অনুরাগে তুই পর্ব ২১
সাদিয়া শওকত বাবলি
শান্ত অথচ গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“অনেক হিসাব নিকাশ বাকি আছে তোর সাথে। তোর সেদিনের পাকনামির একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে না?”
কায়সার ঘাবড়ে গেল আরও। তবে শীর্ষের সম্মুখে যথাসম্ভব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করল সে। মানুষ দুর্বলদের আঘাত করতে সাহস পায়, আর সবলদের আঘাত করতে ভয় পায়। কায়সার এই মুহূর্তে নিজের দুর্বলতা শীর্ষের অভিমুখে প্রকাশ করতে চাইলো না। তাহলে ছেলেটা আরও পেয়ে বসবে তাকে। কায়সার নিজের ভীতিভাব দমিয়ে রেখেই চোখ রাঙিয়ে তাকালো শীর্ষের দিকে। গলা চড়িয়ে বলল,
“কিসের হেস্তনেস্ত? যা হেস্তনেস্ত করার সেদিনই হয়ে গেছে। আর কিছু বাকি থাকলে পরে করিস। আমার এখন কাজ আছে। বাইকের চাবি দে।”
শীর্ষ চাবিটা দিলো না। বরং চাবির রিং টা হাতে নিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে বলল,
“দেব না। কি করবি তুই?”
“এবার কিন্তু তুই বাড়াবাড়ি করছিস শীর্ষ। বাইকের চাবি দে বলছি।”
“দেব না।”
কায়সার বাইক থেকে নেমে দাঁড়ালো। শীর্ষের হাত থেকে চাবিটা নিতে তৎপর হলো। কিন্তু শীর্ষ কি আর এত সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র? সে হাত উঁচিয়ে চাবিটা উপরে তুললো। কায়সারের উচ্চতাও শীর্ষের বরাবর হওয়ায় সে তৎক্ষণাৎ হাত বাড়ালো চাবির দিকে। শীর্ষ দ্রুত চাবিটা নিচে নামিয়ে ফেললো। দাঁত কেলিয়ে বলল,
“বা’ল পাকনা ডিসের লাইন।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কায়সার বিরক্ত হলো। লালাটে গুটি কয়েক ভাঁজ ফেলে বলল,
“শীর্ষ চাবিটা দিয়ে দে।”
“ক্ষমতা থাকলে নিয়ে নে।”
কায়সার আবার চাবিটা ধরার চেষ্টা করল। তবে সে হাত বাড়াতেই শীর্ষ চাবিটা ঘুরিয়ে অন্য হাতে নিয়ে নিলো। কায়সারের বিরক্তিভাব বাড়লো। কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে সে চেয়ে রইল শীর্ষের হাতের চাবিটার দিকে। নিষ্পলক, তীর্যক সে চাওনি। যখনই তার মনে হলো শীর্ষ অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছে সে সাথে সাথে শকুনের ন্যায় প্রবল গতি নিয়ে থাবা বসালো চাবির উপরে। কিন্তু হায়! শকুনের ন্যায় থাবা বসলেও সাধারণ এক পক্ষীর ন্যায় ব্যর্থতা গ্রাস করল তাকে। শীর্ষ অন্যমনস্ক হওয়ার ভান ধরলেও সে সম্পূর্ণ নিজের খেয়ালেই ছিল। শিকারি কখনো সখনো শিকার ধরার তাগিদে নিজের খেয়ালকে নিশ্চল হিসেবে ফুটিয়ে তোলে। তাই বলে কি সে নিশ্চল? উহু, একদম নয়। প্রকৃত শিকারিরা কখনো নিশ্চল হয় না। তাদের লক্ষ্য সর্বদা স্থির, কান খাঁড়া, সজাগ দৃষ্টি। কায়সার যখনই থাবা বসালো চাবির দিকে। শীর্ষও তৎক্ষণাৎ চাবিটা সরিয়ে নিল। বাঁকা হেসে বলল,
“এত সহজ সবকিছু? সেদিন শুধু পুলিশ আসায় আমাকে আঘাত করেও বেঁচে গিয়েছিলি তুই। কিন্তু আজ! আজ কে বাঁচাবে তোকে? তোর বা’ল পাকনামির খেসারত তো আজ তোকে দিতেই হবে।”
কায়সারের মেজাজ বিগড়ালো। মাঝ পথে আটকে রেখে বাচ্চাদের ন্যায় চাবি নিয়ে সেই কখন থেকে ঘুমাচ্ছে তাকে। একা পেয়েছে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি? সে যদি একা হয় শীর্ষও তো একাই। সে কোনো অংশে শীর্ষের চেয়ে কম ক্ষমতা ধারণ করে না। দাঁতে দাঁত পিষলো কায়সার। কাট কাট গলায় বলল,
“চাবি দে শীর্ষ।”
“দেব না।”
ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠল কায়সার। দিশেহারা হয়ে একটি ঘুষি বসালো শীর্ষের পেটে। আকস্মিক আক্রমণে হকচকিয়ে উঠল শীর্ষ। ছিটকে রাস্তায় পড়ে যেতে নিয়েও নিজেকে বাঁচালো সে। তবে পরক্ষণেই তার মুখাবয়বে হানা দিলো কাঠিন্যতা। চোখ দুটো জ্বলে উঠল যেন। কপালের রগগুলো ফুলে ফেঁপে উঠে জানান দিলো নিজেদের অস্তিত্বের কথা। কত বড়ো সাহস এই কায়সার নামক ক্ষুদ্র মানবের! সেদিন শীর্ষকে সে আঘাত করেছে, আজ আবার ঘু’ষি মে’রে’ছে। শীর্ষ ফুঁসে উঠল। কেউ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেশ জোরেশোরেই একটা লাথি বসালো কায়সারের পেটে। বেচারা ছিটকে পড়লো ইট, কংক্রিটে গড়া রাস্তায়। দেহের ব্যথায় চোখ মুখ কুঁচকে নিল সে। তবুও দমলো না শীর্ষ। তেড়ে এসে কলার ধরে টেনে দাঁড় করালো কায়সারকে। হিসহিসিয়ে বলল,
“সেদিন ছেঁড়ে দিয়েছিলাম বলে কি ভেবেছিস আজও ছেঁড়ে দেব? যে হাত দিয়ে আমাকে আঘাত করেছিস ঐ হাত যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি ভাঙতে পারছি আমার শান্তি নেই।”
ত্রয়ী এতক্ষণ গাড়ির জানালা গলিয়ে দেখছিল সবটা। ভয়ে বাইরে পা দেওয়ার সাহস করেনি সে। শীর্ষকে সে ভয়ংকর ভেবেছিল কিন্তু এতটা ভয়ংকর কখনো কল্পনাও করেনি। ত্রয়ীর হৃদয়ে শীর্ষের জন্য কোনোরূপ ইতিবাচক ধারণা জন্মানোর পূর্বেই একে একে নেতিবাচক ধারণা প্রভাব ফেলছে। এই মুহূর্তে ত্রয়ীর নিকট শীর্ষকে একজন গু’ন্ডা ব্যতীত আর কিছুই মনে হচ্ছে না। কি হিং’স্র লোকটার চাওনি, কি তেজ শরীর জুড়ে। মনে হচ্ছে যেন এখনই দুই চারটা খু’ন করে লা’শ ফেলে দিবে এই জনমানবহীন নির্জন রাস্তায়। ত্রয়ীর ভাবনার মধ্যেই শীর্ষ ফের একটি ঘুষি বসালো কায়সারের গালে। কেঁপে উঠল মেয়েটি। বুকের ভিতরে থাকা ছোট্ট হৃৎপিণ্ডটা যেন লাফিয়ে উঠল ভয়ে, আতংকে। ত্রয়ী ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালো কায়সারের মুখ পানে। লোকটার ওষ্ঠের কোনা বেয়ে লাল তরল রক্ত গড়িয়ে নামছে। ত্রয়ীর মায়া লাগলো কায়সারের জন্য। সাথে হৃদয়ে আশঙ্কা জাগলো শীর্ষ না আবার লোকটাকে মে’রে দেয়। যে ভয়ংকর লোক তাতে তাকে দ্বারা সবই সম্ভব। তাছাড়া অবস্থা বেগতিক। খু’না’খু’নি পর্যন্ত না গেলেও এভাবে চলতে থাকলে দুজন গুরুতরভাবে যে আহত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ত্রয়ী আশেপাশে তাকালো। সাহায্যার্থে খোঁজার চেষ্টা করল কাউকে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। এখানে কোথাও কেউ নেই। নাহ, আর তাকে ভয় পেয়ে বসে থাকলে চলবে না। এবার যা করার তাকেই করতে হবে। দুটো মানুষ তার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে হিংস্র পশুর ন্যায় যুদ্ধ চালাচ্ছে, র’ক্তা’র’ক্তি ঘটাচ্ছে আর সে কিনা ভয়ে ঘাপটি মে’রে বসে থাকবে? এতটা ভীতু স্বভাবের হলেও বা দুনিয়ায় চলবে কিভাবে সে? জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করল ত্রয়ী। গাড়ির দরজা ঠেলে বেরিয়ে এলো বাইরে। শীর্ষ এবং কায়সারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,
“কি শুরু করেছেন কি আপনারা? এভাবে মা’রা’মা’রি করছেন কেন?”
কায়সার চোখ তুলে তাকালো তার অভিমুখে দাঁড়ানো মেয়েটির মুখ পানে। গোলগাল চেহারার দারুণ এক কন্যা সে। ফরসা গায়ের বর্ণ, মানানসই স্বাস্থ্যের সাথে মানানসই উচ্চতা। মেয়েটির মুখশ্রী জুড়েও কেমন আলাদা এক মায়া জড়িয়ে রয়েছে। কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গেল কায়সার, স্থির হলো তার দৃষ্টি। হৃদয় আঙিনায় হঠাৎ করেই ঝড় উঠল প্রবল বেগে। কে এই নারী? এখানে কি করছে? কায়সারের ভাবনার মধ্যেই কানে এলো শীর্ষের রুক্ষ কণ্ঠস্বর। দাঁতে দাঁত পিষে সে বলল,
“তুই গাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়েছিস কেন বালির বস্তা?”
ত্রয়ী ভীত হলো। সে যতটা সাহস নিজের ভিতরে সঞ্চয় করেছিল তা এই মুহূর্তে শীর্ষের রুক্ষ কণ্ঠের সামান্য একটি বাক্যের নিচে চাপা পড়ে গেছে। যেমন র’ক্ত’ক্ষ’য়ী যু’দ্ধে’র পরে কালের বিবর্তনে চাপা পড়ে ধ্বংসাবশেষ গুলো। ত্রয়ী এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। আমতা আমতা করে বলল,
“না মানে আমি, মানে….”
“কি না মানে, আমি মানে? সোজা হয়ে এখন কথাও বলতে পারছিস না?”
ত্রয়ী ঢোক গিললো। কোনো রকম উত্তর না দিয়ে দৃষ্টি ঘুরালো আশেপাশে। শীর্ষের দৃষ্টিও স্থির মেয়েটির দিকে। এই সুযোগটাই কাজে লাগালো কায়সার। হুট করেই একটা পাড়া বসালো শীর্ষের পায়ে। চমকে উঠল সে। কণ্ঠে “আহহ” মূলক ব্যথাতুর ধ্বনি তুলে ছিটকে দূরে সরে গেল কায়সারের। কায়সারও আর সময় ব্যয় করল না। শীর্ষ তাকে ছেড়ে দিতে বাইক ফেলে রেখেই ছুট লাগালো যেদিকে দুচোখ যায়। শীর্ষও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। সেও ছুট লাগালো কায়সারের পিছু পিছু। অল্প সময়ের মধ্যেই ধরে ফেললো তাকে। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
“আমার হিসাব নিকাশ শেষের আগে কোথায় পালাচ্ছিলি তুই বদমাইশ? তোকে তো আমি…”
এই টুকু বলে থামল শীর্ষ। কায়সার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করল তার বাঁধন থেকে। গলা চড়িয়ে বলল,
“এখনো সময় আছে শীর্ষ আমাকে ছেড়ে দে। নয়তো খুব খারাপ হবে।”
“তুই আমার কি বা’ল ফালাবি আমার জানা আছে। আগে নিজেকে তো বাঁচা।”
ফুঁসে উঠল কায়সার। ধস্তাধস্তি লেগে গেল দুজনের মধ্যে। ত্রয়ীও দৌড়ে এসে দাঁড়াল তাদের মুখোমুখি। জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বলল,
“মাঝ রাস্তায় এসব কি শুরু করেছেন আপনারা? অনেক হয়েছে এবার তো থামুন।”
ত্রয়ীর কথা কানে তুললো না কেউই। তারা তাদের মতো ধস্তাধস্তি চালিয়েই যাচ্ছে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শীর্ষ ঘুরে কায়সারের পিছনের দিকে চলে এলো। দুই হাতে জাপ্টে ধরল তাকে। আদেশ স্বরে বলল,
“ওকে কষিয়ে একটা থা’প্প’ড় মা’র বালির বস্তা। যাতে এক থা’প্প’ড়ে’ই ওর সব কয়টা দাঁত পড়ে যায়। খাবার চিবিয়ে না খেতে পারে।”
ত্রয়ীর বুক কাঁপলো। তাকে কিনা এখন থা’প্প’ড় মারতে হবে তাও কায়সারের মতো এক ভয়ংকর মানবকে? ত্রয়ী থা’প্প’ড় মা’র’লো না। বরং কাঁচুমাচু করে দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ। শীর্ষ ভ্রু কুঁচকাল। কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,
“কি হলো থা’প্প’ড় মারছিস না কেন?”
ত্রয়ী আমতা আমতা শুরু করল। থা’প্প’ড় মা’রা’র জন্য হাত উঁচিয়েও নামিয়ে নিল সে। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে বলল,
“আমার ভয় লাগছে।”
“কিসের ভয় আমি ওকে ধরে আছি তো। তুই শুধু থা’প্প’ড়’টা মা’র।”
ত্রয়ী শুকনো ঢোক গিললো। কোনো রকমে হাতটা উঁচালো সে। তবে থা’প্প’ড়’টা মা’রা’র সাহস এখনো হচ্ছে না তার। হাতটায় কেমন কাঁপছে। শীর্ষ এবার বিরক্ত হলো বেজায়। সামান্য একটা থা’প্প’ড়’ই তো মা’র’তে বলেছে। এই মেয়েটা তাও পারছে না? অবশ্য এই মেয়ের থেকে কিছু আশা করাই বেকার। বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকে সে বলল,
“সামান্য একটা থা’প্প’ড় মা’র’তে পারছিস না? অবশ্য তোর মতো একটা বলদির কাছ থেকে এর বেশি আর কি আশা করা যায়?”
শীর্ষ প্রবল বিরক্তি নিয়ে ছেড়ে দিলো কায়সারকে। তবে বলদি কথাটা গায়ে লাগলো ত্রয়ীর। লোকটা তাকে সামান্য একটা থা’প্প’ড়ে জন্য এত বড়ো একটা কথা বলে দিলো? না, এবার সে থা’প্প’ড়’টা মা’র’বে’ই মা’র’বে। তাতে যা হবার হোক তো। ত্রয়ী জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করল। চোখ দুটো বন্ধ করে প্রবল গতিবেগ নিয়ে হাতটা বাড়িয়ে দিলো থা’প্প’ড় মা’রা’র উদ্দেশ্যে। মেয়েটার হাত নিজের দিকে আসতে দেখেই চমকাল কায়সার। চোখ বড়ো বড়ো করে দ্রুত বসে পড়লো নিচে। ফলস্বরূপ থা’প্প’ড়’টা গিয়ে পড়লো সোজা তার পিছনে থাকা শীর্ষের গালের উপর। হতবাক হয়ে পড়লো শীর্ষ। আনমনেই গালে হাত চলে গেল তার। চোখ বড়ো বড়ো করে শুধাল,
“তুই আমাকে থা’প্প’ড় মারলি বালির বস্তা?”
পরপর চোখ মুখ শক্ত হয়ে উঠল শীর্ষের। শেষ পর্যন্ত কিনা ত্রয়ী তাকে থা’প্প’ড় মা’র’লো? এই পুঁচকে, বোকা, গাধা মেয়টা তাকে থা’প্প’ড় মা’র’লো? এর থেকে লজ্জাজনক, বিব্রতকর পরিস্থিতি আর কি হতে পারে? তাছাড়া এতক্ষণ যখন তাকে কায়সারকে থা’প্প’ড় মা’র’তে বলা হলো তখন সে পারলো না। আর কায়সারকে ছেড়ে দিতেই দুম করে থা’প্প’ড়’টা শীর্ষের গালে মে’রে দিলো? শীর্ষ রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো ত্রয়ীর দিকে। গালে হাত রেখেই হুংকার তুলে বলল
“তোর এত বড়ো সাহস বালির বস্তা আমাকে থা’প্প’ড় মে’রে’ছি’স?”
ত্রয়ী কেঁপে উঠল শীর্ষের হুংকারে। এটা কি হলো তার দ্বারা? তার ভাগ্য এতটা খারাপ কেন? থা’প্প’ড় পড়লো তো পড়লো শীর্ষের গালেই পড়লো? এখন কি করবে সে? কোথায় যাবে? ভয়ে, আতংকে দিশেহারা হয়ে উঠল মেয়েটা। শীর্ষ জ্বলন্ত চোখ নিয়ে পা বাড়ালো ত্রয়ীর দিকে। আঁতকে উঠল সে। হৃদয়ে হানা দিলো এক ভয়ংকর বাক্য।
“শীর্ষকে থা’প্প’ড় মা’রা’র অপরাধে সে আবার আমাকে মে’রে দেবে না তো?”
অনুরাগে তুই পর্ব ২০
অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল ত্রয়ীর। নিশ্চল হলো তার পা জোড়া। কোথাও যে দৌড় দিয়ে পালাবে তাও পারছে না। ভয়ে পা জোড়া কেমন অবশ হয়ে গেছে। সাথে দেহেও হানা দিয়েছে দুর্বলতা। চোখ দুটো কেমন মুদে আসছে। শীর্ষ প্রবল ক্রোধ নিয়ে দাঁড়ালো তার মুখোমুখি। এক হাতে চেপে ধরলো গাল দুটো। দাঁতে দাঁত চেপে ওষ্ঠ ফাঁকা করল কিছু বলার উদ্দেশ্য। কিন্তু কণ্ঠনালী থেকে কোনো ধ্বনি বের করার পূর্বেই চোখ বন্ধ করল ত্রয়ী। লুটিয়ে পড়লো শীর্ষের বক্ষের উপরে। বিরবিরিয়ে বলল,
“আসমান ভেঙে এর মাথায় একটা ঠা’ডা পড়ুক। আমাকে জ্বালানোর আগে এই ব্যাটাই জ্বলে পুড়ে যাক।”