অনুরাগে তুই পর্ব ১৮
সাদিয়া শওকত বাবলি
নয়ন বিছানার পাশের টেবিল থেকে রবির মোবাইলটা তুলে বাড়িয়ে দিলো তার দিকে। অতঃপর বলল,
“আপনার বাবা কাল কল করেছিল স্যার। আপনি কল রিসিভ করে তাকে ভাই ডেকেছিলেন। সেই থেকে সে আপনার জন্য রা’ম দা নিয়ে অপেক্ষা করছে। আপনার বোন মেসেজ করেছে চেক করে দেখুন। রা’ম দা সহ ছবিও পাঠিয়েছে বোধ হয়। উপর থেকে মেসেজটা পড়তে পারলেও ছবিটা দেখতে পারিনি।”
রবি আঁতকে উঠল। পরপর শুকনো ঢোক গিলল কয়েকটা। তার বাবা তার জন্য রা’ম দা নিয়ে বসে আছে? আজ বাড়িতে গেলে তার আর বেঁচে ফিরতে হবে না। না সে এখন বাড়িতে ফিরবে না, কিছুতেই না। আগে জীবন বাঁচানো তারপর অন্যকিছু।
শহর জুড়ে কোলাহলের ঘনঘটা। ত্রয়ী আর রিমা কেবলই কলেজে এসে পৌঁছালো। বাড়ির গাড়িতেই রিমা প্রতিদিন কলেজে আসে। আগের দিন ত্রয়ীকে আনবে না বলে আগে আগে সে চলে এসেছিল। তাছাড়া শীর্ষও ত্রয়ীকে নিয়ে আসতে রাজি হয়েছিল বলে কিছু বললেননি আব্দুর রহমান খান। কিন্তু আজ রিমা গাড়িতে বসার আগেই তিনি ত্রয়ীকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি রিমার ভালো না লাগলেও বাবার মুখের উপরে বলতে পারেনি কিছুই। ফলস্বরূপ ত্রয়ীর সাথেই আসতে হয়েছে কলেজে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কলেজের সামনে গাড়ি থামতেই রিমা গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। ত্রয়ীকে ফেলে রেখেই হনহন করে ঢুকলো সে কলেজের মধ্যে। ত্রয়ী তাকে পিছন থেকে ডাকতে গিয়েও আটকে গেল। এই কয়দিনে সে বেশ ভালোভাবেই বুঝে গেছে এই মেয়েটি তাকে পছন্দ করে না। কিন্তু কেন পছন্দ করে না সে কারণ অজানা। সে কি কিছু করেছে? কিন্তু তাদের বাড়িতে সে এসেছেই বা কয়দিন যে এর মধ্যে কিছু করে বসবে। ত্রয়ী বার কয়েক তাকে অপছন্দ করার কারণ জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করতে পারেনি। এ বাড়িতে আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত রিমা তার সাথে তেমন কথা বলেনি, দেখলেই কেমন এড়িয়ে চলে, চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। তাই তাকে আগ বাড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করারও সাহস করে উঠতে পারেনি ত্রয়ী। আবার যদি রেগে যায়। ত্রয়ী আস্তে ধীরে গাড়ি থেকে নামলো। আশেপাশে নজর বুলিয়ে আড়ষ্ট ভঙ্গিতে ঢুকলো কলেজের ভিতরে। চারদিকে শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কেউ কেউ মাঠে সবুজ ঘাসের উপরে বসে আড্ডা দিচ্ছে, কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছে, কেউ আবার তার মতোই কেবল এসেছে। ত্রয়ীর এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হঠাৎই নজর গেল অদূরে একটা বকুল গাছের দিকে। সে গাছের নিচে জনা কয়েক ছেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে কিছু নিয়ে। তাদের মধ্যে একজনের দিকে ত্রয়ীর দৃষ্টি স্থির হলো। ওটা শীর্ষ না? হ্যা শীর্ষই তো। তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই পাশের ছেলেটাকে কিছু বলছে। ভ্রু যুগল কুঁচকে এলো মেয়েটার। এই লোক এখানে কি করছে? সকাল সকাল তো কি জরুরি কাজ আছে বলে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এলো। এই তার জরুরি কাজ? ত্রয়ী শীর্ষের দিকে দৃষ্টি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে আর খেয়ালই করেনি। সামনে থেকে হঠাৎ তার মুখোমুখি কেউ চলে আসতেই টনক নড়লো। হকচকিয়ে উঠল সাথে সাথে। সাথে সাথে ছিটকে দূরে সরে এলো সময় ব্যয় না করে। একটুর জন্য সামনের ব্যক্তির সাথে ধাক্কাটা লাগেনি। ত্রয়ী চোখ তুলে তাকালো। সামনের ব্যক্তিকে দেখেই অপ্রস্তুত হলো সে। এ তো সেদিনের সেই ব্যক্তি। সাহেদ না কি যেন নাম। এ কলেজেরই গেস্ট অধ্যাপক। ত্রয়ী এলোমেলো দৃষ্টি ফেলল। আমতা আমতা করে বলল,
“দুঃখিত, আমি আসলে অন্য দিকে খেয়াল করতে গিয়ে এদিকটা খেয়াল করিনি।”
সাহেদ আলতো হাসলো। অভয় দিয়ে বলল,
“ইটস ওকে। তা কেমন আছো তুমি?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?”
“আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো। আজ একাই এসেছো? শীর্ষ আসেনি?”
“এসেছে ঐ বকুল গাছের নিচে।”
ত্রয়ী বকুল গাছের দিকে ইশারা করল। শীর্ষের দৃষ্টি তীক্ষ্ম থেকে তীক্ষ্মতর হলো। বুকের ভিতরটা কেমন জ্বলে উঠল। রবি, আলভী, নয়নকে নিয়ে সে এখানে এসেছিল একটা কাজে। ক্লাবে দুই দলের মধ্যে কয়েকদিনের ভিতরে একটি ক্রিকেট খেলার আয়োজন করতে চাইছিল তারা। সেই খেলাটা এই কলেজ মাঠেই খেলার চিন্তা ভাবনা করেছিল সবাই মিলে। সেই বিষয়েই কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে একটু কথা বলতে এসেছিল। কিন্তু এখানে এসে তো অন্য কিছুই দেখছে। শীর্ষ লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে এলো ত্রয়ীর নিকট। সহেদ শীর্ষকে দেখেই ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল,
“কি রে শীর্ষ কেমন আছিস?”
শীর্ষ জবাব দিলো না কোনো। সাহেদের দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে এক পলক তাকিয়ে খপ করে ধরল ত্রয়ীর এক হাত। টেনে অন্যদিকে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
“কলেজে আসতে না আসতেই সবার সাথে খাতির পাতানো শুরু করে দিয়েছিস? সাহেদের সাথে এত কথা কিসের তোর?”
ত্রয়ী দৃষ্টি নত করল। মিনমিনে কণ্ঠে জবাব দিলো,
“না মানে উনি তো আমার স্যার….”
এই টুকু বলতেই মেয়েটাকে থামিয়ে দিলো শীর্ষ। কপাল কুঁচকে বলল,
“ওটা স্যার না, ষাঁড় হবে। লু’চু ষাঁড় একটা। মেয়ে মানুষ দেখলেই শুধু গল্প জুড়ে দিতে মন চায়।”
“তেমনটাও না। উনার কোনো দোষ নেই। আমিই উনার সামনে গিয়ে পড়েছিলাম।”
শীর্ষ থেমে গেল। ত্রয়ীর হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
“এখন তুই আমাকে শিখাবি কার দোষ আছে আর কার দোষ নেই?”
“ঠিক তা না। আপনি বললেন না তিনি লু’চু। কিন্তু আমার সাথে তো তিনি তেমন কোনো ব্যবহার করেননি।”
“তাহলে তুই কি বলতে চাইছিস সাহেদ ভালো?”
ত্রয়ী চোখ তুলে একবার তাকালো শীর্ষের দিকে। পরপর আবার দৃষ্টি নত করে বলল,
“খারাপও না।”
শীর্ষের মেজাজের পারদ ধপধপ করে বেড়ে গেল। বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠল মন, মস্তিষ্ক। হঠাৎ এমন হওয়ার কারণ খুঁজে পেল না সে। অবশ্য কারণ খুঁজলোও না। এত সময় কোথায় কই তার হাতে? শীর্ষ ফের ত্রয়ীর হাত ধরলো শক্ত করে। টেনে সামনের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
“কলেজে পা রাখতে না রাখতেই সাহস বেড়ে গেছে তোর। গতকাল আমি বারণ করার পরও ক্লাস করেছিস। আজ আবার আমার মুখে মুখে তর্ক করছিস। কাল বলেছিলাম তোকে এখানে আর পড়াবো না। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন ঝামেলায় ঝামেলায় আর তা নিয়ে মাথা ঘামানো হয়নি। আজ মনে হচ্ছে তোকে একদমই পড়নোই উচিত না। তা হোক এখানে বা অন্য কোথাও।”
ত্রয়ী আঁতকে উঠল। তাকে পড়ানো উচিত না! তার মানে কি তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হবে? না, এটা হতে পারে না। তাকে পড়তে হবে, অনেক দূর অব্দি পড়তে হবে। নয়তো জীবন চলবে কিভাবে? সারাজীবন অন্যের মাথার উপর বোঝা হয়ে থাকতে চায় না সে। অনেক তো হলো এর ওর উপর নিজেকে বোঝা বানিয়ে ঠেলে দেওয়া। এবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। ত্রয়ী জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজের ভিতরে একটু সাহস সঞ্চয় করল। হাতটা টেনে ছাড়িয়ে নিলো শীর্ষের হাতের ভাঁজ থেকে। ঢোক গিলে বলল,
“আমি পড়বো। এখানেই পড়বো।”
“তোর সাহস তো কম নয় বালির বস্তা তুই আমার মুখের উপরে কথা বলছিস।”
“না মানে…”
শীর্ষ দাঁতে দাঁত পিষলো। ধমকে উঠে বলল,
“কি মানে মানে করছিস। আমার সাথে বাড়িতে চল এক্ষুনি।”
“না আমি যাব না।”
শীর্ষের ক্রোধ বাড়লো আরও। কটমট করে বলল,
“তুই কিন্তু এখন আমার অবাধ্য হচ্ছিস। এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।”
ত্রয়ী শুকনো ঢোক গিলল। কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,
“আপনি আমার সাথে এমন কেন করছেন? আমার এমনিই এই পৃথিবীতে কেউ নেই। তারপর আপনার বাবা দয়া ধরে আমাকে এখানে নিয়ে এলেন। আপনাদের বাড়িতে ঠাঁই দিলেন, পড়াশোনার সুযোগ দিলেন। দয়া করে আপনি সেই সুযোগটা কেড়ে নিবেন না।”
প্রথম বাক্যটি অর্থাৎ ‘আপনি আমার সাথে এমন কেন করছেন?’ এই বাক্যটি কানে বাজলো শীর্ষের। সত্যিই সে এমন কেন করছে? প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না সে? তাও বাইরের একটা মেয়ের জন্য। ত্রয়ী একজন প্রাপ্তবয়স্কা স্বাধীন নারী। তার যেখানে ইচ্ছা যাওয়ার এবং যার সাথে ইচ্ছা কথা বলার অধিকার আছে। সেখানে তার এমন ব্যবহার অবাঞ্ছিত ব্যতীত আর কিছুই নয়। শীর্ষ দ্বিধায় পড়লো। নিজেকে কেমন বোকা বোকা লাগলো। তবে পরক্ষণেই আবার মস্তিষ্ক বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। সব দোষ এই মেয়েটার। এসেছে পর থেকে যেন তাকে পাগল বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে। মেয়েটা তার সামনে এলেই কেমন অন্য রকম এক অনুভূতি হয় হৃদয়। মেয়েটার চেহারা দেখলেই শান্তি অনুভব হয়। এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। আগে কখনো হয়নি। তাহলে এই মেয়ের ক্ষেত্রে কেন হবে? শীর্ষের সব রাগ গিয়ে পড়লো ত্রয়ীর উপরে। ফুঁসে উঠল সে। শাসিয়ে বলল,
“তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না বালির বস্তা। আমার সামনেও আসবি না। তোর মুখ যেন আমি না দেখি। তাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে।”
কথাগুলো বলে আর এক দন্ডও দাঁড়ালো না শীর্ষ। হনহন করে চলে গেল। এতক্ষণে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো ত্রয়ী। যাক লোকটা অবশেষে বিদায় হয়েছে। আর যাওয়ার আগে কি বলে গেল? তার সাথে যেন কথা না বলে, তার সামনে যেন না যায়। ঠিক আছে ত্রয়ী তাই করবে। এমনিইও ঐ লোকটার সাথে কথা বলার বা তার সামনে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই মেয়েটার। ত্রয়ী ভেংচি কাটলো। পিছন ঘুরে হাঁটা ধরলো তার শ্রেণীকক্ষের দিকে। শুধু রয়ে গেল অদূরে বকুল গাছের নিচে তিন জোড়া অবাকতায় ঘেরা আঁখি। রবি, আলভী এবং নয়ন এতক্ষণ অবাক হয়ে দেখছিল শীর্ষ এবং ত্রয়ীকে। তবে শীর্ষের চোখে মুখে রাগের আভাস লক্ষ্য করে এদিকটায় আসার সাহস করেনি তারা। এতক্ষণ পরে অবাক সুরেই আলভী শুধাল,
“মেয়েটা কে রে?”
রবি জবাব দিলো,
“কে জানে? তুইও যেখানে আমিও সেখানে।”
নয়ন কিছুটা ভাবুক ভঙ্গিতে আলভীকে বলল,
“আপনার নানী নয় তো স্যার?”
আলভী কটমট করে তাকালো নয়নের দিকে। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“আমার নানী এখানে আসবে কোথা থেকে হ’ত’চ্ছা’ড়া। তিনি তো আরও বহুবছর পূর্বেই উপরের টিকিট কেটেছে।”
“আরে সেই নানী নয়। কাল শীর্ষ স্যার দুপুরে ফ্ল্যাট থেকে চলে আসার সময় আপনার আরেক নানীর কথা বলে এলো না। সে নয় তো?”
রবি এবং আলভী তাকালো ত্রয়ীর গমনপথের দিকে। এক যোগে বলল,
“হতেও পারে।”
গোধূলি লগ্ন। আকাশের উজ্জ্বল সূর্যটা রক্তিম আকার ধারণ করে ঢলে পড়েছে এক দিকে। পাখিরা নিজেদের সারাদিনের খাবারের খোঁজের বিরতি দিয়ে তাড়া লাগিয়েছে নীড়ে ফেরার। ত্রয়ীও ছাদ থেকে সবার জামা কাপড় তুলে সিঁড়ি বেয়ে নামছিল নিচের দিকে। হঠাৎ তার চোখ পড়লো শীর্ষের দিকে। সিঁড়ির দিকেই আসছে লোকটা। হয়তো উপরে তার নিজ কক্ষে যাবে। ত্রয়ী তৎক্ষণাৎ জামাকাপড় দিয়ে নিজের মুখটা ঢেকে নিল। সিঁড়ির এক পাশ ঘেঁষে তাড়াহুড়ো করে নেমে গেল নিচে। শীর্ষের ভ্রু যুগল কুঁচকে এলো। তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে সে তাকালো ত্রয়ীর দিকে। মেয়েটা তাকে দেখে এভাবে পালিয়ে গেল কেন? কোনোভাবে তাকে ইগনোর করল না তো?
রাত খুব বেশি নয়। ঘড়ির কাঁটায় টিকটিক ধ্বনি তুলে জানান দিচ্ছে রাত কেবল নয়টা। খান বাড়ির সবাই এই মুহূর্তে রাতের খাবার খেতে বসেছে খাবার টেবিলে। শীর্ষ সচরাচর দেরি করে বাড়িতে ফেরায় রাতের খাবার সবার সাথে না খেলেও আজ আছে। আজ আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর বাইরে বের হয়নি। ত্রয়ী খাবার টেবিলের এক কোনে বসেছে। মুখ ঢেকে ঢেকে খাবার খাচ্ছে। যেন কেউ তাকে খাবার খেতে দেখে নিলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। শীর্ষ খেতে খেতেই ভ্রু কুঁচকাল। মেয়েটা তখন সিঁড়ি থেকে নামার সময়ও মুখ ঢাকলো, এখন আবার মুখ ঢেকে খাবার খাচ্ছে। এসব কি তার থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য করছে মেয়েটা? তাকে ইগনোর করছে?
রাত কিছুটা গভীর। চারদিকটা নীরব নিস্তব্ধ হয়ে পড়তে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। দিনের ন্যায় শহর জুড়ে আর কোলাহলের শব্দ শোনা যাচ্ছে না। ত্রয়ী সকলের খাওয়া দাওয়া শেষে রান্নাঘরে সবকিছু গুছিয়ে রাখছিল একা একা। তখনই রান্নাঘরের দ্বার গোড়ায় এসে দাঁড়াল শীর্ষ। থমথমে কণ্ঠে বলল,
“একটা কফি বানিয়ে দে তো বালির বস্তা।”
অনুরাগে তুই পর্ব ১৭
হঠাৎ শীর্ষের কণ্ঠস্বর শুনে কিছুটা চমকাল ত্রয়ী। তাড়াহুড়ো করে গলার ওড়নাটা মাথায় চড়ালো। ঘোমটার মতো দিয়ে মুখটা ঢেকে লেগে পড়লো কফি বানাতে। শীর্ষ কপাল কুঁচকাল। গম্ভীর কণ্ঠে শুধাল,
“এভাবে নতুন বউয়ের মতো ঘোমটা দিয়েছিস কেন? সমস্যা কি তোর?”