অনুরাগে তুই পর্ব ১২

অনুরাগে তুই পর্ব ১২
সাদিয়া শওকত বাবলি

তাকে মধ্যমা আঙ্গুলটা দেখাতে দেখাতে বলল,
“আবার আসিস। চান্দের দেশে ঘুরিয়ে আনবো বাল পাকনা ডিসের লাইন।”
শীর্ষের কথাটা শেষ হতে না হতেই ছেলেটা ফের তড়িঘড়ি করে বলল,
“শীর্ষ ভাই পুলিশ ভিতরে এসে পড়লো কিন্তু।”
শীর্ষ আর বাকিরা দেরি করল না। দ্রুত পা চালিয়ে বেরিয়ে গেল ক্লাবের পিছনের দিকের দরজা থেকে। সাকিব আর কায়সারও তাদের দলবলসহ পালালো শীর্ষের পিছুপিছু।

শহরের সবচেয়ে কোলাহল পূর্ণ স্থান। রাস্তাঘাটে যানবাহন এবং মানুষের ছড়াছড়ি। চারদিকে বড়ো বড়ো ভবন – ইমারতে ভরপুর। এই ভবনগুলোর মধ্যেই আট তলা একটি ভবনের পাঁচ তলায় আব্দুর রহমান খানের অফিস। আব্দুর রহমান খান নিজ কেবিনে বসেই কথা বলছিলেন মিস্টার সোহাগের সাথে। আজ আর লোকটা আগের দিনের মতো মিনি স্কার্টে নিজেকে সাজিয়ে আসেনি। আজ সে শার্ট প্যান্ট পড়েই এসেছে তবে চোখে মুখে মেকআপের ছাপ স্পষ্ট। কানে কানের দুলও আছে। মিস্টার সোহাগ আব্দুর রহমান খানের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই বলল,
“নয়ন কোথায়? ওকে দেখছি না যে।”
“আছে হয়তো আশেপাশে কোথাও।”
সোহাগ উঠে দাঁড়াল। হাত ঝাঁকিয়ে মেয়েলি সুরে বলল,
“আমাদের কথা তো প্রায় শেষই আঙ্কেল। আমি তাহলে নয়নের সাথে একটু দেখা করে আসি।”
আব্দুর রহমান খান কিছু বলবেন সে সুযোগ আর দিলো না সোহাগ। তার আগেই হেলেদুলে সে বেরিয়ে গেল কেবিন থেকে।
নয়ন নিজের টেবিলে বসেছিল। কলিগদের সাথে টুকটাক কাজ করছিল। এর মধ্যেই তার কর্ণে বজ্রের ন্যায় আঘাত হানলো সোহাগের কণ্ঠস্বর।
“হেই কিউট বয়!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নয়ন ধরফরিয়ে উঠল। বুকে থুথু দিয়ে তাকালো সামনের দিকে। সোহাগেকে তার দিকে আসতে দেখেই বুকটা কেঁপে উঠল নয়নের। এই প্রাণী আবার তার দিকে ধেয়ে আসছে কেন? আজ তো ভেবেছিল সে বেঁচে যাবে এর হাত থেকে। আব্দুর রহমান খানের সাথে কথাবার্তা সেড়ে চলে যাবে এই প্রাণী। কিন্তু চলে না গিয়ে এদিকে আসছে কেন? নয়ন চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল তৎক্ষণাৎ। দিশেহারা হয়ে পা বাড়ালো পালানোর জন্য। কিন্তু তার পালানো আর হলো না। তার আগেই সোহাগ দৌড়ে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়াল তার। জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বলল,
“কোথায় যাচ্ছিলে কিউটি? আমি তোমাকে ডাকছিলাম শোনোনি?”
নয়ন এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। জোরপূর্বক হেসে জবাব দিলো,
“আপনি ডাকছিলেন? এই দেখুন আমি একদম শুনতে পাইনি।”
“আমিও তাই ভেবেছি। তা কোথায় যাচ্ছিলে?”
নয়ন দাঁতে দাঁত পিষলো। বিরবিরিয়ে বলল,

“জাহান্নামে।”
বিরবিরিয়ে কথাটা বলায় শুনলো না সোহাগ। ভ্রু কুঁচকে সে শুধাল,
“কিছু বললে?”
নয়ন মেকি হেসে জবাব দিলো,
“ওয়াশ রুমে, ওয়াশ রুমে যাচ্ছিলাম।”
কথাটা বলেই সে কোমড় ভাঁজ করল। পেট চেপে বলল,
“একটু বেশিই চাপ দিয়েছে। আপনি বরং চলে যান। আমি ওয়াশ রুম হয়ে আসছি।”
সোহাগ গেল না। মিষ্টি হেসে বলল,
“সমস্যা নেই। তুমি ওয়াশ রুম থেকে বের হও। আমি এখানেই দাঁড়াচ্ছি।”
কথাটা শেষ হতে না হতেই নয়ন চ্যাচিয়ে উঠে বলল,
“আপনি দাঁড়াতে পারবেন না।”

আকস্মিক নয়নের চ্যাচানোতে ভরকে গেল অফিসের সবাই। গোল গোল চোখে তাকালো তার দিকে। নয়ন নিজেও অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো বেশ। আশেপাশে সকলের দিকে নজর বুলিয়ে ফের জোরপূর্বক হেসে বলল,
“আসলে আমার ওয়াশ রুমে সময় লাগে অনেক। ততক্ষণ আপনি দাঁড়াতে পারবেন না। পা ব্যথা হয়ে যাবে। তার থেকে বরং আপনি আজ চলে যান।”
সোহাগ এক পা কিঞ্চিৎ ভাঁজ করে আরেক পায়ের সাথে লাগালো। লাজুক স্বরে বলল,
“তোমার যতক্ষণ খুশি থাকো ওয়াশ রুমে। আমি এখানেই দাঁড়াচ্ছি। তোমার মতো কিউট ছেলেদের জন্য অপেক্ষা করতে আমার ভালোই লাগে।”
নয়নের কান্না পেল ভীষণ। এ কার পাল্লায় পড়লো সে। চিনা জোঁকের মতো পিছনে পড়ছে। ছাড়াছাড়ির কোনো নামই নিচ্ছে না। কিছুটা সময় অতিবাহিত হলেও নয়নকে ওয়াশ রুমে না যেতে দেখে ভ্রু কুঁচকাল সোহাগ। কপালে ভাঁজ ফেলে শুধাল,
“কি হলো ওয়াশ রুমে যাবে না তুমি?”
“হ্যা, হ্যা এই তো যাচ্ছি।”

নয়ন পেট চেপে ওয়াশ রুমে ঢুকলো। দরজাটা আটকে দেয়ালের সাথে কপালে ঠেকিয়ে দাঁড়াল। এই দিনও শেষ পর্যন্ত দেখার ছিল তার? এত বছর সিঙ্গেল জীবন কাটিয়ে কোথায় ভাবলো একটা সুন্দরী মেয়ের দেখা পাবে। তা না হয়ে দেখা দিলো মিস্টার সোহাগ। একে নয়ন ঠিক কি বলবে ভেবে পেল না। পুরুষ, নারী, তৃতীয় লিঙ্গ নাকি অন্য কিছু? এর চেহারা পুরুষদের মতো, গালে দাঁড়িও আছে। সাজ পোশাক নারীদের মতো‌। আবার আচার আচরণ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো। শেষ পর্যন্ত এই ছিল নয়নের কপালে? নয়নের ইচ্ছে হলো এখনই কপালটা ওয়াশ রুমের দেয়ালের সাথে টাক মে’রে ফাটিয়ে ফেলতে। নিজের ভাবনা অনুযায়ী সে কপালটা নিয়ে একটা টাকও মা’র’লো দেয়ালের সাথে। বেখায়ালীতে একটু জোরেই লাগলো টাকটা। কণ্ঠে ব্যথাতুর ধ্বনি তুলে ছিটকে দূরে সরে এলো সে। কপাল চেপে বলল,

“টাকটা তো আস্তেই দিলাম তারপর ব্যথা পেলাম কিভাবে?”
কপালে হাত বুলাতে বুলাতে হঠাৎ নয়নের স্মরণে এলো শীর্ষের কথা। এই বিপদ থেকে এখন তাকে একমাত্র শীর্ষই বাঁচাতে পারে। নয়ন তড়িঘড়ি করে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করল। কল লাগালো শীর্ষের নাম্বারে। দুই বার রিং হতেই কলটা ধরল শীর্ষ। গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“হ্যা নয়ন বল।”
নয়ন কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,
“স্যার আমাকে বাঁচান স্যার। এই মিস্টার সোহাগ আমার ইজ্জতের দফারফা না করে আমাকে ছাড়বে না মনে হয়।”
“তুই এখন কোথায় আছিস?”
“মিস্টার সোহাগের ভয়ে ওয়াশ রুমে লুকিয়ে আছি।”
“তাহলে ওয়াশ রুমেই থাক। আর বাইরে আসিস না।”
নয়ন চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালো। অসহায় কণ্ঠে বলল,
“এখানেও বা কতক্ষণ স্যার? ওয়াশ রুমে কি আর সারাদিন বসে থাকা যায়? তার উপর ঐ বজ্জাতটা আবার ওয়াশ রুমের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে পাহারা দিচ্ছে।”
শীর্ষ ঠোঁট টিপে হাসলো। তবে পরপর আবার কণ্ঠে গম্ভীরতা ফুটিয়ে তুলে বলল,
“আচ্ছা তাহলে ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে সোজা আমার ফ্ল্যাটে চলে আয়। ঐ মিস্টার সোহাগ নামক প্রাণীটা কিছু জিজ্ঞেস করলে বলবি আমি ডেকেছি।”

“আচ্ছা স্যার।”
নয়ন কল কাটলো। জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে বেরিয়ে এলো ওয়াশ রুম থেকে। তাকে ওয়াশ রুম থেকে বের হতে দেখেই মিস্টার সোহাগ এগিয়ে এলো। ওষ্ঠ প্রসারিত করে বলল,
“তোমার নাকি ওয়াশ রুমে অনেক সময় লাগে। তা আজ এতটুকু সময়েই কাজ শেষ?”
নয়ন জ্বীহ্বার অগ্রভাগ দ্বারা ঠোঁট ভিজালো। জোরপূর্বক হেসে বলল,
“আসলে শীর্ষ স্যার মেসেজ করেছিলেন। এখনই যেতে বলেছে আমাকে। তাই একটু আগেভাগেই বেরুলাম আর কি।”
শীর্ষের নামটা শুনেই চকচক করে উঠল সোহাগের চোখ মুখ। উৎফুল্ল হয়ে বলল,
“শীর্ষ মানে ঐ হ্যান্ডসাম ছেলেটা? চলো আমিও যাব তোমার সাথে।”
নয়ন পড়লো এবার মহাবিপদে। এর হাত থেকে পালানোর জন্য সে শীর্ষের কাছে যেতে চাইছে আর এই কিনা বলছে তার সাথে যাবে। প্রথমত সে সোহাগকে নিজের সাথে নিতে একদম ইচ্ছুক নয়। আর তারপর যদি নেয়ও তাহলে শীর্ষ নির্ঘাত তাকে খু’ন করবে। নয়ন খুব একটা ভাবলো না। তাড়াহুড়ো করে বলল,

“আসলে হয়েছে কি? শীর্ষ স্যারের দাদি না এক্সিডেন্ট করেছেন। তাকে নিয়ে স্যার হাসপাতালে গিয়েছেন আর আমাকেও মেসেজ করে যেতে বলেছেন। আপনি হাসপাতালে গিয়ে কি করবেন? আর আমরাও থাকবো রোগী নিয়ে দৌড়া দৌড়িতে। তার থেকে আপনার যেতে হবে না। আমি যাচ্ছি। ভালো থাকবেন। আসছি।”
কথাগুলো কোনো রকমে শেষ করেই নয়ন তড়িঘড়ি করে পা বাড়ালো চলে যাওয়ার উদ্দেশে। সোহাগ তাকে পিছন থেকে ডাকলো বার কয়েক। সে শুনেও না শোনার ভান ধরল। এক প্রকার দৌড়ে বেরিয়ে গেলো অফিস থেকে। সোহাগ মাথা চুলকালো। হঠাৎ তার খেয়ালে এলো শীর্ষ তো আব্দুর রহমান খানের ছেলে। তার দাদী এক্সিডেন্ট করা মানে তো আব্দুর রহমান খানের মায়ের এক্সিডেন্ট। কিন্তু ঐ ভদ্রলোক তো এখনো অফিসে বসে রয়েছেন। তার মানে কি সে নিজের মায়ের এক্সিডেন্ট সম্পর্কে কিছু জানেন না? সোহাগের চোখ দুটো বড়ো বড়ো হয়ে উঠল। হন্তদন্ত হয়ে সে ছুটলো আব্দুর রহমান খানের কেবিনের দিকে। কোনো রকম অনুমতি ব্যতীতই ঢুকলো সে কেবিনে। আব্দুর রহমান খান অবাক হলেন। কপাল কুঁচকে শুধালেন,

“তুমি হঠাৎ এভাবে!”
সোহাগ হন্তদন্ত হয়ে বলল,
“আপনার মা এক্সিডেন্ট করেছেন আঙ্কেল। তাকে নিয়ে আপনার ছেলে হাসপাতালে গিয়েছে।”
আব্দুর রহমান খানের কলিজাটা ছ্যাত করে উঠল। চেয়ার ছেড়ে তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালেন তিনি। তবে সামনের দিকে পা বাড়ানোর পূর্বেই তার স্মরণে এলো তার মা-ই তো নেই। অনেক বছর পূর্বেই তিনি মা’রা গিয়েছেন। এই ছেলের হঠাৎ এমন একটা কথায় সে তো ভুলেই বসেছিল তার মায়ের মৃ’ত্যু’র কথা। তাছাড়া এখন বয়স হয়েছে। অনেক কথাই মনে থাকে না। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললেন আব্দুর রহমান খান। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন সোহাগের দিকে। ভ্রু কুঁচকে বললেন,
“কিন্তু আমার মা তো ৮ বছর আগেই মা’রা গিয়েছেন।”
সোহাগ চমকানো। চোখ বড়ো বড়ো করে শুধাল,
“তাহলে এক্সিডেন্টটা করল কোন দাদী?”

মূল শহরের তুলনায় এখানে কোলাহলটা একটু কম। জনমানব এবং যানবাহনের অস্তিত্ব এখানেও রয়েছে তবে মূল শহরের মতো নয়। আব্দুর রহমান খান পরিবার নিয়ে মূল শহরে বসবাস করলেও শহরের বাইরেও একটি বাড়ি করেছেন। পাঁচ তলা ভবন বিশিষ্ট বাড়িটি। বাড়িটির তৃতীয় তলা বাদ দিয়ে বাকি গুলো ভাড়া দেওয়া। শীর্ষ যখন কোনো অঘটন ঘটায় তখন এসে ওঠে এ তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে। এই যেমন আজ মা’রা’মা’রি করে ঠোঁট কেটেছে, কপাল ফুলিয়েছে, শরীরেরও কিছু অংশ কেটেছে। এসব নিয়ে বাড়িতে গেলে ফাহমিদা বেগম নির্ঘাত কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে উঠবেন। তাই বন্ধু বান্ধব নিয়ে এসে উঠেছে শহরের বাইরের এই ফ্ল্যাটে। রবি এবং আলভী মেঝেতে বসে বসে সিগারেট টানছে। আর ধোঁয়া গুলো উড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। শীর্ষ কপাল কুঁচকাল। বিরক্তি নিয়ে বলল,
“তোদের এই সিগারেট টানা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই নাকি?”

রবি মুখ চোখা করে সিগারেটে আরেকটা টান বসালো। ধোঁয়া গুলো উড়িয়ে দিতে দিতে বলল,
“নাহ, আপাতত নেই। তা তুইও দিবি নাকি একটা টান? দিয়ে দেখ।”
রবি সিগারেটটা এগিয়ে দিলো শীর্ষের দিকে। শীর্ষ সিগারেটটা হাতে নিলো। মুখে নিয়ে একটা টান দিতেই ঠোঁটের ব্যথায় চোখমুখ কুঁচকে এলো। আরেকটা টান দিবে এর মধ্যেই ফ্ল্যাটের কলিং বেলটা বেজে উঠল। শীর্ষ সিগারেটে টান দিতে দিতে বলল,
“ঐ মনে হয় নয়ন চলে এসেছে। দরজাটা খুলে দিয়ে আয়, যাহ।”
রবি উঠে গিয়ে খুললো দরজাটা। নয়ন হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে প্রবেশ করল। এতক্ষণে যেন সে একটু স্বস্তি পেল। নয়তো রাস্তায় আসতে আসতেও বারবার মনে হয়েছে ঐ বুঝি সোহাগ তার পিছু নিয়েছে। নয়ন গিয়ে বসলো আলভীর পাশে। শার্টের উপরের একটা বোতাম খুলতে খুলতে বলল,

“ভাই আমাকেও একটা সিগারেট দিন তো।”
আলভী কপাল কুঁচকাল। নয়নের দিকে তাকিয়ে শুধাল,
“তুই আবার সিগারেট খাওয়া ধরলি কবে থেকে? তুই না ভদ্র ছেলে?”
নয়ন হতাশ কণ্ঠে বলল,
“আর ভদ্র ছেলে! যেদিন থেকে মিস্টার সোহাগের পাল্লায় পড়েছি সেদিন থেকে কপালে শনি চড়ে গেছে। ঐ ব্যাটার সাথে থাকার চেয়ে বি’ড়ি টেনে নিজের ফুসফুসের পিন্ডি চটকানো অনেক ভালো।”
শীর্ষ সিগারেট টানতে টানতে হঠাৎ স্মরণে এলো ত্রয়ীর কথা। মেয়েটাকে সেই যে রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে এলো তারপর আর খোঁজ নেওয়া হয়নি। মেয়েটা ঠিকঠাক ভাবে বাড়িতে পৌঁছেছে তো? পরক্ষণেই আবার ভাবলো পৌঁছালে পৌঁছাক, না পৌঁছালে গোল্লায় যাক। তাতে তার কি? কিন্তু মন কি আর সে কথা মানে? মেয়েটার কথা মনে আসতেই তার জন্য চিন্তা হতে শুরু করল শীর্ষের। কল করবে না করবে না করেও বাড়ির ল্যান্ড লাইনে কল করল। ত্রয়ীর তো আর মোবাইল নেই যে সেখানে কল করবে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানেই কলটা ধরলেন ফাহমিদা বেগম। নম্র কণ্ঠে বললেন,

অনুরাগে তুই পর্ব ১১

“হ্যালো, আসসালামুয়ালাইকুম। কে বলছেন?”
“ওয়ালাইকুমুস সালাম। মা আমি শীর্ষ।”
“ওহ শীর্ষ। হ্যা বাবা কি বলবি বল।”
শীর্ষ আর ইতি উতি করল না। সরাসরিই জিজ্ঞেস করল,
“বালির… মানে ত্রয়ী বাড়িতে গিয়েছে?”
ফাহমিদা বেগম কপাল কুঁচকে জবাব দিলেন,
“না তো। রিমাও তো আসেনি এখনো। ত্রয়ীর ক্লাস রিমার আগে শেষ হয়েছে নাকি, মানে ত্রয়ীর কি আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল?”

অনুরাগে তুই পর্ব ১৩