অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ২৮
লিজা মনি
অগ্নি দরজার সামনে যেতেই দেখে সবগুলো গার্ড মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অগ্নিকে দেখতে পেয়ে কাজের আন্টি বলে,,,,,,
” আপনি চলে যাওয়ার পর থেকে খাবার খাওয়ার জন্য জোর করছি কিন্তু একটা দানা ও মুখে তুলে না। এইভাবে চলতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
কথাটা শুনে অগ্নি চোয়াল শক্ত করে ফেলে।অগ্নি রুমের ভিতরে নত হয়ে থাকা ইয়ানার দিকে তাকায়। যে এই মুহূর্তে চাদর খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। সে অগ্নির উপস্থিতি টের পেয়ে জড়োসরো হয়ে বসে। অগ্নি গার্ডের হাত থেকে খাবারের প্লেট নিয়ে রুম ডুকে। এরপর দরজা লাগিয়ে ইয়ানার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে। চেয়ারে বসার পর ইয়ানার দিকে তাকায়। কপাল রাগে ভাঁজ করে রাখা। ইয়ানা অগ্নির অস্তিত্ব টের পেয়ে এক কোণে বসে। ঠোঁটগুলো শুকনো হয়ে আছে, চোখ ফোলে গিয়েছে, দুই গালে আঙ্গুলের ছাপ স্পষ্ট।
অগ্নি ইয়ানাকে পর্যবেক্ষন করে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,,,,,
” গোটা একটা দিন চলে যাচ্ছে একটা দানাও মুখে তুলো নি। মারতে চাও আমাকে নিজেকে দুর্বল করে দিয়ে। যেনো গিয়াছো আমার দুর্বলতা তাই না? তাকাও আমার দিকে ইয়ানা।
ইয়ানা তাকায় না। খাটের পাশে আর ও চেপে বসে। ইয়ানার এমন কাহিনী দেখে অগ্নি ভয়াভহ আর ধীর কন্ঠে বলে,,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” ইয়ানা তুমি জানো আমার নিয়ন্ত্রন নেই। কতদিন না খেয়ে থাকবে। কতদিন নিজেকে শেষ করবে বলোতো?ঘৃনা করো ঠিক আছে সেটা তো আমাকে তাহলে খাবার তোমাকে কি করেছে? আমার কাছে এসো।
অগ্নি চেয়ার থেকে উঠে ইয়ানাকে ধরতে যাবে এমন সময় ইয়ানা ছিটকে দুরে সরে যায়। এরপর অগ্নির দিকে তাকায় অশ্রু নয়নে। তার কন্ঠ কাঁপছে কিন্তু চোখে আগুন নিয়ে বলে,,,,,
” আপনি কে হ্যা আমার খাওয়া না খাওয়ার হিসেব রাখার? জীবনটা আমার আর শরীরটাও আমার তাই আমাকে আমার মত করে ছেড়ে দিন। আর আমাকে আপনার এই অপবিত্র হাত দিয়ে ভুলেও স্পর্শ করতে আসবেন না।
অগ্নি নিজের রাগকে আর দমিয়ে রাখতে পারলো না। ইয়ানার কটু কথা ওর সর্বাঙ্গ জ্বলে উঠে। হাতে থাকা খাবারের থালাটা এক ধাক্কায় ফেলে দিয়ে ইয়ানার চিবুক চেপে ধরে বলে,,,,,
” মেরে ফেলতি চাস আমাকে? তুই ছুরির আঘাত কর আমি বুক পেতে রাখব। তুই আমার শরীরে এসিড ডেলে দে আমি তর কাছে সর্বাঙ্গ সপে দিব কিন্তু খবরদার তিক্ত কথা দিয়ে আমাকে তিলে তিলে মারিস না। এইসব কথা আমার কাছে ধারালো তীর, ছুরির আঘাত থেকেও কষ্ট দেয়। আর তর শরীর? তুই ভুলে যাচ্ছিস আমি সেই ব্যক্তি যাকে তুমি বিছানায় স্বামী বলে গ্রহন করেছিস। তখন আমার ছোঁয়া পবিত্র ছিলো আর এখন ঘৃনা হচ্ছে? হ্যাঁ? এতটা তিক্ততা আর বিষাক্ত অনুভুতি জন্মাতে কেনো দিলি? এই তর ভালোবাসা আর তর পাগলামো?বল?
ইয়ানা নাক মুখ খিঁচে রেখেছে। অগ্নির শক্ত হাতে ধরে রেখেছে চিবুক ফলে তখনকার ব্যাথতুর জায়গা টনটন করছে বাজেভাবে। কিন্তু তবুও নিজের ব্যাথাকে উপেক্ষা করে শক্ত চোখে বলে,,,,,
” পবিত্র ছিলো কারন আমি জানতাম না আপনি প্রতিনিয়ত রক্ত দিয়ে হাত ধৌত করেন। তখন জানতাম না আপনি কারোর কলিজা টেনে নিয়ে আসেন। তখন জানতাম না আপনি একটা মানুষরুপী….
অগ্নি ঠান্ডা চাহনিতে বলে,,,,,
” কি?
ইয়ানা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
” নরপশু, জানোয়ার।
অগ্নি ইয়ানাকে ছেড়ে দেই। হয়ত রাগ কমানোর জন্য স্তব্দ হয়ে বসে।এরপর পুনরায় চেয়ারে বসে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” এইসব সত্যি শুনে আমি অভ্যস্ত কিন্তু তোমার মুখে শুনে একটু ভিতরে জ্বালা করছে এইটুই।
এরপর অগ্নি দরজা খুলে একটা মেয়েকে আদেশ করে পুনরায় খাবার দিয়ে যাওয়ার জন্য। কিছুক্ষনের মধ্যে মেয়েটা খাবার নিয়ে আসে। অগ্নি খাবারের থালাটা হাতে নিয়ে টেবিলের উপর বসে। এরপর ধীর পায়ে বিছানায় গিয়ে আচমকা ইয়ানাকে হেচকা টানে নিজের উড়ুর উপর বসিয়ে বাহুবন্ধী করে ফেলে। অগ্নির আলিঙ্গন পেয়ে ইয়ানা ছুটার জন্য ছটফট শুরু করে। ইয়ানা দাঁতে দাঁত চেপে তেজ দেখিয়ে বলে,,,,,,
” ছাড়ুন আমাকে। আপনার সান্নিধ্যে আমার শরীর ঘিনঘিন করছে।
অগ্নি রাগে থালাটা শক্ত করে চেপে ধরে। কিন্তু মুখে হাসি দিয়ে বলে,,,,,,,
” কানাডার সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড “persons of interest ”
এর পারফিউম আমি ইউস করি জান।তাতেও যদি তোমার শরীর ঘিনঘিন করে তাহলে আমার পারফিউম চেইঞ্জ করতে হবে। বলো বউ বলো কোন পারফিউম দিলে তোমার আর এমন লাগবে না?
অগ্নির কথা শুনে ইয়ানা আর ও রেগে যায়। অগ্নির থেকে ছুটাছুটি করে সে ক্লান্ত। রাত থেকে মানসিক যন্ত্রনা আর কান্না, তার উপর এক গ্লাস পানি ও খায় নি তাই কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ইয়ানা শান্ত হয়ে বলে,,,,,,
” আগে নিজেকে পরিবর্তন করুন তখন আর পারফিউম লাগবে না।
অগ্নি এক চামচ খাবার তুলে ইয়ানার মুখের সামনে ধরে কিন্তু ইয়ানা মুখ সরিয়ে নিয়ে বলে,,,,
” খাব না আপনার হাতে আপনার এই পাপের টাকায়।
অগ্নি এক হাতে ইয়ানার থুতনি চেপে ধরে জোর করে মুখ খোলায় এরপর জোড় করে চামচটা ঠোঁটের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। ইয়ানা খুলার জন্য জুড়াজুড়ি করতেই অগ্নি হুমকি দিয়ে বলে,,,,,,
” ইউ নো ইয়ানা আমি যেটা স্বাভাবিকভাবে না পাই সেটা জোর করতে জানি। খবরদার যদি একটা দানা ও পড়েছে তাহলে আজ সারারাত ছাড় পাবে না। যদি খাবার বের করে ফেলো তাহলে সারারাত রাজত্ব চালাব আমার দখলে নিয়ে। তাই এলার্ট দিচ্ছি চুপচাপ খেয়ে নাও আমাকে বাধ্য করো না।
ইয়ানা থমকে যায়। অশ্রু চোখে অগ্নির দিকে তাকায়। অগ্নি বাঁকা হাসি দিয়ে ইশারা করে গিলে ফেলতে। ইয়ানা স্তব্দ হয়ে যায়। অগ্নি দিচ্ছে আর ইয়ানা অনুভুতিহীনভাবে শুধু গিলে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে খাওয়া শেষে ইয়ানা উঠতে যাবে এমন সময় অগ্নি ইয়ানার ঠোঁটে শক্ত করে চুমু খেয়ে বলে,,,,,,
” রাগ করে যত এনার্জি শেষ করেছি এইগুলো আবার ফিরত নিলাম চুমুর মাধ্যমে। চুমু খেয়ে এখন শরীরে একটু এনার্জি এনার্জি ভাব এসেছে। নাহলে এনর্জি লসে তোমার মত নেতিয়ে পড়তাম।
ইয়ানা কটমট চোখে বলে,,,,,
” গিরগিটি রুপী মানুষ কখনো নেতিয়ে পড়ে না।
এরপর ইয়ানা ঠোঁট মুছতে থাকে। মনে হচ্ছে নোংরা কিছু ওর ঠোঁটে লেগেছে।
ইয়ানার অবস্থা দেখে অগ্নি বলে উঠে,,,,
” ঢং দেখলে মাঝে মাঝে নিজের ওই হাসি পাই। এইভাবে মুছার কি আছে? স্পর্শ বিলীন করতে চাও? এই যে তোমার গলায়, ঘারে, সর্বাঙ্গে এমন অনেক দাগ আছে ওইগুলো কিভাবে বিলীন করবে। প্রথমবার ছুঁই নি আমি তোমাকে তাই এমন করার কিছু নেই।
।সারাদিনে পেটে কিছু পড়াতে পেটে সামান্য চিনচিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছে আর শরীরটা দুর্বল হয়ে পড়ে। নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে বিছানায় গা এলিয়ে দেই কিন্তু ঘুম পাচ্ছে না মোটে ও। শুধু একরাশ অস্থিরতা কাজ করছে।
অগ্নির প্রশ্নের জবাব ও দেই নি। কেনো জানি দিতে ইচ্ছে করছে না।
অগ্নি হাতে একটা ঔষধ নিয়ে ইয়ানার সামনে ধরে বলে,,,,
” এইটা খেয়ে নাও পেট ব্যাথা করবে না। সারাদিন অনাহারে থাকাতে এমন হয়েছে।
ইয়ানা তাচ্ছিল্য হেসে বলে,,,,,,,
” যেখানে হৃদয়টাই ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে সেখানে এই সামান্য চিন চিন ব্যথা কি হবে।
অগ্নি — কি চাচ্ছো জোড় করে খাওয়াই। তোমাকে আমার হাতে খেতেই হবে! তুমি আমার স্ত্রী, আমার দায়িত্ব। খাবে না বললে আমি জোর করে খাওয়াবো। ভালোবেসে না পারলে ভয় দেখিয়ে!
ইয়ানা অগ্নির হাত থেকে পানির গ্লাসটা আর ঔষধটা নিয়ে নেই নিশ্বব্দে। এরপর খেয়ে চুপচাপ এক পাশ হয়ে শুইয়ে পড়ে। অগ্নি কিছু বলে না বের হয়ে যায় রুম থেকে। ইয়ানা ভয় পাচ্ছে তবুও নিজেকে শক্ত করে রেখেছে। কেনো জানি হঠাৎ করে জায়াগাটা বিষাক্ত লাগতে শুরু করেছে। ভিতরে এক তীব্র হাহাকার আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছে। কত সপ্ন ছিলো আমার অগ্নি চৌধুরি। আপনার সাথে ভালোবাসার প্রতিটা রাত কাটাব। প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা ঘন্টা আপনার সান্নিধ্যে আপনার চিন্তায় কাটাব। আপনার সন্তান নিজের গর্ভে ধারন করব। কেনো ভাঙলেন আমার এইসব সপ্ন? কেনো সবকিছু এক নিমিষেই চুরমার করে দিলেন? আপনার সান্নিধ্য এখন আর ভালোবাসা কাজ করে না। আমার হৃদয়ে তীব্র হাহাকার মিশ্রিত এক ভয় কাজ করে। কেনো এতটা ভয় ডুকালেন আমার হৃদয়ে? ইয়ানা বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে উঠে।
কানাডার এক বিলাশবহুল বাড়ি। চারদিকে মোমবাতির নরম আলো, দেয়ালে ছায়া নাচছে, আর ভেতরে বাজছে দূরবর্তী ভায়োলিনের বিষণ্ন সুর। চারদিকে ভিবিন্ন সাজসজ্জা রং আর আসবাবপত্র। দেয়ালে গাঢ় মখমলের কাপড় মোড়ানো যার উপর পুরনো যুদ্ধ ও রক্তক্ষয়ী শিল্পকর্ম টাঙ্গানো। সেই রুমের এক লেদারের চেয়ারে বসে আছে একটা মেয়ে। যার চোখে কালি, ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক, চলাফেরায় এক রাজরানির অহংকার। তবে তার ভেতরে আছে এক ক্ষত-বিক্ষত ভালোবাসা। যেটা গোল্ডেন অফ মাফিয়া গ্রুপের লিডার অগ্নি চৌধুরি ছাড়া কেউ পূরণ করতে পারবে না।
কিন্তু সেই পথে দাঁড়িয়ে অগ্মির হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে তার বউ।।
মেয়েটিরর হৃদয় পুড়ছে ঈর্ষায়।আর সে চায় তাকে সরিয়ে দিতে চিরতরে। তবে মেয়েটি জানে সে একা কিছুই পারবে না। কারন তার বউয়ের সামনে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা মাফিয়া লিডার অগ্নি চৌধুরি দাঁড়িয়ে আছে। তার কাছে সে একটা ক্ষুদ্র বালিকণা মাত্র। যাকে এক ফুঁ দিলেই মিলিয়ে যাবে। অগ্নি চৌধুরির মোকাবেলা করার জন্য দরকার একটা শক্ত হাত আর শক্ত খুঁটি। এমন একজনকে দরকার যার ঠান্ডা প্রতিশোধপিপাসা অগ্নি চৌধুরির ভালোবাসা ধ্বংস করতে পারে নিজে জায়গা করে নিতে পারে।
মেয়েটির মাথায় কেপ আর মুখে কালো মাক্স। সে সামনে থাকা ব্যক্তিটির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,
” অনেক কষ্টে তোমার ঠিকানা জোগার করেছি। যাক অবেশেষে কাউকে তো পেলাম যে অগ্নি চৌধুরির সাথে গোপনে লড়ছে। সাহস আছে তোমার বলতে হয়?
লোকটি অট্টহাসি দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায় এরপর মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,,
“” প্রশংসা শুনতে আমার ইন্টারেস্ট নেই। যে কাজে এসেছো সেটা বলো?
মেয়েটি বাঁকা হেসে বলে,,,,,,
” এত তাড়া কিসের আগে পরিচিত হয়ে নেই। উদ্দ্যেশ্য যেহেতু এক তাহলে একসাথেই হাঁটা উচিত।
ছেলেটি — জেনে নিশ্চয় এসেছো আমার সম্পর্কে। পরিচয় দিতে আমি পছন্দ করি না। প্রয়োজন হলে বাহির থেকে পরিচয় জেনে আসো।
মেয়েটি — ওকে মি, রায়হান। আপনার চৌদ্দগোষ্টির ফর্মূলা আমার জানা। এখন আসি আমার পরিচয়ে।আমি কানাডার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাদিক রহমানের মেয়ে ঝর্না রহমান। অবশ্য আমার ডেড এখন আর বেঁচে নেই। কোনো এক এক্সিডেন্টে মারা যায়। আমার ভাই দেখাশুনা করে সব কিছু। আর হ্যা আরেকটা পরিচয় আমি অগ্নি চৌধুরির আত্নীয় ও বটে। এখন আসি কাজ নিয়ে। তুমি চাও অগ্নি চৌধুরির ধ্বংস আর সেইম জিনিস আমিও চাই।
রায়হান ভ্রু কুচকে বলে,,,,,
“” রিজন? এমন ওত হতে পারে চালাকি করে এসেছো।
ঝর্না বিকৃতি হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
” ভালোবাসা কি জানো রায়হান? কখনো ভালোবেসেছো কাউকে? কিন্তু আমি বেসেছি ওই হিংস্র অগ্নি চৌধুরিকে। একদম মন প্রান দিয়ে ভালোবেসেছি। সেই ছোট থেকে ওকে নিয়ে সপ্ন বুনেছি এই হৃদয়ে। যেদিন জানতে পেরেছি ও এক মাফিয়া হিসেবে গড়ে উঠেছে। খারাপ পথে চলে গিয়েছে এরপর ও ভালোবেসেছি। ও আমাকে বলে না আমি সস্তা। অনেক ছেলের সাথে রাত কাটিয়েছি। কেনো কাটিয়েছি এক বার ও প্রশ্ন করে না। এর দেওয়া আঘাত ভুলতে বারে যেতাম কষ্ট ভুলার জন্য। নিজের হুসে থাকতাম না তখন তো ছেলেরা ভোগ করবেই। সামনে যদি এমন অচেতন নেশালো জিনিস পায় কে ছেড়ে দিবে? দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছি শুধু তার ভালোবাসার জন্য কিন্তু শেষে আমাকে ও কি দিলো এক বুক হতাশা। বিয়ে করে বউ তুলেছে ঘরে। তবুও আমি চেয়েছি ওকে বার বার। কিন্তু বার বার তাচ্ছিল্য আর অপমানের স্বীকার হতে হলো।
রায়হান — যাকে ভালোবাসো তাকে আঘাত করবে কিভাবে? পরে মাঝ রাস্তায় ফিরে এসে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ধান্দা।
ঝর্না চোখের পানি মুছে বলে,,,,,,
” আমার কিছু চাই না। আমি শুধু চাই ওদের বিচ্ছেদ। আর ওর স্ত্রীর কিছু হলে অগ্নি ভেঙ্গে পড়বে। ওকে আমি মেরে ফেলব না আমি শুধু ওর পৃথিবীটা ভেঙে দিতে চাই। ওকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে ও শুধু আমার ছায়া খুঁজে বেড়াবে।ওকে আমি ভালোবাসার নামে ধ্বংস করব।”
রায়হান কূটিল হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
“””তুমি ওকে ভালোবাসো আর আমি ওকে ঘৃণা করি। দুজনের লক্ষ্য এক অগ্নি চৌধুরিকে ভাঙা আর হচ্ছে নিঃস্ব করে দেওয়া। আবার ও বলছি অগ্নি চৌধুরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবে তো?
ঝর্না — সবাই না হয় ভালোবেসে নিজের জীবন দান করে আমি না হয় সেই ইতিহাস পালটিয়ে ভালোবেসে খারাপ হলাম। সবাইকে যে ভালো হতে হবে তার তো কোনো কথা নেই। ভালোবেসে খারাপ কয়জন হতে পারে বলো?
রায়হান বাঁকা হাসে।
ঝর্না কিছু একটা ভেবে বলে,,,,,,,
“” অগ্নি চৌধুরি জানে তুমি ওর শত্রু তবুও তোমাকে কেনো বাঁচিয়ে রেখেছে?
রায়হান চেয়ারে বসে বলে,,,,,
” প্রয়োজনে রেখেছে। অগ্নি চৌধুরি আমাদের আড়ালে অনেক বড় গেইম খেলছে। হয়ত বা আমাদের কে নিশ্বেঃস করতে। কিন্তু সেটা আমার ডেড তারা মানতে নারাজ। তবে যেদিন আমার ভাই জনির মরার পর ও অগ্নি নিশ্চুপ ছিলো তখন ওই বুঝেছি ও কোনো চক্রান্ত করেছে আমাদের বিরুদ্ধে। এখন আমাকে ও যদি মেরে ফেলে তাহলে আমার ডেড আর চাচার নজর পড়বে অগ্নির উপর। তখন অগ্নি চৌধুরি নিজের গেইমটা সম্পূর্ন করতে পারবে না। নাহলে এত বার শত্রুতা করে ও এখন ও শ্বাস নেওয়া ইম্পসিবল। মাটির নিচে পুঁতে ফেলত এতদিনে।
ঝর্না হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” তাহলে অগ্নি চৌধুরিকে তুমিও ভয় পাও ?
রায়হান বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
” ভয় সেটা তুমিও পাও। যাস্ট কারনে এখন ও বেঁচে আছি। ওকে সামনে থেকে মারা অসম্ভব। পিছন থেকে আঘাত করতে হবে যাতে থুঁবরে পড়ে।
ঝর্না – যাই করো তার গায়ে যাতে আচর না লাগে। আমি যাস্ট আমার অগ্নিকে পেলেই চলবে।
রায়হান রহস্য ময় হাসি দিয়ে বলে,,,,,,,,
“”” সেটা সময় আসলেই দেখা যাবে। তাহলে খেলা শুরু হোক তুমি তার মন ভাঙবে আর আমি তার অস্তিত্ব।
ঝর্না — ডান।
দুইজনের চোখেই এক রহস্যময় হাসি। এক নতুন ঝড়ের পূর্ভাবাস।
রাত প্রায় একটার কাছাকাছি ইয়ানার ঘুম ভেঙ্গে যায়। চারদিকে তাকিয়ে দেখে অগ্নির কোনো অস্তিত্ব নেই। ইয়ানা বুঝতে পারে অগ্নি আসে নি আজ। কোথায় আছেন উনি? এত রাতে এখন ও বাড়ি আসলেন না কেনো? নিজের ভাবনার মাঝে নিজেই তাচ্ছিল্য হাসি দেই। কিসব উল্টাপাল্টা চিন্তা আসছে মাথায়। কার জন্য ও ভয় পাচ্ছে?এখন ও আগের মত ভয় পাওয়ার স্বভাব পাল্টা। যে নিজেই হাজারটা খুন করে তাকে আবার কে কি করতে আসবে।
ইয়ানা মথায় হাত দিয়ে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে। মাথাটা প্রচুর ব্যাথা করছে কমার নাম ওই নিচ্ছে না। চুলগুলো কেমন পাগলের মত হয়ে আছে। হঠাৎ মোবাইলে রিংটন বেজে উঠে । এত রাতে কে ফোন দিলো? ইয়ানা তাকিয়ে দেখে শিখা চৌধুরির নাম্বার। ইয়ানা রিসিভ করে করে বলে,,,,,,
“” আসসালামু আলাইকুম আম্মু।
শিখা চৌধুরি অপরাধী গলায় বলে,,,,,,,
‘” ওয়া আলাইকুম আসসালাম। আমাকে ক্ষমা করে দিস মা। তর থেকে এত বড় সত্যি লুকিয়েছি বলে?
ইয়ানা মলিন হাসি দিয়ে বলে,,,,
” আপনি ক্ষমা চাইবেন না আম্মু। এখানে আপনি এক মায়ের দায়িত্ব পালন করেছেন শুধু। যে জানানোর সেই তো জানাই নি। তবে আম্মু একটা কথা কি জানেন এই কথাটা আর ও আগে জানলে হয়ত ভালো হত। আগে বিচ্ছেদের ভয় ছিলো না। চলে যাওয়ার ভয় ছিলো না। কিন্ত এখন এমন এক জায়গায় এসে শিকর ছড়িয়েছে এক পা সরালেই সব শিকর আমাকে জাপটে ধরবে। এখন দেখা উচিত ভাগ্য আমাকে কোন দিকে নিয়ে যায়।
শিখা চৌধুরির চোখে পানি গড়িয়ে পরে। এই মেয়েটাকে সে নিজের মেয়ের মত দেখেছে। সেখানে একজন মা হয়ে কিভাবে নিজের মেয়ের কষ্ট সহ্য করবে। উনি নিজের ছেলেকে চিনেন। একমাত্র উনার কথা ছাড়া অগ্নি আর কারোর কথা শুনে না। এক উন্মাদ সাইকো হয়ে গিয়েছে তার ছেলে। যদি রাগের বশে মেয়েটাকে কিছু করে বসে। কারন ওর নিয়ন্ত্রন নেই। যে করেই হোক ওদের বাংলাদেশে আনতে হবে অন্তত কয়েকদিনের জন্য।
শিখা চৌধুরিকে চুপ থাকতে দেখে ইয়ানা বলে,,,,,,
” আমার জন্য চিন্তা করো না আম্মু। তোমার ছেলে আমাকে জানে মারবে না কোনোদিন।। মা তো তুমি,, হয়ত এটাই ভাবছো। রাখছি আম্মু ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে
। সকালে আবার অফিসে যেতে হবে তোমাকে। আমার জন্য চিন্তা করো না। ভাইয়া, আহিয়া আর বাবার খেয়াল রেখো।
শিখা — তর বাবা – মাকে অগ্নির বিষয়ে জানিয়েছিস?
ইয়ানা — নাহ। ওরা দুর্বল হৃদয়ের মানুষ ভেঙ্গে পরবে এত বড় সত্যি জানলে। অপরাধে আমার আব্বু ধুকে ধুকে শেষ হয়ে যাবে।
শিখা — হুম এখন জানিয়ে কি হবে। সব ঠিক করে দিব আমি। ঘুমা এখন আর নিজের খেয়াল রাখিস।
শিখা চৌধুরি ফোন রেখে সাজিদ চৌধুরির দিকে তাকায়।
সাজিদ চৌধুরি অপরাধী কন্ঠে বলে,,,,,,
” আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম শিখা যা করো ভেবেচিন্তে করো। কোনো সাধারন ঘরের মেয়ে অগ্নির সাথে সংসার করা অসম্ভব। তারা বিশ্বাস করবে কম ভয় পাবে বেশি।
শিখা চৌধুরি — তোমার কাছে ইয়ানাকে সাধারন ঘরের মেয়ে মনে হলে ও আমার সেটা মনে হয় না। দের বছরের মত সংসার করেছে ও। এতদিন সত্তিটা জেনেও কিন্তু বাজে কোনো পদক্ষেপ নেই নি। ও সাধারনের মধ্যেই এক অসাধারন মেয়ে। আর তোমার ছেলে ওই মেয়ের জন্য দেওয়ানা পাগল। তাই ওকে ভালো করতে একমাত্র ইয়ানাই পারবে। দেখে নিও সাজিদ তোমার ছেলে ফিরবে। আর আমাদের মত নরমাল জীবনযাপন পার করবে।
সাজিদ চৌধুরি দীর্ঘনিশ্বাস ছেরে বলে,,,,,
” তাই যেনো হয়। একজন মন্ত্রীর ছেলে একজন দেশ সেরা মাফিয়া বিষয়টা হতাশা জনক।
এটি একটি বিলাসবহুল অন্তরালের মতো জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এলিট মাফিয়া সভাগৃহ।
দূরে কোথাও অন্ধকারে আলো জ্বলছে। মাটির তলায় একটি চেম্বারে যা পুরো শহর থেকে গোপন।
বিশাল কাঠের সিংহাসন। অশ্বারোহী ও শিকারীর ট্যাকসিডার্মি করা প্রাণী, দেয়ালে কালো স্যুট পরা পুরনো মাফিয়া নেতাদের পোট্রেট।এটা একটি প্রাচীন মাফিয়া প্রধানদের সংগ্রহশালা।
এখানে আসে পৃথিবীজুড়ে অস্ত্র পাচারকারী, বিশ্বব্যাপী খুনিরা, আর ব্যবসায়ীরা এক সাথে বসে।
একটা বিশাল কাঠের টেবিলের চারপাশে তারা বসে। টেবিলের উপর রয়েছে অস্ত্রের ছাঁচ, অস্ত্রের ক্যাটালগ এবং বিশাল পর্দা যেখানে পাচার করা অস্ত্রের লাইন দেখানো হচ্ছে।
অগ্নি চৌধুরি সেখানকার প্রধান লিডার। অগ্নি একটা চেয়ারে বসে। সামনে এক প্রবীন বসা। যার কথা অগ্নি সবথেকে বেশি শুনে। লোকটি অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” চারজন লোক এদেরকে মেরে ফেলো। আর বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। ওরা বাহির হলেই শুরু হবে ধর্ষন, অসহায়দের মেরে ফেলা ওদের মাংস ছিড়ে খাওয়া।
অগ্নি চেয়ারে ভালোভাবে বসে লোকটির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,
” তাদের চেয়ে ও বড় পিশাচ এখানে বসে আছে। যারা প্রতিনিয়ত ধর্ষন করে।
অগ্নির কথা শুনে এক লোক বলে উঠে,,,,,,,
” আমরা অসহায়দের করি না। যারা আমাদের সামনে ধরা দেই যাস্ট তাদেরকেই করি। কিন্তু আজ অস্ত্র নিয়ে কথা বলার জন্য এই সভা।
Don Elio Leone নামক এক ব্যক্তি হালকা কণ্ঠে বলে,,,,,,
“আজকের সভার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। আমরা অস্ত্র পাচারের ব্যবসা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে যাচ্ছি। নতুন বাজার আর নতুন লেনদেন। কিন্তু কিছু বাধা আছে।
এখন আমাদের সামনে যেসব সমস্যা আসবে তা মোকাবিলা করতে হবে। অগ্নি চৌধুরি আপনি কি প্রস্তুত?”
অগ্নি নিশ্চুপ। ওর মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। যেনো কিছুই হচ্ছে না।
আরেকজন Antonio Ricci নামক ব্যক্তি পরবর্তী মন্তব্য করে বলে,,,,
“তবে সমস্যা এই যে আমেরিকা, আফ্রিকা, এবং মধ্যপ্রাচ্য বাজারে চীন ও রাশিয়া তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আমাদের রুটে আগ্রাসন করতে পারে।
লোকটি হাতে থাকা ফাইল খুলে এরপর সেখান থেকে ছবি বের করে দেখিয়ে লে মধ্যপ্রাচ্যের এক অস্ত্রাগার সেখানে বিশাল অস্ত্রের চালান অপেক্ষা করছে কিন্তু চীন এবং রাশিয়া তাদের নেটওয়ার্ক শক্ত করছে।
Don Elio Leone এক মুহূর্তের জন্য অগ্নির দিকে তীক্ষ্ণভাবে তাকাল তারপর ঠান্ডা কণ্ঠে বলে,,,,,,
” অগ্নি চৌধুরি আপনি এইভাবে মৌন হয়ে আছেন কেনো? এখন আমরা এই অস্ত্র পাচারের পরবর্তী ধাপ শুরু করতে যাচ্ছি। কোনো কিছু আর আমাদের পথে আসবে না। অস্ত্র, টাকা, ক্ষমতা আর এগুলো আমাদের হাতে থাকবে, যতটুকু প্রয়োজন।এখন আমাদের পরিকল্পনা গোপন রাখো এবং এই মাসের শেষেই কাজ শুরু করো। কিন্তু মনে রেখতে হবে আমাদের উপর চোখ রাখা ও হতে পারে।
লোকটার কথা শেষ হতেই কিছুক্ষন পিনপিন নিরবতা। শুধু স্টিলের টেবিলে টুং টুং শব্দ হচ্ছে। অগ্নির হাতে একটা ছোট ছুরি রাখা যেটা দিয়ে বার বার টেবিলে আঘাত করছে।
নিরবতা কাটিয়ে অগ্নি ঠান্ডা গলায় বলে,,,,,
” কোনো অস্ত্র পাচার হবে না। আর না দেশের সম্পদ একটা ও বাহিরে যাবে।
লোকগুলো অগ্নির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়। এরপর একজন Don Elio Leone উচ্চস্বরে বলে,,,,,,
” পাগল হয়ে গিয়েছেন আপনি? বিগত সাত বছর পর এত বড় ডিল এসেছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ এখানে। আমাদের পুরনো বস প্রতি সাত বছর পর পর এমন ডিল করতেন তাহলে আপনি না করছেন কেনো?
লোকটির কথা শেষ হতেই অগ্নি হিংস্র চোখে ঘার কাত করে লোকটির দিকে তাকায়। এরপর দুই ঠোঁটের ভাঁজে চেপে ধরে একটা সিগারেট ধরায়। অগ্নি ধীর পায়ে চেয়ার থেকে উঠে লোকটার দিকে এগিয়ে যায়। এরপর ঠোঁটে চেপে ধরা জলন্ত সিগারেট লোকটার ঘারে চেপে ধরে হুংকার দিয়ে বলে,,,,,,,
” হাউ ডিয়ার ইউ ফা**ক। কি বলেছি শুনতে পাস নি রাসকেল? রিপিট প্রশ্ন করার সাহস পেলি কোথায়?
অগ্নিকে রাগতে দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। বৃদ্ধা লোকটি একটা মুচকি হাসি দিয়ে অগ্নিকে ডাক দিয়ে বলে,,,,,,
” শান্ত হও অগ্নি। ছেড়ে দাও Don Elio Leone কে।
বৃদ্ধের কথা কানে যাওয়া মাত্র ওই অগ্নি ওকে এক ঝটকায় ছেড়ে দিয়ে সেই গোপন রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আর যাওয়ার আগে ওয়ার্নিং দিয়ে যায় একটা অস্ত্র ও যাতে বাহিরের সম্রাজ্যে না যায়।
অগ্নি নিজের ডুপ্লেক্স বাড়ি রেখে সোজা চলে যায় নিজের বত্রিশ তলা একটা অফিসে। অফিসের সামনে এসে প্রাইভেট জেট থেকে নেমে লিফট বেয়ে উপরে চলে যায় নিজের নিজস্ব রুমে। রুমে প্রবেশ করতেই শূন্যতা ঘিরে ধরে চারপাশে। কোনো কিছু না ভেবেই শাওয়ার নেওয়ার জন্য চলে যায়। শাওয়ার অন করে বাথটপে হেলান দিয়ে বসে। উপর থেকে শাওয়ারের ঝিরঝির পানি পড়ছে আর অগ্নি নিচে এক হাটুতে হাত রেখে মাথা নিচে দিয়ে শান্ত ভাবে বসে থাকে। ইয়ানার কথা মনে পড়ছে খুব। জালিয়ে দিচ্ছে এই মেয়ে ক্ষণে ক্ষণে। পারছি না কাছে যেতে আর না পারছি দুরে যেতে। কয়েকদিন দুরে থাকি যখন ওই মেয়েকে শূন্যতা ঘিরে ধরবে তখন নিজেই হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকবে।
অগ্নি বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,,,,
” আমি জানি মিসেস অগ্নি চৌধুরি আপনি যত ভয়, রাগ আর জেদ দেখান না কেনো আমাকে ছাড়া আপনার নিশ্বাস ও চলে যায়। যখন আমিহীনা নিশ্বাস চলতে চলতে বন্ধ হয়ে যেতে নিবে ঠিক তখন ওই আমি আপনার সান্নিধ্যে চলে আসব। আগে এই রেগে থাকার মধ্যে ও চোখ দিয়ে খুঁজুন আর হৃদয় দিয়ে অনুভব করুন।
হঠাৎ করে মুখ্যে কাঠিন্যতায় ছেয়ে যায়।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে থাকে। ইয়ানার সেই ঘৃনিত চোখ, এই চাহনি, এই তীক্ষ্ণ কথা ধারালো অস্ত্র থেকে ও বিষাক্ত।
প্রায় এক ঘন্টা শাওয়ার শেষে অগ্নি ঘুমানোর জন্য তৈরি হয়ে বিছানায় আসে। এরপর খাটে অর্ধ শোয়া হয়ে একটা ল্যাপটপ নিজের পেটের উপর রাখে। ল্যাপটপের মনিটরে কাঙ্খিত ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে। নিজের ঠোঁট কামড়ে হিসহিসেয়ে বলে,,,,,
” এত ছটফট কেনো করছো জান? জানিতো আমার স্পর্শ আর বক্ষ ছাড়া তোমার ঘুম আসবে না তাহলে কেনো এত জেদ করো আমার উপর। এই দেখো এখন নিজেই নির্ঘুম রাত পার করছো। আর আমি পার করছি তোমাকে দেখে।
এইদিকে ইয়ানা বিছানা থেকে নেমে পুরো রুমে পাইচারী করছে। এরপর বিছানায় শুয়েছে ঠিক কিন্তু ঘুম আসছে না। একবার এইদিক ফিরছে তো আরেকবার ওইদিকে। আবার কিছুক্ষন পর উঠে বসছে। নিজের কাজে নিজেরই বিরক্তি হয়ে বলে,,,,,,,,
অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ২৭
” বালের এক অভ্যাস হয়েছে আমার। সেই হৃদয়হীন লোকের বক্ষ ছাড়া ঘুম ও আসছে না। কিন্তু উনি তো জানতেন উনাকে ছাড়া আমার ঘুম আসবে না। তবুও আসলেন না। না আসুক প্রয়োজন নেই আমার কিছু। সব কিছু থেকে বেরিয়ে আসব। এমনকি আপনার সৃষ্ট সব বদ অভ্যাস থেকে ও। ধীরে ধীরে সব কিছু থেকে গুটিয়ে নিব।
এইভাবে দুইজনের নির্ঘুম রাত পার করে। একজন পুরো রাত ছটফট করে। আরেকজন তার সেই ছটফট দেখে দেখে। কিন্তু দুইজনের ভিতরে রয়েছে একে অপরকে কাছে পাওয়ার তীব্র বাসনা। একজন সেই বাসনার অবসান ঘটাতে চাই কিন্তু আরেকজন ঘৃনা, আর কথা দিয়ে বিধ্বস্ত করে দেই। থামিয়ে দেই সেই বাসনাকে। তারা হয়ত নিজেরা ও জানে না তাদের সম্পর্কের সমাপ্তি কোথায় গিয়ে ঘটবে?