অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৬

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৬
সাদিয়া শওকত বাবলি

শীর্ষ এক পলক তাকাল ত্রয়ীর দিকে। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“জ্বি আঙ্কেল। আপনাদের সাথে আমার জরুরি কিছু কথা আছে।”
“জ্বি, বলো।”
ত্রয়ী পাশেই এক কোনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হৃদয়ে শঙ্কারা বাসা বেঁধেছে তার। শীর্ষ সবাইকে কি বলার জন্য ডেকেছে এখানে? তার অতীত, তার সাথে শীর্ষের বিয়ে সবটা সবাইকে বলে দিবে না তো?
শীর্ষ একবার তাকাল ত্রয়ীর দিকে। অতঃপর সোহরাব হোসেনকে বলল,
“এই যে আপনার মেয়ে ত্রয়ী। ও আপনাদের বাড়িতে আসার পূর্বে কোথায় ছিল, কিভাবে ছিল, কেমন ছিল কিছু জানেন আপনারা?”

ত্রয়ী যে ভয়টা পাচ্ছিল তাই হলো। শীর্ষ তার অতীত নিয়ে টানাটানি করারই পাঁয়তারা করছে। মেয়েটা ব্যস্ত হলো। শীর্ষকে আটকাতে বলল,
“কিন্তু আমি….”
ত্রয়ী সম্পূর্ণ কথাটা শেষ করতে পারল না। তার আগেই সোহরাব হোসেন বললেন,
“যতদূর জেনেছি বা শুনেছি ত্রয়ী ছোট বেলা থেকে ওর দাদীর কাছে ছিল। তিনিই ওকে মানুষ করেছেন। এরপর তিনি মা’রা গেলে ওকে ওর এক চাচা নিয়ে যান। তিনি সম্ভবত ঢাকা থাকেন‌।”
তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো শীর্ষ। ধীর কণ্ঠে বলল,
“আমিই ওর সেই চাচার ছেলে। আপনাদের বাড়িতে আসার পূর্বে ও আমাদের বাড়িতে ছিল।”
শীর্ষের কথা শুনে অবাক হলো সোহরাব হোসেন এবং বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা। আলেয়া বেগম অবাক স্বরেই বললেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“তোমাদের বাড়িতে?”
“হ্যা, আর সবচেয়ে বড়ো কথা আপনাদের এই মেয়েটির সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সে সেই সম্পর্ককে উপেক্ষা করে আমাকে ছেড়ে চলে এসেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য তারও দোষ নেই। দোষ আমার ভাগ্য এবং আমার মা বোনের।”
শীর্ষের প্রতিটি কথা যেন বজ্রপাতের ন্যায় পড়ল উপস্থিত সকলের মধ্যে। সবাই হতবাক হয়ে একবার তাকাল ত্রয়ীর দিকে। পরপর আবার ফিরে তাকাল শীর্ষের দিকে।

ত্রয়ী মেয়েটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। ভয় হচ্ছে তার। এত বড়ো একটি সত্যি জানার পর এ বাড়ির লোকেরা কি করে কে জানে! তারা আবার তাকে জোরজবরদস্তি করে শীর্ষের সাথে পাঠিয়ে দিবে না তো? ত্রয়ী আর ঐ বাড়িতে ফিরতে চায় না। হ্যা, শীর্ষ কিছু ভুল করেছে, তাদের বিয়ের কথা বাড়ির লোকদের না জানিয়ে ভুল করেছে। সে যদি আগে থেকেই বাড়ির লোকদের সবকিছু জানিয়ে দিতো তাহলে তার মা বোন হয়তো ঐ দিন তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতো না। তবে এতকিছুর পরেও একটা কথা স্বীকার করতে হবে ঐ বাড়ির সকলের চেয়ে শীর্ষ তাকে সর্বাধিক ভালোবাসা দিয়েছে, গুরুত্ব দিয়েছে, অবহেলা করেনি কখনো। আর সেও শীর্ষকে ভালোবেসেছিল, এখনো বাসে।

কিন্তু শীর্ষের মা বোন তো তাকে পছন্দ করে না। ফাহমিদা বেগম প্রথম দিকে একটু ভালোবাসা দিলেও রিমা প্রথম থেকেই তাকে পছন্দ করে না। এমন একটি সংসারে গিয়ে কি ত্রয়ী সুখ পাবে? স্বামীর সুখই কি সবটা? ত্রয়ী ছোটবেলা থেকেই পরিবার পায়নি। মা বাবা হীনা একা একা দাদীর কাছে বড়ো হয়েছে। মেয়েটার বড়ো স্বপ্ন ছিল সে বিয়ের পর একটি সুন্দর পরিবার পাবে। স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দেবর, ননদদের নিয়ে সুন্দর এবং বড়ো একটি সংসার পাবে। সবাই তাকে ভালোবাসবে। কিন্তু এ পরিবারে শ্বাশুড়ি, ননদই তো তাকে পছন্দ করে না। ত্রয়ীর এতসব ভাবনার মধ্যেই হঠাৎ শুনতে পেল সোহরাব হোসেনের কণ্ঠস্বর,

“তুমি ঠিক কি বলতে চাইছো খুলে বলো। এভাবে অর্ধেক কথা বললে তো আমি কিছুই বুঝবো না।”
শীর্ষ আস্তে ধীরে সবটা খুলে বলতে শুরু করল। ত্রয়ীর তাদের বাড়িতে আসা, গ্রামে গিয়ে চাপে পড়ে বিয়ে, তার পরবর্তী সময় এবং তার মা বোনের ত্রয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া কিছুই লুকালো না বেচারা। সবশেষে বলল,
“আমি জানি আঙ্কেল আমার কিছু ত্রুটি রয়েছে। আমি ওকে আমার পরিবার থেকে রক্ষা করতে পারিনি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি ওকে ভালবাসি না বা চাই না। ছয় মাস পূর্বে ও যখন আমাকে ছেড়ে চলে এলো আমি তখন পা’গ’ল প্রায়। কত খুঁজেছি ওকে। কোথাও পাইনি। শেষে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় দেখা হলো তামিমের সাথে। আর ওর বদৌলতে ত্রয়ীর সাথে।”

এই টুকু থামল শীর্ষ। দম নিয়ে ফের বলল,
“আমি একবার যখন ত্রয়ীকে খুঁজে পেয়েছি। ওকে আর হারাতে চাইছি না। ওকে আমার সাথে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছি।”
সোহরাব হোসেন দ্বিধায় পড়লেন। এই মুহূর্তে তার কি করা উচিত কিন্তু কি করবেন কিছুই ভেবে পেলেন না। ত্রয়ীকে তিনি নিজের মেয়ে হিসেবে এ বাড়িতে এনেছিলেন। মেয়েটির অতীতে কি ঘটেছিল বা এই বিয়ের কথা কিছুই তিনি জানতেন না। মাত্রই জানলেন। এখনই কি শীর্ষের সাথে ত্রয়ীকে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত হবে? শীর্ষ ত্রয়ীর স্বামী। সে হিসেবে তার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে মেয়েটাকে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু মেয়েটা কি যেতে ইচ্ছুক? যদি ইচ্ছুক থাকতো তবে নিশ্চয়ই ও বাড়ি থেকে চলে আসতো না। আর এতদিন ধরে তার আতীতও তাদের থেকে লুকিয়ে রাখতো না। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললেন সোহরাব হোসেন। তাকালেন ত্রয়ীর দিকে। কোমল স্বরেই শুধালেন,

“তুমি কি চাও মা? তুমি কি শীর্ষের সাথে ওর বাড়িতে ফিরে যেতে চাও?”
ত্রয়ী জোরে একটি নিঃশ্বাস নিল। অতঃপর বেশ দৃঢ়তার সাথেই জবাব দিল,
“না, যে বাড়িতে আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে সে বাড়িতে আমি আর ফিরে যেতে চাই না।”
শীর্ষ ব্যস্ত হলো। কিছুটা অস্থির কণ্ঠে বলল,
“কিন্তু এখানে আমার দোষ কোথায়? আমি তো তোকে বাড়ি থেকে বের করে দেইনি, তোকে অপমানও করিনি। তাহলে তার শাস্তি আমাকে কেন দিবি? তারপর তুই যদি চাস তাহলে আমি তোকে নিয়ে আলাদা থাকবো। ও বাড়িতে ফিরবো না।”

“এভাবে সংসার হয় না। ছোটবেলা থেকে আমি একা একা দাদীর কাছে বড়ো হয়েছি। কখনো সুন্দর একটি পরিবার পাইনি। তাই সর্বদাই আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল সুন্দর একটি পরিবারের। স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ননদদের নিয়ে বড়ো একটি সংসারের। যদিও আমার ইচ্ছা অনুযায়ী তেমন একটি সংসার আমি পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার শ্বাশুড়ি এবং ননদ আমাকে পছন্দ করেন না।”
এই টুকু বলে থামল ত্রয়ী। একটু সময় নিয়ে ফের বলল,

“তাছাড়া আপনাকে নিয়ে আলাদা থাকা মানে আপনাকে আপনার মা-বাবা এবং পরিবার থেকে কেড়ে নেওয়া। বাবা-মা এবং পরিবার ব্যতীত থাকার কষ্ট আমি বুঝি। আমি চাই না আপনার বাবা-মা কিংবা পরিবার থেকে আপনাকে কেড়ে নিতে এবং যে কষ্ট আমি পেয়েছি তা আপনাকে দিতে।”
“আমি এমনিও ঐ বাড়িতে আমার পরিবারের কাছে থাকি না। যেদিন ওই বাড়ি থেকে তোকে বের করে দেওয়া হয়েছিল সেদিনই আমিও ওই বাড়ি ছেড়েছি।”
সোহরাব হোসেন ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেললেন। ত্রয়ীর দিকে তাকিয়ে শুধালেন,
“তোমার সমস্যা শুধু শীর্ষের মা বোনকে নিয়ে। এ ছাড়া তো আর কোনো সমস্যা নেই তাই না?”
“না।”

সোহরাব হোসেন আস্বস্ত হলেন ত্রয়ীর জবাবে। তিনি ফিরে তাকালেন শীর্ষের দিকে। ধীর কণ্ঠে বললেন,
“দেখো বাবা, একটি পরিবারের মূল ভিত্তিই হলো বাবা-মা। তোমার পরিবারেও নিশ্চয়ই তার ব্যতিক্রম নয়। সেই পরিবারে আমি আমার মেয়েকে পাঠব অথচ তোমার মা-ই তাকে পছন্দ করেন না। তাছাড়া তুমি এখনো তরুণ। তুমি এসে বললে ত্রয়ীকে নিয়ে যেতে চাও আর আমিও তোমার ভরসায় মেয়েটাকে ছেড়ে দিলাম, এটা হয় না। তুমি বরং তোমার পরিবারের সাথে কথা বলো। তোমার বাবা মাকে নিয়ে এসো। আমি কথা বলি তাদের সাথে। তারপর না হয় একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে।”
“কিন্তু আঙ্কেল….”

সম্পূর্ণ কথাটা বলার পূর্বেই শীর্ষকে থামিয়ে দিলেন সোহরাব হোসেন। কণ্ঠে জোর দিয়ে বললেন,
“তোমার বাবা মাকে নিয়ে এসো। তাদের সাথে কথা না বলে আমি কিছু বলতে পারছি না।”
শীর্ষ হতাশার নিঃশ্বাস ফেলল। এখন আবার ঢাকায় যেতে হবে তাকে। আব্দুর রহমান খান কখনোই তার বিরোধিতা করবেন না কিন্তু ফাহমিদা বেগম কি করেন কে জানেন? তিনি আদৌও ত্রয়ীকে মেনে নিতে রাজি হবে তো? নাকি এখনো সেই আগের মতোই মেয়েটাকে অপমানের উদ্দেশ্যে মরিয়া হয়ে উঠবেন?

সুন্দর সোনালী দিন। চারদিকটা ব্যস্ততায় ভরে উঠেছে। শহুরে জীবন আবারও জর্জরিত হয়ে পড়েছে কোলাহলের ছায়ায়। রিমা কলেজে এসেছে। আজ একাই ঘুরছে ক্যাম্পাসে। শিলার সাথে আর আগের মতো সেই সম্পর্কটা নেই। অবশ্য সম্পর্ক তো দূরে থাক দুজন দুজনের সাথে কথাই বলে না এখন আর। বন্ধুত্ব থেকে এখন তারা দুজন দুজনের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিমা এদিক ওদিক তাকাতে তাকতে হঠাৎ তার পিছন থেকে ডাক পড়ল। ঘুরে তাকাল মেয়েটা। দেখা পেল সাহেদের। রিমার ওষ্ঠে হাসি ফুটে উঠল তৎক্ষণাৎ। পা চালিয়ে এসে দাঁড়াল তার মুখোমুখি। নম্র কণ্ঠে শুধাল,

“কেমন আছেন, স্যার?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি?”
“আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তা কিছু বলবেন স্যার?”
সাহেদ হাসলো। ধীর কণ্ঠেই বলল,
“শীর্ষ কোথায়? ওকে দেখছি না অনেকদিন।”
“ভাইয়া যেন কোথায় গিয়েছেন। আমি সঠিক জানি না, স্যার।”
এই টুকু বলে থামল রিমা। দম নিয়ে ফের বলল,
“কেন ভাইয়ার সাথে কি কোনো প্রয়োজন ছিল আপনার?”
“হ্যা।”
রিমা ইতস্তত করে শুধাল,

“কি প্রয়োজন? আমার কাছে কি বলা যাবে? না মানে আমার কাছে বললে আমি আবার ভাইয়ার কাছে বলে দিতাম। তাহলে ভাইয়া আপনার সাথে দ্রুত যোগাযোগ করতো।”
সাহেদ বাঁকা চোখে তাকাল রিমার দিকে। ওষ্ঠের কোনে হাসি ঠেলে বলল,
“কেন বলা যাবে না। নিশ্চয়ই বলা যাবে। আসলে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। ঐ বিষয়েই শীর্ষের সাথে আমার একটু দরকার দিল। হাজার হলেও ও আমার বন্ধু মানুষ।”

রিমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল সাহেদের কথায়।‌ বিস্ময়ে, যাতনায় স্তব্ধ হয়ে পড়ল সে। সাহেদের বিয়ে মানে কি? আর কার সাথেই বা বিয়ে। সে যার সাথেই হোক না কেন রিমার সাথে নয় এটুকু তো নিশ্চিত। রিমার হৃদয় ভেঙ্গে এলো। দহনের আগুন প্রজ্বলিত হলো যেন তড়িঘড়ি করে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে তার। এতদিন ধরে যে পুরুষকে ভালোবেসে এসেছে, যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে এসেছে। আজ সেই পুরুষেরই কিনা বিয়ে তাও অন্য নারীর সাথে? রিমা কি করে মেনে নিবে এটা। সাহেদ হয়তো রিমার মুখ দেখে বুঝলো তার মনের কথা। তার হৃদয়ের যন্ত্রণাকাকে আরেকটু বাড়িয়ে দিতে বলল,

“আমার বিয়েতে কিন্তু তোমরা সপরিবারে আসবে। সবার দাওয়াত থাকবে। বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়নি এখনো। ছাপানো হলে আমি নিজ দায়িত্বে তোমাদের কাছে পৌঁছে দিবে। আর হ্যা শীর্ষকে বলো আমার সাথে যোগাযোগ করতে। ওর সাথে একটু দরকার আছে। এখন তাহলে আসছি আমি।”

কথাগুলো বলেই সাহেদ পিছন ঘুরে হাঁটা ধরল। শীর্ষের সাথে তেমন কোনো প্রয়োজন ট্রয়োজন তার নেই। শুধুমাত্র তার বিয়ের কথাটা রিমার কান অব্দি পৌঁছে দেওয়ার জন্য শীর্ষের নামটা ব্যবহার করল সে। নয়তো শীর্ষের সাথে তার কোনো কালেই এমন মাখো মাখো সম্পর্ক ছিল না যে বিয়ের কার্ড ছাপানোর আগেই একদম নিজে যেচে এসে দাওয়াত দিয়ে যাবে তাকে। রিমা ত্রয়ীর সাথে যে কাজটি করেছিল সেজন্য তার একটি শাস্তি পাওয়া প্রয়োজন ছিল। আর ত্রয়ীকে অপমান, তাকে বাড়ি ছাড়া করার ঘটনাটা যখন সাহেদকে কেন্দ্র করেই ঘটিয়েছিল মেয়েটা তখন সাহেদ চেয়েছিল সে নিজেই রিমাকে এর একটা শাস্তি দিবে। আর দিয়েও দিল।

ভালোবাসার মানুষের অন্যত্র বিয়ে এ সংবাদ কারো পক্ষেই মানা সম্ভব নয়। সে হিসাবে রিমার পক্ষেও সম্ভব হবে না। গভীর যন্ত্রণায় নিপতিত হবে সে। দহনের আগুন জ্বলে উঠবে হৃদয়ে যেমনটা হয়েছিল ত্রয়ী এবং শীর্ষকে আলাদা করার বেলায়। ত্রয়ী এবং শীর্ষ তো এতদিন ধুকলো, কষ্ট সহ্য করল। এবার না হয় সে কষ্ট রিমাও সহ্য করুক। একটু বুঝুক ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণাটা কি। যদিও শিলার ভাষ্যমতে রিমা সাহেদকে ভালোবাসে না। সাহেদ শুধুমাত্র তার জেদ। সেক্ষেত্রেও সাহেদের বিয়ের সংবাদে জেদ ভাঙার চড়ম আক্রোশে পড়বে রিমা। কিন্তু সে আক্রোশ মিটানোর মতো কিছুই করার থাকবে না তার। শুধু নিজের ভিতরে আবদ্ধ করে রাগে, জেদে ফুঁপিয়ে উঠবে।

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৫

সাহেদ চলে গেল। রিমা কাঠের পুতুলের ন্যায় দাঁড়িয়ে রইল ঐ স্থানেই। এখনো যেন তার বিশ্বাস হচ্ছে না সাহেদের কথাগুলো। ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। এ কোন পাপের শাস্তি সে পাচ্ছে? তবে কি ত্রয়ীর সাথে করা অন্যগুলোর শাস্তিই ফিরে আসছে তার কাছে? এখন রিমা কি করবে? কোথায় যাবে? কার কাছে যাবে? ভালোবাসা হারানোর এ তীব্র ব্যথা সে সইবে কিভাবে? রিমার ইচ্ছে হলো এখনই এখানে বসে পড়তে। চিৎকার করে কেঁদে উঠতে।

অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ১৭