আত্মার আগলে পর্ব ১৭
সানজিদা আক্তার মুন্নী
এহসান মেহনূরের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে দাঁত চেপে বলে,
—- “ইয়া মাবুদ, এক বেয়াদ্দব নারী তুমি জুটাইলে আমার কপালে, যার কিনা না আছে আদব আর না আছে কান্ডজ্ঞান!”
এ কথা বলে, এহসান মেহনূরের কাছে এসে তার কপাল থেকে মেহনূরের হাত একপ্রকার জোর করে সরিয়ে নেয়। চোখে ক্ষোভ, আর গলাতে রাগের অনুনাদ—এহসান মেহনূরের কপালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
—– “তাকাবি তো বুঝলাম, কিন্তু এমন তাকানো তাকালি যে নিজের বারোটা বাজিয়ে দিলি! খুব ব্যথা নিশ্চয়ই করছে।”
মেহনূর চোখ খিঁচে বলে,
—-“নাহ, ব্যথা করছে না।”
এহসান যেন মেহনূরের সৃষ্ট অস্বস্তি বুঝতে পারলেও, থেমে না গিয়ে ধমক দিয়ে বলে,
—-“চুপ, বেয়াদ্দব নারী! ব্যথা করছে না তো চোখের জল এলো কি করে?”
মেহনূরের জন্য কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, এহসান এক ঝটকায় মেহনূরকে নিজের কোলে তুলে নেয়।
মেহনূর হতভম্ব হয়ে যায়, “কিহ! এই সামান্য ব্যাপারেও ওকে কোলে তুলে নিলো এই পুরুষ! ছিঃ ছিঃ! তাও খালি গায়ে। দোষ তো নিজেরই, কেন তাকাতে গেল? না তাকালে এমন হতই না!”
এহসান, যেন মেহনূরের শরীরের অস্বস্তি বুঝে, আরও টেনে ধরল। যার জন্য মেহনূর এহসানের বুকে লেপ্টে যায় ‘! যার ফলে মেহনূরের নাকে সেই চেনা ঘ্রাণ পৌঁছায়—এহসানের শরীরের ঘ্রাণে যেন মেহনূর কে বশে নিয়ে আসে। পুরো পৃথিবী যেন তার চারপাশে ঘুরছে, অজানা এক অনুভূতি তাকে মাতোয়ারা করে তুলছে তাকে ।
এহসান মেহনূরকে কক্ষে নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে দেয়। তার অস্থির গলায় শব্দ বের হয়, “
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
—-বরফ দিব এনে লাগিয়ে, ফুলে গেছে কপাল।”
মেহনূর হাত দিয়ে না না ইশারা করে, অস্বীকার জানিয়ে বলে, “
—-নাহ, নাহ, লাগবে না। আমি গোসল করব এখন। সব ঠিক হয়ে যাবে। গোসল করে নিলে, ইনশাআল্লাহ।”
মেহনূর ধীর পায়ে উঠে, হাতে থাকা কাপড় নিয়ে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যায়। কিছু মুহূর্ত পর, গোসল সেরে বেরিয়ে এসে সে দেখতে পায় এহসান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রথমে মনে করেছিল, হয়তো এহসান ঘরে নেই, কিন্তু বেলকনির কাছে আসতেই তার বুঝে যায়—এহসান বেলকনিতেই রয়েছে। কারণ, তার শরীরের ঘ্রাণ মেহনূরকে জানিয়ে দেয়, তার উপস্থিত।
মেহনূর দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, চুপচাপ এগিয়ে গিয়ে টাওয়ালটা চুল থেকে খুলে বেলকনির রেলিংয়ে মেলে দেয়।
তারপর, চুলকে হালকা করে ঝাড়িয়ে মাথায় ওড়না টেনে নেয়। যখনি পা বাড়াতে যাবার মুহূর্ত, তখন তার চোখ পড়ে এহসানের দিকে। তবে এবার আর তাকায় না, নিজেকে সংযত করে বেলকনিতে থেকে চলে আসতে নেয়। কিন্তু এহসান তার দিকে চোখ তুলে বলে
— “আর কখনো কালো রঙের কিছু পড়বি না, মেহনূর।”
মেহনূর একটু ভ্রূ কুঁচকে, হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় এহসানের দিকে, আর জিজ্ঞেস করে,
—“কেন,?”
এহসান তার চোখে তাকিয়ে নেশাময় সুরে বলে, ”
—তোর কালো পোশাক তোর সৌন্দর্যকে আরও অপূর্ব করে তোলে। এতে তোর ভংয়কর এই সৌন্দর্য আমায় মাতোয়ারা করে তুলে।”
মেহনূর এহসানের এমন কথায় স্তম্ভিত হয়ে যায়, কিন্তু কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ কক্ষে ফিরে আসে। কক্ষে প্রবেশ করাড পর তার চোখ পড়ে পেকেটগুলোতে।
“এগুলো কী?” মনে মনে ভেবে সে এগুলোর দিকে এগোয়। হয়তো কিছুটা বিরক্ত হয়ে, –“এত মাথা ঘামানোর কী দরকার?” ভাবতে থাকে। এখন তো নিচে যাওয়ার সময়, খাবার খেতে হবে।
মেহনূর ধীর পায়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসতে নেয়, তখনি এহসান পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলে,
—- “মেহনূর, প্যকেটগুলো খুলে দেখ।”
মেহনূর কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে পেছনে ঘুরে বলে, —“কিন্তু আম…”
এহসান তার কথা একপ্রকার ছিনিয়ে নিয়ে, বিছানায় বসতে বসতে বলে,
*— “চুপচাপ, আমি যা বলছি, তা কর। বেয়াদ্দব নারী, সবসময় শুধু তর্ক করিস কেন?”
মেহনূর আর কিছু বলে না, চুপচাপ আলতো পায়ে বিছানায় এসে বসে। একটি প্যাকেট হাতে নিয়ে খুলতেই তার চোখে বিস্ময় ঝলসে ওঠে।
সে ভেবেছিল, শুধু একটি মিসওয়াক আনতে বলেছিল, কিন্তু এহসান তো বিশটিরও বেশি মিসওয়াক নিয়ে এসেছে। মেহনূর মিসওয়াকগুলো বের করে, এহসানকে দেখিয়ে বলে,
—“এতটা কে আনতে বলেছিল? যে যা পেলেন,তা পেট ভরে নিয়ে এলেন?”
এহসান মুচকি হেসে তার বেগমের দিকে তাকায়। এই মুহূর্তে, তার বেগম কে একদম বাঙালি বেগম লাগছে, কেমন রেগে গেছে অপচয় করার জন্য—এমন মুহূর্ত তার জীবনে কখনো আসবে, তা ভাবতেও পারেনি। তবে সে কোনো উত্তর দেয় না, এক দৃষ্টিতে মেহনূরের দিকে তাকিয়ে থাকে।
মেহনূর মিসওয়াকগুলো রেখে অন্য একটি প্যাকেট খুলে দেখে, এখানে আট থেকে দশটি মেহেদী এবং কিছু স্টিকার রয়েছে। অবাক হয়ে সে এগুলো হাতে নিয়ে এহসানের দিকে তাকিয়ে বলে,
—“এগুলো কার?”
এহসান সোজাসুজি উত্তর দেয়, –“তোর।”
মেহনূর হতভম্ব হয়ে বলে,
— “এত কিছু দিয়ে আমি কী করব? আমি তো মেহেদী পড়ি না ।”
এহসান শান্ত সুরে বলে,
—-“পড়িস না, এখন থেকে পড়বি। আর এই একটা কথা বলে দিলাম, আজকের পর থেকে তোর হাত মেহেদী ছাড়া আমি আর কখনোই দেখতে চাই না। আর যদি দেখি, তো এই হাত কেটে রেখে দিব।”
মেহনূর ভয়ে ভরকে গিয়ে বলে,
—“এর জন্য আমার হাত কেন কেটে নিবেন?”
এহসান ধমকের গলায় বলে,
—“বেয়াদ্দব নারী, সব বেয়াদ্দবি জানিস। আর এটা জানিস না, যে হাতে মেহেদী থাকে না, সেই হাত পুরুষের হয়। তো কি তুই পুরুষ?”
মেহনূর এমন ধমকে মৃদু কেঁপে ওঠে এবং মলিন গলায় বলে,
—“এভাবে ধমক দিলেন,?”
এহসান তার কথা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে যায়। কিভাবে তার নারী, তার বেয়াদ্দব নারী, এমন আদবের সাথে কথা বলছে? এমনকি বলছে, “এভাবে ধমক দিলেন?”
এহসান মেহনূরের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
—- “আচ্ছা, আর এমন কখনোই হবে না। আর ধমক দিব না। এখন সব পেকেট খুলে দেখ।”
মেহনূর মাথা নাড়িয়ে অন্য একটি পেকেট খুলে দেখে, এতে ছিল বেশ কিছু আইসক্রিম চকলেট। প্যাকেটটি বড় ছিল, আর হয়তো এজন্যই বড় ছিল, কারণ এতে অনেক চকলেট আইসক্রিম ছিল। মেহনূর এগুলো দেখে, এহসানের দিকে তাকিয়ে বলে,
—“এগুলো এত কিছু, কার জন্য?”
এহসান আবারও ধমক দিয়ে বলে
—-, “তোকে দিয়েছি, তো তোর জন্যই তো হবে।”
মেহনূর ভয়ে ভরকে গিয়ে বলে,
—- “এত কিছু আমি একা কী করে খাব? বাচ্চাদের দিয়ে দেই এগুলো। আমি এতটাও খাই না।”
এহসান শান্ত সুরে বলে,
—- “আরও অনেক আচার অনেক কিছু এনেছি যা সবগুলো কাপড় রাখার কক্ষে যে ছোট ফ্রিজ আছে ওটাতে রেখে আয় “! আর তুমি বাচ্চাদের দেওয়া লাগবে না নিজেই তো একটা বাচ্চা”! কোনো বাল একবার বললে বুঝিস না!
এহসান এসব বলে বিছানা থেকে উঠে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়, উদ্দেশ্য নিচে যাওয়া—বাবা ও ভাইদের সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য।
মেহনূর এহসানের এমন হঠাৎ রেগে যাওয়ার কারণ খুঁজে পায় না। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, সে সব কিছু একে একে দেখে, তারপর কাপড় রাখার কক্ষে গিয়ে খাবারের জিনিসগুলো ফ্রিজে রেখে দেয়। তবে একটি চকলেট সে খায়, আর আইসক্রিমের বাটি আর খুলে না, কারণ এতক্ষণে আইসক্রিম হয়তো গলে একাকার হয়ে গেছে।
খাবার শেষে,
মেহনূর তার কক্ষে ফিরে আসে। এহসান খাবার খেয়ে বাগানে গেছে, একজন লোক তার সাথে জরুরি দেখা করতে এসেছেন।
মেহনূর কক্ষে এসে আলমারি থেকে একটি মিসওয়াক বের করে, কিন্তু তার উপরের অংশ তেতলানো নয়, তাই সে রেখে দেয়। ভাবে, সকালে নিচে গিয়ে করবে, এখন ওযু করে নেয়, এমনিই।
মেহনূর ওযু করে, কক্ষে রাখা ওয়ারড্রব থেকে এনিসা বেগমের দেওয়া কোরআন শরীফ বের করে। তার উদ্দেশ্য ছিল, এই কোরআন শরীফে খানার তেলাওয়াত করা।
কক্ষে রাখা টেবিলের উপর একটি জায়নামাজ বিছিয়ে নেয়, এবং নিজে চেয়ারে বসে কোরআন শরীফ মেলে।
আহা, অন্তর যেন এক অদ্ভুত স্নিগ্ধতায় ভরে যায়। কিভাবে এত সুন্দর, স্পষ্ট লেখা! অথচ এটি কত বছর আগের পুরোনো কোরআন, যাদের কাছেই ছিল, তারা নিশ্চয়ই খুব যত্নে রেখেছেন। তাই, একটি ছিঁড়ে যাওয়ার চিহ্নও নেই! আছে শুধু যত্নের চিহ্ন
মেহনূর নিজের প্রিয় সূরা মুলক তেলাওয়াত করতে থাকে। নিজের গলায় যত সুর দিয়েছেন, আল্লাহর সকল অনুগ্রহ নিয়ে তারতিল সহিত স্পষ্ট তেলাওয়াত করে। কেননা, তার অন্তর বিষাদে ভরা, আর এই বিষাক্ততা দূর করতে কোরআন তেলাওয়াত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, এহসান তার মিটিং সেরে উঠে ধীরে ধীরে আল্লাহর নাম নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে।
নিজের কক্ষে পা রাখতেই কানে ভেসে আসে একটি সুন্দর তেলাওয়াত। মুহূর্তেই বুঝে যায়, এটি তার প্রিয় বেগম মেহনূরের তেলাওয়াত। তাই ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে, মেহনূরের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকে।
মেহনূর তার উপস্থিতি অনুভব করলেও কিছুই বলে না, তেলাওয়াত করতে থাকে নিজের মতো। কারণ, সে জানে, তেলাওয়াত বন্ধ করলে এহসান জোর করে শুনবে।
তাই সময় নষ্ট না করে, সে নিজের মতো পড়তে থাকে। এহসান চোখ বন্ধ করে মেহনূরের চেয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে তেলাওয়াত শুনতে থাকে।
একসময় মেহনূরের তেলাওয়াত শেষ হলে, সে উঠে যায়। কোরআন শরীফটি নিজের জায়গায় রেখে দেয়। এহসান মেহনূরকে উঠে যেতে দেখে, নিজ বাথরুমে প্রবেশ করে। পরে ওযু করে বেরিয়ে আসে।
এহসান বিছানার কাছে এসে দেখে, মেহনূর বিছানায় শুয়ে আছে। এতক্ষণে তার চোখ ভারী হয়ে আসছে।
আজ কেন জানি মেহনূরের দিকে বারবারই নিজের অজান্তেই চোখ চলে যাচ্ছে। এহসান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, ঘরের বাতিগুলো নিভিয়ে নিজেও বিছানায় উঠে পড়ে।
মেহনূর দীর্ঘ এক হতাশার শ্বাস নেয়। তারপর আলতো করে এগিয়ে এসে, এহসানের পাপিষ্ঠ বুকেই নিশ্চিন্তে মাথা রাখে। সে জানে, যদি সে নিজে আসে, এহসান ঠিকই তাকে বুকে আগলে ধরবে। তাই নিজেই আসা ভালো, কারণ তার জেদের কোনো মূল্য নেই। এই দুনিয়ায় তার তো তারি মূল্য নেই, আর তার জেদের মূলই কেনোই বা তাকবে।
এহসান মেহনূরকে নিজের বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেয়। এত জোরে চেপে ধরেছে, যে মেহনূরের মনে হয়, তার শরীরের সমস্ত হাড় ভেঙে যাবে। এতটা শক্তি দিয়ে ধরেছে, যে মেহনূর চিৎকার করে বলে,
—–“মেরে ফেলবেন নাকি? এভাবে ধরলেন! ছাড়ুন বলছি, অসভ্য পুরুষ!”
এহসান মেহনূরের এমন চিৎকারে ওকে ছেড়ে দেয় ঠিকই কিন্তু মেহনূরের কয়েক বার শ্বাস নিতে নিতেই এহসান মেহনূর কে বালিশে শুইয়ে দেয়”!
শুইয়ে দিয়ে মেহনূরের দুই হাত আলতো চেপে ধরে”!
আর এক পলকেই নিজে আধশোয়া হয়ে অর্ধ ভর দিয়ে মেহনূরের ওপর শুয়ে যায় “!
ব্যাস এতেই মেহনূর আঁতকে উঠে কলিজা অব্দি ঘামতে শুরু করে”! কিহ করছে এই পুরুষ? এখন উল্টো পাল্টা কিছু করবে নাকী “!
মেহনূরের এসব ভাবছে আর সমানতালে নড়াচড়া করছে!
তবে এহসানের এসবে কিছু যায় আসে না সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেহনূরের ঠোঁটের নিচে তাকা লাল তিল”টায় “!
বেলকনির পর্দা একটু এলিয়ে দেওয়া তাই চাঁদের আলো স্পষ্ট ওদের ওপর এসে পড়ছে”!
যার ফলে মেহনূরের ঠোঁটের তিলটা চকচক করছে”!চাঁদের আলোয় বারবারই “!
এহসান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না”! নিজের ঠোঁট এক পলকেই ডুবিয়ে দেয় নিজের আপন নারীর ঐ ঠোঁটের নিচের তিলে “!
এহসানের ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই মেহনূর বরফের ন্যায় জমে যায় শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বইতে থাকে তার “!
এহসানের খোঁচ খোঁচা দাঁড়ি, গিয়ে মেহনূরের নরম ত্বকে একপ্রকার বিঁধে গেছে”!
অসম্ভব অসুস্তি হচ্ছে মেহনূরের “!এর মধ্যে নড়াচড়াও করতে পারছে না গলা শুকিয়ে আসছে তার’!
এহসান কিছু মুহুর্ত পর নিজের ঠোঁট তিল ” টার থেকে তুলে নেয়”!
তারপর কিছু মুহুর্ত নেশাক্ত চোখে মেহনূরের ঠোঁটের পানে তাকিয়ে তাকে গোলাপি ঠোঁট জোঁড়া “!
ভয়ে বারবার কাঁপছে গোলাপি অধর খানা”! শুকিয়ে আসছে অধর খানা! মনে হচ্ছে এই অধর খানা “!তাকে ভীষণ রকম টানছে”! ভীষণ রকম”! তাই আর নিজেকে ধরে রাখে না নিজের অধর ডুবিয়ে দেয় নিজের বেগমের অধরে “!
নিজের ঠোঁটে এহসানেরর ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে”!
এখন মেহনূরের স্নায়ু অব্দি অবস হয়ে গেছে”! এহসান বারবারই নিজের ঠোঁট মেহনূরের ঠোঁটে ছুঁয়াচ্ছে “! তাই মেহনূরের দুই গালে বারবারই এহসানের দাঁড়ি বিঁধছে “!
মেহনূর ভয়ে লজ্জায় বিছানার চাদর শক্ত করে খাঁমচে ধরে “!
মেহনূরের ধমনী অব্দি জমাট বেঁধে গেছে”! এতটা ভয়ংকর অনুভূতির শিকার সে কখনো হয়নি”!
এই লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়ার চেয়ে ভালো তো মাটির নিচে চলে যাওয়া তার জন্যই উওম “!
এক মুহুর্ত…দ মুহুর্ত…কয়েকট প্রহর কেটে যায় দেখতে দেখতে”!
কিন্তু তাও এহসান মেহনূরের ঠোঁট ছাড়ে না”!
নেশায় ডুবে গেছে সে তলিয়ে গেছে এহসান”! তার মনে হচ্ছে সারারাত এই ঠোঁটেই ডুবে থাকতে “!
আরও কিছু মুহুর্ত পর এহসান মেহনূর কে ছেড়ে দেয়”!
মেহনূর এতে নিজের মধ্যে প্রান ফিরে পায় গলা টানিয়ে বুক টেনে শ্বাস নিতে থাকে “!
এতে এহসানের চোখ আটকে মেহনূরের ফর্সা গলায়”!
তাই এক মুহুর্ত দেরি না করে এক টানে, মেহনূরের গলা থেকে ওড়না সরিয়ে নেয়”!
এতে মেহনূরের গায়ের কামিজও কিছু টা সরে যায় যার ফলে,, মেহনূরের গলার নিচে তাকা লাল তিল’টি স্পষ্ট দেখতে পায় এহসান “!
এই মুহুর্তে আর নিজেকে সামলাতে পারে না সে নিজেকে “! তাই নিজের ডুবিয়ে দেয় সেই তিলে “!
মেহনূর একটু সুস্তি পেয়েছিল”! কিন্তু এহসানের এমন কান্ডে”!
সে ভয়ে ঘাঁবড়ে এহসানের পিঠের টিশার্ট এর অংশ ঝাপটে খাবলে ধরে”!
এহসানের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি ওর গলায় বিঁধছে “! সুড়সুড়ি লাগছে খুব “!
নাহ আর নিতে পারছে না মেহনূর”! তার চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু সেই শক্তি টুকুও পাচ্ছে না “!
অবস হয়ে আছে তার সারা সর্বাঙ্গ “! এহসান মেহনূরের সম্পূর্ন গলায় নিজের ঠোঁট বার-বার ছুঁয়াচ্ছে”!
এহসান এবার কয়েক বার নিজের দাঁত বসিয়ে দেয় মেহনূরের গলায় “!
এতে মেহনূর কাঁপতে শুরু করে কাঁপতে থাকে “!ধীরে ধীরে ওর অচেতন শরীর নিজের আয়ত্তে আসছে”!
জোরে জোরে শ্বাস নিতে তাকে এবার একটু শক্তি নিয়ে চিৎকার করে বলে
—- আমায় ছেড়ে দিন কষ্ট হচ্ছে ভীষণ “!
মেহনূরের এমন চাপা আর্দনাতে ছেড়ে দেয় এহসান ওকে”!
এহসান ওকে ছেড়ে দিতেই এক লাফে উঠে বসে মেহনূর আর নিজের গলার দিকে তাকায় স্পষ্ট দেখতে পায় লাল টুকরো টুকরো হয়ে গেছে ওর গলার ফর্সা চামড়া “!
চোখ বন্ধ করে কয়েক বার বড় বড় শ্বাস নিতে তাকে”! মেহনূর নিশ্চিন্তে শুয়ে তাকা এহসানে পানে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে
—- আপনি কি আদৌও মানুষ কি করেছেন আপনি আমার সাথে সারা গলায় রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দিয়েছেন “!
এহসান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে
— শুকরিয়া আদায় কর যে শুধু গলায় রক্ত জমাট বাধিয়েছি সারা শরীরে নয় “!
মেহনূর এবার কেঁদে দিবে এমন পরিস্থিতিতে সে এহসানকে নিজের গাল দেখিয়ে বলে”!
— দেখুন কি করেছেন”! আপনি আমার গাল, নিজের দাঁড়ি দিয়ে কিভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছেন “!
এহসান নিজের দুই হাত নিজের মাথার পিছনে নিয়ে আয়েশ করে শুতে শুতে বলে”!
— আমার দাঁড়ি আর অধর দিয়ে তোর সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হওয়ার কথা ছিলো “!তার বদলে শুধু গাল আর গলাই হয়েছে”! তাই শুকরিয়া আদায় কর বেয়াদ্দব নারী “!
এহসানের এমন উওর শুনে এবার মেহনূর ঠোঁট ভেঙে কেঁদে উঠে “!
কারণ এ কয়দিনে এহসান যতই ওকে চড় থাপ্পড় মারুক”! কিন্তু তাও এমন আচরণ করেনি “!
তাই গলা চেপে কেঁদে দেয় যথেষ্ট চেষ্টা করছে কান্না না করার কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি “!
এহসান মেহনূর কে কাঁদতে দেখে শান্ত গলায় বলে
—- কান্না বন্ধ কর বেয়াদ্দব নারী নয়তো তোর এই কান্না কে আমি চিৎকারে পরিনত করব “!
এহসানের এমন অসভ্য ইঙ্গিতে কথা বলায় মেহনূর মুহূর্তেই বুঝে যায় এহসান কি বলতে চাইছে তাই কান্না বন্ধ করে রেগে বলে”!
—- আমি চলে যাচ্ছি এখান থেকে আমি এশার সাথে থাকবো আপনার সাথে থাকব না আমি
এ বলে মেহনূর যখনি অগ্রসর হয় বিছানা থেকে নামতে”!
তখনি এহসান ওকে হেঁচকা টানে বালিশে শুয়ে দেয় “! মেহনূর কিছু মুহুর্ত পর বুঝে উঠতে পারে কি হয়েছে এহসান এমন জোরে টান দিয়েছে ওর মাথা ঘুরে গেছে এক প্রকার”!
মেহনূর সব বুঝতে পেরে যেই না আবার উঠতে যাবে!
তখনি এহসান ওর কোমরে হাত রাখে এই নড়াচড়ায় কামিজ কিছু টা সরে গেছে”! তাই এহসানের হাত মেহনূরের উন্মুক্ত কোমরে স্পর্শ করে “!
আত্মার আগলে পর্ব ১৬
এহসান কোনোকিছু না ভেবে সমানতালে সুড়সুড়ি দিতে থাকে, মেহনূরের কোমরে”!
এতে নিজের অনিচ্ছাকৃত ভাবে খিলখিলিয়ে শব্দ করে হেসে উঠে মেহনূর “!
নিজের নারীকে হাসতে দেখে অন্তর অব্দি ঠান্ডা হয়ে যায় এহসানের “! নিজেও শব্দ করে হেসে উঠে “!