অনুভবে তুমি পর্ব ২৫

অনুভবে তুমি পর্ব ২৫
লিজা মনি

বাবা মায়ের বিয়ের চার বছর পর আমার জন্ম। বাবার রাজকন্যা ছিলাম। মায়ের চোখের মনি। বাবা মায়ের হাসি খুশির কারন ছিলাম আমি। কিন্তু ভাগ্য সে হাসিটুকু আমার কপালে রাখে নি। বয়স মাত্র সাত বছর ছিলো। ওইদিন জানতে পারি আমাদের ঘর আলো করে আবার ও ভাই বোন আসবে। আমরা খুব আনন্দে ছিলাম সেই আনন্দ উপভোগ করতে আমরা একদিন সেন্টমার্টিন ঘুরতে গিয়েছিলাম। দুইদিন খুব মজা উল্লাস করেছি। কিন্তু রায়ান ওইদিন মনে হয় বাবা মায়ের সাথে আমার শেষ আনন্দ ছিলো।

আমরা যেই রিসোর্টে উঠেছিলাম সেখানে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়। সুমুর কথা বলতে গলা কাপছিলো। তারপর ও নিজেকে সংযত রেখে আবার বলা শুরু করে। ওইদিন আব্বু আম্মু ওই রিসোর্টে ছিলো। আমি গিয়েছিলাম আব্বুর এক বন্ধুর সাথে। হঠাৎ জানতে পারি রিসোর্টে আগুন লেগেছে। কান্না করছিলাম প্রচুর। আমার কান্না দেখে আঙ্কেল আমাকে নিয়ে আসে। কিন্তু এসে যা দেখি তার জন্য আমি মোটে ও প্রস্তুত ছিলাম না। পুরো রিসোর্ট অগ্নিকান্ডে পুরে গেছে। যেহেতু আগুনটা মাজ রাতে লেগেছিলো তাই সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলো। সাবাই সজাগ হতে হতে পুরো রিসোর্ট অগ্নিকান্ডে ঝলসে যায়। ভাগ্য আমার সহায় ছিলো না রায়ান। মাত্র সাত বছর বয়সে বাবা মায়ের মৃত্যু দেখেছি। হারিয়ে ছিলাম আমার অনাগত ভাই অথবা বোনকে। কি দুর্ভাগ্য আমার বাবা মায়ের লাশটাকে ও দেখতে পারলাম না। রায়ান সুমুর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার চোখে ও পানি চিকচিক করছে। রায়ান সুমুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” তারপর”
সুমু নিজের চোখের পানি মুছে বলতে শুরু করে,,
তারপর বাবা মাকে হারিয়ে শহর থেকে গ্রামে চলে যায় মামার বাড়িতে। মামা আমাকে খুব আদর করতো। কিন্তু মামী দুই চোখে সহ্য করতে পারতো না। নানা নানী বেঁচে নেয়। খালামনি ও খুব ভালোবাসতো। ওনি মাঝে মাঝে এসে খোঁজ নিয়ে যেতেন। কিন্তু মামীর অত্যাচার আমার পিছু ছারে নি।। মামা সারাদিন কাজে থাকতো। আর মামী সব কাজ করাতো এইটা ওইটা নিয়ে খোটা দিতো। সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করতাম। যে মেয়ে কোনো দিন নিজের হাতে খায় নি সে ও রান্না করেছে বাড়ির সব কাজ করেছে। যে বাবার রাজরানী ছিলো সে হয়ে গেলো চাকরানী। দেখতে দেখতে আমি জেএসি পরিক্ষা দিয়েছি।

একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। সেখানে বসে থাকতো আমাদের এলাকার চ্যায়ারমেনের ছেলে ও তার দলবল। ছেলেটার নাম ছিলো জিসান। ওর নোংরা চোখে আমি পড়ে যায়। আমি স্কুল থেকে আসার সময় প্রতিদিন বিরক্ত করতো। একদিন তার বাবা আর মাকে নিয়ে যায় মামার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। মামা রাজি না হলে মামী ফুসলিয়ে রাজী করিয়ে নেয়। তারপর তার সাথে আমার বিয়ের কথা চলছিলো। আমি শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়েছি। ও টাকার গরমে কত মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে তার কোনো হিসাব নেই। আর আমার বয়স মাত্র ১৫ বছর ছিলো। সম্পর্কের জটিলটা সম্পর্কে কোনো ধারনা ছিলো না আমার।

আমি মামা মামীর পায়ে পড়েছিলাম যাতে বিয়ে না দেয়। পড়ে মামা আমার কান্না দেখে বিয়ে না করে দেয়। মামা ও জানতো ছেলেটার চরিত্র ঠিক নেই। বিয়েতে না করায় জিসানের পুরুষ্যত্বে আঘাত লাগে। তাই আমাকে হেনস্তা করার ছক কষতে থাকে। আমি একদিন স্কুল থেকে আসছিলাম মাত্র নাইনে উঠেছি। সময়টা ছিলো শীতকাল। কুয়াশা ঘেরা সকালে হাটার সময় জঙ্গলের দিকে নজর যায় কিছু একটা নড়ছে। যেহেতু শীতকাল ছিলো তাই এত সকালে চারপাশে মানুষ ছিলো না। আমি ধীরে ধীরে জঙ্গলের দিকে উকি দেয়। কিন্তু যা দেখি তার জন্য মোটে ও প্রস্তুত ছিলাম না । ভয়ে শীতকাল থাকা সত্ত্যে ও সারা শরীরে ঘাম চলে আসে।

জিসান ও তার বন্ধুরা একটা মেয়েকে জোর পূর্বক রেপ করছিলো। কি ভিবর্ষ দৃশ্য। মেয়েটার সারা শরীরে জানোয়ারদের আচরের দাগ। মনে হয়েছে খুবরে খুবরে খেয়েছে নরপিশাচের দল। মেয়েটাকে একজনের পর একজন এসে রেপ করছিলো। বয়সটা আনুমানিক সতের বছরের হবে। এক পর্যায়ে মেয়েটা সহ্য করতে না পেরে ঙ্গান হারায়। মেয়েটার নারিসত্তা লাল হয়ে গিয়েছিলো পুরো মাটি। মেয়েটা অঙ্গান হয়ে যাওয়ার পর ও জানোয়ারগুলো ছেড়ে দেয় নি। নিজেদের ক্ষুধা মিটাচ্ছিলো। আমি এইসব সহ্য করতে না পেরে মুখে হাত দিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠি। আমার কান্নার শব্দ পেতেই তাদের দৃষ্টি আমার দিকে যায়। তখনি জিসান চিৎকার দিয়ে বলে,,,,

“”শা*লিকে ধর। ওর সাথে আমার অনেক হিসাব বাকি আছে। আজ তাহলে ওকে ও উপভোগ করবো। জিসানের বিয়ের প্রস্তাব অস্বিকার করা। জিসানের আদেশ পেয়ে ছেলেগুলো বিশ্রি হাসি দিয়ে আমার দিকে এগুতে থাকে। আমি ভয়ে নিজের হিতাহিত ঙ্গান হারিয়ে ফেলি। তারপর জিসান এসে আমার বাহু চেপে ধরে বলে,,,,
“” আজ তোর শরীরকে উপভোগ করবো। শালী আমার কথা অমান্য করিস। বিয়ে করলে অন্তত আমি একা ভোগ করে ছেড়ে দিতাম এখন আমরা সবাই তোর দেহ নিয়ে খেলবো। “”””
আমি জিসানের কথা শুনে নিজের ঙ্গানে আসি। তারপর ছোটার জন্য ছটফট শুরু করি। বার আর মেয়েটার ছটফট চোখে ভাসছিলো। জিসান আমার শরীর থেকে জামা টেনে হিচরে ছিরে ফেলছিলো। তারপর ছেলেগুলো আমার দিকে এগিয়ে বাজে ভাবে টাচ করতে জিসান ওদের উদ্দেশ্যে বলে,,,

“” ও আমার নেশাময় মাল। তাই আগে আমি চেক করি তারপর তোরা। “”
তারপর ছেলেগুলো আমাকে ছেড়ে দেয়। জিসান আমার দিকে বিশ্রি হাসি দিয়ে জামার দিকে হাত বাড়াতে নিবে আমি শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে কামড় বসিয়ে দেয়। জিসান চিৎকার দিয়ে উঠে। আমাকে এক থাপ্পর দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। আমার দিকে এগুতে গেলে এক মুঠো বালি ওদের চোখে ছুরে মারি। ফলে লোক গুলো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলো। আমি নিজের সম্মান আর ইজ্জত বাচিঁয়ে কোনোরকম এইখান থেকে পালিয়ে আসি। কিন্তু আমি বাড়ি যেতে পারে নি ।

বাড়ির উঠোনে ঙ্গান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ি। সবাই ঘুম থেকে উঠে আমার এই অবস্থা দেখে লোকজন বিশ্রি কথা বলা শুরু করে। কেউ কেউ বলছিলো কি আকাম করে এসেছি। আমি নষ্টা দুশ্চরিত্রা।আমাকে কেউ রেপ করেছে। আমি কলঙ্কিত হয়ে গেছি। আমাকে বিয়ে করবে কে? কিন্ত তারা একবার একবার ও তাকিয়ে আমার অবস্থা দেখে নি। অনেক্ষন পর আমার ঙ্গান ফিরে । ঙ্গান ফিরে আমি এইসব শুনতে পেয়ে চিৎকার করে বলেছিলাম। আমি ধর্ষিতা নয়। তারপর জিসানের সব কিছু বললাম। কিন্তু তারা কেউ তাদের ভয়ে কিছু বলে নি। উলটো আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলছিলো। মামা এক পর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে আত্যহত্যা করতে নেয়। কোনো মতে মামাকে বাঁচিয়েছিলাম। কিন্ত মামির কথা থেকে রেহায় পাই নি। লোকজনের এত কথা সহ্য করতে পারছিলাম না। একদিন রাতে বেরিয়ে পরেছিলাম অজানা এক উদ্দেশ্যে।

মায়ের কিছু গহনা বেঁচে চলে এসেছিলাম ঢাকা শহরে। শহরে কিছু চিনি না। পুরোটা অচেনা একটা জায়গা। ক্লান্ত হয়ে বসে ছিলাম। ঠিক তখনি একটা মেয়ের বিড়াল এসে পড়ে আমার কাছে। মেয়েটা আমার সাথে এসে কথা বলা শুরু করে। তারপর মেয়েটার বাবা মা ওকে খুজতে খুজতে এখানে আসে। আমাকে দেখে মেয়েটির বাবা নানা প্রশ্ন করে। প্রথমে ভয়ে উত্তর দিতে না চাইলে ও এক পর্যায়ে সব বলি। তারপর থেকে ওই মেয়েটার সাথে তার বাসায় উঠি। আস্চর্যের বিষয় হলো সে মেয়েটা আর কেউ নয় ইয়ানা ছিলো। তারপর ইয়ানার সাথে ওর স্কুলে ভর্তি হয়। আমি আর ও একি ক্লাসে ছিলাম। সেখানে রুহান, আকাশ, আয়াত, আরু তাদের সাথে আমার বিন্ধুত্ব গড়ে উঠে। শুরু হয় আমার নতুন জীবন। বাবা মায়ের ভালোবাসা পাচ্ছিলাম। কালো জীবনকে ভুলে আলোর দিকে অগ্রসর হতে লাগলাম।

সুমু কান্না করতে করতে হিচকি উঠে গেছি। রায়ান হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করছে। এখন যদি জিসানকে সামনে পেতো তাহলে নরক যন্ত্র না দিতো।
ইয়ানা দরজার বাহির ঠেকে ঠকঠক শব্দ করে গলা কেশে বলে,,,,,
“” আপনাদের কথা কি শেষ হয়েছে। সুমু দেরি হয়ে যাচ্ছে বাড়িতে ফিরতে হবে।
সুমু চোখের পানি মুছে রায়ানকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতে নেয়। ঠিক তখনি ইউভি বলে,,,,
“” না তোমরা একা যাওয়াটা নিরাপদ না। আমি দিয়ে আসছি””
ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
“” ভাইয়া এত চিন্তা করবেন না। আমাদের কিছু হবে না। আমরা ঠিক চলে যেতে পারবো।

ইউভি :: কিন্তু…
ইয়ানা :: কোনো কিন্তু নয়। আপনি রায়ান ভাইয়ার কাছে থাকুন।
ইউভি :: আমাদের ক্ষমা করেছো?
ইয়ানা :: বোনেরা কখনো ভাইদের উপর রাগ করে থাকতে পারে। তাহলে আমি কিভাবে রাগ করে থাকি।
এরপর ইয়ানা আর সুমু কেবিন থেকে বেরিয়ে পড়ে।
ইয়ানা রিক্সা ডাকতে যাবে এমন সময় একটা বল এসে ওর মাথায় লাগে। একটা বাচ্চা বল নিয়ে খেলা করছিলো। অপ্রস্তুতভাবে ওর উপরে এসে পড়ে। ইয়ানা আহহ বলে চোখ বন্ধ করে নেয়। এরপর একটা ছেলে এসে বলে,,,,
“” সরি সরি ম্যাম আমার ভাসতি দেখতে পাই নি। তার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। “”
ইয়ানা কপালে।হাত দিয়ে বলে,,,

” না না ঠিক আছে “”
ছেলেটি :: এক কাজ করুন আমার সাথে হসপিটালে চলুন।
ইয়ানা,,, না না ভাইয়া তার প্রয়োজন নেয়। একটু ব্যাথা লেগেছে ভালো হয়ে যাবে।
ছেলেটি :: ওকে আমার গড়িতে ফাস্ট বক্স আছে একটু মলম লাগিয়ে নিন।
তারপর ছেলেটি ইয়ানাকে জোরপূর্বক মলম লাগিয়ে দেয়।
কিন্তু এইসব দৃশ্য পিছন থেকে পরখ করছিলো এক জোরা লাল হয়ে যাওয়া চোখ।

ইয়ানা চৌধুরি ভিলায় ঢুকতেই ওর কাপাকাপি শুরু হয়ে যায়। আহানের বিলাসবহুল কালো মার্জিসিয়ান গাড়িটা চৌধুরি ভিলার ভিতরে। তারমানে আহান বাড়ি ফিরে এসেছে। কিন্তু আহানতো এখন আসার কথা না।
ইয়ানা ভয়ে ভয়ে চৌধুরি ভিলায় প্রবেশ করে। না আজ আহানের রুমে যাওয়া যাবে না। আজ আমার মৃত্যু নিশ্চিত। তারপর ইয়ানা নানান কথা ভেবে বড় একটা শ্বাস নিয়ে রুমের ভিতরে পা রাখে। কিন্তু আহান একদম নিস্চপ হয়ে ভিবানে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। ঝড় আসার আগে যেমন পরিবেশ শান্ত থাকে ঠিক তেমনি আহান শান্ত হয়ে বসে আছে। ইয়ানা পা টিপে টিপে ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। আজ আর ওয়াশরুম থেকে বের হওয়া যাবে না। ইয়ানা ভিতরে ডুকার আগেই কারোর ঠান্ডা প্রশ্নে থমকে যায়।

“” কোথায় গিয়েছিলে ? where do you come from?””
কথা ছিলো শান্ত। কিন্তু কন্ঠ ছিলো আগুনের মতো ঝলসে যাওয়া। ইয়ানা ভয়ে ভয়ে আহানের দিকে তাকায়।
আহান এখনো নিচে তাকিয়ে নিজের কপাল ঘেসছে।
আহান পুনরায় দাতে দাত চেপে বলে,,,,
“” কোথায় গিয়েছিলে জানতে চেয়েছি। চুপচাপ আছো কেনো? মৌনতা আমার একদম পছন্দ নয়। “”
ইয়ানা আমতা আমতা করে বলে,,,
“” আমি ওই বাগানের দিকে গিয়েছিলাম। তারপর ভাবছি অনেকদিন তো বাহিরের পরিবেশ দেখি না তাই একটু হাটতে বের হয়েছিলাম। বাড়ির আশেপাশেই ছিলাম। “”

ইয়ানা কথা বলা শেষ করার সাথে সাথে আহানের শক্ত হাতের থাবার সম্মুখীন হয়। পরপর চারটি থাপ্পরে ইয়ানা টাল সামলাতে না পেরে টেবিলের সাথে ধাক্কা খায়। এরপর ইয়ানা চুলের মুঠি ধরে হাত দিয়ে তুলে মুখ চেপে বলে,,,,
“” মিথ্যা বলিস আমার সাথে। ডু ইউ থিংক আই এম স্টুপিড? বাহিরে গিয়েছিলি নিজের শরীরের জালা মিটাতে। ছেলেটা কে ছিলো? কতদিন ধরে সম্পর্ক তোদের? “”
ইয়ানা গালে হাত দিয়ে আহানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” কোন ছেলে,, কার কথা বলছেন আপনি?
আহান ইয়ানার মুখটা আরেকটু চেপে ধরে বলে,,,,

“” লজ্জা করে এইভাবে মিথ্যা বলতে। ছিহহ বালের জীবন শেষে কি না অগ্নি চৌধুরি এমন একটা মেয়েকে বউ বানালো যে অন্যজনের প্রতি আসক্ত। ঘৃনা হচ্ছে নিজের প্রতি। সামান্য একটা মেয়েকে নিজের করে রাখতে পারলাম না। ছলনাময়ী নারী লজ্জা করে না স্বামী থাকতে অন্য পুরুষের সাথে তামাসা করতে। “”
ইয়ানা কানে হাত দিয়ে বলে ,,,,,
“” আল্লাহর দোহায় লাগে চুপ করুন। এমন কোনো কথা বলবেন না যার কারনে পরবর্তীতে আফসোস করতে হয়।আপনি কোন ছেলের কথা বলছেন আমি সত্যি বুঝতে পারছি না। “”
আহানের অতিরিক্ত রাগের ফলে চোখ থেকে দুই ফোটা জল গরিয়ে পরে।
আহান বার বার ছেলেটার সাথে ইয়ানার দৃশ্য ভেসে উঠছে। ইয়ানার এইসব কথা আহানের রাগ যেনো দিগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পুনরায় নিজের শক্ত হাতের থাপ্পর ইয়ানার নরম তুলতুল গালে বসায়। রাগে চিৎকার দিয়ে বলে,,,
“” আবার মিথ্যে বলছিস আমার সাথে। তোরা মেয়েরা এত সস্তা কেনো বলতো যাকে তাকে নিজের শরীর বিলিয়ে দিস। যদি ঘরের স্বামীর দিকে মন না বসে তাহলে পতিতালয়ে ওতো যেতে পারিস।
ইয়ানা আহানের কথা শুনে নিভু নিভু চোখে কান চেপে বলে,,,,
“” ছিহহ কতটা জঘন্য আপনি। লজ্জা করে না এইসব কথা বলতে। নূন্যতম মুখে আটকাচ্ছে না এইসব বলতে।”
ইয়ানার কথা শুনে আহান আগ্নেয়গিরির লাভার ন্যায় ক্ষেপে গেছে,,,, চুলের মুঠি হাতে নিয়ে গলায় চেপে ধরে বলে,,
“” লজ্জা মাই ফুট। নির্লজ্জ তো তোরা। না আমার মা আমার বাবাকে শান্তি দিয়েছে। এখন তুই ও শুরু করলি। ছেহহ নিজেকে এখন কাপুরুষ মনে হচ্ছে। কেনো মেয়ে মানুষের পাল্লায় পরতে গেলাম। আমি তোকে বাড়ি থেকে বের হতে বারন করেছিলাম না তাহলে কেনো হলি। নগর ছাড়া এক মূহুর্ত ও ভালো লাগছিলো না তাই না। “”
ইয়ানা চোখ মেলে তাকাতে পারছে না। কিন্তু আহানের কথা গুলো ইয়ানার হৃদয়ে তীরের ফলার মতো বিধছে।
ইয়ানা আহান থেকে নেজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে,,,,

“” আপনার মতো জঘন্য মানুষ আমি আর একটা ও দেখিনি মি. অগ্নি চৌধুরি। ছিহহ কতটা বাজে আপনি। লজ্জা হচ্ছে আমার কেনো ভালোবাসতে গেলাম আপনার মতো হৃদয়হীন মানুষকে। ওই ছেলেটার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি রায়ান ভাইয়াকে দেখতে হসপিটালে গিয়েছিলাম। রাস্তা দিয়ে আসার সময় একটা বল এসে আমার কাপালে লাগে। দেখুন কপালটা এখনো লাল হয়ে আছে। আর ছেলেটির গার্ডিয়ান এসে আমাকে একটি মলম লাগিয়ে দেয়। ওনার গিলটি ফিল হচ্ছিলো তাই মনুষ্যত্বের জন্য এইসব করেছে। আর আপনি পিছন থেকে কি না কি ভেবে ফেলেছেন। আপনার মতো অমানুষ কখনো বুঝবে না মনুষ্যত্ব কি। তারা মানুষ খুন করতে পারে কাউকে সাহায্য করতে পারে না। হ্যা মানছি আমি আপনার বারন করা সত্তেও বাহিরে বের হয়েছি। কিন্তু আহান সুমু আর রায়ান ভাইয়ার কথা শুনে নিজেকে আটকাতে পারে নি।

ইয়ানা এইসব বলতে বলতে এক পর্যায়ে ঙ্গান আহানের বুকে নিজের ভর ছেড়ে দেয়।
আহান এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে। বার বার একটা কথায় কানে বারি খাচ্ছে।
“” আমি আপনার মতো হৃদয়হীন মানুষেকে ভালোবেসে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি। “”
তারমানে ইয়ানা আমাকে ভালোবাসে। আগ্নেয়গিরির মত আগুন যেনো ধপ করে নিভে শান্ত হয়ে গেলো। ইয়ানা ভর ছেরে দিতে আহানের হুস ফিরে। ইয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখে সেন্সলেস হয়ে গেছে। কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে। দুই গালে পাচ আঙ্গুলের ছাপ বসে লালচে হয়ে গেছে। আহানের রুম সাউন্ড প্রুফ তাই আহানের চিৎকার কেউ শুনতে পাই নি।

অনুভবে তুমি পর্ব ২৪

আহান ইয়ানাকে দেখে নিজের প্রতি নিজে বিরক্ত হয়ে বলে,,,
” শিট রাগের মাথায় কি করে ফেললাম আমি। “”
এর পর ইয়ানাকে বিছানায় সুয়ে দেয়। গালে হালকা বারি দিয়ে বলে,,,
“” ইনু বেবি প্লিজ চোখ খুলো। প্লিজ সোনা তোমার নিরবতা আমার হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করছে।””

অনুভবে তুমি পর্ব ২৬