সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১৩

সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১৩
বুশরা আহমেদ

এক ঘরে এক বিছানায় দুইটা মানুষ,এক প্রাণ ঘুমে বিভোর।কি হতে পারে এর শেষ পরিণতি।
আমিরিকা নিউইয়র্ক সিটি,,,
রাত প্রায় আড়াইটা বাজে,,রাহি ঘুম ভেঙ্গে যায়, হাতের উপর ভারী কিছু অনুভব করতেই রাহি চোখ মেলে তাকালো। পাশে তাকিয়ে অনেকটা আবাক সে। রাহির জ্বর এখন প্রায় স্বাভাবিক। তার পাশে তার হাতের বাহুতে মাথা রেখে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে তার বেবিগার্ল ঘুমিয়ে আছে ।

পাশের টেবিলে একটা পাত্রে পানি রাখা ।তার মাথায় সাদা কাপর ভিজিয়ে রাখা। রাহির বুঝতে বাকি রইলো না যে বুশরা সারা রাত তার জেগে তার যত্ন নিয়েছে ‌।রাহি বুশরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,,,
“”হুট হাট তোর এই কাছে আসা ,আমাকে বড্ড যন্ত্রণা দেয়।কবে তুই বুঝবি আমার হৃদয়ে এ যন্ত্রণা। তুই কি আমার ভালোবাসা বুঝবি ।নাকি আমাকে ভুল বুঝবি । তুই ছাড়া যে আমার কেউ নেই । তুই আমার এতো কাছে কিন্তু কোথাও যেন একটা দুরত্ব রয়েই গেছে। আমি চাই না এ দুরত্ব আমাদের মাঝে থাকুক। আমার তোকে ছোঁয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে কিন্তু তুই যতদিন না আমাকে বুঝার চেষ্টা করেছিস আমি তোর থেকে নিজেকে দুরে ছড়িয়ে রাখতে চাই । কিন্তু সেই তুই বার বার আমার এতো কাছে চলে আসিছ কেন নুর?? বুশরাকে দুই হাত দিয়ে বুকে আগলে নিয়ে বুশরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো রাহি ।বুশরাও ঘুমের মধ্যে চুপ চাপ রাহির বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে ‌। রাহি বুশরার মুখের দিকে তাকিয়ে, কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে। বুশরাকে শুয়ে দিলো ‌।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রাহি বেড থেকে নেমে বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ালো, আজকে একটু বেশিই ঠান্ডা।রাতে তুষার পাত ।রাহির শরীরে শুধু একটা জ্যাকেট আর প্যান্ট। বেলকুনি তে দাঁড়িয়ে নিজের বেবিগার্লকে দেখছে । রাহির চোখ দিয়ে মূহুর্তে দু ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। এই অশ্রু টা শুধু তার প্রিয়সিকে নিজের করে পাওয়ার অপেক্ষা আর যন্ত্রনার ।এতোটা কাছে থেকেও কাছে না পাওয়ার যন্ত্রণা।
রাহি বুশরার কাছে এসে তার পাশে বসে, তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। সে এমন ভাবে তার প্রিয়সিকে দেখছে যেন মনে হচ্ছে কত বছরের দেখার তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। রাহি বুশরার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে ” ঘুমন্ত অবস্থায় তোকে আরো নিষ্পাপ লাগে বেবিগার্ল ,,এতো মায়াভরা মুখ কেন তোর,, তোর মুখটার দিকে তাকালেই আমি শান্ত হয়ে যাই ,, আমার অস্তিত্ব জুড়ে শুধুই তুই জানপাখি “”।বলেই আরেকবার বুশরার কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।

পরের দিন সকালে বুশরার ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে নিজেকে রাহির বিছানায় দেখে চমকে যায় । পরক্ষণেই সব কিছু মনে পরে গেলে সে লজ্জায় কোথায় লোকাবে বুঝতে পারছে না।আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো রাহি নেই। তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেই বাঁচে। যেই না বেড থেকে নামতে যাবে তখনি রাহি ওয়াস রুমের দরজা খুলে বেরিয়ে আসলো ।
রাহির পরণে সাদা রঙের টাওয়াল ,আর কিছু নেই । ভিজা চুল গুলো থেকে টপটপ করে পানি পরছে । ফর্সা মুখটা অতিরিক্ত লাল হয়ে গেছে। রাহি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বললো ,, এমনভাবে তাকিয়ে আছিস খেয়ে ফেলবি নাকি??

রাহির কথা বুশরার কান অবধি পৌছালো না।বুশরার নজর ঘাড়ে থাকা কাটা দাগের দিকে । বুশরা উঠে দাঁড়ালো। এক পা এক পা করে রাহির কাছে এগিয়ে আসছে ।রাহি আয়নায় দেখছে।
বুশরা রাহির খুব কিছে এসে বুশরা হাত বাড়িয়ে দিলো রাহির ঘাড়ের ঐ কাটা দাগটার কাছে।যেই না হাত দিবে রাহি সরে গিয়ে বললো ” কি করছিস নুর?” এই ভাবে তাকিয়ে আছিস খেয়ে ফেলবি নাকি?
বুশরা অবাক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লজ্জাও পেলো ।
বুশরা : তোমার তো জ্বর, এই অবস্থায় গোসল করছো কেন?
রাহি: এখন আর জ্বর নেই তাই । রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নে । ভার্সিটি তে যেতে হবে।
বুশরা: একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিল?

রাহি : এখন আর কোন কথা শুনতে চাই না।তোকে ভার্সিটিতে রেখে অফিস এ যাবো।
বুশরা কিছু বলতে যাবে ।রাহি আবার বললো,,কি হলো নুর যেতে বললাম তো ।
বুশরা আর কোন কথা না বলে নিজের রুমে চলে গেল।
রাহি ,তৌফিক একসঙ্গে খাচ্ছে।
তৌফিক: বনু কোথায়?
রাহি: রেডি হচ্ছে।
তৌফিক: কালকে সারারাত বনু তোমার সঙ্গে ছিল? তোমার সেবা করলো ।
রাহি: হুম।তো । তুই কি বলতে চাচ্ছিস আমি তোর বনুকে… ??
তার আগেই তৌফিক বলে উঠলো,,

তৌফিক: না ভাইয়া আমি জানি তুমি বনুকে অনেক ভালোবাসো ।আমি চাই না বনু তোমাকে ভুল বুঝুক ?
রাহি: তুই কি চাচ্ছিস আমি আর তোর বনু তাড়াতাড়ি বিয়ে টা করে নেই । তোর মনে হয় তোর বনু রাজি হবে?
তৌফিক: বনু তোমাকে অনেক ভালোবাসে।আর একবার যদি আনোয়ার খান বনুর ব্যাপারে জানতে পারে কি হবে ।
রাহি : আমি বেঁচে থাকতে তোর বনুর শরীরে একটা টোকাও পরবে না।
তৌফিক: আজকে খান ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে মিটিং আছে আমাদের।আর সেখানে আনোয়ার হোসেন ও আরিয়ান দুইজনেই থাকবে।

সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১২

রাহি: আমিও দেখতে চাই এই গ্যাংস্টার তাজোয়ার আহমেদ রাহি,, সঙ্গে তারা কিভাবে ডিল করে ।
তৌফিক: আমি শুধু ভাবছি।তারা যদি আমাদের চিনে যায় ??
রাহি : এই তাজোয়ার আহমেদ রাহি কে চিনতে পারা এতো সহজ না। এই গ্যাংস্টার লিডার তাজোয়ার আহমেদ রাহি কে গুলি চালাতে হয় না।তার মুখের কথা তে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য। সেখানে আনোয়ার খান আমার কিছুই করতে পারবে না।

সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here