অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ২১
সাদিয়া শওকত বাবলি
শীর্ষ প্রায় সাথে সাথেই ঝুঁকে গেল ত্রয়ীর দিকে। ফিসফিসিয়ে বলল,
“তোর ঐ ছোট ছোট দাঁত দিয়ে মাংসের হাড্ডি চিবুতে পারবি তো, নাকি চিবিয়ে দেব? তুই আমার অর্ধাঙ্গিনী বলে কথা। এই টুকু সাহায্য তো তোকে আমি করতেই পারি।”
ত্রয়ী বিষম খেল যেন। এই লোক আর কোনোদিন ভালো হলো না। শেষ পর্যন্ত কিনা এখন হাড়ও চিবিয়ে দিতে চাইছে? বজ্জাত লোক একটা। ত্রয়ীর ইচ্ছা হলো রেগেমেগে কিছু বলতে কিন্তু এই বিয়ের আসরে বলতেও পারল কিছু। শীর্ষ ওষ্ঠ বাঁকিয়ে হাসলো। ফিসফিসিয়ে বলল,
“তুই তো জানিসই আমার দাঁতে ধারের অভাব নেই। এসব হাড্ডি টাড্ডি আমার দাঁতের সামনে কিছুই না। তুই একবার বলে দেখ শুধু এই হাড্ডি না, দরকার পড়লে হাড্ডির সাথে তোকেও চিবিয়ে খেয়ে ফেলবো।”
ত্রয়ী বলল না কিছুই। শুধু কটমট করে একবার তাকাল শীর্ষের দিকে। শীর্ষ শরীর দুলিয়ে হাসলো। আর খ্যাপালো না মেয়েটাকে। চুপচাপ নিজের খাবারে মনোযোগ দিল।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
খাওয়া দাওয়ার পাঠ চুকিয়ে এখন বিদায় বেলা। মেয়েদের আসলে নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। এরা শৈশব থেকে যৌবন অব্দি কাঁটায় বাবার বাড়িতে, যৌবন থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত স্বামীর বাড়িতে, আর তারপর তার স্থান হয় সন্তানদের বাড়িতে। প্রতিটি মেয়েকেই বিয়ের পর বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে হয়। এটাই সমাজের নিয়ম। যদিও এটা ত্রয়ীর বাবার বাড়ি নয় তবে এরা তাকে কখনো আপনের থেকে কম ভাবেনি। এই কয় মাস সোহরাব হোসেন বেশ সূক্ষ্মভাবেই ত্রয়ীর বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন। কখনো মেয়েটিকে বুঝতে দেয়নি যে তার বাবা নেই। এই যে আজ ত্রয়ীর এত বড়ো করে, ধুমধামের সাথে বিয়ে হলো সবটাই তো সম্ভব হয়েছে ঐ মানুষটার জন্য। আর বাড়ির অন্য লোকগুলো, তারাও কম যায় না।
ত্রয়ীকে সব সময় আগলে রেখেছে তারা। মেয়েটার ভালো মন্দের, খারাপ লাগা, ভালো লাগা সব কিছুর খেয়াল রেখেছে। মাত্র এই কয় মাসেই ত্রয়ীর ভীষণ মায়া জন্মে গেছে এই বাড়ির মানুষ গুলোর উপরে। অথচ আজ তাদেরই আবার ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে মেয়েটার। ত্রয়ী আলেয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল। আলেয়া বেগমও আবেগী হয়ে পড়লেন। ছোটবেলা থেকে এই মেয়েটিকে তিনি কম কষ্ট দেননি। মা হয়েও মেয়ের কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। উলটো ফেলে রেখেছিলেন অন্যের লাথি, উস্টা খাওয়ার জন্য। আজ যখন এতদিন পর মেয়েটিকে নিজের কাছে আনলেন তাও ধরে রাখতে পারলেন না। সমাজের নিয়মে বাঁধা পরে তাকে বিদায় দিতে হচ্ছে। আলেয়া বেগমও মেয়েকে জড়িয়ে নিলেন নিজের সাথে। কেঁদে উঠলেন শব্দ করে। তৃপ্তিও পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। চোখ ফেটে বেরিয়ে আসছে নোনাজল, স্রোতের ন্যায় গাল বেয়ে পড়ছে নিচে। তবে সে কান্নার কোনো শব্দ হচ্ছে না। রবি এগিয়ে গেল। সন্তর্পণে দাঁড়াল তৃপ্তির পাশে। কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলল,
“মঞ্জলিকাকে চেনো?”
তৃপ্তি কিছুটা অবাক হলো। অশ্রুসিক্ত নয়নেই সে তাকাল রবির দিকে। মৃদু স্বরে শুধাল,
“মঞ্জলিকা কে?”
“তোমার যমজ বোন। এই মুহূর্তে তোমাকে দেখতে একদম তার মতো লাগছে।”
এই টুকু বলেই তড়িঘড়ি করে সে কেটে পড়ল ওখান থেকে। তৃপ্তি নিজের মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ করল। বোঝার চেষ্টা করল এই মঞ্জলিকাটা আবার কে। হঠাৎ তার খেয়ালে এলো মঞ্জলিকা তো একটি সিনেমার ভৌতিক চরিত্রের নাম। মঞ্জলিকার কথা স্মরণে আসতেই তৃপ্তির অক্ষিপটে ভেসে উঠল এলোমেলো চুলের কপালে লেপ্টে যাওয়া বড়ো টিপ ধারণ করা এক নারীর চেহারা, সে নারীর চোখের নিচের কাজল লেপ্টেও বিশ্রী একটি আকার ধারণ করেছে। তৃপ্তি কান্না ভুলে গেল। চোখ বড়ো বড়ো হয়ে মুহুর্তেই। লোকটা কি বলে গেল? তাকে মঞ্জলিকার মতো লাগছে? অমন এলোমেলো চুলের লেপ্টে যাওয়া কাজলের ভু’তে’র মতো? তৃপ্তি কটমট করে তাকাল আশেপাশে। রবিকে আর চোখে পড়ল না। সে তৃপ্তিকে খ্যাপিয়ে দিয়ে ইতোমধ্যে কেটে পড়েছে।
বেশ কিছুটা সময় কেটে গেলেও ত্রয়ীদের কান্না থামল না। আব্দুর রহমান খান ইতস্তত করলেন। হাতঘড়িতে সময় দেখতে দেখতে সোহরাব হোসেনকে বললেন,
“আমাদের এখন রওনা হওয়া উচিত। এমনিই অনেক দূরের পথ।”
সোহরাব হোসেন দ্বিরুক্তি করলেন না। সত্যিই এখন তাদের বেরিয়ে পড়া উচিত। তিনি এগিয়ে গেলেন আলেয়া বেগম এবং ত্রয়ীর দিকে। নরম স্বরেই স্ত্রীকে বললেন,
“ওকে ছাড়ো এখন। অনেকটা পথ যেতে হবে ওদের।”
আলেয়া বেগম তৎক্ষণাৎ ছাড়লেন না মেয়েকে। একটু সময় নিয়ে রয়ে সয়ে নিজের কান্না থামালেন তিনি। অতঃপর ত্রয়ীকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,
“ভালো থাকিস মা। আর কখনো নিজেকে একা মনে করবি না। কোথাও কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই আমাদের জানাবি। আমরা সব সময় তোর পাশে আছি।”
ত্রয়ীর কান্নার দমকও পূর্বের তুলনায় থেমেছে কিছুটা। সে মায়ের কথার উপরে বলল না কিছুই। শুধু একটু মাথা নাড়ালো। এরপর সোহরাব হোসেন আলতোভাবে ধরল মেয়েটির হাত। আস্তে ধীরে টেনে এনে দাঁড় করালেন শীর্ষের অভিমুখে। ত্রয়ীর হাতটা শীর্ষের হাতের উপরে দিয়ে বললেন,
“আমি হয়তো ওর জন্মদাতা পিতা নই। কিন্তু ওকে সব সময় আমার সন্তানের মতোই দেখেছি। আমি আমার দায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পেরেছি জানি না তবে তুমি কখনো আর তোমার দায়িত্ব থেকে পিছু হেঁটো না। মেয়েটাকে ভালো রেখো। ছোটবেলা থেকে ও কম কষ্ট পায়নি, এবার থেকে আর ওকে কষ্ট দিও না।”
শীর্ষ শক্ত করে ধরল ত্রয়ীর হাতটা। অভয় দিয়ে বলল,
“আপনি চিন্তা করবেন না আঙ্কেল। আমি আর কখনো ওকে কষ্ট পেতে দেব না। সব সময় ওকে ভালো রাখার চেষ্টা করব।”
রাত্রি এখনো খুব বেশি নয়। শহরের বুকটা আলোকিত হয়ে রয়েছে সোডিয়ামের কৃত্রিম আলোয়। ঘড়ির কাঁটায় টিকটিক ধ্বনি তুলে জানান দিচ্ছে কেবল রাত নয়টা। শীর্ষ এবং ত্রয়ী দাঁড়িয়ে রয়েছে খান বাড়ির সদর দরজার অভিমুখে। যাওয়ার সময় শীর্ষ গাড়িতে গেলেও আসার সময় ত্রয়ীকে নিয়ে প্লেনে এসেছে। তাই এত তাড়াতাড়ি এসে পৌঁছাতে পেরেছে। যদিও এখনো সবাই এসে পৌঁছায়নি। শীর্ষ, ত্রয়ী, আব্দুর রহমান খান এবং আর দুই একজন এসেছে প্লেনে। বাকিরা সবাই ধীরে ধীরে গাড়িতেই আসছে।
ত্রয়ী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে চারদিকটা। ছয় মাস পূর্বে সে যেমন দেখে গিয়েছিল সবটা এখনো তেমনই আছে। শুধু বিয়ে উপলক্ষ্যে পুরো বাড়ি সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। এ বাড়ির একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা। বাড়ির ছাদ থেকে একদম নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট মরিচ বাতির তার। লাল, নীল, হলুদ এবং সবুজ রং ধরে তা জ্বলে যাচ্ছে মিটিমিটি করে। ত্রয়ী দৃষ্টি ঘুরিয়ে তাকাল দরজার দিকে। দরজাটাও বেশ সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। সুন্দর কাঁচা ফুল দিয়ে যেন ঘিরে দেওয়া হয়েছে দরজার চারদিকটা। ত্রয়ী ভাবলো ভাগ্য কত বিচিত্রময়। এই বাড়ি থেকেই কোনো এক সন্ধ্যায় চোখে জল নিয়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। সেদিন এই বাড়িতে থাকার জন্য, একটু আশ্রয়ের জন্য কত কেঁদেছিল সে। অথচ কেউ তার কোনো কথা শোনেনি। আর আজ! আজ সেই বাড়ির অভিমুখেই ত্রয়ী দাঁড়িয়ে আছে বউয়ের সাজে। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো মেয়েটা। ফাহমিদা বেগম বরণ ডালা নিয়ে এগিয়ে এলেন দরজার দিকে। নিজের জা এবং ভাইয়ের বউদের নিয়ে হাসি মুখে বরণ করে ঘরে তুললেন ত্রয়ীকে। এরপর সবাই মিলে মাতলো বিয়ের বিভিন্ন নিয়ম কানুন রক্ষায়।
নিস্তব্ধ রজনী। শহরের বুকে প্রজ্বলিত আলো গুলো নিভে যেতে শুরু করেছে একটু একটু করে। খান বাড়িও ধীরে ধীরে নীরব হয়ে যেতে শুরু করেছে। ত্রয়ী বসে আছে শীর্ষের কক্ষের বিছানায়। গোলাপ, বেলী এবং রজনীগন্ধার মিশ্রণে কক্ষটা বেশ সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। কাঁচা ফুলের মিষ্টি গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিক। ত্রয়ী নজর ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকাল। বুকের মধ্যে কেমন ঢিপঢিপ শব্দ হচ্ছে তার। নিজেকে ভীষণ ভীত লাগছে। যদিও শীর্ষের সাথে আগেও সে এক ঘরে এক বিছানায় রাত কাটিয়েছে তবে সেসব রাতের সাথে আজ রাতের বিস্তর পার্থক্য। ত্রয়ীর ভাবনার মধ্যেই খট করে দরজা খোলার আওয়াজ এলো। ত্রয়ী আড়চোখে তাকাল, দেখল শীর্ষ এসেছে। বাড়ির ছোট সদস্যরা সবাই বরযাত্রীতে গিয়েছিল বিধায় এখনো এসে পৌঁছায়নি। আর শীর্ষের বাসরও আটকাতে পারেনি। শ্বশুর বাড়ি দূরে হওয়ায় আর যাই হোক এই উপকার টুকু শীর্ষের হলো। বাসরে ঢোকার জন্য আর কারো সাথে ক্যাচাল করতে হলো না। শীর্ষ লম্বা লম্বা পা ফেলে এসে দাঁড়াল বিছানার নিকটে। ত্রয়ী একটু নড়েচড়ে উঠে মাথা নুইয়ে নিল। শীর্ষ বসলো মেয়েটার পাশে। হতাশ কণ্ঠে বলল,
“একটা কথা জানিস বালির বস্তা?”
ত্রয়ী মাথা নুইয়ে রেখেই জবাব দিল,
“এককালে এক ব’ল’দী, মাথামোটা, গ’র্দ’ভ মেয়ের জন্য জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। আজ সেই ব’ল’দী’টা’ই আমার বউ।”
এই টুকু বলে থামল শীর্ষ। কেমন হইহই করে উঠে বলল,
“দেখ দেখ এখন কেমন মাথা নিচু করে বসে আছে আমার বিছানায়। তাও বাসর করার জন্য।”
ত্রয়ী অবাক হলো। সাথে মেজাজও গরম হলো কিছুটা। বাসর ঘরে ঢুকে বউয়ের সাথে কেউ এভাবে কথা বলে? আজ রাতে কোথায় বউয়ের সাথে একটু হেসে হেসে মিষ্টি কথা বলবে তা না। ত্রয়ী কটমট করল। বলতে চাইল কিন্তু। শীর্ষ তা বুঝেই উঠে দাঁড়াল। ঝটপট বলল,
“শোন বালির বস্তা, আজ আমাদের বাসার রাত। এই রাতে আমি তোর আজেবাজে কথা শুনতে একদম প্রস্তুত নয়। বিছানা থেকে ওঠ। শরীরে জড়ানো পোশাক বদলে ফ্রেশ হ। আমার বাসরে দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
ত্রয়ী অবাক হলো। সে আবার কখন আজেবাজে কথা বলল? যা বলার তা তো শীর্ষই বলল। সে শুধু শুনলো। তাকে এই বাসর ঘরে এসেও ব’ল’দী, মাথামোটা, গ’র্দ’ভ যা খুশি বলল এই পুরুষ। অথচ এখন আবার তার উপরেই সব দোষ চাপাচ্ছে? বজ্জাত, শ’য়’তা’ন লোক একটা। ত্রয়ী শীর্ষের কোনো কথার জবাব দিল না। চুপচাপ উঠে দাঁড়াল বিছানা থেকে। বাড়ি থেকে আনা লাগেজটা ঘেটে এক সেট নরম সুতি থ্রি পিস নিয়ে পা বাড়ালো ওয়াশ রুমের দিকে। শীর্ষ তৎক্ষণাৎ পিছু ডাকল তার,
“ওযু করে আসিস। আমাদের নতুন জীবনটা আমি সৃষ্টিকর্তার নামেই শুরু করতে চাই।”
ত্রয়ী কোনো জবাব দিল না। থ্রি পিসটা নিয়ে ঢুকলো ওয়াশ রুমে।
কিছুটা সময় নিয়ে ত্রয়ী বেরিয়ে এলো। এরপর শীর্ষও ঢুকলো ওয়াশ রুমে। ওযু করে দুজনে নামাজ সেড়ে নিল একসাথেই। এরপর যে যার জায়নামাজ গুছিয়ে রেখে বসলো বিছানায়। ত্রয়ী এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। এখন সে শুয়ে পড়বে নাকি বসে থাকবে দ্বিধায় পড়ে গেল। শীর্ষ চেপে বসলো মেয়েটির দিকে। হাত বাড়িয়ে চেপে ধরল মেয়েটির নরম সুঢৌল কোমড় খানা। শিউরে উঠল ত্রয়ী। শিরদাঁড়া বেয়ে যেন তার নেমে গেল শীতল রক্তস্রোত। ত্রয়ী হাঁসফাঁস করে উঠল। সরে যেতে চাইল দূরে। তবে শীর্ষ যেতে দিল না তাকে। শক্ত হাতে সে ত্রয়ীকে মিশিয়ে নিল নিজের সাথে। একটু ঝুঁকে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
“অনেক অপেক্ষা করিয়েছিস, আর না।”
ত্রয়ীর কান গরম হলো। লাজে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ল তার দুই গাল জুড়ে। শীর্ষ এবার মেয়েটিকে টেনে বসিয়ে দিল নিজের কোলে। মুখ গুজলো ঘাড়ে। আলতোভাবে চু’মু খেতে শুরু করল ঘাড়ে, গলায়, কপালে, নাকে এরপর দুই ওষ্ঠে। শীর্ষ ভীষণ যত্ন নিয়ে ত্রয়ীর দুই ওষ্ঠ নিল নিজ ওষ্ঠের ভাঁজে। প্রথমে মৃদুভাবে এরপর প্রবল উন্মাদনা নিয়ে শুষে নিতে লাগল স্ত্রীর ওষ্ঠের মধুসুধা। ত্রয়ীও সাড়া দিল স্বামীর আহ্বানে। ধীরে ধীরে শীর্ষের স্পর্শ আরও বেশামাল হলো। রাত বাড়ার সাথে সাথে বন্ধ কক্ষটা উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভারী নিঃশ্বাসের শব্দে। দুই নর নারীর ডুব দিল তাদের পূর্ণতার সাগরে।
অনুরাগে তুই দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ২০
রাতের আঁধার কাটিয়ে ভোরের দেখা মিলেছে। নিস্তব্ধ শহরটা জেগে উঠতে শুরু করেছে একটু একটু করে। ত্রয়ীর ঘুম ভাঙল এই ক্ষণে। একটু নড়েচড়ে উঠতেই সে নিজেকে আবিষ্কার করল কারো শক্তপোক্ত বাঁধনে। ত্রয়ী চোখ দুটো পিটপিট করে খুললো। দেখতে পেল শীর্ষ তাকে দুই হাতে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। মেয়েটা তাকাল শীর্ষের ঘুমন্ত মুখশ্রীর পানে। ঘুমন্ত অবস্থায় কি স্নিগ্ধই না লাগছে এই পুরুষের মুখশ্রী। মনে হচ্ছে যেন ভাঁজা মাছটা উলটে খেতে জানেন না। অথচ এর মুখ থেকে প্রতি মিনিটে মিনিটে বো’মা বের হয়। ত্রয়ীর ওষ্ঠে হাসি ফুটে উঠল। আলতোভাবে সে চু’মু খেল শীর্ষের কপালে। অতঃপর আস্তে ধীরে উঠে পড়ল বিছানা ছেড়ে। পা বাড়াল ওয়াশ রুমের দিকে। তখনই পিছন থেকে ভেসে এলো শীর্ষের ঘুম জড়ানো কণ্ঠস্বর,
“আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে চু’মু খেয়ে এখন পালিয়ে যাচ্ছিস?”