অনুভবে তুমি পর্ব ৩

অনুভবে তুমি পর্ব ৩
লিজা মনি

ইয়ানা কান্না করতে করতে সুমাইয়ার দিকে তাকায় দেখে
সে সামনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সুমাইয়ার দৃষ্টি অনুসরণ করে ইয়ানা ও সামনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় খুবই সুদর্শন একটি ছেলে তার দিকে প্যান্টে হাত দিয়ে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটি দেখতে খুবই হ্যান্ডসাম। ওহুম হ্যান্ডসাম বললে ভুল হবে এক পলকে যে কারো মন কেড়ে নেওয়ার মতো চেহারা।
দেখতে আনুমানিক ৬ ফুটের কাছাকাছি হবে । গায়ের রং ফর্সা তবে দবদবে ফর্সা নয়। মাথায় জেল দিয়ে সেট করা সিল্কি চুল। গায়ে ব্ল্যাক কালারের ব্লেজার। ইয়ানা এসব পরখ করতে করতে মনে পড়ে এই ছেলেটার চোখ গুলো খুব পরিচিত। কোথাও যেনো দেখেছে।কিন্তু মনে করতে পারছে না।
ইয়ানা ভাবনার প্রহর ঘটে কারো ডাক শুনে।

আসলে আহান ভার্সিটিতে কোন একটা কাজে এসেছিল রায়ানের সাথে। তারা এই কলেজে অনেক প্রাক্তন স্টুডেন্ট,তার ওপর একজন সফল ব্যবসায়ী। আহানের একটা জরুরী ফোন আসার কারণে কথা বলতে বলতে এদিকে আসছিল, তখনই ইয়ানার সাথে অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটে।সবাই সেই আগত ছেলেটির দিকে তাকায়।
রায়ান ——কিরে কখন আসলি আর এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করছিস?প্রিন্সিপাল স্যার তোকে ডাকছে তো,। আর কিছু বলতে যাবে সামনে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে মাটিতে পড়ে আছে।আর একটা মেয়ে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আবার হঠাৎ করে মনে পড়লো আরে এটা তো সেই মেয়েটা। যে কিনা সে দিন রায়হানের গোডাউনের সামনে বসে ছিল।
সে ইয়ানাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহান তার হাত চেপে ধরে,,,,,,চোখে কিছু একটা ইশারা করে আর রায়ান ও প্রশ্ন করা থেকে থেমে যায়। ইয়ানা এখন সবার দিকে তাকিয়ে সুমাইয়ার দিকে তাকায় দেখে সে ভীত হয়ে তাকিয়ে আছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে,,,,
” শয়তান এলিয়েন এর বউ আমি যে এখানে পরে আছি সেই খেয়াল আছে তোর। আর এই উগান্ডার দিকে এভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেনো? এভাবে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে না থেকে ধর আমাকে।
ইয়ানার চিৎকার শুনে সুমাইয়ার ধ্যান ভাঙ্গে,,,,
— ওহ বেবি, খুব ব্যথা পেয়েছিস?
এই বলে সে ইয়ানার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।
ইয়ানা উঠতে উঠতে বলে,,,,,,
“না ব্যথা পাবো কেন খুব আরাম পেয়েছি এখন এই আরামের ঠেলায় নাচতে ইচ্ছা করছে”
এরপর সে আহানের দিকে তাকায়। দেখে সে এখন ওর দিকে কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে কোনো কিছু পরখ করছে।
এইবার ইয়ানা একটু রাগী কন্ঠে বলে,,,
“এই যে মি,,,, একেতো ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। তার ওপর এখন সরি না বলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছেন””

রায়ান ইয়ানার কথা শুনে ভয়ে ভয়ে আহানের দিকে তাকায়। আল্লাহ আহাননি রেগে যায় মেয়েটাকে যদি কিছু করে বসে। কিন্তু রায়ান আহান এর দিকে তাকিয়ে চমকে যায় কারণ আহানের দৃষ্টি ছিলো শান্ত। রায়ান কিছুটা অবাক হয়। কারণ যে আহান চৌধুরীর সামনে কেউ আঙ্গুল তুলে কথা বলতে পারেনা সেখানে একটি হাঁটুর বয়সী মেয়ে তাকে রীতিমতো শাসাচ্ছে ব্যাপারটা একটু অবাক হওয়ারই কথা।
এবার রায়ান সকল নীরবতা ভেঙ্গে বলে,,,,
“ওকে মিস, আমি ওর হয়ে আপনাকে সরি বলছি ”
ইয়ানা : কেনো ধাক্কা কি আমি আপনার সাথে খেয়েছি যে সরি আপনি বলবেন। ওকে সমস্যা নেই আমার মনটা অনেক বড় জান ক্ষমা করে দিলাম।
এই বলে ইয়ানা সুমাইয়ার হাত ধরে এখান থেকে চলে যায়। এইসব ছেলেদের ঝামেলাই সে জড়াতে চাই না যেহেতু এইটা একটা এক্সিডেন্ট।

রায়ান : শালা এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? চল প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে কি কাজে এসেছিস ভুলে গেছিস। তবে আজ তোর সাথে অনেক হিসাব বাকি আছে। আজকে বিষয়টা ঠিক হজম হচ্ছে না।
এরপর তারা প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে চলে যায়।
এইদিকে ইয়ানা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বাড়ির ভেতরে আসে।
রুয়ানা ইয়ানার এই অবস্থা দেখে বলে,,,,
– “কি হয়েছে আপু এভাবে কাল সাপের মতো মুখ করে রেখেছিস কেন?
রুয়ানর এই কথাটি যেন ছিল ইয়ানার রাগে ঘি ডলার মতো।
ইয়ানা : মনে রং লাগছে সেই জন্য এমন করছি। কেন তোর কোনো সমস্যা।
এই বলে সে হন হন করে নিজের রুমে চলে যায়।

রুয়ানা : যাক বাবা এমন কি বললাম যে রেগে গেলো । হুমহ যা ইচ্ছে করুক আমার কি।
আসলে তাদের দুই বোনের সম্পর্ক এরকম রুয়ানা বোকার মত কিছু একটা বলবে ইয়ানা রেগে যাবে। কিন্তু দুইজন দুজনের জন্য প্রাণ। একদিন কথা না বলে থাকতে পারে না।
এইদিকে আহান আর রায়ান প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলো । এমন সময় রায়ান দেখে আহান কিছু একটা ভাবছে আর মুখে হালকা হাসির রেখা ফুটে উঠেছে । এমনি দুপুরের ঘটনার পর থেকে সে অবাক হয়ে আছে। এখন আহানের এভাবে একা একা হাসতে দেখে যেন অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছেছে। তার বন্ধুকে কোনো ভূতে ধরলো না তো। আবার মনে মনে ভাবে ভূতের আর কোন খাইয়া দাইয়া কাজ নাই এমন একটা নিরামিষ এর কাছে আসবে ।
মনেরটা মনেই রাখলো। সেটা আর প্রকাশ না করেই আহানকে প্রশ্ন করলো,,,

– “”কি হয়েছে তোর আজ বলতো? দুপুরে মেয়েটা তোকে এতগুলো কথা বলল আর তুই কিছুই বললি না। সামান্য রাগের আভাস ও দেখতে পেলাম না। যে আহান চৌধুরীর সামনে সামন্য আঙ্গুল তুলে কথা বলার কারণে তার আঙ্গুলগুলো কেটে দিয়েছিল আজ একটা মেয়ে এতগুলো কথা বলে গেল সে কিছুই বলল না হাউ ইমাজিন।
আহান হঠাৎ করে বলে ওঠে,,,,বলিস না।
রায়ান এবার কিছুটা অবাক হয়ে বলে,,,,,
” কি বলবো না আর কাকে বলবো না?

আহান : ” এই মেয়েটাকে বলিস না যে আমিই গুল্ডেন অফ মাফিয়া গ্রুপের লিডার অগ্নি চৌধুরী। সে শুধু জানবে আমি চৌধুরী গ্রপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ এর মালিক সাজিদ চৌধুরীর ছেলে আহান চৌধুরী। আর এটাও বলিস না যে ঐদিন মাস্ক পড়া ছেলেটা আমিই ছিলাম। আমি ওর সামনে নিজের ভয়ংকর রূপ আনতে চায় না। এই দুদিনে ওকে যতটুকু দেখেছি ও খুবই নরম ও চঞ্চল স্বভাবের মেয়ে। ভয়ংকর রূপটা ও সহ্য করতে পারবেনা। কিন্তু যদি আমার কথার অবাধ্য হয় তাহলে আমি আহান চৌধুরী থেকে অগ্নি চৌধুরি হতো ও বেশি সময় নেবো না””
রায়ান শুধু আহানের কথাগুলো শুনে হা করে তাকিয়ে আছে। এটা কি তার বন্ধু মাফিয়া লিডার অগ্নি। যে কিনা কোনো মেয়েকেই সহ্য করতে পারে না। সে কি না আজ একটা মেয়ের প্রতি এতটা পজেসিভ।মেয়েটা চঞ্চল নাকি বোকা সেটা ও পরখ করছে। তার মানে কি তার বন্ধুর মনে প্রেমের ফুল ফুটছে। তাহলে সে এখন নিরামিষ থেকে আমিষ হবে ভাবতে যেন খুশিতে আত্মহারা। আহান এবার রায়নের দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।

আহান রায়ানের মুখটা আলতো করে চেপে ধরে বলে,,,
-রিলাক্স ব্রো এভাবে তাকানোর কিছু নেই। আমি জানি আমি যে হ্যান্ডসাম।
রায়ান এবার আহানকে কিছু একটা একটা বলতে যাবে তার আগেই আহান মুখটা গম্ভীর করে বলে ওঠে,,,,
“”চুপ আর একটা কথাও বলবি না। কখন থেকে বকবক করে মাথা শেষ করে দিচ্ছিস। অনেক বলেছি আর শুনেছি আর না । যদি আর একটা কথাও বলিস তাহলে এখানে রেখেই আমি চলে যাব। আর হ্যাঁ, মেয়েটার সমস্ত বায়োডাটা আমি চাই, কি নাম, কোথায় থাকে, বাবা মা কি করে, কিসে পড়ে, মানে সমস্ত কিছু””
রায়ান শুধু বোকার মত মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ মূলক সম্মতি জানিয়ে গাড়ি ড্রাইভে মনোযোগ দেয়।
দেখতে দেখতে তারা বাড়ির সামনে এসে পড়ে। আহান একটা আলাদা বাসায় থাকে।বাসাটা ঠিক জঙ্গলের দিকে। কাজ করতে করতে অতিরিক্ত রাত হয়ে গেলে রায়ান আহানের সাথে চলে আসে। আজও রায়ান আহান এর বাংলোতে এসেছে। রায়ান একজন গোয়েন্দা অফিসার। আহান মাঝে মধ্যে চৌধুরি ভিলায় যায় । কোনো এক কারনে সে সাবার থেকে আলাদা থাকে।

আহান ফ্রেস হয়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বলে,,,
,,,কি এমন আছে তোমার এই মায়া ভরা মুখে। যে একটা পাথর মন কে ও তোমার দিকে আকৃষ্ট করে দিলে। খুবই বোকা নারী তুমি আমার জালে ফেঁসে গেছ যে,,,,, আমার হৃদয় হরন করে, আমার অনুভবে মিশে গেলে। সত্যিই কি তুমি বোকা।ওহুম বোকা বললে ভুল হবে। কারণ তুমি আহান চৌধুরী আর অগ্নি চৌধুরি দুজনের মনেই জায়গা করে নিয়েছো। এবার দুজনের অত্যাচার সহ্য করার জন্য তৈরি তো মিস।
এই বলে সে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। যে হাসির শব্দ দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে বিকট আওয়াজের সৃষ্টি হয়েছে। রাতের এই নীরবতায় হাসিটা খুবই ভয়ঙ্কর লাগলো। সাধারন মানুষ দেখলে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে।
দেখতে দেখতে রাতের প্রহর ঘনিয়ে সূর্যি মামা উকি দিল।
আবারো ইয়ানার ঘুম ভাঙলো মায়ের চিৎকার শুনে। সে আরামের ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ পায়ের দিকে খেয়াল করে দেখে কাল যে পায়ে ব্যথা পেয়েছিলো সেই জায়গায় মলম লাগানো।
ইয়ানা অবাক হয়ে ভাবে,,,

“আমার যতটুকু মনে আছে আমি তো ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম মলম তো লাগাইনি। আর আম্মু আব্বু আর রুয়ানাও তো জানে না যে আমি পায়ে ব্যথা পেয়েছি। তাহলে মলম লাগালো কে”?
সে এসব ভাবতে ভাবতে বিছানা থেকে উঠতে যাবে তখনই বালিশের কাছে একটি চিরকুট দেখতে পাই,,,
ওখানে লেখা ছিল,,,
“”মলম কে লাগিয়েছে সেটা না ভেবে দেখো টেবিলের উপরে একটা ঔষধ রাখা আছে সেটা বাধ্য মেয়ের মতো খেয়ে নাও। তাহলে ব্যথাটা কমে যাবে আর হাঁটতেও অসুবিধা হবে না। এখন চুপচাপ খাওয়া দাওয়া করে ভার্সিটিতে যাবা। আর হে মলম কে লাগিয়েছে আর কে তোমাকে এসব বলছে সেটা এই ছোট্ট মাথায় না ঢুকিয়ে আমার কথামতো চলো।কারন আমি অবাধ্যতা পছন্দ করি না। আর এখন থেকে এমন চিরকুট আর উপদেশ সব সময় পাবে। তাই তোমার ওই মঙ্গল আমার অবাধ্য না হোও””

ইয়ানা চিঠিটা পড়ে হতভম্ভ হয়ে বসে রইল। সে মনে মনে ভাবতে লাগলো,,,,আমার যে পায়ের ব্যথা সেটা ওই লোক জানলো কিভাবে/তাহলে কি যে লোকটার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম সে এসেছিল। যদি তাই হয় তাহলে আজকে জিজ্ঞাসা করবো সাহস কি করে হয় আমার রুমে আসার। তার উপর আমাকে এরকম হুমকি সরূপ চিঠি দিয়ে যাওয়ার। সে এসব ভাবতে ভাবতে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
আর এদিকে আহান এখনো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। কারণ সে যে সারারাত ঘুমাতে পারেনি। নিজের হৃদয়হরনকারিনীকে দেখাই মগ্ন ছিল। হে সে ব্যক্তি আর কেউ নয় আহান ছিল যে ইয়ানাকে গিয়ে আঘাত প্রাপ্ত জায়গায় মলম লাগিয়ে দিয়ে আসে। আর এই চিরকুটটা দেয়।আহান যখন ঘুমাতে যাবে তখন তার মোবাইলে একটা নোটিফিকেশন আসে। দেখে রায়ান দিয়েছে, তারপর সে নোটিফিকেশন ওপেন করে দেখে ইয়ানার বায়োডাটা। যেহেতু রায়ান একজন গোয়েন্দা অফিসার তাই ইয়ানার বায়োডাটা জোগাড় করতে বেশি সময় লাগে নি। আহান ও ইয়ানার বায়োডাটা পেয়ে আর দেরি করেনি চলে যায় নিজের হৃদয় হরণীর ব্যথা উপশম করতে ।
এদিকে ইয়ানা ভার্সিটিতে প্রবেশ করে তখনই সুমাইয়া বলে ওঠে,,,

“কি হয়েছে বলতো সারারাস্তা মুখ ঘুমড়া করে এসেছিস”?
ইয়ানা কিছু একটা ভেবে সুমাইয়াকে সবকিছু খুলে বলে।
সুমাইয়া: কি বলিস আমি তো প্রথম দিকে ক্রাশ খেয়ে ফেলেছিলাম। আমি যতটুকু ধারণা করেছি খুবই ভদ্র একটি ছেলে।
ইয়ানা:ভদ্র না কচু। একটা মেয়ের রুমে যে নক ছাড়া ঢোকা যায় না সেই ম্যানার্স টুকুও নেই।
সুমাইয়া:ঠিক আছে ক্লাসে চল আকাশ রোহান এদের সবাইকে বলবো নে।
ইয়ানা : না এদেরকে কিছু বলার দরকার নেই। এমনিতেই রায়হানের ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত সবাই। তাদের আর চিন্তায় ফেলতে চাই না।
সুমাইয়া: ঠিক আছে বলবো না। তবে চিন্তা করিস না আমি তোর পাশে আছি।
ইয়ানা : হুম

তারা দুজন ভার্সিটিতে চলে যায়। শুরু হয় তাদের ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে একসাথে বসে আড্ডা। এক সময় ভার্সিটি ছুটি হয়ে যায়। আজও যে যার মত বাড়িতে চলে যায়।
ইয়ানা আর সুমাইয়া রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল এমন সময় দেখতে পাই একটি ছেলে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার সামনে আরেকটি ছেলে বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো করে খেয়াল করে দেখে আরে এটা তো সেই ছেলেটা যার সাথে কাল ভার্সিটিতে ধাক্কা খেয়েছিলাম।
ইয়ানা সুমাইয়াকে বলে,,,
“ওই দেখ দেখতো ছেলেটাকে চিনতে পারিস কি না?
সুমু ওই দিকে তাকিয়ে ইয়ানার কথার মানে বুঝতে পেরে ছেলে দুটার কাছে চলে যাই,,,
ইয়ানা গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে গিয়ে রেগে বলে,,,

– আপনার সাহস কি করে হয় আমার বাড়িতে যাওয়ার। আমাকে ওই রকম হুমকি দেওয়ার।
আহান যেনো এমন প্রশ্নেরই আশা করছিল।
সে নিজের মুখের গম্ভীরতা বজায় রেখে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
আহান: কাল থেকে আমি তোমার উদ্ধ্যতা সহ্য করছি।কি প্রমাণ আছে আমি কাল তোমাদের বাড়িতে গেছি। কি হও তুমি আমার আত্মীয় নাকি তোমার বাবার মেয়ের জামাই যে রাতের বেলা জামাই আপ্যায়ন খেতে যাবো।
ইয়ানা এবার কিছুটা ভেবে ভরকে যায়। ঠিক উনি আমাদের বাড়িতে যাবেন কি করে। কালকেই মাত্র দেখা হলো আর বাড়িই বা চিনবে কিভাবে? না জেনে শুনে কত কি বলে ফেললাম। দেখে তো মনে হচ্ছে লোকটা এবার ভীষণ রেগে গেছে। সরি বলে এখান থেকে কেটে পড়ি।

অনুভবে তুমি পর্ব ২

ইয়ানা : আসলে আমি দুঃখিত আপনার সাথে এমন বিহেভ করা আমার ঠিক হয়নি। আমার যাচাই করা উচিত ছিলো। ওই কাল আমাকে কেউ একটা হুমকির চিঠি দেয়। খুব ভয়ে ছিলাম তাই আপনাকে এসে বলি। কিছু মনে করবেন না।
আহান : হুম ক্ষমা করে দিলাম আমার মনটা আবার অনেক বড়।
ইয়ানা এবার চোখ বড় বড় করে তাকায় ওর বানি ওকেই শোনাচ্ছে।
রায়ান : এইযে মিস, ভা, মানে ইয়ানা পাশে থাকা বান্ধবী নিজের বান্ধবীকে বুঝিয়েন হঠাৎ করে কারো উপর দোষ দেওয়া উচিত নয়।সুমাইয়া রায়ানের কথা শুনে বিরক্ত হয়ে বলে,,,,হুম
এই বলে তারা এখান থেকে চলে যায়। তারপর…………..

অনুভবে তুমি পর্ব ৪