অনুরাগে তুই পর্ব ৭

অনুরাগে তুই পর্ব ৭
সাদিয়া শওকত বাবলি

রহমান খান যেতেই শীর্ষও হাঁটা ধরল সম্মুখ পানে। যেতে যেতে বলল,
“চল বালির বস্তা। তোকে আগে কয়েকটা নতুন নতুন বালির বস্তা কিনে দিয়ে বিদায় করি। তারপর আমার আরও অনেক কাজ আছে।”
ত্রয়ী দেরি করল না। ব্যস্ত হয়ে ছুটলো শীর্ষের পিছু পিছু। এমনিই লোকটা সুবিধার নয়। তারপর যদি তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। তখন কি হবে? শীর্ষ ত্রয়ীকে নিয়ে আর বেশি দূরে গেল না। কাছে পিঠেই একটা শপিং মলে ঢুকলো। মেয়েদের পোশাক সেকশনে ঢুকে কোনো প্রকার বাছবিচার ছাড়াই চারটা থ্রি পিস তুললো হাতে। সেগুলো ত্রয়ীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“যা পড়ে দেখে আয় এগুলো ঠিক আছে কিনা।”

মেয়েটা আশেপাশে তাকালো। চারপাশে মানুষ রয়েছে বেশ। শীর্ষও তো রয়েছে। এত মানুষের মধ্যে সে শরীরে জড়ানো পোশাকটা পালটে অন্য পোশাক পড়বে কিভাবে? অবশ্য ত্রয়ী শুনেছে এমন বড়ো বড়ো শপিং মলে নাকি ক্রেতাদের জন্য একটি বিশেষ কক্ষ বরাদ্দ থাকে যেখানে ক্রেতারা তাদের পছন্দনীয় পোশাক পড়ে দেখার সুযোগ পায় যে ঠিক আছ কিনা। কিন্তু সেই কক্ষটা কোথায়? তাও তো ত্রয়ী দেখতে পাচ্ছে না কোথাও। মেয়েটা এলোমেলো দৃষ্টি ফেলল। কিছুটা ইতস্তত করে বলল,
“এগুলো কিভাবে পড়বো? এখানে…”
ত্রয়ী কথাটা সম্পূর্ণ করার পূর্বেই মুখ খুলল শীর্ষ। ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
“তাও জানিস না? আমাকে পড়িয়ে দিতে হবে? কাছে আয় পড়িয়ে দিচ্ছি।”
শীর্ষ মেয়েটির দিকে দুই কদম এগুলো। সাথে সাথে পিছিয়ে গেল সে। ঢোক গিলে বলল,
“আমি তা বলিনি। ট্রায়াল রুমটা কোথায় আমাকে একটু দেখিয়ে দিন। জামা গুলো ঠিক আছে কিনা আমি দেখে আসছি।”
ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল শীর্ষ। হেঁটে গিয়ে দাঁড়াল পাশেই একটু আড়ালে থাকা একটি ছোট কক্ষের সম্মুখে। হাত তুলে কক্ষটা দেখিয়ে বলল,
“এই তোর ট্রায়াল রুম। এখন এগুলো পড়ে ঠিক আছে কিনা দেখে উদ্ধার কর আমাকে।”
ত্রয়ী আর কথা বাড়াল না। শীর্ষের হাত থেকে থ্রি পিস গুলো নিয়ে ঢুকলো ট্রায়াল রুমে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কিছুটা সময় অতিবাহিত হলো। ত্রয়ীর ট্রায়াল রুম থেকে বের হওয়ার কোনো নাম গন্ধ নেই এখনো। বিরক্ত হলো শীর্ষ। এই মেয়ে কি ঐ চারটা থ্রি পিস পড়ে দেখতে গিয়ে আজ সারাদিন লাগবে? ওদিকে তার কাজ রয়েছে আরও। আলভী আর রবি নিশ্চয়ই ক্লাবে অপেক্ষা করছে তার। শীর্ষ হাত উঁচিয়ে হাত ঘড়িটায় নজর বুলাল একবার। অতঃপর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়াল ট্রায়াল রুমের সামনে। গলা উঁচিয়ে ডাকল,
“এই বালির বস্তা! ট্রায়াল রুমে জামা পালটাতে গিয়ে কি ঘুমিয়ে পড়েছিস? থাকবি আজ ওখানে?”
ত্রয়ী আস্তে ধীরে জামা গুলো পড়ে দেখছিল। হঠাৎ শীর্ষের ডাক কানে পৌঁছতেই ব্যস্ত হলো সে। গায়ে জড়ানো নতুন থ্রি পিসটা পালটে দ্রুত পড়ে নিল আগের পুরোনোটা। সে জামার চেইনটা লাগাতে নিতেই আবারও ডাক পড়ল শীর্ষের। এবার কণ্ঠে কিছুটা ক্রোধ নিয়েই সে বলল,
“তাড়াতাড়ি বেরুবি নাকি তোকে ফেলে রেখেই আমি চলে যাব।”

ত্রয়ী তাড়াহুড়ো শুরু করল। অতি ব্যস্ত হয়ে জামার চেইনটা উপরে তুলতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি। চেইনটা আর উপরের দিকে উঠল না। বরং ভেঙে হাতে চলে এলো। চমকাল মেয়েটা। হাতটা সামনে এনে তাকাল ভেঙে যাওয়া চেইনটার দিকে‌। দিশেহারা হয়ে উঠল তার মন, মস্তিষ্ক। এখন কি হবে? ত্রয়ী পিঠে হাত দিয়ে বুঝল চেইন ছিঁড়ে তার পিঠ বেরিয়ে পড়েছে। সে হাত দিয়ে বেশ চেষ্টা করল চেইনের যে অংশটা এখনো জামায় অবশিষ্ট রয়ে গেছে সেটা টেনে উপরে তোলার। কিন্তু পারল না। এখন তবে উপায়? নতুন জামা গুলো থেকে একটা পড়বে? কিন্তু এগুলো আদৌও কিনবে কিনা তারই তো ঠিক নেই। শীর্ষ যদি শেষে এগুলো না কিনে। তাছাড়া এর মধ্যে দুটো থ্রি পিসই তার গায়ে বড়ো হয়েছে। ওদিকে শীর্ষে ডেকে যাচ্ছে। শেষে আর উপায় না পেয়ে ওড়না দ্বারা কোনো রকমে পিঠটা ঢেকে বেরিয়ে এলো ত্রয়ী। কিছু বলবে তার আগেই শীর্ষ ধমকানো শুরু করল তাকে। রুক্ষ কণ্ঠে বলল,

“ট্রায়াল রুমে সংসার পেতেছিলি? এতক্ষণ লাগল কেন বের হতে?”
“না মানে…”
ত্রয়ীর কথা মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে শীর্ষ ফের বলল,
“জামা গুলো ঠিক আছে?”
“দুটো বড়ো হয়েছে আর বাকি দুটো ঠিক আছে।”
“কোন দুটো ঠিক আছে দেখা তাড়াতাড়ি।”
ত্রয়ী থ্রি পিস দুটো দেখালো। শীর্ষ ঐ থ্রি পিসের সাথে মিলিয়ে আরও তিনটা থ্রি পিস কিনে নিল। অতঃপর জামা কাপড়ের ব্যাগগুলো মেয়েটার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“এখন বাড়ি চল তাহলে।”
শীর্ষ হাঁটা ধরল। ত্রয়ীও হাঁটা ধরল তার পিছু পিছু। কিন্তু পিছনে জামার চেইন না থাকায় কেমন একটা বিদঘুটে অনুভূতি আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে তাকে। বারবার মনে হচ্ছে জামাটা খুলে যাচ্ছে, আবার মনে হচ্ছে কেউ বোধ হয় পিছন থেকে তার পিঠ দেখে নিচ্ছে। নাহ, এভাবে আর হাঁটা যাচ্ছে না। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ল ত্রয়ী। মৃদু স্বরে ডেকে উঠল,

“শুনছেন।”
শীর্ষ দাঁড়াল। পিছন মুড়ে তাকাল ত্রয়ীর দিকে। এক ভ্রু উঁচিয়ে শুধাল,
“কি?”
ত্রয়ী আমতা আমতা করল। আড়ষ্ট ভঙ্গিতে বলল,
“আমার জামার চেইনটা না তখন ট্রায়াল রুমে থাকতে ছিঁড়ে গেছে। হাঁটতে পারছি না আমি। মনে হচ্ছে জামাটা খুলে যাচ্ছে।”
শীর্ষ বিরক্ত হলো। মেয়েটা নিতান্তই এক ঝামেলার কলকাঠি। এর সব সময় একটা না একটা ঝামেলা লেগেই থাকে। কপালে ভাঁজ ফেলল সে। কিছুটা ধমকের স্বরে বলল,
“যা তাড়াতাড়ি গিয়ে ট্রায়াল রুম থেকে জামা পালটে আয়।”
ত্রয়ী সময় ব্যয় করল না। শীর্ষের আদেশ পেয়েই সে হন্তদন্ত হয়ে ছুটলো ট্রায়াল রুমের দিকে। তাড়াহুড়ো করেই শরীরে জড়ানো থ্রি পিসটা পালটে বেরিয়ে এলো। জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বলল,
“হয়ে গেছে চলুন এবার।”

শীর্ষ বিরক্তি নিয়ে তাকাল মেয়েটার দিকে। অমনি থমকে গেল যেন। মুহুর্তেই তার ভিতর থেকে সকল বিরক্তি ভাব উবে গেল। সেই সাথে হানা দিল একরাশ মুগ্ধতা। মেয়েটা এই স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজের রূপের পরিবর্তন ঘটিয়েছে যেন। একটা হালকা গোলাপি রঙা থ্রি পিস জড়িয়েছে তার শরীরে। ত্রয়ীর ফর্সা শরীরে গোলাপি রঙটা মানিয়েছে দারুন। মুখশ্রীতে কোনো কৃত্রিম সাজ সজ্জা নেই। কি স্নিগ্ধ লাগছে মেয়েটাকে। শীর্ষের হৃদস্পন্দন গাঢ় হলো। এক দৃষ্টে সে চেয়ে রইল ত্রয়ীর পানে। ঠিক তখনই তার পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠল কর্কশ ধ্বনিতে। ধ্যান ভাঙলো শীর্ষের। নিজের এতক্ষণের ভাবনার উপরে নিজেই অসন্তুষ্ট হলো।‌ যেখানে এতকাল এত এত সুন্দরী, শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী মেয়েদের সান্নিধ্য পেয়েও তাদের প্রত্যাখ্যান করে এসেছে সেখানে ত্রয়ীর মতো একটা বোকা হাদা মেয়েকে নিয়ে তার হৃদয়ে এসব চিন্তাধারার উৎপত্তি ঘটে কিভাবে? আশ্চর্য! শীর্ষ কপাল কুঁচকে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করল। স্ক্রীনে তাকিয়ে দেখতে পেল রবি নামটা। কলটা রিসিভ করে সে মোবাইলটা কানের কাছে ধরল। থমথমে কণ্ঠে বলল,

“হ্যা রবি বলল।”
প্রায় সাথে সাথেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো রবির উদ্বেগ মিশ্রিত স্বর।
“এখানে ঝামেলা হয়ে গেছে শীর্ষ। ওদের সাথে আমাদের মা’রা’মা’রি লেগে গেছে।”
শীর্ষ একদিকে ঘাড় কাত করল। হাত উঁচিয়ে দুই আঙ্গুল দ্বারা কপাল ঘষতে বলল,
“আসছি আমি।”

শীর্ষ নিজের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করল। এখন আর সে বাড়িতে যাবে না। সরাসরি রবিদের কাছে ক্লাবে যাবে। এখন বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকে ক্লাবে যেতে গেলে দেরি হয়ে যাবে। শীর্ষ কল কাটল। ত্রয়ীকে নিয়ে এলো নিজের গাড়ির নিকট। জামা কাপড়ের ব্যাগ সহ মেয়েটাকে গাড়ির পিছনের সিটে বসতে দিয়ে সে বসল ড্রাইভিং সিটে। কোনোরূপ বাক্যব্যয় না করে গাড়িটা স্টার্ট করল। মুহুর্তেই তারা ছুটে চলল শহুরে ইট কংক্রিটে গড়া পাকা রাস্তা ধরে। প্রথমে শীর্ষ গাড়িটা সহনীয় গতিতে চালালেও কিছু সময় অতিবাহিত হতেই গতি বাড়াল। ঝড়ের বেগে রাস্তা ধরে ছুটালো সে গাড়িটা। আঁতকে উঠল ত্রয়ী। বুকের ভিতর থাকা ছোট্ট হৃদযন্ত্রটা লাফিয়ে উঠল ভয়ে, আতংকে। এই লোক নিজে তো ম’র’বে ম’র’বে’ই সাথে তাকেও মে’রে ছাড়বে। যে গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে তাতে কোনো দূর্ঘটনা ঘটতে খুব বেশি সময় নিবে না। ত্রয়ী চ্যাচিয়ে উঠল। আতংক মিশ্রিত স্বরে বলল,
“আস্তে গাড়ি চালান। এভাবে চালালে তো দূর্ঘটনা ঘটবে।”
শীর্ষ বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করল না ত্রয়ীর কথায়। নিজের মতো করে সে গাড়ি চালাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন কোনো প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

প্রায় ঘন্টা খানেক সময় নিয়ে একটা বড়ো সড়ো বিল্ডিং-এর সম্মুখে এসে গাড়িটা থামাল শীর্ষ। এতক্ষণে যেন প্রাণে প্রাণ ফিরে পেল ত্রয়ী। বুকে হাত দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে। এমন গতিসম্পন্ন গাড়িতে সে কখনো ওঠেনি। আর একটু হলেই আতংকে হার্ট অ্যাটাক করে বসতো নির্ঘাত। শীর্ষ গাড়ি থেকে নামল। শরীরে জড়ানো শার্টের উপরে থাকা কালো কোর্টটা খুলে জানালা থেকে ছুঁড়ে মারল ত্রয়ীর মুখের উপরে। শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গোটাতে গোটাতে বলল,
“গাড়ি থেকে নামবি না। এখানেই বসে থাকবি। আমি আসছি একটু।”
কথাটা বলে সে আর ত্রয়ীর উত্তরের অপেক্ষা করল না। পা চালিয়ে এলো গাড়ির পিছনে। ডিকি খুলতেই বেরিয়ে পড়ল গোটা পাঁচেক হকি স্টিক। শীর্ষ কপালে ভাঁজ ফেলল। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে সবচেয়ে মজবুত হকি স্টিকটা হাতে তুলে নিল। অতঃপর গাড়ির ডিকি বন্ধ করে পা বাড়াল ক্লাবের ভিতরের দিকে।

ঢাকা, নির্দ্বিধায় একটি জনবহুল এবং কোলাহল পরিপূর্ণ শহর। এর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বড়ো বড়ো ইট, পাথর, কংক্রিটে নির্মিত অসংখ্য ভবন, ইমারত। তেমনি সাত তলা বিশিষ্ট একটি ভবনের নিচ তলা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে শীর্ষদের ক্লাবটি। সে এই ক্লাবের সভাপতি। তবে আশেপাশের অনেক ধনী পরিবারের সন্তান রয়েছে যারা এ ক্লাবের সদস্য। সব মিলিয়ে বেশ বড়োসড়ো একটা ক্লাব তাদের। শীর্ষ হাতে হকি স্টিকটা নিয়ে ঢুকলো ভিতরে। দেখলো আলভী, রবিসহ কিছু ছেলেরা রীতিমতো হাতাহাতি করছে অন্য পক্ষের কিছু ছেলের সাথে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের মাথায় রক্তের চিহ্নিও দেখা যাচ্ছে। আলভিরও কপাল ফেটেছে। শীর্ষ ডানে বামে ঘাড় কাত করে মাথা দুলালো একবার। এরপরে কোনো রূপ বাক্যব্যয় না করে হুট করেই হকি স্টিকটা দ্বারা আঘাত করল আলভি, রবিদের পিছনে থাকা ক্রাম বোর্ডের কোর্টটায়। মুহুর্তেই শব্দ করে উঠে কোর্টটা দ্বিখণ্ডিত হলো, গড়িয়ে পড়ল নিচে। চমকে উঠল সকলে। নিজেদের মধ্যকার মা’রা’মা’রি থামিয়ে তাকালো পিছনে। দেখলো শীর্ষকে। তাকে দেখেই আলভি আর রবি ছুটে এলো। আলভি কপাল চেপে বলল,
“দেখ ভাই এই হা’রা’মি’র বাচ্চাগুলো কি করেছে। একেকটা নর্দমার কীট। তোকে আগেই বলেছিলাম এগুলোকে ক্লাবে জায়গা দিস না।”
শীর্ষ এক এক করে তাকালো সবার দিকে। এরপরে শান্ত অথচ গম্ভীর স্বরে শুধাল,
“কি হয়েছিল এখানে?”
রবি চটপটে কণ্ঠে জবাব দিলো,

“কয়েকদিন পরে ক্লাব থেকে একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব রেখেছিলাম আমরা। আর ওরা রেখেছিল ফুটবল টুর্নামেন্টের। এই নিয়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটিতে হঠাৎ ওরা বাবা-মা তুলে গা’লি’গা’লা’জ শুরু করে। তারপর আমার পক্ষের ছেলেপেলেও খ্যাপে যায়। ব্যস লেগে যায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি।”
“বাবা-মা তুলে গা’লি’গা’লা’জ প্রথম কে শুরু করেছিল?”
আলভি হাত উঁচিয়ে একটি ছেলেকে দেখিয়ে দিলে। কণ্ঠে ধ্বনি তুলে বলল,
“সাকিব।”
শীর্ষ এগিয়ে গেল ছেলেটির দিকে। থমথমে কণ্ঠে বলে,

“আজ থেকে তোর এই ক্লাবের মেম্বারশীপ বাদ। তোকে যেন ক্লাবের আশেপাশেও না দেখি তাহলে ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেব।”
সাকিব খ্যাপে গেল। তেতে উঠে বলল,
“কাজটা আপনি ভালো করলেন না শীর্ষ ভাই। এর মূল্য আপনাকে দিতে হবে। আপনি জানেন আমি কে? আমার মামার সাথে এই শহরের মেয়রের হাত আছে।”
“তো?”
সাকিব কিছুটা ভরকে গেল শীর্ষের নির্লিপ্ত জবাবে। সে ভেবেছিল তার মামার মেয়রের সাথে হাত আছে শুনে শীর্ষ ভয় পাবে এবং তাকে ক্লাবে রেখে দিবে। কিন্তু তেমন কিছুই ঘটলো না। তবুও সাকিব কণ্ঠে জোর নিয়ে বলল,
“তো মানে আপনি জানেন না? আমাকে ক্লাব থেকে বের করে দিয়ে আপনি কিভাবে এ ক্লাব চালান তাও আমি দেখে ছাড়বো।”

অনুরাগে তুই পর্ব ৬

শীর্ষ বাঁকা হাসলো। একটু ঝুঁকে গেল সাকিবের দিকে। ছেলেটার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
“তুই, তোর মামা আর তার হাত ওয়ালা মেয়র আমার বা*ল ছিঁড়তে পারবে। বা*ল কেটে ভিজিয়ে রেখেছি তাদের এসে বেছে দিয়ে যেতে বলিস।”

অনুরাগে তুই পর্ব ৮