অনুরাগে তুই পর্ব ৩৯
সাদিয়া শওকত বাবলি
নয়ন পাশ থেকে শুনলো শীর্ষের প্রতিটি কথা। ততটা ভাবলো না সে। ফট করেই প্রশ্ন করে বসলো,
“তাহলে কি আপনিও কু’ত্তা স্যার?”
শীর্ষ হতভম্ব হয়ে গেল নয়নের কথায়। ছেলেটা তাকে কি বলল? সে কু’ত্তা? চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়াল শীর্ষ। চোয়াল শক্ত করে শুধাল,
“কি বললি তুই? আমি কু’ত্তা?”
নয়নের মুখশ্রী মুহূর্তেই বিবর্ণ হয়ে গেল। সে মুখ ফসকে কি ভ’য়ং’ক’র বাক্য উচ্চারণ করে ফেলেছে বুঝলো এতক্ষণে। শীর্ষ নিশ্চয়ই এখন তাকে ছাড়বে না। পারলে তো কু’ত্তা বলার অপরাধে কু’ত্তা’র কামড় খাইয়ে দিবে। তারপর চৌদ্দটা ইঞ্জেকশন। জিহ্বার অগ্রভাগ দ্বারা ঠোঁট ভেজালো বেচারা। অতঃপর আমতা আমতা করে বলল,
“না মানে…আমি আসলে সেটা বলতে চাইনি…মানে বলতে চাইছিলাম….”
“কি বলতে চাইছিলি?”
নয়ন এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। শীর্ষের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে কি জবাব দিবে খুঁজে পাচ্ছে না সে। যা বলার তা তো মুখ ফসকে ইতোমধ্যে বলেই ফেলেছে। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মে’রে’ছে। নয়নের এখন নিজের উপরে নিজেরই রাগ লাগছে। কি হতো মুখটা একটু সামলে রাখলে? নিজের মুখটা সামলে রাখলে তো আর আজ এত বড়ো একটি বিপদে পড়তে হতো না। শীর্ষের দৃষ্টি শীতল হলো। কিছুটা সময় নিয়ে সে এক দৃষ্টে চেয়ে রইল নয়নের দিকে। অতঃপর কল লাগালো কাউকে। ওপাশ থেকে কল রিসিভ হতে বেশ ঠান্ডা কণ্ঠেই বলল,
“আসসালামুয়ালাইকুম। কেমন আছেন মিস্টার সোহাগ?”
শীর্ষের কল পেয়ে আনন্দে গদগদ হয়ে উঠল সোহাগ। শীর্ষ সচরাচর কখনো তাকে কল করে না। সব সময় সব কাজে আব্দুর রহমান খান অথবা নয়নই তার সাথে যোগাযোগ করে। সোহাগ হইহই করে উঠল। উজ্জ্বল চোখমুখে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ওয়ালাইকুমুস সালাম।”
এই টুকু বলে একটু থামলো সে। দম নিয়ে ফের বলল,
“তুমি….তুমি আমাকে কল করেছো? আমি তো ভাবতেই পারছি না।”
শীর্ষ দুর্বোধ্য হাসলো। নয়নের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বলল,
“না ভাবতে পারলে এখন ভেবে নিন। আমি সত্যিই আপনাকে কল করেছি।”
“হাউ সুইট! তুমি দেখতে যেমন মিষ্টি তোমার কথাগুলোও ভীষণ মিষ্টি।”
“আপনিও ভীষণ মিষ্টি। আর এ কথা শুধু আমি না নয়নও বলে।”
মিস্টার সোহাগ লাজুক হাসলো। হাত নাড়িয়ে জবাব দিলো,
“যাহ দুষ্টু।”
এদিকে শীর্ষের কথা শুনে নয়ন হতবাক না হয়ে পারলো না। মিস্টার সোহাগ মিষ্টি! এ কথা আবার সে কখন বলল? এই লোকটা করতে চাইছেটা কি? নয়নের ভাবনার মধ্যেই শীর্ষ ফের মিস্টার সোহাগকে বলল,
“যাক ওসব কথা বাদ দিন। আপনি এখন কোথায় বলুন তো।”
“এই তো, বাড়িতেই আছি।”
“আহা, আপনি বাড়িতে কেন? নয়ন আপনাকে খুব মিস করছে। অফিসে এসে থেকে আপনাকে খুঁজছে। আপনি অফিসে না এলে নাকি ওর ভালো লাগে না।”
নয়ন আহাম্মক বনে গেল। তার ছোট মাথাটার উপরে যেন বজ্রাঘাত হলো মুহুর্তেই। এসব কথা সে কখন বলল? এই লোক তাকে না ফাঁসিয়ে ছাড়বে না দেখা যাচ্ছে। কোথায় আজ ঐ অদ্ভুত প্রাণীটা অফিসে আসেনি বলে একটু শান্তিতে সময় কাটাবে ভেবেছিল তা না ঐ প্রাণীকে এখন অফিসে এনেই ছাড়বে। নয়ন ওষ্ঠ ফাঁকা করল কিছু বলার উদ্দেশ্য। কিন্তু তার কণ্ঠনালী ভেদ করে কোনো শব্দ বের হওয়ার পূর্বেই শীর্ষ হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দিলো। বেশ হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলল,
“আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসুন। নয়ন অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।”
নিজের কথা শেষ করে কল কাটলো শীর্ষ। নয়ন এগিয়ে এলো তার দিকে। কণ্ঠে বিস্ময়বোধ নিয়ে বলল,
“এসব কি অদ্ভুত কথা বলছেন স্যার? আমি আবার কখন মিস্টার সোহাগকে খুঁজলাম? আর উনার জন্য অপেক্ষাই বা করলাম কখন?”
শীর্ষ হাত রাখলো নয়নের কাঁধে। বাঁকা হেসে বলল,
“করিসনি তো। কিন্তু ঐ যে আমাকে কু’ত্তা বলেছিস। এখন আজ সারাদিন তুই মিস্টার সোহাগের সাথে থাকবি। এটাই তোর শাস্তি।”
নয়ন চমকাল, ভরকালো। এর মানে এই লোক এতক্ষণ তাকে ঐ কু’ত্তা শব্দটার জন্য ফাঁ’সা’চ্ছি’ল, প্রতিশোধ নেওয়ার পাঁ’য়’তা’রা করছিল? না, না এ কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না। যে লোকের সাথে পাঁচ মিনিট নয়ন থাকতে পারে না তার সাথে গোটা একটা দিন কিভাবে কাটাবে? নয়ন তাড়াহুড়ো করল। হড়বড় করে বলল,
“ঐটা তো মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আমি ইচ্ছে করে বলিনি। ঐ শব্দটার জন্য আমাকে দয়া করে এত বড়ো শাস্তি দিবেন না। আমি মিস্টার সোহাগের সাথে গোটা একদিন কিছুতেই কাটাতে পারবো না, স্যার।”
শীর্ষ মুখ বাঁকালো। ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
“মুখ ফসকে বলবি কেন তুই? আমাকে কি দেখে তোর কু’ত্তা মনে হয়?”
নয়ন আড়ালে মুখ বাঁকালো। মনে মনে বলল,
“কু’ত্তা তো ত্রয়ী ম্যামের পিছনে অন্য যারা ঘোরে তাদের দেখেও মনে হয় না। তবুও আপনি বলেছেন।”
পরপর গলা বাড়ালো নয়ন। জোরপূর্বক হেসে বলল,
“না না, আপনাকে দেখে কু’ত্তা কেন মনে হবে? আপনি তো অতি সুদর্শন পুরুষ। আপনার চেয়ে সুদর্শন পুরুষ আমাদের শহরে কেন পুরো বাংলাদেশে নেই।”
শীর্ষ মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“পাম দিচ্ছিস? তবে সে পাম দিতেও দেরি করে ফেলেছিস। মিস্টার সোহাগ আসছে। আজ সারাদিন শুধু তোর আর মিস্টার সোহাগের। প্রয়োজনে পুরো অফিস ফাঁকা করে দেব। তবুও তোদের দুজনকে একে অপরের থেকে দূরে যেতে দেব না।”
কণ্ঠে তোলা বাক্যগুলোর পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে কক্ষের বাহিরে পা বাড়ালো শীর্ষ। নয়নের মুখশ্রী কাঁদো কাঁদো হলো। মুখ ফসকে কি একটু বলে ফেলেছে যার জন্য এখন তাকে এত বড়ো একটা শাস্তি ভোগ করতে হবে। সে কিভাবে সারাটা দিন মিস্টার সোহাগের সাথে কাটাবে? নয়ন মুখ ভার করল। অসহায় কণ্ঠে বলল,
“আমি আর কখনো এমন বলবো না স্যার। মুখ ফসকেও বলবো না। তবুও সারাটা দিন আমাকে ঐ মিস্টার সোহাগের সাথে থাকার শাস্তি দিবেন না।”
শীর্ষ দাঁড়াল না। যেতে যেতেই বলল,
“যা বলেছি তাই। আর যদি মনে করিস আমার কথার অবাধ্য হবি তাহলে তোর এত সাধের চাকরিটাকে আমি খু’ন করে দেব।”
আব্দুর রহমান খান নিজের কেবিনে ছিলেন। প্রয়োজনীয় কিছু ফাইল উলটেপালটে দেখছিলেন। তখনই কেবিনের দরজায় টোকা পড়লো,
“ভিতরে আসবো?”
শীর্ষের কণ্ঠস্বর। আব্দুর রহমান খান ফাইল দেখতে দেখতেই জবাব দিলেন,
“এসো।”
শীর্ষ দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলো। এগিয়ে গিয়ে বসলো বাবার অভিমুখে একটি চেয়ার দখল করে। আব্দুর রহমান খান এক পলক তাকালেন ছেলের দিকে। অতঃপর আবার নিজের কাজের প্রতি মনোনিবেশ করে শুধালেন,
“কিছু বলবে?”
“জ্বি।”
“বলে ফেলো।”
শীর্ষ একটু সময় নিল। চোখে-মুখে তার হানা দিলো একরাশ দ্বিধা। কণ্ঠে ক্ষীণ ইতস্ততবোধ নিয়ে বলল,
“ব্যবসার কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার কিছুদিন পরেই তুমি আর মা আমার বিয়ের কথা বলেছিলে না?”
আব্দুর রহমান খানের হাত থেমে গেল। পিতৃসুলভ ধীর দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“হুম, কিন্তু তখন তো তুমি বলেছিলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাও না। তাহলে আজ হঠাৎ সেই প্রসঙ্গ তুলছো?”
শীর্ষ কিছু বলতে গিয়েও আটকে গেল। কেমন ইতস্তত লাগছে তার কথাটা বলতে। এমনি বাহিরে সে যতই নির্লজ্জ, মা’র’পি’টে, বাজে স্বভাবের হোক না কেন বাবা-মায়ের অভিমুখে যথেষ্ট মার্জিত এবং ভালো থাকার চেষ্টা করে। এভাবে বাবার অভিমুখে বসে নিজের বিয়ের কথা বলতে কেমন লজ্জা লাগছে তার। আবার না বলেও তো উপায় নেই। চারদিক থেকে যেভাবে শকুনের উপদ্রব শুরু হয়েছে তাতে কখন কি হয়ে বলা যায় না। শীর্ষ জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিল। নিজেকে ধাতস্থ করে এবার বলেই ফেললো,
“আমি এখন বিয়ে করতে চাই।”
আব্দুর রহমান খান বিচক্ষণ মানুষ। ছেলের কণ্ঠ, চোখের ভাষা, আর ওই একটুখানি ইতস্ততবোধ—সব মিলিয়ে তিনি বুঝে নিলেন শীর্ষের মনের কথা। তার ছেলের নিশ্চয়ই কোনো রমনীকে মনে ধরেছে অথবা কোনো রমনীর সাথে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছে। নয়তো এতটা সহজে এবং এভাবে তার অভিমুখে বসে বিয়ের কথা বলতো না। আব্দুর রহমান খানের দৃষ্টি শীতল হলো। অত্যন্ত ঠান্ডা কণ্ঠে শুধালেন,
“মেয়েটি কে?”
শীর্ষ দৃষ্টি নামিয়ে নিল। ধীর গলায় জবাব দিলো,
“ত্রয়ী।”
আব্দুর রহমান খান অবাক হলেন। তার ছেলের তাহলে ত্রয়ীকে পছন্দ? তবে বিষয়টা ভালোই হয়েছে। ত্রয়ী একা, এতিম। মেয়েটির জন্য ভীষণ মায়া হয় তার। নিজের মনেও তিনি অনেক বার ভেবেছিলেন মেয়েটিকে শীর্ষের বউ করে নিজের বাড়িতে রেখে দেওয়ার কথা। কিন্তু সাহস করে কথাটা বলতে পারেননি কাউকে। শীর্ষরা আজকালকার ছেলে। যদি ত্রয়ীকে পছন্দ না করে। হ্যা, এটা ঠিক আব্দুর রহমান খান চেয়েছেন ত্রয়ী তার বাড়ির বউ হোক। তবে জোরজবরদস্তি কিংবা নিজের মতামত শীর্ষের উপর চাপিয়ে দিয়ে নয়। জোরজবরদস্তি করে আর যাই হোক সংসার হয় না। এমনিই মেয়েটির জন্ম থেকে দুঃখের শেষ নেই। আব্দুর রহমান খান জোরপূর্বক ত্রয়ীর সাথে শীর্ষের বিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে আরেক দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিতে চাননি। তবে যাক আজ শীর্ষ নিজেই কথাটা বলে দিলো, বিয়ে করতে চাইলো ত্রয়ীকে। মনে মনে ভীষণ খুশি হলেন আব্দুর রহমান খান। কিন্তু ত্রয়ী! সেও কি শীর্ষকে পছন্দ করে? দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক কি ইতোমধ্যে প্রণয়ের সম্পর্কে গড়িয়েছে নাকি শুধুই পছন্দ অব্দি টিকে আছে? আব্দুর রহমান খান একটু নড়েচড়ে বসলেন। হাতের ফাইলগুলো টেবিলের উপরে রেখে বললেন,
“ত্রয়ী, সেও কি তোমাকে বিয়ে করতে চায়?”
“না।”
শীর্ষের সোজাসাপ্টা জবাব। আব্দুর রহমান খানের কপাল কুঁচকে এলো। থমথমে কণ্ঠে শুধালেন,
“মানে? তুমি ওকে বিয়ে করতে চাও, ও তোমাকে বিয়ে করতে চায় না। তাহলে বিয়েটা কিভাবে হবে?”
“তুমি দিয়ে দিলেই হবে।”
“ও তোমাকে বিয়ে করতে না চাইলে আমি তোমাদের বিয়ে দেব কিভাবে? আশ্চর্য!”
“ও আমাকে বিয়ে করতে চাক বা না চাক আমি তো চাই। আমাকে কাজি ডাকার অনুমতি দাও আর ওর ঘাড় ধরে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দাও। কাজি সাহেব আমাকে কবুল বলতে বললেই বলে দেব। আর ও কবুল বলতে না চাইলে দুইটা থা’প্প’ড় মে’রে কবুল বলিয়ে দেব। ব্যস বিয়ে শেষ।”
ছেলের কথা শুনে কেশে উঠলেন আব্দুর রহমান খান। কি ভ’য়ং’ক’র কথা বার্তা! থা’প্প’ড় মে’রে নাকি কবুল বলাবে। তার ছেলে একটু বেপরোয়া তা তিনি জানেন। তাই বলে বিয়ের ক্ষেত্রেও বেপরোয়াগিরী করবে? শীর্ষ টেবিলের পাশ থেকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিলো বাবার দিকে। আব্দুর রহমান খান পানিটা খেলেন। নিজেকে একটু ধাতস্থ করে বললেন,
“জোরজবরদস্তি করে আর যাই হোক ভালোবাসা, বিয়ে, সংসার হয় না। আমি তোমাদের তিন ভাই বোনের উপরে কখনো কিছু চাপিয়ে দেইনি। ঐ মেয়েটার উপরেও চাপিয়ে দিতে পারবো না। তার থেকে মেয়েটার মন জয়ের চেষ্টা করো এবং ওর হৃদয়ে তোমার জন্য ভালোবাসার সৃষ্টি করো। তারপর না হয় বিয়ের কথা ভাবা যাবে।”
শীর্ষ বিরক্ত হলো বাবার কথায়। ত্রয়ীর মন জয় করে, তার হৃদয়ে ভালোবাসার সৃষ্টি করেই যদি বিয়ে করার হতো তাহলে সব লাজ লজ্জা বিসর্জন দিয়ে এখনই কেন বিয়ের কথা বলল? পরেই বলতে পারতো। ঐ মেয়ে যা, শীর্ষ বলে এক বোঝে আরেক। ঐ মেয়ের মন জয় করতে করতে দেখা যাবে অন্য কেউও চলে এসেছে তার মন জয় করতে। শীর্ষ কোনো প্রতিযোগিতা চাইছে না বলেই তো সরাসরি বিয়ে করে ফেলতে চাইছে। প্রতিযোগিতা চাইলে কি আর লাজ লজ্জা বিসর্জন দিয়ে এখানে আসতো? নাক মুখ কুঁচকাল বেচারা। বিরবির করে বলল,
“মন জয় তো অবশ্যই করবো। তবে তা বিয়ের পর, কাছে ডেকে, ভালোবেসে, আদর করে, চু’মু খেয়ে।”
আব্দুর রহমান খান শীর্ষের নিকট থেকে কিঞ্চিৎ দূরে অবস্থান করায় স্পষ্টরূপে শুনতে পেলেন না কিছুই। কপাল কুঁচকে তিনি শুধালেন,
“কিছু বললে?”
“না।”
এই টুকু বলে থামলো শীর্ষ। চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বলল,
“আসছি আমি।”
“এসো। তবে ত্রয়ীর সাথে ভুলেও কোনো জোরজবরদস্তির চেষ্টা করো না। তাহলে আমার থেকে খারাপ কিন্তু আর কেউ হবে না।”
শীর্ষ কপালে ভাঁজ ফেললো। থমথমে কণ্ঠে বলল,
“করবো না কোনো জোরজবরদস্তি।”
অনুরাগে তুই পর্ব ৩৮
সময় বয়ে চলছে নিজের গতিতে। বাবার সাথে কথা শেষে শীর্ষ আর এক মিনিটের জন্যও অফিসে দাঁড়ায়নি। গাড়ি নিয়ে সোজা চলে এসেছে কলেজে। ত্রয়ীর ক্লাস চলছিল। শীর্ষ তা উপেক্ষা করেই শ্রেনীকক্ষের দরজার নিকটে দাঁড়াল। উপস্থিত অধ্যাপককে উদ্দেশ্য করে বলল,
“আসসালামুয়ালাইকুম স্যার।”
অধ্যাপক পূর্ব থেকেই শীর্ষকে চিনেন। তিনি ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে বললেন,
“আরে শীর্ষ যে। তুমি হঠাৎ এখানে?”
শীর্ষ সৌজন্যেসূচক হাসলো। নম্র কণ্ঠে বলল,
“আসলে ত্রয়ীকে একটু প্রয়োজন ছিল। বাবা ওকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেছেন।”