সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ৪৭

সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ৪৭
জাওয়াদ জামী

বধূ বেশে সিক্তাকে দেখে হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে গেল কুহুর চোখমুখ। হেসে এগিয়ে গেল সিক্তার দিকে। ওর হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল ,
” তোকে চমৎকার দেখাচ্ছে , সিক্তা। আনান ভাইয়া আজকে তোকে দেখলে নির্ঘাত সেন্সলেস হয়ে যাবে। আমি একটু পরই ভাইয়াকে এখানে নিয়ে আসব। ”
” ঐ কাজ করতে যাস না কিন্তু। আমি লজ্জায় মরে যাব। তোকে একটা রিকুয়েষ্ট করব। প্লিজ না করবি না। ” সিক্তার গলায় অনুনয় ঝরল।

” আজকে আবার কি রিকুয়েষ্ট করবি ! আচ্ছা বল শুনি। ”
” তুই আমার সঙ্গে যাবি । একা যেতে আমার লজ্জা করবে । প্লিজ পজিটিভ উত্তর দিবি। ”
” একা যাবি কেন! তোর সঙ্গে সন্ধি , সোহা, নিপুন, শায়ক সবাই যাচ্ছে। ”
” ওরা ছোট। তুই চল আমার সঙ্গে। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আজকের পর তোর কাছে যখন-তখন রিকুয়েষ্ট করব না। ”
সিক্তার কথা শুনে কুহুর মনটা কেঁদে উঠল। সিক্তা এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে ভাবলেই কুহুর কান্না পাচ্ছে। ওরা সারাটাদিন একসঙ্গে থাকত। কতশত গল্প করত দু’জন। হাসিঠাট্টায় বাড়িটাকে মাতিয়ে রাখতো মেয়েটা। সেই মেয়েটা আজকের পর থেকে মাঝেমধ্যে এই বাড়িতে অতিথি হয়ে আসবে। আজকের পর থেকে আরেকটা সংসারকে নিজের করে নিতে হবে। চোখের কোনে পানি জমলো। কেন যেন সিক্তার কথা ফেলতে ইচ্ছে করলো না।
” ঠিক আছে , আমি যাবো তোর সঙ্গে। তার আগে বড়মাকে বলতে হবে। তুই একটু অপেক্ষা কর। আমি বড়মাকে বলেও আসছি। আবার তোর জন্য খাবারও নিয়ে আসছি। ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সিক্তার বিদায় বেলায় কান্নার রোল উঠলো বাড়ি জুড়ে। আফরোজা নাজনীন কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে গেলেন। দিদুনও অসুস্থ হয়ে গেলেন। তাদের ফ্যামিলি ডক্টর বিয়ে উপলক্ষে সেখানেই ছিল। সে আফরোজা নাজনীন আর দিদুনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করল। কুহু চলে গেল সিক্তার সঙ্গে।

” এসো ছোট জা। ওয়েলকাম হোম। আজ থেকে আমাকে বড় আপু অথবা ভাবী বলে ডাকবে। এটা আমার আদেশ। ”
দৃষ্টির কথা শুনে সকলেই হেসে উঠল। ওকে যখন রাখী আক্তার সিক্তাকে বরণ করছিলো তখন দৃষ্টি এসে সিক্তাকে উদ্দেশ্য করে বলল। সিক্তা ও কম কিসে। সেও জবাব দিল ।
” থ্যাংকিউ। এতক্ষণ আপনাকেই মিস করছিলাম, ভাবী । বড় জা হিসেবে আপনারও উচিত আমাকে বরণ করা। আপনার উচিত বড় জা হিসেবে আমার শ্বাশুড়ির মত সোনার বালা অথবা সোনার চেইন দিয়ে বরণ করা। কখন করবেন বরণ? ”
” থাক বাপু আমার বরণ করে কাজ নেই। আর আমাকে ভাবীও ডাকতে হবে না। নাম ধরেই ডেকো আমাকে। ” মুখ বেঁকিয়ে জবাব দিল দৃষ্টি।
দৃষ্টির কর্মকাণ্ড দেখে আবারও হেসে উঠল সকলে। রাখী আক্তারও হাসলো। সে হেসে একটা ছোটো বক্স ধরিয়ে দিল দৃষ্টির হাতে।

” এই যে ধর, বরণ করে নে ছোট জা কে। তোমরা হেসো না। আমার বড় বউমাও তার ছোট জা কে বরণ করবে। ”
দৃষ্টি বক্স খুলে দেখলো একজোড়া বালা। খুশিতে ঝলমল করছে মেয়েটার মুখ। বড়মা সত্যিই সিক্তাপুকে বরণ করার জন্য ওকে এগুলো দিয়েছে! খুশিতে চোখে পানি এসে গেল দৃষ্টির। কিছুদিন থেকেই বড়মা ওকে মাঝেমধ্যেই সারপ্রাইজ দিচ্ছে। সেই খুশিতে মাঝেমধ্যেই সিক্তার হার্ট অ্যাটাক হয়। যদিও সেটা কেউ দেখতে পায় না। দৃষ্টি হাসতে হাসতে বরণ করল সিক্তাকে।
” ও দেওরা , বাসায় ঢুকতে গেলে ট্যাক্স দিতে হবে। আগে ট্যাক্স দেবে পরে বাসায় ঢুকবে। ” এবার দৃষ্টি আনানের পেছনে লাগলো।

” ও আমার ভাবী , আমার আদরের ছোট বইন, আমি খাঁটি বেকার একজন হতভাগা। আমি ট্যাক্সের টাকা পাবো কোথায় ? মাপ কর , বইন। এই হতভাগা ভাইকে একটু দয়া কর। ”
আনান ওয়ালেট শক্ত করে চেপে ধরে বলল।
শেরওয়ানির সাইড পকেটে ওর ওয়ালেট রাখা আছে। সেটা যদি দৃষ্টির নজরে পরে, তবে নির্ঘাত কাল সকালে ওকে ফুটো থালা নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে। ঠিক তখনই ও অনুভব করল, কেউ ওর ডান হাতে কিছু একটা গুঁজে দিতে চাইছে। আনান তাকায় সেদিকে। কুহু চোখের ইশারায় কিছু বলল। আনান ওর হাতের দিকে তাকালো। তখনই বুঝলো ঘটনা কি। কুহু ওকে টাকা দিচ্ছে। কিন্তু আনান সেটা নিতে চাইলো না।
” ভাইয়া , এমন ত্যাদোড়ের মত করছো কেন? টাকাগুলো নাও। নয়তো তোমার হয়ে দৃষ্টিকে টাকাগুলো আমিই দেবো। ” আনানের কানে ফিসফিসিয়ে বলল কুহু।

” তুইও দেখছি তোর হিটলার জামাইয়ের মত কথা বলছিস , কোকিলা! হিটলারের সঙ্গে বসবাস করার সাইড ইফেক্ট তোর ওপরেও ভর করেছে দেখে আমি একটুও অবাক হচ্ছি না। তুই ছোট বোন হয়ে আমাকে হুমকি দিচ্ছিস! ” আনান সত্যিই অবাক হয়ে গেছে।
” হুঁ দিচ্ছি। আর একটা কথাও নয়। টাকাগুলো নাও। ”
আনান টাকাগুলো নিয়ে দৃষ্টির দিকে দাঁত কেলিয়ে তাকাল।
” কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে , ভাবী ? ক্যাশ নেবে নাকি চেক দেবো? ”
” চেক লাগবে না। ক্যাশেই চলবে। ”
নিহান দেখলো ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। দৃষ্টি সত্যিই আনানের কাছ থেকে টাকা নেবে। এদিকে ওর ও একটা ভুল হয়ে গেছে। ব্যস্ততার কারনে আনানকে টাকা দেয়ার কথা ও ভুলে গেছে। নিহানের চেহারায় চিন্তার মেঘ জমলো। আনান সকলের সামনে লজ্জা পাবে। তাই বাধ্য হয়ে ও দৃষ্টিকে বলল ,

” দৃষ্টি , আমি তোকে টাকা দিচ্ছি। কত টাকা লাগবে তোর? ওদেরকে ভেতরে যেতে দে। ”
” আমাদের দেবর-ভাবীর মধ্যে আবার তুমি কেন! চালাকি করো না আমার সঙ্গে। ভাবীকে দিলে তোমার টাকা আবার তোমার কাছেই ফিরে যাবে। ভাবীর কোন লাভ হবে না এতে। তাই না, ভাবী। ”
” ঠিক বলেছ। ওর টাকা নিও না। তোমার টাকাই আমাকে দাও। ”
দৃষ্টির বোকামি দেখে নিহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। মনে মনে প্রার্থনা করল, এই মেয়েটার জ্ঞানবুদ্ধি যেন একটু দ্রুতই হয়।
” কত টাকা ট্যাক্স দেবো , ভাবী? ”
” বেশি নয়, পাঁচ দিলেই হবে। ”
” মাত্র পাঁচ টাকা! তুমি আমার লক্ষ্মী ভাবী। এক্ষুনি পাঁচ টাকা দিচ্ছি। ” আনান খুশি হওয়ার ভান করল।
” কিপ্টে লোক, আমি পাঁচ হাজারের কথা বলেছি। দাও পাঁচ হাজার। ” দৃষ্টি হাত পাতলো৷
আনান মুখ কাঁচুমাচু করে কুহুর দেয়া টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দৃষ্টিকে দিলো৷

” দৃষ্টি, এদিকে আয়। ” কুহু দৃষ্টিকে নিয়ে বেলকনিতে গেল।
” কি আপু , বল? ”
” আজ থেকে তোর দ্বায়িত্ব বেড়ে গেছে। তুই একইসঙ্গে এই বাড়ির বড় বউ, সিক্তার বড় জা। আবার কিন্তু তুই আনানও ভাইয়ার চাচাতো বোন। তাই স্বভাবতই তোর দ্বায়িত্ব একটু বেশি। কিন্তু দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনোই নিজের সীমা পেরোনোর চেষ্টা করবি না । সব সময় মনে রাখবি সিক্তা তোর বড় বোন। আনান তোর বড় ভাই। কখনোই বুদ্ধিহীনের মত কাজ করতে যাবি না। মিলেমিশে থাকবি দু’জন। বড় জা এই দাবি নিয়ে সিক্তার সামনে যাবি না। কখনো যদি কাজ একটু বেশিও করতে হয় , তবে সেটা হাসিমুখেই করবি। যেকোন সমস্যা মোকাবিলায় সিক্তার সঙ্গে পরামর্শ করবি । মনে রাখিস , ধৈর্য্য আর ত্যাগই সুখের সংসারের মূলমন্ত্র । ”

” বুঝেছি , আপু। তোমার প্রতিটা কথা আমি মনে রাখব। আর সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করব। আজকে তো আমি সিক্তাপুর সঙ্গে মজা করেছি। আমি কখনোই নিজেকে সিক্তাপুর বড় জা ভাবতে চাইও না। তুমি আর মা মিলে আমাকে শিখিয়েছ, কিভাবে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হয়। সেটা আমি কিভাবে ভুলে যাব , আপু! ”
” আমি জানতাম তুই এটাই বলবি। শোন, আমি কিন্তু কিছুক্ষণ পরই চলে যাব। শিহাবকে কয়দিন এখানে রাখতে চাচ্ছে ভাইয়া। ও এখানে তিন-চার দিন থাকুক। উনি একদিন এসে শিহাবকে নিয়ে যাবে। ”
” তুমি চলে যাবে মানে? তোমাকে আমরা যেতে দিলে তো। তুমিও আজকে কোথাও যাচ্ছ না আবার শিহাবও পনেরো দিনের আগে কোথাও যাচ্ছে না। এটাই ফাইনাল। ”
দৃষ্টির কথায় হাসলো কুহু। হেসে বলল,

” শিহাবকে রাখতে চাইলে হয়তো পারবি। কিন্তু আমাকে রাখতে পারবি না তুই। আর আমি চাইলেও এখানে থাকতে পারব না। সেটা সম্ভব হবে না। ”
” কেন, আপু? কেনো থাকবে না তুমি ? আমার কাছে কি তুমি একটা রাত কাটাতে পারো না! ”
” এখন এসব কথা রাখ। সিক্তাকে খেতে দে। ওকে আমি খাওয়াতে পারিনি। টেনশনে মেয়েটা কিছুই খেতে পারেনি। ”
” চল যাই। দু’জনে মিলে বড়মা, চাচা আর সিক্তাপুকে খেতে দেই। বাকি সবাইতো খেয়েই এসেছে। আপু , জানো তো বড়মা আমাকে একসেট গহনা কিনে দিয়েছে। আবার বড়মার গহনা থেকে কয়েকটা গহনাও দিয়েছে। বড়মা আর আগের মতো নেই। আমাকে এখন অনেক ভালোবাসে। আবার দেখো আজকে সিক্তাপুকে বরণ করার জন্য আমাকে বালাজোড়া দিল। আমার তখন কি যে আনন্দ লেগেছে। কান্না পাচ্ছিল তখন। ”
” বললাম না , ধৈর্য বড় গুণ। ধৈর্য্যর গুণেই একদিন তুই সকলের প্রিয়পাত্রী হবি। এবার চল সিক্তাকে খেতে দেই। ”

” কোকিলা , এদিকে আয়। ”
” কি , ভাইয়া? ” আনানের পিছু পিছু রাখী আক্তারের রুমে গেল কুহু।
” টাকাগুলো নে । সকলের সামনে আমার সম্মান রাখতে চেয়েছিলি এটা বুঝতে পেরেছি তখনই। তোর মত বোন বোন যেন প্রতিটা ঘরেই হয়। ”
” বোন বলছ আবার টাকাও দিচ্ছ , এটা কেমন কথা , ভাইয়া! আমি কি তোমার কাছ থেকে টাকা চেয়েছি ? আর শোন , এগুলো আমার টাকা নয়। এগুলো তোমার হিটলারের টাকা । আর হিটলারের টাকা তুমি নিতেই পারো। আফটারঅল, সে তোমার মামাতো ভাই। আর মামাতো ভাইয়ের পকেট মাঝেমধ্যে কাটলে দোষের কিছুই নেই। ”
” আমার কাছে কিন্তু টাকা আছে। টিউশনি টাকা জমিয়েছি একটু একটু করে। এখনো কিন্তু আমার কাছে দশ হাজার টাকা আছে। তাই আমি তোকে টাকা দিতে চাচ্ছি। ”
” টাকাগুলো তোমার কাছেই রেখে দাও, পরে কাজে লাগবে। আর আমাকে কখনো টাকা দিতে চেও না। আমি কষ্ট পাবো। ”

” কাছে আয়, তোকে জড়িয়ে ধরলে তো ঐ হিটলার রাগে হার্ট অ্যাটাক করবে । তাই তোকে জড়িতে পারব না। সেজন্য তোর মাথায় হাত রাখবো। আমি পাপী মানুষ। আমার দোয়ায় কোন কাজ হবে কি না জানি না। তবুও তোকে দোয়া করতে ইচ্ছে করছে। বলতে ইচ্ছে করছে , পৃথিবীর কোন একজনকে যদি সৃষ্টিকর্তা পরিপূর্ণ সুখী করেন ৷ তবে সেই একজন যেন তুই হোস। ” আনানের চোখে পানি এসেছে।
কুহু বুঝলো আনান ভাইয়া কাঁদছে। ভাইয়াকে কাঁদতে দেখে কুহুর চোখেও পানি আসলো। ও কান্না লুকানোর চেষ্টা করলো না। আনানের দিকে এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল আনানকে। রুদ্ধ গলায় বলল ,
” তোমার মত ভাইয়া যেন প্রতিটা মেয়েরই হয়। ”
” দিলি তো হিটলারের হার্ট অ্যাটাক করিয়ে। তার আবার অদৃশ্য নয়ন আছে। তুই কি করিস না করিস, তাকে না বললেও সে জেনে যায়। আজকে আমার খবর আছে। বাসর রাতে বউয়ের ভাইয়ের হাতে জামাইয়ের শহীদ হওয়ার খবর কালকে সকালে দেশের প্রতিটা নিউজ চ্যানেল আর অনলাইন পোর্টালে চলে আসবে । এই দুঃখ আমি কোথায় রাখবো। ”

আনানের কথার ধরন শুনে হেসে ফেলল কুহু। কিছু বলতে চাইলো ৷ তবে আর আগেই তাহমিদের গলা শুনতে পেলো।
” কাল সকালে নয় আর পনেরো মিনিট পরই নতুন জামাইয়ের শহীদ হওয়ার খবর নিউজে চলে আসবে। কারন হিটলারের আগমন ঘটেছে। তবে নতুন বিয়ে উপলক্ষে একটা ডিসকাউন্ট অফার পাচ্ছিস তুই। দুইটা অপশন থাকবে। যেকোন একটা বেছে নিতে হবে তোকে। অপশন এক, গাজী হতে চাস? অপশন দুই , শহীদ হতে চাস? বল কোনটা চাস? ” তাহমিদ দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
” তারমানে বলতে চাচ্ছ , এটা একটা যুদ্ধক্ষেত্র আর আমি সেই ময়দানের হতভাগা সৈনিক, শত্রুপক্ষের কাছে ধরা খেয়েছি! সেজন্য আমাকে শাস্তি দেয়া হবে? সেক্ষেত্রে গাজী হতে গেলে আমার কি শাস্তি পাওনা হয়েছে? ” আনান মুখ কালো করে জানতে চাইলো।

” দশবার কান ধরে ওঠবস করতে হবে। ”
” শাস্তিটা কমানো যায় না? হাজার হলেও প্রথমবার বিয়ে করেছি। ভেতরে একটা আলাদা ফিলিংস কাজ করছে। দশবার ওঠবস করতে গেলে ফুস করে ফিলিংসের বাত্তি নিভে যাবে। দশবার কমিয়ে দুইবার করো। ”
” নো ওয়ে। যেটা বলেছি সেটাই কর। শুরু কর। ”
আনান অসহায় চোখে তাকালো তাহমিদের দিকে।
” ভাইয়া , তুমি নিজের রুমে যাও তো। কিছুই করতে হবে না তোমাকে। ইনি যেটা করতে বলবে, সেটাই করবে নাকি তুমি? কক্ষণো না। ”
কুহুর কথায় হাঁফ ছাড়ল আনান ।

” বাঁচালি আমাকে , কোকিলা। আর জীবনেও এই হিটলারের আশেপাশে ঘেঁষবো না। কিন্তু এই বান্দা এখানে কেন ? তার তো আজকে এখানে আসার কথা ছিলো না! ”
” আমার বউকে নিতে এসেছি । আর ভুলে যাস না , আজ থেকে এখানে আমার বোনও থাকবে। তাই এখানে আসতে আমার কোন কারনের দরকার হবে না। ”
” কোকিলা কে নিতে এসেছ মানে! কোকিলা আজ এখানে থাকবে। তুমিও থেকে যাও। তবুও কোকিলাকে যেতে দেবো না। আর থাকতে ইচ্ছে না করলে চলে যাও। তারপরও কোকিলা এখানেই থাকবে। ”

সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ৪৬

” কুহু , যাও সকলের কাছ থেকে বিদায় নাও। আমি একে সাইজ করে তবেই আসছি। ভেবেছিলাম প্রথমবার বিয়ে করেছে, তাই একটুআধটু ছাড় দেয়াই যায়। কিন্তু এ ছাড় পাওয়ার মত কোন কাজই করছে না। ”
তাহমিদের কথা শুনে হেসে রুম থেকে বেরিয়ে গেল কুহু। ও জানতো তাহমিদ ওকে নিতে আসবে । এতদিন ওকে ছেড়ে একা থেকেছে , আর সে একা থাকবে না।

সিন্ধুতে সন্ধির খোঁজে পর্ব ৪৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here