হামিংবার্ড পর্ব ১৭
তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া
“তোর প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি মকবুল। অপেক্ষা কর, সবে তো শুরু!”
মকবুলের চোখে ভর করেছে ভীতির কালো ছায়া। যুবকের দিকে তাকিয়ে সে কিছু বলতে চাইলেও গলা বাঁধা হয়ে গেছে। আজকের এই ভয়াবহ মুহূর্তে কী ঘটবে, সে ভেবেই আতঙ্কে কাঁপছে। নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে সে চিৎকার করে উঠলো।
“ছাড়ো আমাকে! বাঁচাও… বাঁচাও…”
যুবক তার ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত এক হাসি ফুটিয়ে, কিছু না বলে মকবুলের দিকে এগিয়ে আসে। তার হাসি যেন কপালে কালো মেঘ হয়ে ভর করেছে। মকবুলের চিৎকারে কিছু যায় আসে না যুবকের, যেন সে এক রোবট, যার মনের কোনো অনুভূতি নেই। এবার যুবক পকেট থেকে সুঁই আর মোটা সুতা বের করে, ধাতব জিনিসগুলোর ঠান্ডা স্পর্শ মনে হয় মকবুলের আত্মা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়।
যুবক ধীরে ধীরে মকবুলের দিকে এগোচ্ছে, তার পায়ের নিচে মাটি গলে যাচ্ছে যেন। মকবুলের শ্বাস আটকে যাচ্ছে, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে ব্যথা ঢুকছে, কিন্তু তার চিৎকার বের হচ্ছে না, শুধু চোখে আতঙ্কের ছায়া। যুবক মকবুলের ঠোঁটে আঙুল ছুঁইয়ে, মুখে অদ্ভুত এক হাসি ফুটালো—যেমন সে যন্ত্রের মতো কোনো কাজ করছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মকবুল বার বার নিঃশ্বাস ফেলছে, শ্বাস নিতে পারছে না, তার হৃদয় টানটান হয়ে গেছে। যুবক মকবুলের ঠোঁট সেলাই করতে শুরু করলো—এক এক করে সুঁই আর সুতোর ফুটো যেন মকবুলের চিৎকার চেপে ধরছে। প্রতিটি সেলাইয়ের সাথে রক্ত বেয়ে পড়ছে, আর যুবক হাসছে, যেন কোনো অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছে সে। মকবুলের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করে, পারে না। সে জানে, এখানে কেউ নেই যে তাকে বাঁচাবে। তাঁর গোঙানি আর কষ্ট শুধু খালি বাতাসে হারিয়ে যাচ্ছে।
“নে মকবুল, এবার আরো ভালো করে চেঁচা। ওই মেয়েটা, মানে নয়নাও নিশ্চয়ই তোর হাত থেকে বাঁচার জন্য এভাবেই চেঁচিয়েছিল? হ্যাঁ, এভাবেই চিৎকার করেছিল। প্রতিটা মেয়েই তার সম্মান রক্ষা করতে চেঁচায়, ধর্ষকদের কাছে অনুনয়-বিনয় করে। কিন্তু তোরা তো শুনিস না। তোদের কামনাবাসনা তুঙ্গে থাকে তখন।”
মকবুলের মুখ দিয়ে শুধুমাত্র ‘উম..উম…’ শব্দ বের হচ্ছে, তার কণ্ঠে কোন শক্তি নেই, যেন সে নিজের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কেবল ভয় ও অবিশ্বাসের মাঝে আটকে গেছে। মরার আগে, সে যেন নরকযন্ত্রণা সহ্য করছে, যেন তার আত্মা বের হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু শরীর রয়ে যাচ্ছে, তার শরীর থেকে প্রতিটি ক্ষণ যন্ত্রণার মতো বেরিয়ে আসছে।
যুবক পায়চারি করতে শুরু করে, তার পা মাটি ছিঁড়ে যাচ্ছে যেন। পকেট থেকে লাইটার আর সিগারেট বের করে, সিগারেট ধরায়। ধোঁয়ার পর ধোঁয়া বের হতে থাকে, অন্ধকারে তার মুখ দেখা যাচ্ছে না। শুধু তার silhouette স্পষ্ট, যেন এক ভয়ঙ্কর দৈত্য। যুবক ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“এখনই মরতে চাস মকবুল? না কি এভাবে থাকতে চাস, কয়েক ঘণ্টা, তোর সমস্ত যন্ত্রণার সাথে?”
মকবুল তার অসহায় অবস্থায় কেবল মাথা নাড়ে, তার চোখে কেবল হতাশা এবং আক্ষেপ। সে নিজেকে এই মুহূর্তে মরতে চাইছে, এই ভয়ানক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। কিন্তু যুবক তার মনে ভয়ংকর কিছু ভাবনায় মগ্ন থাকে, যেন সে মকবুলকে আরো টেনেও নিয়ে যেতে চায়।
সকাল হয়েছে। ঢাকা শহরে, পহেলা বৈশাখের প্রথম রোদ যেন নতুন জীবনের সংকেত দিচ্ছে আজ। আকাশের নীল বর্ণ হয়ে উঠেছে কিছুটা ম্লান, আর সূর্যের আলো ঢাকায় এসে পড়েছে, মৃদু গরমের মধ্যে শীতলতার এক অদ্ভুত মিশ্রণ। রাস্তার ধারে পত্রিকা বিক্রেতারা তড়িঘড়ি পত্রিকা বিক্রি করছে, আর বিভিন্ন জায়গা থেকে বৈশাখী মেলায় যাত্রার শব্দ শোনা যাচ্ছে। শহরের ব্যস্ততা আজও কম নয়, তবে বৈশাখের দিনটায় যেন একটু অন্য রকম রঙে আঁকা থাকে সব কিছু—সকালের বাতাসে হালকা সরিষার গন্ধ, আর মানুষজন নিজেদের নববর্ষের সাজে কিছুটা উল্লাসিত হয়ে বেরিয়ে আসে। এই সময় ঢাকা শহরের সড়কগুলো কেবল যানজটে আটকা পড়া নয়, আনন্দের মিশ্রণে পূর্ণ। গাছের পাতাগুলো সূর্যের আলোয় চকচক করছে, আর দূরে কোথাও মিষ্টির দোকানের গন্ধ এসে মনের মধ্যে আনন্দ জাগিয়ে তোলে।
আজ পহেলা বৈশাখ, ঢাকার ভেতর যেন নতুন কোনো রকমের আঙিনায় ঢুকছে, যেখানে কিছুটা শান্তি আর আনন্দ মিশে গেছে শহরের গতিশীলতায়।
চোখ মেলে তাকাতেই আরিশকে দেখে আঁতকে উঠল অরা। এখনো তার হাতদুটো বাঁধা, আরিশও বুকের ওপর শোয়া। চুলগুলো কেমন এলোমেলো হয়ে আছে ওর। অরার শরীর, হাত ব্যথা হয়ে গেছে। আরিশকে ডাকবে কি-না বুঝতে পারছে না। তারছেঁড়া মানুষ, যদি রেগে যায়? অরা শুকনো ঢোক গিলে আশপাশে নজর বুলাতে লাগলো। এতক্ষণে অরার নড়নচড়নে আরিশেরও ঘুম ভেঙে গেছে। ঘুমঘুম চোখে অরার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল সে। অরা চুপ করে আছে। হাসবে না-কি হাসবে না তা-ও বুঝতে পারছে না। গতকাল যা করেছিল সে, তাতে আরিশ যে কিছু করেনি সেটা ভাবলেও অবাক হয় অরা। হয়তো নয়নার ব্যাপারটার জন্যই এই ছাড় পেয়েছে অরা।
” গুড মর্নিং হামিংবার্ড। ”
” মর্নিং।”
” ঘুম কেমন হয়েছে? ”
” জি, ভালো। ”
আরিশ শোয়া থেকে উঠে বসল। অরার হাতের দিকে তাকিয়ে বলল,
” আর পালাতে চাইবে কখনো? ”
অরা ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে বলে,
” নাহ। আর হবে না। ”
আরিশ বিছানা থেকে উঠে, ধীরগতিতে ওয়ারড্রবের দিকে এগোল। অরা তার প্রতিটি নড়াচড়ায় চোখ রেখেছিল। কিছুই বলল না, তবে মনে মনে আশা করছিল—হাত খুলে দেবে এখন, হয়তো কিছুটা মুক্তি মিলবে। কিন্তু আরিশ কিছু বলল না, কিছু করল না। তার হাত না খুলে, শুধু এগিয়ে চলল।
অরা সশব্দে শ্বাস ফেলল, মনে এক দম বন্ধ হয়ে আসা অনুভূতি। তাহলে কি সারাদিন এভাবেই পড়ে থাকতে হবে? একে একে সমস্ত আশার কাঠামো ভেঙে পড়ল। আরিশের নির্বিকার আচরণে যেন কিছু একটা ছিঁড়ে গেল অরার ভিতরে। তার শরীরে এক অজানা অসহ্যতা ভর করল, যেন সে কোনো বন্দী, কোনো অদৃশ্য শেকলে বাঁধা।
অরার হৃদয়ে জড়িয়ে থাকা ক্ষোভ, হতাশা, আর একাকীত্ব তাকে শ্বাস নিতে দিচ্ছে না। সে অনুভব করছে, সময় যেন থেমে গেছে, আর সে এক জায়গায় আটকে গেছে, কোনও পরিণতি না পেয়ে।
” হওয়ার সুযোগও পাবে না। ফ্রিজে আইসক্রিম রাখা আছে, খেয়ে নিও। আর তালহার থেকে দূরে থাকবে, দূরে । ”
অরার দিকে এগোতে এগোতে বলল আরিশ। কাঁধে তোয়ালে তার। অরার বাঁধন খুলে দিচ্ছে। আইসক্রিমের কথা শুনে একটু অবাক হলো অরা। এতকিছুর মধ্যেও আইসক্রিম নিয়ে এসেছে লোকটা!
” ঠিক আছে। ”
একটু থেমে আবারও বলল সে,
” একটা কথা ছিল! ”
আরিশ ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছিল, অরার কথায় দাঁড়ালো, এগিয়ে এলো বিছানার দিকে।
” কী?”
” নয়নাকে দেখতে চাই একবার। ”
” ভিডিও কল করে নাও। ”
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল অরা। মাথা নিচু করে নিচু স্বরে বলল,
” আপনার কি মনে হয় না, ওর সাথে দেখা করা উচিত আমার? ”
” খুব মনে হয়। কিন্তু শেষে দেখা গেলো রাস্তায় বসে আবারও পালিয়ে গেলে তুমি! তখন? তখন আমি বউ কোথায় পাবো হামিংবার্ড? আগেই বলেছি, বিয়ে যখন করেছি ভালোবাসি আর না বাসি– তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে। ওকে?”
আরিশ কথা বলতে বলতে, কোনো অনুমতি না নিয়ে অরার গলায় চুমু খেল। অরা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারল না, কেবল বাচ্চাদের মতো চুপচাপ তাকিয়ে থাকল, যেন সে পুরোপুরি অবশ হয়ে গেছে। আরিশ নিজের কাজ সেরে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেল, দরজা আঁটকে দিল। এতক্ষণে, অরার শরীর যেন জমে গেছে, আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। বেচারা অরা! গতকাল কী ভুলটাই না করেছে সেটাই ভাবছে এখন। এর থেকে পালিয়ে বাবার বাড়ি নয়, অন্য কোথাও যেতে হবে। নয়তো যতবার পালাবে ততবারই ধরা পড়ে যাবে, সাথে শাস্তিও ভোগ করতে হবে। অরা সোজা হয়ে বসে, বিছানা ছেড়ে উঠে কয়েকপা হাঁটে। শরীর ব্যথা হয়ে গেছে। নিজেকে খাঁচায় বন্দী পাখির থেকেও অসহায় মনে হচ্ছে অরার। পালাতে হবে, অনেক দূরে চলে যাবে সে। এমন মানুষের সাথে একসাথে থাকা যায় না, কখনো না।
” খুব তো গেলে শপিং করতে, কই একটাও নতুন পোশাক তো দেখলাম না! ”
ডাইনিং রুমে আসতেই সাবিহার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো অরাকে। আরিশ একটু আগেই বেরিয়ে গেছে। অরা ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে এসেছে সবে। তামান্না খাবার পরিবেশন করছে। তাসলিমা খাতুন তালহার সাথে কীসব জায়গাজমি নিয়ে আলোচনা করছেন।
” অনলাইনে অর্ডার করে নেবো।”
অরার সংক্ষিপ্ত উত্তর, খেতে বসেছে সে। নেহাৎ আরিশের আত্মীয় বলে সেদিন চুপ করে ছিলো অরা৷ কিন্তু আরিশ যখন বলেছে – তার আত্মীয় স্বজনের মন রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই তার, তখন থেকেই সাবিহার করা অপমানের জবাব দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে অরা। সাবিহার দৃষ্টিতেই আরিশের প্রতি তার অনুভূতি, ভালোলাগা বোঝা যায়। এই কদিনে, অরাও বেশ বুঝতে পেরেছে সেটা।
” শাক দিয়ে আর মাছ ঢাকতে হবে না। কী আছে তোমার? যা দিয়ে আরিশকে মুগ্ধ করতে পারবে! যেমন ফিগার তেমন, সাজগোছ! বোরিং…… ”
সাবিহার অসভ্যতায় তামান্নার মেজাজ খারাপ লাগছে। মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে এই মেয়েকে ঠাটিয়ে থাপ্পড় মারতে। অরা মুচকি হাসল। সাবিহা অবাক হলো তাতে। সে কি হাসার মতো কিছু বলেছে? উল্টো অপমানে খাওয়া বন্ধ করা উচিত ছিলো অরার- এটাই মনে হচ্ছে সাবিহার।
” এই ফিগার আর সাজগোজেই আপনার ভাই ফিদা আমার ওপর। ভাই হয় আপনার, কীভাবে বলি বলুন তো! লোকটা একদম পাগল করে ছাড়ে আমাকে। ”
সাবিহার কপালে ভাজ পড়েছে। বোবার মুখে দেখি আজ কথা ফুটেছে! এতদিন তো মিনমিনে বেড়াল ছিলো মেয়েটা।
” অসভ্য। বয়সে এতটুকু, অথচ কীসব ভাষা!”
” আপনিই বললেন ফিগার, সাজগোছ, মুগ্ধ হওয়ার কথা। সেসব যদি অসভ্যতা না হয় তবে আমার কথাও অসভ্যতা হবে না আপু৷ ”
সাবিহা খাওয়া ছেড়ে উঠে গেলো। রাগে শরীর জ্বলছে তার। আরিশের সামনেই এমন ভালোর নাটক করে মেয়েটা, অথচ কী চ্যাটাংচ্যাটাং কথা তার!
” কী রে সাবিহা? এভাবে হনহনিয়ে যাচ্ছিস কেন?”
সাবিহাকে ওভাবে চলে যেতে দেখে তাসলিমা খাতুন ডাকলেন। কিন্তু সাবিহা সোজা নিজের ঘরের দিকে এগোল।
ব্রেকফাস্ট শেষে নিজের ঘরে এসে মায়ের নম্বরে কল দিলো অরা। বোনের সাথে কথা বলতে হবে।
” হ্যালো মা, নয়না কেমন আছে? ”
” নয়না ঠিক আছে অরা। কিন্তু একটা ঘটনা ঘটেছে। ”
অরা চিন্তিত স্বরে শুধায়,
” কী হয়েছে?”
” মকবুলকে খুন করা হয়েছে। ”
অরা চমকায়।
” কী! কে করলো? ”
” তা তো জানি না। সকাল হতেই স্থানীয় লোকের নজরে আসে বিষয়টা। খুব বাজেভাবে খুন করা হয়েছে তাকে। পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে, ঠোঁট সেলাই করা, হাতপা থেঁতলে দেওয়া আর…..”
” আর কী মা?”
কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো অরা। রোকসানা মল্লিক ভীত কণ্ঠে বললেন,
“বিশেষ অঙ্গে সূচ ফোটানো হয়েছে।”
অরা ভয় পায়। রোকসানা বিষয়টা বুঝতে পেরে বলে,
” ভয় পাস না। কাজটা যেই করুক, একদম ঠিক করেছে। পুলিশ বলাবলি করছিল কোনো সিরিয়াল কিলারের কাজ এটা। ”
” মা আমি পরে কথা বলব, বোনের খেয়াল রেখো। ”
হামিংবার্ড পর্ব ১৬
অরার হাত থেকে ফোনটা ফ্লোরে পড়ে গেল, আর অরাও একদম অবচেতন হয়ে বসে পড়ল। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের ফোঁটা জমে উঠেছে, যেন দুশ্চিন্তা আর ভয় একত্রে তাকে গ্রাস করেছে। যে যাই বলুক, অরা জানে, এই সবই আরিশের কাজ। গতকাল যেভাবে আরিশ রেগে ছিল, তাতে এসব করা তার জন্য একেবারেই তুচ্ছ ব্যাপার। অরার মনের মধ্যে সন্দেহের মেঘ আরও ঘন হয়ে আসে। নিশ্চয়ই সে লোক দিয়ে এসব করিয়েছে। কারণ, আরিশ তো সারারাত অরার সাথেই ছিল—কোথাও তার শরীরের গতিবিধি ছিল না, এক মুহূর্তের জন্যও আলাদা হয়নি