আত্মার আগলে পর্ব ১০

আত্মার আগলে পর্ব ১০
সানজিদা আক্তার মুন্নী

এহসান বাঘের ন্যায় একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পড়ে রায়ানের ওপর!চোখে তার ক্রোধের দাবানল, মুখে ভয়ংকর কিছুর আভাস!
রায়ান পালানোর চেষ্টা করলেও এহসানের দানবীয় শক্তির কাছে সে নিতান্তই অসহায়! এহসান বন্য উন্মাদনার মতো পিটিয়ে চলে রায়ানকে! একের পর এক ঘুষি, লাথি, আঘাত!
রায়ান মরিয়া হয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আফসোস! একটি মারও ফেরাতে পারে না! এহসানের শক্তি কোনো সিংহের চেয়েও ভয়ংকর!
মেহনূর আতঙ্কে এগিয়ে আসে এহসানকে থামানোর জন্য! কিন্তু ঠিক তখনই—
এহসান রায়ানের কলার চেপে ধরে মেহনূরের দিকে তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে চিৎকার করে ওঠে,

“—খারাপের বাচ্চা! যদি আর এক পা-ও এগোতে সাহস করিস, তবে আমার মাবুদের কসম, আমি এহসান তোর রক্ত দিয়েও গোসল করব!”
মেহনূর এক মুহূর্তের জন্য জমে যায়! শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তার! কিছু বলতে যাবে
তখনি এহসান আবারও গর্জে ওঠে বলে
–“খবরদার! মুখ থেকে একটা শব্দও বের করেছিস তো জানে মেরে ফেলব! ও তোর মুখ দেখে ফেলেছে! এখন যদি কণ্ঠও শুনে নেয়, তবে গলার রগ ছিঁড়ে ফেলব!”
মেহনূর এক পা-ও এগোতে পারে না! ভয় তার রক্ত জমিয়ে দিচ্ছে!
এহসান রায়ানের গুপ্ত স্থানে সজোরে লাথি বসিয়ে দেয়! এত জোরে লাতি খেয়ে রায়ান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে! চিৎকার করার শক্তিও নেই! শুধু ধুকপুক করে শ্বাস নেয়!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মেহনূর অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকে!সে কিছু করলে, এহসান ওকে জীবিত রাখবে না—এটা সে জানে!আর এই কক্ষ থেকে চিৎকার করে যদি কেউ মরেও যাওয়া হয় তাও বাইরের কেউ কিছু শুনতেও পারবে না! কারণ কক্ষ টা ভীষণ বড়”! আর চিৎকার করতেও পারব নে “! নয়তো মেহনূরকেও শেষ হতে হবে “!
এহসান রায়ান কে এতটাই নির্মমভাবে পেটাচ্ছে যে, রায়ানের মুখ দিয়ে ফেনা বেরিয়ে আসছে! কিন্তু এতেও কি এহসানের ক্ষোভ মিটবে? না! কখনোই না!
সাধারণ কোনো বিষয় হলে হয়তো সে মানতে পারত! কিন্তু এই রায়ান যে তার কলিজায় হাত দিতে চেয়েছে!
মেহনূর ভয়ে কাঁদতে থাকে! সে রায়ানের দিকে এগোতেই এহসান বজ্রকণ্ঠে গর্জে ওঠে,
—“খবরদার! এই হারাম পশুকে ছুঁতে যাবি না! যদি ছুঁতে যাস, যে হাত দিয়ে হাত দিবি, সেই হাতটাই কেটে ফেলব!”

মেহনূর আতঙ্কিত হয়ে পিছু হটে যায়! এহসান উঠে দাড়ায় তারপর অস্থির হয়ে চলে যায় কাপড় রাখার কক্ষে! পাগলের মতো কিছু খুঁজতে থাকে! উক্ত কক্ষের গুপ্ত কক্ষ থেকে বেরিয়ে করে নিয়ে আসে”! তীক্ষ্ণ ছুরি আর ছোট্ট একটি অটো ড্রিল মেশিন !
এহসান বেরিয়ে আসতেই মেহনূর এটা দেখে চিৎকার করে ওঠে এহসানের সামনে গিয়ে , দুই হাত দিয়ে এহসানকে আঁকড়ে ধরে আর কান্না করতে করতে বলে,
—-“না! আল্লাহর দোহাই লাগে! দয়া করুন!” এমন করবেন না উনিও তো কারো সন্তান ছেড়ে দিন “!
আজ আর এহসান থামে না”! সে মেহনূরকে এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে ভয়ংকর গলায় বলে,
—“চুপ থাক! এই কুত্তার বাচ্চা আমার নারীর দিকে তাকানোর সাহস করেছে আর ওকে আমি ছেড়ে দিব !”এত দয়া আমি এহসান কাউকে করি না ”

এ বলে মেঝেতে পড়ে থাকা রায়ানের সামনে বসে গিয়ে এহসান “! তারপর রক্তশীতল এক হাসি দিয়ে বলে,
“—এই হাত দিয়ে তুই আমার নারীর হাত ধরতে চেয়েছিলি, না?”
তারপর কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই ড্রিল মেশিন চালিয়ে দেয় রায়ানের এক হাতে আর অন্য হাতে সেই তীক্ষ্ণ ছুরি “!
এক বিকট শব্দে ভেসে আসে রায়ানের তীব্র আর্তনাদ!
মেহনূর চিৎকার করে ওঠে, চোখ বন্ধ করে ফেলে!
কিন্তু এহসান থামে না! এক ঝটকায় বের করে আনে রায়ানের দুই হাত থেকে ড্রিল মেশিন আর ছুরি টা “!
তারপর আবারও গর্জে বলে

“— কুত্তার বা****চ্চা এই চোখ দিয়ে তুই আমার নারীকে দেখেছিলি, না?!স****রের বাচ্চা
এ বলে এহসান এক হাতে রায়ানের চুল শক্ত করে ধরে, আরেক হাতে চকচকে স্টিলের ছুরি তোলে।
এক ঝটকায় ছুরিটা রায়ানের ডান চোখে ঢুকিয়ে দেয়!
রায়ান বিকট এক চিৎকার দিয়ে উঠে, শরীরটা বাঁকিয়ে ফেলে। মেহনূর এক পা এগিয়ে আসে, কিন্তু এহসানের দৃষ্টি বিদ্যুৎ হয়ে নামে তার উপর। তার পা থমকে যায়। শরীর অবশ হয়ে আসে, কিন্তু মন যেন ছুটে যেতে চায়!
রায়ানের মুখ দিয়ে গোঙানি বের হচ্ছে। চোখ থেকে টপটপ করে রক্ত পড়ছে, মেঝেতে ছোট্ট এক পুকুরের মতো তৈরি হয়েছে।কিন্তু এখানেই শেষ নয়।এহসান ছুরিটা বের করে আবার আঘাত হানে”! রায়ানের অন্য চোখে”!
এক মুহূর্ত, দু’মুহূর্ত— তারপর নিস্তব্ধতা।রায়ান আর চিৎকার করে না।শুধু নিথর হয়ে পড়ে থাকে। প্রাণ পাখি উড়ে যায় রায়ানের “!

মেহনূর নিঃশ্বাস বন্ধ করে বসে যায় লাশের পাশে। চোখের সামনে মৃত্যু দেখেছে, কিন্তু নিজের অনুভূতিগুলোও পাথর হয়ে গেছে। কিন্তু এহসান এখনো ক্ষান্ত হয়নি।
সে ড্রিল মেশিন হাতে তোলে।
মেশিন চালু হতেই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। তারপর একটু সরে এসে রায়ানের নিথর দেহের পেটে মেশিন টা চালিয়ে দেয় “! মেশিনের ফলাটা যখন রায়ানের পেটের ডান পাশে ঢোকে, একটা থকথকে আওয়াজ হয়। মাংস কাটা পড়ছে, চামড়া ছিঁড়ে যাচ্ছে— কিন্তু রায়ান ততক্ষণে বোবা, নিথর।
মাংস কেটে গেলে এহসান হাত ঢুকিয়ে রায়ানের পেটে নিজের বা হাত ঢুকিয়ে ওর শরীরের গভীরে কিছু খোঁজে।একটা মুহূর্ত, দু’মুহূর্ত…তারপর দাঁত চেপে টেনে ছিঁড়ে বের করে আনে রায়ানের এক টুকরো কলিজা!
অতঃপর থপ করে কলিজাটা মেহনূরের সামনে ধরে এহসান হেসে বলে—

— “দেখ, এত ছোট একটা কলিজা নিয়ে সে আমার নারী নিতে এসেছিল! দেখো, মেহনূর, এতটুকু কলিজা! হাহাহা!”দেখ মেহনূর দেখ
সে নিথর রায়ানের শরীরের উপর কলিজাটা ছুঁড়ে ফেলে।
রক্ত লেগে থাকা হাতটাকে একবার মুখের কাছে নেয়, রক্তের গন্ধ শোঁকে, তারপর আবার হাসে।।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়।এহসান এবার রায়ানের দুই চোখের উপর নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলি রাখে। এক ঠেলা দেয়, তারপর টেনে ছিঁড়ে আনে রক্তমাখা চোখের মণি দুটো!
মেহনূর চোখ বন্ধ করে নেয়, কাঁপছে, কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। এমন দূশ্য ওকে অসাড় করে দিয়েছে “! শুধু সব ফ্যালফ্যাল করে দেখেই যাচ্ছে এতক্ষণ কিন্তু এখন আর সম্ভব হয় না তাই চোখ বুঁজে নেয় “! আজ জ্ঞানও হারাচ্ছে না “! যদি জ্ঞান হারিয়ে যেত অন্তত এই দূশ্য দেখা লাগত না “!
এহসান এবার সেই চোখের মণি দুটো মেহনূরের সামনে ধরে বলে—

— “এই চোখ তোকে দেখেছে, তাই এই চোখ আমি তুলে এনেছি!”দেখ মেহনূর দেখ ভালো করে দেখ
তারপর হাতের মুঠোয় চোখের মণি দুটো পিষে ফেলে, থকথকে তরল চুইয়ে পড়ে তার আঙুলের ফাঁক দিয়ে।
বাতাস ভারী হয়ে আসে, চারপাশ থমথমে।মেহনূর নিঃশ্বাস নিতে পারছে না।
মেহনূর বসে আছে মনে হচ্ছে দুনিয়ার কোনো খবর সে জানে না “!চারপাশের সবকিছু কেমন জানি ঘোলা লাগছে!
রক্ত… রায়ানের রক্ত! এই ভয়ংকর দৃশ্য দেখে তার অন্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে! সবকিছু গুলিয়ে যাচ্ছে!
নিজেকে নিজেই খুন করে ফেলার ইচ্ছে হচ্ছে!তার জন্যই আজ রায়ান এত ভয়ংকর মৃত্যুর শিকার হলো!
সে কিছু করতে পারলো না!কিছুই করতে পারলো না!কী জবাব দেবে সে রবের কাছে?কাল কেয়ামতের ময়দানে যখন তার রব তাকে প্রশ্ন করবে—”তুমি কেন তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করোনি? উক্ত পশুর হাত থেকে?”
তখন কী জবাব দেবে সে?কী জবাব দেবে?উত্তর আছে তার কাছে? না! নেই! সব শেষ হয়ে গেছে!

এহসান ধীর পায়ে উঠে যায় তারপর নিজের হাতে লেগে থাকা রক্ত মুছে নেয় পাঞ্জাবিতে।
তারপর পকেট থেকে ফোন বের করে হাসিবকে কল দেয়।
—“হ্যাঁ হাসিব শুন, দশ মিনিটের মধ্যে তুই আমার কক্ষে আয়।”
ফোনের ওপাশ থেকে কাঁপা কণ্ঠে হাসিব জিজ্ঞাসা করে, “—কিন্তু কেন ভাইজান?”
এহসান একবার রায়ানের নিথর দেহের দিকে তাকায়, চোখে কোনো অনুভূতি নেই।
তারপর ঠান্ডা গলায় উত্তর দেয়—
—-“একটা কুকুরের লাশ নর্দমায় ভাসিয়ে দিতে হবে। আর শোন, সবকিছু পরিষ্কার করে রাখবি। আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করবি।”
হাসিব একটু থেমে সংকোচের সাথে বলে, ”

—-সব ঠিক আছে, কিন্তু আপনার বেগম যে কক্ষে আছে, আমি সেখানে কীভাবে…”
এহসান এক ঝলক মেহনূরের দিকে তাকায়!
সাদা থ্রি-পিসে কিছুটা রক্ত ছিটকে এসে লেগে গেছে কিছু টা !মেহনূর যখন তাকে আটকাতে গিয়েছিল, তখন এসবের চক্করে তার চুলের খোঁপা খুলে গেছে!চুল খুলা অবস্থায় ওড়না ছাড়া বসে আছে “! এই মুহুর্তেও এহসানের মন উজাড় করে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে মেহনূর কে “! কিন্তু মেহনূর এখনো অবচেতন হয়ে রায়ানের লাশের দিকেই তাকিয়ে আছে!
এহসান কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থাকে।
তারপর গম্ভীর কণ্ঠে বলে—
“—সমস্যা নেই, আমি ওকে নিয়ে চলে যাচ্ছি।”
“—-আচ্ছা ভাইজান।”
ফোন রেখে এহসান ধীর পায়ে মেহনূরের দিকে এগিয়ে আসে!সে নিঃশব্দে তার সামনে দাঁড়ায়!
তারপর আলতো করে মেহনূরকে কোলে তুলে নেয় “!মেহনূর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না!তার দৃষ্টি এখনো শূন্য!এহসান কোনো কথা বলে না।

এহসান ধীর পায়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়…
মেহনূরের দৃষ্টি চারপাশে থাকলেও মন পড়ে আছে সেই ভয়ংকর দৃশ্যে!এহসান তাকে কোলে তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে পুকুরপাড়ে আসে।
চারপাশ নিস্তব্ধ।শুধু অল্প কিছু জোনাকি পোকা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, আর আকাশের পূর্ণচাঁদ শীতল আলো ঢেলে দিয়েছে জগতে।
পানি ছলছল শব্দে দুলছে!ঠিক তখনই, ঠান্ডা পানিতে পা পড়তেই চমকে ওঠে মেহনূর!সে যেন হঠাৎ নিজের পৃথিবীতে ফিরে আসে!চারপাশে তাকায়!
এহসান তাকে পুকুরে নিয়ে এসেছে!কেনো?একি… ওকেও কি এখন পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলবে?নিশ্চয়ই!এটাই করবে!মেরে ফেলুক!এই বিষাক্ত জীবনের মুক্তি হোক!
আর বাঁচতে চায় না সে!এই কলঙ্কিত জীবন শেষ হোক!

কিন্তু না!
এহসান কোনো নিষ্ঠুরতা নয়, বরং অভূতপূর্ব আদর নিয়ে তাকে পুকুরের সিঁড়িতে দাঁড় করিয়ে দেয়।
মেহনূরের ঠোঁট কাঁপছে!শরীর কাঁপছে ঠান্ডায়, আর চোখ বেয়ে অঝোরে জল গড়িয়ে পড়ছে!
এহসান ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে মেহনূরের চোখের জল মুছে দেয়!
তারপর অস্থির কণ্ঠে বলে—
–+”তুমি কাঁদছো কেন?””ঐ হারাম পুরুষের জন্য?””তুমি কাঁদবে শুধু আমার জন্য!””আমি তোমার হালাল পুরুষ!”আমার কিছু হয়নি, আমি তো ঠিক আছি! তাহলে কেন কাঁদছো বলো?”
মেহনূরের কান্নার বেগ আরও বেড়ে যায়!সে নিজের দাঁত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরেও কান্না থামাতে পারছে না!অবশেষে সে চিৎকার করে বলে—

—“আপনার অন্তর ঝলসে গেছে! পাপে!”এই জন্য আপনি এতটা নিকৃষ্ট….
আর কিছু বলতে পারে না মেহনূর।তার ঠোঁট কাঁপছে…কণ্ঠ অবরুদ্ধ হয়ে গেছে…কথা বের হচ্ছে না শুধু মনে হচ্ছে কলিজা ফাটিয়ে কাঁদতে “!
-এহসান মেহনূরের গাল ছেড়ে দেয়।
তারপর এক ঝটকায় পানির মধ্যে হাত বাড়িয়ে মেহনূরের কোমর জড়িয়ে ধরে!নিজের একদম কাছে টেনে নেয়!
ধীরে ধীরে মেহনূরের কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে নরম গলায় বলে—
—“হ্যাঁ, আমার অন্তর ঝলসে গেছে! তবে তা পাপে নয়, তোমার প্রেমে!”
এ বলে এহসান আস্তে করে মেহনূরের কানের লতিতে কামড় বসায়!
মেহনূর ভয়ে শিউরে ওঠে!নিজের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে!
এহসান যখন নিজের মুখ সরিয়ে আনতে চায়, তখন তার গাল মেহনূরের নরম গালের সাথে ছুঁয়ে যায়!এহসানের খোঁচা খোঁচা দাড়ির স্পর্শে মেহনূর কেঁপে ওঠে!নিজের অজান্তেই ভয়ে এহসানের বুকের পাঞ্জাবি খামচে ধরে!
এহসান মৃদু হাসে।তার দৃষ্টি মেহনূরের মুখের উপর স্থির!

কয়েক মুহূর্ত পর মেহনূর নিজের হাত সরিয়ে নেয়!
তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে ধীরে ধীরে নিজের শাহাদাত আঙুল উঠিয়ে আসনামানের দিকে তাক করে “! তারপর ঘৃণায় জ্বলতে থাকা দৃষ্টিতে এহসানের দিকে তাকায় এক পলক! ফের সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে—
—-“ঐ দেখুন!ওখানটায় আমার রব বসে আছেন!তিনি সব দেখছেন… সব দেখছেন!”আপনি ধ্বংস হয়ে যাবেন!”আমার রব ছাড় দেন না!আপনি এই পাপে ধ্বংস হয়ে যাবেন… ধ্বংস!”
এহসান মুচকি হাসে!
তারপর হঠাৎই মেহনূরকে নিজের বক্ষস্থলের মধ্যে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে নেয়!মেহনূরের পিঠে হাত বুলিয়ে ঘায়েল গলার স্বরে বলে—

“—নতুন করে আর কি ধ্বংস হবো?”ধ্বংস তো আমি হয়ে গেছি!তবে পাপে নয়…তোমার অস্তিত্বের প্রেমে!”
এ বলে এহসান মেহনূরকে আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরে!
তারপর একে একে চারটি ডুব দেয়!আর মুখে জোরে উচ্চারণ করতে থাকে—
–اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ المُتَطَهِّرِينَ
(হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমাকে পবিত্রদের অন্তর্ভুক্ত করুন।)
মেহনূর উক্ত ডুবে নাকানিচুবানি খেয়ে গেছে “! এহসান ধীরে ধীরে ওর হাত ধরে ওকে সিড়ির ওপর নিয়ে আসে! পানিতে ভেজে মেহনূর সারা শরীরের অভয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে চাঁদের ঘোর আলোয় চকচকে ভাসছে মেহনূরের ফর্সা শরীরে অবয় “! তবে এতে এহসানের চোখ আটকায় না এহসান মেহনূরের একদম নিকট চলে আসে”!
মেহনূর একি ধারে কাঁপছে ভয়ে ঠান্ডায় এত রাতে এই পুকুরে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা কি আর মুখের কথা “!
এহসান মেহনূরের একদম কাছে চলে আসে “!এহসানের গরম নিশ্বাস মেহনূরের সর্ব গায়ে ছড়িয়ে পড়েছে আর তার সেই অসম্ভব সুন্দর শরীরের ঘ্রাণ এই ঘ্রাণ গোসল করলেও যায় না কী? কেন যায় না? মেহনূর এখন এসব ভাবতে ব্যাস্ত”!

আত্মার আগলে পর্ব ৯

তখনি এহসান মেহনূরের কাঁধে ঝুলে থাকা ওড়না টা নিয়ে নেয় “! অতঃপর ওড়না টা কে দুদিক ধরে ধরে ঝারি মারে যাতে পানি ঝড়ে যায় তারপর মেহনূরের পানে এক পলক তাকিয়ে ওড়না খানা সুন্দর করে জড়িয়ে দেয় মেহনূরের গায়ে “!

আত্মার আগলে পর্ব ১১