অনুরাগে তুই পর্ব ৩০
সাদিয়া শওকত বাবলি
শীর্ষ চোখ তুলে তাকালো মেয়েটির দিকে। তার হাত থেকে কফির মগটা নিতে নিতে শুধাল,
“কফি শুধু আমার জন্য এনেছিস? তোর জন্য আনিসনি?”
“না।”
“আচ্ছা, বস।”
ত্রয়ী দৃষ্টি নুইয়ে নিল। মিনমিনে কণ্ঠে বলল,
“না, আপনি বসুন। আমি রুমে যাব। ঘুম পাচ্ছে আমার।”
শীর্ষ কপাল কুঁচকাল। বিরক্তি নিয়ে বলল,
“আমি যাই বলি না কেন তার বিপরীতে তোর কণ্ঠে না বোধক ধ্বনি না তুললে পেটের ভাত হজম হয় না? বসতে বলছি বস এখানে। মেজাজ গরম করিস না।”
ত্রয়ী ভীত হলো। আড়ষ্ট হয়ে বসলো শীর্ষের থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে। পা ভেজালো পুলের স্বচ্ছ পানিতে। শীর্ষ একবার তাকালো মেয়েটির দিকে। অতঃপর কফির মগে চুমুক দিতে দিতে বলল,
“তুই এ বাড়িতে আসার পর থেকে আমার অভ্যাসগুলো সব খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”
ত্রয়ী অবাক হলো। সে আবার কি করল যাতে শীর্ষের অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে? এ বাড়িতে আসার পর থেকে সে যতদূর পেরেছে এই লোকটার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। আবার মাঝে মাঝে লোকটার মুখোমুখি চলে এলেও যে তাদের মধ্যে খুব ভালো কথোপকথন হয় তাও নয়। ত্রয়ী ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো শীর্ষের দিকে। পলক ঝাপটে শুধাল,
“আমি এ বাড়িতে আসার পর থেকে কিভাবে আপনার অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে?”
“এই যে যখন তখন হুট হাট কফি খেতে ইচ্ছে হয়। এই ইচ্ছেটা আগে হতো না।”
ত্রয়ী মুখশ্রীটা থমথমে আকার ধারণ করল। মনে মনে সে বলল,
“তো এখন এই ইচ্ছে হতে বলেছে কে? আপনার এই ইচ্ছাতে আমার অপকার বই উপকার হয়নি। আপনার এই কফির চক্করে আমার ঘুম পর্যন্ত বিসর্জন দিতে হচ্ছে।”
ত্রয়ীর মনে মনে কথা গুলো বলার মধ্যেই আবার মুখ খুললো শীর্ষ। কফির মগে চুমুক দিতে দিতেই বিরস কণ্ঠে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ইদানীং রাতে একদম ঘুম আসে না। কি করা যায় বল তো।”
ত্রয়ীর চোখে ঘুম ঘুম ভাব। হাই তুলতে তুলতে সে বলল,
“তাহলে দিনে ঘুমিয়ে নিবেন।”
“দিনে কাজ থাকে অনেক।”
“তাহলে না ঘুমিয়ে থাকবেন।”
শীর্ষ ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো ত্রয়ীর দিকে। কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,
“মানুষ না ঘুমিয়ে থাকতে পারে?”
ত্রয়ীর মেজাজ বিগড়ালো। প্রতিদিন মাঝরাতে তার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে এখন জিজ্ঞেস করছে মানুষ না ঘুমিয়ে থাকতে পারে? মেয়েটা ততটা ভাবলো না। অন্তঃপুরে বিদ্যমান চাপা ক্ষোভ থেকেই বলল,
“ওহ মানুষ না ঘুমিয়ে থাকতে পারে না তাই না? তাহলে আপনি আমাকে রোজ রোজ মাঝরাতে ঘুম ভাঙিয়ে বিরক্ত করেন কেন? আমারও তো ঘুমের প্রয়োজন। আমি….”
এই টুকু বলেই থেমে গেল ত্রয়ী। ঘুম ঘুম ভাব আর ক্ষোভ দুটো মিলিয়ে কি থেকে সে কি বলে যাচ্ছিল বুঝলো এতক্ষণে। মেয়েটা ভীত হলো। শীর্ষ তাকিয়ে আছে তার দিকেই। নিশ্চয়ই লোকটা রেগে গেছে প্রচন্ড। এমনি পান থেকে চুন খসলেও লোকটা ছাড় দেয় না আর আজ তো আরও বলেছে তাকে বিরক্ত করে। এখন তো আরও ছাড় দিবে না, ধমকে ধমকেই শেষ করে দিবে। ত্রয়ী ঢোক গিলল। দৃষ্টি নামিয়ে নিল দ্রুত। মিনমিনে গলায় বলল,
“আমি আসলে ওভাবে বলতে চাইনি।”
শীর্ষ তৎক্ষণাৎ কোনো উত্তর দিলো না। কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে। অতঃপর নরম কণ্ঠে শুধাল,
“তোর বেশি ঘুম পাচ্ছে?”
ত্রয়ী অবাক হলো। শীর্ষের কণ্ঠে এমন নরম বাক্য খুব কমই শুনেছে সে। তাও আবার এমন পরিস্থিতিতে। মেয়েটা উত্তর দেওয়ার কথা ভুলে গেল। ড্যাব ড্যাবিয়ে চেয়ে রইল শীর্ষের মুখ পানে। শীর্ষ আলতো হাসলো। ত্রয়ীর উত্তরের অপেক্ষা না বলল,
“বেশি ঘুম পেলে ঘুমা গিয়ে। এখানে আর বসে থাকতে হবে না।”
ত্রয়ীর অবাকের মাত্রা বাড়লো। এ কাকে দেখছে সে? এ সত্যিই শীর্ষ তো নাকি অন্য কেউ? শীর্ষ এত নরম কণ্ঠে কথা বলা কবে থেকে শুরু করল? আবার কোনো ঝামেলা বা ধমকা ধমকি ব্যতীতই তাকে ঘুমিয়ে যেতে বলছে। আশ্চর্য! আবাকের তাড়নায় মনে মনে হাজারটা কথা বললেও মুখে একটা কথাও প্রকাশ করল না ত্রয়ী। কি বলতে আবার কি বলে ফেলবে তারপর দেখা যাবে শীর্ষ ফের আগের রূপে ফিরে গিয়ে তাকে আটকে দিয়েছে। তার থেকে কোনো কথা না বলে চুপচাপ শীর্ষের কথা মেনে নেওয়াই শ্রেয়। ত্রয়ী উঠে দাঁড়াল। পিছন ঘুরে পা বাড়াল গৃহের দিকে। তখনই আবার শুনতে পেল শীর্ষের কণ্ঠস্বর,
“শোন।”
ত্রয়ী থমকে দাঁড়াল। পিছন ঘুরে শুধাল,
“জ্বি কিছু বলবেন?”
শীর্ষ পুলের দিকে দৃষ্টি রেখেই জবাব দিলো,
“আমি জানি প্রতিদিন মাঝরাতে তোর ঘুম ভাঙানোর জন্য তুই আমার উপর বিরক্ত। কিন্তু আমার এখানে কিছুই করার নেই। এখন থেকে বিরক্ত হওয়ার অভ্যাস করে নে। আজ তোকে যেতে দিচ্ছি এর মানে এই নয় যে প্রতিদিন যেতে দেব।”
ত্রয়ীর ভিতরে একরাশ বিরক্তি ভর করল। আজ তাকে যেতে দিচ্ছে প্রতিদিন যেতে দিবে না এর মানে কি? আবার বলছে বিরক্ত হওয়ার অভ্যাস করে নিতে। লোকটা কি প্রতিদিন মাঝরাতে তার ঘুম ভাঙিয়ে কফি বানানোর পরিকল্পনা করছে নাকি? যদি তেমন পরিকল্পনা থেকেও থাকে তবে তাকেই কেন? এ বাড়িতে তো আরও অনেক লোক রয়েছে। তাদেরকে মাঝরাতে তুলেও তো কফি বানাতে বলতে পারে। কিন্তু না, শীর্ষ তা করবে না। নিজের পরিবারের বেলায় ষোলো আনা আর তার বেলায় এক আনাও নয়। ত্রয়ীর ইচ্ছে তো করছে এখনই এই লোককে এই সুইমিং পুলের পানিতে চুবিয়ে মা’র’তে। শুধু সাহসের অভাবে পারছে না। নয়তো আজ এই শীর্ষ নামক ব্যাটাকে নির্ঘাত মে’রে দিতো ত্রয়ী। দাঁতে দাঁত চাপলো মেয়েটা। বিরবিরিয়ে বলল,
“অসভ্য, বর্বর লোক একটা।”
রৌদ্রজ্জ্বল সুন্দর দিন। চারদিকটা আলোকিত হয়ে রয়েছে সূর্যের সোনালী আলোয়। সময়ের পরিক্রমায় এরই মধ্যে কেটে গেছে দিন দুই। এই দুই দিনে মেহের এবং আলভীর দেখা সাক্ষাৎ হয়নি কোনো। অবশ্য এই দুই দিনে মেহের বাড়ি থেকেও ততটা বের হয়নি যে তাদের দেখা হবে। তবে আলভী তাকে অনুসরণ করে কিনা এই সংশয়টা মন থেকে সরাতে পারেনি মেয়েটা। যদি লোকটা তাকে অনুসরণই না করতো তাহলে যখন তখন যেকোনো স্থানে তাদের দেখা হয়ে যেতো কিভাবে? মেহের অনেকটা নিজের সংশয় ঘুচাতেই আজ আবার এসে দাঁড়িয়েছে সেদিনের সেই স্থানে। গাড়ি নষ্ট না হলেও নষ্ট হওয়ার নাটক সাজিয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা আলভীর। লোকটা যদি আজও তাকে সাহায্যের জন্য আসে তাহলেই ধরে নিবে আলভী সত্যিই তাকে অনুসরণ করে।
প্রায় ঘন্টাখানেক কেটে গেল মেহেরের অপেক্ষার। অথচ আলভী তাকে সাহায্য করতে এলো না। তবে কি মেহেরের ধারণা ভুল? আলভী তাকে অনুসরণ করছিল না? তাদের যতবার দেখা হয়েছে সব গুলোই শুধু ভাগ্য জোরে হয়েছে? হুট করেই মেহেরের মনটা খারাপ হয়ে গেল। সে হয়তো মনের এক কোনে আশা রেখেছিল আলভী তাকে অনুসরণ করে। এই আশা কেন রেখেছিল তা তার জানা নেই। তবে রেখেছিল। কিন্তু সে আশাটাও মিথ্যা প্রমাণিত হলো।
শীর্ষরা সব জমায়েত হয়েছে তাদের প্রাক্তন কলেজ অর্থাৎ ত্রয়ীদের কলেজে। আজ সেখানেই তাদের ক্লাবের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে।
শীর্ষ, নয়ন, রবি, আলভীসহ বাকি সকলে ইতোমধ্যে কলেজেরই একটা ফাঁকা কক্ষ দখল করে নিয়েছে নিজেদের পরিধেয় বস্ত্র পরিবর্তন করে খেলার জন্য নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে। নয়ন অন্যদের সাথে কথা বলতে বলতে নিজের শরীরে জড়ানো টিশার্টটা খুললো। একটা জার্সি তুলে নিল হাতে। সেটা মাথা থেকে ঢুকাবে ঠিক তখনই দরজার নিকট থেকে ভেসে এলো একটি কণ্ঠস্বর,
“ওয়াও নয়ন। তোমার কি বডি! আমি আরও একবার ফিদা।”
কণ্ঠস্বরটা চিনে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না নয়নকে। যে লোককে সে বাঘের ন্যায় ভয় পায় তার কণ্ঠস্বর কি এত সহজে ভুলতে পারে? নয়নের হাত থেকে জার্সিটা পড়ে গেল নিচে মেঝেতে। ঢোক গিলে সে তাকালো দরজার দিকে। হ্যা সে ঠিক ধরেছিল। মিস্টার সোহাগ এসেছে। তবে আজ সে আগের দিন গুলোর ন্যায় মেয়েলী বস্ত্র পরিধান করেনি। লোকটা এই প্রথম বোধ হয় পুরুষদের ন্যায় শার্ট প্যান্ট পড়েছে। অথচ চোখে মুখে মেয়েলী মেকআপ, সাজসজ্জা স্পষ্ট। মিস্টার সোহাগের এই রূপ যেন নয়নের নিকট পূর্বের তুলনায় আরও ভয়ানক ঠেকলো। আগে তো তাও দেখতে পুরুষদের ন্যায় ছিল। পোশাক পরিচ্ছদ, সাজসজ্জা নারীদের ন্যায় ছিল। আর আজ দেখতে পুরুষদের ন্যায়, পোশাক পরিচ্ছদও পুরুষদের ন্যায় অথচ সাজসজ্জা নারীদের ন্যায়। তবে এখন প্রশ্ন হলো এই লোক এখানে কেন? অফিসে না হয় কাজের দোহাই দিয়ে যখন তখন চলে আসে। তাই বলে এখন কলেজেও? নয়ন তার চিন্তা ভাবনার মধ্যেই খেয়াল করল সোহাগ হেলেদুদে তার দিকেই এগিয়ে আসছে। আঁতকে উঠল বেচারা। দৌড়ে গিয়ে লুকালো রবির পিছনে। আমতা আমতা করে বলল,
“ভাই আমাকে বাঁচান। নয়তো এই ভরা মাঠেই আজ এই লোক আমার ইজ্জত খেয়ে দিবে।”
রবি ভ্রু কুঁচকাল। এই লোক আবার কে? আর এর এমন অদ্ভুত সাজ পোশাকই বা কেন? মিস্টার সোহাগও নাক মুখ কুঁচকাল রবিকে দেখে। মা’তা’ল থাকায় রবির সেদিন রাতের কথা তেমন স্মরণে থাকলেও সোহাগের তো রয়েছে। এই ছেলেটাই তো সেদিন তাকে চাচি বলেছিল। সোহাগ চোখ মুখ শক্ত করে গিয়ে দাঁড়াল রবির মুখোমুখি। রুক্ষ কণ্ঠে বলল,
“এই বদমাইশ ছেলে তুমি এখানে কি করছো?”
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়লো রবি। এই লোক তাকে কি বলল? বদমাইশ! কোথাকার কোন লোক, চেনা নেই, জানা নেই অথচ হুট করে এসেই তাকে বলে দিলো বদমাইশ! রবির কপালে ভাঁজ পড়লো। কণ্ঠে কাঠিন্য এটে বলল,
“আপনি কাকে বদমাইশ বলছেন? আর কোন হিসেবেই বা বলছেন? আমি আপনার সাথে কি বদমাইশি করেছি?”
“তুমি আমাকে……”
এই টুকু বলে থেমে গেল সোহাগ। ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“বাদ দাও। তোমার সাথে আমি কোনো ঝামেলা করতে চাইছি না। আমি এখানে এসেছি নয়নের সাথে দেখা করতে। সামনে থেকে সরো।”
নয়ন সাথে সাথে রবির হাত চেপে ধরলো। কণ্ঠ খাদে নামিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“আপনি সরবেন না স্যার। এভাবেই থাকুন।”
রবি সরলো না নয়নের সামনে থেকে। কপাল টানটান করে দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
“সরবো না।”
মিস্টার সোহাগ দাঁতে দাঁত পিষলো। তবে উত্তর দিলো না কোনো। একটু ঘুরে গিয়ে সে পিছনে এলো রবির। সাথে সাথে নয়নও রবিকে নিয়ে ঘুরে গেল। জোরপূর্বক হেসে বলল,
“আমাদের খেলা আছে মিস্টার সোহাগ। আপনার সাথে আমি খেলার পরে কথা বলবো।”
“কখন না কখন খেলা শেষ হয় ততক্ষণ আমি নাও থাকতে পারি।”
নয়ন খুশি হলো। যাক আপদটা তাহলে তাড়াতাড়িই বিদায় হবে। খেলার পরে আর এটাকে সহ্য করতে হবে না। মনে মনে খুশি হলেও চোখে মুখে বিষন্ন ভাব ফুটিয়ে তুললো নয়ন। মলিন কণ্ঠে বলল,
“তাহলে বোধ হয় আমাদের আজ আর কথা হবে না মিস্টার সোহাগ। খেলাটাও তো গুরুত্বপূর্ণ বোঝেনই তো।”
নয়নের কথা শেষ হতে না হতেই সেখানে এসে উপস্থিত হলো শীর্ষ। একটু ওয়াশ রুমে গিয়েছিল সে। সেখান থেকে ফিরে আসতেই দর্শন পেল মিস্টার সোহাগের। এই লোককে এখানে দেখে সে যতটা না অবাক হয়েছে তার চেয়ে অধিক তৎপর হয়েছে এই কক্ষ ছেড়ে পালিয়ে যেতে। নয়তো এই লোক আবার জোঁকের ন্যায় এটে ধরবে তাকে। মিস্টার সোহাগ শীর্ষকে দেখার পূর্বেই তাড়াহুড়ো করল। যত্রতত্র পায়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,
“এই তোরা তাড়াতাড়ি আয়। খেলা শুরু করতে হবে।”
নয়ন যেন সুযোগ পেল। রবির পিছন থেকে বেরিয়ে সে দ্রুত মেঝে থেকে তুলে নিল নিজের জার্সিটা। শীর্ষের পিছন ছুট লাগিয়ে বলল,
“ঐ খেলা শুরু হয়ে যাবে এখনই। আপনার সাথে পরে কথা হবে।”
খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে। টসে জিতে ব্যাট করছে শীর্ষদের দল। ত্রয়ীদের ক্লাস শেষ হলো মাত্র। রাকিব এবং আরফার সাথে বাইরে বেরিয়ে এলো সে। রাকিব ক্লাস থেকে বেরুনোর পর আর এক মুহূর্তও দেরি করল না। ছুটে গেল মাঠের কাছে খেলার স্থানে। ত্রয়ী একবার ভেবেছিল খেলা দেখবে না। এসব খেলা টেলার কিছু বোঝে না সে। কিন্তু না দেখেও কোনো উপায় নেই। রিমা তার ভাইয়ের খেলা দেখার জন্য বান্ধবীদের নিয়ে মাঠের এক দিকে বসে পড়েছে। এর মানে তাদের বাড়ির গাড়িটা এখন যাবে না। ঐ খেলা দেখে রিমা যখন যাবে একসাথে যেতে হবে। এ ছাড়া আর উপায় নেই। ত্রয়ী আরফাকে সাথে নিয়ে মাঠের পাশেই বসলো। তার একটু পরেই চারদিক থেকে সমস্বরে চিৎকারের ধ্বনি শোনা গেল,
অনুরাগে তুই পর্ব ২৯
“আউট! আউট!”
ত্রয়ী তাকালো মাঠের দিকে। চোখে পড়লো শীর্ষকে। একটা ছেলে তার হাতে ব্যাট দিয়ে চলে যাচ্ছে। হয়তো ঐ ছেলেটাই মাত্র আউট হয়েছে। আর শীর্ষ ব্যাটিং এ নেমেছে। ত্রয়ী দৃষ্টি ঘুরালো। আবার তাকালো আরফার দিকে। ঠিক তখনই সাহেদ এসে দাঁড়াল তার নিকটে। ওষ্ঠে কিঞ্চিৎ হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলল,
“খেলা দেখছো নাকি?”