সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮
neelarahman
তাকা আমার দিকে নূর ।আমি মরে যাচ্ছি একবার আমার দিকে তাকা প্লিজ।
নূর এবার আর সাদাফের আহ্বান অগ্রাহ্য করতে পারলো না ।পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো সাদাফের দিকে ওমনি সাদাফ দুই হাতের আযলে নূরের মুখটি ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিল । শান্ত ধীর স্থিরভাবে চু*মু খেতে লাগলো সাদাফ।
নূরের দেহ মন যেন কেঁপে উঠল ।মনের ভিতর কেমন যেন একটা অনুভব হচ্ছে যা আগে কখনো হয়নি ।আগে শুধু জোর করে ছিল সাদাফ কিন্তু এখন মনে হচ্ছে খুব যত্ন সহকারে আদরের সাথে হৃদয়ের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে ভালোবাসা উজাড় করে দিচ্ছে সাদাফ। নীলা রহমান
নুর পরম আবেশে চোখ বুজে ফেলল ।কিশোরী দেহ মন সাদাফের ভালোবাসার সেই ভার নুর যেনো নিতে পারছে না ।চুপচাপ চোখ বন্ধ করে সাদাফের হৃদয় উজার করা স্পর্শটুকু অনুভব করতে লাগলো নুর ।
শরীর মন কেপে কেঁপে উঠছে দুলে উঠছে হৃদয় ।বারবার এ এ কেমন সুখকর অনুভূতি এ এ কেমন সুখময় যন্ত্রনা অনুভব হচ্ছে যা নুর বলে বোঝাতে পারবেনা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কিছুক্ষণ পর সাদাফ নুর কে ছেড়ে দিল ।ছেড়ে দিয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে রইল ।নূর এখনো চোখ বন্ধ করে রয়েছে ।সাদাফ একটু মুচকি হাসলো নুরের দিকে তাকিয়ে। নীলা রহমান
ভিষন মায়াবি লাগছে নুর কে।নুর কে দেখে নুরের প্রতি ভিষন লোভ জাগছে সাদাফের। সাদাফ প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ এমন একটা সময় নূর ওর কোলে নূরের সাথে এত ঘনিষ্ঠতা এরপরও সাদাফ নিজেকে কি করে কন্ট্রোল করে রেখেছে তা শুধু সাদাফ জানে।
সাদাফ হাতের আঙ্গুল দিয়ে নুরের ঠোঁট মুছতে মুছতে বলল ,”ঘরে যা নুর ।অনেক রাত হয়েছে এখানে থাকা আর ঠিক হবে না।”
কথাটি শুনেই নূর চট করে চোখ খুলল ।খুলেই তাকিয়ে দেখল সাদাফ এক দৃষ্টিতে নুরের দিকে তাকিয়ে আছে ।কেমন যেন সে দৃষ্টি ।এই দৃষ্টিকে ভয় পেল নুর ।
মনের ভিতরে কেমন যেন একটা চাপা ভয় সংশয় লজ্জা সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে ।নূর লজ্জায় সাথে সাথে কোল থেকে নেমে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
সাদাফ একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চেয়ারে শরীর সম্পূর্ণ এলিয়ে দিয়ে নুরের যাওয়া দেখতে লাগলো মনে মনে ভাবল তুই কবে বড় হবে নূর কবে বড় হবি।
কবে আমি বলার সাথে সাথে তুই দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যাবি না ।বরং আমাকে আরো আঁকড়ে ধরে আমাকে হৃদয়ের সবটুকু উজাড় করে ভালোবাসা দিবি।
রুমে চলে আসলো নূর ।দৌড়ে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে দরজার সাথে পিঠ চেপে দাঁড়িয়ে রইল ।এখনো চোখ বন্ধ নূর চোখ খুলছে না ।কেমন যেন একটা অনুভব হচ্ছে এই প্রথমবার সাদাফের স্পর্শে কেমন যেন লাগছে নূরের
কাছে । নীলা রহমান
এতদিন সাদাফ জোড় করতো তখন শুধুই মনে হতো যন্ত্রণা হত কষ্ট হত ব্যথা হত ।ভালোবাসার স্পর্শ কেমন হয় অনুভব করতে পারেনি আজ প্রথম মনে হল এটা ভালোবাসার স্পর্শ ছিল ।ছবিতে মুভিতে যেরকম দেখেছে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড প্রেম করলে হয় এটা সেরকম ছিল ।কেমন একটা সুখকর যন্ত্রণা অনুভব করছে নূর বুকের ভিতর।
নূর হাত খুলে দেখলো কয়েকটা রাবার ব্যান্ড এখনো নূরের হাতে আছে ।নুর খুশিতে দৌড়ে গিয়ে বিছানায় শুয়ে ক্লিপ গুলো দেখতে লাগলো।
আর মনে করতে লাগলো সাদাফের বলা কথাটি এগুলো তোর জন্য এনেছিলাম কেউ যাতে ভাগ বসাতে না পারে তাই তোকে দেওয়া হয়নি।
রাবার ব্যান্ডগুলো বুকের মধ্যে চেপে ধরে শুয়ে রইল নূর চোখ বন্ধ করে ।কেমন যেন বুকের ভিতর সুরসুরি অনুভব হচ্ছে ।আচ্ছা প্রেমে পড়লে কি এমন অনুভব হয় বুকের ভিতর সুড়সুড়ি লাগে???
লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেললো নুর।
পরের দিন সকালে নাস্তা টেবিলে সবাই অপেক্ষা করছে ।নূরের জন্য এদিকে রিমা আর সাইমন খুনসুটি করছে ।একজন আরেকজনকে থাপ*রাচছে ।সাদাফ চুপচাপ বসে রয়েছে ।মাথা তুলে তাকিয়ে দেখল না সিঁড়ি বেয়ে নামছে নূর।
ফজলুর রহমান নুরকে দেখে বলল ,”তাড়াতাড়ি আয় মা ।তোর জন্য অপেক্ষা করছি অফিস যাব ।তাড়াতাড়ি কর।”
আজকে আর নুর তিরিং বিরিং করে নামছে না কেমন যেন চুপচাপ আস্তে ধীরে নামছে ।আর পিটপিট করে তাকাচ্ছে সাদাফের দিকে।
কিন্তু সাদাফ মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে ।নূরের দিকে খেয়াল করছে না ।নূরের আবার অভিমান হল একবারও তাকাচ্ছে না নুরের দিকে ।আজকে একটু অন্যরকম করে রেডি হয়ে নেমেছে নুর কিন্তু সাদাফ তাকাচ্ছে না।
সাদাফ মোবাইলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।কিন্তু কেউ জানে না মোবাইলের স্ক্রিনে শুধু নুর কে দেখা যাচ্ছে আর কাউকে না ।সাদাফ নুর কে দেখছে আর মিটি মিটি হাসছে আজকে আসলেই নূরকে অন্যরকম লাগছে ।একটু বড় বড় লাগছে কি ? নীলা রহমান
আজকে দুই বেনী করেনি এক বেনি করেছে ।সুন্দর করে হিজাব বেধেছে মাথায় ।ঠোঁটে কি একটু হালকা লিপ গ্রস দিয়েছে?? ঠোঁট দুটো দেখে ভিষন লোভ হচ্ছে সাদাফের।
নুর কে দেখে আড় চোখে মনে মনে ভাবছে সাদাফ এমন সময় নূর সাদাফের পাশে চেয়ার টেনে ধুপ করে বসে পড়ল ।সাদাফ বুঝতে পারছে নূর কোন কারনে রাগ করে আছে না হলে এরকম জোরে চেয়ার টেনে বসতো না।
নুরকে আরেকটু রাগানোর আরেকটু খেপানোর জন্য সাদাফ চোখ তুলে তাকালো না নূরের দিকে ।চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগ দিল ।এদিকে নুর ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে। কেন সাদাফ নুর কে পাত্তা দিচ্ছে না ।কাল তো কত গদগদ হয়ে আদর করল এখন কেন তাকিয়ে দেখছে না।
সাদাফ খেয়ে উঠবে অমনি নওরিন আফরোজ বললো,” নুর কে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে যা। প্রতিদিন তুই নিয়ে যাবি।পরে ড্রাইভার পাঠিয়ে ওকে আনবো।আর তো কয়টা দিন। তারপর এসএসসি পরীক্ষা শেষ কলেজে উঠবে ।বড় হয়েছে এখন ওকে একা একা পাঠাবো না ।তোর বাবার সাথে আমি কথা বলে নিব দেরি হলেও ওকে তোর স্কুলে দিয়ে যেতে হবে।”
সাদাফ মনে মনে খুশি হলো কিন্তু প্রকাশ করল না ।দাঁড়িয়ে বললো ,”তাড়াতাড়ি খেয়ে বাইরে আয় আমি গাড়ি বের করছি ।দেরি যেন না হয় দুই মিনিটের মধ্যে আসবি।”নীলা রহমান
এদিকে নূরের ছোট্ট মনে অভিমানের পাহাড় জমা হল ।কেন আজকে একটু সাদাফ চোখ তুলে তাকালো না ওর দিকে ।দেখল না কত সুন্দর করে ওর জন্য রেডি হয়েছিল নুর ।অথচ যার জন্য করল চুরি সেই বলে চোর।
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭
নূর চুপচাপ মাথা নিচু করে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলো গাড়ির কাছে ।সাদাফের দিকে তাকিয়ে দেখলো না ।সাদা ফ যে এক দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে সেটিও খেয়াল করল না নুর।
চুপচাপ দরজা খুলে গাড়ির ভিতরে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল নুর।সাদাফ চেয়ে দেখলো নূরের অভিমান।