অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৪৬

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৪৬
লিজা মনি

ইয়ানার এমন হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠাতে অগ্নি ল্যাপটপ বন্ধ না করেই সেদিকে তাকায়। ইয়ানার হাতে হ্যান্ডকাফ লাগানো তাই যতটুকু সম্ভব মুখ ঢেকে রেখেছে। অগ্নি কপালের ভাঁজ আরও প্রখর করে সেদিকে তাকায়। ইয়ানার থেকে এক পলক দষ্টি সরিয়ে ল্যপটপের দিকে তাকাতেই কপালের ভাঁজ সমান হয়ে আসে। একবার ইয়ানার দিকে তাকায় আরেকবার মুভির সিনের দিকে। সে তো মুভির নামটা ও জানে না। এইটা অনেক আগে ইউভি আর রায়ান দিয়েছিলো দেখার জন্য। কিন্তু সে তো কখনো মুভি এইসব দেখে না। জীবনে কখনো দেখেছে কি না সন্দেহ। আজ হঠাৎ সামনে আসলো তাই চালু করলো। যেহেতু আগে থেকে সংরক্ষিত রেখে দেওয়া তাই ফাইল চেক করতেই সামনে আসে। মনের অজান্তেই সে চালু করে। প্রথমে ভালো লাগে নি তাই একদম শেষ প্রান্তে দিয়েছে । কিন্তু শেষে যে এমন দৃশ্য থাকবে সে তার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। হঠাৎ ইয়ানা এইভাবে চেঁচিয়ে উঠবে সে সপ্নে ও ভাবে নি।

মুভির সিন এখন ও নিজের মত করে চলছে। ইয়ানা আড় চোখে সেদিকে একবার তাকিয়ে মুহূর্তেই নিজের চোখ সরিয়ে নিয়ে বলে,,,,,,
” ছিহহ বন্ধ করুন এইসব। নাউযুবিল্লাহহ!
অগ্নি ইয়ানার থেকে চোখ সরিয়ে ল্যাপটপের দিকে পুনরায় তাকায়। মনিটরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হেসে ল্যাপটপ বন্ধ করে দেয়।
ইয়ানা হাতে হ্যান্ডকাফ লাগানো। তবুও যতটুকু চোখ ঢেকে রাখা যায় ততটুকু ঢেকে রাখে । পুরো ড্রয়িং রুম জুড়ে অন্ধকার। ডিম লাইটের আলোতে নীল হয়ে আছে। অগ্নি কাউচের উপর বসে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” এইভাবেই কি হাত দিয়ে ঢেকে রাখবে সারারাত? এখানে এসেছো কেনো?
ইয়ানা হাত সরিয়ে নেয়। অগ্নির দিকে তাকায়। অগ্নি তার দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছে। এমন এক অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের সাক্ষী হবে সে কল্পনা ও করে নি। ইয়ানা হাঁশফাঁশ করে বলে,,,,
” মাই ফল্ট মুভি কেনো দেখছিলেন?
অগ্নি ইয়ানার হাতের হ্যান্ডকাফ খুলে দিয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর,,,,
” রোমান্স শিখতে।
ইয়ানা নাক ছিটকে অবাক হয়ে বলে,,,,,

” আর কি শিখবেন! আপনার আবার শিখতে হয় নাকি? আপনার থেকে সেই মুভির নায়েক একটু শান্ত আছে। প্লিজ আর শিখার প্রয়োজন নেই। মাফ চাই আমি আপনার কাছে। এইসব আপনার কাছে যাস্ট বা হাতের কাজ। এইটা রোমান্স নয় বেহায়াপনা। স্টেপ সিস্টার আর স্টেপ ব্রাদার বিয়ের আগেই ইটিশ- পিটিশ শুরু করে।
অগ্নি ইয়ানার মুখের রিয়েকশন দেখে কপাল কুচকে বলে,,,,,
” তুমি কিভাবে এতকিছু জানলে? না দেখলে তো জানার কথা না।
ইয়ানা ঠোঁট ভিজিয়ে মিহি সুরে বলে,,,,,
” দেখিনি অন্যের মুখ থেকে শুনেছি। এইসব মুভি আমি দেখি না।
অগ্নি বুকে দুই হাত ভাঁজ করে ভ্রু নাচিয়ে বলে,,,,,,
” সামান্য অন্যের মুখে শুনেই এত বর্ননা দিয়ে দিলে?
ইয়ানা কিছুটা থামথমে খেয়ে বলে,,,,,,

” না মানে একবার সুমু, আমি আর আরু এক সাথে রাত জেগেছিলাম আমাদের ছাদে। তখন মজা করে আরু দিয়েছিলো এই মুভি বাট আমরা কেউ জানতাম না এতটা বাজে। আমি সরে যায় এরপর ওরা ও অফ করে দেয়। আর কেউ দেখেনি।
অগ্নি — গুড। তাদের কাছে এইসব নরমাল। তারা বিয়ে করে না।কারন ডির্ভোস হলে স্বামীর অর্ধেক সম্পত্তি স্ত্রীকে লিখে দিতে হয়। আর সেই ভয়ে কোনো পুরুষ কোনো মহিলাকে বিয়ে করতে চাই না। বিয়ে করে তুমি যা করেছো বিয়ে না করে তারা তাই করেছে। বরং তার চেয়ে বেশি।
ইয়ানা থমথমে মুখে বলে,,,,,

” আমাকে টানছেন কেনো এইসবের মধ্যে। আপনি কিভাবে জানেন এতকিছু?
ইয়ানার বোকা প্রশ্নে অগ্নি বাঁকা হেসে বলে,,,,,,
” তোমাকে টানবো না বলছো? আমি অনেক কষ্টে নিজেকে নিরাপদ রেখেছি নাহলে কবে আমার ভার্জিনিটি কেড়ে নিতে। যেই সাঙ্ঘাতিক মেয়ে তুমি। তোমার দিকে একবার তাকালেই আমি ঘায়েল হয়ে যায়।
অগ্নির এমন কথায় ইয়ানা কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। বলে কি এইসব, এই লোক!
ইয়ানা অগ্নির কাছে এগিয়ে এসে কপাট রাগ দেখিয়ে বলে,,,,,
” হে আল্লাহ যেসব লোকেরা বিয়ের পর ও বলে সে ভার্জিন তার থেকে সারাজীবনের জন্য বাসর করার অধিকার ছিনিয়ে নাও।

ইয়ানা কথা অগ্নির কানে পৌঁছাতেই অগ্নি চট করে ইয়ানার দিকে তাকায়। ইয়ানাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ইয়ানার কোমরে ধরে হেচকা টানে বসিয়ে দেয়। এরপর ইয়ানার মুখ চেপে ধরে বলে,,,,,
“” ইন্না – নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি’উন! এই মেয়ে কিসব বলছো।
ইয়ানা অগ্নির হাত মুখে থেকে জোর করে ছাড়িয়ে বলে,,,,,
“” কেনো হালাল দোয়া করেছি। আপনি তো ভার্জিন তাই সারাজীবন যাতে ভার্জিন থাকতে পারেন সেই দোয়া করে দিয়েছি।
অগ্নি ইয়ানার দিকে রাগান্বিতভাবে তাকিয়ে বলে,,,,,,

“” মাইর খাবে তুমি আমার হাতে ইয়ানা। যদি আর একবার এইসব কথা মুখে আনো। এখন শান্ত হয়ে কোলে নিয়ে বসে আছি পরেরবার একদম ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিব বিয়াদব।
ইয়ানা অগ্নির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,,,
” রেগে যাচ্ছেন কেনো? আপনি নিজেই তো বললেন আমি যাস্ট দোয়া করে দিলাম।
অগ্নি ইয়ানার কথায় গম্ভীর হাসে। ইয়ানার গাল, ঘাড়ে চুমু খেয়ে মোহিত আওয়াজে বলে,,,,,
” আমার মৃত্যু কামনা করো, আমার ধ্বংস, আমার হাহাকার সব চেয়ে নাও কিন্তু আমার কাছ থেকে দুরে থাকার কামনা কখনো করো না। মরে গেলে শান্তি পাব কিন্তু বেঁচে থেকে তোমার থেকে দুরে থাকতে পারব না। ইউ আর মাই পার্সোনাল প্রপার্টি। আমার জীবন আর আমার বেঁচে থাকার একমাত্র কারন।
ইয়ানার চোখে পানি টলমল করে। কিন্তু সে কাঁদে না। ভাঙ্গা গলায় আওড়ায়,,,,,,

” আপনার কিছু হলে আমি বাঁচব কিভাবে??
অগ্নি হালকা হেসে বলে,,,,,,,,
” মৃত্যুটা যাতে আমার তোমার সামনে হয় বউ । নিশ্বাসটা যাতে ত্যাগ করি তোমার এই মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে। মাথাটা যাতে রাখতে পারি তোমার এই বুকে। আমার নিশ্বাস ত্যাগ করার আগে তোমার নিশ্বাস ত্যাগ করার দৃশ্য দেখার ক্ষমতা আমার নেই জান।
ইয়ানা আকস্মিক অগ্নির মুখে চেপে ধরে। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে অগ্নির প্রশ্বস্ত বুকে মাথা রাখা।
অগ্নির শার্ট দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে বলে,,,,,,
” কেনো বলছেন এইসব? কেনো ভেঙ্গে দিচ্ছেন আমার মন? সহ্য করতে পারি না আমি এইসব আপনি জানেন না? জানার পরও কেনো বলছেন? যে প্রফেশনে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে সবসময় সেসব কাজ কেনো করেন?
অগ্নি ইয়ানার মুখ বুক থেকে তুলে চোখে পানি মুছে দিয়ে বলে,,,,,,

“” মানুষ মরনশীল। কেউ আগে মরবে অথবা কেউ পরে। মরতে আমাদের হবেই। যদি কখনো প্রফেশনের কারনে জীবন ত্যাগ করি তাহলে সেটা নাম মাত্র। কিন্তু আসল কাহিনী আমার দুনিয়ার জীবন ফুরিয়ে এসেছে তাই আমি এইভাবে মরেছি।
ইয়ানা অগ্নির বুকে কামড় দিয়ে বলে,,,,,,,
” চুপ করুন নাহলে আমি আপনাকে এই মুহূর্তে মেরে ফেলব।
ইয়ানা আকস্মিক কামড় দেওয়াতে অগ্নি সামান্য আহহ করে উঠে। ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” কামড়াকামড়ি কেনো শুরু করলে?
ইয়ানা — বেশ করেছি। আবার এইসব কথা বললে পুরো শরীরে দাগ করে ফেলব।
অগ্নি নিচের ঠোঁট কামড়ে হেসে বলে,,,,,

” ভেবে বলছো তো? তুমি শুরু করলে কিন্তু আমি বসে থাকব না। তুমি আমাকে দিবে আর আমি তোমাকে। আর আমাকে তো ভালোভাবেই চিনো আমি কেমন? সারারাত ছাড় পাবে না। তো রেডি মিসেস অগ্নি চৌধুরি।
অগ্নির কথা শেষ হতেই ইয়ানা লাফ মেরে কোল থেকে উঠে যায়। হঠাৎ এইভাবে উঠে আসাতে ইয়ানা টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে নেয় কিন্তু পরমুহূর্তে নিজেকে সামলে অগ্নির উদ্দেশ্যে বলে,,,,,,
” উন্মাদ নেকড়ে! দুরে থাকবেন আমার কাছে থেকে।
এরপর ইয়ানা নিজের ঠোঁট দেখিয়ে বলে,,,,,

” দে. দেখুন কি করেছেন অবস্থা। আমার গলাতে মনে হচ্ছে মৌঁমাছি কামড়েছে। কথা বললেই ঠোঁটে ব্যাথা করে উঠে।
অগ্নি মনযোগ দিয়ে ইয়ানার ঠোঁটের দিকে তাকায়। আবছা আলোতে স্পষ্ট দেখা না গেলেও কিছুটা আন্দাজ করার মত। ইয়ানার এমন নাজেহাল অবস্থা দেখে অগ্নি গম্ভীর শ্বাস ফেলে। অগ্নিকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইয়ানা পুনরায় বলে,,,,
“শুধু মাত্র আমার এই নিহত সরি আহত ঠোঁটের কারনে চৌধুরি ভিলাতে যাওয়ার জন্য জোর করি নি। নাহলে আপনার মনে হয় আপনি নিয়ে এসেছেন অথচ আমি এত শান্তভাবে কিভাবে থেকে গেলাম।একবার ও বললাম না যাওয়ার কথা। গেলেই বাদর বাহিনী আছে বর্তমানে চৌধুরি ভিলাতে। ইজ্জত থাকবে আমার! সব আকাশে উড়িয়ে দিবে।
অগ্নি ইয়ানার কথার উত্তরে বলে,,,,,,

” এতে গর্ব না করে নাক ছিটকাচ্ছো কেনো? আমি সবাই নয় ইয়ানা। আর না তুমি সবার মত। আমি তোমাকে যেভাবে গড়েছি তুমি ঠিক সেরকম। আমার তীব্রতা সবার মত নয় সেটা তুমি প্রথম আমার কাছে এসেই বুঝে নিয়েছো।
ইয়ানা থেমে যায়। নিস্তব্দ হয়ে যায় চারপাশ। কিছুক্ষন এইভাবে নিরবতা থাকে। ইয়ানা ডিভানে গিয়ে বসে মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” আপনি আমার প্রতি এত পজেসিভ কেনো জানতে পারি।
অগ্নির গম্ভীর উত্তর ,,,,,
“” বিকজ ইউ আর মাই প্রোপার্টি। আমার বউ। আমার জীবনের শেষ আলো।
ইয়ানা তাকায় অগ্নির দিকে। দুজনের চোখাচোখি হয়।
ইয়ানা মুখে হাসি ফুটিয়ে রেখেই বলে,,,,,

“” শুধুই কি তাই? আপনার বউ সে কারনেই এত উন্মাদ আপনি?
অগ্নি — নারীকে পুরুষের মাথার হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়নি, যাতে সে পুরুষের উপরে রাজত্ব করবে।
পায়ের হাড় থেকেও বানানো হয়নি যেন, পুরুষ তাকে অবজ্ঞা করবে। বরং তাকে পুরুষের পাঁজরের হা’ড় দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে সে তাকে হৃদয়ের কাছাকাছি রাখে। তোমাকে হৃদয়ের ভিতরে স্থান দেওয়াটা কি উচিৎ নয়??
ইয়ানা মুচকি হাসে। এইভাবে কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত হওয়ার পর ইয়ানার হঠাৎ মনে হয় ওর তো ক্ষিদে পেয়েছিলো তাই এসেছে। ইয়ানা ঠোঁটে ঠোঁট চেপে অগ্নির দিকে তাকায়।কিন্তু অগ্নির দৃষ্টি ল্যাপটপে। কি। সে ল্যাপটপ নিয়ে উপরে যেতে নেয়। অগ্নিকে যেতে ইয়ানা তব্দা লেগে যায়। ও যে এখন ও খায় নি সেই খবর রেখেছে এই লোক। কেমন সাঙ্ঘাতিক মানুষ উনি? একটু ও মায়া- দয়া নেই। ইয়ানা অপারক হয়ে পিছন থেকে ডেকে বলে,,,,

” প্রচন্ড ক্ষিধে পেয়েছে। খাব কি আমি?
ইয়ানার কথায় অগ্নি দাড়িয়ে যায়। সে এই কথাটার অপেক্ষা ওই এতক্ষন করছিলো। ইচ্ছে করেই সে আজ কোনো প্রকার বাধ্য করে নি। গম্ভীর হয়ে পিছনে ফিরে ইয়ানার দিকে তাকায়। ইয়ানা ঠোঁট উল্টে তাকিয়ে আছে। অগ্নি সামনে এসে বলে,,,,,,
” তুমি না বললে আজ কিছু খাবে না।
ইয়ানা নিজের অজান্তেই বলে উঠে,,,

” এখন প্রচুর ক্ষিদে পেয়েছে কি করব তাহলে? কি চাচ্ছেন যাতে না খাই তাহলে খাব না আর।
ইয়ানার অভিমান কন্ঠে বলা কথায় অগ্নি গম্ভীর হাসে। এরপর সিঁড়ি থেকে নেমে তার কাছে আসে। ইয়ানার হাত ধরে নিয়ে ডিভানে বসিয়ে দেয়। ইয়ানা উঠতে নিলে অগ্নির ধমকে আবার বসে যায়। অগ্নি ইয়ানাকে বসিয়ে লাইট অন করে। চারপাশে চিকচিক আলো জ্বলে উঠে। অগ্নি কিচেন রুম থেকে একটা কাচের পেয়ালা নিয়ে আসে। ইয়ানা কপাল কুচকে তাকায়। বাড়িতে তো কোনো স্টাফ নেই তাহলে রান্না করলো কে? নিশ্চয় বাহির থেকে আনিয়েছে। তাহলে সুস্বাদু খাবার ওই হবে।
অগ্নি ইয়ানার সামনে খাবার রেখে কাউচের উপর নিজেও বসে পড়ে। উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে। অগ্নি ঢাকনা খুলতে ইয়ানার চোখ কপালে উঠে যাওয়ার উপক্রম। অর্ধেক সিদ্ধ করা ঘাসপাতা! স্যালাড।এইসব কি লম্বা পানি? মানে তরল স্যুপ! ”

ইয়ানা হা করে অগ্নির দিকে তাকায়। অগ্নি ইয়ানার দিকে না তাকিয়েই ডিভানে বসে ঘম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,,
” দ্রুত শেষ করো কুইক। নাক ছিঁটকালে নাক কেটে এরপর জোর করে খাওয়াব।
ইয়ানা অগ্নির থেকে চোখ সরিয়ে আবার খাবারগুলোর দিকে তাকায়। খাবারের দিকে তাকিয়েই বলে,,,,,,
” আল্লাহ আমাকে মানুষের মত তৈরি করেছে যাতে মজাদার খাবার খাই। এইসব ঘাসপাতা খাওয়ার জন্য সৃষ্টি করে নি। বিশ্বাস করুন মি, চৌধুরি এইটা আমার গলা দিয়ে ইহজনমে ও ডুকবে না।
অগ্নি ইয়ানার আরও কাছে এসে মাথাটা উচু করে নিজের দিকে চেপে ধরে। এরপর নিজের আঙ্গুল দিয়ে ইয়ানার কেটে যাওয়া স্থান সামান্য স্পর্শ করে বলে,,,,,
” এই কাটা ঠোঁট নিয়ে ঝাল খাবার খেতে পারবে?
ইয়ানা মাথা নাড়িয়ে বলে,,,,,

” ঝাল খাবার হলেও সেটা খাবার অন্তত ঘাসপাতা নই।
অগ্নি কিছু না বলে টেবিলের উপর থেকে বিরিয়ানির বক্সটা নিয়ে আসে। কিছুক্ষন আগেই সে বাহির থেকে সব আনিয়েছে। সে বিরিয়ানির বক্স ইয়ানার সামনে রাখে।ইয়ানা সামান্য মুখে নিতেই ঝালে নাক মুখ খিঁচে নেয়। ঝাল গিয়ে একদম সর্বত্র ঠোঁট ছড়িয়ে পড়েছে। ইয়ানার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। সামান্য ঝাল কাটাস্থানে লাগার কারনে সেটা আরও ঝলতে থাকে। ইয়ানার হলুদ ফর্সা মুখটা লাল হয়ে যায়। অগ্নি ফ্রিজ থেকে সামান্য আইসক্রিম খাইয়ে দেয়। ইয়ানা শান্ত হয়ে বলে,,,,

“”” খাব না কিছু আর। উপরে চলুন ঘুমাব।
অগ্নি ইয়ানার চুলের ভাঁজে হাত ডুকিয়ে বলে,,,,
” সারাদিনের অভুক্ত তুমি ইয়ানা। আমি বাহিরের খাবার জীবনেও নিয়ে আসতাম না। যাস্ট তোমার জন্য আনিয়েছিলাম। যায় হোক সেটা তো খেতে পারো নি। আমার খাবার ও খেতে পারছো না ঘাসপাতা বলে নাক ছিটকাচ্ছো। চলো বাহিরে যায়।
ইয়ানা অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” পাগল হয়েছেন আপনি! খাওয়ার জন্য এত রাতে আমি বাহিরে যাব সেটা অসম্ভব। সমস্যা নেই আপনি বসুন আমি সামান্য রুটি বানাচ্ছি।
ইয়ানা উঠতে যাবে অগ্নি হাত ধরে বসিয়ে দিয়ে বলে,,,,,

“” বসো আমি বানিয়ে আনছি।
অগ্নির কথা কানে যেতেই ইয়ানা কেঁশে উঠে। কিন্তু সেই কাঁশি আর থামার নাম নিচ্ছে না। উপায় না পেয়ে পানি খেয়ে কাঁশি বন্ধ করে অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” প্লিজ এমন কথা বলবেন না যাতে আমি কাঁশতে কাঁশতে অজ্ঞান হয়ে যায়। জীবনে কোনোদিন কিচেন রুমে গিয়েছেন? রান্না কিভাবে করে ধারনা আছে?
অগ্নি গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,

“” এখান থেকে যাতে উঠতে না দেখি। যাস্ট দশ মিনিট অপেক্ষা করো আমি বানিয়ে আনছি।
অগ্নি কিচেন রুমে ডুকে। ইয়ানা ডিভানে বসে আছে। লিভিং রুম থেকে কিচেন রুমের দৃশ্য ভালোভাবে দেখা যায় না। ইয়ানা ডিভান থেকে উঠে একবার যেতে চায় কিন্তু অগ্নির কথা মাথায় আসতেই আবার বসে পড়ে। সে যাওয়াতে যদি কোনো রিয়েক্ট করে। ইয়ানা তব্দা লেগে অনেক্ষন বসে থাকে আর ভিবিন্ন কিছু ভাবে। কিছুক্ষন পর অগ্নি ইয়ানার কাছে আসে। ইয়ানা চোখ বড় বড় করে দুই ঠোঁট ফাক করে ডিভান থেকে উঠে দাঁড়ায়। নিজের সপ্ন ভেবে আবার নিজের হাতে নিজে চিমটি কাটে। উনি রান্না করেছে? যার বাড়িতে শত জন স্টাফ সে আমার জন্য রান্না করেছে। ইয়ানা অবাকের সাথে আবেগপ্লুত হয়ে পড়ে।
ইয়ানাকে এইভাবে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে অগ্নি গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,

” যেভাবে হা করে তাকিয়ে আছো পুরো একটা হাতি ডুকে যাবে। বসো এখানে। যা আছে খেয়ে নাও। খাবার ছিলো বাট তুমি খাও নি।ময়দা বানানোর জন্য একবার অতিরিক্ত পানিতে একদম তরল হয়ে যায়। এইভাবে করতে করতে ছয়বারের মাথায় এইটা বানিয়েছি। ছেহহ কিভাবে বানায় এইসব?
ইয়ানা চোখ সরিয়ে রুটির দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে বলে,,,,,
“”আরে বাহহ! আপনি দেখছি আমার চেয়ে সুন্দর রুটি বানাতে পারেন অগ্নি চৌধুরি?
অগ্নি ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বিরিক্তির নিশ্বাস ফেলে।
ইয়ানা ডিভানে বসে পুনরায় হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” মাশ আল্লাহ ছয়বারের চেষ্টায় একদম মানচিত্র এঁকে ফেলেছেন। আমি এখনও মানচিত্র আর্ট করতে পারি না। এই রুটিটাকে দিয়ে আঁকতে পারব।
অগ্নি তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বলে,,,,,

“ভন্ডামি করবে না। আমি জানি না কিভাবে রান্না করতে হয়। কখনো সে দৃশ্য দেখে নি। জানি ভালো হবে না তবুও আজ রাতটা চালিয়ে নাও। সকালে স্টাফ আসবে। যদি সমস্যা হয় তাহলে বাহিরে চলো। তোমাকে এখানে একা রেখে যেতে পারব না।
ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” ভালোবেসে বানিয়েছেন খারাপ কেনো হবে? আমি মজা করেছি এতক্ষন। কয়জনের স্বামী এইভাবে অধৈর্য হয়ে রান্না করে খাওয়ায় বলোন তো? আবার সে যদি হয় আপনার মত ব্যক্তি। একটা তেঁতো ফলে যদি ভালোবাসার ছোয়া পায় তখন সেটা অমৃত হয়ে উঠে। মজা করে মানচিত্র বললে আমার কাছে কিন্ত অমৃত।
অগ্নি গম্ভীর হাসে। ইয়ানা রুটের এক অংশ ছিড়তে যায় কিন্তু প্রচুর শক্ত। ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে অগ্নির মুখের কাছে ধরতেই অগ্নি বারন করে বলে,,,,

” আমি তৈলাক্ত খাবার খায় না কখনো।
ইয়ানা — আপনার জীবনের প্রথম রান্না এইটা। দুইজনে না হয় শেয়ার করে খাই। প্লিজ শুধু আজকের জন্য।
ইয়ানার আবদার অগ্নি ফিরাতে পারে না। মুখে তুলে নেয় খাবার। তবে তার কাছে স্বাদ – বেস্বাদের ফারাক হয় নি। সে তো সবসময় আধা সিদ্ধ খাবার খায়। সুস্বাদু খাবার এইসব কিভাবে বুঝবে। অগ্নির দিকে ইয়ানা ইয়ানা নিজের মুখে তুলে নেয়। রুটি মানচিত্র হলেও এতটা ও খারাপ না খেতে। ইয়ানার কেনো জানি আজ নিজেকে পরিপূর্ন লাগছে। চোখের পানি ছেড়ে দেয়। অগ্নি একবার মুখে নিয়ে আর খায় না। ইয়ানা খাচ্ছে আর প্রসংশা করে শ্বাস আটকে ফেলছে। এক প্রকার অগ্নির ধমকে শান্ত হয়েছে। ইয়ানার খাওয়া শেষ হলে অগ্নি ইয়ানাকে নিয়ে উপরে চলে যায়। বিছানায় শুতেই ইয়ানা অগ্নির বুকে মাথা রেখে বলে,,,,,

“”,একটা গান বলোন প্লিজ।
অগ্নি ইয়ানাকে নিজের সাথে আগলে নিয়ে বলে,,,,,
“” ভন্ডামি না করে ঘুমাও শান্তভাবে।
ইয়ানা — প্লিজ।
অগ্নি ইয়ানার গলায় মুখ ডুবিয়ে হিসহিস সুরে বলে,,,,
“যতক্ষন পৃথিবী আছে, যতক্ষন আকাশ আছে, তুমি শুধু আমার হয়েই থেকো। শুধু এইটুকুই চাওয়া। এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
ইয়ানা নিশচুপ হয়ে অগ্নির শরীরের ঘ্রাণ নিতে থাকে। তাদের প্রত্যেকটা দিন যদি এইভাবে কাটত। থাকত না কোনো ভয়, থাকবে না কোনো জীবন যুদ্ধের লড়াই, কালো দুনিয়া পাপাচার কিছুই থাকত না। সে জানে আজকের মত দিন আরেকদিন পাওয়া খুব মুশকিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার সেই মাফিয়া অগ্নি চৌধুরি হয়ে উঠবে। শুরু হবে আবার ও লড়াই। যেখানে পদে পদে বুদ্ধি খাঁটিয়ে বাঁচতে হয়।

ভার্সিটির ক্যাম্পাসের পাশে আরু, আকাশ, রুহান, অবনি, মিরা, সুমু সবাই গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তারা কিছুক্ষন অগ্নি আর ইয়ানার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। সাথে রায়ান আর সুমুর ও।
আরু– এই তরা একটা কথা শুনেছিস? মাস খানেক আগে যেদিন ভাইয়া আমাদের একটা ক্লাস নিয়েছিলো তখন ভাইয়া ইয়ানাকে মিসেস অগ্নি চৌধুরি হিসেবে সম্মোধন করেছিলো। মনে আছে তদের? সেদিন মেয়েদের কি চাপা আর্তনাদ।
সুমু হেসে বলে,,,,,,
” সেই দিনটার কথা কিভাবে ভুলি। ওইদিন তো অনেক তরুনির মন ভাঙ্গা দিবস।
আরু — রাইট। কিন্তু সেদিন একটা মেয়ে ইয়ানাকে অপমান করেছিলো।ছোটলোক, আরও ভিবিন্ন কিছু। সেই মেয়েটা আজ পথের ফকির এক প্রকার! তার বাবার সম্পত্তি নাকি ইয়াতিমখানায় দান করে দিয়েছে। এখন তারা শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গিয়েছে।
আকাশ, রুহান সুমু উৎসুক হয়ে বলে,,,,,

“” কিহহহ”!
সুমু — তুই কিভাবে জানলি?
আরু—- নিউজে দেখেছিলাম। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তারেক আহমেদ নিজের সমস্ত সম্পত্তি ইয়াতিম খানায় দান করে দিয়েছে। আমি মেয়েটার বাবাকে একবার দেখেছিলাম তার সাথে। টাকা নিয়ে খুব অহংকার করত ভার্সিটিতে। আজ দেখে এক কথায় রাস্তার ফকির।
আকাশ — আমার তো মনে হচ্ছে এখানে কোনো ঘাপলা আছে। নাহলে তুই বল কেউ নিজের সম্পত্তি ইয়াতিম খানায় দিয়ে দেয়। আরে পাগল ওত এই কাজ করবে না।
রুহান — যা ইচ্ছে হোক তাতে আমাদের কি। সেজন্য বলে আভিজাত্যের চাঁদরে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ো না। কারন তুমি কখন মাটিতে মুখ থুবরে পড়বে তার গ্যারান্টি নেই।
আরু মিরার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
” সুমু বলল তুমি নাকি এই মাসে কানাডায় ব্যাক করছো? মিরা তুমি যদি এখন কানাডা চলে যাও তাহলে অরিদ ভাইয়ার কি হবে?
মিরা চাপা হেসে বলে,,

“” উনাকে কেনো টানছো আরু? আমাকে উনি জন্মের শত্রু মনে করেন। আমাকে উনি কখনো সহ্য করতে পারে না। বরং আমি চলে গেলে উনি সবচেয়ে খুশি হবে।
সুমু — অনেক ঝগড়া থেকে কিন্তু ভালোবাসার সৃষ্টি হয় মিরা। সবসময় যে তাকে পরিচিত হয়ে বিয়ে করতে হবে তার কোনো মানে নেই। আমি ও তো কোনোদিন কল্পনা ও করিনি রায়ানের সাথে আমার বিয়ে হবে। কিন্তু দেখো হয়ে গেলো।
মিরা মুচকি হেসে উত্তর দেয়,,,,,,
“” তোমাকে রায়ান ভাইয়া পাগলের মত ভালোবাসে সুমু। উনি তোমাকে এক প্রকার পাগলামো করে বিয়ে করেছে। কিন্তু তবুও তোমরা মানাতে পারছো না। কি পেরেছো ভাইয়ার সাথে স্বাভাবিক হতে?
সুমু মিরার কথায় মাথা নাড়িয়ে না বলে।
মিরা — তাহলে কেনো মানাতে পারছো না? কিন্তু আমাদের সম্পর্ক একদম আলাদা সুমু। যুদ্ধ দিয়ে কোনোদিন সংসার টিকে না। ভালোবেসে বিচ্ছেদ হলে সহ্য করতে পারব না। মায়ায় পড়ার আগেই আমি দুরে চলে যাতে চাই। যদি একবার আসক্ত হয়ে পড়ি সেই বিচ্ছেদ সহ্য করতে পারব না আমি।
আকাশ — কিছুটা সময় দাও। ওকে তুমি এই মাসে কানাডায় ফিরত যেতে চাচ্ছো তাই তো?
মিরা চোখের পানি মুছে বলে,,,,,

“” হুম।
আকাশ — এই মাসটা অন্তত থেকে যাও। যদি অরিদ তোমাকে ভালোবেসে ফেলে। প্লিজ! আজ তিন তারিখ তুমি না হয় আগামী মাসের তিন তারিখে যাও। প্লিজ! যাস্ট একটু সময় নিয়ে দেখো
সুমু — হ্যা মিরা প্লিজ। আর তাছাড়া সাত তারিখে তো ভাইয়া তারা সবাই ব্যাক করছে কানাডায়।
মিরা অবাক হয়ে বলে,,,,,
“” কিহহ! ইয়ানা ও চলে যাবে?
সুমু মাথা নিচু করে নিম্ন আওয়াজে বলে,,,,,
“” হুম। তুমি চলে আসার পর উনি জানিয়েছে।
রুহান — এই ভাই তরা দেশে ডাউনলোড হয়ে বিদেশ কেনো যাচ্ছিস সব কয়টা।
সুমু — বিদেশী জামাইর কাছে বিয়ে দিলি কেন? ওই সময় কিছু একটা করে আটকিয়ে দিতি। বাল কে যেতে চাই নিজের দেশ ছেড়ে?
আরু– আল্লাহ আমার উপর রহমত করো। কোনো বিদেশী সাদা বিলাই যাতে কপালে না পড়ে।
আকাশ হেসে বলে,,,,,

” দেখে নিস সেটাই পড়বে। তর কপালে বিদেশী সাদা মুলা পড়ুক আমিন।
আরু কটমট চোখে বলে,,,,,
“” খবরদার বিয়াইস্তা বেডা অভিশাপ দিবি না। কানা, বোবা, মাথা নষ্ট সব পড়ুক তবুও বিদেশী সাদা মুলা না পড়ুক।
আরুর কথায় সবাই তব্দা লেগে যায়। বলে কি এই মেয়ে! কিছুক্ষনের মধ্যেই দম ভেসে আসে এক ভাঙ্গা টেপ রেকর্ডের কন্ঠ,,,,
“” আরু সোনা কি করছো?
আরু বিরক্তি নিয়ে তাকায় সেদিকে। রাগে দাঁত কিড়মিড়িয়ে উঠে। শালা জিন্দেগীটাকে বরবাদ করে দিচ্ছে। বিগত এক মাস ধরে আঠার মত লেগে আছে। তাদের ভার্সিটির সেইম ইয়ারের স্টুডেন্ট। প্রচুর জ্বালাতন করছে কয়টাদিন ধরে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে এই আঠাকে নিয়ে বাসার নর্দমার উপর চ্যাপ্টা করে লাগিয়ে দিতে।
ছেলেটাকে দেখে সুমু হালকা কেঁশে বিরবির করে বলে,,

“” তর বিদেশী সাদা মুলা না আসলেও কালা মুলা চলে আসছে।
সুমুর কথায় সবাই মুখ চেপে হাসে। আরু সুমুর দিকে কটমট চোখে তাকায়। সুমু হেসে চোখ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।
ছেলেটাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আরু মেজাজ দেখিয়ে বলে,,,,,
” কি সমস্যা আপনার? একটা মেয়েকে বার বার হ্যারেস করছেন। ভার্সিটিতে পড়তে এসেছি কোনো প্রেমলীলা করতে আসে নি। একবার বলেছি আপনাকে আমার পছন্দ না তাহলে কেনো বার বার উত্তক্ত করছে। প্লিজ লিভ! আর যাতে আপনাকে আমার পিছনে ঘুরঘুর করতে না দেখি।
ছেলেটা সিগারেট পায়ের নিচে ফেলে দিয়ে বলে,,,,

” তোমাকে আমি ভালোবাসি আরু। আমি পৃথিবীর এই বুকে আগুন জ্বালিয়ে দিব তুমি যদি আমার না হও।
ছেলেটার কথায় সবাই সেদিকে তাকায়। রুহান গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,
” শুনো বর্তমানে গরম বেশি। আগুন জ্বালিয়ে লাভ নাই পারলে রাস্তায় রাস্তায় এসির ব্যবস্থা করে দিও।
এখন যদি এখান থেকে না যাও ট্রাস্ট মি হসপিটালের বেডে থাকবে।
ছেলেটা আরুর দিকে এক পলক তাকিয়ে সবার দিকে তাকায়। চোখে রাগ স্পষ্ট। যেতে যেতে বাকিটা পথ আরুর দিকে তাকিয়ে গিয়েছে। আরু বিরক্তিতে ছেলেটার থেকে চোখ সরিয়ে নেয়।
আকাশ হুট করে হেসে বলে,,,,

“” আরু সোনা কি করছো?
আরু হাত দিয়ে আকাশের পিঠে ঘুসি মেরে বলে,,,,,
” যদি আমাকে নিয়ে মজা নিয়েছিস তাহলে ট্রাস্ট মি অবনির কাছে এমন এমন কথা বলব বিশ্বাস কর রাতে বিছানায় জায়গা দিবে না ভবিষ্যতে।
আরুর কথায় আকাশ থমথমে খেয়ে যায়। এমন সাঙ্ঘাতিক ফ্রেন্ড যাতে শত্রুর ও না হয়।
তাদের কথার ফাঁকে একটা মেয়ে এসে বলে,,,,,
“” আকাশ তদেরকে রুমে ডাকা হয়েছে। ভার্সিটির ভিপি কিছু মেসেজ দিবে সবাইকে।

আরু– কি মেসেজ?
মেয়েটি — জানি না তবে বলেছে সবাইকে যাতে এক সাথে করি।
আরু– ওকে তুমি যাও আমরা আসছি।
মেয়েটি চলে যায়। সুমু মিরার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
” ম্যাডাম চলুন আপনার হাজবেন্ড কেনো ডাকছে শুনে আসি।
মিরা সুমুর দিকে তাকায়। শরীরে এক অদ্ভুত শিহরন বয়ে যায়। হাজবেন্ড! এই পুরুষটা তার হাজবেন্ড ভাবতেই শরীর সামান্য ঝাঁকুনি দিয়ে উঠে।
মিরা, রুহান তারা রুমে প্রবেশ করে। মিরা, সুমু আর আরু সেকেন্ড সারিতে চেয়ারে গিয়ে বসে। আকাশ আর রুহান থার্ড সারিতে বসে। কিছুক্ষনের মধ্যে ভার্সিটির ভিপি মানে অরিদ প্রবেশ করে। অরিদের সাথে সিমি, জিসান, দুইটা মেয়ে, চারটা ছেলে আসে। অরিদ ভিতরে ডুকে সবার সামনে দাঁড়ায়। ঘামে সাদা শার্ট পিঠে লেগে আছে। দেখে বুঝায় যাচ্ছে আজ অনেক ধকল গিয়েছে।
সিমি মিরাকে দেখতে পেয়ে হাসি দিয়ে অরিদের উদ্দেশ্যে বলে,,,,,

“” ভাই তর বউ বসে আছে। গিয়ে দেখা করে আসি।
সিমির কথার অরিদ চট করে সামনের দিকে তাকায়। মিরার দিকে তাকাতেই দুজনের চোখাচোখি হয়। সিমি চলে আসতে নিলে অরদি হাত ধরে আটকে দিয়ে বলে,,,,,
” বউ বউ বললে গলা কেটে মারব ইডিয়েট। যা ভালো কথা, কেউ যাতে জানতে না পারে বিয়ের কথা ওকে?
সিমি কপাল কুচকে অরিদের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
” নিজের বউকে স্বীকৃতি দিতে তর কিসের এত লজ্জাবোধ অরিদ?
অরিদ — সবাই তাকিয়ে আছে সিমি। তর প্রশ্নের উত্তর আমি ইচ্ছে হলে দিব কোনো একদিন। এইটা একটা এক্সিডেন্ট আর কিছুই নয়। আবার ও বলছি কেউ যাতে না জানে।
সিমি কিছু বলে না। কিছুটা অবাক হয় অরিদের আচরনে।
সিমি মিরার কাছে গিয়ে হাসি দিয়ে বলে,,,,,

” হাই মিরা। হাই আরু , সুমু কেমন আছো তোমরা?
মিরা সিমির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো আপু?
সিমি — আলহামদুলিল্লাহ। কেমন চলছে দাম্পত্য জীবন?
মিরা — আলহামদুলিল্লাহ আপু।
সিমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই অরিদ ডাক দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে যায়। সিমি আকাশ আর রুহানকে ভালো খারাপ জিজ্ঞাসা করে বিদায় জানিয়ে চলে যায়।
অরিদ সবার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,

“” তোমাদেরকে সবাইকে একটা কারনে একসাথে করা হয়েছে। আজ তিন তারিখ। আগামী বারো তারিখে একটা ট্যুরের আয়োজন করা হয়েছে ভার্সিটি থেকে। ট্যুরের কেন্দ্র হচ্ছে সাজেক। অন্য জায়গায় করার ইচ্ছে ছিলো বাট সাজেক অনেক সুন্দর একটা জায়গা। আশা করব সবাই অংশ গ্রহন করবে। টাকার পরিমান পরিবর্তে জানানো হবে।
সাজেকের কথা শুনে সবাই খুব খুশি হয়। জিসান সবার উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলে। মিরা অরিদের দিকে তাকায়। মনের অজান্তেই মুচকি হেসে ফেলে। অরিদের কথা বলার স্টাইল এটিটিউড কেনো জানি অন্যরকম লাগছে। সাদা শার্টটা শরীরের সাথে খাপ খেয়ে লেগে আছে। সুঠামদেহী শরীরের পেশিগুলো যেন দৃশ্যমান হয়ে আছে। মিরা নিজের চোখ সরিয়ে নেয়। নিজের অনুভুতি নিয়ে নিজে তাচ্ছিল্য করে বলে,,,
“” ছিহহ মিরা তুই এক ঝগড়ুটে ব্যক্তির দিকে ডেপডেপ করে তাকিয়ে আছিস? এত অধঃপতন তর?
মিরা নিজেকে নিজে গালি দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে অরিদ তার দিকে তাকিয়ে আছে। মুহূর্তের মধ্যেই থমথমে খেয়ে যায় দুজন। অরিদ মিরার থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে সবার উদ্দেশ্যে ট্যুর নিয়ে আলোচনা করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

এগারোটা বেজে ত্রিশ মিনিট।
তারা ঘুম থেকে উঠেছে প্রায় নয়টা বাজে। অগ্নি জিম থেকে এসে ওয়াশরুমে ডুকে ইয়ানার উদ্দেশ্যে বলে,,,,,
” ইয়ানা কার্বাড থেকে কাপড় বের করে রাখো কুইক।
ইয়ানা অগ্নির কথা মত কার্বাড থেকে কাপড় গুছিয়ে রাখে।
অগ্নি শাওয়ার শেষ করে এসে রেডি হয়ে নেয়। অগ্নিকে এত তাড়াহুড়া করতে দেখে ইয়ানা জিজ্ঞাসা করে,,,,,
” কোথায় যাবেন? এত তাড়াহুড়া করছেন কেনো?
অগ্নি ব্লেজার লাগাতে লাগাতে বলে,,,,,
” তোমার না জানলেও চলবে।
অগ্নির কথায় ইয়ানা চুপ হয়ে যায়। জানে উত্তর পবে না এরপর ও করেছে মনের খোরাক মিটাতে।
অগ্নি রেডি হয়ে ইয়ানার সামনে এসে দাড়ায়।
ইয়ানাকে কাছে টেনে গালে, কপালে ঠোঁটে চুমু খায়। আকস্মিক চুমু খাওয়াতে ইয়ানা নিজের খেই হারায়। অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,

” ভালোবেসে চুমু খান আপনি? এইভাবে কেউ আকস্মিক কেউ আক্রমন করে একটু হলে পড়ে যেতাম।
অগ্নি ইয়ানার নাকে টান দিয়ে বলে,,,,,
” ভালোবাসা মানে তো আমি জানি না জান। আমি এইভাবে খাই তাই এমন ভাবে খেয়েছি। কারন আমি মানুষটা ওই এইরকম।
ইয়ানা — মস্তিষ্ক যখন হৃদয়কে নিয়ন্ত্রন করে তখন স্বার্থপরতা। আর হৃদয় যখন মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রন করে তখন তৈরি হয় ভালোবাসা (রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর)। আপনাকে কে নিয়ন্ত্রন করে?
অগ্নি চাপা হেসে বলে,,,,,
” একটাও না ।
অগ্নি বেরিয়ে যায়। ইয়ানা তাকিয়ে থাকে অগ্নির যাওয়ার পথে।
অগ্নি গাড়ির কাছে যেতেই মোবাইলের রিংটন বেজে উঠে। ভিতরে ডুকে গাড়ির স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বলে,,,,,

” হুম বল।
উপর পাশ থেকে,,,,,,
” বস রানবীর এই মাত্র ব্যাংক – এ ডুকেছে।
অগ্নি গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,,
“” কাজ শুরু করে দে। রানবীরের ব্যাংক খালি চাই।
অপরপাশ থেকে,,,,,
“” ওকে বস। কিন্তু রানবীর বিপদে পড়লে আপনাকে জানাতে চাইবে তখন কি করবেন?
অগ্নি — যেভাবে বলা হয়েছে শুধু সেটুকু কর। আমি অন্য জায়গায় থাকব তাই ফোন দিলেও পাবে না। যদি আমার ফোনের সুইচ অফ থাকে তাহলে আমার পার্সোনাল ফোনে কল করবি ওকে।
উপর পাশ থেকে,,,
“” জি বস। বুঝেছি বস।
অগ্নি কল কেটে দিয়ে স্ট্রিয়ারিং ঘুরিয়ে রহস্যময়ভাবে হাসে।

ভার্সিটির ছুটি শেষে মিরা আর সুমু একটা খোলা জায়গায় দাঁড়ায়। আকাশ চলে যায় অবনির কলেজে। রুহান আর আরু নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়।
সুমু আর মিরা কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর অরিদ ভার্সিটির গেইট পেরিয়ে গাড়ির কাছে আসে। সুমু আর মিরাকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে কপাল কুচকে আসে।
কিছুক্ষনের মধ্যে ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসলে মিরা ড্রাইভারকে বলে,,,,
“” হাই হ্যান্ডসাম বয়। আপনি এত স্মার্ট কেনো ভাইয়া?
মিরার কথায় ড্রাইভার থমথমে খেয়ে যায়। পয়ত্রিশ বছর বয়সে এই প্রথম কেউ স্মার্ট বলছে। নিজের বউ মাঝে মাঝে বলে তুমি খুব সুন্দর কিন্তু কেউ স্মার্ট বলে না। ড্রাইভারটা মিরার কথায় খুব খুশি হয়। এইদিকে সুমু মিরার কথায় তব্দা লেগে আছে। মিরা চোখ বাকিয়ে একবার অরিদের দিকে তাকায়। যে এই মুহূর্তে গাড়িতে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি তাদের দিকেই তাক করা।
মিরা মিটিমিটি হেসে ড্রাইভারকে বলে,,,,,

“” লজ্জা কেনো পাচ্ছেন ভাইয়া? আপনি নিজেও জানেন না আপনি কত সুন্দর। কেনো যে আগে আপনার সাথে আমার পরিচয় হলো না। জানেন মাঝে মাঝে খুব আফসোস হয়। যদি আগেই আপনার সাথে দেখা হত তাহলে অন্তত কোনো বাদর আমার গলায় ঝুলত না।
মিরা কিছুটা মন খারাপের অভিনয় করে আড়চোখে অরিদের দিকে তাকায়। তাদের দুরত্ব বেশি না। অরিদের মুখের ভাবভঙ্গি দেখেই বুঝা যাচ্ছে সব শুনছে আর রাগে সাপের মত ফনা তুলছে। সুমু আর সহ্য করতে না পেরে কেঁশে উঠে। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,,,,,,

“” বইন তুই থাম আর সহ্য করতে পারছি না। তর কথা শুনে যক্ষা রুগে আক্রান্ত হয়ে যাবে। তর প্রতিটা বাক্য থেকে মারাত্নক লেভেলের যক্ষা ভাইরাস ছড়াচ্ছে।
মিরা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ব্যাক সিটে গিয়ে বসে পড়ে। সুমু উঠে মিরার দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়। এই মেয়ে এত মিটমিটি হাসছে কেনো আজব!
ড্রাইভার শার্টের কলার ঠিক করে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্ট্রাট দেয়।
মিরা চলে যেতেই অরিদ সজোরে ঘুষি বসিয়ে দেয় গাড়ির উপর । রাগে ইচ্ছে করছে এই মেয়েকে সামনে দাড় করিয়ে কয়েক ঘাঁ দিতে। কত বড় স্পর্ধা ড্রাইভারের সাথে তামাসা করে। আমাকে বাদর বলে গেলো! সাহস দেখে যাস্ট অবাক।
অরিদ কিছুটা শান্ত হয়ে নিজে নিজে আওড়ায় ,,,,,,,,
“” ওয়েট,আমি কেনো জেলাস হচ্ছি ড্রাইভারের সাথে কথা বলাতে? যার সাথে ইচ্ছে কথা বলুক। ইচ্ছে হলে রাস্তার পাগলের গায়ে ঢলে যাক তাতে আমার কি? অসভ্য মেয়ে ।

সাজিদ চৌধুরি মিটিং এর মধ্যে অগ্নির জন্য অপেক্ষা করছে। আজ অগ্নির এখানে আসার কথা। সাজিদ চৌধুরি বার বার হাত ঘড়ির দিকে নজর বুলাচ্ছেন। নির্বচনের সময় বিরোধী দলের ছেলেকে হারিয়ে রাজনীতি থেকে পিছিয়ে গিয়েছেন। আর কখনো রাজনীতির মাঠে নামে নি। সাজিদ চৌধুরি আজও জানে নি তার ছেলেকে সেদিন অগ্নি মেরেছিলো। এই ঘটনা শুধু আরিফ, ইউভি আর রায়ানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সভা শুরু হবার কিছু মুহূর্তের মধ্যে অগ্নি ভিতরে প্রবেশ করে। পড়নে কালো কোর্ট ভিতরে কালো সাদা শার্ট। অগ্নি প্রবেশ করতেই কয়েকজন সম্মাননার সাথে ভিতরে প্রবেশ করায়। অগ্নি গিয়ে স্পেশাল আসলে বসে। মুখে গম্ভীরতা নিয়ে নিচে তাকিয়ে আছে। সাজিদ চৌধুরি অনেক খুশি হন অগ্নি আসাতে। সে তো ভেবেছিলো আসবে না। যাক অন্তত তার সম্মানটা রেখেছে এখানে এসে। সাজিদ চৌধুরি তার উপর একজন তরুন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে অগ্নিকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। এই সভার মধ্যে দেশের সব মন্ত্রীরা এক সাথে হয়েছে। কেউ অগ্নিকে জানে, চিনে। আবার কেউ নাম জানে মাফিয়া লিডার অগ্নি চৌধুরি নামে। বাট সাজিদ চৌধুরির ছেলে আর কানাডিয়ান মাফিয়া বস যে এক ব্যাক্তি সেটা অনেকের অজানা। যারা অগ্নিকে চিনে তারা অগ্নির দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে। কারন তাকে চিনার পিছনে সবার এক ভয়ানক রেকর্ড রয়েছে। আর সেই থেকে অগ্নিকে ভয় পাওয়ার কারন। যেখানে কানাডিয়ান সরকার কিছু করছে না তখন তারা,কি করতে পারবে।
সাজিদ চৌধুরি ছেলের আসাতে সন্তুষ্টি নিয়ে বলে,,,,

” আমি ভাবিনি আমার কথা তুমি রাখবে। আমার কথা রেখে তুমি মিটিং এ উপস্থিত হবে।
অগ্নি গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,,
“” আমি তোমার জন্য আসিনি আব্বু। নিজের কাজে এসেছি। আর এখানে থাকার সময় আর মাত্র পনেরো মিনিট। এরপর আমি চলে যাবি।
সাজিদ চৌধুরি কপাল কুচকে বলে ,,,,,,,
“” এখানে তোমার পার্সোনাল কি কাজ?
অগ্নি — সেটা তোমাদের কারোর সাথে সম্পৃক্ত নয়। তোমার সেটা না জানলেও চলবে।
সাজিদ চৌধুরি তপ্ত শ্বাস ছাড়ে। এই ছেলে সে জন্ম দিয়েছে এইটা ভাবতেও সন্দেহ হয়। নাহলে উনার মত এমন সমাজ সেবকের ছেলে কিভাবে কালো জগতের লিডার হয়। রক্তের টানে একটু হলেও ভালো হত। মাঝে মাঝে মনে হয় হসপিটালে কেউ পাল্টে দিয়েছে। তার ছেলে এত ঘাড়ত্যারা ভাবতেও কষ্ট হয়।
কিছুক্ষনের মধ্যেই অগ্নির ফোন আসে। কানে ব্লুটুথ সেট করা। অগ্নি ধীর আর গম্ভীর আওয়াজে বলে,,,,,

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৪৫

“” কাজ হয়ে গিয়েছে?
অপরপাশ থেকে — জি বস। এই মাত্র সফল হয়েছে।
অগ্নি রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,,,
“” গুড।

অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৪৭