অনুভবে তুমি পর্ব ৭

অনুভবে তুমি পর্ব ৭
লিজা মনি

আকাশ, রুহান, আরুরা, ইয়ানা, সুমাইয়া,আয়াত এরা সবাই অপেক্ষা করছে আহানের জন্য। কিন্তু আহানের এখনো আসার নাম নেই।
আয়াত : আহান ভাইয়া আসবেতো।
আকাশ : আরে আসবে আসবে। আরেকটু অপেক্ষা করি।
আরুরা: এইতো আহান ভাইয়া আসছে।
আয়াত : ইসস কি heandsome দেখলেই হাজার বছর তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়।
আকাশ : থাক মানা করলো কে?
ঠিক তখনি আহান তাদের সামনে এসে দারিয়ে বলে,,,,কেমন আছো তোমরা?কি জন্য ডেকেছ বলো?
আয়াত : আসলে ভাইয়া একটা বাদরের খুজ করতে।
আহান : what! বাদরের খুজ করতে মানে?
সুমাইয়া এইবার বলে,,,, আসলে বাদর না ভাইয়া বাদর রূপী লেজবিহীন মানুষ। আসলে ইয়ানাকে খুব বিরক্ত করছে কয়েকদিন ধরে।

তাদের কথা শুনে আহান এইবার কাশতে শুরু করে। আহান ওই মনে হয় প্রথম ব্যক্তি যে কিনা নিজে দাড়িয়ে থেকে নিজের নামে এত প্রসংশা শুনছে।
আহানের কাশি দেখে ইয়ানা ব্যাগ থেকে পানি বের করে দেয়,,,
– এই নিন এইটা খেয়ে নিন।
আহান : না লাগবে না আমি ঠিক আছি। মনে হচ্ছে তোমরা দুপুরে কিছু খাওনি চলো একটা রেষ্টুরেন্টে যাওয়া যাক। তারপর ধীরে সুস্থে তোমাদের কথা শুনব।
আরুরা : না না ভাইয়া আমরা এইখানেই ঠিক আছি
আর তাছাড়া এখানে আমাদের ছোট বোন আসবে।
– আমি এসে গেছি আরু আপু।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আকাশ : এইতো এসে গেছে রুই মাছ। আসেন আপনার জন্যই অপেক্ষা করছি।
রুয়ানা এইবার আহানকে লক্ষ্য করে। মুখ আপনা আপনি হা হয়ে যায়। এত সুন্দর ছেলে ওর সামনে দারিয়ে আছে ভাবতেই খুশিতে আত্নহারা।
আরুরা রুয়ানার অবস্থা দেখে খুচা মেরে বলে,,,,,
“”রুই মাছ এইভাবে তাকাতে নেই বোন। উনি আহান ভাইয়া।””
রুয়ানা এইবার বুঝতে পারে তাহলে এই আহান ভাইয়া। সত্যি ছেলেটা অনেক স্মার্ট। রুয়ানা এবার নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,,,,
–আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া
আহান এতক্ষণ রুয়ানাকে পরখ করতে ব্যস্ত ছিল। কারন এই পিচ্চির প্রেমে যে তার বন্ধু পরেছে তা সে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে।

আহান রুয়ানার সালামের জবাব দিয়ে বলে,,,,
“দেখো রুয়ানা ও চলে এসেছে চলো এখন যাওয়া যাক। আমিও দুপুরে কিছু খাই নি”
আকাশ : কিন্তু ভাইয়া..
আহান : কোনো কিন্তু নয় চলো। ভাই বলে ডেকেছো আর ভাইয়ের সাথেই দ্বিধাবোধ করছো হুম।
আয়াত : ঠিক আছে ভাইয়া চলুন।
আহান একপলক ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,, চলো।
তারা একটি নামকরা রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করে। যে যার মত অর্ডার করে।
আহান : এইবার বলো কি বলছিলে।
আরুরা : আসলে ভাইয়া আমরা অগ্নি চৌধুরির সাথে দেখা করতে চাই।
আহান কিছুটা ভ্রু কুচকে বলে,
-কেনো ?
ইয়ানা এইবার আহানকে সবকিছু খুলে বলে।
আহান সবকিছু শুনে বলে,,,,

– তোমাদের মনে হয় অগ্নি চৌধুরি তোমাদের এই সামান্য কাজে আসবে।
ইয়ানা : আপনার কাছে এইটা সামান্য হতে পারে মি, আহান চৌধুরি কিন্তু এইটা আমার কাছে অনেক। একটা মেয়েকে দিনের পর দিন মানসিক ভাবে টর্চার করছে।একটি মেয়ের ঠোঁটের ভার্জিনিটি কেড়ে নিয়েছে সেটাকে আপনার সামান্য মনে হয়। ইয়ানা রেগে গিয়ে কি বলে ফেলেছে সে বুঝতে পেরে নিজেই নিজের মুখ চেপে ধরে।কারন ইয়ানা সবকিছু বললে ও চুমু খাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলে নি ।
রুহান : বোন এই কথা আমাদের বলিসনি কেনো? ছেলেটা তাহলে রুমান্টিক আছে তাই না।
আহান : ঠোঁটের যে ভার্জিনিটি হয় জানতাম নাতো।

ইয়ানা : জা… জানতেন না এখন জেনে নিন। প্লিজ ভাইয়া অগ্নি চৌধুরির সাথে দেখা করিয়ে দিন।
ইয়ানার মুখে ভাইয়া ডক শুনে আহানের যেনো রাগটা বেড়ে যায়। সে এইখানে থাকলে নির্ঘাত কিছু করে বসবে।
আহান : ঠিক আছে তোমরা কাল এসো। আমি এখন যায়।
এই বলে আহান বিল মিটিয়ে এইখান থেকে চলে গেল।
রুয়ানা : গেলরে গেলো আমার দুই মিনিটে ক্রাস খাওয়া ছেলেটা চলে গেলো।
আয়াত : চুপ কর ছেরি আমাদের ওই এখনো বিয়ে হয় নাই। ক্রাস নামক বাশ খাওয়ার দরকার নাই পরে খাইস।
ইয়ানা : কি হলো আকাশ তোকে আজ অন্যরকম লাগছে কিছু কি হয়েছে।
আরু: আমি ও দেখছি আসছি পর থেকে কেমন একটা অন্যমনষ্ক।

আকাশ: কাল অবনি আমাকে বলেছিলে যদি সত্যি আমি তাকে ভালোবাসি তাহলে আমি যেনো হাত কেটে ওর নাম লিখি। তারপর আমি একটা মোরগ কিনে নিয়ে যায় বাজার থেকে সেই মুরগের রক্ত দিয়ে ওর নাম লিখে ওকে দেখায়। ও ভেবেছিল সত্যি সত্যি আমি নিজের হাত কেটে ওর নাম লিখেছি ও আমাকে বকতে শুরু করে সারা রাত কান্না করে। ও ভেবেছে ওর এই মজার জন্য আমি নিজেকে কষ্ট দিয়েছি। ও সকালে আমাদের বাসায় যায় গিয়ে দেখে আমি ঘুমে তারপর আমাকে ডেকে তোলে। আমার হাত দেখে ও আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে,,,, ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে বুঝতে পারি আসল কাহিনী।

অবনি: কাল যে হাত কেটে ছিলে কাটাচিহ্ন কোথায় আকাশ। তারমানে তুমি আমার সাথে মিথ্যে বলেছো। সম্পর্ক শুরুর আগেই মিথ্যে। আমি যাস্ট মাজা করে বলেছিলাম তাই বলে তুমি মিথ্যের আশ্রয় নিবে।
এই বলে অবনি আমাকে কিছু বলার সোজোগ না দিয়েই বেরিয়ে গেলে।
আম্মু পিছনে ডক দিলে ও বলে ,,,
– তোমাদের বাড়িতে আর আসব না ফুপি । আমার জন্য কাওকে মিথ্যে বলতে হবে না আর। পরে আম্মু এসে আমাকে সাশায় ।

এখন আমি ফোন দিলে ফোন ধরছে না । এসএমএস এর রিপ্লাই দিচ্ছে না। এখন কি করব আমি।
[ আকাশ অবনির ফুফাতো ভাই। তারা একটানা ৩ বছর ধরে রিলেশনে আছে। একসময় বাড়ির সবাই জনাজানি হয়। আকাশের পড়া শেষ হলেই তাদের বিয়ে। এখন গল্পে আসা যাক]
আকাশের কথা শুনে সবাই উচ্চস্বরে হেসে দেয়।
ইয়ানা : মানে কি আকাশ হাত কাটার কথা বলেছিল বলে তুই মুরগির রক্ত দিয়ে নাম লিখেছিস ওহে রোমিও।
আকাশ : মজা নিচ্ছিস দেখ বইন কোনো উপাই বের করে দে। নয়তো আম্মুর হাতের বাঁশ খেতে হবে বাসায় গিয়ে ।
আম্মু বলেছে অবনিকে যেনো বাসায় নিয়ে তবে বাড়িতে ফিরি নইতো আমার জন্য বাড়ির দরজা বন্ধ।
আরুরা : তুই গিয়ে সামনাসামনি দেখা করে সরি বলে নে।
তাহলেইতো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর অবনি তোকে খুব ভালোবাসে তোর মিথ্যটাও সহ্য করতে পারেনি। তুই গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নে। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আকাশ : ঠিক বলেছিস। তোরা বস আমি যাই আমার রানির রাগ ভাংগাতে। আকশের যাওয়া দেখে সবাই আবার ও হেসে উঠে।

আরুরা : এই ইয়ানা একটা ঘটনা শুনেছিস। তোকে ওইদিন কয়েকটা ছেলে বিরক্ত করেছিল তাদের অর্ধেক হওয়া লাশ পাওয়া গেছে। খুবই নৃশ্বংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের। দেখলেই ভয়ে আত্না কেপে উঠে।
ইয়ানা : কি বলিস ওদের আবার কে মারবে। আচ্ছা ওই সাইকোটা নাতো। আ… আমাকে একবার বলেছিল যদি কোনো ছেলে আমার দিকে চোখ তোলেও তাকায় তাহলে তাদের এমন অবস্থা করবে যা দেখলে যে কারোর গা শিউরে উঠবে। আমার না খুব ভয় করছে আকাশ রুহানের কিছু করবে নাতো । কারন তারা ও তো ছেলে। ভয়ে যেনো ইয়ানার গলা শুকিয়ে আসছে।
রুহান : আরে না আমার আর আকাশের কোনো ক্ষতি করবে না। যদি করার হতো তাহলে অনেক আগেই করতো। আর তোকে আমাদের থেকে দুরে থাকার কোনো হুমকি ও দেয় নি। তাহলে আমাদের কিছু করবে না।
ইয়ানা : এখন আমার বাড়ি যাওয়া দরকার।কারন আজ আম্মু নানো বাড়ি থেকে চলে আসবে।
রুয়ানা : হুম আপু চলো।
এই বলে যে যার মত আতংক নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়।

আহান নিজের অফিসে ঘম্ভির হয়ে বসে আছে। তার সামনে uv, রায়ান আর আরিফ বিগত আধঘন্টা ধরে দারিয়ে আছে।
ইউভি এইবার কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,
“সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি । আমাদের মতো নিষ্পাপ ছেলেগুলোর উপর একটু দয়া করে কি বলবি বলে ফেল।”
আহান এইবার বসা থেকে উঠে একটু গম্ভিরতা রেখে বলে ,,,
-আমাকে দেখে কি বাদরের মতো মনে হয়।
সবাই যেন ভিমরি খাওয়ার মতো অবস্থা।
আরিফ: কি বলছেন এইসব ভাই, আপনি বাদরের মতো হতে যাবেন কেনো বাদররা খুবই প্রান স্বচ্ছল। আর আপনি সারাদিনে একবার হাসেন কিনা সন্দেহ আছে। আপনি বাদরের মতো হতেই পারেন না। আপনার সাথে বাদরের তুলনা করলে বেচারা বাদরদের অপমান করা হবে ভাই।
আহান আরিফের দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকায়।

রায়ান আরিফকে খুচা দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,, অকালে প্রান হারাবার ইচ্ছে আছে নাকি।
রায়ান : হাঠাৎ তুই আমাদের এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিস কেনো। আর তোকে বাদরের মতো মনে হয় এই কথা কে বলেছে শুনি একটু। না মানে সে কি এখনো জিবীত আছে।
আহান দাতে দাত চেপে বলে,,, যেই প্রস্ন করেছি সেইটা উত্তর দে। অতিরিক্ত কথা বলতে কে বলেছে।
ইউভি : রিলাক্স ব্রো, তুই বাদরের মতো হবি কেন। তুই যদি বাদরের মতো হতি তাহলে কি সবার ক্রাস বয় হতি। আর এই কথা কে বলছে একটু বলবি আমার না খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
আহান : কেউ বলেনি এমনি জিজ্ঞাসা করেছি তোরা এইবার আসতে পারিস।
আর আরিফ কাল কয়েকজন ছেলে মেয়ে আসবে তাদের যাতে আসতে কোনোরকম অসুবিধে না হয়।
সবাই সবার দিকে তাকিয়ে রায়ান বলে উঠে,,,

– কে আসবে দোস্ত কোনো বিজন্যাস পার্টনার নাকি।
আহান : কাল আসলেই দেখতে পাবি। এখন বের হ আমার রুম থেকে।
আর আরিফ মনে থাকবেতো।
আরিফ : জি….. জি ভাই একদম মনে থাকবে।
আহান : good.

সুমাইয়া রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনি দেখে একটা ছেলে একটা মেয়ের উরনা নিয়ে টানাটানি করছে। এইসব দেখে যেন সুমাইয়ার একটা কালো অতীত মনে পরে যায়। সে নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে ছেলেটিকে না দেখেই রেগে ছেলেটার গালে ঠাস করে থাপ্পর বসিয়ে দেয়।
ছেলেটা এইবার রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে হুংকার দিয়ে বলে উঠে,,,, এই মেয়ে সাহস কি করে হয় আমার গায়ে হাত তোলার।
সুমাইয়া এইবার ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,, রায়ান আপনি। আপনি তো আহান ভাইয়ার ফ্রেন্ড। কি করে আপনি রাস্তার একটা একটি মেয়েকে উত্যক্ত করতে পারেন ছিহহ। আমারতো ভাবতেই ঘৃনা হচ্ছে।
রায়ান নিজের রাগকে কন্ট্রোল করার জন্য চোখ বন্ধ করে বলে,

– থেমে যাও মেয়ে বাড়াবাড়ি করো না। যা জানোনা তা নিয়ে কথা বলো না। আজ একটা মেয়ে বলে এখনো অক্ষত আছো না হলে এখানে লাশ পরতো।
সুমাইয়া : হুমকি দেন আমাকে। এইসব প্রতিকূলতা থেকে আমি পার হয়ে এসেছি মি,রায়ান। সম্মান হারানো কি সেটা আপনি কি করে বুঝবেন। আপনারাতো শুধু পারেন সম্মান নিতে।
রায়ান : থেমে যাও মেয়ে। না হলে ভালো হবে না।
সুমাইয়া : কি করবেন হ্যা। আপনারা…..
মেয়েটি : আরে আপু আপনি উনার সাথে এমন করছেন কেনো ?উনি যদি না থকত তাহলে জানি না বখাটেগুলো আমার কি করতো।

সুমাইয়া : মানে! উনি তোমাকে কিছু করেনি। দেখো ভয় পেয়ে কিছু লুকাবে না।
মেয়েটি : না আপু উনি কিছু করেননি। আমি যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন কয়েকজন বখাটে এসে বিরক্ত করছিল । এক পর্যায়ে একজন এসে আমার উড়না টান মেরে নিচে ফেলে দেয়। আর তখনি এই ভাইয়াটা এসে আমাকে বাঁচায় আর গুন্ডাগুলোকে মেরে পুলিশে দিয়ে দেয়।
সুমাইয়া : আমি যে দেখলাম উনি তোমার উড়না ধরে রেখেছিলেন তাহলে।
মেয়েটি : উনি আমার উড়না ধরেননি। মাটি থেকে তোলে আমার গায়ে জড়িয়ে দেন।
সুমাইয়া এইবার আস্তে করে রায়ানের দিকে তাকায় দেখে এখনো হাত মুষ্টি করে চোখ বন্ধ করে রেখেছে হয়ত রাগ কন্ট্রোল করছে।

সুমাইয়া : আ..আসলে আমি বুঝতে পারেনি। আমি দুঃখিত।আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
রায়ান এইবার সুমাইয়ার দিকে তাকায়। সুমাইয়া রায়ানের চোখ দেখে থমকে যাই।চোখ রাগে অসম্ভব লাল হয়ে রয়েছে।
রায়ান : সরি মাই ফুট । আজ মেয়ে বলে বেঁচে গেলে। না হলে বুঝিয়ে দিতাম আরসানাল রায়ানের গায়ে বিনা কারনে হাত তোলার ফল।
এই বলে রায়ান নিজের গাড়িতে উঠে চলে যায়। আর এইদিকে সুমাইয়া হতাশ হয়ে তাকিয়ে থাকে।

প্লিজ স্টপ অবনি। দাড়াও বলছি। দেখো এখন যদি না দাড়াও যেটা করেনি এখন তা কিন্তু করবো।
অবনি নিজের মতো করে একমনে হেটেঁ চলছে। হঠাৎ করে পা থমকে যায় কারোর চিৎকারে । সে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আকাশ ছুরি দিয়ে নিজের হাতে পরপর আকঁ টানছে।
অবনি এইবার আকাশের কাছে গিয়ে হাত ধরে কান্না করতে করতে বলে,
– পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি। কি করছিলে এইট।
ইসস কতোখানি কেটে গেছে। তোমাকে এখন কি করতে ইচ্ছে করছে আমি নিজে ও জানি না।
আকাশ : কি করবো তোমাকে কখন থেকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছনা কেনো? তুমিতো জানো তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারি না।
অবনি : হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। মিথ্যে বলেছিলে বলে মনে ছিলনা। এই নাও ড্রেসিং করা হয়ে গেছে। ভাজ্ঞিস ব্যাগে ফার্স্ট বক্স ছিল,,,,, চলো এইবার।
আকাশ এইবার অবনির হাতে হেচকা টান দিয়ে উরুর উপর বসিয়ে দিয়ে পেট আকড়ে ধরে। অবনি যেন বরফের মত জমে যায়।

– সরি সোনা। আর মিথ্যে বলবো না। এইযে কান ধরছি প্লিজ ক্ষমা করে দাও।
অবনি : কি…. কি করছ কি আকাশ এইটা আমার কলেজ । ছারো কেউ দেখে নিলে সমস্যা হবে।
আকাশ : দেখলে দেখুক কি যায় আসে আমি আমার হবু বউকে ধরে রেখেছি কার বাপের কি। আগে বলো আমায় ক্ষমা করেছো কি না।
অবনি : ইসস এখনো বউ হয়নি এখনো অসভ্য ছারো বলছি। আর ক্ষমা করেছি কিনা ভেবে দেখবো।
আকাশ : তাই।
অবনি : হুম
আকাশ : ঠিক আছে তাহলে আমি আমার কাজ করি কি বলো।
অবনি : কি….. কি করবে। কি হলো এইভাবে সামনে এগুচ্ছো কেনো।
আকাশ : উহুম ডিস্টার্ব করোনা এখন বউকে চুমু খাবো। কারন বউ রেগে আছে আগে বউয়ের রাগ ভাংগাতে হবে।
অবনি: নাহহহহ! আমি তোমায় ক্ষমা করে দিয়েছি। ছারো এইবার আমায়।
আকাশ : এইতো গুড গার্ল। যাও ছেরে দিলাম। তবে আজকের দিনটা একদিন পুষিয়ে নিবো।
অবনি : দেখা যাবে । চলো এইবার।
আকাশ : হুম চলো।

ইয়ানা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন কিন্তু মনে হচ্ছে ওর শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। ঠোঁটের চুমুগুলো কামড়ে পরিনত হচ্ছে।একসময় মনে হলো ঠোঁটে কেউ কামরাচ্ছে।ইয়ানা এইবার হঠাৎ চোখ তুলে তাকায়। হুট করে ছেলেটির হাত চেপে ধরে বলে,,,,
–কে আপনি । আমার রুমে কি আপনার। ছেলেটি এইটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সে নিজেকে কোনো কোনো রকম ছাড়িয়ে বেল্কনি দিয়ে নেমে চলে যায়।
ছেলেটির সাথে ধস্তাধস্তি করেও কোনো লাভ হয়নি। আজ ও দেখতে পারলোনা ছেলেটাকে। হঠাৎ ইয়ানা নিজের হাতে খেয়াল করে দেখে হাতে রক্ত লেগে আছে।

তারমানে দস্তাদস্তির জন্য ছেলেটির হাতে খামচি লেগেছে। শালা উগান্ডা কে তো কিছু করতেই পারছি না যাক একটু ব্যথা দিতে পারছি। কিন্তু আজও মুখটা দেখতে পারলাম না ধুর।
একটু পরে ইয়ানার মোবাইলে একটা এসএমএস আসে,,,
– কাজটা তুমি ঠিক করলে না বেবি। তোমায় জাস্ট একটু দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমার কাজে বাধা দিয়ে দিলে। অতিরিক্ত ছটফটে তুমি। তবে তোমার ঠোঁটগুলো মাশআল্লাহ।
ইয়ানা এসএমএস পরে কান্না করে দেয়।

অনুভবে তুমি পর্ব ৬

– শালা লেজবিহীন হাতি , লুচ্চা, বদমাইশ, খাডাস , তরে যদি আমি সামনে পাই তাহলে যদি নর্দমায় না চুবাইছি তাহলে আমার নামও ইয়ানা নয়।
এসএম এস : আমাকে গালি দেওয়া যদি হয়ে থাকে তাহলে ঘুমিয়ে পড়ো। যদি আর দুই মিনিটও দেখি বসে রয়েছো তাহলে আমি আমার অসমাপ্ত কাজ গিয়ে সমাপ্ত করে দিয়ে আসবো। আর হ্যাঁ ছেলেদের থেকে দূরে থাকবা।
আহানের এই এসএমএস পড়তে দেরি কিন্তু ইয়ানার শুতে দেরি হয়নি।
ইয়ানার কাণ্ড দেখে আহান উচ্চস্বরে হেসে ওঠে।

অনুভবে তুমি পর্ব ৮