অনুভবে তুমি পর্ব ৪৫
লিজা মনি
সকালের উত্তপ্ত সূর্য চোখে পড়তেই ইয়ানা ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকায়। নিজের অবস্থান খেয়াল করলে বুঝতে পারে সে কাল রাতে কান্না করতে করতে দেয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। ইয়ানা ফ্লোর থেকে উঠতে যাবে ঘাড়ে হলকা টান খায়। সারারাত হেলান দিয়ে শুয়ে থাকার কারনে ঘাড় ব্যাথা হয়ে গিয়েছে। আহানের কথা মাথায় আসতেই ইয়ানা চারদিকে চোখ বুলায়। নাহহ আহান কোথাও নেই। বিছানা ও একদম কালকের মত গুছানো। তাহলে কি ওনি রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আর আসে নি। আচমকা ইয়ানার মনটা খারাপ হয়ে পড়ে। কাল কি বেশি বলে ফেলেছি? ওনি কি আমার উপর বেশি রাগ করেছে নাকি কষ্ট পেয়েছে। নাহলে আর যাই হোক আহান কখনো ইয়ানাকে ছাড়া থাকতে পারে না। ইয়ানা হাজার রাগ করে দুরে সরে গেলেও আহান তাকে ধমকিয়ে আবার কাছে টেনে নিয়েছে। আর আজ উনি সারারাত রুমেই আসে নি। ইয়ানার কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে। জীবনের গতি কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে আজও অজানা।
ইয়ানা প্রায় অনেক্ষন যাবৎ ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। নিচে নেমে রেশবকে দেখতে পেয়ে বুকটা ধুক করে উঠে। ইসস ছেলেটা তো জানে ও না তার বোনটা আর বেঁচে নেই। মেয়েটা হাজার অন্যায় করোক কিন্তু বেঁচে থাকার তো অধিকার ছিলো। বেঁচে থেকে শাস্তি পাক কিন্তু আপনি মেরে একদম ঠিক করেন নি আহান। একজনের রক্ত লাগিয়ে নিজের হাতকে রক্তাক্ত করেছেন।চৌধুরি ভিলায় আগের মত আর হাসি ঠাট্টা নেই। সবাই কেমন জানি মনমরা হয়ে থাকে।
ইয়ানাকে দেখতে পেয়ে আহিয়া বলে,,,,,
” বউমনি দাদাভাই কোথায় আজ আমার সাথে দেখা করি নি কেনো? ”
ইয়ানা — জানি না আহিয়া তোমার দাদাভাই কাল রাতে রুমে আসে নি।
দাদুমনি — সেকি তোকে নিয়ে তো ঘুরতে গিয়েছিলো তাহলে বাসায় আসে নি কেনো?
ইয়ানা কি বলবে? কি উত্তর দিবে? সে কি বলবে হুম দাদুমনি তোমার নাতি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ দিয়েছে যা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। কি ভয়ংকর সেই টর্চারসেল আর তার পরিবেশ। এরসাথে ঝর্নার ভয়ংকর মৃত্যু।কখনো ভুলতে পারব না সেই সারপ্রাইজের কথা। এখন সারপ্রাইজ নাম শুনলেই ভয় হয় আবার নি কারোর মৃত্যু দেখাতে নিয়ে যাবে।
ইয়ানা নিজেকে সামলে বলে,,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“” আসলে দাদুমনি ওনার কিছু কাজ ছিলো তাই আমাকে বাসায় দিয়ে আবার চলে যায়। তুমি তো তোমার নাতিকে চিনো কখনো বলে গিয়েছে কোথায় যাচ্ছে। আর না জিজ্ঞাসা করলে বলবে।””
দাদুমনি — হুম তা ঠিক।
ইয়ানা রেশবের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” কেমন আছেন ভাইয়া? ”
রেশব মাথা নিচু করে রেখেছিলো। ইয়ানার কথা শুনে তার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” এই তো আছি আলহামদুলিল্লাহ। ভার্সিটি কেমন চলছে তোমার?
ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
“” এই তো ভাইয়া কোনোরকম। ইনশা আল্লাহ কাল থেকে ভার্সিটির ক্লাস করব। এই এক মাস আহান যেতে দেই নি অসুস্থতার কারনে। “”
রেশব — হুম আহান তোমাকে খুব ভালোবাসে ইয়ানা। আমি আহানকে যতটুকু দেখেছে ওর সব পাগলামি আর রাগ তোমাকে ঘিরে। তোমাকে ও সীমাহীন ভালোবাসে। কখনো ওর ভালোবাসাকে ছেড়ে যেও না।
ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,
“” হুম ভাইয়া। ”
তাদের কথার মাঝে আহিয়া বলে,,,,,
“” হ্যা হ্যা আহান ভাইয়া না হয় বউমনিকে ভালোবাসে এখন তোমার বিয়েটা কবে খাব ভাইয়া? তুমি ও কাউকে বিয়ে করে তোমার বন্ধিনী করে ফেলো। “”
রেশব লাজুক হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” আগে এমন মেয়ে পায় যে আমার বন্ধিনী হয়ে থাকতে চাই। ঠিক ইয়ানার মত ভদ্র আর মিষ্টি একটা মেয়ে””
রেশবের কথা শুনে আহিয়া আর ইয়ানা হেসে উঠে। তাদের হাসির শব্দ কোনো একজনের কানে বাজতেই সে তাদের দিকে অগ্নি চোখে তাকায়। কিন্তু তাদের সেই ব্যক্তির দিকে খেয়াল নেই তারা তাদের মত কথা বলে যাচ্ছে।
আহান রেগে নিজের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেই। ইচ্ছে করছে এই মেয়েকে ইচ্ছে মত কয়েকটা থাপ্পর দিতে যতক্ষন না ঙ্গান হারাচ্ছে। এই হাহা হিহি করার জন্য এই মেয়ে কাল বলেছে আমাকে আপনি ছুবেন না। কেনো এই মেয়ে জানে না ও কোনো ছেলের সাথে কথা বললে আমি সহ্য করতে পারি না। রাগে নিজের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। যেই আমি এক রাতের জন্য বাহিরে ছিলাম এমনি শুরু করেছে তামাশা। আমি তো বাহিরে গিয়েছিলাম আমার কষ্ট অনুভব করানোর জন্য কিন্ত এই মেয়ে তো দিব্বি হাসি খুশি আছে। তাহলে আমি কেনো শুধু শুধু চিন্তা করব। করব না আমি কোনো চিন্তা এই বিয়াদপ মেয়ের জন্য। আহান এতটাই রেগে যায় যা ওর নিয়েছে নিয়ন্ত্রনের বাহিরে। নিজের রাগকে কিন্ট্রোলে আনার জন্য দেয়ালে সজোরে ঘুসি মারে। দেয়ালে ঘুসির দেওয়ার ফলে বিকট আওয়াজের সৃষ্টি হয়। ইয়ানা তারা এমন বিকট আওয়াজ পেয়ে সেখানে তাকায়। ইয়ানা তাকাতেই আহানকে দেখে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পড়ে। আহানের হাত থেকে অনর্গল চামরা ফেটা রক্ত বের হচ্ছে। ইয়ানা তারাতারি করে আহানের কাছে গিয়ে অধৈর্য গলায় বলে,,,,,,
“” দেখি হাতটা দিন। এত রাগ কেনো আপনার কিছু হলেই নিজেকে নিজে রক্তাক্ত করে ফেলেন। ইসস কিভাবে রক্ত পড়ছে দেখি হাতটা।””
ইয়ানা হাত ধরতেই আহান জারা মেরে ফেলে দেয়। এরপর ইয়ানার দিকে রেগে একপলক তাকিয়ে বড় বড় পা ফেলে নিজের রুমে চলে যায়। আর এই দিকে ইয়ানা হতাশ চোখে আহানের যাওয়ার পানে চেয়ে থাকে।
আহিয়া—- দাদাভাই এইভাবে রেগে গেলো কেনো বউমনি?
ইয়ানা — জানি না আহিয়া।
ইয়ানা বুঝতে পেরেছে রাতের রাগ আর আজ রেশবের সাথে কথা বলেছি সব এক সাথে নিজের উপর মিটিয়েছে। কিন্ত এইটা তাদের বলার প্রয়োজন নেই। দাদুমনি অসুস্থ শুধু শুধু চিন্তা করবে।
ইয়ানা কারোর সাথে কোনো কথা না বলে সোজা বাগানে চলে যায়। প্রকৃতি হাওয়া গায়ে লাগলে হয়ত মনটা ভালো লাগবে।
অনেক্ষন পর ইয়ানা বাগান থেকে রুমে যায়। মনটা এখন একটু ফুরফুরা লাগছে। ইয়ানা ভেবেছে হয়ত আহান চলে গিয়েছে। তাই সে আপন মনে গুন গুন করে গান গাইতে শুরু করে,,,,,
~ না রাখা কিছু কথা…
~সময়ের ঝড়া পাতা……..
~ দিয়ে যায় শুধু বুকে ব্যাথা…..
~থেমে যাওয়া সেই গানে…..
~জমে থাকা সেই অভিমানে……
~বৃষ্টি থামে না দুটি চোখে….
~ এ মন কাঁদেরে কাঁদেরে, স্মৃতি মুছে না…..
ওও
~আয়না মন ভাঙ্গা আয়না…
~যায়না ব্যাথা ভুলা যায় না..
~সয়না এই ব্যাথা যে সয় না..
ইয়ানা গুন গুন করতে করতে সামনের দিকে তাকায় দেখে আহান ল্যাপটপ নিয়ে ভিবানে বসছে। আহানকে দেখে ইয়ানা গান বন্ধ করে দেয়। সে নিজে বিছানায় বসে ফুল সাউন্ড দিয়ে গান লাগিয়ে দেয়।
আহানের কানে গান আসতেই ইয়ানার দিকে কটমট চোখে তাকায়। ইয়ানা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গান শুনতে থাকে। গান শুনা ইয়ানার আসল উদ্দেশ্য নয় উদ্দেশ্য হলো আহানকে বিরক্ত করা। দেখি ওনি কতক্ষন আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারে। ইয়ানা গানের স্প্রিড আর ও বাড়িয়ে দেয়।
আহানের ইচ্ছে করছে ইয়ানাকে মাথায় তুলে আছাড় মারতে। এখানে গুরুত্বপূর্ন কাজ করছি আর এই মেয়ে মনের আনন্দে গান শুনছে। কিসের এত আনন্দ এই মেয়ের। একটু আগে গুন গুন করে গান গাইছিলো আর এখন গান লাগিয়ে ফুর্তি করছে।
আহান এইবার ধমক দিয়ে বলে,,,,
“” সমস্যা কি তোমার দেখছ না কাজ করছি। এত জোরে সাউন্ড দিয়েছো কেনো ইডিয়েট। এত আনন্দ কিসের ওই রেশবের সাথে কথা বলে। অন্যদিন তো কখনো গান শুনতে দেখি নি। আর একবার যদি গানের শব্দ আসে তাহলে কি করব আমি নিজে ও জানি না। মেজাজ এমনি তে ও ভালো না। “”
আহানের ঠান্ডা হুমকিতে ইয়ানা চুপসে যায়। কথা বলবে না কিন্তু ধমক দেওয়া ছাড়বে না ডেবিল একটা। ইয়ানা বির বির করতে করতে গান বন্ধ করে দেয়। ঠিক তখন ওই মাথায় আরেকটি শয়তানি বুদ্ধি আসে। ইয়ানা হালকা কাশি দিয়ে মিছে মিছি মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” এক বছরের সংসার এক নব দম্পত্তির। ছেলেটি মেয়েটাকে খুব ভালোবাসত। এক দিন কথা না বলে থাকতে পারত না। হঠাৎ ছেলেটির মধ্যে মেয়েটি পরিবর্তন লক্ষ করে। ছেলেটি এখন আর মেয়েটির সাথে কথা বলে না। যেই ছেলে এক মুহূর্তে মেয়েটিকে ছাড়া থাকতে পারত না এখন সে মেয়েটিকে কেয়ার ও করে না। সেজন্য মেয়েটি ও ছেলেটি থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয়। এক রুমে থাকত ঠিক কিন্তু এক জন আরেক জনের সাথে কথা বলত না। তাই মেয়েটি এখন নিজের স্বামীকে ছাড়া আরেক জনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। নিজের স্বামীকে রেখে ওই ছেলের সাথে পালিয়ে যায়। এইদিকে মেয়েটির স্বামী বউয়ের শুখে পাগল হয়ে পাবনায় ভর্তি। আজকে বিকালের তাজা খবর খুলনা””
আহান ইয়ানার প্রত্যেকটা কথা কার্ণে শ্রবন করেছেন। সে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে এইগুলো আহানের উদ্দেশ্যে বলেছে। কিন্ত শেষে এইসব কি বলেছে। এই মেয়ে কি এইসব ভাবছে নাকি। এক রাতেই বউ পাল্টে গিয়েছে।
আহান রেগে ল্যাপটপ এর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” ওই ছেলে বউয়ের জন্য পাগল হয়ে পাবনায় ভর্তি হয়েছে আর আমার সাথে এমন ঘটলে আগে বউকে মেরে শেষ করব তারপর যা খুশি হবে। আমার বউ যদি অন্য পুরুষের দিকে তাকায় ও পর্যন্ত তাহলে চোখ গুলো তুলে আগে নর্দমায় ফেলব সেখানে পরপুরুষ কে মনে ধারন করাতো বিলাসিতা। আর কোনো ছেলের সাথে যদি ভুলক্রমে ও যায় তাহলে কি হবে বাকিটা আর আমার বউকে বুঝাতে হবে না। অগ্নি চৌধুরি নিজের জিনিস ধরে রাখতে ঠিক জানে।””
আহানের কথা শুনে ইয়ানা একটা মুচকি হাসি দেয়। ইয়ানা নিউজটা বানিয়ে বললে ও আহানের রিয়াকশন দেখে ইয়ানার খুব হাসি পাচ্ছে। কথা বলবে না কিন্ত থ্রেট দেওয়া বন্ধ করবে না।
ইয়ানা শ্বাস ছেড়ে বলে,,,,,
আমি কাউকে ভুলে যেতে শিখিনি, হয়তো ভালোবাসব নয়তো চুপ করে থাকব।ইয়ানা আর যাই করুক বেইমানি করতে শিখে নি। ”
ইয়ানার কথার মাঝেই দরজা ধ্বাকা দেওয়ার শব্দ আসে। ইয়ানা আহানের দিকে এক পলক তাকিয়ে দরজা খুলে দেয়।
আহিয়া —- বউমনিইইইইই সুমু আপুইইই, আর আরু আপুইই এসেছে। সাথে রায়ান ভাইয়া ও এসেছে।
ইয়ানার মুখে হাসি ফুটে উঠে। ইয়ানা আর এক মুহূর্ত ও না দাঁড়িয়ে চলে যায় নিচে। খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে।
ইয়ানা সুমু আর আরুকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,
“” কেমন আছিস তোরা?”
সুমু — আলহামদুলিল্লাহ। তুই?
ইয়ানা — এই তো আলহামদুলিল্লাহ।
আরু— ইয়ানা তুই এইভাবে শুকিয়ে গিয়েছিস কেনো?
ইয়ানা — ভালো লাগে না তাই। আচ্ছা বাদ দে আয়াত, রুহানদের ও নিয়ে আসতি। কতদিন ধরে দেখি না।
আরু — তুই নাকি ভার্সিটিতে যাবি নাকি কাল থেকে। তাই তারা আসে নি। আমি ও জানতাম না আমাকে সকালে সুমু ফোন ফোন দিয়ে জানিয়েছে আসার জন্য। আমার বাসা তো কাছেই তাই চলে আসলাম।
রায়ান — আমাকে কি কারোর চোখে পড়ছে না। আমি ও কিন্তু এসেছি।
ইয়ানা হাসি দিয়ে বলে,,,,
“” ওহহ ভাইয়া ওদের সাথে কথা বলতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়েছি। কেমন আছেন ভাইয়া? “”
রায়ান — আলহামদুলিল্লাহ বউ নিয়ে ভালো আছি। আর কিছু জিজ্ঞাসা করব না পরে আহান এসে বলবে আমার বউয়ের সাথে এত কথা বলতে কে বলেছে তোকে? তোমরা থাক আমি আহানের কাছে যায়। তোমাদের কাছে থাকলে আমার মাথা হ্যাং মারবে।
ইয়ানা রায়ানের কথা শুনে মুচকি হাসি দেয়। রায়ান আহানের কাছে চলে যায়।
আরু — তোদের পুরো বাড়ি দেখার আমার খুব ইচ্ছে বইন।
আহিয়া — তাহলে চল আপু তোমাকে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখায়।
আরু— হ্যা হ্যা চলো। অন্য কোথাও নয় শুধু বাগান দেখব। ফুল খুব পছন্দ আমার।
আরু চলে যায় আহিয়ার সাথে বাগানে।
আরু —- ওয়াও আহিয়া তোমাদের বাগানে তো অনেক ফুল। তোমরা ফুল খুব পছন্দ করো তাই না?
আহিয়া হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” আসলে ফুল আব্বু খুব পছন্দ করতেন। এইটা আব্বুর বাগান ছিলো কিন্তু কাজের চাপে আর বাগানে আসার সময় পায় না। এরপর থেকে দাদাভাই দেখা শুনা করা শুরু করে। দাদাভাই ও গর্ডেন খুব পছন্দ করে। দাদাভাইয়ের বুদ্ধিতেই সমস্ত ফুল গাছ সাজানো হয়েছে””
আরু— আচ্ছা তাই বলো।
আরু কথা বলতে বলতে একটা প্রজাপতি দেখতে পায়।
আরু — আহিয়া একটু দাড়াও আমি আসছি।
এরপর আরু প্রজাপতিটাকে পিছু করতে করতে গাড়ি পার্কিং এরিয়াতে চলে আসে।
প্রজাপতিটাকে ধরতে যাবে তখন ওই শক্ত কিছু সাথে হোচট খেয়ে পড়ে।
রেশব ফোনে কথা বলছিলো গাড়িতে হেলান দিয়ে। কোনো মেয়েকে পড়ে যেতে দেখে তার কাছে এসে বলে,,,,
“” কি মেডাম সমতল জায়গায় কিভাবে পড়ে গেলেন?””
আরু রেশবের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন পরে পায়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে উঠে। রেশব আরুর কান্না শুনে নিজের কান চেপে ধরে। এইটা গলা নাকি মাইকরে বাবা। পড়ে যাওয়ার পর কান্না করে নি কিন্ত এখন কান্না করছে। কি মেয়েরে বাবা নির্ঘাত মাথায় সমস্যা আছে।
রেশব — আচ্ছা কান্না থামান। আমার হাতটা ধরে উঠার চেষ্টা করুন।
আরু রেশবের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের দিকে তাকিয়ে আর ও জোড়ে কান্না করে দেয়।
রেশব — আরে আজব তো এইভাবে বাচ্চাদের মত কান্না করছেন কেনো? বলছিতো আমার হাতটা ধরে উঠার চেষ্টা করুন।ব্যাথা লেগেছে বুঝতে পেরেছি তাই বলে এইভাবে কান্না করবেন?
আরু — আপনাকে কে বলেছে আমি ব্যাথার জন্য কান্না করছি? আমি তো ওই প্রজাপতির জন্য কান্না করছি।
এরপর আরু কোনো মতে উঠে যেই পাথরের সাথে উস্টা খেয়েছে এইটাকে হাতে তুলে বলে,,,,,
“” বালের পাথর তোর জন্য আমার শখের প্রজাপতি চলে গেলো তোকে আজ আমি মেরে শেষ করে ফেলব। আরু হাত থেকে পাথরটাকে ফিক্কা মারতে যাবে তখন রেশব চিৎকার দিয়ে বলে,,,,,
“” আসতে, আসতে মিস, পাথর জড় বস্তু ওদেরকে হাজার আছাড় দিলে ও মরবে না কারন তাদের এমনি তে ও জীবন নেই। আগে এইটা বলুল আপনি এখানে কি করছেন? পাবনা থেকে ভুল করে চৌধুরি ভিলায় চলে এসেছেন কি?
আরু এতক্ষনে রেশবের দিকে খেয়াল করে। একদম সাদা বিদেশীদের মত দেখতে। গালে চাপ দাড়ি ফলে সৌন্দর্য আর ও উপচে পরছে। উনি কি কোনো বিদেশী? সে যাই হোক উনি আমাকে কি বলেছে পাবনা থেকে এসেছি কি না? উনি কি কোনোভাবে পাগল বলতে চাইছেন?
আরু — নারে ধলা বিলাই আমি পাবনা থেকে আসে নি। আমি আহান ভাইয়াদের বাসায় এসেছি কারন ইয়ানা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার বাড়ি পাবনা নয় ঢাকা।
রেশব — হুয়াট? ধলা বিলাই!
আরু — হ্যা ধলা বিলাই এমন ওইতো দেখা যাচ্ছে। সে যাই হোক আমি আখন আসি। আর আমাকে সাহায্য করতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
আহিয়া — ওও আরু আপু তুমি এখানে? আর আমি সব জায়গায় খুজছি।
আহিয়া রেশবকে দেখে বলে,,,,,
“” আপু তুমি ভাইয়ার সাথে কি করছো?””
আরু — তুমি ওনাকে চিনো?
আহিয়া — হ্যা আমার কাজিন। এতদিন বিদেশ ছিলো কয়েক মাস হয়েছে দেশে এসেছে।
আরু — আচ্ছা তাইতো বলি এত ধলা কেনো?
আহিয়া — হ্যা ভাইয়ার আব্বু বিদেশী আর আম্মু বাংলাদেশী তাই মিশ্রন।
রেশব তাদের কথা শুনে আহিয়াকে বলে,,,,,
অনুভবে তুমি পর্ব ৪৪
“” এই মেয়েকে পাবনায় ভর্তি করা। হাফ মেন্টাল মেয়ে একটা।
আরু বড় বড় চোখে রেশবের দিকে তাকায়। কিন্তু রেশব আরু কিছু বলার আগেই চলে যায়।