৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩২
সারা চৌধুরী
অর্ক আর কিছু বলার আগেই শ্রাবন নিজের রক্ত চক্ষু নিয়ে অর্কের কলার চেপে ধরে বলে উঠলো….
-“যা বলার বলছিস আর কোনোদিন যেনো ওর নামে তোর মুখ থেকে একটা না শুনি।
শ্রাবন এর ব্যাবহার এ অর্ক অবাক সে তো তেমন কিছুই বলে নাই আর মেয়েটাই বা কে যে শ্রাবন এতো রেগে গেলো।অর্ক শ্রাবন এর হাত নিজের কলার থেকে ছাড়িয়ে বলে কলার ঝাড়া মেরে বলে উঠলো…
-“কি সমস্যা আজব এমন বিহেব করলি কেন..?
শ্রাবন কিছুক্ষন অর্কের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে নিজেই নিজের চুল টেনে ধরে নিজের হাত দিয়ে তারপর অর্কের সাথে কিছু না বলেই আবার পকেট থেকে সিগারেট বের করে আগুন ধরিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে ধোঁয়া উড়াতে থাকে,, অর্ক বুঝলো না কি থেকে কি হলো,,শ্রাবন কে ডাকলেও কোনো সাড়া না পেয়ে বিরক্ত হয়ে রুমে এসে বিছানায় বসতেই দরজায় কারোর নক করার শব্দ শুনতে পেয়ে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেই।দরজা খুলতেই আনিশা আর সারা রুমে ঢুকে,, মুখোমুখি হয়ে যায় অর্কের..আনিশা সারা একটু লজ্জায় পড়ে যায়,,অর্ক বুজতে পেরে তাদের উদ্দেশ্য বলে উঠে…
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“হ্যালো পিচ্চিরা কেমন আছো..?
অর্কের মুখে পিচ্চি ডাক শুনে আনিশা রেগে যায় সারা এখোনো মুখ তুলে অর্কের দিকে তাকায়নি। মুখ নিচু করেই বলে উঠে.. -“জি ভাইয়া ভালো আছি,, আপনি কেমন আছেন।
অর্ক ভ্রু নাচিয়ে আনিশার দিকে তাকালো মেয়েটার নাকের পাটা ফুলছে উজ্জল শ্যামলা হওয়াই রাগী ভাব টা বোজা যাচ্ছে তবে এখন তার দিকে নজর নেই অর্ক শান্ত কন্ঠে বলে উঠে সারা উদ্দেশ্য..
– আলহামদুলিল্লাহ। আচ্ছা নাম কি তোমাদের…?
সারা মাথা নিচু করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আনিশা সারার হাত জোরে চেপে ধরে একটু রাগী ভাবে বলে উঠে…
-“ভাইয়া আপনাকে নিচে খাওয়ার জন্য ডাকছে আম্মু আর মেজো চাচি,, এখানে আমরা পরিচয় দিতে আসিনি.!
কথাটা বলেই আনিশা সারার হাত ধরে নিয়ে বেরিয়ে গেলো সারা বাধাহীন ভাবে আনিশার সাথে গেলো,,অর্ক মাথা চুল্কে অবাক হওয়া কন্ঠে বলে বিড়বিড় করে উঠলো…
-“যাহ বাবা এদের ঘাড়ে কি ভুত আছে আসার পর থেকেই কেমন করছে।
অর্কের বিড়বিড় করার মাঝেই শ্রাবন পিছন থেকে বলে উঠে ওটা ছোট মামার মেয়ে, প্রচন্ড রাগী,, ভাব জমবে না,,এটা তোর হাই স্কুল না যে সব মেয়ের সাথে কথা বলে ভাব জমাবি..?শ্রাবন এর কথা শুনে অর্ক পিছন ফিরে তাকায়,,শ্রাবন শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে অর্কের সাথে কথা বলছে,,অর্ক আর কথা না বাড়িয়ে মোবাইল টা পকেটে পুরে নিচে নেমে আসলো সাথে শ্রাবন ও চলে এলো।
অহনা রিহানের পাশে বসে আছে। রিহানের চোখ ফোনে নিবদ্ধ আর মন অহনার বলা কথা পড়ে আছে..অহনা বেশ কিছুক্ষন বকবক করে হটাৎ সিরিয়াস হয়ে বলে উঠলো…
-ভাই শোন…?
রিহানে মোবাইল এ গেম এ খেলায় ব্যাস্ত,, চোখ সেদিকে রেখেই বলে উঠে…
-হুম বল..?
-তুই ফাতিহাকে সত্যি ভালোবাসিস..?
-হুম..?
-সত্যি…?
রিহান এবার মোবাইল টা সোফার উপর বন্ধ করে রেখে অহনার দিকে ফিরা সোজাসোজি হয়ে বসে বলে উঠে…
-কেন আপু…?
-না মানে মেয়েটাকে আমার খুব সরল সোজা মনে হয়,, দেখিস না কেমন চুপ চাপ কোয়ালিটির।
-হুম তো..?
-তো মানে…?
-তো এগুলা বলছিস কেন তাই বলছি…?
-যদি সত্যি ভালোবাসিস তাহলে আসল পরিচয় টা দিয়ে দে মেয়েটাকে..?
-সব জানে..?
-কিহ..?
অহনা অবাক হয়ে উঠে,, অহনার অবাক হওয়া দেখে রিহান চোখ ছোট ছোট করে বলে…
-এতে অবাক হওয়ার কি আছে…?
-না মানে তোর আসল নাম ও জানে..?
-আমার আসল নাম রিহান আর তুই আকাশ নামটা চিনার কথা বলছিস,, আমি ফাতিহার সাথে রিলেশনে যাওয়ার আগে বন্ধু হয়েছিলাম তখন ই সব বলে দিয়েছি তুই অহনা সেটাও জানে খালি বিয়ে..
রিহান থেমে যায়,,অহনা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করে বিয়ে মানে..?রিহান অহনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে তুই আমার বোন এটুকু বাদে তোর লাইফ সম্পর্কে কিছুই বলি নাই।রিহানের কথা শুনে অহনা সস্তির নিশ্বাস ফেলে বলে উঠে…
-ভাই তুই যাবি…?
-কোথাই..?
-তালুকদার বাড়ি..?
-কেনো..?
-আমার মেয়েকে নিয়ে আসতে..?
রিহান একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে নিজের হাত অহনার ঘাড়ে রেখে শান্ত কন্ঠে বলে উঠে..
-আমি জানি আপু তোর কি কষ্ট হচ্ছে তবে তুই কি ভেবে দেখেছিস বাচ্চা টা তুই নিয়ে এলে বাচ্চাটা বাবা হারা হয়ে যাবে।তুই চাইলেই নতুন জীবন শুরু করতে পারবি কিন্তু বাচ্চাটা নিয়ে এলে শুধু বাচ্চাটা না তুই ও কষ্ট পাবি।তুই কি একবারো ভেবেছিস এখন গিয়ে শুভ্র ভাইয়ের সামনে দাড়ালে তুই ঠিক থাকতে পারবি,,তুই এমন শক্ত থাকবি..?
রিহানের কথায় অহনার মুখটা মলিন হয়ে যায়,,অহনার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,, রিহান অহনাকে শান্ত করার ভাষা খুজে পাইনা।অহনা বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠে…
-ভাই আমি আমার মেয়েটাকে চাই,, এতো কষ্ট করে দুনিয়াতে নিয়ে এসে এখন আবার তার এতো কাছে এসেও আমি হারাতে পারবো না। মাফ করে দিস আমাকে ভাই,,আমি গেলাম,,আমার মেয়েকে না নিয়ে কোনোদিন ফিরবো না।।
অহনা কথাটা বলেই উঠে দাঁড়ায়,, রিহান ও উঠে দাঁড়ায় অহনার হাত ধরে ফেলে,,যেতে নিষেধ করে,,তবে অহনা রিহানের হাত জোর করে ছাড়িয়ে পাশে থাকা ব্যাগ টা নিয়ে বেরিয়ে যায়।রিহান আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ।
দরজায় জোরে করা ঘাতে শুভ্রর কাচা ঘুম ভেঙে যায়,,প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে তার।এক হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে দরজা খুলে দিতেই সারা ধীরে শিষ্ঠে রুমে প্রবেশ করে শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে কি হয়েছে আপনার…?
শুভ্র দরজার ছিটকানি লাগিয়ে মাথাটা চেপে ধরে চোখ ছোট ছোট করে সারার দিকে তাকায়..ঘরের আবছা অন্ধকারে সারা স্নিগ্ধ মুখশ্রী শুভ্রর মনে এক ঠান্ডা সমুদ্রের উত্তল বাতাস বইয়ে দেই,,শুভ্র চোখ ছোট ছোট করেই শান্ত কন্ঠে বলে উঠে..
-পিচ্চি পাখি..!!
শুভ্রর কথা সারার কর্ন হরে প্রবল ঠান্ডা স্রোতের মতো গিয়ে লাগে,, সারা এতক্ষন শুভ্রর মুখের দিকে তাকায়,, শুভ্র সারার দিকে একপলক তাকিয়ে বিছানার দিকে হাটা শুরু করলো।সারা কেমন জানি মনে হলো মুখ উচিয়ে তাকাতেই দেখলো শুভ্র এতক্ষনে বিছানার পাশে চলে গেছে বিছানায় গিয়ে বসতেই শুভ্রর দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো..সারা বিষয়টা লক্ষ করে শুভ্রর কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে.. শুভ্র মাথা চেপে ধরেই বলে উঠে…
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩১
-“সারা আমার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে একটু মাথা টিপে দাও প্লিজ।
শুভ্র মুখে নিজের নাম শুনে সারার শরীরের প্রতিটি লোমকুপ দাঁড়িয়ে গেলো কারন শুভ্র তাকে পিচ্চি পাখি ছাড়া কিছু ডাকেনা,, সারা সেসব চিন্তা বাদ দিয়ে বেড সাইড টেবিল এর ডয়ার থেকে বাম বের করলো শুভ্রকে সুতে বলে সেও বসলো শভ্র সারা কোলে মাথা রেখে সুয়ে পড়লো সোজা হয়ে,, সারা জেপে উঠল,,হাতে একটু বাম নিয়ে নিজের ছোট হাত দিয়ে শুভ্রর কপালে মালিশ করা শুরু করলো।সারার নরম হাতের স্পর্শ পেয়ে শুভ্রর হৃদয় এ শান্তি বয়ে যাচ্ছে,,কিছুক্ষনের ভিতরেই মাথা ব্যাথা কমে গেলে শুভ্র সারার কোলে মাথা রেখে এক সাইট হয়ে সুয়ে সারার কোমর জড়িয়ে ধরে,, সারার শরীরের ভিতরে অন্য রকম শিহরন জাগছে,,শুভ্র সারার উদরে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে বিড়বিড় করে বলে….
