পরীক্ষার পরই চাকরি খুঁজব। চাকরি হলেই দৃষ্টিকে নিয়ে চলে যাব। আর আসবনা তোমার বাড়িতে। তুমি শান্তিতে থেকো। আব্বু, আমি আজই ঢাকা ফিরব। আনান কুহুকে নিয়ে কালকেই চলে আসবে। ভর্তির দুইদিন ওকে ঢাকা পাঠিয়ে দিও। আনান বোধহয় থাকতে পারবেনা। ওর পরীক্ষা শুরু হবে। আমিও আসতে পারবনা। ”
” তুমি চিন্তা করোনা, কুহুকে আমি ঢাকা নিয়ে যাব। ওকে ভর্তি করিয়ে তবে বাসায় আসব। ”
দুই বাবা-ছেলে রাখী আক্তারকে উপেক্ষা করে নিজেদের আলাপ চালিয়ে গেল। রাখী আক্তার মুখ কালো করে বসে থাকল। সবটা দেখে দৃষ্টি শুধু হাসল। সেই সাথে ও প্রতিজ্ঞা করল, আজকের পর থেকে বড়মার করা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে। নিজেকে বাংলা সিনেমার অসহায় পুত্রবধূ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেনা।
” সত্যিই তুমি চলে যাচ্ছ? ” মুখ ভার করে বলল দৃষ্টি।
” যেতেই হবে, আমি নিরুপায়। তুই সাবধানে থাকবি। মন দিয়ে পড়াশোনা করবি। আম্মুর কথায় মন খারাপ করবিনা। যখনই সুযোগ পাব, তখনই তোর কাছে ছুটে আসব আমি। ”
” আবার কবে আসবে তুমি? ”
” বললামনা, যখনই সুযোগ পাব তখনই ছুটে আসব তোর কাছে? সেই ছুটে আসাটা সাতদিন পরও হতে পারে আবার পনের দিন পরও হতে পারে। যে কয়দিন মনকে লাগাম দিয়ে রাখতে পারব, সে কয়দিনই তোর থেকে দূরে থাকব আমি। ”
দৃষ্টিকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে ওর কপারে ঠোঁট ছোঁয়াল নিহান। নিহানের ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই খিলখিল করে হেসে উঠল দৃষ্টি।
” কুহু আসলে ওর সাথে গ্রামে যাস। কয়েকদিন থেকে আসিস। এই টাকাগুলো রাখ । প্রয়োজনে খরচ করিস। ”
” টাকা লাগবেনা। বড় চাচা আমাকে বেশকিছু টাকা দিয়েছে। ”
” এই টাকাগুলো তোর স্বামী দিচ্ছে। তার ইনকামের টাকা তোর হাতে দিচ্ছে। এতে তোর এত আপত্তি কিসের? ”
” ইনকামের টাকা? তুমি কি চাকরি কর? ”
” টিউশনি করাই কয়েকটা। প্রতিমাসে কয়েক হাজার টাকা আসে হাতে। এখন থেকে প্রতিমাসেই তোকে টাকা দেব। যখন যা প্রয়োজন কিনবি। নাকি কোন সমস্যা আছে? ”
” কোনই সমস্যা নেই। ”
” গুড গার্ল। গ্রামে যাওয়ার আগে শিহাবকে ওর পছন্দমত পোশাক কিনে দিবি। কুহুকে দিতে চাইলে ও নিবেনা, তাই ওকে তোর কিছু দিতে হবেনা। ও ঢাকা গেলে আমিই ওকে কিনে দেব। ”
” ঠিক আছে। আর কিছু? ”
” মন খারাপ হলে সাথে সাথে আমাকে ফোন দিবি। কুহুকে কিছু বলবিনা। ও শুনলে কষ্ট পাবে। আম্মু তোর সাথে দুর্ব্যবহার করলে তুই আমাকে জানাবি। ”
” আগে প্রতিবাদ করব, তারপর তোমাকে জানাবো। ”
” প্রতিবাদ করতে গিয়ে আবার চুল ছেঁড়াছিঁড়ি করিসনা যেন। আম্মু যদি ভুলে যায় তুই তার ছেলের বউ, তবে তাকে সেটা মনে করিয়ে দিস। ”
” বড়মা যদি চুল ছেঁড়াছিঁড়ি করতে চায, তখন আমি তাকে বাঁধা দেব কিভাবে? ”
” সেটা তোকেই দেখতে হবে। কিভাবে সংসারে শান্তি আসবে, সেটা তোকেই ভাবতে হবে। আর সেই সাথে আম্মুকেও সঠিক পথে আনতে হবে তোকেই। পারবি তো? ”
” চেষ্টা করব। ”
দৃষ্টির কপালে আরও একবার ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল নিহান।
” কুহু মা, ভর্তির দুই-চার দিন আগেই চলে আসিস কিন্তু। শিহাবকেও সাথে নিয়ে আসবি। ওকে এখানেই ভর্তি করিয়ে দিতে চেয়েছে তোর বড় মামা। ” আফরোজা নাজনীন কুহুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন।
” কুহু, শোন মা, এখানে আসতে একদমই লজ্জা পাবিনা। আমরা সবাই চাই তুই এই বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করবি। দৃষ্টির পরীক্ষার পর ওকে ও নিয়ে আসব। নিহানের পড়াশোনা ততদিনে শেষ হয়ে যাবে। ও এখান থেকেই চাকরির প্রস্তুতি নেবে। তাহলে তোরা তিন ভাইবোন একসাথেই থাকতে পারবি। ” বড় জা থামলে তাহমিনা আক্তার বললেন।
কুহু এই বাড়ির প্রত্যেকের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছে। ইনারা প্রত্যেকেই ভিষণ ভালো সেটা আরও একবার স্বীকার করল । কিন্তু হয়তো কুহু ইনাদের চাওয়া পূরন করতে পারবেনা। কারন ও চায়না এখান থেকে পড়াশোনা করতে। হ্যাঁ, হয়তো মাঝেমধ্যে এই বাড়িতে বেড়াতে আসবে। ও কারো বোঝা হতে চায়না। শিহাবসহ নিজের দ্বায়িত্ব নিজেই পালন করতে চায়।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাশেদীন হাউজ থেকে বেরিয়ে গেল কুহু। ওর বিদায় বেলায় সবাই উপস্থিত থাকলেও তাহমিদ ছিলনা। মামীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে, তার ইম্পরট্যান্ট ক্লাস থাকায় অনেক আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। গত রাতের পর থেকে কুহু তাকে দেখেনি।
সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ১৬
তার কাছ থেকে বিদায় নেয়া হয়নি জন্য খারাপ লাগল কুহুর। সেই মানুষটার জন্যই ওকে পছন্দের জায়গায় আরেকবার ঘুরতে যেতে পেরেছিল বলেই কুহু তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আর সেই কৃতজ্ঞতা থেকেই মন খারাপের সূচনা। এটা কুহুর ধারনা। কিন্তু কুহু বুঝতে পারেনি, ওর হৃদয়ে একটু একটু করে আসন গাড়তে চলেছে সেই মানুষটিই।