অনুরাগে তুই পর্ব ৪৯

অনুরাগে তুই পর্ব ৪৯
সাদিয়া শওকত বাবলি

শীর্ষ একটু এগিয়ে এক হাতে চেপে ধরলো কায়সারের কলার। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“হা’রাম’জাদা, বা’ল পাকনা ডিসের লাইন। কতদিন তোকে বলেছি ত্রয়ীর থেকে দূরে দূরে থাকবি তা না। শা’লা লু’চ্চা। মেয়ে দেখলেই জিহ্বার আগায় লোভ ট্যাক ট্যাক করে। তোর জিহ্বাই আজ আমি কে’টে দেব লু’চ্চা শা’লা।”
কায়সার ততটা গায়ে মাখলো না শীর্ষের কথাগুলো। নরম ভাবেই সে নিজের কলার থেকে হাত সরিয়ে দিলো শীর্ষের। ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে বলল,

“ওটাকে লোভ নয় শা’লা বাবু, ভালোবাসা বলে। অবশ্য তোমার বোনটা যা তাতে ভালো না বেসে আর উপায় আছে কি? সৌন্দর্যের দিক থেকে না হয় বাদই দিলাম। ওর কথা বলা, তাকানো, আচার-আচরণ, ভদ্রতা সবটাই আমার মনের দুয়ারে কম্পন সৃষ্টি করেছে। নয়তো আমার অন্তত তোমার মতো শত্রুর বোনকে ভালোবাসার কোনো ইচ্ছা ছিল না।”
শীর্ষ তেতে উঠল আরও। এবার হাতে হকি স্টিকটা নিয়েই দুই হাতে চেপে ধরলো কায়সারের কলার। ক্রোধে হিসহিসিয়ে উঠে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ও আমার বোন নয়। বউ হয়, বউ।”
কায়সার একটু সময়ের জন্য থমকালো। হৃদয়ে উত্তাল ঝড়ের হাওয়া বইল যেন। ত্রয়ী শীর্ষের বউ? কখন, কিভাবে? না, এ হতে পারে না। একটু সময় নিয়ে সে আবার পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে গেল। হৃদয় শীথিল হলো তার। এ নিশ্চয়ই শীর্ষ তাকে ত্রয়ীর থেকে দূরে সরানোর জন্য বলছে। নয়তো দুই দিন আগেও যেখানে শীর্ষের সাথে ত্রয়ীর সম্পর্কটা কেবল মাত্র দুঃসম্পর্কের ভাই বোনে সীমাবদ্ধ ছিল এখন স্বামী-স্ত্রী কিভাবে হয়? আর তাছাড়া এমন কিছু হলে সে নিশ্চয়ই খবর পেত। শীর্ষের মতো পুরুষ অন্তত লুকিয়ে চুরিয়ে বিয়ে করতে পারে না। আর করবেও বা কেন? কি কারণ থাকতে পারে? কায়সার মৃদু হাসলো। ওষ্ঠ বাঁকিয়ে বলল,

“কেমন বউ? দুঃসম্পর্কের বউ নাকি আপন বউ?”
“দুঃসম্পর্কের বউ আবার কি? ও আমার নিজের বউ। বিয়ে হয়েছে ওর সাথে আমার।”
কায়সার এবারেও বিশ্বাস করল না শীর্ষের কথা। বরং ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
“বিয়ে তো হবে আমার সাথে। ত্রয়ী আমার বউ হবে, শুধু আমার।”
শীর্ষের চোখ দুটো রক্তিম হয়ে উঠল। একে তো তার বউকে কলেজে গিয়ে প্রেম নিবেদন করে এসেছে, তার উপর এখন আবার বলছে বিয়ে করবে। শীর্ষ এখানে এসেছিল কায়সারকে আঘাত করার তাগিদে। তবে এখনো অব্দি কলার চেপে ধরা ব্যতীত তেমন কিছুই করেনি। মা’রা’মা’রি’তে যাওয়ার পূর্বে সে বেশ ভালোভাবেই বুঝিয়েছে, বলেছে তাদের বিয়ের কথা। কিন্তু এ ব্যাটা তো তার কোনো কথাই বিশ্বাস করছে না। উলটো রসিকতা করছে। শীর্ষ এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। মেজাজ হারিয়ে ঘু’ষি বসালো কায়সারের নাক বরাবর। চ্যাচিয়ে উঠে বলল,
“একটা কথা বললে বুঝিস না? তোকে বারবার বলেছি ত্রয়ীর পিছু ছাড়, পিছু ছাড়। তারপরেও কু’ত্তা’র মতো পড়ে আছিস ওর পিছনে। লাজ, লজ্জা বলতে কিছু নেই তোর?”

শীর্ষের শক্ত হাতের ঘু’ষি’র দাপটে কায়সার ছিটকে পড়লো অদূরে মেঝেতে। সাথে সাথে মাথাটা ঘুরে উঠল তার, একটু সময়ের জন্য দৃষ্টি অভিমুখে হানা দিলো ঘোলাটে ভাব। কায়সার মাথা নাড়িয়ে নিজেকে ধাতস্থ করল। নাকে হাত দিয়ে লাল তরল রক্তের আভাস পেল। সাথে সাথে ফুঁসে উঠল সে, তরাক করে লাফিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো। কণ্ঠে রোষ নিয়ে বলল,
“এতক্ষণ তোর অনেক জারিজুরি সহ্য করেছি। কিছু বলিনি। তোর সাহস তো কম নয়। তুই আমার ডেড়ায় এসে আবার আমার গায়েই হাত তুলিস।”
শীর্ষ তেড়ে গিয়ে হাতের হকিস্টিকটা দ্বারা আঘাত করল কায়সারের পা বরাবর। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“সাহস আমার বরাবরই বেশি। এখন পর্যন্ত তো শুধু গায়ে হাত তুলেছি। এরপরও যদি তুই ত্রয়ীর পিছু না ছাড়িস তবে মে’রে পুতে দেব নির্ঘাত।”

“ছাড়বো না আমি ত্রয়ীর পিছু। কি করবি তুই?”
শীর্ষ ফের রেগেমেগে হাতের হকিস্টিকটা দ্বারা আঘাত করল কায়সারের বাহু বরাবর। তবে এবারে সে একটা আঘাত করেই থেমে থাকেনি। গায়ের জোরে যতগুলো পারছে আঘাত করেই যাচ্ছে। কায়সারও দৌড়ে গিয়ে তার ঝুপড়ি ঘরের এক কোনা থেকে একটি মোটাসোটা লাঠি বের করে আনলো। তা দ্বারা প্রতিহত এবং আঘাত করার চেষ্টা শুরু করল শীর্ষকে। দু’জনের মধ্যকার মা’রা’মা’রি মুহূর্তেই ভ’য়া’ব’হ রূপ ধারণ করল। শীর্ষের সাথে আসা জনবলও থেমে নেই। তারাও কায়সারের দলের সাথে মা’রা’মা’রি’তে যোগদান করেছে ইতোমধ্যে‌।

দুই পক্ষের তুমুল সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে পড়েছে পরিবেশ। আশেপাশের সব মানুষ নিজেদের বাড়িঘর, দোকানপাট রেখে জড়ো হয়েছে মারামারি দেখতে। এ যেন তাদের নিকট কোনো ভ’য়া’ব’হ ব্যাপার নয় বরং উপভোগ্য বিষয়। কেউ কেউ আবার নিজেদের মুঠোফোনে ভিডিয়ো রেকর্ডও শুরু করল মা’রা’মা’রি’র। তবে এদের মধ্যে থেকে কোনো এক দায়িত্বশীল নাগরিক কল করল পুলিশে, বর্ণনা দিলো সংঘর্ষের। শহুরে পরিবেশে থানাগুলো খুব বেশি দূরে নয়। তাই পুলিশের গাড়ি আসতে খুব বেশি সময় লাগলো না। পুলিশের গাড়ির সাইরেন কানে পৌঁছাতেই চমকে উঠল শীর্ষ এবং কায়সারা‌। এমনি মা’রা’মা’রি করে তাদের নিজেদের সাহস প্রকাশে যতই আগ্রহ থাকুক না কেন পুলিশি হে’ফা’জ’তে যেতে ঠিক ততই ভয়। পুলিশের গাড়ির শব্দ শুনেই সবাই মা’রা’মা’রি’তে ইস্তফা দিলো। যে যেখান থেকে পারলো ছুটলো পালানোর উদ্দেশ্যে। শীর্ষও হাতের হকি স্টিকটা নিয়েই ছুটলো নিজের গাড়ির দিকে। তবে যাওয়ার আগে কায়সারকে শাসিয়ে বলে গেল,
“আজকের পর যেন তোকে আর আমার বউয়ের পিছনে না দেখি। তাহলে কিন্তু খু’ন হয়ে যাবি।”

চারদিকে হইহই রইরই পরিবেশ। কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বোধ হয় এই মুহূর্তে শ্রেনীতে, নিজেদের পাঠে ব্যস্ত। শীর্ষ লম্বা লম্বা পা ফেলে গিয়ে দাঁড়াল ত্রয়ীর শ্রেনীকক্ষের অভিমুখে। শ্রেণীতে এই মুহূর্তে অধ্যাপক নেই। শিক্ষার্থীরা যে যার মতো আড্ডা দিচ্ছে। শীর্ষ শ্রেণীতে ঢুকলো। দৃষ্টি ঘুরালো চারদিকে। ত্রয়ী কোথায়? তাকে তো কোথাও দেখা যাচ্ছে না। শীর্ষ প্রথম বেঞ্চে বসা এক শিক্ষার্থীকে শুধাল,
“ত্রয়ী কোথায়?”
“ক্যান্টিনে সম্ভবত।”
শীর্ষ আর দাঁড়াল না। পা চালিয়ে গেল ক্যান্টিনের দিকে।
ত্রয়ী ক্যান্টিনে বসে আছে আরফা এবং রাকিবের সাথে। একটু আগেই একটা ছেলে এসে তাদের অভিমুখে গোটা কয়েক সিঙাড়া রেখে গেছে। ত্রয়ী একটা সিঙাড়া তুলে মুখে দিবে ঠিক তখনই একটি শক্তপোক্ত পুরুষালী হাত এসে থামিয়ে দিলো তার হাতটা। হকচকিয়ে উঠল ত্রয়ী। তৎক্ষণাৎ ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো পিছনে। শীর্ষকে চোখে পড়তে খানিকটা অবাক হলো সে। কণ্ঠে বিস্ময় নিয়ে বলল,

“আপনি!”
শীর্ষ কোনো জবাব দিলো না। ত্রয়ীর হাত টেনে হাঁটা ধরলো আবার পিছন ঘুরে। যেতে যেতে বলল,
“চল আমার সাথে।”
ত্রয়ী কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল। গাঢ় দৃষ্টিতে তাকালো শীর্ষের দিকে। লোকটাকে কেমন অগোছালো লাগছে। চুলগুলো উস্কো খুস্কো, গলার টাই ঢিলা, শার্টের হাতা গোটানো, কপাল লাল হয়ে ফুলে আছে, ঠোঁটের কোনেও কিছুটা লাল লাল দেখাচ্ছে। এ লোক নির্ঘাত আবার মা’রা’মা’রি করেছে কোথাও। ত্রয়ীর হৃদয়ে অস্থিরতা হানা দিলো। ব্যগ্র হয়ে সে প্রশ্ন করল,
“আপনি আবার মা’রা’মা’রি করেছেন?”

শীর্ষ নিরুত্তর। সে ত্রয়ীকে টেনে এনে বসিয়ে দিলো গাড়িতে। অতঃপর নিজে চালকের আসনে স্থান নিয়ে গাড়ি চালনা শুরু করল। ত্রয়ী কপাল কুঁচকাল। ফের বলল,
“কি হলো কথা বলছেন না কেন? আপনি আবার মা’রা’মা’রি করেছেন তাই না?”
শীর্ষ এবারেও চুপ। ত্রয়ী বিরক্ত হলো। সাথে শীর্ষের জন্য ভীষণ চিন্তাও হলো তার। লোকটা আবার কার সাথে মা’রা’মা’রি করেছে? বেশি করেছে নাকি কম? কপালে, ঠোঁটে তো ভালোই ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ক্ষত কি আরও হয়েছে? আর এই লোককেও বলিহারি যাই। সারাদিন শুধু মা’রা’মা’রি কা’টা’কা’টি। ঝামেলা ছাড়া এর জীবন চলে না। এর শরীরে কি ব্যথা লাগে না? ত্রয়ী নাক মুখ কুঁচকাল। কপট রাগ দেখিয়ে বলল,

“সারাদিন শুধু মা’রা’মা’রি কা’টা’কা’টি। একটু শান্তিতে থাকতে পারেন না? কি অবস্থা করেছেন চোখ মুখের।”
ত্রয়ীর কথাটা শেষ হতে না হতেই হঠাৎ গাড়িতে ব্রেক কষলো শীর্ষ। হকচকিয়ে উঠল ত্রয়ী। অসাবধানতাবশত সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকেও গেল তার মাথা। তবে কোথাও আঘাত লাগার পূর্বেই নিজেকে সামলে উঠল মেয়েটা। কপালে বিরক্তির ভাঁজ নিয়ে বলল,
“এভাবে কেউ গাড়িতে ব্রেক কষে? আর একটু হলেই জানটা বেরিয়ে যেতো। নিজে তো কোথায় মা’রা’মা’রি করে চোখ মুখ ফাটিয়ে এসেছেন এখন আমাকেও মা’র’তে চাইছেন নাকি?”
শীর্ষের দৃষ্টি শীতল হলো। ঘাড় বাঁকিয়ে সে তাকালো ত্রয়ীর দিকে। শান্ত কণ্ঠে শুধাল,
“স্ত্রীর অধিকার ফলাচ্ছিস?”

ত্রয়ী এবারে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লো। সাথে সাথে দৃষ্টি নুইয়ে নিল সে। শীর্ষের ক্ষতগুলো দেখে একটু বেশিই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল মেয়েটা। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তার তীব্র অধিকারবোধ নিয়ে করা প্রশ্ন এবং কথায়। ত্রয়ীর চোখে মুখে অপ্রস্তুতভাব দেখে হাসলো শীর্ষ। একটু আগেই মেয়েটার কণ্ঠে কত দাপট, কত হম্বিতম্বি ছিল। আর এখন মাত্র একটি ক্ষুদ্র প্রশ্নের অভিমুখেই দিশেহারা হয়ে পড়েছে সে। শীর্ষ একটু চেপে বসলো তার দিকে। কোমড়ে হাত দিয়ে মেয়েটাকে টেনে নিল নিজের দিকে। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“কিন্তু আমার ভালো লেগেছে। একদম কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই দেখ বুকটার ভিতরে কেমন শান্তি শান্তি লাগছে।”
ত্রয়ী চোখ তুলে তাকালো শীর্ষের দিকে। তবে পরমুহূর্তেই আবার দৃষ্টি নামিয়ে নিল। মিনমিনে কণ্ঠে শুধাল,

“মা’রা’মা’রি কেন করেছেন?”
“তোর জন্য।”
“আমার জন্য?”
ত্রয়ীর কণ্ঠে বিস্ময়। শীর্ষ মেয়েটির কোমড় চেপে কোলে তুলে নিল। অস্ফুট স্বরে জবাব দিলো,
“হুম।”
“আমি আবার কি করলাম?”
প্রশ্নটা করতে করতে ত্রয়ী নেমে যেতে নিল শীর্ষের কোল থেকে। শীর্ষ তা হতে দিলো না। বরং মেয়েটিকে নিজের সাথে আরও মিশিয়ে নিতে নিতে বলল,

“ঐ যে বা’ল পাকনা কায়সারটা তোকে প্রেম নিবেদন করল।”
ত্রয়ীর চোখে মুখে ফের বিস্ময় খেলে গেল। লোকটা এর মধ্যে এ সংবাদও পেয়ে গেছে? এ নিশ্চয়ই ঐ রাকিবটা জানিয়েছে। কায়সার যখন তাকে প্রেম নিবেদন করেছিল তখন রাকিব ছিল না ঠিক, তবে সে আসার পর আরফা গড়গড় করে সব বলেছে। এই ছেলেটাকে নিয়ে আর পারা গেল না। শীর্ষ ভাইয়ের চ্যালা সে। একটু কিছু হলেই সব তাকে জানাতে হবে। কেন? আজ যদি এই কায়সারের কথা শীর্ষকে না জানাতো তবে কি শীর্ষ খ্যাপে যেতো, মারামারি করতো কায়সারের সাথে? আর মারামারি না করলে নিশ্চয়ই এত ক্ষতেরও সৃষ্টি হতো না। ত্রয়ী থমথমে কণ্ঠে বলল,

“তাই বলে আপনাকে মা’রা’মা’রি করতে হবে?”
শীর্ষ ত্রয়ীর কনের গোড়ায় এক গোছা চুল গুজে দিতে দিতে জবাব দিলো,
“হুম।”
“তা এই মা’রা’মা’রি করে কি পেয়েছেন?”
“তোকে পেয়েছি।”
ত্রয়ী থমকালো। শীতল দৃষ্টিতে তাকালো শীর্ষের দিকে। তবে খানিকটা পরে আবার দৃষ্টি নুইয়ে নিয়ে বলল,
“আপনার ঠোঁটে র’ক্ত।”
“মুছে দে।”
ত্রয়ী নিজের ওড়না কোনা উঁচালো ঠোঁটের র’ক্ত মোছার জন্য। শীর্ষ তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দিলো তাকে। গাঢ় কণ্ঠে বলল,
“এভাবে নয়।”
“তাহলে কিভাবে?”
“তোর ঠোঁট দিয়ে।”

অনুরাগে তুই পর্ব ৪৮

বাক্যটার মানে বুঝে উঠতে ত্রয়ীর সময় লাগলো একটু। তবে পুরোপুরিভাবে বাক্যটার মানে বুঝে উঠতেই চমকে উঠল সে। ঠোঁট দিয়ে মানে কি? ত্রয়ী চোখ বড়ো বড়ো করল। শীর্ষ অধর কোণে ফুটিয়ে তুললো বক্র হাসির রেখা, দৃষ্টিতে তার প্রগাঢ়তা। মাথার পিছনে হাত দিয়ে মেয়েটাকে টেনে নিল নিজের দিকে। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই নিজের শুষ্ক, খসখসে ওষ্ঠ জোড়া মিলিয়ে দিলো প্রেয়সীর দুই ওষ্ঠের ভাঁজে। প্রথমে ধীরে ধীরে এরপর উন্মাদের ন্যায় শুষে নিতে শুরু করল মেয়েটির ওষ্ঠের মধু সূধা। ত্রয়ী দিশেহারা হয়ে উঠল। অদ্ভুত এক অনুভূতি হানা দিলো তার হৃদয় জুড়ে। কেমন লজ্জা, ভয়, সংকোচ এবং ভালোবাসার তীব্র মিশ্রণে গড়া এ অনুভূতি। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াও তার অস্বাভাবিক।

অনুরাগে তুই পর্ব ৫০