অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১০
সাদিয়া শওকত বাবলি
রৌদ্রজ্জ্বল সুন্দর একটি দিন। রিমা এবং শিলা হাঁটছিল কলেজ ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন বিষয়ে টুকটাক আলোচনা করছিল তারা দুজন। আলোচনার এক পর্যায়ে হঠাৎ শিলা বলে উঠল,
“তোর এবার সাহেদ স্যারকে মনের কথা বলে দেওয়া উচিত। কম দিন তো হলো না তুই উনাকে ভালোবাসিস।”
বিষয়টা নিয়ে রিমাও ভেবেছে। সাহেদকে প্রথম যেদিন দেখেছিল সেদিনই তার ভালো লেগেছিল। এরপর ধীরে ধীরে সময় গড়ালো। রিমার সেই ভালো লাগা ভালোবাসায় পরিণত হলো। সাহেদের জন্য যে টান, ভালোবাসা অনুভব করতে শুরু করল তাও কম দিন নয়। এখন হয়তো তার মনের কথাটা বলে দেওয়া উচিত সাহেদকে। রিমার ভাবনার মধ্যে শিলা আবার বলে উঠল,
“যা করার তাড়াতাড়ি করিস। এখন যে যুগ। পরে দেখবি তোর এই না বলতে পারা এবং অপেক্ষার মধ্যে সাহেদ স্যারকে অন্য কাউকে পটিয়ে নিয়েছে। তারপর তোর কপাল চাপড়ানো ব্যতীত আর কোনো উপায় থাকবে না।”
রিমার বুকের ভেতর অদ্ভুত এক ভয় হানা দিল। তার দেরি সত্যিই যদি সাহেদকে অন্য কারো করে দেয়? যদি সে অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলে কিংবা বিয়ে করে ফেলে তখন কি হবে?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কিন্তু সাহেদ তার শিক্ষক। ছাত্রী হয়ে তাকে হুট করেও বা প্রেম নিবেদন কিভাবে করবে সে? এ তো এক প্রকার বেয়াদবি হয়ে দাঁড়াবে। আর তাছাড়া সে এখনো জানে না সাহেদ তাকে পছন্দ করে কিনা। সে সাহেদকে সরাসরি নিজের মনের কথা জানানোর পর লোকটা যদি তাকে প্রত্যাখ্যান করে, কলেজের অন্য প্রভাষকদের নিকট বলে কিংবা প্রধান অধ্যক্ষের নিকট নালিশ করে তখন! আবার মনের কথা মনে চেপে রাখলেও সারাজীবন একটা আফসোস কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে, সাহেদকে না পাওয়ার আফসোস। তখন তার মনে হবে একমাত্র তার বলতে না পারার কারণেই সে সাহেদকে হারিয়েছে, তার ভালোবাসা হারিয়েছে। নিজের মনের কথা জানানোর পর সাহেদ তো তাকে নাও ফেরাতে পারতো। বড্ড দোটানায় পড়ল মেয়েটা। কি করবে, কোন দিকে যাবে ভেবে উঠতে পারল না ঠিক। তখনই তার মস্তিষ্কে একটি কথা এলো। সে তাকালো শিলার দিকে। বড্ড আশা নিয়ে বলল,
“তুই আমার হয়ে স্যারকে বলে দে না কথাটা। ঐ যে বলে না ঘটক। তুই ও না হয় আমার প্রেমে ঘটকের কাজটা কর।”
শিলা বিরক্ত হলো। সে কেন সাহেদকে এসব প্রেম ট্রেমের বিষয় বলতে যাবে? নিজের চেয়ে বয়সে বড়ো কাউকে প্রেম বিষয়ক কিছু বলতে যাওয়া মানেই তার হৃদয়ে নিজের সম্পর্কে একটি বিরূপ ধারণা তৈরি করা। আর সেখানে যদি সে হয় শিক্ষক। তাহলে তো কথাই নেই। সে কেন রিমার জন্য একজন শিক্ষকের সামনে নিজের সম্মান নষ্ট করতে যাবে? শিলা বিরক্ত ভঙ্গিতে কিছু বলতে যাবে তখনই তার স্মরণে এলো শীর্ষর কথা। এই সুযোগ, এই সুযোগে সেও না হয় শীর্ষর নিকট নিজের মনের কথাটা জানিয়ে দিবে। সেও তো শীর্ষকে নিজের মনের কথা জানাতে চাইছে বহুদিন। এ বিষয়ে রিমাকেও বলেছে কয়েকবার। কিন্তু রিমা তাকে সাহায্য করেনি। বিভিন্ন কথা বলে বিষয়টা এড়িয়ে গেছে। এখন এই সাহেদের বিষয়টা কাজে লাগিয়ে নিজের কাজটাও গুছিয়ে নিতে হবে তাকে। শিলা ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে তুললো। রিমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“আচ্ছা, তোর প্রেমের ঘটকালিটা না হয় আমিই করব। কিন্তু তোরও আমার একটা কাজ করে দিতে হবে।”
“কি কাজ?”
“তোরও শীর্ষ ভাইকে বলতে হবে আমি তাকে ভালোবাসি। অর্থাৎ আমার আর শীর্ষ ভাইয়ের প্রেমের ঘটক হতে হবে তোকে।”
রিমা আমতা আমতা শুরু করল। সেই ত্রয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর তো শীর্ষও বাড়ি ছেড়েছে। এখনো অব্দি বাড়িতে ফিরেনি। ফাহমিদা বেগম, আব্দুর রাজ্জাক খান, পন্না এবং সে নিজে কত চেষ্টা করল তাকে বাড়ি ফেরানোর কিন্তু পারেনি। শীর্ষ তো তাদের সাথে তেমন কথাও বলে না, দেখাও দেয় না। তার মধ্যে যদি আবার তাকে এসব কথা বলে। দেখা যাবে আরও রেগে গেছে। রিমা কিছুটা ইতস্তত করেই বলল,
“তুই তো জানিস শীর্ষ ভাই বাড়িতে থাকে না। তাকে এসব কথা বললে তিনি না আরও রাগ করেন।”
“আরে রাগ করবে কেন? তুই না তার বোন। তুই বললে সে সব শুনবে।”
রিমা শিলার কাছে শীর্ষের বাড়ি ছাড়া এবং ত্রয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়গুলো বললেও পুরোপুরিভাবে কিছুই বলেনি। বন্ধু বান্ধবদের কাছে যদি বলে একটা সামান্য মেয়ের জন্য তার ভাই বাড়ি ছেড়েছে, তাদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করেছে তাহলে সবার অভিমুখে তার সম্মানটাও হালকা হয়ে যাবে। রিমা এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। ঢোক গিলে বলল,
“তবুও….”
এই টুকু বলতেই তাকে থামিয়ে দিল শিলা। রাগ দেখিয়ে বলল,
“তোর জন্য আমি স্যারের কাছে যেতে পারবো। তার চক্ষুশূল হতে পারব। আর তুই আমার জন্য এই টুকু করতে পারবি না?”
রিমা চিন্তায় পড়লো। অন্তত সাহেদকে তার মনের কথাটা জানানোর জন্য হলেও তাকে শীর্ষের সাথে কথা বলতে হবে। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো সে। অতঃপর বলল,
“আচ্ছা দেখি কি করা যায়।”
মধ্য দুপুর। চারদিকে এই মুহূর্তে মানুষের আনাগোনা একটু কম। ত্রয়ীর ক্লাস শেষ হলো মাত্রই। পূর্বের ন্যায় ঘোমটা দিয়েই কলেজ থেকে বেরিয়ে এলো সে। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগল। লোকটা এখনো এখানে আছে নাকি চলে গেছে? ত্রয়ীর এদিক ওদিক তাকানোর মধ্যেই তার পাশে এসে দাঁড়াল কেউ। কৌতুকের সুরে বলল,
“আমাকেই খুঁজছেন নাকি আপা?”
আবার আপা! ত্রয়ী পাশ ফিরে না তাকিয়েই বুঝে নিল এটা শীর্ষ। সে আর তাকালোও না। হনহন করে হাঁটা ধরল রাস্তা ধরে। শীর্ষ পিছু নিল তার। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বলল,
“ক্লাস কেমন হলো আপা? শুধু তো স্যারদের কথা শুনেছেন মনে হয়। কিছু বলতে তো পারেননি। কারণ আপনি বোবা।”
ত্রয়ী কোনো জবাব দিল না। শীর্ষ আবার নিজে থেকেই বলল,
“আপা আপনি বিয়ে করবেন না? অবশ্য আপনাকে বিয়েও বা করবে কে? আপনি তো কথা বলতে পারবেন না, বোবা।”
ত্রয়ীর এবার চিৎকার করে বলে উঠতে ইচ্ছা হলো,
“তোর মতো একটা ধলা মূলার সাথে বিয়ে হয়েই জীবন শেষ। আবার নতুন করে বিয়ের কি দরকার?”
ত্রয়ী আড় চোখে তাকালো শীর্ষের দিকে। মনে মনে ফের বলল,
“আপনাকে যে আমি ধলা মূলা বলি তা কি আর শুধু শুধু? আপনি আর মূলা দুইটাই সমান সমান। একটা খেলে বদহজম হয়, পেটের মধ্যে ফুটন্ত পানির ন্যায় বুদ বুদ শব্দ হয়, য’ন্ত্র’না হয়। আর আরেকটাকে জীবনে জড়ালে সারাজীবন যন্ত্রনায় কেটে যায়।”
ত্রয়ী মনে মনে কথাগুলো বলতে বলতে হাঁটার গতি বাড়াল। শীর্ষও তার সাথে সাথে জোরে হাঁটা ধরল। হাঁটতে হাঁটতে বলল,
“আপা কি অলিম্পিকে হাঁটার কোনো প্রতিযোগিতায় যাবেন আপা? হাঁটার যা গতি তাতে তো তাই মনে হচ্ছে।”
ত্রয়ীর মেজাজ গরম হলো। চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালো সে। রাস্তাঘাটে এই মুহূর্তে মানুষ নেই তেমন। ত্রয়ী পায়ের জুতো জোড়া খুলে হাতে নিল। অতঃপর কোনোকিছু না ভেবেই হুট করে দৌড় লাগালো বাড়ির দিকে। শীর্ষ হতবাক হলো। কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল কি হয়েছে তা বুঝতে। এরপর সেও দৌড় শুধু করল ত্রয়ীর পিছু পিছু। দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,
“আপা দাঁড়ান, আপা দাঁড়ান।”
ত্রয়ী দাঁড়াল না। এক দৌড়ে এসে ঢুকলো বাড়ির ভিতরে। শীর্ষ দৌড়ে এসে থামল বাড়ির অভিমুখে। বাড়ির দিকে তাকিয়ে হাঁপাতে লাগলো সে। মেয়েটা আগের তুলনায় ধুরন্ধর হয়েছে বেশ। আগে তো ত্রয়ী এমন ছিল না। আগের ত্রয়ী আর এখনকার ত্রয়ীর মধ্যে বিস্তর ফারাক। মেয়েটা আগে ছিল বলদ, ন’র’ম। আর এখন তার পাখনা গজিয়েছে। চালাক হয়ে গেছে।
শীর্ষ ঢুকলো বাড়ির ভিতরে। আলভী, রবি বসার কক্ষেই বসে আছে। নয়ন এসেছে ঢাকা থেকে তাদের জামা কাপড় নিয়ে। নয়নকে সেদিন ঢাকা পাঠাল জামা কাপড় আনতে। যেখানে পরের দিনই তার আসার কথা সেখানে আজ এসেছে। শীর্ষরা এত দিন এর ওর জামা কাপড় পড়ে কাটিয়েছে। আবার দুই একটা কিনেছেও। শীর্ষ নতুন পোশাক কিনবে না বলে নয়নকে ঢাকা পাঠালো অথচ তাকে সেই নতুন পোশাক কিনতেই হলো। শীর্ষ এগিয়ে এসে বসলো নয়নের পাশে। তার কাঁধে হাত রেখে বলল,
“কি রে এত তাড়াতাড়ি ফিরলি যে? আর দুই চারদিন পর ফিরতি। বেশি তাড়াতাড়ি ফেরা হয়ে গেল না?”
নয়ন আমতা আমতা করে বলল,
“না মানে….বড়ো স্যার অর্থাৎ আপনার বাবা আটকে দিয়েছিলেন। আপনিও নেই উনি একা সব কাজ সামলাতে পারছিলেন না তাই আর কি।”
“তাহলে না এলেও তো পারতি। মিস্টার সোহাগ আসবেন বোধহয়। তাকে এয়ার পোর্ট থেকে আনা থেকে শুরু করে সব তো তোকেই করতে হবে। তুই তার একমাত্র ভালোবাসার মানুষ বলে কথা।”
নয়নের চমকাল, ভরকাল। মিস্টার সোহাগ আবার ফিরে আসছে? না, না সে ঢাকা যাবে না। নয়ন ঢোক গিললো। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলল,
“না, না আমি আর ঢাকা ফিরবো না স্যার। প্রয়োজনে এখানে করো বাসায় চাকরের কাজ করব। তবুও ঢাকা ফিরবো না।”
শীর্ষ নয়নের ঘাড় চেপে ধরল। কটমট করে বলল,
“ফিরতে তো তোকে হবেই। আর চাকরও বানাবো তবে অন্য কারোর না। বরং মিস্টার সোহাগের।”
বিকালের সময়। আকাশের সূর্যটা ইতোমধ্যে ঢলে পড়েছে একদিকে। শীর্ষ দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাদের এক কোনে। হঠাৎ তার হাতের মোবাইলটা বেজে উঠল। রিমা কল করেছে। শীর্ষের যখন প্রায় পাঁচ বছর তখন রিমার জন্ম। রিমা যেদিন জন্মগ্রহণ করেছিল সেদিন কতই না খুশি হয়েছিল সে। কত আদরের বোন ছিল তার! আর আজ, কথাও হয় না। কথা বলতেও ইচ্ছা হয় না। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো শীর্ষ। একবার ভাবলো কলটা ধরবে না। পরে আবার ভাবলো সে এখন ঢাকায় নেই। যদি বাড়িতে কোনো বিপদ আপদ হয়ে থাকে তখন! বাড়ির মানুষের সাথে যতই রাগ অভিমান থাকুক না কেন। তাদের বিপদ আপদে আপনজন হিসেবে তাদের পাশে থাকাটা তার কর্তব্য। শীর্ষ কলটা ধরল। কানের কাছে মোবাইল নিয়ে বলল,
“হ্যা, রিমা বল।”
রিমা আমতা আমতা করে বলল,
“কেমন আছিস ভাইয়া।”
“ভালো।”
“আমাকে জিজ্ঞেস করবি না কেমন আছিস।”
“ভালোই আছিস নয়তো কল দিতে পারতি না।”
রিমার রাগ লাগলো। ত্রয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে সেই কবে। অথচ শীর্ষ এখনো তাদের সাথে ঠিকভাবে কথা বলে না। সব হয়েছে ঐ মেয়েটার জন্য, সব দোষ ঐ মেয়েটার। রিমা কিছুটা রুক্ষ কণ্ঠেই বলল,
“ঐ সামান্য মেয়েটাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি বলে এত রাগ আমাদের উপর?”
শীর্ষ দাঁতে দাঁত পিষে বলল,
“ও কোনো সামান্য মেয়ে নয়। ও আমার বউ ছিল।”
“কিন্তু তোর বউ হওয়ার কোনো যোগ্যতাই ছিল না ওর।”
শীর্ষ হাসলো। ওষ্ঠ বাঁকিয়ে বলল,
“তা তো আমার বোন হওয়ার যোগ্যতা তোরও নেই। তবুও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তুই আমার বোন।”
“ভাইয়া!”
“তুই যদি এসব বলার জন্য আমাকে কল করে থাকিস তাহলে রাখছি আমি। তোর সাথে এসব বিষয়ে কথা বলার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।”
রিমা ব্যস্ত হলো। তাড়াহুড়ো করে বলল,
“ত্রয়ীর থেকে ভালো মেয়ে পাবি তুই, ভাইয়া। আমার বান্ধবী শিলা তোমাকে ভালোবাসে। ও সুন্দরী, শিক্ষিত, ভালো একটা পরিবারের মেয়ে। আর ত্রয়ী! ঐ তো শুধু একটু সুন্দরী। আর কি আছে ওর?”
শীর্ষের মেজাজ বিগড়ালো। ইচ্ছে হলো মোবাইলের ভিতর থেকেই ঠাঁটিয়ে রিমাকে দুইটা থা’প্প’ড় দিতে। কিন্তু সে কিছুই বলল না। ধপ করে কেটে দিল কলটা। ক্রোধে শরীরটা রি রি করছে। শীর্ষ রাগে গজগজ করতে করতে পিছন ঘুরে তাকালো। দেখা পেল ত্রয়ীর। মাথায় ঘোমটা দিয়ে কাপড় তুলছে। সাথে সাথে তার ভিতরের সব ক্রোধ, বিরক্তিভাব যেন উবে গেল। দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়াল সে। ওষ্ঠ বাঁকিয়ে বলল,
“কি আপা, কাপড় নিতে এসেছেন?”
ত্রয়ী তাকালো না। শীর্ষ ফের বলল,
“আপা আপনার পিছনের দিক থেকে দেখতে একদম আমার বউয়ের মতো লাগে। ইচ্ছে করে জাপটে ধরে দুই চারটা চু’মু খাই।”
এই টুকু বলে থামল সে। ত্রয়ীর দিকে একটু এগিয়ে এসে বলল,
“বউয়ের মতো যখন দেখতে তখন বউ মনে করে দুই চারটা চু’মু তো খাওয়াই যায়। তাই না আপা?”
ত্রয়ী নাক মুখ কোঁচকাল। সে বেশ ভালোভাবেই বুঝলো এই শীর্ষ তাকে চিনে ফেলেছে। নয়তো সকাল থেকে এমন ব্যবহারের কোনো মানে হয় না। বাড়িতে তো তৃপ্তিও আছে। কই তার সাথে তো এমন ব্যবহার করে না শীর্ষ। শুধু তার সাথেই এমন করছে। ত্রয়ী মাথার কাপড়টা ফেললো। এবার ঘোমটাহীন ভাবেই তাকাল শীর্ষের দিকে। রুক্ষ কণ্ঠে বলল,
অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ৯
“সমস্যা কি আপনার? এমন করছেন কেন?”
শীর্ষ বাঁকা হাসলো। এগিয়ে এলো ত্রয়ীর কাছে। এরপর এক হাত দিয়ে মেয়েটার কোমড় চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। শিউরে উঠল ত্রয়ী। হৃদ কম্পন গাঢ় হলো পূর্বের তুলনায়। নিজেকে শীর্ষের বন্ধন থেকে মুক্ত করতে ব্যস্ত হয়ে উঠল সে। কিন্তু শীর্ষ ছাড়লো না। উলটো আরও গভীরভাবে জড়িয়ে নিল নিজের সাথে। এরপর একটু ঝুঁকে মেয়েটার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“সমস্যা হলো তুই আমার থেকে দূরে যেতে চাচ্ছিস আর আমি তোর কাছে।”