অশ্রুবন্দি পর্ব ১৮ (২)

অশ্রুবন্দি পর্ব ১৮ (২)
ইসরাত জাহান ফারিয়া

নির্জন লাউঞ্জে দুটো মানব-মানবীর গভীর নিঃশ্বাস আর মৃদুস্বরের গোঙানির শব্দ। গাঢ় শ্বাসের সাথে দুটো শরীরের উত্তপ্ততা বাড়ে আগ্নেয়গিরির ন্যায়। প্রতিটি রুক্ষ হাতের স্পর্শে কুঁকড়ে যাওয়া সৃজার ধারালো নখের আঁচড় প্রতিবার ইহসানের মস্তিষ্ক থামিয়ে দিলেও পাতলা চাদরের নিচে থাকা দু’জনের উষ্ণতার এই মুহূর্ত সুখ রচনা করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ল সবকিছু পেছনে ফেলে। মধুর সময়টা গড়াল বেশ অনেকক্ষণ!

রাতের দ্বি-প্রহর! আকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তিতে ইহসানের মস্তিষ্ক শূন্য। অথচ চোখেমুখে অন্যরকম ব্যাকুলতা খেলা করছে। মাথাটা ঠিকঠাক কাজ করছে না ওর, ঘুমঘুম লাগছে! তবুও প্রতিবার সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে আর প্রাণপণে জেগে থাকতে চাইছে। বারবার বিচরণ করতে ইচ্ছে করছে সৃজাতে, ডুবে যেতে ইচ্ছে করছে ওই গোলাপসুধা ছড়ানো ওষ্ঠজোড়ায়। ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে না ওই উন্মুক্ত বক্ষের তপ্ততা থেকে। দেখতে চাইছে প্রিয় রাগিনীর ক্রন্দনরত মুখটা। অবশ্য প্রিয় নারীর সৌন্দর্য আর মাধুর্যতা একবার যদি কোনো পুরুষকে পুরোপুরি ঘায়েল করে, সে তো আর নিজেকে খুঁজে পায় না। তার হৃদয় ও মন তখন একমাত্র সেই নারীর অস্তিত্বে ডুবে থাকতে চায়৷ সেই নারীর উপস্থিতিতেই সে প্রাণোচ্ছল, বাকি সময় সে অলীক। ইহসান সৃজার কপালে টুপ করে ঠোঁট ছুঁইয়ে অস্ফুটস্বরে জিজ্ঞেস করে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“খারাপ লাগছে, ব্যথা করছে?”
সৃজা বোধহয় কাঁদছিল। সে দুপাশে মাথা নাড়িয়ে নেতিবাচক উত্তর দেয়। ইহসানের কপালে ভাঁজ পড়ে। চিন্তিত, দুর্বল স্বরে বলে,
“বেশি ব্যথা?”
সৃজা প্রশ্ন এড়িয়ে যায়। আগের মতোই মাথা নেড়ে কিছু একটা বোঝাতে চায় যা ইহসানের বোধগম্য হয় না। সে বিচলিত হয়ে পড়তেই সৃজা ওকে আঁকড়ে
ধরে বলে,
“আমি ঠিক আছি।”
পরক্ষণেই নিচু আর আর্ত সুরে বলে,
“বাড়ি যাব…”

ইহসান ঘাড় ঘুরিয়ে কাচের জানালা দিয়ে আধো চোখ মেলে বাইরে তাকায়। আলো ফুটেনি এখনো। ঘন অন্ধকার। চারপাশ নিঃস্তব্ধ। সে আদুরে হাত বুলায় সৃজায় মাথায়। বলে,
“রাত পোহালেই যাব।”
“আমি আমার বাড়ির কথা বলছি, কাল যেতে চাই!”
কথাটা কোন কারণে বলছে জানা নেই ইহসানের। কিন্তু আজ দূরত্ব ঘুচে যাওয়ার পর হুট করে কালই কেন সৃজা বাড়ি যাবার কথা তুলল? এর মানে কী? সে কি কোনোভাবে কষ্ট দিয়েছে মেয়েটাকে? নাকি ফুলফিল করতে পারেনি ওর চাওয়া-পাওয়া? চট করেই ইহসানের মাথাটা গরম হয়ে উঠে। নেশার ঘোর চাপা পড়ে যায় বিক্ষিপ্ত রাগে। তবুও কোমল গলায় বলার চেষ্টা করে,

“ব্যথা খুব বেশি? আমি কি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি তোকে? আমায় বলতে কি অসুবিধা হচ্ছে?”
সৃজা মিঁইয়ে গিয়ে জবাব দেয় ছোট্ট করে,
“ব্যথা বেশি করছে না।”
ইহসান ওর গাল চেপে ধরে আচমকা। লাল চোখের দিকে তাকিয়ে সৃজা ভয়, লজ্জা আর দ্বিধায় পড়ে চোখ সরিয়ে নেয়। সেটা দেখে সন্দেহ আরো গাঢ় হয় ইহসানের। শাণিত চোখে নামে কঠোরতা। সন্দেহবাতিক কণ্ঠেই সে শুধায়,
“তো এমন লুকোচুরি করছিস কেন? প্রোপার সুখ দিতে পারিনি আমি?”
সৃজার কান ঝাঁ ঝাঁ করে উঠে, মুখ বিকৃত করে ফেলে।
এসব কি বলছে মানুষটা? সে চোখ বুজে নেয় লজ্জায়। তাকিয়ে থাকা সম্ভব না এই বিধ্বংসী চাহনিতে। ইহসান
ক্ষিপ্ত স্বরে গর্জে ওঠে,

“অন্যান্য দিকে ফাঁকফোকর আছে জানি, সেদিক থেকে সুখে রাখতে পারছি না তারজন্য আমি হাজারো বার তোর কাছে নত হতে রাজি, কিন্তু… কিন্তু তোর চাহিদা তো পূরণ করতে পেরেছি, নাকি আমি ভুল? কেন বাড়ি যেতে চাইছিস, তাও আবার কালই?”
সৃজা এবারে আর না পেরে চোখ বন্ধ করে উত্তর দিল,
“চুপ করো…”
“কারণ না জানা অব্ধি না।”
“বাবাকে দেখতে ইচ্ছে করছে, কিছুদিন থাকবও। এটুকুই, আর কিছু না। হ্যাপি তুমি?”
ইহসানের সন্দেহ যায় না। সে ভ্রু কুঁচকেই থাকে,
“তুই হ্যাপি কি-না সেটা বল।”
“উফ বেহায়া, তুমি থামো।”
“থামাথামি পরে, আগে উত্তর দে।”
সৃজা তারস্বরে চেঁচাল,

“ইয়া আল্লাহ, কার পাল্লায় পড়লাম, আমি মরে যাব।”
ইহসান ওর ‘মরে যাব’ কথাটি শুনে ওর গাল চেপে ধরে। এরপরে ঝাঁঝালো স্বরে ধমকে উঠে,
“এসব কথা বলে মুহূর্তটা নষ্ট করিস না জান, এমনিতেই মাথা নষ্ট, আমি হয়তো গায়ে হাত তুলে ফেলব। তাই খোলাখুলি কথা বল…”
ওর চোখের রাগ, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর সন্দেহ সৃজাকে সংকোচে নিপতিত করল। বিস্মিত হয়ে বলল,
“তোমার আচরণ পাল্টে গেল কেন হঠাৎ? এতদিনে তো এমন রুপ দেখিনি, নাকি দেখাওনি? কার মতো লাগছে জানো?”
ইহসান চমকে গেল,
“কার মতো?”
“সরি টু সে তোমার বলার ধরণ দেখে আমার মনে হচ্ছে ইজহান ভাই ইস্মি ভাবিকে যেভাবে ট্রিট করে, আমার সাথে তুমিও তাই করছ।”

কিছুটা আমতাআমতা করে কথাটা বলল সৃজা। পরপর ধমক খাওয়ার ভয়ে ওর বুকে মুখ লুকাল। জ্বলতে থাকা প্রদীপ ঝড়ের বাতাসে হুট করে যেমন নিভে যায়, তেমনি নিভে গেল ইহসান। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে কপালে ভাঁজ ফেলে চেয়ে রইল বুকের উপর লেপ্টে থাকা নারীটির পানে। ইজহান শেখ? তার মতো, সে? কীভাবে সম্ভব? ঐ শালা একটা আস্ত লুজার, যে নিজের স্ত্রীর স্বাধীনতা হরণ করেছে। নিজের পছন্দ-অপছন্দ, চাওয়া-পাওয়া চাপিয়ে দিয়ে মেয়েটার জীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সহ্য করতে না পেরে মেয়েটা যখন ছেড়ে চলে গেল, তবুও পাল্টায়নি বদমাইশটা। উল্টো এমন কাণ্ড করেছে যে ইস্মি নিজেই ফিরতে বাধ্য হয়েছে লুজারটার কাছে!

এমনটা তো সে করেনি… ওয়েট, ওয়েট! এক্ষুনি সৃজার বাপের বাড়ি যাওয়া নিয়ে তার যে বুকের ভেতরটা পুড়ল, অহংবোধে জ্বলে উঠল, কোত্থাও যেতে দিতে সায় দিলো না মনটা এসব কাজ তো ঐ ইজহান লুজারেরই। তার মানে এইমাত্র সে ইজহানের মতো ম্যানিপুলেটিভ আচরণ করল সৃজার সাথে? ওহ নো! উপলব্ধি করতে পেরে ইহসান ঠোঁট কামড়াল। মুখটা রক্তবর্ণ হয়ে গেল। চোখ বন্ধ করে গালাগাল করল নিজেকেই। অসহায় লাগল। উত্তেজিত মাথাটা ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করে ব্যাপারটা ভাবল, অদ্ভুত অনুভূতি হলো ওর। এই অনুভূতির সঙ্গে সে পরিচিত নয়, একদম নতুন। বহুদিনের অনাহারী খাবার পেলে তার যেমন মিশ্র অনুভূতি হয়, তারও ঠিক তেমনি নিজেকে উন্মাদ লাগছে! সৃজার বাড়ি যাওয়ার কথাটা সে একদম ভালোভাবে নিতে পারেনি। ওকে এক মুহূর্তের জন্য চোখের আড়াল করতে ইচ্ছে করছে না, দূরে সরাতে ইচ্ছে করছে না। বরং মন চাইছে নিজের বুকের ভেতর আটকে রাখতে, জোর করে হলেও। আচ্ছা সৃজাকে কি সে কষ্ট দেবে, যেমন ইজহান ট্রিট করে ইস্মিকে? তার বাবা করেছে তার মাকে? মায়ের কথা মনে পড়তেই ইহসানের মাথাটা ভার হয়ে এলো। নিজেকে নিজেই আনমনে বলল,

“আমি ওই দু’জন কাপুরুষের মতো নই, হবও না।”
লিডি সোফাটা এতোটাও চওড়া নয় যে দু’জন আরাম করে শুতে পারে। একপাশে চেপেচুপে শুলেও অন্য পাশে ঠিকমতো জায়গা হয় না। ইহসান সৃজার নরম চুলে আঙুল চালাতে চালাতে তার উন্মুক্ত, লোমশ বক্ষে মাথাটা টেনে নিল। স্নেহময়ী ভঙ্গিতে চেপে ধরে খানিকটা ফিসফিস করে বলল,
“তোর স্পর্শ, তোর গন্ধ, তোর এই নরম চুলের অস্তিত্ব আমাকে সবসময় আকড়ে রাখে। এই ক’দিনে তুই আমার অভ্যাস হয়ে গেছিস। তুই ও বাড়ি গেলে বেড়াতে গেলে আমি একা হয়ে পড়ব। তাছাড়া আজকের পর তোকে ছাড়া থাকতে পারব না আমি, কষ্ট হবে। এই বুকটা খালি হয়ে যাবে। বোঝ একটু।”
সৃজা ব্যাকুল হয়ে ওর কথা শুনছিল। চট করে বলল,

“একা হবে কেন? আমার সঙ্গে যাবে।”
ইহসানের গলায় উৎফুল্লতা খেলে গেল,
“তুই নিশ্চয় এক – দু’দিন থাকবি?”
সৃজা এ পর্যায়ে নতমুখে বলে,
“বিয়ের পর তো একদিনও যাইনি, এক সপ্তাহ থাকার অনুমতি দেবে না?”
ইহসানের মুখটা ম্লান হয়ে গেল,
“কাজকর্ম ফেলে একটা সপ্তাহ থাকা সম্ভব না আমার পক্ষে, কিন্তু তোকে না করব না, তুই থাকতে পারিস।”
ইহসানের বুকের ধুকপুকানির শব্দ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে সৃজা। ওর মুখ থেকে কোনো শব্দ বেরুল না।
বরং ইহসানের আকুতিভরা কণ্ঠস্বর শুনে ভেতরটা হু হু
করে উঠল অদ্ভুত এক মায়ায়। হৃদপিণ্ডটা হাতুড়ি পেটা করল, তোলপাড় চালাতে লাগল বৈশাখের ঝড়ের মতো। সৃজা অনুভব করল তার গা শিরশির করছে। শরীরের প্রতিটি কোষ ব্যথা আর শীতলতার মিশ্রণে সাড়া দিচ্ছে। অথচ মুখে কোনো শব্দ ফুটল না। অস্বস্তি আর লজ্জা আর প্রতিটি নিঃশ্বাসের অনুভব বলে দিলো প্রেমে সে মরে গেছে, একদম মরে গেছে! সেসময়টাতে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিলো ইহসান ওকে চাদরের নিচে। দুর্বল ও অস্ফুটস্বরে আওড়াল,
“এখন ঘুম পাচ্ছে সোনা, তুইও ঘুমা।”

আদর আদর কণ্ঠস্বর! স্মৃতিচারণ করল সৃজার মস্তিষ্কটা। মায়ের প্রিয় ছাত্র থেকে বড় ভাইয়ের মতো আগলে রাখা, সেখান থেকে জীবনসঙ্গী হওয়া আর আজ স্বামীরুপে পূর্ণাঙ্গ স্বীকৃতি দেওয়া! সৃজা অনুভব করল, ইহসানের মায়াময় স্পর্শ তাকে অদ্ভুত এক নিরাপত্তা দিচ্ছে, তার মনকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। বলছে, এই মানুষটা তার—একান্তই তার! সে নাক ঘষলো ইহসানের পশমে আবৃত বুকটাতে।
প্রাইভেট লাউঞ্জটাতে কাজের ফাঁকে সাময়িক বিরতির সময় কাটায় বলে ইহসান তার পছন্দমতো সাজিয়েছে এটা। এখানে তার প্রয়োজনীয় সবকিছুই থাকে। পছন্দের খাবার থেকে শুরু করে জামাকাপড়ও। তেমনি গায়ে দেওয়ার পাতলা চাদরও ছিল। যেটা এই নির্জন নিশিথে আজ কাজে লেগেছে। দু’জনের গায়ের উপর আপাতত পাতলা একটা চাদর ছাড়া কিছু নেই। ঘুমে সৃজার চোখ লেগে আসছে, বড্ড শীত শীতও লাগছে। কিন্তু লজ্জায় বা সংকোচে সে কিছুই বলতে পারল না ইহসানকে। এখন তো গেল, কিন্তু সকালে কীভাবে মুখ দেখাবে এই লোককে ভেবেই সৃজার মন-মস্তিষ্ক লজ্জায় ডুবে গেল।

সকালে রশিদের ফোন পেয়ে ঘুম ভেঙেছে ইহসানের,
জিজ্ঞেস করল আজ কয়টায় ওপেন করবে। সচরাচর দশটায় খোলা হয় কিন্তু ইহসান আজ রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখল এবং বাকি স্টাফদের জানিয়ে দিতে বলল।
ফোনটা রাখার পরই সে টের পেল সৃজাটা জ্বরে
কাবু। হয়তো রাতেই জ্বর চলে এসেছে। অথচ মেয়েটা মুখফুটে বলেনি ইহসানকে, আর সেও নেশার ঘুমে এতটাই কাবু হয়েছিল যে টের পায়নি। সারা শরীর আর পায়ের ধারে প্রচন্ড ব্যথা সৃজার। বাইক গতরাতে পার্কিং লটেই ছিল, জ্বরাগ্রস্ত বউকে নিয়ে ওতে করে বাড়ি ফেরার যুক্তি খুঁজে পায়নি বলে সিএনজি করে বাড়ি এসেছে। হাঁটতে সমস্যা হচ্ছিল বলে গেইট পেরিয়েই কোলে তুলে নিলো সৃজাকে, ওর বারণ স্বত্তেও!

গ্যারেজের সাপ্লাইয়ের কলটাতে পা ধুচ্ছিল লিথু।
আচমকা গেইট খোলার শব্দ পেতেই তাকাল সে।দেখল বউকে পাঁজাকোলে নিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকছে ইহসান শেখ। বড্ড যত্নে সে আগলে রেখেছে সৃজাকে৷ আর তার বুকে মুখ লুকিয়ে, গলা জড়িয়ে আছে সৃজা। সেদিন ছাদে যেমন ছিল, তার থেকেও বেশি অন্তঃরঙ্গ দেখাচ্ছে। লিথুর গায়ে জ্বালা ধরে গেল মুহূর্তেই! ইহসান শেখ তার ন্যাকা বউকে নিয়ে গতরাতে বাড়ি ফেরেনি, খবরটা মিতুর কাছ থেকে পেয়েছিল লিথু। এরপর সারা রাত আর ঘুমাতে পারেনি। একটু পরপর উঠে গিয়ে দেখে এসেছে ওরা ফিরল কি-না, কিন্তু নাহ! ওরা ফেরেনি। সেই থেকে রাগ আর হিংসেয় জ্বলতে থাকা লিথুর মাথাটা দপদপ করছিল।

অশ্রুবন্দি পর্ব ১৮

কখন ফিরবে ওরা, আদৌ ফিরবে নাকি বউ নিয়ে হানিমুনে গেছে তার স্বপ্নপুরুষ! এসব ভেবে ভেবে ক্রোধে জ্বলা মন নিয়ে উঠোনে খালি পায়ে হাঁটতে বেরুনোর ভং ধরে নজর রাখছিল গেইটের পানে। কিন্তু শিশিরে ভিজে থাকা সবুজ ঘাসে পা ফেলে বিরক্তই হলো সে। পেডিকিওর করা ঝকঝকে পাজোড়া ইতোমধ্যে কাদা কাদা হয়ে গেছে। বিরক্ত ভঙ্গিতে পা ধুতে এসেছিল এখানে, কিন্তু কে জানতো ওসব নটাঙ্কিপনা তার সামনেই পড়বে? লিথু সহ্য করতে না পেরে নিজের চুল টানল। বিড়বিড়
করে বলল,
“আব্বা আব্বা, তোমরা কবে আমার সতীন কাঁটাকে দূর করবে? আমি আর সহ্য করতে পারতেছি না।”

অশ্রুবন্দি পর্ব ১৯