অনুভবে তুমি পর্ব ১৫

অনুভবে তুমি পর্ব ১৫
লিজা মনি

স.. সা. সামনে এগাচ্ছেন কেনো। দে.. দে.. দেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
মেয়েটির কথা শুনে সামনে থাকা ব্যক্তিটি উচ্চস্বরে হেসে উঠলো যেনো সে কোনো জোক্স শুনিয়েছে।
তারপর ব্যক্তিটি মুখের কাঠিন্যতা বজায় রেখে বলে,,,,
” তাই নাকি বেবি চিৎকার করবে। অগ্নি চৌধুরির জায়গা এইটা যেখানে তার অনুমতি ছাড়া একটা পাতা ও নরে না। সেখানে তুই যদি চিৎকার করতে করতে মরে ও যাস কেও আসবে না” বলেই আহান এক পা এক পা করে সামনে এগোতে থাকে।

ইয়ানা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। মেয়েরা সব কিছুর সাথে লড়তে পারে কিন্তু যখন কেও তার ইজ্জতের দিকে হাত বাড়ায় তখন পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে কেও সাহসী হয়ে উঠে আবার কেউ সবচেয়ে দুর্বল। ইয়ানা যথাসম্ভব নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার সামনে সয়ং অগ্নি চৌধুরি দারিয়ে আছে। যার সাথে মোকাবেলা করা অসম্ভব।
আহানের রাগে চোখ দুটি লাল হয়ে গেছে। কপালের রগ গুলো ফোলে নীল হয়ে আছে। ফর্সা হওয়ার ধরুন পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে। আহানের মনে হচ্ছে ইয়ানাকে শেষ করে দিতে।
আহান ইয়ানার সামনে গিয়ে মুখ চেপে ধরে দাতে দাত চেপে বলে,,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“” এখন এত পিছাচ্চিস কেনো। তোর ইচ্ছাইতো পূরন করছিলাম। পরপুরুষের সংগ পেতে খুব ভালো লাগে তোর তাই না। একজন দিয়ে মন ভড়ে না তাই আরেকজন নিয়ে নিয়েছিস। বল কি আছে ওই ছেলেটার মধ্য যা আমার মধ্যে নেই। আমার চেয়ে কি বেশি শুখ দেয়। নাকি এতক্ষনে ও বেডে নিয়ে চলে গেছে কিন্তু আমি নিতে পারে নি””
ইয়ানা আহানের কথা সহ্য করতে না পেরে কানে দুই হাত চেপে বলে,,,,
“” প্লিজ চুপ করোন। আর নিতে পারছি না। ছিহ..কি জঘন্য চিন্তাভাবনা আপনার। লজ্জা করে একটা মেয়ে সম্পর্কে এইসব বলতে””
আহান ইয়ায়ানার কথা শুনে রেগে চিৎকার দিয়ে বলে,,,

“না করে না লজ্জা। কারন তোরা সব মেয়েরা ছলনাময়ী একজনকে দিয়ে হয় না পরে আরেকজনের কাছে চলে যাস। আর আজ আমি তোর সেই আশা ওই পূরন করবো। যাতে কারোর কাছে না যেতে পারিস”
বলেই আহান ইয়ানার ঠোঁট দুটো আকড়ে ধরে। কিসের পরিমান এত দ্রুত ছিলো ইয়ানার নিশ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আহান কিস থেকে আস্তে আস্তে কামড়ে পরিনত করে। ইয়ানা সহ্য করতে না পেরে ছটফট শুরু করে দেয়। কিন্তু আহানকে এক চুল ও নরাতে পারে নি। ইয়ানার ছটফটের কারনে আহান আরও রেগে যায় তাই তার হাত দুটোকে বালিশের সাথে চেপে ধরে। ইয়ানা শুধু মুখ দিয়ে উম উম শব্দ করছে। না শরীর আর না হাত নারাতে পারছে। আহান ইয়ানার ঠোট ছেরে গলায় নেমে আসে। আহানের প্রতিটা বাইট থেকে রক্ত ঝরছে। আহান পুরোপুরি অন্য এক ঘোরের মধ্যে চলে যায়। সে অতিরিক্ত রাগে ঙ্গান হারিয়ে কি করছে কোনো ভাবান্তর নেয়। সে ইয়ানাকে শাস্তি দিতে ব্যস্ত। আহান এইবার নিজের শার্ট খুলে ইয়ানার দিকে অগ্রসর হয়।
ইয়ানা কান্না করতে করতে ফুপিয়ে উঠে,,,,,

“”” প্লিজ অগ্নি চৌধুরি আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না।আমার গায়ে কলংকের ছায়া লাগাবেন না প্লিজ। আমি আপনার কাছে নিজের সতিত্ব ভিক্ষে চাইছি””
ইয়ানার ফুপানোতে আহানের ধ্যন ভাংগে। রোমের লাইট অন করে তারাতারি মুখে মাক্স আর শার্ট পরে নেয়।
ইয়ানার পাশে শান্ত হয়ে বসে নিজের চুল আকরে ধরে কি করছিলো ও। ওহ সিট অগ্নি চৌধুরি কিভাবে একটা মেয়ের ইজ্জতে হাত বাড়াতে পারে। কিন্তু পরক্ষনে ইয়ানার হাতে রিং এর কথা মনে পরলে ইয়ানাকে একটানে বিছানা থেকে তুলে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়।
ইয়ানা এখনো ফোপাচ্ছে। আহান ইয়ানার দিকে বিরক্তি নিয়ে বলে,,,

“” কান্না থামাও। কিছু করেছে আমি। তাহলে কান্না করছো কনো।
আহান ইয়ায়ানার হাত থেকে ইংগেজমেন্ট রিংটাকে একটানে খুলে ছুরে ফেলে দিলেন।আর নিজে একটা রিং পরিয়ে দেন।
ইয়ানা আহানের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
“”” কিছু করেন নি আপনি বলছেন মি, অগ্নি চৌধুরি। কি করেন নি আপনি। একটা মেয়ে শপিং করতে আসছে তাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে হেনস্তা করছেন। তার অনুমতি ছাড়া বার বার ছোয়ার চেষ্টা করছেন। কি করেন নি আপনি বলোন”
বলেই ইয়ানা আহানের হাত থেকে নিজের হাত জারা মেরে ফেলে দায়। ফলে আহানের দেওয়া রিংটা নিচে পরে যায়।
আহান রিংটা হাতে নিয়ে ইয়ানার হাত পিছন থেকে মুচর দিয়ে বলে,,,,

” সাহস কি করে হয় আমার হাত জারা মেরে ফেলে দেওয়ার। ওই ছেলে যখন পরিয়েছিলো তখন তো ঠিকি পরেছিস। তাহলে এখন এত নাটক করছিস কেনো”
ইয়ানা আর কিছু বলে নি। ও বুঝে গেছে এই ছেলে পুরো সাইকো ডেবিল। তাই কথা বলে লাভ নেয়।
আসলে কাল রুয়ানার জন্মদিন। তাই সুমু আর ইয়ানা শপিংমলে গিয়েছিলো রুয়ানার জন্য গিফট কিনতে। ইয়ানা নিজের জন্য একটা জামা পছন্দ করে ট্রায়াল রুমে চেক করতে যায়। ওইখান থেকে আহান ইয়ানাকে নিয়ে আসে।
আহান অনেকদিন ধরে দেশের বাহিরে থাকায় সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে নি। তাই আজ সকালে ইয়ানাদের বাড়ির ফুটেজ অন করে। ফুটেজে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ইয়ানার ইংগেজমেন্ট অনুশ্ঠান। তার পর রেগে সোজা চলে যায় ইয়ানার কাছে। তার পর সুমু কোনো এক কারনে একটু আড়াল হলেই ইয়ানাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আসে। এরপর কি হয়েছে সব ওইতো যানেন।
আহান ইয়ানাকে রিংটা পরিয়ে দেয়। তারপর গালে আলতো করে স্পর্শ করে বলে,,,

“” ইনু বেবি কেনো রাগিয়ে দাও আমাকে। তোমাকে তো আগেই বলেছিলাম কোনো ছেলের চারপাশে যাতে তোমায় না দেখি। তোমায় যেতে বারন করেছিলাম কিন্তু তুমিতো অন্যজনের দেওয়া আংটি পরে ফেলছো। ও নিশ্চয় তোমায় স্পর্শ করেছে। কোথায় স্পষ্ট করেছো বলে আমায়😡।
আহানের লাস্ট কথাটা রেগে চিৎকার দিয়ে বলে।
ইয়ানা একটু কেপে উঠে। এইতো দেখলো শান্ত আবার এই অশান্ত।
ইয়ানার ভাবনার মাঝেই আহান ইয়ানার হাত ঘসতে থাকে। আর বির বির করে বলে,,,,,
“” এইখানে ছুয়েছে তাই না। যাদি পারতাম হাতটায় কেটে ফেলে দিতাম। আচ্ছা ইয়ানা হাতটা যদি কেটে ফেলে দেয় কেমন হবে বলোতো””

ইয়ানা আহানের কথা শুনে চমকে উঠে। ভয়ে যেনো তার আত্না পাখি এখনি উড়াল দিবে।
ইয়ানা ভয়ে ভয়ে বলে,,,,,
“” কি.. কি.. বলছেনটা কি? হাত কেটে দিবেন মানেটা কি?
আহান ইয়ানার অবস্থা দেখে বলে,,,,
“” ভেবছিলাম কেটে ফেলবো অন্যজনের ছোয়া লেগেছে তো তাই। কিন্তু এখন আর কাটবো না। কিন্তু আজ যে রিংটা আমি পরিয়ে দিয়েছি যদি কখনো এইটা খুলতে দেখি তাহলে আজকের অসম্পূর্ন কাজ সম্পূর্ন করবো””””
ইয়ানা আহনের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে করতে বলে,,,
“” কেনো করছেন এইরকম। কেনো এমন পাগলামি। আমাকে তো ভালো ও বাসেন না তাহলে কেনো এত অধিকার দেখান। যদি সৌন্দর্যের কারনে মোহে পরে থাকেন তাহলে ভুল করছেন মি, অগ্নি চৌধুরি। আমি কারোর মোহের স্বীকার হতে চাই না””

আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“” সৌন্দর্য দিয়ে তোমায় বিচার করে নি। তবে তোমায় দেখার পর কোনো কিছুই সুন্দর লাগে নি। আর মোহে তো মানুষ তখন পরে যখন কেঊ কারো প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু আমি তো তোমার প্রতি আকৃষ্ট হয় নি”””
ইয়ানা আহানের এই ঘুরানো পেচানো কথায় বিরক্তি হয়। তার পর কিছু একটা ভেবে হঠাৎ বলে উঠে,,,,,
“” আপনার এই একজোড়া চোখ কারোর সাথে খুব মিল। । কিন্ত কার সাথে মিল তা সঠিক মনে করতে পারছি না।
আহান কিছুটা থমথমে খেয়ে যায়।ঠিক তখনি একটা সার্ভেন্ট এসে খাবার দিয়ে যায়।
আহান ইয়ানাকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,

“”সারাক্ষণ যদি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকো তাহলে সবার চোখ ওই আমার চোখ দেখতে পাবে। তাই চোখের পর্যবেক্ষণ না করে এখন খাবারটা খেয়ে নাও।
বাড়িতে ফিরতে হবে তোমায়””
ইয়ানা আহানের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য ভাবে বলে,,,
“” আপনার মনে আছে মি. অগ্নি চৌধুরি আমার যে একটা বাড়ি আছে। আমি তো ভেবেছিলাম রাস্তার মেয়ে ভেবে রাস্তা থেকে তোলে এনেছেন। ভাবলেন কিভাবে এতকিছুর পর ও এই খাবার আমার গলা দিয়ে নামবে।আর রইলো বাকি আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা নিজেকে এত গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন কেনো বলোনতো।
আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“” কারন আমি তোমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাই। আর যদি ভেবে থাকো তোমায় আমি জোর করে নিজের হাতে খাইয়ে দিবো তাহলে সম্পূর্ন ভুল। যতক্ষন খাবার শেষ না করবে ততক্ষণ বড়িতে যেতে পারবে না। এইবার তুমিই ভাবো কি করবে””
বলেই আহান গিয়ে ভিবানে বসে পরে।
আর এইদিকে ইয়ানা আহানের চৌদ্দগোষ্টির ফায়দা তুলতে তুলতে খাবার হাত দেয় কিন্তু তখনি ব্যথায় আহ্ করে ওঠে।আহান দ্রুত ভিবান থেকে বিছানায় আসে। দেখে তখন এইভাবে হাত ধোয়ার কারনে লাল হয়ে আছে।আর এখন সেই জায়গায় খাবার পরায় জ্বালা করছে।
আহান ইয়ানাকে ধমক দিয়ে বলে,,,
” খাবারে চামচ ছিলো হাত ব্যবহার করতে কে বলেছে তোমায়”
তার পর একটা ব্যথা উপশমে মলম লাগিয়ে দেয়।
ইয়ানা মনে মনে বির বির করে বলে,,,,

“জুতা মেরে অন্যদান”
” যেই দান ওই হোক না কেনো, মারবো আমি আবার সেই জায়গায় মলম লাগাবো ও আমি। অগ্নি চৌধুরির জিনিসে অন্য ব্যক্তির নজর সে সহ্য করে না। তাই এখন বকবক না করে বাধ্য মেয়ের মতো খাবারটা শেষ করো।
ইয়ানা : ” এই সাইকো আমার মনের কথা বুঝলো কিভাবে”
আহান : যেইভাবে বির বির করো শুধু আমি না সবাই বুঝবে।খাবার শেষ করো কুইক।
যেহেতু সে ক্ষুধার্ত তার উপর পছন্দের খাবার পাস্তা আর মাটন বিরিয়ানি [ এইটা আমার পছন্দের খাবার তাই দিলাম🫣🙃] তাই আর বসে থাকেনি। ইয়ানা জানে সে এখন খাবার না খেলে সত্যি সত্যিই তাকে বাড়ি ফিরতে দিবে না। আগে বাড়ি ফিরা যাক তারপর সব ভাবা যাবে। শুধু একবার বাড়ি ফিরতে দেন মি, অগ্নি চৌধুরি তখন হবে আসল খেলা।
ইয়ানার ভাবনার ছেদ ঘটে সামনে থাকা ব্যক্তিটির কথা শুনে,,,,,

“” যদি তুমি আমার থেকে দুরে সরে যাওয়ার চিন্তা করে থাকো তাহলে সেটা মাথা থেকে ছুরে ফেলে দাও। যদি এমন হয় মহাসমুদ্রের পানি শুকিয়েও যায়, তবুও তুমি আমার।যদি মরুভুমিতে সমুদ্রের উত্তাল হয়ে সৃষ্টির ভারসাম্য বিলীন হয়ে যায়, তবু্ও তুমি আমার। যদি এক মুহূর্তের জন্য হিমালয়ের বরফ গলে প্লাবনের সৃষ্টি হয়, তবুও তুমি আমার। শুধু এপার নয় পরোপারে ও তুমি আমার। তাই আমাকে বাদ দিয়ে অন্যজনের হওয়ার মানুষিকতা ছেড়ে দাও। এখনো অগ্নি চৌধুরির হিংস্র রূপ দেখোনি। আমার কথার অবাধ্যতা করলে আমি কোন সীমা অতিক্রম করতে পারি তার কোনো ধারনা ও নেই। তাই বলছি অবাধ্যতা করো না””
ইয়ানা শুধু আহানের দিকে ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকে। কি সুন্দর ওনার কথার ধরন। কিন্তু মানসিকতা কতটা নিকৃষ্ট।

“জানেনতো মি, অগ্নি চৌধুরি কামনা একটি প্রবল সাময়িক উত্তেজনা মাত্র। আর আপনি আমাকে কামনা করেন যেটা একসময় ঠিকি শেষ হয়ে যাবে। তখন আপনি থাকবেন এক মেরু আর আমি থাকবো আরেক মেরুতে। তাই আমি আপনাকে বলছি প্লিজ আমার পিছন ছেরে দিন। আমি এই জায়গা থেকে অনেক দুরে চলে যাবো। ঠিক তত দুর যেখানে গেলে আমায় খুজে পাওয়া অসম্ভব। কখনো আপনার সামনে আসবো না”
আহান ইয়ানাকে পর পর তিনটি থাপ্পর মারে। হঠাৎ আক্রমনে ইয়ানা নিজের শক্তি হারিয়ে দেয়ালে দাক্কা খায়। ফলে কপাল ফেটে রুক্ত বের হয়ে পরে।
আহান ইয়ানার চুলের মুঠি ধরে চিৎকার করে বলে,,,

অনুভবে তুমি পর্ব ১৪

“” খুব শখ না আমার থেকে দুরে থাকার। ভালোভাবে বুঝালে কথা কানে যায় না। কি করবো আমি তোকে এত অবাধ্য কেনো হোস। এক কাজ করি মেরে ফেলি তাহলে সব সমস্যার সমাধান। আমার থেকে দুরে যাওয়ার ইচ্ছা পূরন করে দেয়। আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে শুট করে দেয়……

অনুভবে তুমি পর্ব ১৬